নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ক্ষুদ্র ব্লগার একজন আগাগোড়া স্বাধীনচেতা বাংলাদেশী। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনপ্রকার আপোষ করে না। ধন্যবাদ

নাহিদ ২০১৯

নিজের সম্পর্কে লিখতে লজ্জা পাই,কারন নিজেকে নিয়ে বিশেষভাবে যে কি লিখবো তাই খুঁজে পাই ন।তবে হ্যাঁ আমি একজন মানুষ, রোবট নই এটুকু বলতে পারি।

নাহিদ ২০১৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙালীর আত্মসমালোচনা

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৫:৪৬


ইউক্রেনের বর্তমান অবস্থা আর বাংলাদেশের একাত্তরের অবস্থার মধ্যে অন্যতম পার্থক্য হল, ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী দেশ পোল্যান্ডে একজন ইন্দিরা গান্ধী নেই। ২০২২ এর এই সময়ে ভ্লাদিমির পুতিন ভালো করেই জানে গোটা ইউক্রেন দখল করে নিলেও বিশ্বের অন্য কোন দেশ তার সেনাবাহিনী নিয়ে এগিয়ে আসবে না। অন্যদিকে একাত্তরের এপ্রিলে ইন্দিরা গান্ধী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউনাইটেড নেশন, গোটা আরব বিশ্ব, পাকিস্তান এবং চীনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই যুদ্ধে যাওয়ার জন্য মনোনিবেশ করেন। সে মাসেই তৎকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান কে ডেকে বলেন, “You [Manekshaw] must stop them. If necessary, move into East Pakistan but stop them.” এই মহিলার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরোটাই বোধহয় কলিজা ছিল। মার্গারেট থেচারকে কোন আক্কেলে আয়রন লেডি খেতাব দেয়া হলো তা বুঝে আসেনা কিন্তু নিঃসন্দেহে এশিয়ার আয়রন লেডি ইন্দিরা গান্ধীই। বিশ্ব দরবারে তার কূটনৈতিক সক্ষমতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দৃঢ়তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার মাত্র ৫০ বছরে এসেই অকৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের পেছনে এই মহীয়সী নারীর অবদানকে ভুলতে বসেছে। সবকিছুকে ধর্মের চশমা দিয়ে দেখতে আমরা এখন বড্ড ভালোবাসি। অথচ তার জায়গায় নামটা এপিজে আবদুল কালাম হলে আমরা কিন্তু ঠিকই মাথায় নিয়ে নাচতাম।

ইন্দিরা গান্ধী তো তাও পার্শ্ববর্তী দেশের।আমরা অন্তর থেকে পঁচে যাওয়া জাতি তো নিজ দেশের হিরোদেরকেই গণহারে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা খেতাব দিতে ব্যস্ত। সরকার চেঞ্জ হয় তার সাথে সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ইতিহাসও চেঞ্জ হয়। স্বাধীনতার ঘোষক কে এ নিয়ে মারামারি হয়। সংসদের মত জায়গা রঙ্গ মঞ্চ। পোশাক রপ্তানি প্রতিবছর বছর আকাশ ছোঁয়,তার সাথে পাল্লা দিয়ে মহাকাশ পেরিয়ে যায় দেশের জিডিপি অথচ বৃদ্ধ কঙ্কালসার একাত্তরের নায়কেরা একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে অশ্রুসিক্ত নয়নে একে একে কবরগত হচ্ছে। তাদের এই চাপা কান্না যেন আবার কোনদিন এই দেশের বুকে অভিশাপ হয়ে নেমে আসে কারণ কথায় আছে না "আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু একদম ছেড়ে দেন না।"

বিশ্ব ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে। আগামী বিশ্বে আরো বড় বড় ঘটনা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। পরাশক্তিগুলো তাদের নিজেদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য একে অপরকে মরণ কামড় দিবে। আর আমরা জাতি হিসেবে দিন দিন যে পরিমাণ নিকৃষ্ট,জঘন্য,আত্মভোলা এবং নাফরমানে পরিণত হচ্ছি ভবিষ্যতে ইউক্রেনের মত এমন কোনো পরিস্থিতি সামনে এসে পড়লে, একাত্তরে সাত কোটির মধ্যে তাও আড়াই লাখের মতো দেশ প্রেমিক অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল কিন্তু এখন হয়তো আড়াইহাজার খুঁজে পাওয়াই কঠিন হবে। কারণ দেশপ্রেম তো আর কোন গান না যে অনলাইন থেকে ডাউনলোড দিয়েই আমি দেশপ্রেমিক হয়েগেলাম।দেশপ্রেম বছরের-পর-বছর চর্চা করতে হয়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম দেশপ্রেম ছড়িয়ে দিতে হয়। নতুন প্রজন্মকে দেশ গঠনের পেছনের নায়কদের গল্প শোনাতে হয।

আমরা দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি পরে, তার আগে আমরা হচ্ছি বিএনপি-আওয়ামী লীগ। আমরা হচ্ছি হিন্দু-মুসলমান। আমরা হচ্ছি স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি-বিপক্ষ শক্তি। আমরা হচ্ছি শাহবাগী-শাপলা চত্বরী। আমরা হচ্ছি ডেমোক্রেট-কমিউনিস্ট। আমরা হচ্ছি আস্তিক-নাস্তিক। আমরা হচ্ছি অমুক ইউনিভার্সিটির-তমুক ইউনিভার্সিটির। এইরকম হাজার ভাগে বিভক্ত আমরা। শুধুমাত্র ক্রিকেটেই বোধহয় গোটা জাতি একত্রিত হয়। তাও তো না। এখন তো আবার বাংলাদেশের খেলাতেও সগৌরবে বাঙালির হাতে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ে।

বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা দিন দিন নিচের দিকে যাচ্ছি। আরো বেশি ভঙ্গুর হচ্ছি। নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের শুধরাতে হবে। নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। শুরুটা নিজে থেকেই করা উচিত। সুশিক্ষিত সুশৃংখল দেশপ্রেমিক জাতি দিয়ে একটি সফল রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। বাঙালি জাতি হিসেবে সবাই এক সুরে এক কণ্ঠে বলতে চাই," আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।"
ও এখন তো আবার এই গানেও বাঙালি বিভক্ত।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৬:১৯

সোবুজ বলেছেন: মানুষ হবার আগেই আমরা হয়ে যাই ধার্মীক।অন্য ধর্মের লোকদের ভালোবাসতে না শিখে ঘৃনা করতে শিখি।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৩

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: সঠিক বলেছেন, সোবুজ

২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:০৫

গরল বলেছেন: ইসলাম ধর্মে মূর্তিপূজাকে ঘৃণ্য কারণ এটা একধরণের শিরক, আর তাই ছোটবেলায় যারা মক্তবে গেছে আরবী শিখতে তাদেরকে এটাই শিখানো হয়েছে যে হিন্দুরা মূর্তি পূজা করে তাই তারা জাহান্নামি তারা ঘৃণ্য। এটা বাঙালীর মগজে ঢুকে গেছে, অতএব পকৃত মুসলমান যারা তারা হিন্দুদের ঘৃণা করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে হিন্দুদের নাচ, গান, সিনেমা, পোষাক এসবের ব্যাপারে কোরাণে কিছু বলা নাই তাই ভারতীয় চ্যানেল, সিনেমা বা পোষাকের জন্য পাগল হলে কোন পাপ নাই।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৩

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: ধর্ম কখনও অসৎ উপদেশ দেয় না। আমার জানামতে ইসলামে কোথাও লেখা নেই যে হিন্দুদের ঘৃণা করতে হবে যেমনটা হিন্দু ধর্মেও লেখা নেই যে একজন গরুর মাংস খেলেই তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে। এইসব ধর্মকে রাজনৈতিক এবং নিজের স্বার্থ হাসিলের প্রয়াস মাত্র

৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:১২

সোনালি কাবিন বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২৮

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: ধন্যবাদ সোনালী কাবিন

৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:২২

মাস্টারদা বলেছেন: আমরা দেশপ্রেমের চর্চা করিনে। করা উচিত। করতে হবে। সুযোগ থাকে না, সুযোগ করে নিতে হয়। তাই সবার আগে অভিযোগ করার রোগ বাদ দিতে হবে।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২৭

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মাস্টারদা

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৩৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: সব দোষ এই হুজুরদের। এরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখছে, ভারতের অবদান স্বীকার করে নাই; এরা পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঢুকাইছে, কিন্তু সেখানেও লিখে নাই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাটক, সিনেমা, গান, কবিতা, উপন্যাস লিখছে, কিন্তু এই হুজুরেরা কিচ্ছুতে ভারতের কথা ঢুকায় নাই!

হুজুরদের নিয়েই আসলে সমস্যা!

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২৬

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: সকল সমস্যার গোড়ায় হুজুররা একথা তো বলি নাই!! আমি এখানে সর্বসাকুল্যে গোটা বাঙালি জাতিকেই টেনে এনেছি যার মধ্যে আমিও আছি। ধন্যবাদ

৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: বাঙ্গালী হলো শাখের করাত।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২১

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: শাঁখের করাতই বটে, উভয় দিকেই সংকট।

৭| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪৮

জ্যাকেল বলেছেন: ১৯৭১' এ ভারত সাহসী ভুমিকা পালন করেছিল এবং তাহা প্রশংসার দাবী রাখে। তবে উহাও ছিল স্বার্থের কারণে যা আমরা সারাজীবন স্বার্বভৌমত্বকে পুতুল বানিয়ে ভারতের পদানত হয়ে পরিশোধ করে যাইব। ইন্দিরা মাদাম অনেক সাহসী ছিলেন এবং সঠিক রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। উনার প্রতি আজন্ম শ্রদ্ধা। যদিও শিখ'দের নিয়ে একটা বড় কলংক র‍য়ে গেল।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২৮

নাহিদ ২০১৯ বলেছেন: এইখানে কোন যদি কিন্তু নাই।সব দেশেরই নিজস্ব স্বার্থ থাকে। স্বার্থ থাকলেই যে একটা যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া যায় সেটা কোথায় পেলেন ? রাখাইন স্বাধীন হলে এটাতেও বাংলাদেশের স্বার্থ আছে। বাংলাদেশ কি তার স্বার্থ দেখে এখন মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধে যাবে ?

৮| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:৫৫

জিয়াউর রহমান ফয়সাল বলেছেন: খুবই ভালো বলেছেন ভাই,
ইউটুইবে "KHAN GS ACADEMY" নামক চ্যনেলে লিংকঃ Click This Link কিছু ভুলভাল তথ্য দেয় , ভিডিও টি দেখবেন প্লিজ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.