নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাকিব১

নাকিব১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জঙ্গিবাদ রুখতে প্রয়োজন মাদ্রাসা শিক্ষার ব্যাপক প্রসার

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯

ঘটনা নংঃ১
রাতে বাসায় ফিরতেছি। কিছুটা রাত হয়ে গেছে,প্রায় ১১ টা বাজে। ঢাকা শহরে যদিও এটি তেমন কোন রাত নয়। কিন্তু ঈদের ছুটিতে ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যাবার কারণে গাড়ির সংখ্যা যেমনি কম, তেমনি নিস্তবদ্ধতাও ঘিরে রেখেছে। এর মাঝে রয়েছে পুলিশ চেকপোষ্টের ঝামেলা। গুলশান হামলা এবং শোলাকিয়ায় ঘটনার পর পুলিশ চেকপোষ্টের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তা দিয়ে আমি এবং এক বয়বৃদ্ধ লোক হেটে যাচ্ছি। ওনার পরনে জুব্বা,মুখে সাদা দাড়ি এবং মাথায় জাকির নায়েক টুপি। আর আমার পরনে নিত্যদিনকার ন্যায় ফরমাল শার্ট এবং গ্যাবাডিন প্যান্ট। সামনেই পুলিশ চেকপোষ্ট। পুলিশের দায়িত্বরত ব্যক্তিরা আমাদের থামতে বললেন। আমরা দু’জনেই দাড়ালাম। একজন পুলিশ ইশারায় আমাকে চলে যেতে বললেন। আমি সামনে এগিয়ে পিছনে ফিরে দেখি, সেই বয়বৃদ্ধের পা থেকে মাথা পর্যন্ত সার্চ করা হচ্ছে। মাথার টুপি খুলে দেখাতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত জুব্বা কোমর পর্যন্ত তুলে পুলিশদেরকে দেখাতে হলো। তারপর সেই বৃদ্ধের উপর নেমে এলো প্রশ্নের বান। নাম কি? থাকেন কোথায়? কি করেন? বাসায় কে কে আছে? দাড়ি কবে থেকে রেখেছেন? তাবলীগ করেন নাকি জামায়াত ইসলাম করেন? ছেলে মেয়েরা কি কি করে? ঢাকায় নিজস্ব বাড়ি নাকি ভাড়া? এরকম নানা প্রশ্ন সেই বৃদ্ধের দিকে ছুটে আসতে লাগল! আর সেই বৃদ্ধও বেশ ধৈয্যের সঙ্গে উত্তর দিয়ে গেল। বৃদ্ধের উত্তর পুলিশদেরকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে কিনা জানি না তবে এ যাত্রায় তিনি নিস্তার পেলেন।

ঘটনা নংঃ২
ঈদের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে ট্টেন ষ্টেশনগুলোতে কি রকম ভীড় হয় সে বিষয়ে আমাদের সকলেরই কম বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। ষ্টেশনে বসে আছি এমন সময় লম্বা পাঞ্জাবী পায়জামা পরা যুবক ষ্টেশনে প্রবেশ করল। তাদের ঘাড়ে ব্যাগ হাতে ব্যাট এবং ষ্ট্যাম্প। পুলিশ তাদের পথরোধ করে দাড়াল। প্রথম প্রশ্ন কোন মাদ্রাসায় পড়ো? ব্যাগে কি? বোমা টোমা আছে নাকি? ব্যাগ নামাও! হাতে ব্যাট ষ্টাম্প কেন? এবার সেই পাঞ্জাবী ওয়ালা যুবকরা ব্যাগ খুলতে খুলতে উত্তর দিল, বাড়িতে ছোট ভাই আছে! ওদের জন্য ব্যাট ষ্টাম্প নিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে একজন পুলিশের কনষ্টেবল ব্যাগের মধ্যে সাদা ক্রিকেট বল খুঁজে পেল! এবার পুলিশের এসআই বলটাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে শুরু করলেন। বললেন, এটা বোমা নয়তো? এ কথা বলে বলটাকে মাটিতে ছুড়ে পরীক্ষা করে দেখলেন! পুলিশের এই বেকুবপনা দেখে ষ্টেশনে অপেক্ষারত অনেকেই হেসে উঠলেন! এইবার পুলিশের এসআই ব্যাট নিয়ে কাজে ঝাপিয়ে পড়লেন। এক কনষ্টেবল কে বললেন, ব্যাটের গ্রিপারটা খুলে দেখো তো! ব্যাটের গ্রিপার খোলা হলো,যা থাকার তাই দৃশ্যমান হলো। এবার পুলিশবাবু তাদেরকে পাঞ্জাবী খুলতে বললেন। পুলিশের এই নির্দেশে বেচারাদের মুখটা কালো হয়ে গেল। ষ্টেশনের ভরা মানুষের সামনে এখন তাদের পাঞ্জাবী খুলতে হবে! কিন্তু বাঁচতে তো হবে! এরপর তারা পাঞ্জাবী খুলে পুলিশ বাবুর হুকুম পালন করলেন। কোন কিছু না পেয়ে পুলিশবাবু চলে যাবার আগে বললেন, তরুন বয়সে এরকম পাঞ্জাবী পরে ঘুরে বেড়ানোর দরকার নাই।

উপরের দু’টি ঘটনা প্রমাণ করে পুলিশরা এখনও মোল্লানীতিতেই পড়ে আছে। অর্থাৎ তারা সেই প্রাচীন যুগের বক্তব্যের উপর ঈমান রেখে মাদ্রাসার ছাত্র এবং আলেমদের মাঝেই জঙ্গি খুজে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু পুলিশবাবুরা বুঝতে পারছে না এটা আইএস এর যুগ। আমাদের দেশের মাদ্রাসাগুলোতে অতি শক্তিশালী অনুবীক্ষণ যন্ত্রদিয়ে অনুসন্ধান করলে, বড়জোর শিবির পাওয়া যাবে কিন্তু আইএস নয়। কারণ মাদ্রাসার ছাত্ররা ইসলামের নুন্যতম বেসিক জ্ঞানটা জানে। তাদেরকে দু’আয়াত পড়িয়ে দলে ভিড়ানো সম্ভব নয়। আর যারা ছোট বেলা থেকেই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশুনা করেছে। ইসলাম চর্চার নুন্যতমও সুযোগও পায় নি। সেই হতভাগা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ষ্টুডেণ্টদের মধ্যে অধিকাংশকেই বিভ্রান্ত করা সম্ভব। কারণ তাদের ভিতরে ইসলামের নুন্যতম বেসিক জ্ঞানটা নেই। তাদের সামনে কুরআনের দু’তিনটা কিতালের আয়াত পড়ে শোনালেই তারা বিভ্রান্ত হয়ে যায়। আর বিভ্রান্ত হবেই বা না কেন, কাউকে যদি জান্নাতে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা বাতলিয়ে দেয়া যায় যে কেউ সেই রাস্তায় পথ ধরবে! তেমনি তাদেরকে বোঝানো হয়েছে, তোমরা মারো এবং মারতে গিয়ে মরো তারপর তোমরা জান্নাতে চলে যাবে! এক্ষেত্রে তারা সূরা তাওবার ৭৩ নাম্বার আয়াত প্রদর্শন করে। এই আয়াত দেখেই আমাদের তথাকথিত আধুনিক এবং আদরের ঘরের দুলালরা কিতালে ঝাপিয়ে পড়ছে। কিন্তু তারা একটিবারও সূরা তাওবার প্রেক্ষাপট শানে নুযুল পড়ে দেখার সুযোগ পাচ্ছে না। তাফসীর পড়তে পারছে না। হাদীস তো আরও পরের কথা! আর ইসলাম সম্পর্কে স্বল্প জানার কারণেই এই তরুনদেরকে আইএস এ ভিড়ানো সম্ভব হচ্ছে।

বেশ কিছুুদিন আগে একটি ইংরেজি জার্নালে পড়েছিলাম, ‘ইসলামী চরমপন্থা এবং নাস্তিক্য বা সেক্যূলারি চরমপন্থা সংগঠিত হয় স্বল্প জানার কারণে’! কোন ক্ষেত্রেই চরমপন্থা মঙ্গলজনক নয়। তা আমরা অতীতেও দেখেছি বর্তমানেও দেখেছি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা এই জঙ্গিবাদ রুখবো কি ভাবে? আমরা আমাদের তরুনদেরকে এই আইএস এর মরণ থাবা থেকে কিভাবে রক্ষা করব? উত্তর একটাই হতে পারে, আর তা হলো আপনার সন্তানকে ইসলামী জ্ঞান অর্জনে উদ্বুদ্ধ করুন। তাদের শরীয়াহ বিষয়ে জানতে প্রয়োজনীয় শিক্ষার ব্যবস্থা নিন। আমরা মিডিয়ায় এতোদিন শুনে এসেছি, মাদ্রাসা বন্ধ করে দিলেই জঙ্গিবাদ বন্ধ হয়ে যাবে! এটা যে কতবড় মূর্খতা তা আমরা হাড়ে হাড়ে অনুধাবন করতে পারছি। আর এ কথা জোর দেয় বলতে পারি, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে মাদ্রাসা শিক্ষার বিকল্প নেই। জঙ্গিবাদকে রুখে দিতেই আমাদেরকে মাদ্রাসার শিক্ষার আরও ব্যাপক প্রসার করতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষাকে আরও ষ্টান্ডার্ড পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। আর এই মাদ্রাসা শিক্ষা এবং শরীয়াহর প্রকৃত শিক্ষাই পারে জঙ্গিবাদকে পুরোপুরি নির্মূল করতে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:১৪

বিদ্যুৎ চমক বলেছেন: আমার মনের কথা লিখে ফেলেছেন।

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:২৫

নাকিব১ বলেছেন: পড়ার জন ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:




আইনস্টাইনী ফরমুলা

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:২৮

নাকিব১ বলেছেন: মনে হতেই পারে।

৩| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:২০

সিগনেচার নসিব বলেছেন: অনেক সুন্দর বলেছেন ভাই
ধন্যবাদ পোস্টে ++++

৪| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০৪

মুক্তকণ্ঠ বলেছেন: আমাদের দেশের মাদ্রাসাগুলোতে অতি শক্তিশালী অনুবীক্ষণ যন্ত্রদিয়ে অনুসন্ধান করলে, বড়জোর শিবির পাওয়া যাবে কিন্তু আইএস নয়।জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে এযাবতকালের সেরা মন্তব্য।

৫| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ ভোর ৬:৩৭

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: আর এই মাদ্রাসা শিক্ষা এবং শরীয়াহর প্রকৃত শিক্ষাই পারে জঙ্গিবাদকে পুরোপুরি নির্মূল করতে।
মোক্ষম বচন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.