![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবি বলেছেন, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি’। কবি একদমই সত্যি কথা বলেছেন। বাংলাদেশ এর মত দেশ, বিশ্বের আর কোথাও আছে কিনা বিরাট সন্দেহ রয়েছে। সন্দেহের যতগুলো কারণ আমার স্টকে আছে তা সবগুলো বর্ণনা দিতে গেলে হয়তো রাতই শেষ হয়ে যাবে। তাই উল্লেখ্য কয়েকটি ঘটনা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেনাবাহিনীর দ্বারা অপারেশন ক্লিনহার্ট নামে একটিসন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। সেই সময় সেনাবাহিনী সরাসরি তাদের হাতে রক্ত লাগাতে চায় নি। ঘুরিয়ে পেচিয়ে রক্ত লাগানো হয়েছে। হ্যা জোট সরকারের আমলে র্যাব নামক আর একটি বাহিনীর জন্মদিয়ে সেনাবাহিনীর হাত নিজ দেশের মানুষের রক্তে লাল করা হয়েছে। তাদের সেই সময়কার কর্মকান্ডকে সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানাতো। এলাকায় এলাকায় মিষ্টি বিতরন করে আনন্দ প্রকাশ করত। র্যাবের হাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীরা বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। তাদের মধ্যে ছিল পিচ্চি হান্নানসহ আরো অনেকে। সেই সময়ে দেখতাম র্যাব একটি ভরসার নাম। র্যাব একটি আস্থার নাম। র্যাবকে কাছে পেলে মানুষ আস্থা খুঁজে পেত। নারীরার ইভটিজারের হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য র্যাবের নাম ব্যবহার করত। কিন্তু এখন? এখন আর কেউ ভুলেও র্যাবের নাম নিতে চায় না! র্যাবের বন্দুক যুদ্ধের কথা শুনলে সাধারণ মানুষের বুকটা ধক করে ওঠে! না জানি আবার কোন মায়ের বুক খালি হল! না জানি আবার কোন নীরিহ ছেলেকে জীবন দিতে হল। মেয়েরাও আর ইভটিজারদের র্যাবের ভয় দেখায় না। কারণ তারা নিজেরাই র্যাবের ভয়ে তটস্থ! এই অবস্থা শুধুমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব। বলুন তো এমন দেশটি আর কোথাও খুঁজে পাবেন?
চলতি সপ্তাহে ঝিনাইদহে আবারো ক্রসফায়ারে দুই জামায়াত নেতাকে হত্যা করা হল। আজ কেন জানি মনে হচ্ছে, ওদেরকে শুধু জামায়াত বলাই শ্রেয়। মানুষ বলা যায় না। মানুষ বললে তো তাদেরকে মানবাধিকার দিতে হবে। কিন্তু আমাদের সরকার কিংবা প্রশাসনের সেই সুযোগ কোথায়! তাদেরকে মানবাধিকার দিলে জামায়াতকে সমূলে উৎখাত করব কি করে! জামায়াতকে সমূল উৎখাত করার আগে নিজেরাও একবার নিজের দিকে থাকান। বিএনপি জোট সরকারের পূর্বের দিনকার কথা ভাবুন। যারা র্যাবের জন্ম দিয়েছে তারাই আজ র্যাবের হাতে ক্রসফায়ারে মারা যাচ্ছে। আপনারা গুম নামক নতুন একটি নির্যাতনের সঙ্গে দেশের প্রশাসন এবং মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। মনে রাখুন, একদিন হয়তো আপনাদেরকেও সেই গুম খুনের মুখোমুখি হতে হবে। বলুন তো এমন প্রতিহিংসা পরায়ন রাজনৈতিক দলে ভরা, এমন দেশটি আর কোথাও খুঁজে পাবেন?
ঝিনাইদহের যে দু’জন নিহত হলেন তাদের মধ্যে একজনের নাম ডাঃ তারেক হাসান সজীব। তার ঘরে ২৪ দিন বয়সের দু’টি ফুটফুটে বাচ্চা রয়েছে। তাকে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে যায় তখনো বাচ্চা দু’টির জন্ম হয় নি। বাবা হয়েও নিজের বাচ্চাদের চাঁদ মুখগুলো একটিবারের জন্যও দেখতে পেলেন না! আর হতভাগিদেরকে জন্মনেবার পরপরই পুলিশ র্যাবের গুলিতে পিতৃহারা হতে হল। আরে কি তাজ্জব বলুন তো! আমি কেন তাদেরকে নিয়ে ব্লগ লিখছি। তারা মানুষ না জামায়াত শিবির। তারা স্বাধীনতা বিরোধী। তাদেরকে নিয়ে আমি কথা বলছি অতএব আমি কিছু মানুষের কাছে রাজাকার বনে যাবে। বিশিষ্ঠ্য সমাজতান্ত্রিক কল্লোল মোস্তফাও কিন্তু কথা বলেছে। তাহলে কি কল্লোল মোস্তফাও রাজাকার হয়ে যাবে? বলুন তো, এমন ঘটনা আর কোন দেশে ঘটে? এমন দেশটি কি আর কোথাও খুঁজে পাবেন?
জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩ টি দেশের মধ্যে আর একটি দেশও আমাদের বাংলাদেশের মত পাবেন না। এমন দেশটি সত্যিই বিরল। বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্যজনক রাষ্ট্র হলেও হতে পারে। দেখুন না, একদিকে চলছে লাশের মিছিল কিন্তু কেউ কোন শব্দ করে না। চলুক লাশের মিছিল। তারা তো মানুষ না। তারা জামায়াত শিবির। জামায়াত শিবির হোমো সেপিয়ান্স অর্থাৎ মনুষ্য কুলের অন্তভুক্ত নয়। তারা আর এক নতুন প্রজাতির অন্তভুক্ত। তাই তো তাদেরকে মেরে সাফা করে দিলেও আমাদের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজান সাহেব টু শব্দটিও করবেন না। আবার ভিন্নদিকে কোন না কোন বিপুল চাকমাকে পুলিশ বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে গেছে তাতেই জাফর ইকবাল প্রথম আলো আর মানবাধিকারের মিজান সাহেবের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। একই দেশের নাগরিক হয়েও দ্বৈত অবস্থা দেখে আবারো কবির ভাষায় বলতে হয়, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবো না কো তুমি’!
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:১৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সহমত। এমন দলকানা বুদ্ধিজীবি গোষ্ঠীও আর কোথাও পাওয়া যাবে না...