![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বান্ধবীদের সাথে সারাদিন ঘুরোঘুরি শেষ করে কুহি রাত সাড়ে এগারটার দিকে দরজা বন্ধ করে পড়ার টেবিলে চেয়ারে বসে ছেলেটার বৃষ্টিতে ভেজা দিনের কথা মনে করতে লাগল, কি যেন খুঁজে ব্যস্ত করে রাখছে তবে খানিক বাদে কুহি বুঝতে পারল বোতলে শিলা কুড়িয়ে জমিয়ে রাখছে আর কুহি স্ট্যাড থেকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে ছেলেটাকে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর ছুড়ে ফেলা সেই প্রথম দেখে ছেলেটার বোতলটা হাতে নিয়ে ভেজা চোখে বোতলের দিকে তাকিয়ে রইল কুহি। আজ তিন বছর ধরে এই বোতলটাই ভালোবাসার একমাত্র স্বাক্ষী, যে কিনা কুহির সব মূহুর্তের কথা জানে !
কুহি নিজে নিজেই বলতে লাগল, কোথায় তুমি নাছিব? আজকের এই দিনটায় আমি তোমাকে খুব মিস করছি। তোমার ছেলেমানসি করা শিখিয়ে দেওয়া শিলা আজও আমি কুড়িয়ে বেড়াই তবু তোমার মত, তোমারই মতন হতে পারিনি !
হঠাৎ কুহির ফোনে নাম্বার ভেসে উঠল…মোবাইলের টিউন অফ ও মন অন্যথায় থাকায় খেয়াল নেই তাই ফোনটা দ্বিতীয়বার আসল এবং কুহির চোখে পড়ল।
- ভেজা চোখ মুছতে মুছতে, হ্যালো (এপাশ ওপাশ থেকে বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে) কে বলছিলেন?
- আমি নাওছিব, কি ব্যাপার ফোন রিসিভ করছ না যে, ব্যস্ত নাকি?
- তুমি আমার নাম্বার কই পেলে?
- সব মেয়েই একই প্রশ্ন করে, সেটা জানা কি খুব দরকার নাকি!
- না, আমি সেটা বলিনি।
- তুমি কি ব্যস্ত নাকি?
- না, কি তবে যা বলবা তাড়াতাড়ি বলবা, ওকে
- ওকে, তোমার কাছে কি গাঢ় নীল শাড়ি আছে?
- কেন?
- এত প্রশ্ন করতে কেন, আছে কিনা বল?
- আছে।
- এখন সাড়ে এগারটা বাজে। শাড়ি পরার জন্য আর আমার সাথে এত রাতে দেখা করবা কিনা এটা ভাবার জন্য বিশ মিনিট সময় দিচ্ছি। আমি তোমার বাসার ছাদে তোমার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। মনে রেখো আসার জন্য শুধু তোমার হাতে বিশ মিনিট সময় আছে। এর মধ্যে না আসলে আমি চলে যাব। তুমি ফ্রি থাকতে পার কিন্তু আমার কাজ আছে। [নাছিব এটা বলে ফোনটা রেখে দিল]
কুহি খাটের উপর বসে দু’হাত মুখে দিয়ে বসে ভাবছে কি করবে ! মনে মনে বলতে লাগল, যাকে ভালোবাসি তার সাথে এত ভাব দেখানোর কি দরকার, তাছাড়া সত্যিই কি, নাছিব ছাদে আমার জন্য অপেক্ষা করছে নাকি আমার সাথে মজা করছে! না, আর ভাবতে পারছি না, এত কিছু না ভেবে ছাদেই যাওয়া যাক। তবে চললাম...
২০ মিনিটের মধ্যে নাছিবের কথা মত শাড়ি পরে, হালকা সাজ-গোজ করে, চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে ছাদে আসল আচঁলটা ঠিক করতে করতে, চুল গুলোর উপর বার বার হাত বুলিয়ে ফিছনে নিতে লাগল...আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কিছুই দেখা যাচ্ছে না, আকাশে চাঁদটা আছে তবে অমাবস্যা তাই সব কিছু অন্ধকার দেখা যাচ্ছে। তাই কুহি ভালো করে ছাদে মধ্য নাছিবকে খুঁজতে লাগল। আচঁলের গোছা ধরে রেখে এপাশ থেকে ওপাশ সব দিকে খোঁজা শেষ কিন্তু নাছিব নেই...
অনেক খোঁজাখুজি করে নাছিবকে না পেয়ে কুহির চোখ জল জল হয়ে গেল। চোখে পানি ধরে রাখতে না পেরে কান্না শুরু করে দিল। আর বলতে লাগল... কেন নাছিব তুমি আমার সাথে এমন ব্যবহার করছ? আমার ইমোশনকে না বুঝার ভান করছো বার বার। কান্না ভেঙ্গে পড়ে দাড়িয়ে থাকা থেকে ধীরে ধীরে রেলিং ধরে বসে পড়ে হাঁটু ভাছ করে, হাঁটুর উপর হাত রেখে তার উপর মাথা লুকিয়ে রেখে অঝরে ঝরাচ্ছে জল...কুহির মনে হতে লাগল নাছিব তাকে দেখছে তাই মাথাটা উঠিয়ে এপাশ ওপাশ করে বুলিয়ে নিল, নেই কেউ নেই তাই আগের মত মাথা লুকিয়ে কান্নায় চোখ ফোলানোর অবস্থা... তারপর মিনিট পাঁচেক পর আকাশের পানে চেয়ে কান্না থামিয়ে কুহি উঠে দাড়াবে ঠিক এমন সময় নাছিব বলে উঠল...
-শেষ নাকি আমার জন্য করা?
কুহি চমকে উঠল। এদিক ওদিক চোখ নেবার পর চোখ যায় মাথার ঠিক উপর পানির ট্যাংকিতে। নাছিব ট্যাংকির উপর বসে আছে, কিছুক্ষণের জন্য কুহি বাকরুদ্ধ খানিক বাদে কুহি মাথা নিচের দিকে নামিয়ে মুচকি হাসি দিল। নাছিব লাফ দিয়ে টাংকি থেকে নেমে এল।
- তুমি ওখানে উঠেছ কিভাবে, কি চুপ কেন? কি ব্যাপার আমাকে আসতে বলে তুমি উপরে কি করছো? আর এত রাতে এই শাড়ী পরে ছাদে ডাকার মানে কি? [উচ্চস্বরে]
- আচ্ছা মেয়েতো তুমি, শুধু বলেই যাচ্ছ বলেই যাচ্ছ, আগে তোমাকে একটু দেখি তাছাড়া যদি বলি তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল তাহলে! [শান্ত ভাবে]
- অন্ধকারের মধ্যে গাঢ় নীল শাড়ী অথচ আমি তো তোমার চেহারাও ঠিক মত দেখছি না।
- অন্ধকারকে কাটিয়ে ভোরে তোমাকে দেখবো, সমস্যা কি?
- তোমার কি মাথা ঠিক আছে, সারারাত আমি, আমি থাকতে পারব না। আমি তোমার সাথে পরে দেখা করবো, ওকে বাই। [এই বলে কুহি হাটা শুরু করল]
- ওকে যাও তবে এটা বলে যাও... সত্যিই কি তোমার ইচ্ছে করছে না আমার পাশে বসে সারারাত কাটাতে? নাকি কাউকে ভালোবাসলে তার কাছে গভীর কোন ইচ্ছা প্রকাশ করতে নেই?
(কুহি দাড়িয়ে পড়ল, কিছু না বলে চুপ করে দাড়িয়ে থাকল ওদিক ফিরে)
খানিকপর এদিক ফিরে...
- তুমি কিভাবে জানো আমি তোমার সাথে গল্প করবো সারা রাত জেগে থেকে?
- না, আসলে আমি জানি না, তবে কেন জানি আমার মনে হচ্ছে তুমি নীল শাড়ির সাথে লাল লিপস্টিক মেখেছ...তবে কেন?
- কুহি নাছিবের সামনে আসতে থাকল ধীরে ধীরে... কই না তো, ও হতে পারে, তাড়াহুড়ো করে আসলাম তো তাই...
- তবে এতক্ষণ কান্নাকাটি কার জন্য?
(কুহির নিচের দিকে তাকিয়ে আছে আর কি বলবে কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না, সব কিছু কেমন যেন বাতাসের সাথে মিলিয়ে যাচ্ছে)
- (কুহি দ্রুততার সাথে কান্নাকাটির বিষয়টাকে পাশ কাটিয়ে) আচ্ছা ঐ মেয়েটার কি খবর?
- (নাছিব একটা মুচকি হাসি দিয়ে) কল্পনিক কিছু না জিজ্ঞেস করে যা বলার র্স্পষ্ট করে বল !
কুহি হতভম্ব হয়ে থমকে গেল, কেন জানি নাছিবের সাথে ঠিক মত গুছিয়ে কথা বলতে পারছে না আর ঠিক এইজন্যই কিছুদিন আগে নাছিব ওর সাথে কথা না শেষ করে হেঁটে চলে গেছে, এইবার তা হতে দেওয়া যাবে না কিন্তু কুহির কিছু মনেও আসছে না এতক্ষণ চিন্তা করেও...
তাই কুহি কোন কথা না বলে ছাদ থেকে বেরিয়ে যাওয়া জন্য হাঁটা দিল...!
কুহি ছাদের দরজা পর্যন্ত আসলেই হঠাৎ করে ছাদের অন্ধকারের মাঝে লাইটের আলো জ্বলে উঠল। কুহি পিছন ফিরে দেখে পুরো ছাদে নীল রংঙের ছোট ছোট বাতি জ্বলছে। পুরো ছাদ আলোতে জ্বলমল করে জ্বলতে লাগল। ছাদের মাঝখানে নাছিব দুই হাত ভাছ করে রেখেছে বুকে, অন্ধকারে চশমার কি দরকার বুঝে না সে, সাদা পান্জ্ঞাবী পড়ে তাকিয়ে রইল আর নাছিবের সামনে বড় একটা তিন তলা কেক নিয়ে নাছিব তার সামনে দাড়িয়ে আছে। এইবার কুহি বুঝতে পারল এই সব কিছুই নাছিব শুধু তার জন্য করেছে। চারিদিকে তাকিয়ে অবচেতন মনে নাছিবের সামনে এসে দাড়াল আবার, কাছে আসতেই...
নাছিব কেমন জানি অপ্রস্তুত হয়ে যেত লাগল, একটা পরীর মত না হলেও ঠিক তার কাছাকাছি চেহারার নীল নীল বাতিতে যেন কুহিও জ্বললে, একহাতে অনেক গুলো নীল চুড়ি অন্যহাতে নীল ঘড়ি, কুহি কিভাবে জানে যে আমার গাঢ় নীলটার প্রতি আমি খুবই দূর্বল...অসম্ভব সুন্দরী কুহি ও তার সাথের পুরো পরিবেশটা কেমন ঘোলাটে হতে লাগল, তার সাথে কুহির শরীর থেকে আপসা মিষ্টি গন্ধ, কুহিকে আজ যেভাবে দেখছে এইভাবে আর কোন দিন খেয়াল করেনি নাছিব!
হাতে তুড়ি মেরে কুহি জিজ্ঞেস করলো...
- [কান্নার স্বরে থেমে থেমে] এত্ত আয়োজনের মানে কি? কি ভাবছ?
- কুহি তোমাকে খুব সাধারণের মাঝে অসাধারণ লাগছে!
- অসাধারণ মানুষের কাছে এসেছ তিন বছর লাগিয়ে তবে সাধারণ হলে কয় যুগ লাগত...
(কুহির মাথা এখনো নিচের দিকে, নাছিব খুব ভালো ভাবে খেয়াল করতে লাগল কুহি চেহারায় মেঘ জমতে শুরু করেছে, চোখে পানির বান এসেছে কিন্তু সামলাতে পারছে না, চুল গুলো সামনে থেকে পিছনে নেয়ার ছলে চোখের কোণ থেকে পানির কণা গুলো তুলে নিচ্ছে খানিক বাদে বাদে) নাছিব বুঝতে পেরেও কিছু বলল না।
নাছিব- আজ তো জন্মদিন তোমার, প্রথম প্রহরে সবাই থাকে কিন্তু শেষ প্রহরে কেউ কারো নয় তাই আমি বেলা শেষে আসলাম !
- আমি আজ দেখা করার জন্যই তোমার বাসায় আর কম্প্যাসে গিয়ে ছিলাম। কিন্তু তোমাকে পাইনি। তাছাড়া আজ যে আমার জন্মদিন তা কেউ জানে না, আমি কাউকে বলিনি। তুমি কি ভাবে জানো আজ যে আমার জন্মদিন?
- তোমার পার্সোনাল ডাইরীটা মনে হয় কিছু দিন ধরে খুঁজে পাচ্ছ না !
- হুম তুমি কিভাবে জানো!
- আমি তোমার সর্ম্পকে আরও অনেক কিছু জানি যা তুমিও জানো না। ওকে বাদ দাও তোমার জন্মদিনটা চলে যাওয়ার আর ১ মিনিট বাকি আছে মানে ১২টা বাজার আর ১ মিনিট বাকি আছে, তাড়াতাড়ি কেকটা কাটো। [যদিও তার চেয়ে বেশি বাজে তখন]
- কুহি এখনো নিচের দিকে তাকিয়ে ছুরিটা হাতে নিয়ে কেক কাটতে আসবে এমন সময় নাছিবের চোখের দিকে তাকিয়ে প্রকাশ্য কান্না শুরু করে দিল, দুই হাত মুখে দিয়েও সামলাতে পারছে না, অঝরে পানির ঝরতে লাগল, পানির কোন রং নেই তবে আজকের পানির অন্য স্বভাব, কুহি ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলতে লাগল...নাছিব তুমি কি আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে আরো কাঁদাবে যেহেতু তুমি আমার ডাইরীটা পড়ে ফেলেছ, আমার তিন বছরের নয় সারাজীবনের অনুভূতি ঐ টাতে!
(নাছিব কিছু না বলে অন্য দিকে তাকিয়ে একটা শীর্ষ দেয়…শীর্ষ দেওয়ার সাথে সাথে অনেকগুলো পথ শিশু চুপি চুপি ছাদে উঠে দাড়িয়ে থাকে কুহি ঠিক পিছনে সারিবদ্ধ ভাবে, নাছিবও কুহির পিছনে চলে গেল)
- কুহি কেকটা কাটো...
- কুহি নিচের দিকে তাকিয়ে একহাতে আচঁল দিকে চোখ মুছতে থাকে, আর এক কাঁপা কাঁপা হাতে ছুরি হাতে নিয়ে বাতিতে ফু দিল।
সাথে সাথে শিশুরা ও নাছিব আস্তে আস্তে হাতে তালি দিয়ে 'শুভ জন্মদিন কুহি' বলে শুভেচ্ছা জানাতে লাগল...
কুহি চমকে গিয়ে ফিছনে ঘুরে গেল, হাত থেকে ছুরিটা পড়ে গেল সেই সাথে এক হাতে কেকের উপর হাতটা শক্ত করে মুট করে ধরল, অবাক হয়ে ভাবতে লাগল আমি কি কোন ভূতের রাজ্যে চলে এলাম নাকি স্বপ্ন, নাছিবের দিকে তাকাতেই..
- ভয় পাওয়ার জন্য দুঃখিত...
- না আমি ভয় পাই না!
- ওকে তাহলে কেক থেকে হাতটা নামাও
(কুহি কেকের দিকে তাকিয়ে হাতটা সরাতে গিয়ে দেখে কেকের নকশাটাই পরিবর্তন করে ফেলেছে)
নাছিব কুহির ঠিক বাম-পাশে এসে ছুরিটা নিচ থেকে তুলে কুহির আচঁলে মুছে দুইজনে একসাথে একহাতে উপর আরেক হাত রেখে কেক কাটা শুরু করল...
কেক কেটে কুহি নাছিবকে খাওয়াতে লাগলে না বলে দেয় হাতের ইশারায় এবং পথ শিশু গুলোকে দিতে বলে...
কুহিও ঠিক তাই করল, সব পথ শিশুকে খাইয়ে দিল বাকিটুকু থেকে এক টুকরো নিয়ে নাছিবও কুহিকে কেক খাইয়ে দেয় তারপর সবার শেষে নাছিবও খেল কুহির হাতে।
(নাছিব শিশু গুলো কে বলল বাকি কেকটা এখন নিয়ে যেতে)
শিশুরা কোন হইচই না করে চলে গেল, নাছিবও রেলিং হেলান দিয়ে বসে পড়ল পা মেলে...
কুহি ও হাঁটু ভাছ করে ছাদে মিশিয়ে দিয়ে পুরো বসে পড়ল নাছিবের গাঁ ঘেষে, কুহি এখনো ভাবছে কি বলবে এমন সময় নাছিব বলে উঠল..
নাছিব কুহির চোখে দিকে মোটেও তাকাতে পারছে না, অনেক কেদেছে অতীতে, বর্তমানে তবে আরো যেন অনেক কান্নার বাকি রয়ে গেছে কুহির, চোখের নিচে কালি নেই তবে খানিকটা ধেবে গেছে, চোখর নিচে ঝাঁপসা লাল হয়ে ফুলে গেছে...নাছিবের ইচ্ছে করছিল কুহি চোখের শুকনো জল গুলো মুছে দিতে দুই হাত দিয়ে মুখটা র্স্পশ করতে, কিন্তু না...
- আসলে আমি এই গুলো এমনিতেই করলাম, তুমি অন্য কিছু মনে করো না। তবে আমি আজ চললাম বলে উঠবে কিন্তু কুহি নাছিবের বুকে ততক্ষণে মাথা হেলিয়ে দিয়েছে...খুব শক্ত করে জড়িয়ে বসে আছে, কুহির একহাতও তার জায়গা খুঁজে নিয়েছে...
নাছিব ঠিক মত সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না কুহিকে কি ফিছনে হাত দিয়ে আগলে ধরবে নাকি উঠে চলে যাবে...
নাছিব কিছু বুঝে উঠার আগেই কুহি ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিয়েছে...!!!
©somewhere in net ltd.