নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ক্ষুদ্র ব্লগার একজন আগাগোড়া স্বাধীনচেতা বাংলাদেশী। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনপ্রকার আপোষ করে না। ধন্যবাদ

নাহিদ ২০১৯

নিজের সম্পর্কে লিখতে লজ্জা পাই,কারন নিজেকে নিয়ে বিশেষভাবে যে কি লিখবো তাই খুঁজে পাই ন।তবে হ্যাঁ আমি একজন মানুষ, রোবট নই এটুকু বলতে পারি।

নাহিদ ২০১৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিসমার্কের গল্প

২৪ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩৩



মনে করুন আপনি এমন একটি যুদ্ধজাহাজের কাপ্তান যেটিকে বৃটিশ রয়েল নেভির ৫ টি যুদ্ধ জাহাজ ঘিরে ধরে গোলাবর্ষণ করছে। মাথার উপর দিয়ে টর্পেডো বোম্বার উড়ে এসে একের পর এক টর্পেডো দিয়ে আঘাত করে যাচ্ছে। তার উপর আপনার যুদ্ধজাহাজের ৪ টি মূল কামান-ই ধ্বংসপ্রাপ্ত। রাডার সিস্টেম অকার্যকর হওয়ার কারণে নীল সমুদ্রে আপনি জাহাজ নিয়ে এক চুলও অগ্রসর হতে পারছেন না। অথচ দখলকৃত ফ্রান্সের সমুদ্র বন্দর মাত্র একদিনের পথ। এমন অবস্থায় আপনার হাতে দুটি রাস্তা খালি। এক, প্রতিপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ দুই, এক হাতে সিগারেট আর অন্য হাতে কফির কাপ নিয়ে হাসি মুখে আসন্ন মৃত্যুকে বরণ করে নেয়া।
কি করতেন এমন অবস্থায় ?
২য় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে জার্মান যুদ্ধজাহাজ ❝বিসমার্কের❞ কাপ্তান আর্নেস্ট লিন্ডম্যান (Kapitän zur See Ernst Lindemann) ২য় পথটিই অনুসরণ করেন।
অ্যাঙ্গাস কনস্টাম ❝The Bismarck 1941❞ এ আর্নেস্ট লিন্ডম্যান সম্পর্কে লিখেন ❝Lindemann chain-smoked cigarettes and drank coffee all the time, which

may explain why he was seen as a man of boundless energy. ❞

২৪শে মে ১৯৪১ এর সকাল
ডেনমার্ক প্রণালী
৫.৩৭ মুখোমুখি জার্মান যুদ্ধজাহাজ বিসমার্ক,প্রিন্স ইউগেন এবং বৃটিশ রয়েল নেভির এইচএমএস হুড,প্রিন্স অব ওয়েলস।
৫.৫২-৬.০০ মাত্র ৮ মিনিটের ব্যবধানে তৎকালীন বৃটিশ রয়েল নেভির গৌরবের প্রতীক এইচএমএস হুড বিসমার্কের গোলার আঘাতে বিকট শব্দে দ্বিখণ্ডিত হয়ে সাগরের বুকে তলিয়ে গেল,পাশাপাশি আরেক জাহাজ প্রিন্স অব ওয়েলস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
এই খবর যখন লন্ডনে গিয়ে পৌঁছায় পুরো লন্ডনে নিস্তব্ধতা নেমে আসে। বৃটিশ নৌসেনাদের মনোবল ভেঙে পড়ে।
বৃটিশদের মান সম্মান উদ্ধার করতে এবং এইচএমএস হুডের প্রতিশোধ নিতে এইচএমএস জর্জ ৫, এইচএমএস রুডনি, এইচএমএস ভিক্টোরিয়াস, এইচএমএস নরফোক, এইচএমএস ডোর্সশায়ার, এইচএমএস শোফক, এইচএমএস প্রিন্স ওয়েলস এবং অসংখ্য টর্পেডো বোম্বার,সার্চ প্লেনের সমন্বয়ে বৃটিশ নেভি শুরু করে ইতিহাসের অন্যতম সার্চ অপারেশন ❝Hunt The Bismarck❞

আসন্ন বিপদের আঁচ পেয়ে বিসমার্ক কৌশলে সহকারী জাহাজ প্রিন্স ইউগেনকে বৃটিশদের নাগালের বাইরে চলে যেতে সহায়তা করে।

২৬শে মে, ১৯৪১
সকাল ১০.৩০, বিসমার্ক অবশেষে বৃটিশদের নজরে আসে।
রাত ৯ টা, টর্পেডোর আঘাতে বিসমার্কের রাডার সিস্টেম অকার্যকর হয়ে পড়ে।
রাত ১১.৫৯, বিসমার্ক থেকে জার্মানিতে রেডিও সিগনাল পাঠানো হয় ❝hopeless situation. Speed now 7 knots❞

২৭শে মে ১৯৪১
সকাল ৮.৪৫, শুরু হয় নীল সাগরের স্থীর আহত বাঘ বিসমার্কের উপর উপুর্যুপরি হামলা। তিন দিক থেকে ঘিরে ধরে গোলাবর্ষণ শুরু হলো। টর্পেডো বোম্বার একের পর এক টর্পেডো নিক্ষেপ করলো। বিসমার্ক লড়ে গেল একাই।
৯.৩০ নাগাদ জার্মান যুদ্ধজাহাজ বিসমার্কের আর একটিও গোলা নিক্ষেপ করার মত কামান অবশিষ্ট রইলো না।
কিন্তু বৃটিশ নাবিকেরা অবাক হয়ে যায় এটা ভেবেই যে এত এত গোলা বর্ষণের পরেও বিসমার্ক ডুবছে না। এর কারণ ছিল বিসমার্কের কাঠামোর পুরুত্ব। অবশেষে সিদ্ধান্ত হয় বিসমার্কে ভেতর থেকেই ধ্বংস করে ডুবিয়ে দেয়া হবে যাতেকরে জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র বৃটিশদের হাতে না আসে।
১০.৪০ এলো সেই ক্ষণ। অ্যাঙ্গাস কনস্টাম তার বইতে লেখেন ❝Bismarck finally sinks. 116 survivors

recovered from the water.❞
বীর কাপ্তান আর্নেস্ট লিন্ডম্যান (Kapitän zur See Ernst Lindemann) ডুবতে ডুবতেও হয়তো মুখে হাসি এঁকে তার জ্বলন্ত সিগারেট আর কফির কাপই ধরে ছিলেন।
কবি তাই বলেছেন :-
"পরাজয়ে ডরে না বীর,
ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ, লড়ে যায় বীর।
হে বীর,বল চির উন্নত মমশীর।"

Recommended Books :-
1. The Bismarck 1941
2. The Last Nine Days of The Bismarck
(কিছু শব্দের উচ্চারণগত ত্রুটিতে ক্ষমাপ্রার্থী)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪৮

শেরজা তপন বলেছেন: বিসমার্কের ধ্বংসের ব্যাপারে কিছু জানতাম -আরো সমৃদ্ধ হলাম

২৯ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৪

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে। গুড।

২৯ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৪

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০০

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব ইন্টারেস্টিং পোস্ট। আরেকটু বড় হলে ভালো হতো।
পোস্টে প্লাস। + +

২৯ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৪

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.