নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাকিব১

নাকিব১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংখ্যালঘুদের উপর হামলা মানেই জামায়াতের সম্পৃক্ততা (!)

০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৩

১.
আমাদের বাড়ির পাশে বাবলাদারা ভাড়া থাকতেন। সেই জন্ম থেকেই বাবলাদাদের বাসায় যাতায়াত করছি। বাবলাদা ছিল অনেকটাই বন্ধুর মত। আমরা একসঙ্গে কতদিন আড্ডা দিয়ে সময় পার করেছি। ওদের পূজো আসলে ওরা পট ভর্তি করে মুড়ি, চিড়া, গুড় আর নারিকেলের তৈরী নাড়ু পাঠিয়ে দিত। সেগুলো আমাদের জন্য খুবই লোভনীয় ছিল। বাবলাদার মা এখনো বলেন, কি ব্যাপার! বাসায় আসো না কেন রে? বাসায় একবার আইসো তো! কিছু নাড়ু বানাইছি খাই যাবা!
সেই বাবলাদারা আমাদের বাড়ির পাশে আজ ৩০ বছর ধরে বসবাস করছে। তাদের সাথে কেউ কখনো ঝামেলা করেছে বলে আমি যেমন দেখিনি। তেমনি কেউই সেরকম কোন কথা কোনদিন শোনেনি।

২.
বড় মামার বন্ধু মজুমদার। অশোক মজুমদার। নিজের মধ্যে যারা আছেন তারা সকলেই ভারতে বসবাস করেন। তাই নিজের বলতে বাংলাদেশে তাদের আর কেউই নেই। তাই অতি আপনজন হিসেবে তারা বড় মামাকেই বেছে নিয়েছে। তাদের সুখে দুঃখে বিপদে আপদে তারা বড় মামাকে পাশে চায়। মামাও তাদেরকে নিরাশ করেননি। যতোটুকু পেরেছেন তাদের পাশে থাকার চেষ্ঠা করেছেন। তারাও আমাদের সব ভাল মন্দের খবর রাখতেন।

আমার একমাত্র খালাম্মার বিয়ের সময়কার কথা। তখন বড় মামা তার বেশ কিছু হিন্দু ক্লাসমেট এবং ব্যবসায়ী বন্ধুমহলকে দাওয়াত করেছিলেন। কিন্তু তাদের দাবি ছিল, তাদের জন্য হিন্দু বাবুর্চি দিয়ে আলাদা করে রান্না করাতে হবে। মামাও আপত্তি করেন নি। সেই মজুমদার মামার বাড়িতে হিন্দুদের জন্য আলাদা রান্নার ব্যবস্থা হল। এবং আগত হিন্দু মেহমানদের সেখানেই আপ্যায়ন করা হল।

আমাদের ঐ এলাকায় পুরো একটি পাড়া আছে যাকে হিন্দু পাড়া বলে। সেই হিন্দুপাড়ার মানুষসহ, বাবদারা এবং মজুমদার মামারা কখনো কোনদিন বলতে পারেন নি, আমরা আমাদের জীবন নিয়ে সংশয় বোধ করছি। আমরা মুসলিমদের নিকট থেকে হামলার আশংঙ্কা করছি। আমরা ঘর বাড়ি হারানোর আশংঙ্কা করছি। এই শব্দগুলো এতোগুলো হিন্দুর মধ্যে একজনও কোনদিন বলেন নি।



অথচ আজ ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় কি না কি হয়ে গেল, তাতেই প্রথম আলো গংরা দাবি করছেন, বাংলাদেশে হিন্দুরা নিরাপত্তাহীণতার মাঝে বসবাস করছেন। আমি ঠিক জানি না, প্রথম আলো গংদের এই অপপ্রচারে কোন স্বার্থ জড়িয়ে আছে! জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে অষ্টম সারিতে অবস্থানকারী এই রাষ্ট্রের মানুষগুলো যেভাবে মিলেমিশে বসবাস করে আমার মনে হয় না, তা অন্য কোন রাষ্ট্রে হয়ে থাকে। তারপরও মতি সাহেবরা এইরকম মিথ্যাচার করার চেষ্ঠা করেন কেন? তারা কি আরো একজন তসলিমার কাছে একটি ‘লজ্জা’ উপহার পেতে চান। যেখানে ফুলিয়ে ফাপিয়ে বাংলাদেশকে একটি জল্লাদ রাষ্ট্র বানানো হয়েছে। বাংলাদেশের আপামোর জনতাকে গুজরাট দাঙ্গার দাঙ্গাবাজদের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এভাবেই কি তারা আর একটি আনন্দ পুরষ্কার লুফে নিতে চান?

বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আমাদের মত সাধারণ জনতার আকুল আবেদন থাকবে, এইসব নোংরা ছবি যারা ছড়াচ্ছে তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করুন। আমার বিশ্বাস এই কাজ শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি করছে না। তার পিছনে পুরো একটি গ্যাং কাজ করছে। সেই গ্যাং তাকে নানা ভাবে বিভ্রান্ত করে এই রকম হিন্যকর ছবি প্রকাশ করে দেশের অভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা নষ্ট করবার চেষ্ঠা করছে। সেই গ্যাংটিকে গ্রেফতার করে দেশবাসীর সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিন।



ব্রাক্ষ্রনবাড়িয়ায় কোন এক দুষ্টু ছেলের ভুলের খেসারত পুরো হিন্দু সমাজকে দিতে হবে আমি তা বিশ্বাস করি না। পত্রিকার বরাত দিয়ে শোনা যাচ্ছে, সেখানকার মন্দির এবং হিন্দুদের বাড়িতে কে বা কারা হামলা করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, এই সকল হামলাকারীদের চিন্হিত করুন। সেই সাথে তাদেরকে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করুন।



আপানার খেয়াল করেছেন কি না, ইদানিংকালে বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ বিষয় নিয়েই ভারতের মিডিয়ারা আগাম সংবাদ পরিবেশেন করে থাকেন। এই ঘটনারও ব্যতিক্রম হয় নি। ভারতের জি নিউজ এর বাংলা সংস্করন এই ঘটনার সাথে জামায়াত ইসলামের সম্পৃক্ততা আছে বলে সংবাদ পরিবেশন করেছেন।



আমি সত্যিই অবাক হয়ে গেছি, যে ঘটনার এখনো কোন তদন্ত হল না! কোন সুরতাহাল হল না বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোতে এখনো কোন অনুসন্ধানী রিপোর্ট পেশ হল না তার আগেই কলকাতার এই নিউজ সাইট হামলাকারীদের সনাক্ত করে ফেলেছেন। হায় সেলুকাস! কি বিচিত্র এই উপমহাদেশ।

খেয়াল করুন, বাংলাদেশের যে কোন সময় সাম্প্রদায়িক বিষয়ে ঝামেলা হলেই ভারতের মিডিয়ারা কোন কারণ ছাড়াই জামায়াত ইসলামকে দোষী দাবি করে থাকেন। আমি জানি না, তারাও হলুদ সাংবাদিকতায় এ্যাওয়ার্ড পেতে চান কি না! যদি সেরকম কোন ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে তাদের এহেন মিথ্যাচার ‍মূলক সংবাদ অবশ্যই প্রচার করা উচিত। কিন্তু তার আগে আর একটি ঘটনা স্মরন করিয়ে দিতে চাই।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে পাবনার সাথিয়ায় সংখ্যালঘুদের উপর আরো একটি বর্বরাচিত হামার ঘটনা ঘটেছিল। হামলার পরপরই প্রথম আলো গং এবং মুন্নী সাহারা এটিকে জামায়াত শিবিরে কর্ম বলে পাইকারী হারে প্রচার করতে লাগলেন। আমরা আম জনতা। আমাদের কানে একটি কথা হাজার বার রিপিট করলে আমরা তা বিশ্বাস করতে বাধ্য। তাই আমরাও প্রায় বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম এই ঘটনা জামায়াত শিবির করেছে।

কিন্তু ঠিক তখনই নিরপেক্ষ তদন্ত করতে এগিয়ে আসেন সিপিবি এবং বাসদ। সিপিবি এবং বাসদ তাদের তদন্ত রিপোর্টে পেশ করেন, এই হামলার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন তৎকালীণ স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী টুকু সাহেব। তিনি এবং তার দলের অর্থাৎ ছাত্রলীগের ছেলেরা পরিকল্পিতভাবে এই হামলাটি চালিয়েছেন। এমনকি সেই হামলার সঙ্গে অনেক হিন্দুও জড়িত ছিলেন।


আর হামলার পরপরই মিডিয়ার মাধ্যমে জামায়াতকে ফাঁসানোর চেষ্ঠা করেছেন। মিডিয়া যেহেতু তাদেরই হাতে তাই জামায়াত শিবিরকে ফাঁসাতে খুব একটা বেগ পেতে হয় নি। কিন্তু সিপিবি এবং বাসদের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর মিডিয়া একদমই চুপ। পাবনার সাথিয়ার সেই ঘটনা নিয়ে ফলোআপ নিউজগুলো কোন এক ভুতুড়ে কারণে পত্রিকাওয়ালারা এবং টিভি চ্যানেলের মালিকরা প্রকাশ করেন নি।

আমি জানি না, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার ঘটনার সাথে কারা জড়িত। কিন্তু যারা ইসলামকে অবমাননার চেষ্ঠা করেছে তার দৃষ্টান্তমূলত শাস্তি কামনা করছি। সেই সাথে যারা মন্দিরে হামলা করেছে সেই সকল অপরাধীকে গ্রেফতার করে দেশবাসীর সামনে মুখোশ উন্মোচন করার উদাত্ব আহব্বান করছি। যেন পরবর্তিতে যা কিছু করুক কেষ্টা (জামায়াত) বেটাই চোর এমন কোন ফায়দা নিতে না পারে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৭

আস্তিক এলিয়েন বলেছেন: জামায়াত জামায়াত করাটা ওদের মুদ্রাদোষ। ওসব বলে লাভ নেই। পুলিশি পাহারায় মিছিল বিক্ষোভ করছে জামায়াত বিরোধী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত, ঠিক সেই সময়ই ভাংচুর হলো। আস্তে আস্তে বিরিয়ে আসছে আসল ঘটনা। জড়িত আওয়ামী লীগ এমপি ও ক্যাডার বাহিনী।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:২১

হাসান ইমরান বলেছেন: যারা জেনেশুনে মিথ্যে বলে তাদের জন্য কিছু বলার নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.