নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাসীমুল বারী-র প্রযুক্তির উঠোনে স্বাগতম

নাসীমুল বারী

ঢাকার আজিমপুরে জন্মেছি। বেড়েও উঠেছি এখানে। ঐতিহ্যবাহী ওয়েষ্ট এন্ড হাই স্কুল থেকে এসএসসি সনদপ্রাপ্ত আমার পৈত্রিক নিবাসটা কিন্তু ‘ইলশে পাড়া’- চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলার সাদরা গ্রামে।

নাসীমুল বারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প : হৃদপিন্ড

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:২৯

।। নাসীমুল বারী ।।



তুমি কাছে নেই লিমা।

যৌবনের মধ্যগগনে তুমি এসেছিলে হৃদয়ের আবেগে ভর করে। তোমাকে রেখেছিলাম যতন করে হৃদয়ের অলিন্দে অলিন্দে। কিন্তু পাই নি তোমাকে জীবনের সান্নিধ্যে। হারিয়ে গেলে তুমি।

আর তাই হৃদয়টা বারবার তোমাকে খুঁজছে।

আজও খুঁজছে তোমার সেই হাসিটা। ফিসফিসানো আবেগী কথাগুলো।

অনেক বছর পেরিয়ে গেল লিমা। আমি এখন একজন শিল্পপতি। অনেক অনেক ব্যস্ত। কিন্তু . . .! কিন্তু তারপরও তোমাকে ভুলতে পারি নি। তোমাকে নিয়ে ভাবতে সময় হয় ঠিকই। তোমাকে ভুলতে না পেরেই বৃটিশ ৮ম এডওয়ার্ড সিংহাসন ত্যাগ করেছিল। আমার তো সিংহাসন নেই, আমি কী ত্যাগ করব?

আজও খুঁজতে থাকি তোমার অনুভব। তোমার অনুভবে হৃদয়ের রক্ত ক্ষরণে হৃদপিন্ডটা ইনফেকশন হয়ে গেছে। ব্যথা হচ্ছে হৃদপিন্ডে। প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে ক'দিন ধরেই হাসপাতালের বিছানায়। ডাক্তার বলেছে হৃদপিন্ডটা কেটে ছিঁড়ে ঠিক করে দেবে। তখন ব্যথা কমবে। সত্যি কি তাই?

হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে এতোক্ষণ হৃদয়াবেগের বিরহ নিয়েই ভাবছিলাম। এমনি সময়ে কারো ছোঁয়ায় আমি চমকে উঠি। স্পর্শানুভূতিতে পাশ ফিরে তাকাই। ডাক্তার সাহেব আলতো স্পর্শ করেছেন।

প্রধান ডাক্তার নয়— জুনিয়র একজন। খুবই শান্ত কণ্ঠে বলেন, কেমন লাগছে এখন?

— শরীর একটু ভালো লাগলেও মনটা ভালো নেই।

— এতো ভেঙে পড়লে হবে না। নেন, এ কাগজটায় সই দিন।

— কিসের কাগজ? জমিজমা নিয়ে যাচ্ছেন নাতো?

হাসতে হাসতে বলি। ডাক্তার সাহেবও হেসে পাল্টা জবাব দেন, জমিজমা রেখেই বা লাভ কী, শরীর-মন যদি ভালই না থাকে? সমাজে যদি সুস্থভাবে চলতে না পারেন! নেন।

কাগজটা বাড়িয়ে দেয়। আমি হাতে নিতে নিতে উনি আবার বলেন, আপনার তো বাইপাস অপারেশন হবে। অপারেশনের আগে বন্ডে এমন সই করানো হয়।

— এখনই দিতে হবে?

— আপনি আজ পড়ে ভেবে চিন্তে যখন ইচ্ছে দিতে পারেন।

— কিন্তু আপনার সাথে যে আমার একান্ত কিছু কথা ছিল। সময় দেবেন?

— কখন, এখন? এখন তো ডিউটি আছে।

— না, এখন না। ডিউটি শেষে এলেই চলবে।

— খুব কি জরুরি।

ডাক্তার সাহেব একটু হেসে বলেন। আমিও ম্লান একটা হাসি দিয়ে বলি, এলে ভালো হয়। মনটা হালকা হবে।

— রাত এগারটায় আমার ডিউটি শেষ। তখন আসব ইনশায়াল্লাহ্।

তরুণ ডাক্তার। হৃদরোগের বিশেষজ্ঞ হতে চলছে। কথাবার্তায় দারুণ স্মার্ট। চমৎকারও। এগারটা বেজে পাঁচ মিনিট পেরিয়ে গেছে ঠিক তখনি আমার শরীরে স্পর্শ পড়ে ডাক্তারের। আমি আলতো হাসি দিয়ে বলি, এসেছেন? ফাইন।

এটেনডেন্সকে সরে যেতে বলি। এবার ডাক্তার সাহেবকে পাশে বসিয়ে চুপি চুপি জিজ্ঞেস করি, কেন হৃদরোগটা হয় জানেন?

ডাক্তারকে এমন প্রশ্ন করায় বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করেন, কেন?

আমি স্বাভাবিক শান্ত কণ্ঠেই বলি, এ হৃদয়ে আমার একজন প্রেয়সীকে ধারণ করে রেখেছিলাম।

— তারপর!

ডাক্তার এবার কৌতূহলী হয়ে ওঠেন।

— তাকে পাই নি, তাই বলে হৃদয়ে ওর জায়গাটা খালি করে ফেলি নি। ও আছে আমার এ হৃদয়েই। ওকে না পাওয়ায় যে কষ্টটা অনুভব করেছি, সে কষ্টের রক্তক্ষরণেই এ হৃদরোগ। বুঝলেন?

প্রচন্ড হাসি দিয়ে ওঠেন ডাক্তার সাহেব।

আমি অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। ব্যাপার কী?

ডাক্তার হাসি থামিয়ে শান্ত হয়ে বলেন, একদম ভুল! মানুষের এমন ধারণাটাই ভুল।

— তবে?

আমিও বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করি। তাকে আরও বলি, আমার খুব কাছের এক বন্ধুর সাথে এ হৃদরোগ নিয়ে কথা বলছিলাম, সেও তো এমন ধারণাটা দিল।

ডাক্তার সাহেব হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছেন। হাত ‘না সূচক' নাড়া দিতে দিতে বলেন, আরে না, না,। ওসব কিচ্ছু না। হৃদয়ে রক্ত থাকে। শুধুই রক্ত। আর থাকে পাম্পযন্ত্র।

— পাম্পযন্ত্র! মানে ট্যাঙিতে পানি উঠায় যে পাম্প?

— ভাবতে পারেন তা-ই!

যেন আকাশ থেকে পড়লাম আমি। বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না। বিস্ময় নিয়ে ডাক্তারকে আরও একটু বসার ইঙ্গিত দিয়ে বলি, তারপর?

— সে পাম্প প্রতিদিন কত রক্ত পাম্প করে জানেন? প্রায় দুই হাজার গ্যালন।

— দু-ই-ই . . . হাজার গ্যালন! মিয়া আমারে গপপো মারার জায়গা পান না, না? আমি ওয়ানে পড়া বাচ্চা? আমার শরীরে হাজার গ্যালন রক্ত থাকলে আমার ওজন কত হবে? আমার ওজন তো সত্তর কেজি— গ্যালন হিসাবে বড়জোর চল্লিশ-পাচচল্লিশ কেজি!

ডাক্তার এবার বলেন, আমি উঠি, বাসায় গিয়ে রেস্ট নিতে হবে। কাল-পরশু তো আপনার বাইপাস হবে। আমাদেরও শরীর ঠিক রাখা দরকার। তাই ঘুম নষ্ট করতে চাই না।

— আরও একটু বসেন। মরার আগে কথা বলে নেই।

— মরার আগে মানে?

কেন কাল-পরশু তো মরতে পারি, তাই না? ওই যে আপনাদের টিভি স্ক্রিন, ওটায় কী বলে? আচ্ছা ওটা দিয়ে হৃদয়ের কী মাপেন? হৃদয়টা কখন থেমে যাবে, সেটা?

— কাল মরবেন মানে?

ডাক্তার আবার চমকে যায়। তারপর শান্ত কণ্ঠে বলে, এতো ভেঙে গেলে কী হয়? না না, আপনি একদম সুস্থ হয়ে যাবেন।

— আরে সাব শুনেন, না মরলে যে আজ একটা কাগজে সই করাতে এনেছেন। অপারেশনের সময় আমি মরলে আপনারা দায়ী না। এই তো?

— ও আচ্ছা, এটা তো একটা রীতি মাত্র। মারা যাবেন এমন তো কথা নয়। মানুষ চিকিৎসা করতে আসে কি মরার জন্য? অমন বন্ড নেওয়া একটা রেওয়াজ। আপনার ভয়ের কোনো কারণ নেই।

— শুনেন ডাক্তার সাহেব, আমি ঢাকার রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়ও মরতে পারি। এমন মরেছেও অনেকে।

— হাঁ, ঠিক।

— কিন্তু এভাবে মরার সম্ভাবনা আছে বলে কি ঢাকার মেয়র সাহেব রাস্তায় হাঁটার আগে বন্ড নেয়? রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে কেউ মরলে মেয়র দায়ী না। আসলে আপনাদের কাজে মরার সম্ভাবনাটা একটু বেশি, এই আর কি!

ডাক্তার সাহেব আরও হেসে দেন। তারপর বলেন, রাস্তায় হাঁটা আর আপনার অপারেশন কি একই হলো?

— একই।

— কেমনে?

— মানুষের মরার গ্যারান্টি কি কেউ দিতে পারে? সেটা একমাত্র আল্লাহ্্র এখতিয়ার। তা হলে কেন ওই গ্যারান্টিক্লজ লিখে নেন?

ডাক্তার আর কোনো কথা বাড়ায় না। শুধু বলে, আপনি বিশ্রাম নেন। আমি যাই আজ।

— প্লিজ ডাক্তার, আর একটু কথা বলতে চাই। যদি আল্লাহ্্ সত্যি সত্যি মৃত্যু রাখে, তবে তো আর কথা হবে না। তখন আপনি কিন্তু অনেক আপসোস করবেন। সে আপসোসের কষ্টে আপনার হৃদয়েও হৃদরোগ হতে পারে।

ডাক্তার পড়েছে বড় বেকায়দায়। রোগীটা তো অদ্ভুত। ছাড়ছে না। তবু অনুরোধ রক্ষায় বলে, ঠিক আছে ঠিক আছে, বলুন কী বলবেন।

— ওই যে আমি বলেছিলাম আমার প্রিয় মানুষটিকে হৃদয়ে রেখে দিয়েছি। আচ্ছা কাল তো আমার পুরো হৃদয়টা খুলে দেখবেন?

— হাঁ।

— দেখবেন তো হৃদয়ের যে স্থানটায় ওর জন্যে জায়গা রেখেছি, সেইখানেই ক্ষত? নাকি অন্য স্থানে?। অন্য কোথাও হলে কি জানাতে পারবেন কেন হয়েছে?

আবারও অট্টহাসি দিয়ে ওঠেন ডাক্তার।

আমি কিন্তু শান্ত। মৌন।

মৌনতার নিয়েই জিজ্ঞেস করি, আমাকে নিয়ে কৌতুক করছেন বুঝি?

— বলতে পারেন তেমনই। আসলে আপনাকে নিয়ে নয়, আপনাদের মতো সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা নিয়ে।

— কেমন?

— রক্ত ও শিরা-উপশিরা ছাড়া হৃদপিন্ডে আর কিছু থাকে না। প্রেম-ভালবাসা, দয়া-মায়া, মান-অভিমান, রাগ-দুখ এসব কিছু থাকার তো প্রশ্নই আসে না। হৃদপিন্ডের দুটি অংশ। একটি ভালো রক্তের, আরেকটি খারাপ রক্তের।

আমি গম্ভীর গলায় বলি, বলতে থাকেন। আমি ছাত্রের মতো শুনছি। যদি কিছু শিক্ষা পাই জীবনে উপকারও হতে পারে।

একটু মুসকি হেসে ডাক্তার বলতে থাকেন, একটা মানুষ বা প্রাণির প্রধান ব্যাপারই হলো রক্ত। রক্ত সচল না থাকলে সে প্রাণি বাঁচে না। আর রক্ত সচলের জন্যে রয়েছে সারাদেহে প্রচুর নালিকা রাশি। শিরা-ধমনী ইত্যাদি বলে এসবকে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মানুষের শরীরের এসব রক্ত চলাচলের নালিকার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য প্রায় ষাট হাজার মাইল।

— ওরে বাপরে! হাসপাতালের রোগী হিসেবে আমাকে বোকা বানাচ্ছেন না তো!

— ছি, ছি! আমার কথা নাতো এসব। মানুষের শরীর নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানীদের কথা এসব।

ডাক্তার এবার একটু বিরক্তভাব নিয়ে আবার বলে, শুনুন। সারা দেহে রক্ত চলাচলের অসংখ্য পথ রয়েছে। দেহের খারাপ রক্তকে হৃদয়ে এনে পরিশুদ্ধ করে আবার এসব পথ দিয়েই বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করা হয়। এটাই হৃদয়ের একমাত্র কাজ। মানুষ বা প্রাণির সকল অনুভূতি, চেতনা, প্রেম-ভালবাসা ইত্যাদি থাকে মস্তিষ্কে। মস্তিষ্ক এসব নিয়ে কাজ করে। মস্তিষ্কতই মূল গাইড। মানুষের ভালবাসাও মস্তিষ্কে থাকে। আপনার প্রেয়সীর অনুভবটাও আছে মস্তিষ্কে।

— ও এতোক্ষণে বুঝলাম হৃদয়টা ফাঁকা। আচ্ছা তারপর . . .!

আমিও বেশ কৌতূহলী হয়ে উঠলাম।

— দেহে রক্তকে সচল রাখতেই হৃদপিন্ডটা সংকোচন প্রসারণের মাধ্যমে রক্তকে পাম্প করে। হৃদয়ের ডান অংশ ভাল ও পরিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করে। কিন্তু কোনো কারণে যদি এ অংশে দূষিত রক্ত ঢুকে যায়, তবে কি শরীরটা আর সুস্থ থাকে?

— দূষিত রক্ত ঢুকবে কেন?

— ঢুকতেই পারে। খাবারের অনিয়ন্ত্রণ আর অনৈতিক খাদ্যদ্রব্যের কারণে রক্ত দূষিত হতেই পারে।

— অনৈতিক খাদ্যদ্রব্য . . .! হাঁ বুঝেছি।

আসলেই ঠিক।

সবাই বলে আমি সমাজের একজন সফল ব্যবসায়ী। ক্ষুদ্র পরিসর থেকে আজ আমি শিল্পপতি। আমার ব্যবসার পরিধি অনেক বড়। কোত্থেকে এসেছে এতো অর্থ বৈভব? সবই কি ব্যবসার লাভ? সরকারকে কর ফাঁকি দিয়েছি অনেক অনেক। ‘জালিয়াতি' আর ‘ম্যানেজ'এর কারসাজিতে ব্যাংক থেকে অনেক অনেক অর্থ আত্মসাৎ করেছি। অঢেল এ টাকায় বড় বড় হোটেলে কত অনৈতিক খাবার খেয়েছি। বিত্তশালী হতে গিয়ে অনেকের মতো আমিও একই পথে পা বাড়িয়েছি। আর এসব কারণেই আমার রক্ত দূষিত হওয়াটা স্বাভাবিক। ওই দূষিত রক্তের কারণেই আজ আমি একজন হৃদরোগী। অথচ দোষ দিচ্ছি আমার প্রেমের ব্যর্থতাকে। ডাক্তার তো ঠিকই বলেছেন হৃদয়ে প্রেম থাকে না। অনুভব থাকে না। ওসব থাকে মস্তিষ্কে। এখন! ডাক্তারকে শান্ত কণ্ঠে বলি, ডাক্তার সাব আমি যদি অমন খাবার না খাই?

— পারবেন না।

— কেন?

— আপনার মস্তিষ্ক আর চেতনা আপনাকে সে পথে দৃঢ় থাকতে দেবে না। আপনার লোভ আপনাকে আগ্রহী করে তুলবে। লোভটাও মস্তিষ্কের কাজ, হৃদপিন্ডের কাজ নয়। লোভ অত্যন্ত শক্তিশালী। পৃথিবীর সবচে শক্তিশালী। লোভ মানুষকে অমানুষ বানায়। লোভই সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।

— তাহলে আমার হৃদরোগ কি সারবে না?

— কীভাবে সারে বলুন। একবার যদি রক্তে খারাপ কিছু মিশে যায়, তার প্রভাবেই রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি হয়। ব্যাস! আপনি হয়ে গেলেন হৃদরোগী।

হৃদরোগীরা কখনো সচল হয় না। দ্রুত হাঁটতে পারে না। দ্রুত চলতে পারে না। দ্রুত কাজ করতে পারে না। সমাজে আন্দোলন করতে পারে না। আনন্দ উৎসবে যোগ দিতে পারে না। খাবার-দাবারে মনের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে পারে না। সাবধানে পথ চলতে হয়। এক কথায় পঙ্গু। প্রতিবন্ধি। আপাত দৃষ্টিতে সাধারণ সুঠাম মানুষ, নেপথ্যে বড়ই পঙ্গু। বড়ই প্রতিবন্ধি।

আমি শুয়ে ছিলাম।

এবার একটু উঠে বসি। তারপর শান্ত কণ্ঠে বলি, তা হলে আমার প্রেয়সী আমার হৃদয়ে নেই, এই তো।

— হাঁ। ওটা মন্তিষ্কের ব্যপার। মস্তিষ্কের কোষে তা সংরক্ষিত আছে বলেই আপনি মাঝে মাঝে মনে করেন। মস্তিষ্কে না থাকাটাই আমাদের ভুলে যাওয়া। হৃদয়ের কাজ কারিগরি কাজ, আবেগী নয়। হৃদয় হার্ডওয়ার, মস্তিষ্ক সফ্্টওয়ার এবং প্রচন্ড শক্তিশালী। মস্তিষ্কই বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়। মানুষ সে নির্দেশনায় চলে। আপনার মস্তিষ্কের নির্দেশনাতেই আপনি রক্তকে দুষিত করেছেন। আর তাই আজ আপনার হৃদপিন্ড দুর্বল অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

— তা হলে আগে আমাকে মস্তিষ্কের চিকিৎসা করাতে হবে।

— না, তাও পারবেন না।

— কেন? হৃদয়ের মতো বাইপাস করে মস্তিষ্ক ঠিক করতে পারবেন না? আমি বন্ডসই দিতে রাজি আছি। এখনই বন্ডসই দিব।

— শক্তিশালী মস্তিষ্কের সাথে আমরা লড়াই করতে পারব না। মস্তিষ্ককে ঠিক রাখা আপনার নিজের ইচ্ছার উপর, চিকিৎসায় নয়। লোভকে আপনি ইচ্ছা করলে নিয়ন্ত্রণ করকে পারেন। সে ইচ্ছাটাও মস্তিষ্ক থেকে আসে। আপনি লোভ নিয়ন্ত্রণের দিকটা চেষ্টা করুন। আচ্ছা আমি যাই আজ।

ডাক্তার আর জবাবের অপেক্ষায় না থেকে উঠে হনহন করে চলে গেলেন। একটুও ফিরে তাকালেন না। আমিও তার গমন পথের দিকে তাকিয়ে শুধু ভাবছি, মস্তিষ্কের পরিচর্চাই আমার প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল।

#

আমার অন্য গল্পগুলো পড়তে টোকা দিন :

গল্প : যে বাঁশি ভেঙে গেছে

কবিতার গল্প

গল্প : প্রজাপতি

গল্প : শিশির

গল্প : বাঁশির সুরে নদীর গান

নিষিদ্ধ গল্প

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২৯

আর্টিফিসিয়াল বলেছেন: +++++

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১

নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পটি পড়ার জন্যে।

২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

নূর আল আমিন বলেছেন: ভালাক্সে

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৫

নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পটি পড়ার জন্যে।
পাঠকের ভাল লাগাই আমার ভাল লাগা।

৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:১৭

ফেরারী আউট-ল বলেছেন: ুন্দর গল্প। ভাল লাগল

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৭

নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পটি পড়ার জন্যে।
সুন্দর উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। পাঠকের ভাল লাগাই আমার ভাল লাগা।

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪০

টুম্পা মনি বলেছেন: অনেক আবেগ দিয়ে লিখেছেন। ভালো লাগা রইল।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৯

নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পটি পড়ার জন্যে।
আবেগ আর চৈতনিক দৃষ্টিতে লেখার চেষ্টা করেছি।

৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


ভাল লাগা রইল +++

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১৩

নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পটি পড়ার জন্যে।

৬| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
ভাল লাগল ৷

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১৪

নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পটি পড়ার জন্যে।

৭| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:২৬

শাবা বলেছেন: সুন্দর গল্প। গল্পের রসবোধও চমৎকার হয়েছে। গল্পে পাঠকের জন্য একটা ম্যাসেজ রয়েছে, যা গল্পকে মহান করেছে।
গল্পের নায়ক শিক্ষিত এবং সম্পদশালী। কিন্তু ডাক্তারের সাথে কথোপকথনে মনে হয়েছে তিনি চরম মুর্খ এবং শিশুসুলভ। একজন পরিণত বয়সের ব্যক্তির হৃদয় ও মস্তিষ্কের ব্যাপারে ন্যূনতম ধারণা নেই, তা হাস্যকর মনে হয়েছে। এখানে তার শিশুসুলভ ধারণা ও কথাবার্তা গল্পের বক্তব্যের গভীরতাকে ব্যাহত করেছে। মনে হয়েছে, কোন একটা বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে কৃত্রিমভাবে কথামালা সাজানো হয়েছে।
যাক, আমি হয়তো বেশিই বলে ফেললাম। আসলে একটি সুন্দর গল্পের কিছু অসুন্দর দিক তুলে ধরেছি (যা আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, যার সাথে অন্যরা একমত নাও হতে পারেন), যা শুধরে গল্পটা আরো নিখুঁত হতে পারে।
একটা মজাদার গল্প উপহার দেয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:২৪

নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ চিন্তাশীল মন্তব্য করার জন্য।

'গল্পের নায়ক শিক্ষিত এবং সম্পদশালী। কিন্তু ডাক্তারের সাথে কথোপকথনে মনে হয়েছে তিনি চরম মুর্খ এবং শিশুসুলভ। একজন পরিণত বয়সের ব্যক্তির হৃদয় ও মস্তিষ্কের ব্যাপারে ন্যূনতম ধারণা নেই, তা হাস্যকর মনে হয়েছে।'

ছোটগল্পের অনেক ধারার একটি 'রম্য' ধারা্। রম্যধারায় হাস্য-কৌতুকের মাধ্যমে ম্যাসেজকে প্রতিষ্ঠা করে। ম্যাসেজের তীব্রতাকে তুলে ধরে। হাস্য-কৌতুক মানেই শিশুসুলভ জাতীয় কথাবার্তা। সাধারণ কৌতুকেও বিষয়-কথাটা শিশুসুলভ, বোকামীর মতো। তা যদি শুধরে নিয়মমাফিক কথা বলা হয় তখন আর তা কৌতুক থাকে না।পাঠককে এ কৌতুকময় রম্যধারাটা বুঝতে হবে।

৮| ১০ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩

শাবা বলেছেন: বাংলা সাহিত্যে রম্য ধারায় শ্রেষ্ঠ লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী। রবীন্দ্রনাথ সহ সকলেরই কম-বেশি রম্য লেখা রয়েছে। আবুল মনসুর আহমদও রম্য লেখায় বিখ্যাত ছিলেন। রম্য চরিত্র আদু ভাই বাংলা ভাষায় উপমায় পরিণত হয়েছে। এ ধরনের লেখার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি তীর্যকভাবে তুলে ধরা হয়। এসব লেখায় হয়তো কখনো কোন বোকা লোকের চরিত্র থাকে, থাকে পাগলের চরিত্র অথবা থাকে বিভিন্ন অসঙ্গতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের চরিত্র। এসব চরিত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন ম্যাসেজ দেয়া হয়। এসব চরিত্রের রূপায়ণ দেখে খটকা লাগে না। কিন্তু একজন স্বাভাবিক শিক্ষিত লোক অশিক্ষিতের মত কথা বলবে, মুর্খলোকের মত প্রশ্ন করবে- এটা অস্বাভাবিক।এভাবে আসলে হিউমার হয় না। যেমন হুমায়ুন আহমেদ-এর হিমু চরিত্র। অসংখ্য হাস্যকর আচরণ করলেও সেটাকে অস্বাভাবিক লাগে নি, বরং হাসির খোরাক যুগিয়েছে। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.