নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ক্ষুদ্র ব্লগার একজন আগাগোড়া স্বাধীনচেতা বাংলাদেশী। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনপ্রকার আপোষ করে না। ধন্যবাদ

নাহিদ ২০১৯

নিজের সম্পর্কে লিখতে লজ্জা পাই,কারন নিজেকে নিয়ে বিশেষভাবে যে কি লিখবো তাই খুঁজে পাই ন।তবে হ্যাঁ আমি একজন মানুষ, রোবট নই এটুকু বলতে পারি।

নাহিদ ২০১৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোলাপ

১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১৪

এখানে আমি খুব ভালো আছি,আনন্দে আছি।এই বাড়িতে আমার জায়গা হয়েছে বারান্দার দেয়াল ঘেঁষে একটা শক্ত হার্ড বোর্ডের উপর।তিন তলায় হওয়াতে আমার বেশ সুবিধেই হয়েছে।বাহিরের ধুলোবালি আমাকে ছুঁতে পারে না,আধাবেলা রোদ পাই,এখান থেকে রাস্তার মোড় অব্দি সবটুকু জায়গা স্পষ্ট দেখা যায়।আশেপাশের ফ্লাটের বাচ্চাগুলো শুধু উঁকিঝুঁকি মারে কখন বিকেল হবে আর অমনি হই হই করে ব্যাট-বল নিয়ে বেড়িয়ে আসবে রাস্তায়। বাড়ির ছোট্ট মেয়েটি সারাদিন আমার খুব যত্ন নিচ্ছে।মেয়েটির নাম অর্পিতা।মুসলিম পরিবারে কি মেয়েদের নাম অর্পিতা হয়? কি জানি,হয়তো হয়।এইসব নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই।সে আসাদ সাহেবের একমাত্র মেয়ে,খুবই আহ্লাদী আর জেদি।তার কান্নাকাটির কারনেই আজ আমি এই বাড়িতে।জেদ ধরেছিল আমাকে কিনতেই হবে,কিন্তু আমি যে বারোমাসি গোলাপের চারাগাছ,দাম একটু বেশি আর বদমাইশ দোকানীটাও কায়দা বুঝে দাম অনেক বেশি হাঁকিয়ে বসে ছিল।অগত্যা মেয়ের জেদের কাছে শেষপর্যন্ত হার মানতে হয়েছিল আসাদ সাহেবকে।আমার জন্যে মোটামুটি বড়সড় একটা মাটির টবও কেনা হয়েছে,এতে বেশ সুবিধে হয়েছে,এখানে শিকড় ছড়িয়ে একটু আরাম করতে পারছি।এর আগে একটা ছোট্ট পলিথিনের ব্যাগে আঁটোসাঁটো হয়ে থাকতে হতো।এখন ভালো আছি।
ইতোমধ্যে আপনারা বোধহয় আমার পরিচয় পেয়ে গেছেন।হ্যাঁ আমি একটি গোলাপ গাছ।লাল গোলাপের গাছ।কিন্তু এখনো আমার গোলাপ আসার সময় হয় নি।কেবল নতুন পাতা গজিয়েছে।নতুন দুটি শাখা বেরিয়েছে আমার।আর তা দেখেই অর্পিতার সে কি খুশি।ছোট্ট মেয়েটা ছুটে চলে গেল তার আম্মুর কাছে এই খবর দিতে,সামনের ফ্লাটের তার বন্ধুদেরও ডেকে ডেকে বললো।সারাঘর জুড়ে একা একা ছুটে বেড়ালো কিছুক্ষণ।আমি পিচ্চিটার কান্ড দেখি আর মনে মনে হাসি।সে প্রতি সকালে বিকালে আমার গোড়ায় পানি দেয়,একটু বেশিই দেয়।কিন্তু খুব বেশি পানি না দিতে বলে দিয়েছে তার আম্মু।ঠিকই বলেছে।বেশি পানি জমে গেলে আবার আমার হিতে বিপরীত হতে পারে।
সবমিলিয়ে আমার দিন ভালই কাটছে।আমার পাতাগুলো কি সতেজ,সবুজ।নীচের দিকে তাকাই সেখানে কত রকমের মানুষ প্রতিদিন হেঁটে যায়।ছোট-বড়,বয়স্ক কত মানুষ।কত কাজ তাদের।এই শহরের মানুষগুলো এত কাজ কিভাবে করে আমি সেটাই মাঝে মাঝে ভাবি।আশেপাশে কি ঘটছে না ঘটছে এসব নিয়ে তারা কি ভাবে কখনো বা ভাবার সময়টুকু পায়? কি জানি হয়তো ভাবে হয়তো না।কিন্তু আমি ভাবি,কারন আমার কাছে অফুরন্ত সময়।আমার তো আর কোন কাজ নেই।আমি যেন একটা অদৃশ্য চোখ যে সবকিছুই দেখতে পায়,এই চোখে যেন কোন কিছুই এড়াতে পারে না।এইতো আমার সামনের বাসায় দোতলায় একটা অতি সুন্দরী মেয়ে থাকে।কলেজ না কি জানি একটা জায়গায় পড়ে।প্রতিদিন দেখি একটা সাদা নীল ইউনিফর্ম পড়ে একা বেড়িয়ে যায়।কিন্তু একা শুধু সে মোড় পর্যন্ত যায়, মোড় থেকে একটা ছেলে তাকে কলেজে নিয়ে যায়।আবার সেদিন তো অনেক রাতে এসে বাসার সামনে হাজির।শুধু শুধু ঘোরাঘুরি করছিল বাসার নীচে এসে।পরে দোতলা থেকে কাগজের মত কিছু একটা পড়লো, সেটা নিয়ে হাসি মুখ করে চলে গেলো। এটা কেউ খেয়াল করে নি বা কারো চোখে পড়ে নি।কিন্তু আমি জানি,আমার চোখে সবাই ধরা পড়ে।
আমার শাখাগুলো একটু করে বড় হচ্ছে,পাতাগুলো হালকা সোনালী রঙ ছেড়ে দিয়ে সবুজ হবার পথে যাচ্ছে। এর পরই কলি আসবে গাছে।প্রথমে কয়টি কলি আসবে? জানি না কারন এর আগে কখনো কলি আসে নি।তবে দুইটি নতুন শাখাতে আশা করি অবশ্যই কলি আসবে।আস্তে আস্তে কলি ছেড়ে গোলাপ বেড়িয়ে আসবে,মোটামুটি বড়সড় দুটি গোলাপ।এই শহর,শহরের মানুষগুলো গোলাপ অনেক ভালোবাসে এইটুকু আমি এতদিনে জেনে গেছি।আসাদ সাহেব অফিস থেকে বেশিরভাগ সময়ই রাত করে বাড়ি ফেরেন।আর যেদিন তার বাড়ি ফিরতে খুব বেশি দেরি হয়ে যায় সেদিন তিনি একগুচ্ছ গোলাপ নিয়ে ঘরে ঢুকেন,কিছুটা রাগ করে থাকা অর্পিতার আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খান,আর হাতে ধরিয়ে দেন গোলাপগুচ্ছ। অর্পিতার আম্মুর রাগ শেষ হয়ে যায়।এই শহরে এটাকেই কি প্রেম বলে?নাকি প্রেমের আরও রূপ রয়েছে? হয়তো এটাই প্রেম যেখানে গোলাপের ভূমিকা অনেক।গোলাপ মানুষকে প্রেমে পড়তে শেখায়।কাছে আসতে শেখায়।
ইদানিং দেখছি এই শহরে কেমন একটা দুশ্চিন্তা বেড়েছে।সবাই কেমন গম্ভীর হয়ে যাচ্ছে। কি যেন একটা চাপা কথা,আলোচনা সব জায়গায়।শহরটা কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। এখন বিকেল কিন্তু বাসার নীচে প্রতিদিন খেলাধুলো করা বাচ্চাগুলোকে দেখছি না এখনো। এমন তো কোনদিন হয়নি! আমি অবাক হলাম,সাথে সাথে একটু মন খারাপও হচ্ছে।প্রতিদিন একটা জিনিস দেখে আসার পর হঠাৎ করে তা না দেখতে পেলে মন খারাপ হয় আমার।আচ্ছা মানুষেরও কি এমনটা হয়? আমি মানুষের মনের কথা বলতে পারি না।মানুষ খুবই জটিল প্রকৃতির।
সুসংবাদ আমার শাখায় একটা কলি এসেছে।খুবই ছোট।খুব কাছ থেকে খেয়াল না করলে দেখা যায় না।অর্পিতা দেখতে পেয়েছে,পুরো ঘর মাথায় তুলে নাচানাচি শুরু করেছে ইতিমধ্যে।আসাদ সাহেব আজ অফিস করেন নি,সকাল থেকেই বসায় বসে আছেন।ছোট্ট মেয়েটা গোলাপের কলির সংবাদ নিয়ে সবার আগেই ছুটে গেলো বাবার কাছে।হাত ধরে একপ্রকার টেনে বারান্দায় নিয়ে এসেছে আমার কলি দেখাবার জন্যে। আসাদ সাহেব হাসি হাসি মুখ করে বললেন "হ্যা মামনি তোমার গোলাপ গাছে গোলাপ এসেছে"।এই আনন্দ ছোট্ট মেয়েটার আরো অনেক্ক্ষণ থাকবে। এই শহরে এখন বোধয় সবচেয়ে নির্ভার একমাত্র অর্পিতাই,যার কোন চিন্তা নেই।এছাড়া সবাই যেন কি না কি চিন্তায় মগ্ন।এই বাড়িতে সবচেয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছে অর্পিতার আম্মু।কাপড়চোপড় গোছগাছ করছেন কাজের ফাঁকে ফাঁকে। বড় একটা সুটকেস দেখা যাচ্ছে বিছানার পাশে।
আমার কলি এখন অনেকটাই বড় হয়েছে।অর্পিতা এসে একটু পরে পরেই দেখে যায়। আচ্ছা সে কি ভাবে যে একটু পর পর দেখলেই কলি তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাবে!আবার নাক দিয়ে ঘ্রাণ নেবার চেষ্টা করে মাঝে মাঝে।বোকা মেয়ে,মাত্র তো কলি।গোলাপ হতে আরও কিছুদিন লাগবে,তবেই না সৌরভ ছড়াবে।এই ছোট্ট মেয়ের কর্মকাণ্ড দেখে আমার হাসি পায়।কিন্তু আমার আজ হাসতে ইচ্ছা করছে না।আমার মন খারাপ।সামনের বাসার কলেজ পড়ুয়া মেয়েটার কথা মনে আছে? তার বাবা আজকে মারা গেছেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হল মৃত বাড়িতে কোন লোকজনের সমাগম নেই।বড় একটা এম্বুল্যান্স আর একটা পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে বাসার সামনে। সবাই কেমন যেন বাড়িটা এড়িয়ে চলতে পারলেই বাঁচে। সান্ত্বনা দেবার মানুষটুকুও কি নেই এই শহরে? মানুষ কি এতই নিষ্ঠুর!! এই নিষ্ঠুর মানুষদের আমি আমার গোলাপের সৌরভ দেবোনা।
অর্পিতারা আজ কোথাও মনে হয় চলে যাচ্ছে। আসাদ সাহেবের সাদা গাড়িটা সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছে বাসার নীচে।অর্পিতার আম্মু ব্যস্ত শেষ সময়ে প্রয়োজনীয় কিছু রেখে গেলেন কিনা দেখে নেবার জন্যে।আসাদ সাহেব সোফায় বসে খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন। অর্পিতার মন খারাপ। কেন বুঝতে পারছি না।কিন্তু তার মন খারাপ দেখে আমারও মন খারাপ হচ্ছে।এর আগে এই ছোট্ট মেয়েটাকে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখিনি।ঘুরে ফিরে একটু পর পর আমার কাছে আসছে,গোলাপের কলিতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,ঘ্রাণ নেবার চেষ্টা করছে। সে কি আমার জন্যে মন খারাপ করেছে?? কিন্তু মানুষের মন খারাপের পেছনে আমার কি-ই বা হাত আছে।আমাকে মানুষের মন খারাপ করে দেবার ক্ষমতা দেয়া হয়নি বোধয়।আসাদ সাহেব পেপার রেখে উঠে দাঁড়িয়েছেন।নাকে-মুখে সাদা কাপড়ের মত কি যেন একটা পড়ে নিলেন,অর্পিতার আম্মু অর্পিতার মুখেও এমন একটা কাপড় পড়িয়ে দিলেন,তার নিজের মুখেও একটা আছে।তারা এখন বেরিয়ে পড়বে আমি বুঝতে পারছি।ইদানিং আমি খেয়াল করেছি সবাই যখন বাসা থেকে বের হয় তখন এমন একটা কিছু নাকে-মুখে পড়ে বের হয়।কেন আমি জানি না,এমনটা এর আগে কখনো দেখিনি।ছোট্ট মেয়েটা ঘর থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে, কি জানি মনে করে আবার ফিরে এলো।ডাইনিং টেবিল থেকে পানির জগটা নিয়ে আমার কাছে আসলো।আমার টব ভর্তি করে পানি ঢেলে দিল।আশ্চর্য আজ তার আম্মু তাকে বললো না "বাবু পানি বেশি দিও না" বরং আমি বোধয় দেখতে পেলাম তিনি শাড়ির আঁচলে চোখ মুছলেন।ছোট্ট মেয়েটা আমার কলিতে হাত বুলিয়ে দিলো।নীচু হয়ে ঘ্রাণ নেবার চেষ্টা করলো।তারপর চলে গেলো।বাহির থেকে দরজায় তালা দেবার শব্দ পেলাম।
সাদা গাড়িটা চলতে শুরু করেছে।পেছনের সিটের বামপাশের জানালার কাঁচটা নামানো।ছোট্ট মেয়েটা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।গাড়ি এগিয়ে চললো।রাস্তা পেরিয়ে বড় মোড়টা ঘুরে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেল।আমি উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না।আমার সেই ক্ষমতা নেই।
আজ আরেকজন মারা গেল বোধয় পাশের বাসায়।কেউ এগিয়ে আসলো না আবারও।সেই এম্বুল্যান্স,পুলিশ এসে নিয়ে গেলো।মানুষের দুঃখও বোধহয় কমে গেছে এখন।মৃত্যুও মানুষকে কষ্ট দেয় না।অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে।কিন্তু আমার অনুভূতি এখনো মানুষের মত ভোঁতা হয়ে যায়নি।আজ দুদিন হয়ে গেলো অর্পিতারা ফিরে আসেনি।বাচ্চা মেয়েটার অস্তিত্বের অভাব আমি সহ এই বাড়িটার প্রতিটি জিনিসপত্র বোধহয় বুঝতে পারছে।এই সুন্দর টকটকে লাল গোলাপটা দেখে মেয়েটা কত খুশিই না হতো।ও আচ্ছা বলা হয়নি কলি ফুটে গোলাপ বের হয়েছে গতকাল।অথচ মেয়েটা দেখতে পেলো না।এই প্রথম খুব একা লাগছে।কোথাও যেন কেউ নেই।কোথাও কেউ ভালো নেই।রাস্তাটা সারাদিন খালি পরে থাকে।খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না আর বের হলেও নাকে মুখে সেই কাপড়ের মত কিছু একটা পড়ে বের হচ্ছে।বাচ্চারা শেষ কবে নীচে খেলাধুলো করেছিলো ভুলে গেছি।এই শহরে কি তবে সুখ কী তা ভুলে যাচ্ছে!কলেজ পড়ুয়া মেয়েটাও আজ চলে যাচ্ছে মায়ের সাথে।সেই ছেলেটাকে দেখা গেল দূরে দাঁড়ানো।নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে বোধহয়।যাবার আগে মেয়েটা গাড়ির জানালা খুলে একটা কাগজ ফেলে গেলো।
আজ সাতদিন হয়ে গেল অর্পিতারা ফিরে আসেনি।গোলাপটা তার জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে গেছে।শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে।ছোট্ট মেয়েটার জন্যে খারাপ লাগা কাজ করছে।এত কষ্ট করলো অথচ গোলাপ ফুটলো এখন নেই। আমিও বেশ শুকিয়ে গেছি।আমার শিকড় পানি খুঁজে পাচ্ছে না।সবুজ পাতাগুলো কেমন নুইয়ে পড়েছে,চোখে ঝাপসা দেখছি অল্প অল্প।এই ঝাপসা চোখ নিয়েই সারাদিন তাকিয়ে থাকি রাস্তার বড় মোড়টার দিকে।কোন সাদা গাড়ি আসে কিনা দেখার জন্য।নাহ দিন শেষে আমি নিরাশ হই।এই রাস্তা দিয়ে এখন শুধু এম্বুল্যান্স আর পুলিশের গাড়ি আনাগোনা করে।
আজ পনেরো দিন।সকাল হচ্ছে আস্তে আস্তে। আমি এখন জীবনের শেষ প্রান্তে।আমার কান্ড-শাখা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।পাতাগুলো সব রোদের তাপে শুকিয়ে ঝড়ে পড়েছে। টবের মাটি শুকিয়ে ফেটে গেছে জায়গায় জায়গায়।শিকড়গুলো একফোঁটা পানির জন্য হাহাকার করছে।এখন আর চোখে কিছু দেখতে পাই না,সবই অন্ধকার,সবই ঝাপসা।আসাদ সাহেবের উপর রাগ হচ্ছে।নাহ আমাকে একা ফেলে রেখে গেছে বা পানির জন্য না,ছোট্ট মেয়েটা গোলাপ দেখতে পারলো না এইজন্য খারাপ লাগছে।অথচ আর একটা দিন থেকে গেলেই মেয়েটা গোলাপ দেখতে পারতো।হাত দিয়ে ছুঁতে পারতো,ঘ্রাণ নিতে পারতো।বাচ্চা মেয়েটা হয়তো আমার কথা মনে করে চোখের পানি ফেলছে।রোদ এসে গায়ে পড়ছে বুঝতে পারছি।সূর্য উঠে গেছে।আমার নিঃশ্বাস নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছে এখন।হঠাৎ মনে হল সূর্যের আলোয় ঝাপসা দেখতে পাচ্ছি বাচ্চারা আবার খেলতে নেমেছে বাসার নীচে। মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেছে আবার।সবাই কাজে যাচ্ছে, তাদের কারো নাক মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা নয়।পৃথিবীতে আবার শান্তি ফিরে এসেছে।দূর থেকে একটা সাদা গাড়ি হনহন করে এগিয়ে আসছে।পেছনের সিটের জানালার কাঁচটা নামানো।একটা বাচ্চা মেয়ের মুখ দেখতে পাচ্ছি সেখানে।আমি আর কিছু দেখতে পেলাম না,সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেলো।
©নাহিদ হাসান সানি

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: এই শহরের মানুষ যেমনই থাকুক, তারপরও সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে হবে।
অর্পিতা কে বাদ দেন। এরাই শান্তি নষ্ট করে।

সব মিলিয়ে গল্প ভালো হয়েছে।

২১ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪২

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লাগলো ।
নিখুঁত প্রকাশ।

২১ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪২

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: Nahid2019,





একটি ক্রান্তিকালীন বোধ নিয়ে নিঃস্তেজ হয়ে যাবার আগেও একঝলক আশার আলো দেখিয়ে এক অদেখা গোলাপ শেষ সুগন্ধি ছড়িয়ে গেলো!

২১ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪৩

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৪| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৮:৫৪

সাকলায়েন শামিম বলেছেন: অনেকদিন পর চমৎকার একটা গল্প পড়লাম। ভালো লেগেছে।

২১ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪৩

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.