নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তার সাথে আমার হাটাহাটির সম্পর্ক আছিলো । একদিন সন্ধ্যায় ফুলার রোড দিয়া হাঁটতে হাঁটতে পলাশীর দিকে যাইতেছিলাম ... বিকালে তুমুল বৃষ্টি হইছে ; স্যান্ডেল হাতে নিয়া ভেজা পীচে হাঁটতে হাঁটতে সে আমারে রাস্তা থিকা একটা আকাশমণির পাতা কুড়ায়া দিয়া বললো “আমি তোর লগে আজীবন হাঁটতে চাই” ।
যেহেতু আমার ডান হাতে স্যান্ডেল সেহেতু আমি বাঁ হাতে তার দেওয়া ভেজা পাতাটা নিয়া বললাম , “ও”
সে তার এমন রোম্যান্টিক প্রস্তাবের জবাবে আমার গা ছাড়া “ও” শুইনা মন খারাপ কইরা রাস্তার উপরে বইসা পরলো। আমিও বসলাম ... বললাম , “এইমাত্র কইলি সারাজীবন হাটবি আর এহনি বইসা পরছোস ক্যা”
সে উদভ্রান্তের মতন আমার হাত ধরলো, “ফাইজলামি না, আমি তোরে আসলেই ভালবাসি”
আমাদের প্রেম হইলো। ঢাকার রাস্তায় রাস্তায়, গলি-ঘুপচিতে হাঁটতে হাঁটতে আমরা প্রচুর প্রেম করলাম । সে বেকার মানুষ , আমি একটা টিউশানি করি খালি। হাঁটতে হাঁটতে ক্ষুধা লাগলে আমরা টং দোকানে বইসা চা খাই। মাঝে মাঝে একটা সিঙ্গারা দুই জনে ভাগে খাই। জুন জুলাইয়ের খটখটা রোদ্দুরের গা বাচায়া আমরা উদ্যানে ঢুইকা যাই। মন খারাপ করা উদাস দুপুরে একজন মন্দিরা বাজায়া লালন গায় আমরা সেইখানে বইসা সারাদুপুর, বিকাল পার কইরা ফেলি। সন্ধ্যায় টিএসসি তে বিশ টাকার টিকেট কাইটা সিনেমা দেখি। সিনেমা শেষ কইরা সে আমারে হল অব্দি পৌছায়া দেয়। আমি হলের ভিতরে যাওয়ার আধ ঘন্টা পর সে ফোন দিয়া বলে “একবার বারান্দায় আয়। আমি এহনো যাই নাই। তোরে আরেক বার দেখুম বইলা রাস্তায় দাড়ায়া আছি” । আমার রুম ছয় তলায় । আমি ছয় তলার বারান্দা দিয়া আকাশের দিকে তাকায়া থাকি আর সে হলের বাউন্ডারির পরে যে রাস্তা তার ওই পারে দাড়ায়া আমারে দেখে। অন্ধকার বারান্দায় সে আসলেই আমারে দেখে কিনা সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত না। আমি কিন্তু চাইলেই তারে দেখতে পারি সোডিয়ামের আলোয়, কিন্তু আমি তার দিকে তাকাই না । আমি আকাশের দিকে তাকায়া থাকি। আমার চোখ ভিজে আসে জলে। অনেকক্ষন পর রাস্তার দিকে তাকায়া দেখি সে কোনো এক ফাঁকে বাসে উইঠা চইলা গেছে।
কোনো কোনো রাতে তার ফোনে আমার ঘুম ভাঙে। রাত তিনটা । সে আমারে বলে “একবার বারান্দায় আয়। আমি রাস্তায় দাড়ায়া আছি। আমার ঘুম আসে না। তোরে একবার দেইখা চইলা যাবো”। আমি ঘুম ঘুম চোখে গিয়া বারান্দায় দাঁড়াই । আমার মনে হয় এই পৃথিবীর চাইতে সুন্দর আর কিছু নাই। ভোরের আলো ফোটার আগেই আমি হলের বাউন্ডারি টপকে রাস্তায় নামি। তার হাত ধরে হাটতে থাকি উদ্দেশ্যহীন।
আমার জন্মদিনে রাত বারোটায় সে আসে তিনটা ফানুশ নিয়ে। যাবার সময় তার পকেটে বাস ভাড়া থাকেনা। এই দিনগুলো আমরা দ্রুত পার করে ফেলতে চাই। আমাদের মনে হয় সামনে আরো ভালো দিন আছে আমাদের অপেক্ষায়।
একদিন তার চাকরি হয়। একদিন আমার চাকরি হয়। কিন্তু তার স্ট্যাটাস বদলায়, আমার স্ট্যাটাস বদলায় না। তার পছন্দ অপছন্দ বদলায়। তার পোশাক বদলায়, চুলের স্টাইল বদলায়। আমার কিছুই বদলায় না। তার সাথে তাল মেলাতে গিয়ে আমার খেই হারিয়ে যায়।
আমরা আর শহরের রাস্তায় রাস্তায় হাটার সময় পাই না। আমরা আর ভোর রাতে ঘর পালিয়ে রাস্তায় নামি না। আমাদের অফিস থাকে। আমরা আর টং দোকানে চা খাই না সামাজিকতার ভয়ে। মাঝ রাত্রিরে সে আর আমারে ফোন দিয়া তার মন খারাপের কথা বলেনা।
সে তার সুন্দরী কলিগ নিয়া সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখতে যায়। তার নতুন নতুন বান্ধবী হয়। সে তার বান্ধবী নিয়া দেশে বিদেশে ঘোরার স্বপ্ন দেখে। আমি এখনো তার হাত ধইরা রাস্তায় নামতে চাই। আমি তার অপেক্ষায় থাকি । তার সময় হয়না। সে আসেনা । সে ডাকেনা। সেই দিনগুলা হারায়া যায়। রাস্তার পাশের গাছের পাতার মতোন সেই দিনগুলায় ইটের গুড়ার রঙের লালচে ধুলা জমে। সেই ভবঘুরে দিনগুলা ফ্যাকাশে মুখ থুবড়ায়া পইড়া থাকে রাস্তায়।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৮
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: নাটকে কি আকাশ থেকে দৈব বানীতে পাওয়া জিনিষ দেখায়? নাকি আমাদের জীবনের ঘটনাগুলোই নাটকে উপস্থাপন করে ?
২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০
নীল আকাশ বলেছেন: শিক্ষানবিশকালে আপনি বেশি হাটাহাটি করে ফেলেছেন। কম হাটলে মনে হয় অন্য কিছু হতে পারত!
স্বার্থের প্রয়োজনে সাদা হয় কালো আর কালো হয় সাদা। প্রয়োজন ফুরালে রংধনুর সাত রং ও ফ্যাকাসে মনে হয়। যে ভালোবাসা শুধুই অগনিত অন্যায় আবদার করে যায় সেটা টিকে থাকে সুতার আগায়। ফু দিলে যদি উড়ে যায় আবেগ, তাহলে সেটা আসলে কোনকালেই ছিল না। এটাই জীবন, এটাই বাস্তবতা। এরি মাঝে বেচে থাকে টুকরো চাওয়া পাওয়া।
ভালো থাকবেন।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: আপনার জন্যেও শুভকামনা
৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৫
নীল আকাশ বলেছেন: চলে আসুন আমার ব্লগে................
সামুর একটা গিট্টু খুলতে পারছি না, দেখি আপনি কি বলেন?
০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৮
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: আপনার কমেন্ট টা বুঝতে পারিনি
৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
বাকপ্রবাস বলেছেন: লেখক বলেছেন: নাটকে কি আকাশ থেকে দৈব বানীতে পাওয়া জিনিষ দেখায়? নাকি আমাদের জীবনের ঘটনাগুলোই নাটকে উপস্থাপন করে ?
গোস্যা গইজ্য ফল্লার, গোস্যা গইল্যে দোয়াও চাই মাফও চাই। আর ন আইস্যুম তোঁয়ার ব্লগ বাড়িত।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৮
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: হা হা হা এইটা ভালো ছিলো
৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: বাহ !!!
খুব ভালো।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দিন বদলায়া যায়, মানুষের চিন্তা-ভাবনাও বদলায়।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: হ্যা তাই
৭| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১৫
নীল আকাশ বলেছেন: নীলআকা৩৯ বলেছেন: চলে আসুন আমার ব্লগে................ সামুর একটা গিট্টু খুলতে পারছি না, দেখি আপনি কি বলেন?
সামু তে একটা বেহেস্ত খানা আছে যেখানে সবাই যেতে পারে না। কিভাবে এই বেহেস্ত খানা যাওয়া যায় তার একটা তরীকা খুজছিলাম। আমার আগের পোষ্ট টা পড়ে আসুন।
শুভ কামনা।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: আচ্ছা
৮| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮
ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: আপনার পোষ্টি ছিলো মনোমুগ্ধকর আপু। তবে খুব খারাপ লাগছে। আমাদের মেয়েদের সাথেই কি এমন হয় প্রতিবার!!
০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:২১
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: ছেলেদের সাথেও হয়তো হয় । সেই গল্প ছেলেরা লিখবে ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২
বাকপ্রবাস বলেছেন: রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফোন করে বেলকনিতে আসতে বলা এইটা কমন কাব্য। নাটকে হামেশায় দেখায়। তবে আপনার লেখার ষ্ট্যাইল আর চতুরতায় বিষয়টা সুন্দর ভাবেই উপস্থাপিত হইয়াছে। আমার অতীব গম লেগেছে।