নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মদ নিষিদ্ধকরণে পর্যায়ক্রমিক নীতি: হিকমতপূর্ণ পদ্ধতির কারণেই ইসলাম মানুষের স্বভাবধর্ম

২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৪০

ছবিঃ অন্তর্জাল।

মদ নিষিদ্ধকরণে পর্যায়ক্রমিক নীতি: হিকমতপূর্ণ পদ্ধতির কারণেই ইসলাম মানুষের স্বভাবধর্ম

হিকমতপূর্ণ পদ্ধতির কারণে ইসলাম মানুষের স্বভাবধর্ম। নেশার প্রতি ঝুকে থাকা সে কালে অনেক সংখ্যক মানুষের স্বভাবগত বদভ্যাসে পরিনত হয়েছিল। তৎকালীন সমাজের মানুষের এই স্বভাব বুঝে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা একই সাথে না করে পর্যায়ক্রমে মদকে নিষিদ্ধ করেছেন। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি ক্লিয়ার হতে পারে, শিশুকে বুকের দুধ ছাড়াতে মা যেমন ধীরগতির কৌশল অবলম্বন করেন, নানান বাহানায় শিশুকে দুধ পান থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টা গ্রহন করেন, সর্বাধিক দয়ার আধার মহান পালনকর্তা আল্লাহ রব্বুল আলামীন তেমনি বান্দাকে মদের কঠিন নেশা ছাড়াতে ধীরগতির কৌশল অবলম্বন করেছেন। এর একটি কারণ এই হতে পারে যে, সে সময় আরবরা ছিল ভীষণনভাবে মদে অভ্যস্ত। শুধু আরব নয়, পৃথিবীর অন্যান্যাঞ্চলের জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যেও তখন মদের ব্যাপকতা ছিল ভয়াবহ।

মদ্যপান ছিল সে যুগে আভিজাত্যের প্রতীক। আরব-আজম সর্বত্র ছিল এর ব্যাপক প্রচলন। তাই ইসলাম প্রথমে তার অনুসারীদের মানসিকতা তৈরী করে নিয়েছে। তারপর চূড়ান্তভাবে একে নিষিদ্ধ করেছে। আর এর ফলশ্রুতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ে যখন নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তখন তা বাস্তবায়িত হয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এজন্য কোন জোর জবরদস্তি কিংবা বলপ্রয়োগের প্রয়োজন দেখা দেয়নি। কিংবা প্রয়োজন হয়নি প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপের।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা মাদককে চারটি পর্যায়ে হারাম করেছেন। যেমন-

প্রথম পর্যায়:

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কুরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে ঘোষণা দিলেন যে, তোমরা খেজুর ও আঙ্গুর দ্বারা মাদক তৈরির পাশাপাশি উত্তম খাদ্য বস্তুও তৈরি করে থাক। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,

وَمِنْ ثَمَرَاتِ النَّخِيلِ وَالْأَعْنَابِ تَتَّخِذُونَ مِنْهُ سَكَرًا وَرِزْقًا حَسَنًا

আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক। -সূরা নাহল, আয়াত: ৬৭

এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সরাসরি মাদক হারাম করেননি, তবে জানিয়ে দিলেন, মাদক ভিন্ন জিনিস। আর উত্তম খাদ্যবস্তু ভিন্ন জিনিস। এই আয়াত নাজিল হওয়ার পর সাহাবায়ে কেরাম ধারণা করে নিলেন যে, মাদক সম্পর্কে কোনো বিধান আল্লাহ তাআলা অচিরেই নাজিল করবেন।

দ্বিতীয় পর্যায়:

এরপর সাহাবায়ে কেরাম যখন মাদক সম্পর্কে রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করেন তখন আল্লাহ তাআলা কুরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে তাঁর প্রিয় হাবীবকে জানিয়ে দিলেন যে, মদের মাঝে উপকার ক্ষতি উভয়ই রয়েছে। তবে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি। কুরআনে এসেছে,

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِنْ نَفْعِهِمَا

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, এ দু’টোয় রয়েছে বড় পাপ ও মানুষের জন্য উপকার। আর তার পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অধিক বড়। -সূরা বাকারা, আয়াত: ২১৯

এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা সাহাবায়ে কেরামের অন্তরে মাদকের প্রতি কিছুটা ঘৃণার সৃষ্টি করে দিলেন। ফলে সাহাবায়ে কেরাম দু’দলে ভাগ হয়ে গেলেন। একদল ক্ষতির দিক বিবেচনায় তা বর্জন করলেন। আরেকদল চিন্তা করলেন, যেহেতু কিছুটা উপকার রয়েছে তাই তা গ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না।

তৃতীয় পর্যায়:

এ পর্যায়ে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করে জানিয়ে দিলেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের কাছেও যাওয়া যাবে না। যেমনটি ইরশাদ হয়েছে,

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى

হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না। -সূরা নিসা, আয়াত: ৪৩

এই আয়াত নাজিলের পর আরো কিছু সাহাবী মদকে বর্জন করলেন। তবে মদ সরাসরি হারাম না করার কারণে অল্প কিছু সংখ্যক সাহাবী তখনো নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় মদ পান করতেন।

চতুর্থ পর্যায়:

পরিশেষে আল্লাহ তাআলা কুরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে মদকে চূড়ান্তভাবে হারাম করে দিলেন। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

হে মুমিনগণ, নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। -সূরা মায়েদা, আয়াত: ৯০

একই সূরার পরবর্তী আয়াতে বর্ণিত হয়েছে-

إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ

শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? -সূরা মায়েদা, আয়াত: ৯১

বস্তুতঃ মদ নিষিদ্ধের জন্য পরপর উপরোল্লিখিত চারটি আয়াত নাযিল হয়। সূরা নাহল, আয়াত: ৬৭, বাক্বারাহ ২১৯, নিসা ৪৩ ও সবশেষে মায়েদাহ ৯০-৯১। লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে, উপরোক্ত প্রতিটি আয়াত নাযিলের মধ্যে নাতিদীর্ঘ বিরতি ছিল এবং মানুষের মানসিকতা পরিবর্তনের অবকাশ ছিল। প্রতিটি আয়াতই একেকটি ঘটনা উপলক্ষে নাযিল হয়। যাতে মানুষ নিষেধাজ্ঞার গুরুত্ব উপলব্ধি করে তাকে সহজে গ্রহণ করে নিতে পারে। আর হয়েছেও সেটাই। চূড়ান্ত নির্দেশ আসার পূর্বেই পর্যায়ক্রমিক চমকপ্রদ পদ্ধতি থেকে দেখে শিখে এমনিতেই মদ ছেড়ে দেন। বাদ বাকি যারা ছাড়েননি তারাও চতুর্থ পর্যায়ে যখন স্পষ্টভাবে মদের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় তখন তারাও সতস্ফুর্তভাবে মদ ছেড়ে দেন। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-

* حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ أَبُو يَحْيَى، أَخْبَرَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ كُنْتُ سَاقِيَ الْقَوْمِ فِي مَنْزِلِ أَبِي طَلْحَةَ، وَكَانَ خَمْرُهُمْ يَوْمَئِذٍ الْفَضِيخَ، فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُنَادِيًا يُنَادِي ‏"‏ أَلاَ إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ ‏"‏‏.‏ قَالَ فَقَالَ لِي أَبُو طَلْحَةَ اخْرُجْ فَأَهْرِقْهَا، فَخَرَجْتُ فَهَرَقْتُهَا، فَجَرَتْ فِي سِكَكِ الْمَدِينَةِ فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ قَدْ قُتِلَ قَوْمٌ وَهْىَ فِي بُطُونِهِمْ‏.‏ فَأَنْزَلَ اللَّهُ ‏{‏لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا‏}‏ الآيَةَ‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি আবূ তালহার বাড়িতে লোকজনকে শরাব পান করাচ্ছিলাম। সে সময় লোকেরা ফাযীখ শরাব ব্যবহার করতেন। রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে আদেশ করলেন, যেন সে এই মর্মে ঘোষনা দেয় যে, সাবধান! শরাব এখন হতে হারাম করে দেয়া হয়েছে। আবূ তালহা (রাঃ) আমাকে বললেন, বাহিরে যাও এবং সমস্ত শরাব ঢেলে দাও। আমি বাইরে গেলাম এবং সমস্ত শরাব রাস্তায় ঢেলে দিলাম। আনাস (রাঃ) বলেন, সে দিন মদীনার অলিগলিতে শরাবের প্লাবন বয়ে গিয়েছিল। তখন কেউ কেউ বলল, একদল লোক নিহত হয়েছে, তথচ যাদের পেটে শরাব ছিল। তখন এই আয়াত নাযিল হল :

لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا إِذَا مَا اتَّقَوا وَّآمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ثُمَّ اتَّقَوا وَّآمَنُوا ثُمَّ اتَّقَوا وَّأَحْسَنُوا ۗ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারা পূর্বে যা কিছু পানাহার করেছে তার জন্য তাদের কোন গুনাহ হবে না। -আল-মা-য়িদাহ ৯৩
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৪৬৪ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১৯

জটিল ভাই বলেছেন: সুন্দর ও তথ্যপূর্ণ উপস্থাপনা। ওয়াজ এমন হওয়া উচিৎ। কিন্তু সেটাতো এখন আওয়াজ হয়ে গেছে!

২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



লাইকসহ লেখাটির প্রশংসায় আপনার আন্তরিক মন্তব্য সত্যি প্রেরণার।

কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা জানবেন। কল্যানের দোআ সবসময়।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:০১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কত কত হারাম আমরা ভোগকরি, হারাম বলে জ্ঞানই করি না!!

২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।

আবু দাউদ, ইবনে মাজা ও ইবনে হাব্বান বর্ণিত একটি হাদিস রয়েছে যেটি হযরত আবু মালেক আশআরীর রেওয়ায়েতে রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম বলেন,

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ لاَ تَذْهَبُ اللَّيَالِي وَالأَيَّامُ حَتَّى تَشْرَبَ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي الْخَمْرَ يُسَمُّونَهَا بِغَيْرِ اسْمِهَا ‏"

আবূ উমামা আল-বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন কোন রাত এবং দিন অতিবাহিত হবে না, যখন আমার উম্মাতের কতক লোক শরাবের ভিন্ন নামকরণ করে তা পান করবে না। -সুনান ইবনু মাজাহ, পানীয় ও পানপাত্র (كتاب الأشربة) অধ্যায়, হাদিস নং ৩৩৮৪ hadithbd.com

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ يَشْرَبُ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي الْخَمْرَ بِاسْمٍ يُسَمُّونَهَا إِيَّاهُ ‏"

উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের কতক লোক শরাবের ভিন্নতর নাম রেখে তা পান করবে। -সুনান ইবনু মাজাহ, পানীয় ও পানপাত্র (كتاب الأشربة) অধ্যায়, হাদিস নং ৩৩৮৫ hadithbd.com

অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে-

আমার উম্মতের কিছু লোক মদের নাম পাল্টে তা পান করবে। তাদের সামনে গায়িকারা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহকারে গান করবে। আল্লাহ তাআলা তাদের ভূ-গর্ভে বিলীন করে দেবেন এবং কতকের আর্কতি বিকৃত করে বানর ও শুকরে পরিনত করে দেবেন। -তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন পৃঃ১০৫২

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:০০

অধীতি বলেছেন: সুন্দর উপস্থাপনা। মদ খেলে ৪০ দিন ইবাদত কবুল হয় না এর সত্যতা কতটুকো?

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রশ্নের জন্য অভিনন্দন।

কোনো ব্যক্তি মদ খেয়ে মাতাল হলে ৪০ দিন তার নামায কবুল হয় না- কথাটি সঠিক। কারণ, ইবনে মাজাহ এর নিম্নোক্ত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏"‏ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ وَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا وَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ فَشَرِبَ فَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا فَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ فَشَرِبَ فَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا فَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يَسْقِيَهُ مِنْ رَدْغَةِ الْخَبَالِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا رَدْغَةُ الْخَبَالِ قَالَ ‏"‏ عُصَارَةُ أَهْلِ النَّارِ ‏"

‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শরাব পান করে এবং মাতাল হয়, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার নামায কবুল হয় না। সে মারা গেলে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আর যদি সে তওবা করে, তবে আল্লাহ তা‘আলা তার তওবা কবুল করবেন। সে পুনরায় শরাব পানে লিপ্ত হলে কিয়ামতের দিন অল্লাহ তা‘আলা অবশ্যি তাকে ‘‘রাদগাতুল খাবাল’’ পান করাবেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ‘রাদগাতুল খাবাল’ কী? তিনি বলেনঃ জাহান্নামীদের দেহ থেকে নির্গত পুঁজ ও রক্ত। -তিরমিযী ১৮৬২, নাসায়ী ৫৬৬৪, ৫৬৭০, আহমাদ ৬৬০৬, ৬৭৩৪, দারেমী ২০৯১, সহীহাহ ৭০৯, আত-তালীক আলা ইবনু খুযাইমাহ ৯৩৯, তাখরীজুল ঈমান লি ইবনুস সালাম ৯১, মিশকাত ৩৬৮৮, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ

সালাত কবুল না হওয়ার অর্থ কি?

সলাত কবুল হবে না অর্থ এই নয় যে, তার সলাত সহীহ হচ্ছে না, অথবা তার সলাত ছেড়ে দেওয়া উচিত; বরং এর অর্থ হচ্ছে যে সে তার জন্য সাওয়াব পাবে না।

তাই সালাত তাকে অবশ্যই আদায় করতে হবে। আর সলাত পড়ার সুবিধা হচ্ছে যে, সে তার কর্তব্য পালন করেছে এবং এর দ্বারা আশা করা যায় যে, তাকে সালাত তরকের জন্য আলাদাভাবে শাস্তি ভোগ করতে হবে না।

আবু আব্দুল্লাহ্‌ ইবন মান্দাহ্‌ বলেছেন- 'তার সালাত কবুল হবে না' অর্থ হচ্ছে যে, সে ৪০ দিন সালাতের জন্য সাওয়াব পাবে না, তাকে তার সালাতের জন্য এই সাওয়াব না দেয়াটা মদ পান করার শাস্তি স্বরূপ। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যখন শুক্রবারে ইমাম খুৎবা দেন তখন খুৎবা চলাকালীন সময়ে যে ব্যক্তি কথা বলে, সে জুমুআর সালাত পড়বে কিন্তু তার জন্য জুমুআ নেই, এ কথার অর্থ হচ্ছে যে, উক্ত ব্যক্তি তার পাপের শাস্তি স্বরূপ জুমুআর সালাতের সাওয়াব পাবে না। -তা’জিম কাদ্‌র আল-সালাহ্‌, ২/৫৮৭, ৫৮৮।

সর্বোপরি, এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যিনি মদ পান করেছেন তাকে প্রতি ওয়াক্ত সালাত অবশ্যই আদায় করতে হবে। এই হাদিসের সঠিক মর্ম অনুধাবন না করে তিনি যদি তার কোন সালাত পড়তে বিলম্ব করেন, অথবা ভাবেন যে, সালাত তো কবুল হবে না সুতরাং পড়ে লাভ কি? কিংবা সালাত ছেড়েই দেন, তাহলে তিনি খুব বড় ধরনের পাপ করবেন যা মদ খাওয়ার পাপ থেকেও মারাত্মক।

আল্লাহ তাআ'লাই সর্বজ্ঞাত।

আল্লাহ তাআ'লা মদ এবং নেশাযুক্ত যাবতীয় বস্তু থেকে আমাদের পরহেয করে চলার তাওফিক দান করুন।

৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০৫

এভো বলেছেন: ভাই সাহেব,
কোরানের একটা আয়াতে বলা হয়েছে, যারা কোরানের এক অংশ মানে বা কিছু আয়াত মানে না, তারা মুনাফেক শয়তান ইত্যাদি। তাহোলে তাহোলে একটা আয়াতে মদ খেতে মানা করা হয় নি, আরেকটাতে মদ খেতে মানা করা হয় নি কিন্তু মদ্দপ্য অবস্থায় নামাজের কাছে আসতে মানা করা হয়েছে। এখন কোরানের এই অংশ পালনা করে যদি অন্য অংশ পালন করে যদি মদ না খাই, তখন কি হবে?
এই পরিস্থিতিতে কি করে কোরানের সব অংশ পালন করবো?
যারা কোরানের এক অংশ মানে এবং অন্য অংশ মানে না বা পালন করে না, তাদেরকে তো অভিসম্পাত করা হয়েছে।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



এবার এসেছেন পয়েন্টে। ঠিক এই জন্যই ওস্তাদের স্মরণাপন্ন হতে হয়। যারা কুরআনের অনুবাদ পড়েন, জানার জন্য এটা অবশ্যই ভাল একটি প্রচেষ্টা। কিন্তু তাদের সামনে যখন কোনো প্রশ্ন এসে দাঁড়ায় তখন তাদের কর্তব্য হওয়া উচিত- বিজ্ঞ আলেম উলামাদের থেকে সঠিক ফায়সালা জেনে নেয়া।

কুরআনুল কারিমের শুধু অনুবাদ পড়ে সবকিছু অনুধাবন করা সম্ভব নয়। উদাহরণতঃ মদ নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে নাযিলকৃত যে আয়াতগুলোর কথা আপনি প্রশ্নে বললেন, এগুলোর শানে নুযূল, নাযিলের ধারাবাহিকতা, প্রেক্ষাপট ইত্যাদি প্রাসঙ্গিক অনেক কিছুই জানা থাকা চাই। এগুলো জানা থাকলে আপনি নিজেই স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন যে, এই চার ধাপে নাযিলকৃত কোন আয়াতটির নির্দেশনা মানলে বাকি তিন ধাপে নাযিলকৃত আয়াতগুলো এমনিতেই মানা হয়ে যাবে। অন্যথায় তো আপনার মত বিভ্রান্তিতে পড়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

আশা করছি, আপনাকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।

প্রশ্ন রেখে যাওয়ায় ধন্যবাদ। শুভকামনা।

৫| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ১:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: কোনো প্রকার নেশাই মানুষের জন্য ভালো না।

০৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:১৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ঠিক। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.