নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাদিস সংকলনের ইতিহাস বিকৃতি এবং ইনিয়ে বিনিয়ে মুসলিম দরদি সেজে হাদিস বর্জনের ডাক; পেছনের উদ্দেশ্য কি?

১১ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৩৩

হাদিস সংকলনের ইতিহাস বিকৃতি এবং ইনিয়ে বিনিয়ে মুসলিম দরদি সেজে হাদিস বর্জনের ডাক; পেছনের উদ্দেশ্য কি?

মুয়াত্তা ইমাম মালিক রহ. মদীনার ইমাম নামে খ্যাত ইমাম মালিক ইবনে আনাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু কর্তৃক সংকলিত 'মুয়াত্তা' প্রাচীনতম এবং বিখ্যাত একটি হাদীস গ্রন্থ। হাদীস সংকলনের ইতিহাসে ইমাম বুখারী, মুসলিম প্রমুখ সংকলকের পূর্বেই মুয়াত্তা প্রকাশিত হয়েছিল। ইমাম বুখারীসহ উচ্চ পর্যায়ের হাদীসের হাফেজ ও ইমামগণ এ সংকলনটির ভূয়সী প্রসংসা করেছেন। ছবি কৃতজ্ঞতা: গুগল

পৃথিবীর শত শত কোটি মুসলিম বিগত প্রায় দেড় হাজার বছর যাবত ইসলামী শরীয়াহ প্রণিত মাসয়ালা মাসায়েল, ফতোয়া এবং ফায়সালা অনুসন্ধানে কুরআনুল কারিমের পরপরই সহিহ হাদিস গ্রন্থসমূহকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং সেসবের অনুসরণ করে এসেছেন। যুগ যুগ ধরে শতাব্দির পর শতাব্দি কাল যাবত মুসলিম বিশ্বে সর্বজন গ্রহনযোগ্য, সুপ্রতিষ্ঠিত এবং সুসাব্যস্ত হাদিস সমগ্র বর্জনের বিষয়ে বর্ণচোরা কোন কোন মহলের নতুন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ইদানিং সামনে চলে আসছে। ধর্মীয় মৌলিক বিষয়াদি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সমাজে ফিতনা ফাসাদ সৃষ্টি করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য কি না, আমরা ঠিক বোধগম্য নই! জনৈক সম্মানিত ব্লগার সম্প্রতি হাদিস বর্জনের বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন সামু ব্লগে। বিষয়টি আপত্তিকর মনে হয়েছে বলেই মূলতঃ ভেবেছিলাম যে, তার সেই পোস্টটিতে একটি মন্তব্য করবো এবং সেই মন্তব্যটি লিখতেও গিয়েছিলাম সেখানে। কিন্তু মন্তব্যটির কলেবর কিছুটা বড় হয়ে যাওয়ায় মন্তব্যাকারে সেখানে সেটি প্রকাশ করাটা সমিচীন মনে করিনি। পরবর্তীতে সেই মন্তব্যটিই আরেকটু এডিট করে এখানে পোস্ট আকারে দিলাম। মূলতঃ উক্ত ব্লগার নিজেকে হয়তো অতি বুদ্ধিমান শ্রেণির মনে করে থাকেন বলেই প্রায়শ তিনি ইসলাম ধর্মের বিবিধ মৌলিক বিষয়াদি নিয়ে তার মনগড়া এবং উদ্ভট কল্পকাহিনী ফাঁদার অপচেষ্টা করে থাকেন। তার অতি চালাকির ভাবসাব দেখে এই মুহূর্তে পবিত্র কুরআনের সূরা ইউসূফ এর ৭৬ নং আয়াতের শেষাংশটি মনে পড়ছে, যেখানে বলা হয়েছে-

وَفَوْقَ كُلِّ ذِي عِلْمٍ عَلِيمٌ

অর্থাৎ, এবং প্রত্যেক জ্ঞানীর উপরে আছে অধিকতর এক জ্ঞানীজন। -সূরা ইউসূফ এর ৭৬ নং আয়াতের শেষাংশ

উল্লেখিত আয়াতাংশে নবী ইউসুফ আলাইহিস সালাম এর সাথে তার ভাইদের চাতুরিপূর্ণ নানা ঘটনা বর্ণনা করার এক পর্যায়ে পরবর্তী সময়ে ইউসুফ আলাইহিস সালাম এর কৌশলের কাছে তারা যেভাবে পরাজিত ও কুপোকাত হয়েছিলেন সে কথা তুলে ধরার জন্যই দারুণ অর্থবোধক এবং চমকপ্রদ এই বাক্যটি ব্যবহৃত হয়েছে।

তো আমাদেরও মনে রাখা দরকার যে, আমি যত জ্ঞানীই নিজেকে মনে করে থাকি না কেন, আমার চেয়ে জ্ঞানী কেউ না কেউ নিশ্চয়ই রয়েছেন। এটা ভুলে গেলেই বিপদ। এটা ভুলে গেলেই আমরা কালেভদ্রে কেউ কেউ ফেইক মুসলিম সেজে উম্মতের অতি দরদিজনের ছদ্মাবরণে স্বজাতির আত্মসমালোচনার নামে ইসলাম ধর্মের ভুল তালাশের ছুঁতোয় 'হাদিস বর্জনে মুসলমানদের উপকার নিহিত' -এমনসব আজগুবি থিউরি প্রসব করে থাকি! এই অজ্ঞানতাপ্রসূত মনমানসিকতা আমাদের পিছু ছাড়বে কবে? নিজেকে অতি জ্ঞানী কিংবা অতি চালাক ভাবার এই সর্বনাশা রোগ থেকে আমরা কবে মুক্ত হতে পারবো?

তবে মজার কথা হচ্ছে, যত চালাকি এবং কূটকৌশলের আশ্রয়ই তিনি নিয়ে থাকুন না কেন, ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে তার সূক্ষ্ণ এবং চাতুর্যপূর্ণ বক্তব্যগুলো বিজ্ঞ ব্লগারদের চোখ এড়ায় না। তার প্রমান ইতিপূর্বেকার তার এই জাতীয় বিতর্কিত ও আপত্তিকর অনেক পোস্টে বিজ্ঞ এবং সম্মানিত ব্লগার ভাই বোনদের সুচিন্তিত মতামত এবং কঠোর প্রতিবাদমূলক মন্তব্য। তিনি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে 'কুরআন অনলি' বা 'হাদিস অনলি' কিংবা 'কুরআন হাদিস বোথ' ইত্যাদি মনগড়া যেই দলের পরিচয়েই পরিচিত করতে চান নিজেকে, কোন লাভ নেই, মিথ্যে কখনোই সত্য হয়ে যায় না, হাজারটা যুক্তির পরেও মিথ্যে মিথ্যেই থেকে যায়, মিথ্যের দুর্গন্ধ শত অপচেষ্টাতেও দূর হয় না, তার পূর্বোক্ত পোস্টগুলো পাঠ করলে তিনি সত্যিকারার্থে যে কে, তার পরিচয় অতি সহজেই দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আত্মপরিচয় লুকিয়ে অন্য ধর্মের, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের বিধি-বিধান এবং মৌলিক নিয়ম-নীতি তথা কুরআন কিংবা হাদিস বর্জনের মত অতি আপত্তিকর এবং স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে এই জাতীয় অপপ্রচার শুধুমাত্র মারাত্মক নিন্দনীয় এবং গর্হিত অপরাধই নয় এগুলো বর্তমানে প্রচলিত যে কোন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় আইনেও নিঃসন্দেহে দন্ডনীয় অপরাধ।

মাননীয় ব্লগ কর্তৃপক্ষ বাক স্বাধীনতার অধিকারের নামে তাকে ছাড় দিলেও দিতে পারেন, সেটা একান্তই তাদের ব্লগ নীতিমালার বিষয়, কিন্তু তিনি এই ব্লগের সম্মানিত পাঠক লেখকসহ ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের অন্তরে বারংবার আঘাত করার যে কাজটি অব্যাহতভাবে একের পর এক করেই যাচ্ছেন, এটা যারপরনাই নিন্দনীয়। এটা আমাদের হতবাক করে। আমরা এর জন্য নিতান্তই ব্যথিত, মর্মাহত এবং দুঃখিত! অন্য ধর্মের মৌলিক বিষয়াদি নিয়ে এই ধরণের খোচাখুচি এবং চালাকির আশ্রয়ে অনধিকার চর্চা নিতান্ত নৈতিকতা পরিপন্থী এবং সন্দেহাতিতভাবে গর্হিত অন্যায়। এমনটা করার অধিকার কারোরই থাকা উচিত নয় বলেই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সচেতন শান্তিকামী মানুষ মাত্রেরই দাবি।

বাক স্বাধীনতার নামে, স্ব স্ব জাতির উপকার কিংবা অপকার বিবেচনায় নিয়ে তাদের দরদি সেজে আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের গীতা বর্জনের আহবান জানাতে পারি না। বাইবেল বর্জনের উপদেশ দিতে পারি না খৃস্টান ধর্মাবলম্বী বন্ধুগণকে। ত্রিপিটক বাদ দেয়ার পরামর্শ দিতে পারি না বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী আমাদের ভাই বন্ধুদেরকে। এগুলোকে বাক স্বাধীনতা বলা যায় না। তাহলে তিনি যে ইনিয়ে বিনিয়ে কৌশল ও চাতুর্যের আশ্রয়ে প্রকারান্তরে হাদিস বর্জনের আহবান জানালেন, তার এই কাজটিকে কেন আপত্তিকর বলে গণ্য করা হবে না? উল্লেখ্য, তিনি তার পোস্টের নাম প্রথমে দিয়েছিলেন 'হাদিস বর্জন করলে মুসলমানদের কি কি উপকার হবে'। অর্থাৎ, তিনি যে সর্বপ্রকার হাদিস বর্জনের চিন্তা থেকেই পোস্টটি করেছিলেন, তা পোস্টের নাম দেখেই বোঝা যায়। পরে অবশ্য পোস্টটি যাতে বিতর্কিত আখ্যায়িত হয়ে না যায় সে লক্ষ্যে চতুরতার আশ্রয়ে কিছু সমর্থকপ্রাপ্তির প্রত্যাশায় শিরোনামটি সংশোধন করে সেখানে 'শতবর্ষ পরে লিখিত' কথাটিও যুক্ত করেন। অর্থাৎ, এই কথা যুক্ত করার পেছনে এটাও তার উদ্দেশ্য থেকে থাকতে পারে যাতে পাঠকের মনে তার সম্মন্ধে এই ভুল ধারণা ঢুকিয়ে দেয়া যায় যে, সব হাদিস না হলেও (শতবর্ষ পরে লিখিত নয় এমন) কিছু হাদিস যেহেতু তিনিও মানতে ইচ্ছুক, সেহেতু তিনি অমুসলিম হন কি করে! তিনি বরং শুধুমাত্র সাধারণ একজন মুসলিমই নন, গোটা মুসলিম জাতির ত্রাতা পর্যায়ের অতি উঁচু স্তরের বরেণ্য কেউ হয়ে থাকবেন, যিনি শুধু এই জাতির উপকার ও কল্যানই চিন্তা করে থাকেন!

এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় কে কি বলেন এবং সার্বিক অবস্থা কেমন হয়ে ওঠে, ইত্যাদি দেখার পরে অবস্থা জটিলতার দিকে না গেলে, এই শ্রেণির মহান ব্যক্তিগণ ক'দিন পরে 'মুসলমানগণ ১৪০০ বছর পূর্বের কুরআন বর্জন করলে কি কি ফায়দা লাভ করবে' সেসবের চিত্তাকর্ষক বর্ণনা উপস্থাপন করে আরও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট প্রসব করবেন না, তার গ্যারান্টি কে দিবে?

আগেও তাকে বিভিন্ন সময়ে অনুরোধ করেছি যে, ইতিহাস না জেনে ইসলাম ধর্মের যে কোন বিষয় নিয়ে ইচ্ছে হলেই যাচ্ছেতাই মনগড়া কথাবার্তা প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা দয়া করে তিনি যেন না করেন। এখনও, এই পোস্টেও সেই একই অনুরোধ তার প্রতি আবারও রেখে যাচ্ছি। তিনি অবশ্য হাদিস সংকলনের ইতিহাসটা সঠিকভাবে একটু জেনেশুনে তারপরেই হাদিস বর্জনের ডাক দেয়ার মত এই ধরণের ঐতিহাসিক পোস্ট প্রসব করার পরিকল্পনা করতে পারতেন। তাতে সুবিধা হতো তার নিজেরও। হাদিস সংকলনের সঠিক ইতিহাস যদি সত্যি সত্যিই তার জানা থাকতো, কস্মিনকালেও তিনি এই ধরণের উস্কানিমূলক এবং ধর্ম অবমাননামূলক পোস্ট দিতে পারতেন বলে মনে করি না। কারণ, হাদিসকেও ওহিরই একটি প্রকার সাব্যস্ত করা হয়েছে ইসলামী শরিয়তে। কুরআনুল কারিমকে বলা হয় ওহিয়ে মাতলু, ইহার অপর নাম ওহিয়ে জলি। আর হাদিসকে ওহিয়ে গাইরে মাতলু বলা হয় যার অপর নাম ওহিয়ে খফি। -বিস্তারিত দেখুন, তাফসীরে জালালাইন, খন্ড ৬, পৃষ্ঠা ২৫৯, ইসলামিয়া কুতুবখানা প্রকাশনী, ৩০/৩২ নর্থব্রুক হল রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা

কুরআনুল কারিমের বিভিন্ন স্থানে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ অনুকরণ করার নির্দেশ স্পষ্টভাবে প্রদান করা হয়েছে। তাঁর অনুসরণ অনুকরণ করার জন্য তাঁর কথামালা, তাঁর আদেশ নিষেধ এবং উপদেশাবলী, তাঁর ওঠাবসা, আচার-আচরণ, লেনদেন, স্বভাব চরিত্র, এককথায় তাঁর সামগ্রিক জীবনাচার সম্মন্ধে জানার প্রয়োজন দেখা দেয়। একইভাবে প্রয়োজন দেখা দেয়, তাঁর সহচরবর্গের সামগ্রিক জীবনাচার সম্মন্ধেও অবহিত হওয়ার। এটা সম্ভব হচ্ছে হাদিসের অমূল্য রত্ন বিদ্যমান রয়েছে বলেই। বিশাল হাদিস ভান্ডারের অমূল্য সম্পদ আমাদের সামনে রয়েছে বলেই প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সামগ্রিক জীবনের প্রতিচ্ছবি আমরা চোখের সামনে আজও যেন স্বচ্ছভাবেই দেখে নিতে পারি।

হাদিসের বিশাল ভান্ডারকে মূলতঃ কুরআনুল কারিমের ব্যাখ্যা হিসেবেই ধরা হয়ে থাকে। কারণ, রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু বলতেন তা ওহি বা প্রত্যাদেশ বৈ কিছু নয়। এই মর্মে কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে-

وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ

এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না। -সূরাহ আন নাজম, আয়াত ০৩

إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ

এটা (কুরআন) ওহী ব্যতিত অন্য কিছু নয়, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়। -সূরাহ আন নাজম, আয়াত ০৪, আয়াতদ্বয়ের বিস্তারিত তাফসীর দেখে নিতে পারেন, তাফসীরে জালালাইন, খন্ড ৬, পৃষ্ঠা ২৫৭ এবং ২৫৯, ইসলামিয়া কুতুবখানা প্রকাশনী, ৩০/৩২ নর্থব্রুক হল রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা

রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআনে বর্ণিত নির্দেশাবলী সর্বপ্রথমে নিজের জীবনে নিজেই বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। আর তিনি যা কিছু করেছেন এবং বলেছেন সেসবের বিবরণ বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে হাজার হাজার হাদিসের বর্ণনায়। উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, নবীজীর চরিত্র কেমন ছিল? উত্তরে তিনি বলেছেন,

كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْأَنَ

কা-না খুলুকুহুল কুরআন, অর্থাৎ, তাঁর চরিত্র ছিল অবিকল কুরআনের প্রতিচ্ছবি। অর্থাৎ, কুরআন মাজিদে যে সকল উত্তম চরিত্র ও মহান নৈতিকতার উল্লেখ রয়েছে সে সবই তাঁর মাঝে বিদ্যমান ছিল। কুরআনে বর্ণিত চরিত্র অপেক্ষা উত্তম চরিত্র আর কী হতে পারে? তিনি ছিলেন পবিত্র কুরআনি চরিত্রমালার জীবন্ত প্রতীক।

ইসলামী শরিয়ত যে চারটি মূল কাঠামোর উপরে প্রতিষ্ঠিত, সেগুলো হচ্ছে ১. কুরআনুল কারিম, ২. হাদিস, ৩. ইজমা এবং ৪. কিয়াস। ইসলামী শরিয়তের দ্বিতীয় এবং অতিব গুরুত্বপূর্ণ এই উৎসকে বাদ দেয়ার এই দিবাস্বপ্ন যারা দেখে থাকেন তারা ইসলাম ধর্ম এবং মুসলিম জাতির প্রকৃত বন্ধু না চরম শত্রু সেই সিদ্ধান্ত সম্মানিত পাঠকের হাতে ছেড়ে দিচ্ছি।

যারা বলেন ১০০ বা ২০০ বছর পরে হাদিস সংকলন করা হয়েছে, তাদের কথা কতটুকু সত্য?

কিছু লোকের দেখা ইদানিং কদাচিৎ পাওয়া যায় যারা বলে থাকেন যে, হাদিস সংকলন করা হয়েছে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইনতিকালের ১০০ বা ২০০ বছর পরে। এদেরকে কখনও কখনও ২০০/৩০০ বছরের কথা বলেও অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়তে দেখা যায়। কথা হচ্ছে, তাদের এসব কথা কতটুকু সত্য? হাদিস সংকলনের প্রকৃত ইতিহাস কি তাদের এসব কথার সত্যতার সাক্ষ্য আদৌ দেয়? বস্তুতঃ হাদিস সংকলনের ইতিহাস সঠিকভাবে না জানার কারণে তাদের এই বিভ্রান্তিতে পূর্ণ মরনগড়া এবং অলিক কথাাবার্তা তারা হয়তো প্রচার করে থাকেন। অথবা, তারা জেনেবুঝেই এসব মিথ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছেন বিশেষ কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। এর দ্বারা তারা এটাও প্রত্যাশা করে থাকতে পারেন যে, হাদিস যেহেতু মুসলিম উম্মাহর দ্বীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; আস্থা, বিশ্বাস এবং বিশুদ্ধতার নিরিখে পবিত্র কুরআনের পরেই যেহেতু সহিহ হাদিসের অবস্থান, আর হাদিসের নির্দেশনাগুলোকে বিনাবাক্যবয়য়ে যেহেতু সারা পৃথিবীর মুসলমানগণ গ্রহণ করে ও মেনে চলেছেন, সেহেতু হাদিসের সংকলনের ইতিহাসের মধ্যে বিভ্রান্তি ঢুকিয়ে দিয়ে মুসলমানদের অন্তরে হাদিসের প্রতি সংশয় এবং অবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারলে মুসলমানদেরকে হাদিস বিমুখ করা সম্ভব হতে পারে। তাদের ধারণায়, মুসলমানদের ভেতরে পারস্পারিক অস্থিরতা, অবিশ্বাস সৃষ্টির পাশাপাশি নিজেদের ঐক্যে ফাটল ধরাতে এটি পর্যায়ক্রমে বিশাল একটি সফলতা হিসেবে গণ্য হতে পারে। এখানে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট গ্রন্থাবলী, অন্যান্য জার্নাল এবং মরহুম মাওলানা আব্দুর রহিম. রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রণিত এই সংক্রান্ত কিতাবাদি হতে সংগৃহিত হাদিস সংকলনের সংক্ষিপ্ত কিছু কথা আলোকপাত করছি-

হাদিসের সংকলন ও সংরক্ষনে মুসলিম উম্মাহর নজিরবিহীন ত্যাগঃ

মানুষের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ হলো নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন চরিত। তাঁর জীবন চরিত বিবৃত হয়েছে হাদীসের মধ্যে। ইসলামের দৃষ্টিতে কুরআনের পরই হাদীসের স্থান। কুরআন ইসলামী আইনতন্ত্রের প্রধান উৎস এবং হাদীস দ্বিতীয় উৎস। কুরআনের জীবন্ত ব্যাখ্যা হিসেবে হাদীসে নববী সংরক্ষণ ও সংকলনের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহ যে কঠোর ত্যাগ স্বীকার করেছেন বিশ্ব ইতিহাসে তার কোন নজির নেই। ইসলামী শরীয়াহ সংরক্ষণের জন্য শুধুমাত্র কুরআন সংরক্ষণ ও সংকলনই যথেষ্ট নয়, বরং হাদীসের ভান্ডারও সংরক্ষিত ও সংকলিত হওয়া দরকার। নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দীর্ঘ তেইশ বছরের নবুওয়তী জিন্দেগীর সকল কথা এবং কর্ম ও অনুমোদন সংক্রান্ত বাণী অবিকল সংরক্ষণ করা, বিশেষত সেই যুগে, যখন কাগজ, প্রেস কিংবা কম্পিউটার ছিল না, এযে কত কঠিন কাজ তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ এ দুরূহ কাজটি সমাধা করেছেন আশ্চর্যজনক কৃতিত্বের সাথে। তাঁরা নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস অক্ষরে অক্ষরে মুখস্থ রাখেন এবং বিভিন্ন উপকরণে লিখিতভাবে সংরক্ষণ করেন। সাহাবীদের পর তাবেঈগণও অনুরূপভাবে হাদীস সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেন। তাই আল্লাহ তাআ'লার অশেষ রহমতে সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন ও মুহাদ্দিসগণের কঠোর পরিশ্রম ও দীর্ঘ সাধনার বদৌলতে হাদীস সংরক্ষিত ও সংকলিত হয়েছে।

হাদীস সংরক্ষণের পদ্ধতিসমূহঃ

হাদীস সংরক্ষণের পদ্ধতিসমূহ দ্বিতীয় পর্বে সামান্য আলোচিত হয়েছে। এই পর্বে এ বিষয়ে আরও কিছু আলোকপাত করার ইচ্ছে। মুসলিম উম্মাহ রাসূলের নবুওয়তী জিন্দেগীর প্রাথমিক পর্যায় হতে আজ অবধি হাদীস সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রধানত নিম্নোক্ত পন্থা ও পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে আসছেনঃ

১. হাদীসের শিক্ষা গ্রহণ ও মুখস্থকরণ

২. হাদীসের শিক্ষাদান

৩. হাদীস মোতাবেক আমল

৪. হাদীস লিপিবদ্ধকরণ

১. হাদীসের শিক্ষা গ্রহণ ও মুখস্থকরণঃ

হাদীসের প্রথম ধারক ও বাহক ছিলেন নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরাম। তাঁরা প্রিয় নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখ নিসৃত বাণীসমূহ যা শুনেছেন এবং কর্ম ও অনুমোদনসমূহ যা প্রত্যক্ষ করেছেন তা সবই সংরক্ষণ করে পরবর্তী উম্মতের কাছে আমানতস্বরূপ রেখে গেছেন। সাহাবীগণ হাদীসের শিক্ষা গ্রহণে সর্বদা নিজেদের নিয়োজিত রাখতেন এবং তা মুখস্থ করতেন। আর অন্যদের কাছে তা যথাযথভাবে পৌঁছানো এবং শিক্ষাদানের লক্ষ্যে প্রাণপণ চেষ্টা চালাতেন। নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে সরাসরি অথবা অন্য সাহাবীদের মাধ্যমে হাদীস বর্ণনা করেছেন এমন সাহাবীদের সংখ্যা ইমাম আবু জুরআ রাজীর মতে এক লাখ চৌদ্দ হাজার। নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তিকালের সময় কেবল মক্কা ও মদীনায় সাহাবীদের সংখ্যা ছিল ইমাম শাফেয়ীর মতে ষাট হাজার। সাহাবায়ে কেরামের অনেকে হাদীসের শিক্ষা গ্রহণ ও মুখস্থকরণের জন্যে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। যেমন- আসহাবে সুফফা, সুফফার অধিবাসীগণ দিন-রাত নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে পড়ে থাকেন। ফলে মসজিদে নববী একটি আবাসিক বিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছিল। হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন- ‘আমি রাত্রিকে তিন ভাগে ভাগ করে নিই। একভাগে ঘুমাই, একভাগ ইবাদতের মধ্যে অতিবাহিত করি, আর একভাগে রাসূলের হাদীস পাঠ ও মুখস্থ করতে থাকি’। -সুনানে দারমী-১/৮২

আর অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম যারা নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারতেন না তারা অন্যের নিকট নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে কখন কি ঘটছে তা জেনে নেয়ার চেষ্টা করতেন। কেউ কেউ রাসূলের দরবারে হাজির হওয়ার জন্য একে অন্যের সাথে পালা ঠিক করে নিতেন। যেমন হযরত ওমর ফারুক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু তাঁর এক আনসারী প্রতিবেশীর সাথে পালা ঠিক করে নিয়েছিলেন। একদিন হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত থাকতেন, আরেকদিন উক্ত আনসারী সাহাবী উপস্থিত থাকতেন। -বোখারী শরীফ

সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে সফর করে রাসূলের দরবারে আসতেন হাদীস শিক্ষার জন্য। অনুরূপভাবে নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তিকালের পরেও অনেক সাহাবায়ে কেরাম একে অপরের নিকট হাদীস শেখার জন্য শত শত মাইল সফরের কষ্ট স্বীকার করতেন। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু কেবল একটি মাত্র হাদীস শোনার জন্যে মদীনা থেকে একমাসের পথ সুদূর সিরিয়া সফর করেছিলেন। -সহিহ বোখারী, কিতাবুল ইলম

সাহাবায়ে কেরামের হাদীস সংগ্রহ সংক্রান্ত আরও বহু চমকপ্রদ ঘটনা ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।

সাহাবায়ে কেরামের অসাধারণ স্মৃতিশক্তিঃ

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরবের যে জনসমাজে আত্মপ্রকাশ করেন তাঁদের চরিত্রে অসাধারণ স্মৃতিশক্তি বিদ্যমান ছিল। একথা অস্বীকারের কোন উপায় নেই যে, নবীজীর হাদীস ও জীবনাদর্শ সংরক্ষণ করতে হবে বলেই যেন এ সমাজটিকে পূর্ব থেকে পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছিল। স্মরণশক্তির আতিশয্য তৎকালীন আরব-মানুষকে আজো ইতিহাস প্রসিদ্ধ বানিয়ে রেখেছে।

একটি সুদীর্ঘ কাব্যগ্রন্থ একবার শোনামাত্র মুখস্থ করে নেয়া কিংবা বিভিন্ন কওমের উর্ধ্বতন বংশ পরম্পরা অতি দূর পর্যন্ত কণ্ঠস্থ রাখা। এমনকি পালের এক একটি বকরি, এক একটি ঘোড়া ও উটের বংশ পরম্পরা কণ্ঠস্থ রাখতে পারা কেবল তৎকালীন আরবদেরই বৈশিষ্ট্য ছিল। -দরসে তিরমিযী, মুকাদ্দমা

পূর্ব পরিকল্পিত হওয়ার প্রমাণ এভাবেও দেখানো হয় যে, চৌদ্দশ বছর পূর্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নামও যখন মানুষ জানতো না, তখন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস ও জীবনাদর্শকে যেভাবে অতিশয় নিখুঁত, সর্বাধিক বিশ্বস্ত ও সর্ব ব্যাপকতাসহ সংরক্ষণ করা হয়েছিল বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানুষের শক্তি ও সামর্থ্যকে আরো সহস্রগুণে বৃদ্ধি করে দেয়া সত্ত্বেও কি কোন মানুষের হাদীস ও জীবন চরিত এত ব্যাপক ও বিশ্বস্তভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হতো? প্রাচীন গ্রন্থাবলীতে তৎকালীন আরবদের অসাধারণ স্মৃতিশক্তি সম্পর্কে অনেক কিংবদন্তী আছে। প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হযরত কাতাদা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু স্পষ্টই বলেন, ‘‘আল্লাহ এই জাতিকে স্মরণশক্তির এমন প্রতিভা দান করেছিলেন যা অন্য কোন জাতিকে কখনো দান করা হয়নি।’’ -যুরকানী ৫/৩৯৫

যেমন- প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু তিনি বিপুল সংখ্যক হাদীসের ‘হাফিয’ ছিলেন। উমাইয়া খলিফা মারওয়ান বিন হাকাম হযরত আবু হুরায়রার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু স্মৃতিশক্তি পরীক্ষা করার মানসে তাঁকে একবার রাজদরবারে দাওয়াত করলেন। তিনি উপস্থিত হলে খলিফা নিজেই তাঁকে কিছু সংখ্যক হাদীস মুখস্থ শোনানোর অনুরোধ করলেন। আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু তখন কিছু সংখ্যক হাদীস শোনিয়ে দেন। বাৎসারিককাল পরে একদিন ঠিক এ হাদীসসমূহ শোনাবার জন্যে হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে অনুরোধ করা হলো। তিনি সেই হাদীসগুলো এমনভাবে মুখস্থ শোনালেন যে, পূর্বের শোনানোর সাথে এর কোন পার্থক্য হয়নি। -কিতাবুল কুনা-ইমাম বুখারী, পৃ: ৩৩

২. হাদীসের শিক্ষা দানঃ

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে হাদীস সংরক্ষণে সাহাবায়ে কেরামের হাদীস শিক্ষাদানের ধারাবাহিকতা বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করেছিল। কুরআন-হাদীসের শিক্ষাদানের জন্য সাহাবায়ে কেরাম নিজ নিজ এলাকায় শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশাতেই মদীনা শরীফে নয়টি মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাতে যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামায়াতের সাথে পড়া হতো, তেমনি প্রত্যেকটিতে দ্বীনে ইসলাম শিক্ষাদানেরও ব্যবস্থা ছিল। -উলূমুল হাদীস ওয়া মুসতালাহুহু, পৃ: ১৭

তদুপরি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে দ্বীনের প্রতিটি কথা শিক্ষা দিতেন এবং তাঁকে দেখে দেখে শিক্ষা গ্রহণের জন্য সাহাবীগণকে আদেশ করতেন। সাহাবী হযরত ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন, '‘রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নামাযের ‘তাশাহুদ’ শিক্ষা দিতেন যেভাবে কুরআনের কোন সূরা শিক্ষা দিতেন'। -সহীহ মুসলিম

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে হাতে-কলমে সকল কিছু শিক্ষা দিতেন। প্রয়োজনীয় কোন ছোট-খাট জিনিসের শিক্ষাদান থেকে তিনি পিছিয়ে থাকতেন না। উদাহরণস্বরূপ ইস্তিঞ্জা করার নিয়ম পদ্ধতির কথা বলা যায়। ফলে শত্রুদের কেউ কেউ উপহাস করে একবার প্রসিদ্ধ সাহাবী সালমান ফারসী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে বলেছিলেন : ‘তোমাদের নবী তোমাদেরকে সব কিছু শিক্ষা দেন এমনকি পেশাব-পায়খানা করার পদ্ধতিও। -তিরমিযী

হযরত সালমান ফারসী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু তখন বিজ্ঞচিত ভাষায় উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, হ্যাঁ, আমাদের নবী আমাদেরকে সকল কিছুরই ‘আদর্শ’ শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এ ঘটনা থেকে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিক্ষাদান কাজের ব্যাপকতা অনুমান করা যায়। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিক্ষাদান ও তত্ত্বাবধান এবং সাহাবায়ে কেরামের একনিষ্ঠতার ফল দাঁড়াল যে, সাহাবীগণের আমলী জীবন ও নবুয়্যাতী শিক্ষা ও আদর্শের শুধু ‘জীবন্ত কপি’ তাই নয় বরং সাহাবীগণ সেই শিক্ষার এমন কপি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন যা নিখুঁত, ত্রুটিমুক্ত ও যাচাইকৃত। বলাবাহুল্য কোন জীবনাদর্শকে সংরক্ষণ করার জন্য এ অপেক্ষা উচ্চতর আর কোন পদ্ধতি চিন্তা করা যায় না। রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের পর সাহাবাদের এ উদ্যমী কাফেলা হাদীস শিক্ষাদান কার্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং সমগ্র আরব ভূমিকে হাদীসের জ্ঞানে উদ্ভাসিত করে দেন।

৩. হাদীস মোতাবেক আমলঃ

রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুগে তাঁর হাদীসসমূহ সংরক্ষণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া ছিল সাহাবায়ে কেরাম কর্তৃক হাদীসের বাস্তব অনুসরণ তথা সে অনুযায়ী আমল করে তাঁরা হাদীসে রাসূলকে সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবন্ত রেখেছেন। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন আক্বীদা ও তত্ত্বমূলক কথা বলতেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম তা মুখস্থ করে মন-মগজে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে নিতেন এবং সে অনুসারে স্বীয় আক্বীদা ও বিশ্বাস গড়ে তুলতেন। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যাবতীয় আদেশ-নিষেধ সাহাবায়ে কেরাম নিজেদের নৈমিত্তিক অভ্যাসে পরিণত না করা পর্যন্ত চর্চা ও অভ্যাস করতে সর্বোতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন: ‘‘আমাদের কেউ যখন ১০টি আয়াত শিক্ষা লাভ করতো তখন এর অর্থ ভালরূপে হৃদয়ঙ্গম ও তদনুযায়ী আমল করার পূর্বে সে অন্য কিছু শেখার জন্যে অগ্রসর হতো না। -জামিউ বায়ানিল ইলুম

মূলত রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যাবতীয় ইবাদত, মোয়ামালাত, কথাবার্তা, লেবাস-পোশাক, পানাহার, উঠা-বসা, নিদ্রা-জাগরণ এমন কোন বিষয় নেই, যে বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম তাঁর পূর্ণ অনুকরণ ও অনুসরণের চেষ্টা করেননি। সাহাবায়ে কেরামের এরূপ নিরবচ্ছিন্ন অনুসরণের মাধ্যমেই রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি কথা, কাজ ও মৌন সম্মতি কিংবা অনুমোদন এবং যাবতীয় কর্মকাণ্ডের বিবরণসমূহ চিরদিনের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে।

৪. হাদীস লিপিবদ্ধ করণঃ

রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় অনেক সাহাবী লিখিতভাবে হাদীস সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। তবে ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে হাদীস লিপিবদ্ধ করার ব্যাপারে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা ছিল। এ প্রসঙ্গে হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণিত হাদীসে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

‘‘তোমরা আমার হাদীস লিখবে না। আর যে ব্যক্তি আমার পক্ষ থেকে কুরআন ছাড়া অন্য কিছু লিখে থাকে সে যেন তা মুছে ফেলে।’’ -সহীহ মুসলিম, খ. ২য়, পৃ: ৪১৪

হাদীস লিখনে এ নিষেধাজ্ঞা ছিল মদীনায় হিজরতের পূর্বে মক্কায়। এসময় কোনো কোনো সাহাবী রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখ থেকে যা শুনতেন তা একই জায়গায় লিখে রাখতেন। তাতে কুরআন ও হাদীস সংমিশ্রিত হয়ে যাওয়ার আশংকা ছিল প্রবল। তদুপরি তখনও তাঁরা কুরআনের ভাব-গাম্ভীর্য তথা ভাষা- শৈলী আত্মস্থ করতে সক্ষম হননি। এমতাবস্থায় কুরআনের পাশাপাশি হাদীস লিপিবদ্ধ করা ছিল যুগপৎ কষ্ট কর ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই সময় হাদীস লিপিবদ্ধ করতে নিষেধ করেন। তারপর যাদেরকে তিনি লিখন কার্যে পারদর্শী দেখেছেন কিংবা যারা কুরআন ও হাদীসকে যথার্থ উপায়ে লেখার যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন তাঁদেরকে লেখার অনুমতি দিয়ে দেন। সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন, আমি প্রিয় নবীর সব হাদীসই লিখে রাখতাম। একবার আমাকে লোকেরা নিষেধ করে বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক কথা মানবীয় ক্রোধ ও অসন্তুষ্টি নিয়েও বলে থাকেন অথচ তুমি কিনা তার সব হাদীসই লিখে ফেলছ? কথাটি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানানো হলে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমর! তুমি নির্দ্বিধায় সব কিছু লিখতে পার। কারণ আল্লাহর শপথ! আমার এমুখ থেকে প্রকৃত সত্য ছাড়া অন্য কিছুই বের হয় না। (আবু দাউদ) মক্কা থেকে মদীনায় পৌঁছার পর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাদীস সমূহ লিখিতভাবে সংরক্ষণের সরাসরি নির্দেশ দিয়ে বলেন; ‘‘তোমরা ইলমকে লিখনীর মাধ্যমে সংরক্ষণ কর।’’ -মুস্তাদরাক, খ: ১, পৃ: ১০৬

তাছাড়া মদীনার সনদ, সাদাকাতের নেসাব, বিভিন্ন গোত্রের উদ্দেশ্যে প্রেরিত ফরমান ইত্যাদির সবই রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি উদ্যোগে লিখিত বিষয় ছিল। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস লিপিবদ্ধ করার অনুমতি প্রদান করার পর অনেক সাহাবী নিজস্ব নিয়মে ও নিজেদের পছন্দমতে হাদীস লিপিবদ্ধ করে গ্রন্থাকারে সাজিয়ে রাখেন। যদিও এগুলিতে গ্রন্থের রূপ-বৈশিষ্ট্য পরিপূর্ণ বিদ্যমান ছিল না। সাহাবাদের লিখিত সে সব প্রাচীনকালীন লিখিত সম্পদ আজো বিশ্বের বিভিন্ন মিউজিয়ামে বিদ্যমান।

সাহাবায়ে কেরাম সংকলিত কতিপয় হাদীস গ্রন্থঃ

সাহাবায়ে কেরামগণের কেউ কেউ হাদিস সংকলন করেছেন। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-

১. আস সহীফাতুস সাদিকাঃ

সাহাবী যুগে সংকলিত সর্বাধিক সংখ্যক হাদীসের গ্রন্থ। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এ সংকলন তৈরি করেন।

২. সহীফাতু আলী

এর রচনাকারী ছিলেন স্বয়ং হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু। এটিকে ভাঁজ করে তিনি নিজ তলোয়ারের খাপের মধ্যে সযত্নে রেখে দেন।

৩. কিতাবুস সাদাকাহ:

এ গ্রন্থটি স্বয়ং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের তত্ত্বাবধানে ওফাতের মাত্র কয়েকদিন পূর্বে লিখিয়ে ছিলেন। এগ্রন্থে যাকাত, সাদাকাত, উশর ইত্যাদি সম্পর্কীয় নির্দেশ ছিল।

৪. সহীফাতু আমর ইবন হাযম :

গ্রন্থটি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় তাঁরই আদেশক্রমে হযরত উবাই ইবন কা’ব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু লিপিবদ্ধ করেুন। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশম হিজরীতে হযরত আমর ইবনে হাযমকে রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু নাজরানের শাসনকর্তা হিসেবে প্রেরণ করার সময় এ হাদীস গ্রন্থ তার নিকট প্রদান করেন। এতে পবিত্রতা, নামায, যাকাত, হজ্ব, উমরা, জিহাদ ও গণীমত ইত্যাদি বিষয়ে অনেক হাদীস সন্নিবেশিত ছিল।

৫. সহীফাতু ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু

৬. সহীফাতু জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু

৭. সহীফাতু আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু

৮. সুহুফু (অনেক গ্রন্থ) আনস ইবনে মালিক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।

৯. মুসনাদু আবী হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু

১০. সহীফাতু সাদ ইবন উবাদা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু উল্লেখযোগ্য।

খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে হাদীস সংকলন :

এমনিভাবে খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগেও হাদীস সংকলন করা হয়েছে। যেমন-

ক. হযরত আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু:

হযরত আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু নিজে পাঁচ শত হাদীসের একটি সংকলন প্রস্তুত করেছিলেন, তবে শেষ জীবনে তিনি নিজেই তা নষ্ট করে ফেলেন। এর কারণ হিসেবে মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকগণ দু’টি বিষয় উল্লেখ করেছেন-

১. তিনি বিশেষভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন যে, তাঁর সংকলিত হাদীসে একটি শব্দও যদি রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূল বাণীর বিন্দু মাত্র বিপরীত হয়ে পড়ে তবে রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্কবাণী অনুযায়ী তাঁকে জাহান্নামের ইন্ধন হতে হবে।

২. তাঁর মনে এ ভয়ও জাগ্রত হয় যে, তাঁর সংকলিত হাদীস গ্রন্থকে মুসলিম জনগণ যদি কুরআনের সমতুল্য মর্যাদা দিয়ে বসে বা অন্য সাহাবীগণের বর্ণিত হাদীস অপেক্ষা অধিক মর্যাদা দিতে শুরু করে, তাহলে ইসলামের বিশেষ ক্ষতি হবে।

খ. হযরত ওমর ফারুক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু:

তিনি অনেক হাদীস সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করে ইসলামী রাজ্যের বিভিন্ন শাসকের নিকট প্রেরণ করেছিলেন এবং সর্বসাধারণ্যে সে সবের ব্যাপক প্রচার করার নির্দেশও দিয়েছিলেন। ইলমে হাদীসের শিক্ষা ব্যাপকতর করার জন্যে তিনি বিভিন্ন অঞ্চলে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠা করেন। হযরত ওমর ফারুক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এর সময়ই বিচ্ছিন্ন থাকা হাদীস সম্পদ সংকলন করার প্রশ্ন প্রথম উত্থাপিত হয়। ওমর ফারুক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এবিষয়ে অন্যান্য সাহাবীর সাথে পরামর্শ করেন। মুসলমানরা তাঁর অনুকূলেই পরামর্শ দেন। কিন্তু শেষে তিনি একদিন বললেন-আমি তোমাদের হাদীস লিপিবদ্ধ ও সংকলিত করার কথা বলেছিলাম একথা তোমরা জান। কিন্তু পরে মনে হল তোমাদের পূর্বের আহলে কিতাবরাও এমনিভাবে নবীর কথা সংকলিত করে কিতাব রচনা করেছিল এবং আল্লাহর কিতাব পরিত্যাগ করেছিল। আল্লাহর শপথ, আমি আল্লাহর কিতাবের সাথে কোন কিছুই মিশাবোনা। অত:পর তিনি হাদীস সংকলিত করার সংকল্প ত্যাগ করেন। বস্তুত: সুসংবদ্ধ ও সংকলিত হাদীস গ্রন্থ পেয়ে লোকেরা হয়তো কুরআন থেকে তাকে বেশি গুরুত্ব দিবে এবং কেবল হাদীস অনুযায়ী চলতে শুরু করবে, শুধুমাত্র এভয়েই ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হাদীস সংকলনের সংকল্প পরিত্যাগ করেন। তিনি এটাকে যে নাজায়েয মনে করতেন না, তা তাঁর পূর্বোল্লিখিত কার্যকলাপ থেকে সহজেই অনুমেয়।

গ. হযরত ওসমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু:

হযরত ওসমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু খুবই কমসংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেছেন। কেন না তিনি ভুল হওয়ার আশংকায় হাদীস বর্ণনা করা থেকে এক প্রকার বিরত ছিলেন বলা চলে। এ বিষয়ে তাঁর নিজের বক্তব্য হচ্ছে: ‘রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের মধ্যে আমি কম হাদীস জানি, এটি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস বর্ণনা থেকে আমার বিরত থাকার কারণ নয়। আসল কারণটি হচ্ছে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি নিজেই রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, আমি যা বলিনি যদি কেউ তা আমার কথা হিসেবে বর্ণনা করে তবে সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’

তাই হযরত উসমানের রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণনা করা কয়েকটি মাত্র হাদীস পাওয়া যায়।

ঘ. হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু:

যে কয়জন সাহাবী হাদীস লিপিবদ্ধ করেছিলেন হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ছিলেন তাঁদের অন্যতম। তিনি তাঁর লিখিত হাদীস ভাঁজ করে তাঁর তলোয়ারের খাপে রেখে দিয়েছিলেন। -বুখারী, মুসনাদে আহমদ

অবশ্য সাহাবায়ে কেরামের এ সংগ্রহ ও সংকলন ছিল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে। তবে সামগ্রিকভাবে হাদীস সংকলন হয়েছিল পঞ্চম খলিফা খ্যাত হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীযের শাসনামলে।

হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের শাসনামলে হাদীস সংকলন :

প্রখ্যাত তাবেয়ী হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ (জন্ম ৬১ হি:, মৃত্যু ১০১ হিজরি), ৯৯ হিজরী সনে খলিফা নির্বাচিত হন। তাঁর খিলাফতের মেয়াদ ছিল দুই বছর পাঁচ মাস। ঈমান, তাকওয়া ও যোগ্যতার কারণে তিনি ইসলামের পঞ্চম খলিফা হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন যে ইসলামী জীবন যাপন ও খিলাফত পরিচালনার জন্যে হাদীস এক অপরিহার্য সম্পদ। সাহাবায়ে কেরামের প্রায় সকলে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। অধিকাংশ তাবেয়ীও দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। যারা বেঁচে আছেন তারাও আর বেশি দিন থাকবেন বলে মনে হয় না। অতএব, অনতিবিলম্বে এই মহান সম্পদ সংগ্রহ ও সংকলন একান্ত দরকার। এটি ভেবেই তিনি ইসলামী রাজ্যেও বিভিন্ন কেন্দ্রে নিম্নোক্ত ফরমান লিখে পাঠান-‘রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসের প্রতি দৃষ্টি দাও। তা সংগ্রহ- সংকলন কর।’’

মদীনার শাসনকর্তা ও বিচারপতি আবু বকর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হাযমকেও তিনি নিম্নোক্তভাবে ফরমান লিখে পাঠান- ‘রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাদীস বা তাঁর সুন্নাত অথবা হযরত ওমরের বাণী কিংবা অনুরূপ যা কিছু পাওয়া যায় তার প্রতি দৃষ্টি দাও এবং আমার জন্যে লিখে নাও। কেননা আমি ইলমে হাদীসের ধারক-বাহকদের অন্তর্ধান ও হাদীস সম্পদের বিলুপ্তির আশংকা করছি।’ (বুখারী-কিতাবুল ইলম)

ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ তাবেয়ী ইমাম জুহরীকে বিশেষভাবে হাদীস সংকলনের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের ফরমান জারি করার পর বেশি দিন জীবিত ছিলেন না (মৃত্যু: ১০১ হিজরি) কিন্তু তাঁর ফরমানের ফলে হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের যে প্রবাহ শুরু হয়েছিল তা পরের কয়েকশ বছর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। তাবেয়ীগণ বিভিন্ন শহরে উপস্থিত থাকা সাহাবী বা তাবেয়ীদের নিকট থেকে হাদীস সংগ্রহের জন্যে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করতেন। হিজরী ২য় শতকের শুরু থেকে কনিষ্ঠ তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীনদের এক বিশাল কাফেলা সাহাবা ও প্রবীণ তাবেয়ীদের লিখিত হাদীসগুলো ব্যাপকভাবে একত্রিত করতে থাকেন। খলিফা ওমর বিন আব্দুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সরকারী ফরমান এব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হিজরী প্রথম শতকে হাদীস সংকলন :

খলিফা ওমর ইবনে আব্দুল আযীযের আদেশক্রমে ইমাম শাবী, ইমাম যুহরী, ইমাম মাকহুল দামেশকী ও কাযী আবু বকর ইবনে হাযম রহমাতুল্লাহি আলাইহিসহ প্রমুখ হাদীস সংকলনে মনোনিবেশ করেন। এ শতকে হাদীস সংকলনের কাজ সামান্য হলেও এরই ফলে যে হাদীস গ্রন্থকারে সংকলনের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছিল তা অনস্বীকার্য।

হিজরী দ্বিতীয় শতকে হাদীস সংকলন :

হিজরী দ্বিতীয় শতকের প্রথম থেকেই হাদীস সংকলনের কাজ শুরু হয়। তবে এ শতকের মাঝামাঝি সময়ে একাজ নিয়মিতভাবে চলতে থাকে। এযুগে সংকলিত গ্রন্থগুলো হলো:

১. কিতাবুল আছার-ইমাম আবু হানিফা,
২. মুয়াত্তা-ইমাম মালেক
৩. আলজামে-সুফিয়ান সাওরী
৪. কিতাবুস সুনান-ইমাম মাকহুল
৫. কিতাবুস সুনান-আবু আমর আওযায়ী।
৬. কিতাবুস সুনান-আবু সাঈদ ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া।
৭. কিতাবুল মাগাযী- আবু বক্র ইবনে হাযম।
৮. কিতাবুস সুনান, কিতাবুযযুহ্দ, কিতাবুল মানাকিব-যায়েদ ইবনে কুদামা।
৯. ইমাম শাবী একই বিষয়ের হাদীস একই স্থানে একত্রিত করে একখানি গ্রন্থে রূপ দিয়ে ছিলেন বটে, কিন্তু তা মাত্র কয়েকটি অধ্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল। এর বেশি তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি।

হিজরী তৃতীয় শতকে হাদীস সংকলন :

হিজরী তৃতীয় শতকে মুসলিম জাহানে যাঁরা হাদীস শিক্ষাদান ও গ্রন্থ প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন তাঁরা হলেন, আলী ইবনুল মাদিনী, ইয়াহইয়া ইবনে মুয়ীন, আবু জুযয়া রাযী, আবু হাতেম রাযী, মুহাম্মদ ইবনে জারীর তাবারী, ইবনে খোযায়মা, ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহে, মুহাম্মদ ইবনে সাদ ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল প্রমুখ। এসময় ‘মুসনাদ’ নামক গ্রন্থ সংকলন করা হয়। এ শতকের শেষ দিকে প্রসিদ্ধ ‘সিহাহ সিত্তাহ’ও সংকলন করা হয় এবং একে হাদীস সংকলনের সোনালী যুগ বলা হয়। হাদীসের এ গ্রন্থসমূহ সংকলিত হওয়ার পর হাদীস সংরক্ষণ ও প্রচারের প্রথম ও দ্বিতীয় যুগের ধারা পরিবর্তন হয়ে যায়। অর্থাৎ মুখস্থ করার মাধ্যমে সংরক্ষণ এবং বক্তব্যের মাধ্যমে প্রচারের ধারা পরিবর্তন হয়ে পুস্তক বা গ্রন্থ আকারে সংরক্ষণ ও পুস্তক পাঠের মাধ্যমে প্রচারের ধারা শুরু হয়ে যায় এবং তা দ্রুত গতিতে প্রসিদ্ধি ও জনপ্রিয়তা লাভ করে।

হিজরী ৫ম শতক থেকে বর্তমান কাল :

এ সুদীর্ঘ সময়ে হাদীস সংরক্ষণ, সংকলন ও প্রচারে যে কাজ হয়েছে তার সারসংক্ষেপ হলো:

১. হাদীসের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থসমূহের ভাষ্যগ্রন্থ, টীকা ও অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ গ্রন্থ রচিত হওয়া।
২. হাদীস শাস্ত্রের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা নিয়ে অসংখ্য গ্রন্থ এবং এসব গ্রন্থের ব্যাখ্যা ও সারসংক্ষেপ রচিত হওয়া।
৩. বিশেষজ্ঞ আলেমগণ কর্তৃক তৃতীয় যুগের গ্রন্থাবলী থেকে নিজেদের আগ্রহ বা প্রয়োজনে হাদীস চয়ন করে গ্রন্থ প্রণয়ন করা। এধরনের কয়েকটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ হচ্ছে:

ক. মিশকাতুল মাসাবীহ-সংকলক: ওয়ালী উদ্দিন খতীব তাবরীযী।
খ. বিয়াদুস-সালিহীন-ইমাম আবু যাকারিয়া শরফুদ্দিন নববী।
গ. মুলতাকাল আখবার-
ঘ. মাসাবীহুস সুন্নাহ ইত্যাদি।

কম্পিউটার আবিষ্কার হওয়ার পর কম্পিউটার ডিস্কের মাধ্যমে হাদীস সংরক্ষণ ও ওয়েব সাইটের মাধ্যমে হাদীস প্রচারের কাজ শুরু হয়েছে এবং বর্তমানে তা দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

অতএব বিভ্রান্তি নয় চাই হাদিস সংকলনের ইতিহাস সংক্রান্ত সঠিক জ্ঞানঃ

অতএব, রাসূল প্রেমিক জ্ঞান সাধকদের নিরন্তর সাধনা ও অধ্যাবসায়ের বদৌলতে সংকলিত হয়েছে রাসূলের অমূল্য হাদীস ভান্ডার। আধুনিক বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার এ যুগে হাদীস সংরক্ষণ ও প্রচার-প্রসারে ভবিষ্যতে উদ্ভাবিত হবে অসংখ্য অত্যাধুনিক পন্থা। তবে পাশাপাশি চালু রাখতে হবে হাদীসের বাস্তব অনুসরণের সনাতন ধারা। আল্লাহ পাক আমাদের হাদিস সংকলনের সঠিক ইতিহাস জানার মত সামান্যতম জ্ঞানটুকু দান করুন।

পরিশেষে আসুন, সমাজে ফিতনা ফাসাদ সৃষ্টি করার পথ থেকে আমরা নিজেদের সযত্নে নিবৃত্ত রাখি। নিজের ধর্ম সাধ্যানুসারে অনুসরণ করি। অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। অন্যের ধর্মের প্রতি এইজাতীয় অবমাননাকর কথাবার্তার প্রচার প্রচারণা থেকে সতর্কতার সাথে দূরত্ব বজায় রাখি।

অবুঝ(!) মুসলিম জাতির প্রতি ভদ্রলোকের উথলে ওঠা দরদ দেখে আশ্চর্য না হয়ে উপায় থাকে নাঃ

এই যুগে নিজের খেয়ে পরের উপকার করতে কে যায়? ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে কে যায়, বলুন! এমন ক'জনই বা পাওয়া যাবে এই সমাজ সংসারে? কিন্তু যার পোস্টের প্রেক্ষিতে এই লেখা তিনি কিন্তু উদারতায় অতুলনীয় এবং অসামান্য। বিশেষ করে মুসলিমদের প্রতি তার যে কি দরদ, কি যে টান, কি যে মমতা, আহ! ভাবতেই গা হিম হয়ে আসে! ঐ যে নিজের পেটের বাচ্চাকে হাটতে দিয়ে সতীনের ছেলেকে সারা দিন কোলে কাঁখে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো অতি মহতী নারীর একটি ঘটনা আছে না? সেই ঘটনাটা বারবার মনে পড়ে যায় আর কি! কেউ একজন জিজ্ঞেস করেছিল তাকে, নিজের ছেলেকে হাটিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছো আর সতীনের ছেলেকে কোলে পিঠে এমনভাবে রাখছো, যে মাটিতে তার পা পর্যন্ত পড়তে দিচ্ছ না, তুমি আসলেই অতি মহৎ একজন মহিলা! তোমার মত এত বড় মনের মানুষ আমি জীবনে কোথাও দেখিনি!

মহিলা কী বলেছিলেন, জানেন তো! মহিলা কানে কানে তাকে সাফ জানিয়ে দিলেন, আরে ঐসব মহৎ টহৎ কিচ্ছু না, আমি আমার ছেলেকে হাটা শিখাচ্ছি যাতে সে শক্ত সামর্থ্যবান হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। সে দৌঁড়াবে পড়ে যাবে, আবার দৌঁড়াবে, আবার হোচট খাবে- এভাবে ঘাত প্রতিঘাত খেয়ে বড় হলে তাকে সহজে কেউ টলাতে পারবে না! আর বোঝেনই তো সতীনের জ্বালা, ওর ছেলেকে এমনভাবে কোলে পিঠে করে সারাক্ষণ আগলে রাখছি, ও যাতে দৌঁড় তো দূরের কথা, ঠিকমত হাটতেও না শিখতে পারে! মানুষ যেন তাকে ক'দিন পরে হাটাচলা করতে না পারা পঙ্গুদের পর্যায়ে গণ্য করে নেয়।

তো, ভদ্রলোকের দরদখানাও অনেকটা সেইরকমই! সেই মহিলার মত একই পদ্ধতি অবলম্বন করে তিনি মুসলিম জাতিকে অবুঝ এবং অবোধ সাব্যস্ত করে তাদের অতি দরদি সেজে বসেছেন। হাদিসের কারণে মুসলিম জাহান, মুসলিম জাতি কত প্রকারের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তা মুসলিম জাতির প্রায় দু'শো কোটি মানুষের কেউই বুঝতে সক্ষম হলেন না, কেবলমাত্র তিনি ছাড়া! স্বীকার না করে উপায় নেই, তার জ্ঞান গরিমা আটলান্টিক আর প্রশান্ত মহাসাগরের অথৈ সলিলের গভীরতাকেও হার মানাতে বাধ্য!

হাদিস সংকলনের ইতিহাস সম্পর্কিত নিম্নোক্ত পোস্টগুলো একনজর দেখে আসার অনুরোধ-

হাদিস সংকলনের ইতিহাস, পর্ব-০১

হাদিস সংকলনের ইতিহাস, পর্ব-০২

হাদিস সংকলনের ইতিহাস, পর্ব-০৩

বিশেষ কিছু কথাঃ পৃথিবীতে প্রচলিত সকল ধর্ম এবং সেসব ধর্মের অনুসারীদের প্রতিই আমরা শ্রদ্ধা পোষন করি। বস্তুতঃ মানুষ হিসেবেও ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকেই আমার নিকট সম্মানের পাত্র। কাউকে ব্যক্তি আক্রমন করা কিংবা অসম্মান করার উদ্দেশ্যে এই পোস্ট দেয়া হয়নি, সেই দিক বিবেচনায় রেখেই আমি এখানে কোন ব্লগারের নামোল্লেখ করা হতে বিরত থাকার চেষ্টা করেছি। সঙ্গত কারণে এই পোস্টের কোন কথা কারও কাছে কষ্টদায়ক মনে হলে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এবং এই লেখায় তথ্যগত বা অন্য কোন ভুল পরিদৃশ্য হলে অবহিত করতে অনুরোধ করছি, যাতে তা সংশোধন করে দিতে পারি। বস্তুতঃ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা, তাঁর প্রেরিত পুরুষ প্রিয় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কুরআন হাদিসের বিষয়ে যখন আপত্তিকর কথাবার্তা ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা প্রত্যক্ষ করি, একজন মুসলিম হিসেবে সাধ্যানুসারে তার প্রতিবাদে সরব হওয়াকে ঈমানের দাবি এবং ঈমানি দায়িত্ব মনে করি বলেই এই সামান্য লেখার অবতারণা। আল্লাহ তাআ'লা আমাদের প্রত্যেককে বিভ্রান্তির অন্ধকার থেকে বেঁচে থেকে আলোর পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সময় নিয়ে পোস্টটি পাঠ করায় কৃতজ্ঞতা। সকলের কল্যান কামনায়।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৫৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: আশা করি এই পোস্টে যৌক্তিক তর্ক বিতর্ক হবে। আর এই বিষয়টা ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার বিষয় মোটেই নয়। ব্লগে বিষয়টা নতুন হলেও অনলাইনে এই ইস্যূটা নতুন নয়। আমরা ইন্টারনেট যুগের প্রজন্ম নই। তাই ধর্মকে যেভাবে আমাদের সামনে মুরুব্বীরা উপস্থাপন করেছেন সেভাবে জেনেই বড় হয়েছি।কিন্ত এখন ইন্টারনেটের যুগ। যে কোন তথ্যের জন্য গুগলে সার্চ দিলেই হাজার তথ্য সামনে চলে আসে। তাই প্রশ্ন উঠবেই। আপনি যদি hadis that contradicts quran লিখে গুগলে সার্চ দেন তাহলে দেখবেন প্রচুর আর্টিকেল সামনে চলে আসছে যেগুলো কোরআন ও হাদিস বিষদভাবে গবেষনার ফলাফল।এগুলোকে ফিতনা , ফ্যসাদ বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। এসব নিয়ে বিস্তর আলাপ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই সহি হাদিস এবং জাল হাদিস বিষয়গুলো সামনে এসেছে। ইসলামিক স্কলাররাও আজকাল যে কোন কিছুর ব্যখ্যা কুরআনের আলোকেই দিয়ে থাকেন, হাদিসের আলোকে নয়।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ঢাবিয়ান ভাই,
আন্তরিক কুশল এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন। হাদিস বর্জন করার প্রশ্নটা ছোটখাট কোন বিষয় নয়। হাদিস হচ্ছে ইসলামী শরিয়তের মাসআলা মাসায়েল এবং বিধি বিধান প্রণয়নে দ্বিতীয় প্রধান উৎস। পবিত্র কুরআনের পরেই এর স্থান।

হাদিস বর্জন করলে যে মুসলিম উম্মাহর বিশাল উপকার হয়ে যাবে এই বানোয়াট এবং আজগুবি তত্ত্ব ও তথ্য বিগত প্রায় সাড়ে চৌদ্দ শত বছরের ইতিহাসে কিংবা বর্তমান সময়ের মুসলিম উম্মাহর শত বা হাজারও মনিষীর কেউই বুঝতে সক্ষম হলেন না, বুঝে ফেললেন একমাত্র আমাদের সামুর বিখ্যাত একজন ব্যক্তি- বিষয়টি দেখে মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক, ডালমে কুচ কালা হ্যায়।

জাল হাদিস নিয়ে কথা বলার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। জাল হাদিস বর্জন করার জন্য সচেতনতা সৃষ্টিরও প্রয়োজন রয়েছে। হাদিসের নামে মিথ্যা কথাবার্তা ছড়িয়ে দিয়ে কেউ যাতে ফায়দা লুটতে না পারেন, সেই প্রচেষ্টাও জোরদার করতে সকলের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি। তবে জাল হাদিসের এই বিষয়টি ইদানিংকালে আবিষ্কৃত কোন বিষয় মোটেই নয়। হাদিস সংকলনের প্রাক্কালে সিহাহ সিত্তাহর প্রখ্যাত ইমামগণসহ অন্যান্য হাদিস গ্রন্থের সংকলকগণের সামনেও প্রচুর পরিমানে জাল হাদিস এসেছে। তারা সেগুলো শনাক্ত করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে যাচাই বাছাই শেষে জাল হাদিসগুলোকে আলাদা করে বাদ দিয়েছেন এবং স্ব স্ব গ্রন্থসমূহে কেবল সহিহ ও নির্ভরযোগ্য হাদিসসমূহ সংকলন করতেই সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। হাদিসের ইমামগণ হাদিস সংকলনের ক্ষেত্রে হাদিসের সঠিকতা যাচাইয়ে কতটা সতর্কতা অবলম্বন করেছেন তার প্রমান এই সংক্রান্ত গ্রন্থগুলো পড়লেই জানা যায়।

আর হাদিসের আলোকে না দিয়ে যে কোন কিছুর ব্যাখ্যা আজকাল কুরআনের আলোকে দেয়ার অর্থটা ঠিক বুঝতে পারছি না। হাদিসের নির্দেশনা বা সুন্নাহর অনুসরণ ব্যতিরেকে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করার পুরোপুরি নির্দেশনা কোন স্কলার কুরআনের আলোকে প্রদান করতে পারবেন বলে আপনি মনে করেন?

ইসলামী শরিয়তের মাসআলা মাসায়েল এবং বিধি বিধান প্রণয়নে ইসলাম ধর্মের সূচনাকাল হতে চলে আসা পথ ও পদ্ধতি হিসেবে কুরআন, হাদিস, ইজমা এবং কিয়াস - এই চারটি উৎস থেকে কোন একটিকে বাদ দেয়ার প্রচেষ্টাকে সমর্থনযোগ্য মনে করার উপায় নেই। সেই প্রচেষ্টা যদি কেউ করে থাকেন তাহলে তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন এসেই যায়।

অনেক ভালো থাকার প্রার্থনা। শুভকামনা, ভাই।

২| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:০১

মোগল বলেছেন: সামুর নাস্তিকরা সব পাতি নাস্তিক। কচুর পাতার পানির মত দুর্বল যুক্তি নিয়ে এরা আরগুমেন্ট করতে আসে এবং যথারীতি ধরা খায়।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:১৮

নতুন নকিব বলেছেন:



সামুতে ইদানিং নাস্তিক ভাইদের সাথে দেখা সাক্ষাত তেমন হয় না বললেই চলে। হাতে গোণা যে দু'একজনকে কেউ কেউ নাস্তিক মনে করে থাকেন, আমার ধারণা, তারা আসলে নাস্তিক নন। কোন না কোন ধর্মের তারাও হয়তো অনুসারী। আর তারা সাধারণতঃ সূক্ষ্ম কৌশলে শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের অনুসারীদেরকেই হয়তো একটু আধটু খোঁচা দেয়ার চেষ্টা করে থাকেন।

এরা মূলতঃ লোক ভালো। কারণ, এদের কারণে আমাদের সজাগ হওয়ার একটি সুযোগ আমরা লাভ করতে পারি। আমাদের ভুল ভ্রান্তিগুলোও তারা তুলে ধরে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন। এর জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব নয় কি? তবে কথা হচ্ছে, শুধু একটি ধর্মকেই এরা টার্গেট করে তাদের কাজ চালিয়ে থাকেন। বাদবাকি কোন ধর্মের বিষয়ে এদের তেমন কোন বক্তব্য চোখে পড়ে না।

সামুতে আপনার পদচারণা শুভ হোক।

শুভকামনা।

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:০৫

মোগল বলেছেন: কুকুরের লেজ যেমন সোজা হয় না, সামুর ক্রম নিম্নমান হতে থাকা পাতি নাস্তিকরাও তেমনি হতাশ হয় না। মগজ কম থাকার কারণে এই রিটার্ডেড পাতি নাস্তিকরা পুঃন পুনঃ ধরা খাওয়ার পরও ঘুরে ঘুরে ছাগলের বাচ্চার মত গুতাগুতি করতেই থাকে।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



তাদের জন্য শুভকামনা এবং কল্যানের পথপ্রাপ্তির প্রার্থনা।

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:৫৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: নাস্তিকতার সাথে এই বিষয়টি গুলিয়ে ফেলাটা একেবারেই অনুচিত। আপনারা যদি মনে করেন যে হাদিস এর বিষয়ে কোন প্রশ্নই তোলা যাবে না তাহলে সেটা ভুল। একজন ইসলামিক স্কলারের লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন।

AbdulQadir Salati ( Studied Tafseer Ul QuranGraduated 2020)
·
Can Hadiths be falsified or corrupted by men? Can Muslims question the authenticity of a Hadith, or criticize it, or make reforms to it?
Original Question: “Can Hadiths be falsified or corrupted by men? Can Muslims question the authenticity of a Hadith, or criticize it, or make reforms to it?”

Answer:

One of the unique differences of the Qur’an and the Hadith is that the Hadiths were not protected from alteration and distortion. That is to say, the Hadith can be falsified and corrupted by men unlike the Qur’an.

In view of that, for the fact that the Hadith is considered one of the primary sources of the Islamic laws and an indispensable source for the proper understanding of Islam, it is expected of every Muslim to scrutinize every Hadith in order to establish its authenticity. Meanwhile, conformity with the Qur’an, sound intellect and the historical evidences are some of the yardsticks for the scrutinizing of any Hadith. In another word, if the Hadith conforms with the clear Quranic verses, the intellect and the reliable historical reports, the Hadith will be accepted and considered authentic, otherwise, it shall be rejected and thrown unto the wall.

Thus, for the sake of guidance, there is no problem questioning the authenticity of a Hadith but we lack the authority of making any reformation in the Hadith. Instead, if one cannot get any acceptable interpretation for the Hadith, it is better to drop it.
( Click This Link)

১১ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৫৯

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ ভাই। চমৎকার একটি প্রশ্ন ও উত্তর উপস্থাপন করেছেন।

আসলে কেউ যদি জাল হাদিসের বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন আমরা তার সমর্থন অবশ্যই করবো এবং জাল হাদিস নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ অবশ্যই থাকা উচিত বলে মনে করি। শুধু কথা বলা বা প্রশ্ন তোলাই নয়, জাল হাদিস বর্জনে আমাদের প্রত্যেকেরই সচেতন হওয়া উচিত এবং সম্ভব সামগ্রিক প্রচেষ্টাও গ্রহণ করা উচিত।

হাদিসের বিশুদ্ধতা নিয়েও কথা বলা এবং তা যাচাই বাছাই করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। যদি কেউ মনে করে থাকেন যে, হাদিসের বিষয়ে কোন কথাই বলা যাবে না, তার চিন্তা সঠিক নয়। কারণ, কুরআন যেভাবে অবিকল অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষিত হয়ে এসেছে হাদিস সেভাবে সংরক্ষিত হয়নি।

তবে হাদিস সংকলনের সঠিক ইতিহাস উল্লেখ না করে শত শত বছর পরে হাদিস সংকলিত হয়েছে মর্মে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে হাদিস বর্জনের ফায়দা ও উপকারিতা তুলে ধরা আর জাল হাদিস নিয়ে কথা বলা নিশ্চয়ই এক জিনিষ হতে পারে না।

পুনরায় মন্তব্যে আসায় কৃতজ্ঞতা।

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:১১

ঢাবিয়ান বলেছেন: ভাই, আপনার প্রতিউত্তরের সাথে আমিও একমত, ঢালাওভাবে হাদিস বর্জনের পক্ষে থাকাটা অবস্যই অনুচিত। কুরআনের আলোকে ও হিস্টরিকাল প্রমান সাপেক্ষেই হাদিস এর অথেন্টিসিটি নিরুপন করাটা সঠিক বলে মনে করা হয়।

জাল হাদিস নিয়ে কথা বলার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। জাল হাদিস বর্জন করার জন্য সচেতনতা সৃষ্টিরও প্রয়োজন রয়েছে। হাদিসের নামে মিথ্যা কথাবার্তা ছড়িয়ে দিয়ে কেউ যাতে ফায়দা লুটতে না পারেন, সেই প্রচেষ্টাও জোরদার করতে সকলের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি।

আপনার উপড়ের কথাটির সাথে আমি পুরোপুরি একমত। এটা নিয়ে বিস্তর আলোচনার আছে।


আপনাকেও শুভকামনা ।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



কৃতজ্ঞতা ভাই। আপনি জ্ঞানীজন বলেই আপনার বুঝে নিতে কষ্ট হয়নি। এই কারণেই আমার জ্ঞান অতি ক্ষুদ্র হওয়া সত্বেও এবং প্রকাশের ক্ষমতা অতি অপ্রতুল হওয়ার পরেও আপনাকে মূল সমস্যাটা বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। সত্যি ভালো লাগছে।

জ্বি, মূল কথাটা আপনি ধরতে পেরেছেন, ঢালাওভাবে হাদিস বর্জনের জন্য উৎসাহিত করার পেছনের উদ্দেশ্য মুসলিম জাতির উপকার সাধন, না কি ভিন্ন কিছু - বুঝার প্রয়োজন রয়েছে বৈকি।

প্রিয় মানুষেরা যেখানেই থাকুন, সবসময় কল্যানের ভেতরে থাকুন, সেই কামনাই করি।

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:৫৯

তানভির জুমার বলেছেন: ঢাবিয়ান বলেছেন: ইসলামিক স্কলাররাও আজকাল যে কোন কিছুর ব্যখ্যা কুরআনের আলোকেই দিয়ে থাকেন, হাদিসের আলোকে নয়।

কি একটা ভয়ংকর মিথ্যা কথা ইসলামিক স্কলারদের নামে চালিয়ে দিলেন জানেন?। যে বিযয়গুলো কোরআনে পরিস্কারভাবে উল্লেখ আছে ঐ বিষয়গুলোতে হাদিসের প্রয়োজন হয় না। অনেক ফরজ, ওয়াজিব বিধান আছে যেগুলো হাদিস দিয়ে আরোপিত করা হয়েছে কোরআন দিয়ে নয়। যে সব ফরজ, ওয়াজিব বিধান শুধুমাত্র হাদিস দিয়ে আরোপিত করা হয়েছে এইগুলো কি অস্বীকার করবেন?

১) হাদিস বাদ দিলে কোরআন কে নিজেদের ইচ্ছামত ব্যাখ্যা করতে পারবেন।
২) ইসলাম ধর্মে অনেক মতবাদ, দল থাকার অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে কোরআন এবং হাদিস কে নিজেদের মত করে ব্যাখা করা। ৩) কোরআন কে আপনার বুঝতে হবে রাসূল (সা) হাদিস অনুযায়ী, সাহাবী, তাবেইদের বুঝ এবং আমল অনুযায়ী। আপনার নিজের মত করে বুঝলে বা ব্যাখা করলে হবে না।
৪) আবার কিছু জ্ঞানপাপী বলে কোরআনের সাথে সামঞ্জস্য হাদিস গুলো মানবো বাকিগুলো মানবো না। এরা হচ্ছে সুবিধাবাদী। মনে রাখতে হবে হাদিস হচ্ছে কোরআনের ব্যাখ্যা।
৫) হাজার বছর পূর্বে হাদিস সংরক্ষন করার সময়ই বের করা হয়ছে কোনটা জাল হাদিস কোনটা আর সহি হাদিস।

৬) হাদিস অস্বীকার বা প্রশ্নবিদ্ধ করে কারা? ১) যাদের কোরআন, হাদিস, ইসলামী ফিকহ্ জ্ঞান একেবারেই কম বা নেই। ২) ফুল বা হাফ নাস্তিক ৩) যারা ইসলাম ধর্মকে যোগউপযোগী বা আধুনিক বানাতে চায়।

১২ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



১) হাদিস বাদ দিলে কোরআন কে নিজেদের ইচ্ছামত ব্যাখ্যা করতে পারবেন।
২) ইসলাম ধর্মে অনেক মতবাদ, দল থাকার অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে কোরআন এবং হাদিস কে নিজেদের মত করে ব্যাখা করা।
৩) কোরআন কে আপনার বুঝতে হবে রাসূল (সা) হাদিস অনুযায়ী, সাহাবী, তাবেইদের বুঝ এবং আমল অনুযায়ী। আপনার নিজের মত করে বুঝলে বা ব্যাখা করলে হবে না।
৪) আবার কিছু জ্ঞানপাপী বলে কোরআনের সাথে সামঞ্জস্য হাদিস গুলো মানবো বাকিগুলো মানবো না। এরা হচ্ছে সুবিধাবাদী। মনে রাখতে হবে হাদিস হচ্ছে কোরআনের ব্যাখ্যা।
৫) হাজার বছর পূর্বে হাদিস সংরক্ষন করার সময়ই বের করা হয়ছে কোনটা জাল হাদিস কোনটা আর সহি হাদিস।
৬) হাদিস অস্বীকার বা প্রশ্নবিদ্ধ করে কারা? ১) যাদের কোরআন, হাদিস, ইসলামী ফিকহ্ জ্ঞান একেবারেই কম বা নেই। ২) ফুল বা হাফ নাস্তিক ৩) যারা ইসলাম ধর্মকে যোগউপযোগী বা আধুনিক বানাতে চায়।


-গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। আন্তরিক ধন্যবাদ। অত্যন্ত সুকৌশলে ঠান্ডা মাথায় হাদিস বর্জনের আহবান জানানো হচ্ছে। এগুলোকে সাধারণ কোন বিষয় মনে করার কারণ নেই। এরাই ইসলাম ধর্ম এবং মুসলিম জাতির কি না আবার কল্যানকামী! হায়রে ধোকার জগত! জনৈক কবি ধোকাবাজ প্রতারকদের নিয়ে বড় আক্ষেপ করেই বলেছিলেন,

ইয়ে হাল তেরা জাল হ্যায়,
মাকসূদ তেরা মাল হ্যায়,
কেয়া আজব তেরা চাল হ্যায়,
লাখো কো আন্ধা কার দিয়া...।

তোমার বাহ্যিক এসব অবস্থা সব নকল,
উদ্দেশ্য তোমার বিপুল বিত্ত বৈভব ও সম্পদ দখল করে নেয়া,
হায় হায়! কতই না অদ্ভূত এবং আশ্চর্য্য হওয়ার মত কৌশল তোমার!
যে কৌশলের কাছে ধরাশায়ী হয়ে লাখো মানুষ তোমার অন্ধ ভক্তে পরিনত হয়েছে!

শুভকামনাসহ কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:০৩

কামাল৮০ বলেছেন: হাদিস হলো কোরানের ব্যাখ্যা।যেটা নবী স্বয়ং দিয়েছেন।কোরান আপনি আমি ভালো বুঝবনা।কোরান ভালো বুঝবেন নবী।অতবেব হাদিস মানতেই হবে।

১২ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৪৯

নতুন নকিব বলেছেন:


ঠিক বলেছেন। আন্তরিক অভিনন্দন।

শুভকামনা।

৮| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৫৪

ঢাবিয়ান বলেছেন: @ তানভির জুমার, নিজেকে অতি ধার্মিক বা ধর্মীয় বিষয়ে অতি বিজ্ঞ মনে করাটা ভয়ানক। আমার লেখা লাইনটায় কিছুটা ভুল আছে । ইসলামিক স্কলাররা কুরআন এবং ঐতিহাসিক প্রমানপত্র সাপেক্ষে হাদিসের আলোকে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। স্কলারদের বক্তব্যে যুক্তি থাকতে হয়, আপনাদের মত জোড়পুর্বক চাপিয়ে দেয়া বক্তব্য তারা দেন না।

আক্রমনাত্মক না হয়ে বিনয়ী হতে শিখুন। এই ব্লগে দী্র্ঘদিন ধরে ব্লগার নতুন নকিব ধর্মীয় বিষয় নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। আজতক কখনো উনাকে আক্রমনাত্মক কোন বক্তব্য দিতে দেখিনি। আর এটাই ইসলামের শিক্ষা ।

১২ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ঢাবিয়ান ভাই,
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আপনার মনোঃকষ্টের জন্য। আসলে আপনার মতামতগুলো এই পোস্টে সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষণীয়ও বটে। অন্ততঃ আমার জন্য।

কথা কাজে ভুল হওয়া আমাদের খুবই স্বাভাবিক। আর আমি মনে করি, ভুল করার পরে তা স্বীকার করে নিয়ে তা শুধরে নেয়ার মধ্যে কোন গ্লানী নেই, গ্লানী বরং নিজের অহমিকা এবং অতি জ্ঞানী ভাববার অপচেষ্টার ভেতরেই। আপনি ইসলাম ধর্মের উদারতার প্রকৃত শিক্ষাকে ধারণ করার প্রচেষ্টা নিজের ভেতরে লালন করে থাকেন, এটা আপনার প্রশংসনীয় একটি গুণ নিঃসন্দেহে। আর এই উদারতার দৃষ্টিকোণ থেকেই পেছনের মন্তব্যে কথা বলেছিলেন বলেই আমার ধারণা।

তানভির জুমার ভাইয়ের মন্তব্যের প্রথমাংশটি আমিও এড়িয়েই যেতে চেয়েছিলাম এবং এই চিন্তাও করেছিলাম যাতে আপনিও তা না দেখেন! কিন্তু আপনার চোখ যে সূক্ষ্মদর্শী! আপনি হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন যে এই কারণেই তার মন্তব্যের শেষাংশটুকু উদ্ধৃত করে তবেই সেখানে প্রতিমন্তব্যটি করেছি। যা হোক, তার পক্ষ থেকে আমি আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করছি, বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং তার প্রতি সদয় হবেন।

আপনার সর্বাঙ্গীন কল্যান কামনা করছি।

৯| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:৩৯

তানভির জুমার বলেছেন: ঢাবিয়ান বলেছেন: @ তানভির জুমার, নিজেকে অতি ধার্মিক বা ধর্মীয় বিষয়ে অতি বিজ্ঞ মনে করাটা ভয়ানক। আমার লেখা লাইনটায় কিছুটা ভুল আছে । ইসলামিক স্কলাররা কুরআন এবং ঐতিহাসিক প্রমানপত্র সাপেক্ষে হাদিসের আলোকে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। স্কলারদের বক্তব্যে যুক্তি থাকতে হয়, আপনাদের মত জোড়পুর্বক চাপিয়ে দেয়া বক্তব্য তারা দেন না।

আক্রমনাত্মক না হয়ে বিনয়ী হতে শিখুন। এই ব্লগে দী্র্ঘদিন ধরে ব্লগার নতুন নকিব ধর্মীয় বিষয় নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। আজতক কখনো উনাকে আক্রমনাত্মক কোন বক্তব্য দিতে দেখিনি। আর এটাই ইসলামের শিক্ষা

আমি নিজেকে অতি ধার্মিক বা ধর্মীয় বিষয়ে অতি বিজ্ঞ মনে করি না। বিজ্ঞজনদের কাছ থেকে কোরআন-হাদিসের জ্ঞান শিখার চেষ্টা করি।

আমি আপনাকে আক্রমনাত্মক কোন কথা বলিনি বা বলা উচিতও না, আপনার সাথে আমার যত মতবিরোধই থাকুক না কেন। যারা হাদিস কে অস্বীকার করে বা প্রশ্নবিদ্ধ করে তাদের কিছু বৈশিষ্ট বলেছি এবং কেন করে সেটা বলার চেষ্টা করেছি।

অন্য ধর্মের সাথে ইসলামের একটা বড় পার্থক্য হল। ইসলাম ধর্ম ছাড়া বাকি সব ধর্মই সময়ের সাথে সাথে, মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন হয়। ইসলামে ধর্মে ব্যক্তি নিজে পরিবর্তন হয় ইসলামে ঢুকতে হবে, ইসলাম কখনোই তার চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন হবে না। ইসলাম ধর্মের বিধি-বিধান ১৪শ বছর আগে যেমন ছিল এখন তেমনই আছে ভবিষৎ এমনই থাকবে।

১২ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:২৪

নতুন নকিব বলেছেন:



পুনরায় মন্তব্যে এসে সবিস্তারে বিষয়টি ক্লিয়ার করে বক্তব্য রেখে যাওয়ায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। প্রিয় ভাই, কোনভাবেই কাউকে কষ্ট দেয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আপনিও আমার কোন কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।

অনেক অনেক কুশলে থাকার প্রার্থনা এবং আপনার জন্য কল্যানের দোআ সবসময়।

১০| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৫২

বিষাদ সময় বলেছেন: আমি ধর্ম বিশ্বাস করি আবেগ দিয়ে, যুক্তি দিয়ে নয়।
যূক্তি বিচার বিশ্লেষণ এর প্রথম শর্ত হচ্ছে আপনাকে নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করতে হবে, যা করা আপনার পক্ষে হয়তো সম্ভব না।

আমি এরকম কোন পোস্ট আসলে নিরপেক্ষ ভাবে বিশ্লেষণ এর চেস্টা করি।

আপনি এখানে যুক্তির চেয়ে আবেগ দিয়ে বেশি কথা বলেছেন।


এখানে আপনি কিছু জাগায় যুক্তি হিসাবে বুখারী শরীফ থেকে কোট করেছেন। যারা হাদীস মানে না তাদের কাছে বুখারী শরীফ এর কথা কতটুকু গ্রহনযোগ্য?

একজায়গায় আপনি লিখেছেন

সংকলিত হাদীসে একটি শব্দও যদি রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূল বাণীর বিন্দু মাত্র বিপরীত হয়ে পড়ে তবে রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্কবাণী অনুযায়ী তাঁকে জাহান্নামের ইন্ধন হতে

এখন আপনি বলেন হযরত আবু বকর (র) যেখানে হাদীস সংকলনের সাহস পাননি সেখানে তাঁর বহু পরে কোন কোন ব্যক্তির সে সাহস দেখান কতটুকু যূক্তিযুক্ত?

ধন্যবাদ।

১৪ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আমি ধর্ম বিশ্বাস করি আবেগ দিয়ে, যুক্তি দিয়ে নয়।
যূক্তি বিচার বিশ্লেষণ এর প্রথম শর্ত হচ্ছে আপনাকে নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করতে হবে, যা করা আপনার পক্ষে হয়তো সম্ভব না।


-আপনার প্রথম বাক্যে বলা কথাটা ঠিক আছে। যুক্তি দিয়ে কিছু কিছু বিষয় প্রমান করা সম্ভব হলেও সকল কিছু প্রমান করার সুযোগ আসলেই নেই। এই বিষয়ে কুরআনুল কারিমের নির্দেশনা হচ্ছে- وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا অর্থাৎ, তারা (বিশ্বাসীগণ) বলেন, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। -সূরাহ আল বাকারাহ, ২৮৫ নং আয়াতাংশ

আর দ্বিতীয় কথাটাও হয়তো অনেকটা সঠিকই বলেছেন। আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা এবং দৈন্যতা তো বিদিত। অকপটে তা স্বীকার করতে আমার কার্পন্য নেই। আপনাকে ধন্যবাদ সত্য বলার জন্য।

এখানে আপনি কিছু জাগায় যুক্তি হিসাবে বুখারী শরীফ থেকে কোট করেছেন। যারা হাদীস মানে না তাদের কাছে বুখারী শরীফ এর কথা কতটুকু গ্রহনযোগ্য?

একজায়গায় আপনি লিখেছেন

সংকলিত হাদীসে একটি শব্দও যদি রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূল বাণীর বিন্দু মাত্র বিপরীত হয়ে পড়ে তবে রাসূলের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্কবাণী অনুযায়ী তাঁকে জাহান্নামের ইন্ধন হতে

এখন আপনি বলেন হযরত আবু বকর (র) যেখানে হাদীস সংকলনের সাহস পাননি সেখানে তাঁর বহু পরে কোন কোন ব্যক্তির সে সাহস দেখান কতটুকু যূক্তিযুক্ত?


-মনযোগের সাথে এই লেখাটি আপনাকে পুনরায় আদ্যোপান্ত পাঠের অনুরোধ। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ অনুকরণের নির্দেশ স্বয়ং কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআ'লা বিভিন্ন স্থানে প্রদান করেছেন। আর তাকে অনুসরণ অনুকরণ করতে হলে তাঁর হাদিস তথা সুন্নাহ সম্মন্ধে অবগতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি স্পষ্ট। সেই প্রয়োজনটি পূরণের জন্যই দরকার হয়ে পড়ে তাঁর মুখনিঃসৃত বাণী, তাঁর আচার-আচরণসহ তাঁর সামগ্রিক জীবনাচারের সবিস্তার বর্ণনা সমৃদ্ধ প্রামাণ্য তথ্যাবলী, যা কেবলমাত্র হাদিস সম্ভার সংরক্ষণের মাধ্যমেই করা সম্ভব হয়েছিল। সুতরাং, এমন প্রশ্ন এইক্ষেত্রে মূল্যহীন যে, হযরত আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু যেখানে হাদীস সংকলনের সাহস পাননি সেখানে তাঁর বহু পরে কোন কোন ব্যক্তির সে সাহস দেখান কতটুকু যূক্তিযুক্ত? হাদিস লিপিবদ্ধ করতে নিরুৎসাহিত করার এই বিষয়টি শুধু আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু একাই করেছেন, বিষয়টি এমন নয়, স্বয়ং রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং হাদিস লিপিবদ্ধ করতে একটা সময়ে তিনি তাদের কাউকে কাউকে বিরত থাকতে নিরুৎসাহিত করতেন। যার ফলে শীর্ষস্থানীয় অন্যান্য সাহাবায়ে কেরামগণের কেউ কেউও এই বিষয়ে সতর্কতামূলক অবস্থান গ্রহণ করতেন এবং হাদিস লিপিবদ্ধ করতে অন্যদের নিরুৎসাহিত করেছেন।

বস্তুতঃ ওহি নাযিলের সময় এবং সংলগ্ন পরবর্তী সময়গুলোতে হাদিস লিপিবদ্ধ করতে নিরুৎসাহিত করা হতো বিশেষ একটি কারণকে সামনে রেখে যাতে কুরআনে কারিমের আয়াতের সাথে হাদিসের বাণীগুলো গুলিয়ে না যায় বা মিশে না যায়, সেই সতর্কতা অবলম্বনই ছিল এই সতর্কতার পেছনে মূখ্য উদ্দেশ্য। কিন্তু পরবর্তীতে সময়ের পরিক্রমায় একটা সময়ে কুরআনুল কারিম যখন গ্রন্থবদ্ধাকারে লিপিবদ্ধ হয়ে যায় তখন আর তার সাথে হাদিসের বাণী মিশ্রিত হওয়ার ভয়ের বিষয়টি অবশিষ্ট না থাকায় তখনকার শ্রেষ্ঠ ইসলামী স্কলারগণ হাদিসের অমূল্য বাণীগুলোকেও লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষণে মনযোগী হন, যাতে পরবর্তীকালে বিশ্ববাসী মানবগোষ্ঠীর সামনে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কথা, কাজ এবং জীবনাচারের বিষয়গুলো অবিকলভাবে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়।

মূল্যবান মন্তব্যের জন্য মোবারকবাদ। আপনার কল্যান কামনা করছি।

১১| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৬:৪৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঐ ব্লগার চালাকি ক'রে পোস্টের শিরোনাম পরবর্তীতে পরিবর্তন করেছেন। প্রথম শিরোনাম থেকে বোঝা যায় যে উনি সব হাদিস বর্জনের পক্ষে। পরে দেখলেন যে অনেকে আছে নিজেদের খুশি মত কিছু হাদিস বর্জন করেন নিজেদের বিদ্যা অনুযায়ী। এই দলের লোকও অনেক। উনি এদেরকেও দলে রাখার জন্য শিরোনামে যোগ করলেন '৩০০ বছর পরে লেখা হাদিস'। ফলে মনে হোল উনি শুধু ৩০০ বছর পরে লেখা হাদিস বর্জন করতে চান।

দেরীতে হলেও এই বিষয় নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

১৪ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



তাকে আপনি সঠিকভাবেই চিনতে পেরেছেন। তার চিন্তাধারা এককথায় বলা চলে, অভিনব! তিনি দারুন অভিনয় করে যাচ্ছেন। অবশ্য, এমন অভিনয় করতে পারাটাও বিশেষ যোগ্যতারই একটি বিষয়। এমন যোগ্যতা ক'জনেরই বা থাকে? কারণ, তিনি সকলের সামনে নিজেকে তার লেখালেখিতে এমনভাবেই উপস্থাপন করতে চেষ্টা করে থাকেন যাতে সাধারণভাবে মানুষ বুঝে নিতে বাধ্য হয় যে, তিনি ইসলাম ধর্ম এবং এর অনুসারী মুসলমানদের প্রতি একান্তভাবেই সহানুভূতিপ্রবন এবং মানুষ যাতে এটাও মনে করেন যে, তিনি যা লিখে থাকেন তা ইসলাম ধর্ম এবং এর অনুসারী মুসলমানদের কল্যান বিবেচনায়ই লিখে থাকেন। কিন্তু তাকে বুঝার জন্য, তার চিন্তা চেতনা সঠিকভাবে উপলব্ধি করার জন্য একটু গভীরে গিয়ে তার পেছনের লেখাগুলো সামান্য পর্যবেক্ষন করলেই তার আসল পরিচয় যে কারও নিকট স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি যে কে, তার লেখা দেখলেই তাকে ভালোভাবে বুঝা খুব কঠিন কিছু নয়।

আত্মসমালোচনা, আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে আপন জাতির ভুল সংশোধনের উদ্দেশ্যে কোন বিষয়কে সকলের সামনে তুলে ধরা আর সত্য মিথ্যার মিশ্রণে অযাচিত সমালোচনায় বিশেষ কোন মতবাদের অনুসারীদেরকে একতরফাভাবে একের পর এক ঘায়েল করার অপচেষ্টা কখনোই এক হতে পারে না। তিনি যা করে থাকেন, তাকে আত্মসমালোচনা বা জাতির ভুল সংশোধনের মতলব বলে বিবেচনা করার সুযোগ আদৌ নেই। তার টার্গেট সবসময় একটিমাত্র জাতি। তিনি মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকেন। যেখানেই একটু ফাঁক ফোকর লক্ষ্য করেন, সেখানেই তিনি তার মত করে মনগড়া দলিল দস্তাবেজ উপস্থাপনের চেষ্টা করে বিভ্রান্তি উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেন।

বস্তুতঃ বিভ্রান্তি প্রশমিত কে করতে চান, আর কে তা উস্কে দিয়ে ভিন্ন ফায়দা হাসিল করার মতলবে সচেষ্ট- এটা বুঝার ক্ষমতা কারোরই নেই, শুধু আমারই আছে এবং আমি যে উদ্দেশ্য নিয়ে এইসব লেখালেখি করছি, ঘুনাক্ষরেও কেউ তা ধরতে পারবে না- এমন ভ্রান্ত মানসিকতা থেকেই এসব করা সম্ভব বলে মনে করা স্বাভাবিক।

যা হোক, তার প্রতি অনেক অনেক শুভকামনা। তার কল্যান হোক, সেই প্রত্যাশাই করি।

১২| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৪১

ঢাবিয়ান বলেছেন: বুখারি হাদিস যে ২০০ বছর পর সংকোলিত হয়েছিল সেটা কিন্ত সত্য। কেননা ইমাম বুখারির জন্মই হয়েছিল ৮১০ সালে (Muhammad ibn Ismaʿil al-Bukhari al-Juʿfi was born after the Jumu'ah prayer on Friday, 21 July 810 (13 Shawwal 194 AH - উইকিপিডিয়া) ।

হাদিসের বিশুদ্ধতা নিয়েও কথা বলা এবং তা যাচাই বাছাই করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। যদি কেউ মনে করে থাকেন যে, হাদিসের বিষয়ে কোন কথাই বলা যাবে না, তার চিন্তা সঠিক নয়। কারণ, কুরআন যেভাবে অবিকল অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষিত হয়ে এসেছে হাদিস সেভাবে সংরক্ষিত হয়নি। আপনার প্রতিমন্তব্য এখানে কিছু কট্টরপন্থীদের জন্য যোগ করলাম। এছাড়া ৪ নাম্বার মন্তব্যে আমি একজন ইসলামিক স্কলারের বক্তব্য শেয়ার করেছি যেখানে তিনি বলেছেন যে ''One of the unique differences of the Qur’an and the Hadith is that the Hadiths were not protected from alteration and distortion. for the sake of guidance, there is no problem questioning the authenticity of a Hadith but we lack the authority of making any reformation in the Hadith. Instead, if one cannot get any acceptable interpretation for the Hadith, it is better to drop it. '' ।

একবার এক ইসলামিক স্কলার তার লেকচারে বলেছিলেন যে ইসলামের ক্ষতি নাস্তিকরা কোণদিনই করতে পারেনি এবং পারবেও না। ইসলামের ক্ষতি করে মুসলিমরাই।আমাদের কর্মে যদি তাকওয়া বা ধর্মের প্রতিফলন না থাকে তাহলে বিধর্মীরা আমাদের ধর্মকে কেন সম্মান প্রদর্শন করবে? এই যে জোড়পুর্বক নিজস্ব মতবাদ অন্যের উপড় চাপানো , অন্যের ভুল ভ্রান্তি ধরে নাস্তিক, হাফ নাস্তিক, মুরতাদ ট্যাগ করা এগুলো কি ইসলাম সম্মত ব্যবহার?

আমাদের দেশে ওয়াজী হুজুরদের কয়জনের বয়ানে তাকওয়া নিয়ে আলোচনা হয়? যদি কর্মের বিষয়ে ধর্মীয় দিক নির্দেশনার কথা অনেক বেশি প্রচার হত তাহলে আমাদের সমাজে এত দুর্নীতি, অসততা, মিথ্যাচার থাকতে পারতো না। আমাদের দেশে লোক দেখিয়ে ধর্ম পালনের ব্যপারটায় অধিক গুরুত্ব দেয়া হয় বলে কর্ম ব্যপারটা একেবারেই উপেক্ষিত হয়। আর এ কারনেই যোক্তিক আলোচনায় কারোরই আগ্রহ নাই।

১৩| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:০৪

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ইসলামের দলিল কি?

সূরাঃ ৪ নিসার ৮০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮০। কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিলে আমরা তোমাকে তাদের উপর হেফাজতকারী হিসেবে প্রেরণ করিনি (এ অপরাধের শাস্তি থেকে তুমি তাদেরকে হেফাজত বা রক্ষাকরতে পারবে না)।

সহিহ মুসলিম, ৪২৭ নং হাদিসের (পবিত্রতা অধ্যায়) অনুবাদ-
৪২৭। হযরত আবু মালেক আর-আশ’আরী (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ওজন দন্ডের পরিমাপকে পরিপূর্ণ করে এবং ‘সুবহানাল্লাহ ওযাল হামদুলিল্লাহ’ আসমান জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পূর্ণ করে দেবে। ‘সালাত বা নামাজ’ হলো একটি উজ্জল জ্যোতি। ‘সদকা’ হচ্ছে নিদর্শন। ‘সবর’ হচ্ছে জ্যোতির্ময়। আর ‘আল – কোরআন’ হচ্ছে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলিলস্বরূপ। মূলত সকল মানুষ প্রত্যেক সকালে নিজেকে আমলের বিনিময়ে বিক্রি করে।তার আমল দ্বারা সে নিজেকে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্ত করে অথবা তার ধ্বংস সাধন করে।

* আল্লাহ বললেন, রাসূল (সা.) দলিল। আর রাসূল (সা.) বললেন, ‘আল – কোরআন’ হচ্ছে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলিলস্বরূপ। সুতরাং ইসলামের দলিল হলো, রাসূলের (সা.) সংযুক্তিসহ আল কোরআন। এ দলিল কোথায় পাওয়া যাবে?

সূরাঃ ২ বাকারা, ১৪৩ নং আয়াতের অনুবাদ
১৪৩। এইভাবে আমি তোমাদিগকে এক মধ্যমপন্থী উম্মতরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি।যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ এবং রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হতে পারেন।তুমি এ যাবত যে কিবলা অনুসরন করতেছিলে উহা আমরা এ এ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করে ছিলাম যাতে আমরা জানতে পারি কে রাসূলের অনুসরন করে আর কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন তারা ছাড়া অন্যদের নিকট এটা (সৎপথ)কঠিন।তোমাদের ঈমানকে ব্যর্থ করে দিবেন আল্লাহ এমন নন।আল্লাহ মানুষদের প্রতি স্নেহশীল-দয়াদ্র।

সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১১০ নং আয়াতের অনুবাদ-
১১০। তোমরাই মানব জাতির জন্য খাইরা (শ্রেষ্ঠতম) উম্মতরূপে তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের আদেশ দিবে এবং অসৎকাজে নিষেধ করবে।আর আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। আর যদি আহলে কিতাব বিশ্বাস স্থাপন করতো তবে অবশ্যই তাদের জন্য ভালো হতো। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তো মোমেন। আর তাদের অধিকাংশ ফাসেক।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* সুতরাং ইসলামের দলিল হলো মধ্যমপন্থী খাইরা উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের আমল।

# মধ্যমপন্থী খাইরা উম্মত

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৪ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৪। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের উপর এমন একটি সময় আগমন করবে যে, তাদের বহু সংখ্যক লোক জিহাদে শরিক হবে। তখন তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন লোক আছেন যিনি রাসূলুল্লাহর (সা.) সাহচর্য লাভ করেছেন? তারা বলবে হ্যাঁ। তখন তাদেরকে জয়যুক্ত করা হবে। অতঃপর লোকদের উপর এমন একটি সময় আগমন করবে যে, তাদের বহু সংখ্যক লোক জিহাদে শরিক হবে। তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন লোক আছেন যিনি রাসূলুল্লাহর (সা.) সাহাবীদের (রা.) সাহচর্য লাভ করেছেন? তারা বলবে হ্যাঁ। তখন তাদেরকে বিজয় দান করা হবে। তারপর লোকদের উপর এমন একটি সময় আসবে যে, তাদের বহু সংখ্যক লোক জিহাদে শরিক হবে। তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন লোক আছেন, যিনি রাসূলুল্লাহর (সা.) সাহাবীদের (রা.) সাহাবীদের সাহচর্য লাভ কারী? তারা বলবে হ্যাঁ। তখন তাদেরকে জয়যুক্ত করা হবে।

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৫ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৫। হযরত এমরান ইবনে হুছাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হলো আমার যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা।এমরান বলেন রাছুলুল্লাহ (সা.) তাঁর যামানার পর দু’ যামানার উল্লেখ করেছেন, না তিন যামানার উল্লেখ করেছেন ত’ আমার সঠিকভাবে মনে নেই।এরপর তোমাদের পর এমন কিছু লোকের আবির্ভাব যারা সাক্ষ্য দান করবে অথচ তাদের নিকট সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা বিশ্বাস ঘাতকতা করবে। সুতরাং তাদেরকে কখনও বিশ্বাস করা যাবে না। তারা খুবই মোটা সোটা ও হৃষ্টপুষ্ট দেহের অধিকারী হবে।

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৬ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৬। হযরত আব্দুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম সময হলো আমার সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। তারপর এমন একদল লোকের উদ্ভব ঘটবে যাদের কেউ শপথ করার পূর্বে সাক্ষ্য দিবে এবং সাক্ষ্য দিবার পূর্বে শপথ করবে। ইব্রহীম নখয়ী (র.) বলেন, আমাদের মুরুব্বঈরা আমাদেরকে সাক্ষ্য দিবার জন্য ও ওয়াদা করার জন্য প্রহার করতেন। তখন আমরা ছোট ছিলাম।

* সহিহ যুগে মধ্যমপন্থী খাইরা উম্মত ছিলেন, সাহাবা, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণের সর্ববৃহৎ দল। সুতরাং তখন তাঁদের আমল ছিল ইসলামের দলিল।

সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত জন্তু, শৃংগাঘাতে মৃত জন্তু এবং হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু, তবে যা তোমরা যবেহ করতে পেরেছ তা’ ব্যতীত, আর যা মূর্তি পুজার বেদির উপর বলি দেওয়া হয় তা এবং জুয়ার তীরদ্বারা ভাগ্য নির্ণয় করা, এ সব পাপ কাজ। আজ কাফেরগণ তোমাদের দীনের বিরুদ্ধাচরণে হতাশ হয়েছে; সুতরাং তাদেরকে ভয় করবে না, শুধু আমাকে ভয় কর। আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করলাম। তবে কেহ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তখন আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

সহিহ বোখারী ৪৯৯ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৯৯। হযরত যুহুরী (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দামেশকে আনাস ইবনে মালেকের (রা.) নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, আমি যা যা দেখেছি তার মধ্যে এ নামাযই আজ পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু এখন নামাজও নষ্ট হতে চলেছে।

* পূর্ণাঙ্গ ইসলাম উপস্থাপন করেছিলেন রাসূল (সা.)। সেটা তাঁর সাহাবা যুগেই বিনষ্ট হয়। অতি বার্ধক্যের কারণে সাহাবায়ে কেরামের (রা.) পক্ষে সংশোধীত পূর্ণাঙ্গ ইসলাম উপস্থাপন সম্ভব ছিল না।

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৪। ওটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি ওটা দান করেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।

# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
৩। এ আয়াতের তাফসিরে আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর পার্শ্বে বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞাস করেন হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ‘ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম’ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিন বার এ প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাতখানা সালমান ফারসীর (রা.) উপর রেখে বললেন, ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থাকত তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক কিংবা একাধিক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেত।(ফাতহুলবারী ৮/৫১০, মুসলিম ৪/১৯৭২, তিরমিযী ৯/২০৯, ১০/৪৩৩, নাসাঈ ৫/৭৫, ৬/৪৯০, তাবারী ২৩/৩৭৫)।

* অত:পর হযরত সালমান ফারসীর (রা.) গোত্রিয় একমাত্র তাবেঈ ইমাম আবু হানিফা (র.) চৌরাশি হাজার মাসয়ালায় পূর্ণাঙ্গ ইসলাম উপস্থাপন করেন।

সূরাঃ ২ বাকারা, ২৮৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮৬। আল্লাহ কারোউপর এমন কোন কষ্ট দায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।সে ভাল যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। সে মন্দ যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। হে আমাদের প্রতিপালক যদি আমরা ভুলে যাই অথবা আমাদের ত্রুটি হয় তবে আমাদেরকে পাকড়াও করো না। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের পূর্ববর্তিগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না।হে আমাদের প্রতিপালক এভন ভার আমাদের উপর অর্পণ করো না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই।আমাদের পাপ মোছন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের উপর আমাদেরকে জয়যুক্ত কর।

* ইমাম আবু হানিফার (র.) কিছু ভুল থাকায় এর সংশোধনের প্রয়োজন হয়।

সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ-
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহি প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।
৪৪।সুস্পষ্ট প্রমাণ ও কিতাব সমূহ সহ।আর মানুষকে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা, সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আপনার প্রতি নাজিল করেছি যিকর। যেন তারা চিন্তা ভাবনা করতে পারে।

সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।

মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।

* অত:পর আমির হারুনুর রশিদ ফিকাহ শিক্ষায় শিক্ষিত আহলে যিকর পরিষদ গঠন করে ইমাম আবু হানিফার (র.) ভুল সংশোধনের ব্যবস্থা করেন। আর আহলে যিকর পরিষদ ইমাম আবু হানিফার ভুল সংশোধন করে তাঁর উপস্থাপিত পূর্ণাঙ্গ ইসলামের নাম রাখেন হানাফী মাযহাব। সাথে সাথে ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মাযহাব গ্রহণ করেন। যাঁদেরকে কোরআন ও হাদিস সহিহ প্রমাণ করে।

# ইমাম

সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।

সূরাঃ ২২ হাজ্জ, ৭৮ নং আয়াতের অনুবাদ
৭৮। আর জিহাদ কর আল্লাহর পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে (জিহাদের জন্য) মনোনীত করেছেন।তিনি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত বা জাতি।তিনি পূর্বে তোমাদের ‘মুসলিম’ নাম করণ করেছেন। আর এতে (এ কোরআনেও তোমাদের ‘মুসলিম’ নাম করণ করা হয়েছে) যেন রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যি হন এবং তোমরা স্বাক্ষী হও মানব জাতির জন্য। অতএব তোমরা সালাত বা নামাজ কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহর সাথে যুক্ত থাক। তিনি তোমাদের অভিভাবক। কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী তিনি।

সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।

সহিহ আবুদাউদ, ৬০১ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৬০১। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ায় চড়েন। তিনি তার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরের ডান দিকে আঘাত পান। এমতাবস্থায় তিনি বসে নামাজে ইমামতি করেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে বসে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে মহানবি (সা.) বলেন, ইমামকে এ জন্যই নিযুক্ত করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তখন তোমরাও দাঁড়াবে। এরপর ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমারও রুকু করবে এবং ইমাম যখন মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে। এরপর ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’। ইমাম যখন বসে নামাজ পড়বে তখন তোমরাও বসে নামাজ পড়বে।

সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ.)। সে হিসাবে গোটা মুসলিম জাতি তাঁর বংশধর। কোরআন অনুযায়ী ইমামগণ তাঁর সেরা বংশধর। কারণ তাঁরা আল্লাহর নিকট তাঁর প্রার্থনার ফসল। আর অনুসরনের জন্য মুত্তাকীদের দীনের যামিনদার ইমাম নিযুক্ত করা হয়। সুতরাং তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই উম্মত এবং হেদায়াত প্রাপ্ত। তাঁরা হানাফী বিধায় হানাফী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল এখন ইসলামের দলিল এবং তাঁদের আমলের পরিপন্থী অন্য ফিকাহ ও হাদিস বাতিল।

বিশ্বাসঘাতক যুগে মধ্যমপন্থী খাইরা উম্মত হলেন ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল। কারণ তাঁরা প্রত্যেক জুমুয়ার খোতবায় সৎকাজের আদেশ দিয়ে থাকেন এবং অসৎ কাজে নিষেধ করে থাকেন। কতিপয় ইমাম পথভ্রষ্টও আছে, সেজন্য সকল ইমাম মধ্যমপন্থী খাইরা উম্মত নয়, বরং ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল মধ্যমপন্থী খাইরা উম্মত। তাঁরা ইসলামের দলিল কোরআন অনুযায়ী। সুতরাং রাসুল (সা.) যথার্ত বলেছেন, ‘আল – কোরআন’ হচ্ছে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলিলস্বরূপ। সুতরাং ইমামগণের সর্ববৃহৎ সর্ববৃহৎ দলের আমলের গরমিল যা কিছু আছে তা’ ইসলামের দলিল নয়। এসব কিছুকে ফিতনাবাজেরা দলিল বলে মুসলিমদের মাঝে ফিতনা সৃষ্টির জন্য। এ বিষয়ে মুসলিমগণকে সাবধান থাকতে হবে।

১৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৬:১৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: কোরআন কিভাবে সব সমস্যার সমাধান?

সূরাঃ ২ বাকারা, ২ নং আয়াতের অনুবাদ-
২। ঐ কিতাব; যাতে কোন সন্দেহ নেই, যা হেদায়েত মোত্তাকীদের জন্য।

সহিহ মুসলিম, ৪২৭ নং হাদিসের (পবিত্রতা অধ্যায়) অনুবাদ-
৪২৭। হযরত আবু মালেক আর-আশ’আরী (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ওজন দন্ডের পরিমাপকে পরিপূর্ণ করে এবং ‘সুবহানাল্লাহ ওযাল হামদুলিল্লাহ’ আসমান জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পূর্ণ করে দেবে। ‘সালাত বা নামাজ’ হলো একটি উজ্জল জ্যোতি। ‘সদকা’ হচ্ছে নিদর্শন। ‘সবর’ হচ্ছে জ্যোতির্ময়। আর ‘আল – কোরআন’ হচ্ছে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলিলস্বরূপ। মূলত সকল মানুষ প্রত্যেক সকালে নিজেকে আমলের বিনিময়ে বিক্রি করে।তার আমল দ্বারা সে নিজেকে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্ত করে অথবা তার ধ্বংস সাধন করে।

* সুতরাং কোরআন সব সমস্যার সমাধান। তাহলে ইবাদত কিভাবে করবেন? কোরআন কি বলে?

সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।

* ইমাম যেভাবে ইবাদত করতে বলে জনগণ সেভাবে ইবাদত করবে। ইমামগণ মতভেদ করলে জনগণ কি করবে?

সূরাঃ ৪ নিসার ৮০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮০। কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিলে আমরা তোমাকে তাদের উপর হেফাজতকারী হিসেবে প্রেরণ করিনি (এ অপরাধের শাস্তি থেকে তুমি তাদেরকে হেফাজত বা রক্ষাকরতে পারবে না)।

* ইমামগণ মতভেদ করলে বড় ইমাম রাসূলের (সা.) কথা মানতে হবে।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* ইমামগণ মতভেদ করলে বড় ইমাম রাসূলের (সা.) কথা অনুযায়ী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। সুতরাং জনগণের কোরআন এবং কোরআনের কথা অনুযায়ী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল ছাড়া অন্য কোন কিছুর প্রয়োজন নেই এবং ইমাগণেরও কোরআন এবং কোরআনের কথা অনুযায়ী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল ছাড়া অন্য কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। সুতরাং কোরআন সব সমস্যার সমাধান হওয়া বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) সত্য বলেছেন।

সূরা: ৭৭ মুরসালাত, ৫০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫০। সুতরাং তারা কোরআনের পরিবর্তে আর কোন হাদিসে বিশ্বাস স্থাপন করবে?

সূরা: ৪৫ জাছিয়া, ৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬। এগুলি আল্লাহর আয়াত, যা আমি তোমার নিকট যথাযথভাবে তিলাওয়াত করছি। সুতরাং আল্লাহর এবং তাঁর আয়াতের পরিবর্তে তারা কোন হাদিসে বিশ্বাস করবে?

সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী সত্যবাদী?

সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের দেহ-মন বিনম্র হয়ে আল্লাহর যিকরে ঝুকে পড়ে।এটা আল্লাহর হেদায়াত। তিনি এর দ্বারা যাকে ইচ্ছা হেদায়াত প্রদান করেন।আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তার কোন হেদায়াতকারী নাই।

* হাদিস বলতে যেটা প্রয়োজন সেটা শুধুই আল্লাহর হাদিস। রাসূলের (সা.) হাদিসের কি তবে প্রয়োজন নেই? জনগণের কোরআন এবং কোরআনের কথা অনুযায়ী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল ছাড়া অন্য কোন কিছুর প্রয়োজন নেই এবং ইমাগণেরও কোরআন এবং কোরআনের কথা অনুযায়ী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল ছাড়া অন্য কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। তাহলে রাসূলের (সা.) হাদিসের প্রয়োজনটা কোথায়? ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে থাকতে ইসলাম এ পর্যন্ত এসেছে এবং ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে থাকতে ইসলাম কেয়ামত পর্যন্ত পৌঁছে যাবে? তাহলে ইসলাম বিষয়ে মানুষ কি জানবে? ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল কি করে ইসলাম বিষয়ে মানুষ শুধু সেটাই জানবে। এর বাইরে ইসলামে আর কিছু জানার প্রয়োজন নেই।সুতরাং কোরআন সব সমস্যার সমাধান হওয়া বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) সত্য বলেছেন।

১৫| ১৪ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৫০

আহলান বলেছেন: সূরা হাশরের ৭ নং আয়াতে বলেন, ‘রাসূল যা কিছু তোমাদের দেন তা গ্রহণ করো এবং যে জিনিস থেকে তিনি তোমাদের বিরত রাখেন তা থেকে বিরত থাকো। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ সুতরাং রাসুলের (সাঃ) হাদিস বা সুন্নাহ তো তারাই বাদ দিতে চায় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সাঃ) কে বর্জন করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.