নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কষ্টদায়ক রোগ সাইনোসাইটিস; কারণ, লক্ষণ ও আরোগ্যলাভের উপায় : Sinusitis, a painful disease; reasons, signs and symptoms of healing

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০২



ছবি: অন্তর্জাল।

কষ্টদায়ক রোগ সাইনোসাইটিস; কারণ, লক্ষণ ও আরোগ্যলাভের উপায় : Sinusitis, a painful disease; reasons, signs and symptoms of healing

সাইনোসাইটিস কষ্টদায়ক একটি রোগ। এমন অনেক রোগী দেখা যায়, যারা সব সময়ই অস্থিরতাবোধ করেন। কেমন একটা অস্বস্তি অনুভব করেন সবসময়। এছাড়া মাথাব্যথা, মাথা ভারি থাকা, সেই সাথে থেকে থাকে নাক জ্বালা-পোড়ার সমস্যা। অথচ এসব সমস্যার পেছনে কি কারণ সে সম্মন্ধে ওয়াকিবহাল থাকেন না রোগী। এ ধরনের রোগী সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। রোগটি যদিও একেবারেই সাধারণ কিন্তু এটি দীর্ঘস্থায়ী একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্ণিত। এ রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তিরই জেনে রাখা ভালো।

সাইনোসাইটিস কি? What is Sinusitis?

Sinusitis is an inflammation or swelling of the tissue lining the sinuses. Healthy sinuses are filled with air. But when they become blocked and filled with fluid, germs can grow and cause an infection.

Conditions that can cause sinus blockage include:

1. The common cold
2. Allergic rhinitis, which is swelling of the lining of the nose
3. Small growths in the lining of the nose called nasal polyps
4. A deviated septum, which is a shift in the nasal cavity

আমাদের সমাজে বেশিরভাগ লোকেরই রোগ সম্মন্ধে ধারণা না থাকায় রোগী নিজেই একটা অন্ধকারের ভেতরে থাকেন, যা তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে রাখে। তাই প্রত্যেকের পক্ষে সকল রোগের বিশেষজ্ঞ হওয়া সম্ভব না হলেও অন্তুত: রোগের পরিচিতি, প্রাথমিক অবস্থাসহ গুরুত্বপূর্ন রোগগুলো সম্মন্ধে একটা সাধারণ ধারণা থাকা উচিত। সাইনোসাইটিস রোগটিও এর ব্যতিক্রম নয়। এটি সম্মন্ধেও সাধারণ বিষয়াবলীর উপরে আইডিয়া রাখা প্রয়োজন।

প্রথমেই জেনে নেয়া প্রয়োজন, সাইনোসাইটিস কি? সাইনোসাইটিস একটি অতি পরিচিত রোগ। শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আমাদের নাকের চারপাশের অস্থিগুলোর পাশে বাতাসপূর্ণ কুঠুরি থাকে। এগুলোকে বলে 'সাইনাস'। এই সাইনাসের কাজ হল, মাথাকে হালকা রাখা, আঘাত থেকে মাথাকে রক্ষা করা, কণ্ঠস্বরকে সুরেলা রাখা, দাঁত ও চোয়াল গঠনে সহায়তা করা। যদি কোনো কারণে এ সাইনাসগুলোয় প্রদাহ সৃষ্টি হয়, তখন তাকে সাইনোসাইটিস বলে। ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন, অ্যালার্জি অথবা অটোইমিউন ডিজিজ ইত্যাদি কারণে সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে। আমাদের জানা মতে, সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের ব্যাপারে বাংলাদেশে সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। এ রোগ নিয়ে বাংলাদেশে শক্তিশালী পরিসংখ্যান চালানো না হলেও অন্য অনেক দেশে পরিসংখ্যান চালানো হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ১০০ জনের মধ্যে ৫ থেকে ১০ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, ঠাণ্ডা আবহাওয়াপ্রবন অঞ্চল এবং শীতপ্রধান দেশগুলোতে এই রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বেশি।

কখন হয়?

এই রোগের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। বছরের যে কোনো সময় এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তবে, ঋতু ভেদে শীত বা গ্রীষ্মকালে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগ বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। শীতের শুরুতে ঠাণ্ডা যখন পড়া আরম্ভ হয় তখন সাইনোসাইটিসের প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। আবার শীত পড়ে গেলে এই রোগের প্রকোপ হ্রাস পায়। আবার যখন ঋতু পরিবর্তনের পালা আসে অর্থাৎ গরম পড়তে আরম্ভ করে তখন এলার্জির উৎপাত বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে এই রোগের প্রকোপও।

সাইনোসাইটিস হয় কেন? সমস্যাটি বেশি হয় কাদের?

উত্তরে বলতে হয়, এটা সাধারণত সব বয়সের মানুষেরই হতে পারে। তবে তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের বেশি হয়। এ রোগটি কিছু ভাইরাল ইনফেকশনের জন্য হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের জন্যও হতে পারে। আবার কিছু মেকানিক্যাল অবসট্রাকশনের জন্যও হতে দেখা যায়। যেমন : নাকের হাড় বাঁকা, নাকের মাংস বৃদ্ধি পাওয়া। যেকোনো সাইনাসে যদি ড্রেনেজটা ঠিকমতো না হয়, তখন এই রোগটি হতে পারে।

সর্দিজনিত প্রদাহ বা অ্যালার্জিজনিত সমস্যার সঙ্গে কি সাইনাসের কোনো সম্পর্ক আছে?

এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ, আছে। সর্দিজনিত প্রদাহ বা অ্যালার্জিজনিত সমস্যার ক্ষে্ত্রে সাইনোসাইটিসের কিছু লক্ষণ থাকে। যেমন : ঘন ঘন হাঁচি দিবে, নাক দিয়ে পানি আসবে।

সাইনোসাইটিসের প্রকারভেদ Types

Acute sinusitis usually starts with coldlike symptoms such as a runny, stuffy nose and facial pain. It may start suddenly and last 2-4 weeks.
Subacute sinus inflammation usually lasts 4 to 12 weeks.
Chronic inflammation symptoms last 12 weeks or longer.
Recurrent sinusitis happens several times a year.

সাইনোসাইটিসকে বিভিন্নভাবে শ্রেণী বিভাগ করা যায়। নিচে সাইনোসাইটিসের শ্রেণী বিভাগ নিয়ে আলোচনা করা হল:

১। আক্রান্ত হওয়ার সময়ের ওপর ভিত্তি করেঃ-

অ্যাকিউট সাইনোসাইটিস:

সাধারণত: অ্যাকিউট সাইনোসাইটিসকে শ্বাসনালীর উপরের দিকের ইনফেকশন বলা হয়। অ্যাকিউট সাইনোসাইটিস ৭-১০দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে।

ক্রনিক সাইনোসাইটিস:

তিন মাস বা তার বেশি সময় ধরে যে সাইনোসাইটিস থাকে তাকে ক্রনিক সাইনোসাইটিস বলা হয়।

২। আক্রান্ত সাইনাসের অবস্থান অনুসারেঃ-

i) ম্যাক্সিলারি সাইনোসাইটিস:

ম্যাক্সিলারি অর্থাৎ গালের পাশে অবস্থিত সাইনাসইন ফেকশন হলে তাকে ম্যাক্সিলারি সাইনোসাইটিস বলা হয়। এর লক্ষণ হচ্ছে দাঁত ব্যথা ও মাথা ব্যথা।

ii) ফ্রন্টাল সাইনোসাইটিস: কোনো কারণে চোখের ওপরে অবস্থিত ফ্রন্টাল সাইনাস গহ্বরে আঘাত প্রাপ্ত হলে যে সাইনোসাইটিস হয় তাকে ফ্রন্টাল সাইনোসাইটিস বলে।

iii) ইথাময়েড সাইনোসাইটিস: ইথাময়েড সাইনোসাইটিস হলে চোখ ও মাথার মধ্যে প্রদাহ শুরু হয়।

iv) স্পেনয়েড সাইনোসাইটিস: চোখের পাশে ব্যথা শুরু হয়।

সাইনোসাইটিস রোগের সাধারণ ও প্রধান উপসর্গঃ-

১) ব্যথা:

সাইনোসাইটিসের ব্যথা কোন সাইনাস আক্রান্ত হয়েছে মূলত তার ওপর অনেকাংশ নির্ভর করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে ম্যাক্সিলারি সাইনাসের ব্যথা ও ম্যাক্সিলারি সাইনাসের অবস্থানের ওপর অর্থাৎ নাকের পাশে, গাল, দাঁত কিংবা মুখ বা মুখ মণ্ডলের আশপাশে হয়ে থাকে।

ফ্রন্টাল সাইনাসের ব্যথা সাধারণত কপালে, চোখে, চোখের পেছনে কিংবা মাথায় অনুভূত হয়। অনেক সময় এই ধরনের মাথা ব্যথার সঙ্গে মাথার মধ্যে হালকা শূন্যতা বা হালকা অনুভূতি জাগে। যার জন্য এ ধরনের মাথা ব্যথাকে অনেকে 'ভ্যাকুয়াম ফ্রন্টাল হেডেক' বলে থাকেন। আর এই ফ্রন্টালহেডেক বা ফ্রন্টাল মাথা ব্যথা প্রায়শ ঘুম থেকে জাগার পর আরম্ভ হয়। আর দিন যতো বাড়তে থাকে, মাথা ব্যথাও সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে আবার বিকালের দিকে মাথা ব্যথার তীব্রতা আবার কমতে আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। 'ইথময়ডাল সাইনাসের ব্যথা দু'চোখের মাঝে ও চোখের পেছনে সাধারণত হয়ে থাকে। এই ব্যথা মুখ ও মুখমণ্ডলে অনেকে অনুভব করেন। স্ফেনোইডাল সাইনোসাইটিসের ব্যথা কিন্তু মাথার মাঝখানে হয়। আর এই ব্যথা অনেক সময় দিকে বা চোখের পেছনে রেডিয়েট করতে পারে।

২) নাক বন্ধ:

সাইনাস যখন প্রদাহে আক্রান্ত হয় তখন তার নিঃসৃত পুঁজ জাতীয় প্রদাহ নাকের মধ্যে এসে নাকের প্রদাহের সৃষ্টি করে এবং তা ফুলে অনেক সময় নাক বন্ধের কারণ হতে পারে। তবে আসলে সাইনোসাইটিসের কারণ হিসেবে যদি নাকের ও সাইনাসের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতার জন্য নাকের মধ্যে কোনো বাধা যেমন-ডিএনএস বা নাকের মাংস বড় হয়ে (টারবিনেট বড় হয়ে) থাকে সেগুলোর জন্য হতে পারে।

৩) নাক থেকে পুঁজ বা নিঃসৃত পদার্থ:

সাইনোসাইটিসের প্রদাহজনিত কারণে নাক থেকে পুঁজ বা পুঁজজাতীয় বেরুতে থাকে আবার যেহেতু ম্যাক্সিলারি সাইনাসকে অন্য সাইনাস গুলোর মাস্টার বলা হয়ে থাকে, তাই এই সাইনাসের আক্রমণ সহসাই হয়ে থাকে। আর ম্যাক্সিলারি সাইনাসের পুঁজ দুর্গন্ধও বটে।

৪) এই সমস্ত উপসর্গ ছাড়াও শিশু-কিশোরদের সাইনোসাইটিস রোগের উপসর্গ কিছু বাড়তি ভাবে দেখা যায়।

বিশেষ করে এ সময়ে তাদের চোখ ও চোখের পাতা ফোলা-ফোলা থাকে, নাক বন্ধ, মুখ হাঁ করে ঘুমানো, মুখ ও নাক থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়া, নাক ডাকা, অত্যধিক লালা পড়া যা কিনা বালিশ বা বিছানা ভিজিয়ে রাখে, ঘন কাশি, আবার কোনো সময় বমি করাও তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়।

এই স্বাভাবিক উপসর্গগুলো খতিয়ে দেখে এর চিকিৎসা করলে এই রোগের কবল থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যায়, তেমনি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াথেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাহলে এবার দেখা যাক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি হতে পারে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করেই তার উপসর্গগুলো চিহ্নিত করা হয়।

সাইনোসাইটিস রোগের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:

সাইনোসাইটিসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে নিম্ন লিখিত ভাবে ভাগ করা যায়। যেমন- ব্রেইন ও ব্রেইনের খুলির বাইরে ব্রেইন ও ব্রেইনের ঝিল্লি বা আবরণের ও সাইনোসাইটিস রোগের পর্যায় ক্রমিক আবির্ভাব। যেহেতু সাইনাস গুলো কাঠামোগত দিক থেকে ব্রেইন, ব্রেইনের আবরণ এবং চোখের অতি সন্নিকটে, তা অতি সহজেই সাইনাসের প্রদাহ ওই সমস্ত জায়গাকে আক্রান্ত করতে পারে। আর এ সমস্ত জায়গাকে আক্রান্ত করলে রোগীর অবস্থা মারাত্মক হয়, এমনকি জীবনহানির আশঙ্কাও থাকে। তাই এ সম্পর্কে সজাগ থাকা দরকার।

ব্রেইনের বা ঝিল্লির বাইরে:

ফ্রন্টাল বা ম্যাক্সিলারি বোনের ক্রনিক প্রদাহ বা অস্টিওমাইলাইটিস যদিও ফ্রন্টাল বোনকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রমণ করে।

চোখের জটিলতা:

যেমন অরবিটাল সেলুলাইটিস, চোখের পাতায় সেলুলাইটিস, চোখের মধ্যে অ্যবসেস ইত্যাদি। মুখ ও মুখমণ্ডল ফুলে যাওয়া।

খুলির ভেতরে জটিলতা:

ব্রেইনের ঝিল্লির প্রদাহ, ব্রেইন প্রদাহ, ব্রেইনের ভেতরে শিরা-উপশিরার রক্ত প্রবাহে বাধাদান করে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন?

যদি মুখ ফুলেও ঠেকিং বা দৃষ্টি অস্পষ্ট হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনি হয়তো কোনো মারাত্মক অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন। যদি সাত দিনেও লক্ষণ গুলোর কোনো উন্নতি না হয়, সেক্ষেত্রে অনতিবিলম্বে চিকিৎসার আশ্রয় নেয়া উচিত। যদি ব্যাকটেরিয়া বাহিত সাইনাসের সংক্রমণের কোনো চিকিৎসা করানা হয়, সে ক্ষেত্রে এটা হয়তো বছরের পর বছর ধরে আপনাকে ভোগাবে এবং এ সংক্রান্ত দীর্ঘ স্থায়ী ব্যথায় আপনাকে আক্রান্ত করবে। নাক দিয়ে দীর্ঘ স্থায়ী ভাবে সংক্রামক শ্লেষ্মার নির্গমন ব্রঙ্কাইটিস, দীর্ঘ স্থায়ী কাশি, কিংবা অ্যাজমা ইত্যাদি রোগের কারণ হয়েও দাঁড়াতে পারে।

কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?

১. যেহেতু অ্যালার্জি, ঠাণ্ডা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সমস্যা গুলো থেকে সাইনোসাইটিসের অবতরণ ঘটে, তাই এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আগেই এই সমস্যা গুলোর সমাধান করা।
২. আপনার যদি অ্যালার্জিথাকে সেক্ষেত্রে জেনে নিন কি থেকে আপনার অ্যালার্জি হয়। ফলে আপনি নিজের স্বাস্থ্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
৩. ধূমায়িত এবং দূষিত পরিবেশ পরিত্যাগ করে চলুন। যদি আপনি ধূমপান করেন, তবে তা পরিত্যাগ করুন।
৪. ঘুমানোর সময় মাথা উঁচু রাখুন, যাতে সাইনাস নিজে থেকেই বেরিয়ে আসতে পারে।
৫. নাকে খুব বেশি জোরে যাতে আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

রোগ নির্ণয় পদ্ধতিঃ-

প্রথম অবস্থায় এ রোগ ধরা বেশ কষ্টকর। সাইনোসাইটিস নির্ণয়ের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিচের যে কোন পদ্ধতির সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

১. সিটিস্ক্যান
২. নেসাল এন্ডোসকপি
৩. নাকের মাংসের বায়োপসি
৪. সানুসকপি
৫. সুইয়েটকোরাইড টেস্ট

চিকিৎসা বা আরোগ্যলাভের উপায়ঃ-

১) এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসাঃ

সাইনোসাইটিসের কারণে মাথা ব্যথা হয়েছে বলে মনে হলে যত দ্রুত সম্ভব একজন নাক, কান, গলা রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এরোগের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক, এন্টিহিস্টামিন, নাকের ড্রপ এবং ব্যথা নাশক ঔষধ ব্যবহার করা হয়। যদি ঔষধ পত্রে এই রোগ নিরাময় না হয় তবে সাইনাসের ওয়াশ বা আরো বড় ধরনের অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।

২) হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধানঃ-

বিজ্ঞানী চিকিৎসক হ্যানিমান এর যুগান্তকারী আবিষ্কার ক্রনিক মিয়াজাম সোরার প্রভাবেই সাইনোসাইটিস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। সাইনোসাইটিস রোগ অবহেলা না করে এই রোগের প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করা হলে এর মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কিংবা ভোগান্তি থেকে সম্পূর্ণ রেহাই পাওয়া সম্ভব। এই রোগের লক্ষণ অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিতে চমৎকার কার্যকরী ঔষধ রয়েছে।

হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয় এজন্য একজন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক রোগীর পুরা লক্ষণ নির্বাচন করতে পারলে হোমিওপ্যাথিতে সাইনাসের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

যেহেতু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক, সেহেতু লক্ষণের ভিত্তিতে চিকিৎসা করা বাঞ্চনীয়। লক্ষণের উপর যেসব ঔষধ আসতে পারে সেগুলো হচ্ছে- নাক্স ভমিকা, টিউবার কুলার, লেমনা মাইনর, ক্যালকেরিয়া কার্ব, সোরিনাম, থুজাসহ প্রভৃতি মেডিসিন। তবে পলিপাসের জন্য অনেক সময় নাক বন্ধ থাকে। এলিয়াম সেফা-৩০, টিউক্রিয়াম-২০০, সোরিনাম-২০০, ১ম স্যাঙ্গুইনেরিয়াম-২০০ নিয়মিত সেবন করলে সেরে যায়। যাদের নাকে পলিপাস হেতু মাঝে মাঝে ময়লামিশ্রিত রক্ত হাতে লাগে তাদের প্রথমে ১ ডোজ ফেরাম ফস ৩× এবং তারপর দিন থেকে এক ডোজ টিউক্রিয়াম ২০০ সন্ধ্যায় সেবনে ভাল ফল পাওয়া যায়। তাই ঔষধ নিজে নিজে ব্যবহার না করে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এ রোগে ব্যবহৃত আরও কিছু ঔষধের নামোল্লেখ করা হল। যথা-
১) গ্লোনিয়ন,
২) বেলেডোনা,
৩) সাঙ্গুইনেরিয়া,
৪) স্পাইজেলিয়া,
৫) নেট্রাম মিউর,
৬) লাইকোপোডিয়াম,
৭) মেডোরিনাম,
৮) সালফার উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও আরও ফলদায়ক ঔষধ আছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শে ছাড়া ঔষধ সেবন করা উচিত নয়।

৩) ঘরোয়া উপায়ে সাইনোসাইটিস মোকাবেলাঃ-

ভেষজের মাধ্যমেঃ-

রসুন: সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাই ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন জনিত সাইনোসাইটিস প্রতি রোধে রসুন অনন্য। প্রতি দিন দুই-চার কোয়া রসুন দুই চা চামচ মধুর সাথে দিনে দুই বার সেবন করলে সাইনোসাইটিস ভালো হয়।

পিয়াজ: প্রতিদিন এক চা চামচ পেঁয়াজের রস এক চা চামচ মধুর সাথে সেবন করলে সাইনোসাইটিস ভালো হয়ে যাবে।

গোলমরিচ: পাঁচ গ্রাম গোল মরিচ চূর্ণ এক গ্লাস গরম দুধের সাথে সেবন করলে সাইনোসাইটিস দূর হয়ে যায়।

আদা: নিয়মিত আদার রস এক চা চামচ পরিমাণ সাথে এক চামচ মধুসহ সেবন করলে সাইনোসাইটিস জনিত মাথা ব্যথা দূর হয়।

গোল্ডেন সিয়াল: দক্ষিণ আমেরিকার এ ভেষজটি অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে খুবই কার্যকর। এ ভেষজে বের বেরিন এবং হাইড্রস্টিন বিদ্যমান, যা সাইনোসাইটিস প্রতি রোধে খুবই কার্যকর।

যষ্টিমধু: গবেষণায় দেখা গেছে, যষ্টি মধু অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিভাইরাল হিসেবে কাজ করে এবং শ্বসন তন্ত্রের প্রদাহ দূর করে। তাই যষ্টি মধু সাইনোসাইটিস প্রতি রোধে খুবই কার্যকর।

পুদিনা তেল: পুদিনার তেল সাইনোসাইটিস জনিত মাথাব্যথা, নাক ও মুখ মণ্ডলের ব্যথা দূর করতে কার্যকর।

ইউক্যালিপটাস তেল: ইউক্যালিপটাস তেল খুব ভালো অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। তাই ইউক্যালিপটাস তেল ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন জনিত সাইনোসাইটিস দূর করে।

লেমন বাল্ম: সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টিহিস্টামিটিক ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে এবং সাইনোসাইটিস প্রতিরোধে ভালো কাজ করে।

৪) ম্যাসাজ থেরাপিঃ-

তিল তেল: তিল তেল দিয়ে নিয়মিত ম্যাসাজ করলে সাইনোসাইটিস ভালো হয়।

সাইনোসাইটিসের চিকিৎসার উদ্দেশ্য:

সাইনোসাইটিসের চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য সাইনাসের ছিদ্র পথ পরিষ্কার রাখা, যাতে বায়ু চলাচল এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নির্গমন স্বাভাবিক থাকে। চিকিৎসকগন আরো বলে থাকেন সাইনোসাইটিস থেকে ভালো থাকতে হলে নাক ও গলার প্রদাহের সময়মতো চিকিৎসা করতে হবে। এছাড়া নাকে ড্রপ জাতীয় ঔষধের অপব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে এবং এ জাতীয় ঔষধ চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। সাধারণভাবে মনে রাখতে হবে, সাইনোসাইটিসের ফলে রোগী নানা জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই সাইনাসের প্রদাহ বা এ জাতীয় কোন সমস্যা দেখা মাত্রই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উত্তম। সকলের সুস্থ সুন্দর নিরোগ জীবন কামনা করছি।

নিবন্ধটি তৈরিতে সহায়তা নেয়ায় কৃতজ্ঞতা যাদের প্রতি/ তথ্যসূত্র:-

১। সাইনোসাইটিস কেন হয়? এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৬৮১তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. কামাল মাসুদ https://www.ntvbd.com/health/121599
২। সাইনোসাইটিস সমস্যায় করণীয় - অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু, Click This Link
৩। সাইনোসাইটিস কি, কেন হয়, চিকিৎসায় কি ভালো হয়? BY : DR. SHAMIM HOSSAIN, https://deshidoctor.com/blogdetails/36
৪। সমস্যা যখন সাইনাসে, Click This Link

৫।সাইনোসাইটিস, এস.এম.খোরশেদ মজুমদার, বিভাগীয় প্রফেসর, নাক কান এবং গলা, হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট হাসপাতাল, ঢাকা।
৬। সাইনোসাইটিস ও তার প্রতিকার, অধ্যাপক মেজর (অব.) মো. আশরাফুল ইসলাম, নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ও বিভাগীয় প্রধান,বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল।
৭। সালাম, মোহাম্মদ আব্দুস, সহজ স্বাস্থ্য সেবা, পৃষ্ঠা: ৩৪, সিএমইএস প্রকাশনা, ডিসেম্বর ২০০৬।
৮। নাথ, ডা. প্রধীররঞ্জন, সাইনোসাইটিস নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি, দৈনিক আজাদী, ২ জুলাই বুধবার, ২০১৪ খ্রিঃ।
৯। চিকিতসাদানে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:১১

আরোগ্য বলেছেন: আমার জন্য অনেক দরকারী পোস্ট। সময় করে পড়ে নিবো ইনশাআল্লাহ।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ইনশাআল্লাহ, পড়ে নিবেন।

মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। শুভকামনা।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৩

টারজান০০০০৭ বলেছেন: এককালে বেশ কষ্ট পাইয়াছি ! কোন ওষুধে কাজ হয় না !

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৯

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি কষ্ট পাইয়াছিলেন জানিয়া আমিও কষ্ট পাইলাম। পুরাতন রোগের ক্ষেত্রে অনেক সময় ওষুধ সহজে কাজ করিতে চাহে না।

এখন কি আপনার কষ্ট দূর হইয়াছে?

নিরন্তর ভালো থাকুন, নিরোগ থাকুন- ফরিয়াদ মালিকের দরবারে।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:১২

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
এরপর দয়া করে গ্যাস্ট্রিক আর প্রেসার নিয়ে লিখবেন। এদু'টায় আমি খুব ভূগছি।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



ইনশাআল্লাহ, চেষ্টা করবো।

কমন এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখতে অনুরোধ করেছেন।

শুকরিয়া। ভালো থাকুন।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪১

রাকু হাসান বলেছেন:

আমি জানতাম না । ধারণা পেয়েছি আপনার পোস্টের মাধ্যমে । ধন্যবাদও কৃতজ্ঞতা নকিব ভাই ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার মত অনেকেরই কিন্তু সাধারণ সাধারণ এমন অনেক রোগ সম্মন্ধে কোনো ধারণা নেই। সচেতনতার জন্য এগুলো জানা প্রয়োজন।

আপনার প্রতিও কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা অশেষ।

৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৪৯

নজসু বলেছেন:




আস সালামু আলাইকুম।
খুবই সুন্দর এবং দরকারী একটি পোষ্ট।
গতকালই পাঠ করে গেছি প্রিয় ভাই।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



ওয়াআলাইকুমুসসালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

আপনার উপস্থিতির জন্য অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

নিরন্তর ভালো থাকার দুআ।

৬| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৫৫

নীল-দর্পণ বলেছেন: খুব উপকারী পোস্ট। শীতকালে নাক থেকে মগজ পর্যন্ত প্রচন্ডরকম জ্বালাপোড়ায় ভুগি। ঢাকায় থাকলে এটি বেশি হয়, গ্রামে গেলে একটু কম টের পাই। সাথে অনেকগুলো উপসর্গ দেখলাম আমার দেখা দেয়!

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আন্তরিক মন্তব্যে অভিনন্দন এবং অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

সুস্থ থাকুন। নিরন্তর নিরোগ থাকার দুআ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.