![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুদিন আগে গ্রামে গিয়েছিলাম। গ্রাম যে আর সেই গ্রাম নেই তা খুব ভালভাবেই উপলবদ্ধি করলাম। বাড়িতে থাকা ছোট ভাইটাকে নিয়ে আম্মার চিন্তার অন্ত নেই। ইন্টারটা শেষ করে ছোট ছেলেকে ঢাকায় পাঠাতে পারলেই যেন আম্মার স্বত্বি। এখন গ্রাম কে গ্রাম ছড়িয়ে গেছে ইয়াবা অথবা বাবা নামক ট্যাবলেট। রাস্তায় হাটতেও নাকি মানুষ ইয়াবার স্ট্রোবেরির সুঘ্রাণ পান। যদিও এতোবড় হয়ে গেলুম আজঅবধি ইয়াবা নামক ট্যাবলেটটি স্বহস্ত দিয়ে একটি বারের জন্য ধরতেও পারলাম না। এটাকে আফসোস বলব নাকি আত্নতৃপ্তি বলব বুঝতে পারছি না। সেটাকে ব্যার্থতাই বলতে হয়, কারণ আজকাল হাইস্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ইয়াবা খাচ্ছে সেখানে আমি যেন এলিয়েন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছি। আমরা যখন ক্রিকেট খেলা ছাড়া আর কিচ্ছু বুঝতাম না তখন তারা ইয়াবার মাঝে মত্ত হয়ে আছে।
আমি বাড়িতে থাকতেই একটি ঘটনা ঘটল। ইয়াবাসহ এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে পুলিশ হাতে নাতে গ্রেফতার করল। পুলিশ ওর হাতে যখন হাত কড়া পরাচ্ছিল তখন সে গলা খেঁকরিয়ে বলল, জানেন আমি কে? আমি ছাত্রলীগের অমুক। আমি উপজেলা কমিটির অমুক পজিশনে আছি। আমাকে ছেড়ে দিন! দেশের রাজা পুলিশও গলা বাড়িয়ে দু কথা বলে দিল! চল দেখি তোরে কোন বাপে বাঁচায়! বাঁপ দেখতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হল না। কিছুক্ষণ পর যুবলীগ সভাপতি থানায় হাজির। তারপর যা হবার তাই হল! থানায় চা নাস্তা খাবার কিছু টাকা পয়সা দিয়ে স্বসম্মানে থানা থেকে প্রস্থান করলেন ছাত্রলীগ নেতা ওরফে ইয়াবা ব্যবসায়ী।
ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের মাঝে একটি বিশ্বাস বেশ ভালভাবেই পাকাপোক্ত হয়ে গেছে! আমরা তো সরকারের লোক। অতএব আমাদের সাত খুন মাফ। তারই অংশ হিসেবে আমরা বদরুলের চাপাতি একশনটি দেখলাম। আমি এখানে দু’টো কথা বলতে চাই। বদরুল কেন চাপাতি দিয়ে আক্রমন করল?
এর স্বপক্ষে কারণ হতে পারে, আমরা বিগত সময়ে দেখেছি বেশ কয়েকজন নাস্তিক ব্লগার এবং প্রকাশককে হত্যা করা হয়েছে। তাদের হত্যার ধরন ছিল এই চাপাতি। সেই ব্লগার এবং প্রকাশকদের হত্যাকারীদের পুলিশ আজও স্বনাক্ত করতে পারেনি। সেই ঘটনানুসারে বদুরুলও এই চাপাতিরই আশ্রয় নিল। কিন্তু বিধি বাম! প্রকাশ্য দিবালোকে সে কাজটি ধরতে গিয়ে এইবার ধরা পড়ে গেল। কিন্তু ২০১২ সালেও সে একই কাজ করতে গিয়েছিল। তখন জনতা ধরে তাকে উত্তম মধ্যম দিয়ে হাসপাতালে প্রেরণ করে। ছাত্রলীগ কারো হাতে মাইর খেলেই যথারীতি তা শিবিরের দোষ হয়ে যায়। সে সময় হয়েছিলও তাই। অধ্যাপক জাফর ইকবার স্যার তার কলামে বদরুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, এই শিবিরের জন্য আরো কত বদরুলদের ভবিষ্যৎ ধুলিষ্যাৎ হয়ে যাবে।
আমরা ছাত্রলীগ। আমাদের সাত খুন মাফ। এই তত্বনুসারে গতবার শিবিরের উপর দিয়ে বেঁচে গেলেও এইবার সাধারণ জনতা ছাড়ে নি। এই সমস্যাটি বদরুলের একার নয়। এই একই ধরনের আত্নতৃপ্তিতে ভুগতেছে পুরো আওয়ামিলীগের অধিকাংশ নেতা কর্মীরাই। তার প্রমাণ আমরা গতকালকেই পেয়েছি।
বিগত কয়েকদিনে অধ্যাপক জাফর ইকবালের পরিবারসহ আনু মুহাম্মাদকে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের নাম করে হত্যার হুমকি দেয়া দেয়। এই হুমকির পর পরই কোন ধরনের প্রমাণ ছাড়াই জামায়াত শিবিরের সম্পৃক্ত থাকার কথা বলা হয়। কিন্তু অনুসন্ধান করে দেখা যায়, হুমকি দাতা বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের অঙ্গসংগঠন ওলামালীগের কেন্দ্রীয় নেতার ভেরিফাইড নাম্বার থেকে এই হুমকি গুলো প্রদান করা হয়েছে। নিজেকে আইএস বলে পরিচয় দিয়েছেন! তাহলে শস্যের মাঝেই ভূত লুকিয়ে আছে?
তার ফেসবুক আইডির স্ক্রীনশর্ট দিচ্ছি দেখেনিন।
আমি জানি আমাদের টকশো কেন্দ্রীক বুদ্ধিজীবি শাহরিয়ার কবিররা এটাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দিবেন। যেমনটা তারা বিশ্বজিৎের বেলায় বলেছিলেন। শাহরিয়ার কবিরকে কেউ একজন জিজ্ঞেস করছিলেন, শিবিরকে যদি রগ কাটার দায়ে ( যদিও কেউ কোনদিন ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেনি) নিষিদ্ধের কথা বলতে পারেন, তাহলে প্রকাশ্য দিবালোকে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে মারার দায়ে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি করেন না কেন? শাহরিয়ার কবির সাহেব বললেন, এক বৃহৎ ছাত্র সংগঠনে কতিপয় দুষ্টু ছেলে থাকবেই। তাই বলে তাদেরকে নিষিদ্ধের দাবি করা যায় না। আপনি তাদের একাত্তরের ভূমিকা খেয়াল করুন!
ওস্তাদ ঐ একাত্তরে দোহাই দিতে দিতে ছাত্রলীগ গত পাঁচ বছরে ৪৫৬ জনকে হত্যা করেছে। আরও কয়েক হাজারকে আহত করেছে। কিন্তু তারপরো ওস্তাদ জি কোন কথা বলবেন না। আমরাও বলতে চাই না। কিছু বললেই তো স্বাধীনতা বিরোধী হতে হবে। যেমন করে আনু মুহাম্মাদরাও এখন স্বাধীনতা বিরোধী। আমিও রাজাকার।
©somewhere in net ltd.