নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষানবিশকাল চলছে......

আফরোজ ন্যান্সি

ঈশ্বরী

আফরোজ ন্যান্সি › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাওড় ভ্রমণ ২ (শেষ পর্ব)

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:০৭



হাওড়ে ভাসতে ভাসতে রাত ভোর হয়ে এলে আমাদের নৌকা আবারো নীলাদ্রিতে নোঙর করলো। সিদ্ধান্ত হলো সকালের নাস্তা এখানেই সেরে নিয়ে আমরা রওনা করবো শিমুলবাগানের উদ্দেশ্যে। যথারীতি ধোয়া ওঠা গরম খিচুড়ি আর হাঁসের ডিম ভাজা দিয়ে ভরপেট নাস্তা সেরে চা খেতে খেতে আমরা পৌঁছে গেলাম শিমুলবাগান।
যদিও শিমুলবাগানের সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করার পারফেক্ট সময় হলো শীতকাল। কেননা তখন গাছভর্তি থাকে রক্তরঙা শিমুল ফুল।
অবশ্য ফুলবিহীন শিমুলবাগানও কম সুন্দর না।
চারিদিকে এতো এতো সবুজ রঙ চোখগুলিকে এক অদ্ভূত শান্তি দেয়। এখানে পাশাপাশি দুটি নদী। সারি নদী আর জাদুকাটা নদী। পাশাপাশি হলেও পানির রঙ দেখেই দুটি নদীকে আলাদা করা যায় প্রথমবার দেখাতেই। সারি নদীর পানি ঘোলাটে অন্যদিকে জাদুকাটা নদীর পানি ঝকঝকে নীল। শিমুল বাগানে থেকেই দুটো নদীর সৌন্দর্যই উপভোগ করা যায়।
শিমুল বাগানে ঘোরাঘুরি শেষে আমরা চলে গেলাম বারিক্কা টিলায়। এখানে ছোট একটা টিলা মতো জায়গা। কিছুদূর গেলেই ইন্ডিয়ার বর্ডার। বর্ডারের আগে অল্প একটু জায়গা বাংলাদেশের মধ্যে। বারিক্কা টিলায় দেখার মতো বিশেষ কিছুই নেই। দেখার মধ্যে আছে শুধু পাহাড়ের ওপর থেকে জাদুকাটা নদীর ভিয়্যু আর বর্ডারের ওইপারে ইন্ডিয়ার সুউচ্চো পাহাড়গুলিই। এই জায়গা নিয়ে বলার মতো উল্লেখযোগ্য কিছুই নেই। তবে মজার ব্যাপার হলো এখানে এসে গরমে অতিষ্ট হয়ে একবসায় ৮ গ্লাস লেবুর শরবত খেয়ে ফেলেছিলাম। শুধু আমি একাই নই , টিমের সবাইই কেউ ১০ গ্লাস, কেউ ৭ গ্লাস, কেউ বা আরো বেশী লেবুর শরবত খেয়ে নিয়েছিলো।
এরপর আমরা চলে গেলাম জাদুকাটা নদীতে গোসল সারতে। জাদুকাটা এক অদ্ভূত নদী। যতদূরেই যাই না ক্যানো কোমড় সমান পানিই থাকে। সাঁতার না জানার কারনে যারা হাওড়ে খুব বেশী মজা করতে পারে নাই তারা এবার তিন গুন উৎসাহ নিয়ে নদীতে নেমে গেলো। আমরা প্রায় আধামাইল পর্যন্ত হেটে বেড়ালাম নদীর মধ্যে। নৌকা থেকে যখন দুপুরের খাবার তৈরি হয়েছে বলে জানানো হলো তখন আমাদের কারোরই পানি ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করছিলো না। অগত্যা নদীর মাঝখানে দাঁড়িয়েই লাঞ্চ সেরে নিলাম গরম গরম ভাত, নদীর সরপুটি, মুরগী আর ডাল দিয়ে। আমরা যখন খাচ্ছিলাম তখন আমাদের চারপাশে ছোট ছোট অসংখ্য মাছ এসে আমাদের ঘিরে ধরছিলো খাবারের লোভে। জীবনে এমন অভিজ্ঞতা বারবার আসে না তা আমি হলফ করে বলতে পারি।
এরপর ফিরবার পালা। আমাদের নৌকা যাত্রা শুরু করলো তাহিরপুরের উদ্দেশ্যে। আকাশে তখন কালো মেঘ। আমরা সবাই আফসোস করছিলাম এই বলে যে, দুটো দিন হাওড়ে রোদ আর গরমে এতো কষ্ট করলাম আর এখন যখন ফেরার সময় হলো তখনই কিনা আকাশে মেঘ করলো। আমাদের নৌকা যখন আমাদেরকে তাহিরপুরে নামিয়ে দিলো তখন দেখা মিললো এক জোড়া রংধণুর সাথে।
নৌকা থেকে নেমে সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে সিএনজি নিতে না নিতেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। এক মুহূর্তে হাওড় যেন রীতিমতো সমুদ্রে পরিণত হয়ে গেলো। কি সেই ঢেউ যেন এক মিনি কক্সবাজার চলে এসেছি আমরা। যদিও তখন আর হাওড়ে থাকার উপায় নেই আমাদের, রাতের বাসে ফিরতে হবে ঢাকায়।
শেষমেশ একটা কথা না বললেই না যে, এই দুটো দিন হাওড়ে থাকার পুরো সময়টাই দারুন কাটতো যদিনা কিছু লোক সাউন্ডবক্স বাজিয়ে শব্দ দূষণ না করতো আর প্লাস্টিক প্যাকেট ফেলে হাওড়ের পানি নোংরা না করতো। বাংলাদেশের যেখানেই ঘুরতে যাইনা ক্যানো এই সাউন্ড বক্স বাজানো আর যেখানে সেখানে ময়লা ফেলার কারনে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করতে পারা যায়না। আমরা যারা ভ্রমণ পিপাসু আমাদের উচিৎ কোথাও ঘুরতে গেলে সেখানকার পরিবেশের কথা মাথায় রাখা। আমাদের কারনে যেন সেখানকার পরিবেশ দূষণ না হয়।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২৩

নাসরিন ইসলাম বলেছেন: অসাধারণ। খুব ভালো লাগলো আপু। সামু পরিবারের নতুন সদস্যের পক্ষ থেকে শুভকামনা জানবেন। আমার ব্লগে স্বাগত জানাচ্ছি।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:১৬

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: দারুন লাগলো

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৫

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনারা যখন পানিতে দাঁড়িয়ে খেয়েছেন, মাছেরা গায়ে কামড় টামড় দেয়নি? আপনাদের খাবারে মাছ ছিলো?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৭

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: হা হা। মাছ খুবই নিরীহ প্রাণি। ওরা কামড়ায় না। ওরা আসলে আমাদের কাছে খাবার চাইতে আসছিলো মনে হয়। আমাদের খাবারে নদীর সরপুটি মাছ ছিলো।

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: ছবি এবং লেখা সুন্দর।
তবে পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে খাওয়াটা বেশ হয়েছে। আমিও একদিন পানিতে দাঁড়িয়ে খাবো।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৭

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: পানিতে দাঁড়িয়ে খাওয়াটা একটা দারুণ অনুভূতি

৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৪

এম ডি মুসা বলেছেন: দারুন লেগেছে তবে মোবাইল থেকে গল্পগুলি পড়তে অনেক কষ্ট হয় কারণ ছোট ছোট অক্ষর তারপরও কষ্ট করে পড়ি।

৬| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: এই দুটো দিন হাওড়ে থাকার পুরো সময়টাই দারুন কাটতো যদিনা কিছু লোক সাউন্ডবক্স বাজিয়ে শব্দ দূষণ না করতো আর প্লাস্টিক প্যাকেট ফেলে হাওড়ের পানি নোংরা না করতো।

এই শব্দ আর পরিবেশ দূষণে জরুরী পদক্ষেপ নেয়া সময়ের দাবি।

চমৎকার ভ্রমণ পোষ্ট।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: এই সাউন্ডবক্সের আওয়াজ রাতে পুলিশ এসে থামিয়েছে। পরের দিন সকালে আবার শুরু। কিছুই বলার নেই।

৭| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৫৫

দারাশিকো বলেছেন: পড়লাম। বছর চার-পাঁচ আগে আমিও এইসব জায়গা ঘুরে এসেছি। তখন রাস্তা একটু দুর্গম ছিল, আর জাদুকাটা নদীতে পানি বেশি ছিল। তাই নদীতে নামা হয়নি। টাঙ্গুয়ার হাওড়ে গোসল-ডুবাডুবি হয়েছে। আপনাদের ছবিগুলো দেখে আবারও যেতে ইচ্ছে হচ্ছে।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৯

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: ঘুরে আসুন।

৮| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:১৬

আমি সাজিদ বলেছেন: চমৎকার

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৯

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: ধন্যবাদ

৯| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:০২

জাহিদ হাসান বলেছেন: যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা এবং ভ্রমণে গিয়ে সাউন্ডবক্স লাগিয়ে হিন্দি-উর্দু-ফার্সি-উগান্ডান গান বাজিয়ে ব্যাঙের মত লাফানো এই দেশের মানুষের পুরনো বদ অভ্যাস।

যেসব নৌকায় এসব সাউন্ডক্স থাকে পুলিশের উচিত লোকগুলোরে নামিয়ে দিয়ে বক্সসহ নৌকা উল্টিয়ে দেওয়া । তাইলে শিক্ষা হইতো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.