নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু: চির অজেয় বিশ্বশ্রেষ্ঠ জেনারেল

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:০৭



মনের কথা মনের ব্যথা

আহ! আজকের মুসলিম সন্তানদের অধিকাংশ আমরা আমাদের পরিচয়টুকু পর্যন্ত জানি না। মুসলিম মায়ের দুগ্ধ পান করা সত্বেও, ধমনীতে মুসলিম বাবার রক্ত প্রবাহিত থাকার পরেও আজ আমরা ইতিহাস বিমুখ আত্মপরিচয় বিস্মৃত এক জাতিতে পরিনত হচ্ছি দিনকে দিন। বেড়ালের মত পোষ মেনে মাথা নিচু করে বিজাতীদের নাকানি চুবানীর নিচে আমাদের শতবর্ষী হয়ে বেঁচে থাকার উদগ্র স্বাদ। হায়রে জিন্দেগী! হায়রে জীবন! অথচ কথা ছিল ভিন্ন - মুসলিম মায়ের সন্তান আমি, আমার শিরায় শিরায় বহমান খালিদ, উমার, জাররা, আইউবীর তেজদীপ্ত রক্ত রুধীর। আমাদের হৃদয়ের গহীনের প্রয়াস আর প্রত্যাশা থাকার কথা ছিল- 'বেড়ালের মত শতবর্ষ নয়, আমি মুসলিম! সিংহের মত এক দিন বাঁচতে চাই!'

সোনালী যুগের স্বর্নঝড়া ইতিহাস রয়েছে আমাদের। কিন্তু সে ইতিহাসে ধুলোর আস্তরন জমে আছে। তা চাপা পড়ে আছে আমাদের পেছনে। আমরা ইতিহাস পড়ি না। পেছনের দিকে ফিরে তাকাই না। আমরা আজ আত্মপরিচয়ে অজ্ঞ যেন ভূইফোঁর এক জাতি! জ্ঞানের এ দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিকারে ভূমিকা নিতে হবে আমাদেরকেই! ইতিহাসের আলো ঝলমলে পাতাগুলো উল্টে উল্টে দেখতে হবে বারবার। খুলে খুলে ধরতে হবে নতুন প্রজন্মের সামনে। তারই একটুখানি, এক ঝলক তুলে আনার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় মহাবীর খালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর তেজোদীপ্ত জীবনের স্মরনে এই নিবন্ধ।

অসামান্য বীরত্ব অতুলনীয় শৌর্যবীর্য

পৃথিবীর ইতিহাসে দু'জন জেনারেল কখনোই কোনো যুদ্ধে পরাজিত হননি। তাদের একজন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু। তবে অপরজন অপারাজেয় জেনারেল হলেও খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর মত প্রজ্ঞাবান এবং বিচক্ষণ তিনি ছিলেন না। খালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর জন্মই হয়েছিল যুদ্ধ ও বিজয়ের জন্য। আর আল্লাহ পাক তাঁকে প্রয়োজনীয় সব রকমের সামরিক গুণাবলী দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সমরাস্ত্রের জ্ঞান, যুদ্ধ নীতি, যুদ্ধ পরিচালন কৌশল, যুদ্ধের ময়দান ও তার আশপাশ এলাকা সম্পর্কে পূর্বধারনালাভ, শত্রুদের পর্যবেক্ষন ক্ষমতা, গুপ্তচর বা স্কাউটদের বিচক্ষণতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করাসহ যুদ্ধ জয়ের অভূতপূর্ব সকল কৌশল ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসমূহ তাঁকে দুনিয়ার সর্বোচ্চ জেনারেলের আসনে অধিষ্ঠিত করেছে।

অন্যান্য মুসলিম জেনারেলগন যেখানে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সকলের মতামত সংগ্রহ করে যুদ্ধের পরিকল্পনা করতেন, সেখানে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এক যুদ্ধ শেষ করার সাথে সাথেই টর্ণেডোর গতিতে পরিবর্তী যুদ্ধের পরিকল্পনা করে ফেলতেন। তাঁর প্রতিটি পরিকল্পনাই ছিল নিখুঁত, দক্ষ এবং মজবুত। যুদ্ধ সম্পর্কে তাঁর এই বিচক্ষণতা অন্য যে কোনো মুসলিম সেনানায়ক বা দুনিয়ার অন্য যে কোনো জেনারেলের ছিল না। পারস্য এবং সিরিয়া বিজয়ের সকল কর্তৃত্ব শুধুমাত্র খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর। পারস্য সাম্রাজ্য করায়ত্ত করার পিছনে মুসান্না বিন হারিসা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এবং কাকা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু -এই দুই মুসলিম সেনাপতির অবদান অনেক। অন্যান্য পদাতিক সৈনিক এবং অশ্বরোহী সবাই আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য যুদ্ধ করেছেন, দুনিয়ার কোনো কিছু পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁরা জীবন উৎসর্গ করেননি। দামেস্ক, সিরিয়া, প্যালেস্টাইন অভিযানে আবু উবাইদা বিন জাররাহ, আমর বিন আস, শুরাহবীল, ইয়াজিদ বিন আবু সুফিয়ান, আব্দুর রহমান বিন আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুমগনের মত ইতিহাস খ্যাত সেনাপতির সাথে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে সর্বাধিনায়ক করে দেয়া হয়। আবু উবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু রোম সাম্রাজ্যের সকল সৈনিকের অন্তরে ভয়-ভীতি এবং ত্রাসের কম্পন সৃষ্টি করেন। রোমের সকল সৈন্যের মুখে মুখে এই উলঙ্গ বীর মুসলিমের নাম। তাঁর ‘উলঙ্গ’ উপাধীতে ভূষিত হওয়ার কারণ, যুদ্ধের ময়দানে পায়জামা ব্যতীত শরীরের সকল জামা, যুদ্ধের পোশাক তিনি খুলে ফেলতেন এবং স্রেফ খালি গায়ে তলোয়ার হাতে যুদ্ধ করতেন এবং শত্রু নিধনে মেতে উঠতেন। তাঁর নাম ছড়িয়ে পরার কারণ আজনাদাইনের যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তাঁকে শত্রু শিবিরের খবরাখবর নেয়ার জন্য পাঠান। শত্রু শিবিরের আশপাশে ঘোরাঘুরি করে খবরাদি সংগ্রহের এক পর্যায়ে জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে ২৬/২৭ জন রোম আশ্বরোহী দক্ষ সৈনিক ধাওয়া করে। জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু নিজের ঘোড়া ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ১৯ জন রোম অশ্বরোহীকে হত্যা করে ফেলেন। বাকীরা পালিয়ে যায়। খালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর পক্ষ থেকে আদেশ ছিল, কোন আক্রমন না করা, এই আদেশ না দিলে জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তার পিছু নেয়া সকলকে পিছনে ধাওয়া করে হত্যা করে ফেলতেন। আবু উবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর এই অসাধারন বীরত্ব গাঁথা স্বয়ং রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসকে পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেয়।

বিজয়, বিজয় এবং বিজয়ই যার কপালে চুমু খেয়ে যায় সতত:

আবু উবাইদা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ছিলেন রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘোষনা করা দশ জন জান্নাতি সাহাবীর একজন। ইকরামা বিন আবু জাহেল, মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান, যুবায়ের রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুম; বদর, উহুদের সাহাবীগণসহ তখনকার সময়ের অনেক বিখ্যাত সাহাবীদের খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর নেতৃত্বে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা যুদ্ধের ময়দানে শরীক করেছিলেন যাদের অন্তরের ‘দৃঢ়তা’ ছিল মানবেতিহাসের সবচেয়ে উঁচুতে। এই রকম খাঁটি বিশুদ্ধ অন্তরধারীদের আল্লাহ্ পাক খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর পেছনে যুদ্ধের ময়দানে সমবেত করেছেন আর এই জন্যই তিনি পৃথিবীর যুদ্ধ জয়ের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ সাফল্যলাভে ধন্য হয়েছেন এবং শ্রেষ্ঠতম মর্যাদাবান জেনারেলে উপনীত হতে সক্ষম হয়েছেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর নেতৃত্বে সংঘটিত প্রতিটি যুদ্ধে মুসলমান সৈন্যের তুলনায় শত্রুদের সংখ্যা সব সময় তিন/চার/ছয় গুণ বেশী ছিল। তারপরও সকল যুদ্ধে মুসলমানগণ জয় লাভ করেন। আর এর মূল কারণ ছিল, খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এবং সকল মুসলিমদের ভরসা ছিল একমাত্র আল্লাহ পাকের উপর। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল, আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন। না জগতের মাল সম্পদ অর্জন, আর না কোনো গৌরব কিংবা নেতৃত্বলাভ। এসবের কোনো মোহ তাদের স্পর্শ করতে পারেনি বলেই তারা জীবন বাজি রেখে ঝাপিয়ে পড়েছেন শত্রুর মোকাবেলায়। হয় শাহাদাতের অমীয় সুধা পান নয়তো বিজয়ের মালা গলে ধারন -এই যাদের স্বপ্ন, এই যাদের চেতনা তাদের থামিয়ে রাখে সাধ্য কার? তাদের দমাতে পারে কোন্ সে শক্তি?

তরবারিতে আগুন জ্বলে: নয়খানা তরবারি ভাঙ্গার মূতার সেই দিন

ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয়ের পরে মূতার যুদ্ধ দিয়ে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর যুদ্ধযাত্রা শুরু। মূতার যুদ্ধে তিনি ছিলেন সাধারন সৈনিক। দলের কমান্ডার ছিলেন যায়েদ বিন হারিসা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু। যায়েদ বিন হারিসা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু মূতার প্রান্তরে বীরদর্পে জিহাদে অবতীর্ন হয়ে শাহাদাতের নজরানা পেশ করলে জাফর বিন আবি তালিব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু জিহাদের ময়দানে মুসলমানদের ঝান্ডা হাতে তুলে নেন। জাফর বিন আবি তালিব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু শাহাদাত বরন করলে আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু রাসূলে খোদার নির্দেশ মত সেনাধিপতির দায়িত্ব পালন করেন। আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করে জান্নাতবাসী হলে মুসলমানদের মধ্যে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। আরকাম বিন আরকাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তখন ইসলামের পতাকা খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর হাতে ন্যস্ত করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু নিজেকে অযোগ্য মনে করে সাবিত রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে সেনাধ্যক্ষ হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু সাবিত রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বলেন “আমার চেয়ে তুমিই বেশী যোগ্য”। নিতান্ত বাধ্য হয়ে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু সেনাপতির দায়িত্ব গ্রহন করে অল্পক্ষনের ভেতরে তাঁর স্বভাবসুলভ নিপূন দক্ষতায় মুসলিম বাহিনীকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর হাতে একে একে নয়টি তলোয়ার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় শত্রুর মোকাবেলায়। এই যুদ্ধে অসম সাহস, অমিত তেজ বীরত্ব আর অসাধারন রনকৌশলের প্রয়োগ দেখে আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ‘সাইফুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ্র তলোয়ার’ উপাধি দেন।

মক্কা বিজয়ের সময় রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ হাজার সৈন্যকে চারটি দলে ভাগ করেন। এক দলের কমান্ডারের দায়িত্ব অর্পন করা হয় খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর উপরে।

প্রিয় নবীজীর দুআয় খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর সুস্থতালাভ

হুনাইনের যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে ৭০০ সৈন্য দেওয়া হয়। কিন্তু মালিক বিন আউফের নেতৃত্বে তীরন্দাজদের হঠাৎ আক্রমনে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু আহত হন এবং ঘোড়া থেকে পরে যান। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে খালিদের কাছে এসে তাঁর জন্য দোয়া করেন এবং এরপরে তিনি অনেকটা সুস্থ বোধ করেন। তারপর সাধারণ সৈনিক হিসেবে হুনাইনের যুদ্ধ অংশগ্রহন করেন।

স্বধর্মত্যাগীদের দমনে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর নেতৃত্বে অভিযান

স্বধর্মত্যাগীদের বিরুদ্ধে আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এগারটি কোর বা দল গঠন করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে প্রথমে বুজাখা তারপর বুতায় প্রেরণ করা হয়। প্রথমে দাওয়াতের মাধ্যেমে ইসলাম গ্রহণ করা, না হলে জিজিয়া কর প্রদানে বাধ্য করা, সর্বশেষ যুদ্ধ। বুজাখায় খালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ভন্ড নবী তুলাইহার বাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং তুলাইহা তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘোড়ার উপরে উঠে যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করেন। তারপর খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু জাফর নামক স্থানে পৌঁছে দুই বাহিনীর মোকাবিলা করেন। স্বধর্মত্যাগী সালমার বাহিনীকে পরাজিত করেন এবং তাকে নিহত করেন।

ইয়ামামার যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর বীরত্ব

ইকরামা বিন আবু জাহেল ভন্ড নবী মুসাইলামা কাজ্জাবের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ন হয়ে পরাজিত হওয়ার পর খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ইয়ামামার প্রান্তরে (বর্তমানে রিয়াদ) আকরাবা নামক সমতল ভূমিতে মুখোমুখি হন। মুসাইলামার সৈন্য সংখ্যা ৪০,০০০ আর খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর সৈন্য সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩,০০০। মুসাইলামা ও তার বাহিনী প্রথমে মুসলিম বাহিনীকে কাবু করতে পারলেও পরে পিছু হঠতে বাধ্য হয় এবং সবাই বাগানে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং গেট বন্ধ করে দেয়। বাররা বিন মালিক নামের এক অসম সাহসী মুসলিম যোদ্ধা দেয়াল টপকে শত্রুশিবিরের ভেতরে ঢুকে পরেন এবং শত্রু কবলিত দুর্গ বাগানের গেট একাই খুলে দিতে সক্ষম হন। মুসলিম বাহিনী বাগানে ঢুকে সকলকে পাইকারীভাবে হত্যা করে। হামযা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর হত্যাকারী ওয়াহশী বাগানের ভিতরে ভন্ড মুসাইলামাকে বর্শা নিক্ষেপ করে হত্যা করেন। এই যুদ্ধে মুসলমানদের ভেতরে শহীদদের সংখ্যা ১২০০ এবং শত্রুদের নিহতদের সংখ্যা ২১,০০০ জন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর সকল যুদ্ধ সন্নিবেশিত করলে লেখা অনেক বড় হবে বিধায় কিছু গুরুত্বপূর্ন যুদ্ধের নাম উল্লেখ করে সীমাবদ্ধ রাখর চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহু তাআ'লা।

পারস্য অভিযান

পারস্য অভিযানে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু প্রথম মোকাবিলা করেন জেনারেল হরমুজের বিরুদ্ধে। এবং সেটা ছিল কাজিমা নামক স্থানে। সেকালে পারস্য সাম্রাজ্যে মাথার ক্যাপের মূল্যের উপর জেনারেলদের পদ ও মর্যাদা নির্ধারিত হত। হরমুজ ছিলেন পারস্য সাম্রাজ্যের প্রধান জেনারেলদের একজন এবং ১ লক্ষ দিরহামের মুকুট তিনি পরিধান করতেন। তাদের সৈন্য সংখ্যা ছিল বিশাল। মুসলমানদের সৈন্য সংখ্যা মাত্র ১৮,০০০। কাজিমার যুদ্ধে হরমুজ নিহত হন এবং ব্যপক ক্ষয়-ক্ষতি হয় শত্রু বাহিনীর।

খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু দ্বিতীয় বড় যুদ্ধের মোকাবিলা করেন মাকিল নদীর তীরে পারস্য জেনারেল কারিনের বিরুদ্ধে। তিনিও ১ লক্ষ দিরহামের মুকুট পরতেন। এ যুদ্ধেও যথারীতি জেনারেল কারিন নিহত হন এবং তার বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। এই যুদ্ধে পারস্য বাহিনীর ৩০.০০০ সৈন্য নিহত হয় এবং বাকীরা পালিয়ে যায়। এই দু'টি যুদ্ধে পলাতক সৈন্যরা পিছনে গিয়ে আবার পরবর্তী বাহিনীতে মিলিত হয়। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এই সমস্যার সমাধান কল্পে পথ ও পন্থা নিরুপনে নিমগ্ন হন। পলাতক সকল সৈন্যকে হত্যা করতে চান, যেন পালিয়ে যাওয়া এই সৈনিকরা দ্বিতীয়বার আর যুদ্ধে অবতীর্ন হওয়ার সুযোগ না পায়।

পারস্য অভিযানে তৃতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয় ওয়ালাজা নামক স্থানে এবং এই যুদ্ধে শত্রুপক্ষের জেনারেল ছিলেন আন্দারজাঘর। তিনি ৫০ হাজার দিরহামের মুকুট পরতেন। এই যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ যুদ্ধের কৌশল আবলম্বন করেন। উহুদের যুদ্ধে মুসলিমগণ পরবর্তীতে পরাজিত হলেও এর ফলাফল আল্লাহ্ তায়ালা এই ওয়ালাজার যুদ্ধে রেখেছেন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর জন্য। কোনো সৈন্য যেন পালাতে না পারে সবাইকে হত্যা করার জন্য তিনি কৌশল অবলম্বন করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু পুরো বাহিনীকে সমূলে ধ্বংস করেন এবং সকলকে হত্যা করেন যেন কেউ পিছনে আর কোন বাহিনীর সাথে যুক্ত না হতে পারে।

পরবর্তীতে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু চতুর্থ বড় যুদ্ধে লিপ্ত হন বাজানের বাহিনীর বিরুদ্ধে উল্লিসের কাছাকাছি। বাজানের বাহিনীর সাথে মিলিত হয় আরব খৃষ্টানদের সম্মিলিত বাহিনী। এই যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু জয়লাভ করেন মাত্র ১৮,০০০ সৈন্য নিয়ে। এই যুদ্ধে পারস্য সৈন্যের নিহতের সংখ্যা তাবারীর মতে ৭০,০০০ জন।

এরপর খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু হীরা, আনবার, আইন-উত-তামার, দূউমাত-উল-জান্দালসহ অনেক দূর্গ এবং এলাকা বিজয় করেন।

ফিরাজে পারস্য, রোম এবং আরব খৃষ্টান ও ইহুদীদের সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করেন। কোনো কোনো ইতিহাসবিদ বলেন, এই সম্মিলিত বাহিনীর মোট ১ লক্ষ লোক নিহত হয়।

সিরিয়া অভিযান

পারস্য সাম্রাজ্য মুসলমানদের অধীনে করায়ত্ত করার পর খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু সিরিয়া অভিমুখে রওয়ানা করেন আমীরুল মুমিনীন আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর নির্দেশে। সেখানে উবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুসহ সকল সেনাপতিদের একত্র করে একের পর এক যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করেন। সকল যুদ্ধে জয়লাভ করেন। সমগ্র সিরিয়াই খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর মাধ্যমে মুসলমানদের অধীনে আসে। হিরাক্লিয়াস যখন একের পর এক পরাজয়ের খবর পেতে থাকেন তখন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরেন। বুঝে ফেলেন, মুসলিমদের আর পরাজিত করা যাবে না। তাই শেষ ভরসা রুশ, আর্মেনিয়া, স্লাভ, ফ্রাঙ্ক, গ্রিক, জর্জীয়, আরব খৃষ্টান-ইহুদী, সিরিয় বাহিনী একত্র করে মুসলিমদের শেষবারের মত আক্রমন করে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বদ্ধ পরিকর হন। হিরাক্লিয়াস সর্বাধিনায়ক করে দেন আর্মীয় জেনারেল মাহান-কে। রোমের মোট সৈন্য সংখ্যা দাড়ায় ২,০০,০০০ জনে। অনেক ইতিহাসবিদ বলেন, সঠিক সংখ্যা ১,৬০,০০০। আর মুসলমানদের ৪০,০০০ বা কারো মতে, ৪২,০০০। সংখ্যায় মুসলমানদের তুলনায় ৪ গুণ বা তারও বেশি। মুসলিম বেশ কয়েকজন সেনাপতি এই যুদ্ধে অবতীর্ন না হতে পরামর্শ দেন, কিন্তু খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু অনঢ়। তিনি তাঁর দক্ষতাকে কর্মে পরিণত করতে পছন্দ করেন। এই বিশাল রোমক বাহিনীকে সুকৌশলে গরমের মধ্যে নিজের সুবিধা মত স্থান ইয়ারমূক প্রান্তরে নিয়ে আসেন, যাতে করে দীর্ঘ ভ্রমণে রোমক বাহিনীকে পরিশ্রান্ত ও দূর্বল করা যায়। ইয়ারমুক ছিল মদীনা, দামেস্ক, জেরুজালেমসহ অনেক গুরুত্বপূর্ন জায়গার মিলনস্থল। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করতেই হয়, তাহল যেই দামেস্ক এবং হেমসসহ অনেক শহর মুসলমানগন দখল করেছিলেন জিযিয়া করের মাধ্যমে, ইয়ারমূক যুদ্ধের আগে সেই শহরগুলো ত্যাগ করার সময় সেই জিযিয়া করের অর্থ সম্পূর্ণ ফেরত দেয়া হয় এই বলে যে, তাঁরা (মুসলমানগণ) এই শহরের অধিবাসীদের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে এখন অপারগ। এতে সেসব শহরের অধিবাসীগণ মুসলমানদের আচরণে মুগ্ধ হন। বর্তমানে ইসলাম বিদ্বেষী, যারা সূরাহ আততাওবাহর ২৯ নাম্বার আয়াত নিয়ে জিঘাংসার খেলা খেলে থাকেন, তাদের ইসলাম ও ইসলামের ইতিহাস আরো জানার জন্য আহবান করি। লাফাঙ্গাদের মত না লাফিয়ে আরো গভীরে গিয়ে জানার চেষ্টা করার আহবান জানাই। যা হোক, ইয়ারমুকের ৬ দিনের যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু যে নেতৃত্ব দান করেন তার নজির বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আর নেই। ইকরামা বিন আবি জাহল রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ও তাঁর ছেলে আমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু একই সাথে যুদ্ধের ৪র্থ দিনে আহত হয়ে রাতে শাহাদাত বরন করেন। আবু সুফিয়ান, যিনি ছিলেন ইসলামের বড় শত্রু, তিনি তাঁর ছেলের দলে সৈনিক হয়ে যুদ্ধে করেন এবং যুদ্ধের ৪র্থ দিনে একটি চোখ হারান, যেই হিন্দা উহুদের যুদ্ধে হামযা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর কলিজা চিবিয়েছিলেন তিনি মুসলমানদের পক্ষ হয়ে বিশাল ভূমিকা রাখেন। উবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, যিনি রোম সাম্রাজ্যে ‘উলঙ্গ বীর’ হিসেবে ত্রাসের সৃষ্টি করেছিলেন, তাঁর বোন খাওলা সাহসিকতার সাথে যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ শুরু করে দেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তাঁর আসল চালটি চালেন ৬ষ্ঠ দিনে। পুরো রোমক বাহিনীকে হত্যার মাধ্যমে ধ্বংসযজ্ঞের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন। কেউ যাতে পালাতে না পারে, আবু উবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর অধীনে ৫০০ অশ্বারোহীর মাধ্যমে পথ বন্ধ করে রাখেন। শুধু একটি পথ খোলা রাখেন, যা দিয়ে মাহান ও রোমক বাহিনীর সৈনিকগন পলায়ন করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ময়দানের সকল সৈন্য হত্যা করে মাহানের পিছনে অশ্বরোহী বাহিনী প্রেরণ করেন এবং পথে মাহানসহ বহু রোমক সৈন্যকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসবিদদের মতে রোমক সৈন্যের মৃতের সংখ্যা ছিল ৭০,০০০।

সর্বশ্রেষ্ঠ রনকৌশলী

খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর রণকৌশল, সমরাস্ত্র জ্ঞান অতুলনীয়। কোন ইতিহাসবিদের তুলিতে তাঁর অনবদ্য, অবিস্মরনীয় এবং অতুলনীয় অবদান লিখা বা অঙ্কন করা সম্ভব নয়। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু যদি পরবর্তীতে সর্বাধিনায়ক হিসেবে বহাল থাকতেন হয়তোবা তাহলে শুধু সিরিয়া নয়, পুরো রোম সাম্রাজ্য তখনই মুসলমানদের অধীনে এসে যেত। বাকী ইউরোপ মুসলমানদের অধীনে আসাটাও ছিল শুধু মাত্রই সময়ের ব্যাপার। কিন্তু কেন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে সর্বাধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হল? কেন? কেন দেয়া হল? কে করেছিলেন এই কাজটি? তিনি আর কেউ নন- দ্বিতীয় খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু।

বিদায় হজ্জ্বের দিন রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথার কিছু চুল ফেলে দিলে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তা সংগ্রহ করে রেখে দেন। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করেন “হে খালিদ, তুমি এই চুল দিয়ে কি করবে?”

খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু উত্তর দিয়েছিলেন, “হে আল্লাহর রাসুল, আমি শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় এর থেকে শক্তি অর্জন করব”।

রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যতক্ষন এই চুল তোমার সঙ্গে থাকবে তুমি অপারাজিত থাকবে”।

সেই থেকে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু চুলগুলো তাঁর লাল টুপির মধ্যে ভরে নিজের মাথায় রাখতেন সবসময় যুদ্ধের ময়দানে। স্বয়ং নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ‘সাইফুল্লাহ’ উপাধি দিয়ে মুসলিমদের সর্বাধিনায়ক করে দিয়েছেন।

প্রথম খলিফা আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর কাছে উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু সম্পর্কে কিছু অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন, যেন সেনাপতির পদ থেকে তাকে অপসারণ করা হয়। খলিফা আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুও জানতেন, উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর ক্ষোভের কথা। কিন্তু আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু কখনোই উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর কথা আমলে নেননি। বরং আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু মদীনায় উচ্চ স্বরে বলতেন “আরবের আর কি কোন রমনী আছেন যিনি খালিদের মত সন্তান প্রসব করতে পারে”?

সেনাপতি যখন সাধারন সৈনিক

খলিফাতুল মুমিনীন উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু খিলাফতে আসীন হয়ে প্রথম যে কাজটি করেন তা হল, আবু উবাইদা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে সর্বাধিনায়ক করে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে আবু ঊবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর অধীনস্থ করে দেন। যার ফলাফল সাথে সাথে পাওয়া যায়। আবু উবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু সর্বাধিনায়ক হওয়ার পর আবুল কুদসে ৫০০ অশ্বারোহী দিয়ে জাফরের ছেলে আব্দুল্লাহকে একটি অভিযানে প্রেরণ করেন। এই বাহিনী ৫,০০০ রোম সৈন্যদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে পরে। পরে অবশ্য আবু উবাইদা বিন জাররা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর অনুরোধে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে তাদের মুক্ত করেন, কিন্তু ততক্ষনে বাহিনীর অনেকেই শাহাদাতবরন করেন রোম সৈন্যদের হাতে।

যে কারনে সেনাপতির পদ থেকে অপসারণ

খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে সেনাপতির পদ থেকে অপসারণ করার পেছনে কি কারন ছিল? ইতিহাস পাঠে জানা যায়, খলিফা উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু গোয়েন্দা মারফত জানতে পারেন, খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু যুদ্ধলব্ধ গনিমতের মাল নিজের খেয়াল খুশিমত যেখানে সেখানে খরচ করেন এমনকি নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনাদিতেও তা ব্যয় করে চলেছেন। উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর নিকট এই মর্মে সংবাদ আসে, কবি আশআস-কে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বখশিশ হিসেবে দশ হাজার দিরহাম দিয়েছেন।

এসব কথাবার্তার প্রেক্ষিতে খলিফা উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বেলাল রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে সেখানে পাঠিয়েছিলেন বিচার করার জন্য। কবি আশআস-কে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু দশ হাজার দিরহাম কেন দিলেন, উমার রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর বিবেচনায়, এটি ছিল খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর অপরাধ। আশাআস একটি কবিতা রচনা করে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে দেন। সেজন্য খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু আশআসকে এই অর্থ প্রদান করেন। এ অর্থ তিনি খুশি হয়ে দান করেন আশআসকে এবং তা তার ব্যক্তিগত অর্থ থেকে। রাস্ট্রীয় কোষাগার থেকে নয়।

সূত্রঃ

১। ইসলামের ইতিহাস ১ম খন্ড

ডাউনলোড লিঙ্ক-

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড - মাওলানা আকবার শাহ খান নজিবাবাদী

২। ইসলামের ইতিহাস ২য় খন্ড

ডাউনলোড লিঙ্ক-

ইসলামের ইতিহাস ২য় খণ্ড - মাওলানা আকবার শাহ খান নজিবাবাদী

৩। ইসলামের ইতিহাস ৩য় খন্ড

ডাউনলোড লিঙ্ক-

ইসলামের ইতিহাস ৩য় খণ্ড - মাওলানা আকবার শাহ খান নজিবাবাদী

৪। আল্লাহর তলোয়ার - এ আই আকরাম

ডাউনলোড লিঙ্ক-

আল্লাহর তলোয়ার - এ আই আকরাম

৫। মুসলিম উম্মার পতনে বিশ্বের কি ক্ষতি হল - আবুল হাসান আলী নদভী

ডাউনলোড লিঙ্ক-

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

৬। নাঙ্গা তলোয়ার (১-৬ খন্ড) - এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ

ডাউনলোড লিঙ্ক-

[link|https://ia801600.us.archive.org/9/items/altamash/Nanga-Taloar-1.pdf|

Nanga Talwar Part-03-04]

[link|https://ia801600.us.archive.org/9/items/altamash/Nanga-Taloar-2.pdf|

[link|https://ia801600.us.archive.org/9/items/altamash/nanga-toloyar-05.pdf|

Nanga Talwar Part-06]]

৭। দ্যা স্পিরিট অফ ইসলাম - সৈয়দ আমীর আলী

The Spirit of Islam

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২৭

লিংকন১১৫ বলেছেন: ভালো লাগলো
ধন্যবাদ

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রথম মন্তব্যে অভিনন্দন জানবেন।

অনেক ভাল থাকুন।

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৪

saif sakib বলেছেন: যে জাতি নিজের ইতিহাস ভুলে যায় সে জাতিকে দুনিয়া ভুলে যায়।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



সঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।

পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। অনেক ভাল থাকার প্রার্থনা।

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:২১

আবু তালেব শেখ বলেছেন: অনেক দিনপর আপনার মুল্যবান পোস্ট পড়বো। বিস্তারিত পড়বো।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ঝড়ের কবলে পড়েছিলুম। নামাজ এবং লাঞ্চ এর বিরতিতে ফ্লাডিং শুরু করেছিল পুরনো ফ্লাডিং বন্ধু। যাহোক, অল্পতে হাত গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন ভদ্রলোক(!)।

আপনাদের পাশে কত দিন থাকতে পারবো জানি না। কেবল মাত্র আল্লাহ পাকের প্রতি ভরসা।

অনেক ভাল থাকুন। কৃতজ্ঞতা।

৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫

নীল আকাশ বলেছেন: নকীব ভাই, এটা কি করলেন আপনি?
কালকে ইশার নামায শেষ করার পর হটাৎ করে এই ইসলামের বীর শ্রেষ্ঠ কে নিয়ে লেখার ইচ্ছা করলো, তার অসামান্য জীবন টাকে নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম আর আজকেই আপনি লিখে ফেললেন! আহ!
আপনি কি জানেন উনি হযরত উমর (রা::) এর সম্পর্কে ভাই ছিলেন এবং দেখতেও অনেক টা এক রকম ছিলেন।
ভালো থাকুন, আল্লাহর রাস্তায় লেখার জিহাদ থেকে কখনো পিছিয়ে আসবেন না।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৬

নতুন নকিব বলেছেন:



যাক, ছোট্ট হলেও আমার ভা্ইয়ের একটি মনোবাসনা পূরন করতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ। ইচ্ছে তো জাগে কত কিছুতে কলম ধরি, কিন্তু সেই সময় আর সুযোগ কোথায়? এ আই আকরাম এর সোর্ড অব আল্লাহ পড়েছেন? দারুন, অসাধারন, জীবন্ত। মনে হয় যেন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর সাথে প্রতিটি মাঠে আমিও ছিলাম।

যেহেতু মনের কোনে একটি স্বপ্ন ছায়া ফেলেছে, তাই আপনার প্রতিও অনুরোধ থাকলো, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রনকুশলী এই মহাবীরকে নিয়ে আপনিও লিখুন। আপনার লেখা হয়তো আরও গতিশীল, আরও সুন্দর হবে। আমরা আরও ভাল উপস্থাপনা পেয়ে আরও কাছে থেকে দেখতে পাবো জগতের শ্রেষ্ঠতম সমরবিদকে।

আপনার দুআ পেয়ে খুশি। আপনিও ভাল থাকুন অনেক।

৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭

স্রাঞ্জি সে বলেছেন:
নকিব ভাই মনে হচ্ছে ব্লগে আপনিই মহান। যে ঝড়ের গতিতে ১৮০ টি মন্তব্য করেছে আর আপনি তা একাই সামলাইছেন তুফানের গতিতে.....

অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি....

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



সাধারনত: কুরআন হাদিসের আলোকে ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে লিখে থাকি। তাই তাদের হয়তো আমার প্রতি সেরকম অবজ্ঞাসূচক 'অজ্ঞ মোল্লা কী জানে?' -টাইপ ধারনাই মাথার ভেতরে আসন গেড়ে আছে। বস্তুত: মাইক্রোসফট সার্টিফাইড একজন নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারের জন্য এসব ছোটখাট যন্ত্রনা মোকাবেলা করা কি খুব বেশি কঠিন মনে হয় আপনার কাছে?

আল্লাহ পাকের শুকরিয়া সর্বাবস্থায়। তাওফিকদাতা কেবল তিনিই।

শুকরিয়া, আন্তরিক মন্তব্যে। অনেক অনেক ভাল থাকুন, প্রার্থনা।

৬| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯

কে ত ন বলেছেন: খালিদ বিন ওয়ালিদের (রা) কাহিনী আমার কাছে সুপারহিরো মুভির মত লাগে। তার শক্তি সামর্থ কোন সুপার হিরোর চেয়ে কম নয়। তিনি হয়তোবা সুপারম্যানের মত উড়তে পারতেন না, বা ফ্লাশের মত আলোর গতিতে দৌড়াতে পারতেন না, কিন্তু যে কোন পরিস্থতিতে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেবার জন্য যে ভয়ঙ্কর রণকৌশল এপ্লাই করতেন, সেটা অবিশ্বাস্য।

তার অধীনে যে জেনারেলরা যুদ্ধ করতেন, তারাও কম ছিলেন না। তবে এটা ঠিক যে ইয়ারমুকের যুদ্ধ জেতা তার একার পক্ষে সম্ভব ছিলনা যদিনা আমর ইবনে আস, আদি ইবনে হাতেম তাঈ, খাওলা বিনতে আজওয়ার এবং ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া - এই চারজন প্রচন্ড বুদ্ধিমত্তার সাথে তাঁকে সাহচর্য না দিতেন।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:১৬

নতুন নকিব বলেছেন:



খালিদ বিন ওয়ালিদের (রা) কাহিনী আমার কাছে সুপারহিরো মুভির মত লাগে। তার শক্তি সামর্থ কোন সুপার হিরোর চেয়ে কম নয়। তিনি হয়তোবা সুপারম্যানের মত উড়তে পারতেন না, বা ফ্লাশের মত আলোর গতিতে দৌড়াতে পারতেন না, কিন্তু যে কোন পরিস্থতিতে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেবার জন্য যে ভয়ঙ্কর রণকৌশল এপ্লাই করতেন, সেটা অবিশ্বাস্য।

--- খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু সম্মন্ধে আপনার মূল্যায়ন ভাল লাগলো।

তার অধীনে যে জেনারেলরা যুদ্ধ করতেন, তারাও কম ছিলেন না। তবে এটা ঠিক যে ইয়ারমুকের যুদ্ধ জেতা তার একার পক্ষে সম্ভব ছিলনা যদিনা আমর ইবনে আস, আদি ইবনে হাতেম তাঈ, খাওলা বিনতে আজওয়ার এবং ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া - এই চারজন প্রচন্ড বুদ্ধিমত্তার সাথে তাঁকে সাহচর্য না দিতেন।

--- জ্বি, একা একজনের পক্ষে কোনো যুদ্ধ জয়ই আশা করা যায় না। যাদের কথা বলেছেন, এরা প্রত্যেকেই সেসময়ের খ্যাতিমান সমরকুশলী। এদের মত খ্যাতনামা বীর যোদ্ধাদের পাশে পেয়েই তাঁর জয়ের পথ সহজ হয়েছে।

ধন্যবাদ, সুন্দর মন্তব্যে। আপনি কি সেইফ এখন?

৭| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:২১

নীল আকাশ বলেছেন: নকীব ভাই, আপনার দেয়া লিংক গুলি পড়ি আগে। অনেক স্টাডি করতে হবে তাকে নিয়ে লিখতে গেলে.....
আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ আমার মনের এই সুপ্ত ইচ্ছাটা পূরন করার তওফিক দান করুন।
আমীন।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:২১

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, পড়তে থাকুন। After completing your study we will pay a best column on beloved Khalid bin Walid Radiallahu Taa'la Anhu.

আপনার জন্য নিরন্তর কল্যানের দুআ। আপনার শুধু এই ইচ্ছেটিই নয়, এটিসহ বৈধ সকল প্রত্যাশা আল্লাহ পাক পূরন করুন।

৮| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ওয়ালিদ (রাঃ) মত সাহাবী ছিলেন বলেই আল্লাহ বিজয়কে করেছেন তড়ান্বিত।

ওনার মত সময় বিদ সে যুগে আর ছিলনা।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



পাঠ এবং মন্তব্যে পেয়ে আনন্দিত।

অনেক ভাল থাকবেন। শুভকামনা সবসময়।

৯| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সুপ্রিয় নকিবভাই,

অসাধারণ পরিশ্রমী একটি পোস্ট । আমারতো ঠিক রিসার্চ পেপার বলে মনে হচ্ছে। আপনার ইসলামের উপর চিন্তা - চেতনা দেখে আপনাকে একজন অসাধারণ মানুষ বলে মনে হয়। আল্লাহতালা আপনাকে এভাবেই ওনার বিভিন্ন বিষয়গুলি তুলে ধরার তৌফিক দিন। আমিন। আর আমাদেরকে তাঁর অনুসরণ করার তৌফিক দিন। আমিন।

পোস্টে ভীষণ ভালো লাগা। +++++++++


আপনার মঙ্গল কামনায় দোয়া রইল।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



সুপ্রিয় চৌধুরি ভাই,

আপনার হৃদয়ছোঁয়া মন্তব্যে আপ্লুত হয়ে গেলাম। পোস্টটি তৈরিতে সামান্য যে শ্রমটুকুর প্রয়োজন হয়েছে, তার সবটাই স্বার্থক হয়ে উঠেছে আপনার অসাধারন মূল্যায়নে। আসলে ইসলামের এসব বিষয়গুলো বর্তমান আত্মভোলা প্রজন্মের সামনে তুলে ধরাকে নিজের দায়িত্ব মনে করে টুকটাক কলমচালনার প্রচেষ্টা।

আপনার প্রতিও গভীর প্রীতিমাখা শুভকামনা। হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আমাদের পক্ষ থেকে। এতগুলো + দেয়ায় মুগ্ধতা। আপনার দুআ আল্লাহ পাক কবুল করুন। আপনার জন্যও অনুরূপ কল্যানের দুআ অনি:শেষ।

১০| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪

সনেট কবি বলেছেন: তাঁর মত শমরবীদ ইতিহাসে আর একজন আমার নজরে আসে। খুব ভাল লিখেছেন এ মহান বীরযোদ্ধাকে নিয়ে। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



তাকে নিয়ে আরও গবেষনা হওয়া দরকার। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ চির অপরাজেয় বীর যোদ্ধার স্মৃতির প্রতি হৃদয়ের ভালবাসা অমলিন।

মন্তব্যে পেয়ে ভাল লাগলো। অনেক ভাল থাকুন, প্রার্থনা।

১১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর পোষ্ট।
আমি মুসলিম এজন্য আমি গর্বিত।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ, আপনার পরিচয় দেয়ার ভঙ্গিটা ভাল লাগলো।

১২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:৫৬

অনল চৌধুরী বলেছেন: পারস্যের জাতীয় বীর রোস্তমও অারব বাহিনীর হাতে নিহত হন সম্ভবত ইয়ারমুক-এর যুদ্ধে।
এজন্যই ইরানীরা অারবী অক্ষর ব্যবহার করলেও কথা বলে নিজেদের ভাষা ফারসীতে।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



মুসলমানদের হাতে সম্মুখ সমরে পারস্য বীর রোস্তম নিহত হওয়ার সাথে তাদের আরবি অক্ষর ব্যবহার করা সত্বেও আরবি ভাষা ব্যবহার না করার কোনো যোগসূত্র আছে কি না- জানা নেই।

আপনাকে মন্তব্যে পেয়ে আনন্দিত। হৃদয় নিংড়ানো শুভকামনা জানবেন।

১৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
ধন্যবাদ, আপনার পরিচয় দেয়ার ভঙ্গিটা ভাল লাগলো।

ভালো থাকুন।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

নতুন নকিব বলেছেন:



পুনরাগমনে কৃতজ্ঞতা আবারও।

অনেক ভাল থাকুন, প্রার্থনা।

১৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৩

কে ত ন বলেছেন: জ্বী, জনাব আমি এখন সেইফ, এই আনাড়ির পোস্ট তাই মাঝে মাঝে সর্বাধিক পঠিত ব্লগের তালিকায় আসে। আপনার মত ভিআইপি ব্লগার আমাকে নজর রাখছে জেনে খুবই আশ্চর্য হয়েছি।

এই সুযোগে আমার একটা ভুল ধরিয়ে দেই। ৬নং মন্তব্যে আমি চারজন বীরের নাম বলেছিলাম, যাদের একজন ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া - ওটা আসলে ইয়াজিব ইবনে আবু সুফিয়ান হবে। আরেকজন বীরের নামও বলে রাখি - দীরার ইবনে আজওয়ার। তবে তিনি বুদ্ধির চেয়ে শক্তি প্রয়োগেই বিশ্বাসী ছিলেন। তার বোনেরও কৌশল একই।

১২ নং মন্তব্যে অনল চৌধুরীর কনফিউশান ক্লিয়ার করি। ইয়ারমুকের যুদ্ধ হয়েছিল রোমান বাহিনীর বিরুদ্ধে, আর মহাবীর রুস্তম মারা গেছে কাসেদিয়ার যুদ্ধে প্রায় একই সময়ে। যে যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন আশারায় মুবাশশারা সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা)।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি তো দারুন লিখে থাকেন। আপনার লেখা আমার পছন্দের। সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। সেইফ হয়েছেন জেনে খুশি হলাম। অনল চৌধুরীর কনফিউশান ক্লিয়ার করায় মোবারকবাদ। ইতিহাসের খুটিনাটি বিষয় আয়ত্বে রাখা অত্যন্ত বিচক্ষনতার পরিচায়ক। আপনার ভেতরে সেটি পূর্নমাত্রায় রয়েছে। আল্লাহ পাক আপনার মঙ্গল করুন।

আর ভিআইপি বলছেন কেন প্রিয় ভাই? আমরা তো নিতান্ত সাধারন। অতি সাধারনের কাতারের মনে করি নিজেদের। ঢাবিয়ানের ধর্ম যার যার উৎসব সবার পোস্টে আপনার মন্তব্যটি দেখেছি। যথার্থ বলেছেন।

১৫| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:২৯

এ.এস বাশার বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম.....সময় নিয়ে পড়তে হবে.....

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায় সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা।

অনেক ভাল থাকবেন, প্রার্থনা।

১৬| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০০

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: খা বি ওয়ালিদ, ইসলামের শ্রেষ্ঠবীর।

তবে যুদ্ধ আমার একেবারেই পছন্দ নয়।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:১১

নতুন নকিব বলেছেন:



মন্তব্যে পেয়ে ভাল লাগলো। কৃতজ্ঞতা। ভাল বলেছেন। যুদ্ধ কারও কাছেই কাম্য নয়। তখনকার সিচুয়েশন বলে, প্রতিটি যুদ্ধ মুসলমানদের উপরে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে যুদ্ধে অবতীর্ন না হয়ে তাদের গত্যন্তর ছিল না।

অনেক ভাল থাকুন, প্রার্থনা।

১৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:১৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: লেখক বলেছেন:
মুসলমানদের হাতে সম্মুখ সমরে পারস্য বীর রোস্তম নিহত হওয়ার সাথে তাদের আরবি অক্ষর ব্যবহার করা সত্বেও আরবি ভাষা ব্যবহার না করার কোনো যোগসূত্র আছে কি না- জানা নেই।

আপনাকে মন্তব্যে পেয়ে আনন্দিত। হৃদয় নিংড়ানো শুভকামনা জানবেন।
-ইরানীরা প্রাচীন সভ্যতার দেশ,ভংকরভাবে জাতীয়তাবাদী।তাদের সভ্যতা গ্রীক ও রোমন সভ্যতার চেয়েও অনেক পুরনো।এসব তারা জানে অার এজন্য গর্ব করে।
অরবদের কাছে পরাজিত হয়ে তারা তাদের ধর্ম গ্রহণ করলেও নিজেদের সংস্কৃতি বিসর্জন দেয়নি বা ভারতীয় হিন্দুদের মতো বিদেশীদের নিজেদের বীর বানায়নি।
তাদের জাতীয় বীর এখনও অগ্নি উপাসক রোস্তম।
উপসাগরীয় অঞ্চলের সব দেশ অারবী ভাষায় কথা বললেও একমাত্র তারাই নিজেদের ভাষা রক্ষা করতে পেরেছে।
ইরাক,সিরিয়া বা মিশরের মতো নিজেদের ভাষা ধ্বংস হতে দেয়নি।

কে ত ন বলেছেন:
১২ নং মন্তব্যে অনল চৌধুরীর কনফিউশান ক্লিয়ার করি। ইয়ারমুকের যুদ্ধ হয়েছিল রোমান বাহিনীর বিরুদ্ধে, আর মহাবীর রুস্তম মারা গেছে কাসেদিয়ার যুদ্ধে প্রায় একই সময়ে। যে যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন আশারায় মুবাশশারা সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা)।
-কাদেসিয়া নামটা ভুলে গিয়েছিলাম। আশারায় মুবাশশারা সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস -ক্কাকা তার সংক্ষিপ্তি নাম ছিলো মনে হয়।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



ইরানীরা প্রাচীন সভ্যতার দেশ,ভংকরভাবে জাতীয়তাবাদী।তাদের সভ্যতা গ্রীক ও রোমন সভ্যতার চেয়েও অনেক পুরনো।এসব তারা জানে অার এজন্য গর্ব করে।
অরবদের কাছে পরাজিত হয়ে তারা তাদের ধর্ম গ্রহণ করলেও নিজেদের সংস্কৃতি বিসর্জন দেয়নি বা ভারতীয় হিন্দুদের মতো বিদেশীদের নিজেদের বীর বানায়নি।
তাদের জাতীয় বীর এখনও অগ্নি উপাসক রোস্তম।
উপসাগরীয় অঞ্চলের সব দেশ অারবী ভাষায় কথা বললেও একমাত্র তারাই নিজেদের ভাষা রক্ষা করতে পেরেছে।
ইরাক,সিরিয়া বা মিশরের মতো নিজেদের ভাষা ধ্বংস হতে দেয়নি।


--- সহমত। যতটুকু জানি, ইরানীরা কট্টোর জাতীয়তাবাদী।

কাদেসিয়া নামটা ভুলে গিয়েছিলাম। আশারায় মুবাশশারা সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস -ক্কাকা তার সংক্ষিপ্তি নাম ছিলো মনে হয়।

--- ধন্যবাদ আপনাকে। দু'জন একই ব্যক্তি নন। দু'জনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরছি-

সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু

সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু
জন্ম: আনুমানিক ৫৯৫
মক্কা, আরব
মৃত্যু: আনুমানিক ৬৭৪
মদিনা, আরব
সার্ভিস/শাখা: রাশিদুন সেনাবাহিনী
কার্যকাল: ৬৩৬-৬৪৪
পদমর্যাদা: কমান্ডার
তিসফুনের গভর্নর: (৬৩৭-৬৩৮)
বুসরার গভর্নর: (৬৩৮-৬৪৪), (৬৪৫-৬৪৬)
নেতৃত্বসমূহ: মুসলিমদের পারস্য বিজয়

সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু (আরবি: سعد بن أبي وقاص‎‎) ছিলেন মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যতম প্রধান সাহাবী। ১৭ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে ১৭তম ব্যক্তি। ৬৩৬ সালে পারস্য বিজয়ের নেতৃত্ব ও শাসনের জন্য তিনি অধিক পরিচিত। ৬১৬ ও ৬৫১ সালে তাকে কূটনৈতিক দায়িত্ব দিয়ে চীন পাঠানো হয়েছিল। ধারণা করা হয় চীনে যাওয়ার সময় নৌ রুটে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে থেমেছেন এরং বাংলাকে ইসলামের সাথে পরিচয় করানোয় তার অবদান আছে। ধারণা করা হয়, ৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশের লালমনিরহাটে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন, যা স্থানীয়ভাবে আবু আক্কাস মসজিদ নামে পরিচিত।[১][২] চীনা মুসলিমদের মতে চীনের ক্যান্টন বন্দরে তার কবর আছে। অবশ্য আরবদের মতে তার কবর আরবে অবস্থিত।

আল-কাকা ইবনে আমর আত-তামিমি রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু

আল-কাকা ইবনে আমর আত-তামিমি রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু
সার্ভিস/শাখা: রাশিদুন সেনাবাহিনী
পদমর্যাদা: জেনারেল
ইউনিট: মোবাইল গার্ড
নেতৃত্বসমূহ:
আহলে-ক্বাদিসিয়াহ্ মাঠ কমান্ডার
কমান্ডার মোবাইল গার্ড

আল কাকা ইবনে আমর আত তামিমি রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ছিলেন বনু তামিম গোত্রের ব্যক্তি| আহনাফ ইবনে কায়েসের সময়ে তিনি মুসলমান হন| ইয়ারমুকের যুদ্ধ এবং কাদিসিয়ার যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে রাশিদুন সেনাবাহিনীর সেনাদলগুলোর একটির সেনাপ্রধান হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন এবং দুটোতেই বিজয় অর্জন করেন| খলিফা থাকাকালে আবু বকর তাকে একবার একহাজার সৈন্যের সমতুল্য বলে প্রশংসা করেছিলেন|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.