নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহর সাথে সম্পর্ক মজবুত করার মাঝেই সফলতা: মুসলিম নারীদের প্রতি আল্লামা তাকি উসমানির গুরুত্বপূর্ণ নসিহত

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৪৫

আল্লাহর সাথে সম্পর্ক মজবুত করার মাঝেই সফলতা: মুসলিম নারীদের প্রতি আল্লামা তাকি উসমানির গুরুত্বপূর্ণ নসিহত



অন্তর্জাল হতে সংগৃহিত ক্যালিগ্রাফিতে সূরাহ আল কাহফ এর ৪৬ নং আয়াতটির ইংরেজি অনুবাদ উল্লেখ রয়েছে যার বাংলা অর্থ- ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য এবং স্থায়ী সৎকর্মসমূহ আপনার পালনকর্তার কাছে প্রতিদান প্রাপ্তি ও আশা লাভের জন্যে উত্তম। -সূরাহ আল কাহফ, আয়াত ৪৬

মুহতারাম বোনেরা আমার! আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। সর্বপ্রথম আমি আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করছি, যিনি আপন ফযল ও করমে এখানে উপস্থিত হওয়ার তাওফীক দান করেছেন। অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আপনাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনারা যে মহব্বত ও আন্তরিকতার সাথে এ অধমকে বরণ করে নিয়েছেন, বাস্তবে সে এর উপযুক্ত নয়। আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে এর জন্য উত্তম জাযা দান করুন।

নারীগণ সমাজের মূল স্তম্ভঃ

আমাকে আদেশ করা হয়েছে- আপনাদের খেদমতে দ্বীনের কিছু কথা আরয করতে। দ্বীনের কথা বলতে সবসময় অত দীর্ঘ সময় নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন পড়ে না। আল্লাহ তাআলা যদি ইখলাছের সাথে কিছু বলার ও শোনার তাওফীক দান করেন, তাহলে অল্প কথাতেও অনেক ফায়দা হয়। আর আল্লাহ হেফাযত করুন- ইখলাস যদি না থাকে, তাহলে লম্বা-চওড়া বয়ানও বেকার এবং অর্থহীন হয়ে যায়। মূলতঃ আমি নসীহত করার যোগ্য কেউ নই। তবে মুরুব্বীদের থেকে শুনেছি যে, আল্লাহ তাআলা নারী জাতিকে এ উম্মতের বিনির্মাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে নারীগণ হচ্ছেন একটি সমাজের মূল স্তম্ভ- তথা ফাউন্ডেশন। তাদের উপর ভর করেই পুরো সমাজ দাঁড়িয়ে থাকে এবং গোটা জাতি প্রতিপালিত হয়। আমি তো বলি, আজ আমরা যেসব বড় বড় আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখ, মুফতী-মুহাদ্দিস-মুফাসসির, ওলী-বুযুর্গদের কথা শুনে থাকি, যাদের নাম আমরা শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসায় প্রতিনিয়ত স্মরণ করে থাকি, যাদের নাম শোনামাত্র জগত পাল্টে দেয়া তাদের অমর কীর্তিগুলো মনে পড়ে যায়, কিন্তু পর্দার অন্তরালের ঐসব নারীদের কথা আমাদের খুব কম লোকেরই স্মরণে আসে, যাদের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও কুরবানী, শ্রম ও মেহনত এবং তালীম ও তরবিয়তের বদৌলতে এঁরা এত বড় বড় ব্যক্তিত্বে পরিণত হতে সক্ষম হয়েছিলেন। হতে পেরেছিলেন একেকজন যুগশ্রেষ্ঠ কীর্তিমান।

ইমাম আবু হানীফা রাহ.-কে জগতের কে না চেনে! ইমাম বুখারী রাহ.-কে কে না জানে!! কিন্তু ঐসব মা কেমন ছিলেন, যারা ইমাম আবু হানীফা, ইমাম বুখারী রাহ. প্রমুখের মত মহারত্নগুলোকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন! জন্মের পর সঠিক তরবিয়তে বড় করেছিলেন! যার ফলে তারা চন্দ্র সূর্য্যের মত আলো বিকিরণ করে অন্ধকার দুনিয়াকে আলোকাভায় উদ্ভাসিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত মানুষ তাদের খিদমাত থেকে আলো পেতে থাকবে ইনশাআল্লাহ। এসব বুযুর্গানে দ্বীন যাদেরকে আজ আমরা চিনি, আল্লাহ তাআলার দরবারে তো তারা (ইনশাআল্লাহ) অবশ্যই মকবুল ও মনোনীত হয়েছেন। কিন্তু পর্দার আড়ালে থেকে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাওয়া এসব মা-জননী যারা এইসব বুযুর্গদেরকে গর্ভে ধারণ করেছেন, অন্তরালে থেকে সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে দ্বীনের খেদমতের মিশন নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পাশে থেকেছেন, বলুন, আল্লাহর দরবারে তাদের মর্তবা কত উঁচু হতে পারে! ভাগ্যবতী এসব মা-বোনদের নাম যশের কোনো ফিকির ছিল না। ছিল না বিখ্যাত হওয়ার লোভ ও মোহ। ছিল না পদ-পদবীরও কোনো লালসা। শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। হ্যাঁ, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই ছিল তাদের একমাত্র বাসনা ও সাধনা। ব্যস, এই ইখলাছের বদৌলতেই আল্লাহর দেওয়া আমানত -স্বামী-সন্তানের এমন তরবিয়ত ও খেদমত তারা করে গেছেন, যার ফলে তাঁরা চন্দ্র-সূর্য্য হয়ে দুনিয়া আলোকিত করেছেন। এ বিবেচনায় চিন্তা করে দেখুন, আল্লাহ তাআলা মাতৃজাতিকে কত উচ্চাসনে সমাসীন করেছেন! মাতৃকোলকে রাব্বুল আলামীন সন্তানের সর্বপ্রথম বিদ্যালয় বানিয়েছেন। আমাদের ইতিহাসে এমন ঘটনা অনেক যে, মা-সন্তানের মুখে যখন দুধ দিবেন, তখন তার যবানে তিলাওয়াত জারি থাকতো। সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াত করে করে সন্তানকে দুধ পান করাতেন মায়েরা। বলুন, যে শিশুর প্রতিপালন ও তরবিয়ত এমন কোলে হয়, জাতির জন্য সে কত উজ্জ্বল আলো হতে পারে!

আমার বলার উদ্দেশ্য হল, আপনারা আপনাদেরকে চিনতে ও বুঝতে চেষ্টা করুন। সকল আমলের মূল ‘তাআল্লুক মাআল্লাহ’। বোনেরা আমার! গোটা দ্বীনের মূল কথা হচ্ছে, আল্লাহর সাথে আল্লাহর বান্দা-বান্দীদের সম্পর্ক তৈরি হয়ে যাওয়া এবং তা মজবুত থেকে মজবুত হতে থাকা। আল্লাহর সাথে যদি বান্দার সুসম্পর্ক হয়ে যায়, সর্বাবস্থায় সে যদি আল্লাহমুখী হওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে দ্বীনের উপরে চলা তার জন্য আসান হয়ে যায়। সমস্যা তখনই দেখা দেয়, যখন আমরা গাফলতে পড়ে যাই, আল্লাহকে ভুলে বসি, যখন আল্লাহর সাথে সম্পর্কের অবনতি হয়ে যায়, সম্পর্ক কমজোর হয়ে যায়। তখন গোনাহ হতে থাকে, আল্লাহর নাফরমানী হতে থাকে। উল্টা-পাল্টা হতে থাকে। ফরয-ওয়াজিব ছুটতে থাকে। কিন্তু যখন আল্লাহর সাথে সম্পর্ক মজবুত থাকে, তখন দ্বীনদারি পালন করাও সহজ হয়।

শোকরের এহতেমামঃ

তাআল্লুক মাআল্লাহ তৈরির একটি মাধ্যম আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে তরিকা বাতলে দিয়েছেন যে, কোন কোন আমল করলে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি হতে থাকে এবং দ্বীনের উপর চলা আসান হয়ে থাকে। একটি সহজ আমল হচ্ছে শোকরের এহতেমাম। অর্থাৎ, বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করা। আল্লাহ তাআলা যখন যে নিআমত দান করেন, ছোট হোক বা বড়, সাথে সাথে শোকর আদায় করা। কোনো বিষয় সামনে এসেছে, যাতে মনটা ভালো লাগছে, সাথে সাথে আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করা। নিজের মর্জি মোতাবেক কোনো কাজ হাছিল হয়েছে, তো যথাসাধ্য শুকরিয়া আদায় করার চেষ্টা করা। বেশি বেশি শুকরিয়া আদায়ে নিজেও অভ্যস্ত হওয়া এবং বাচ্চাদেরও সে অভ্যাসে গড়ে তোলা। ইদানীং ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে যে, কোনো বাচ্চাকে যদি আদর করে জিজ্ঞাসা করা হয়, বাবু! কেমন আছো? ভালো আছো? তো, তারা উত্তরে শুধু এতটুকু বলে, হাঁ, ভালো আছি। ব্যস, আর কিছু বলে না। তারা যদি সঠিক তরবিয়ত পেত, তাহলে ‘হাঁ, ভালো আছি’ বলে ক্ষান্ত থাকতো না। অবশ্যই বলতো, ‘আলহামদু লিল্লাহ, ভালো আছি'। এই কালিমাতুশ শুকর- ‘আলহামদু লিল্লাহ’ তাদের মুখে মুখে জারি করার জন্য সঠিক তরবিয়তের প্রয়োজন। বাচ্চাদের যদি সর্বাবস্থায় শুকরিয়া আদায়ের তরবিয়তে গড়ে তোলা হয়, তখন তারা আলহামদুলিল্লাহ বলতে শিখবে। তবে এর জন্য নিজে আগে বেশি বেশি শুকরিয়া আদায়ে অভ্যস্ত হতে হবে। রাতে শোবার সময় কিছুক্ষণ চিন্তা করুন, আজকের এ দিনে আল্লাহ তাআলা আপনাকে কত কত নিআমতে ভূষিত করেছেন! বেশি সময় নয়, অল্প সময় চিন্তা করুন। একেকটি নিআমত মনে করুন আর দিল থেকে বলুন- ‘আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু ওয়া লাকাশ শুকরু’। اللهم لك الحمد ولك الشكر অর্থাৎ, হে আল্লাহ, আপনার জন্যই সকল প্রশংসা এবং আপনার জন্যই শুকরিয়া।

হে আল্লাহ, আপনার খাছ মেহেরবানী, ঘরে সবাই সুস্থ ও নিরাপদ রয়েছে। কারো কোনো রোগ-বালাই নেই। হে আল্লাহ, আপনার শোকর, আপনি থাকার জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আপনার এহসান, শোবার জন্য বিছানার এন্তেযাম করে দিয়েছেন। আপনার ফযল ও করম, আপনি আমাকে সন্তান-সন্ততি দান করেছেন। মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন দান করেছেন। এভাবে আল্লাহর দেওয়া নিআমতের কথাগুলো স্মরণ করুন আর শুকরিয়া আদায় করুন। এটা অনেক বড় আমল। যদিও একে মামুলি মনে হয়, কিন্তু এর ফায়দা অনেক বেশি।

দুআর আধিক্যঃ

তাআল্লুক মাআল্লাহ মজবুত করার একটি মাধ্যম দ্বিতীয়ত আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। যখন যে প্রয়োজন দেখা দেবে, ছোট হোক কিংবা বড়, সাথে সাথে অন্তরকে আল্লাহর দিকে রুজু করুন, আল্লাহমুখী হোন। আল্লাহর কাছে নিজের হাজত পেশ করুন- হে আল্লাহ, আমার এ সমস্যা দেখা দিয়েছে, সামনে আমার এই কাজ, আপনি আসানীর সাথে সমাধা করে দিন। বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছেন। দুআ করুন- হে আল্লাহ, প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছি। আপনি ভালো সওয়ারির ব্যবস্থা করে দিন। সওয়ারিতে বসে- হে আল্লাহ, সহি-সালামতে আমাকে গন্তব্যে পৌঁছে দিন। গন্তব্যে পৌঁছে- হে আল্লাহ যে কাজে আমি এখানে এসেছি সে কাজ সুন্দরমত সমাধা করে দিন। এভাবে প্রতিটি কাজে আল্লাহমুখী হয়ে দুআর মাধ্যমে হাজত পুরা করুন। রান্না করার সময়- হে আল্লাহ, আমি এখন রান্না করছি, আপনি আসান করুন। বরকত দান করুন। এতে স্বাদ দান করুন। সবার জন্য এ খাবারকে আপনি উপকারী এবং সুস্বাদু বানিয়ে দিন। মোটকথা, এমন একটি অভ্যাস গড়ে তুলুন, যাতে সর্বমুহূর্তে আপনি আল্লাহর কাছে কিছু না কিছু চাওয়ার মধ্যেই থাকেন। যবানে উচ্চারণ করেই যে চাইতে হবে, তা নয়; মনে মনে চাইতে থাকুন। যত বেশি পারেন চাইতেই থাকেন। আল্লাহর যাত অনেক বড়। তাঁর কাছে চাইলেই তিনি খুশি হন।

দুনিয়ার যে যত বড় দানবীরই হোক না কেন, তার কাছে যদি কেউ চাইতেই থাকে, তাহলে সে দুই বার, তিন বার, সর্বোচ্চ দশ বার দিবে। এরপর বলবে, আরে ভাই! তুমি দেখি আমাকে সর্বস্বান্ত করে ছাড়বে। যাও এখান থেকে। এভাবে বকাঝকা করে তাড়িয়ে দিবে। কিন্তু আল্লাহ তাআলার পাক যাত এত দয়ালু ও মেহেরবান যে, আপনি যতই চাবেন, তিনি ততই খুশি হন। শুধু তাই নয়, আল্লাহ বান্দাকে এত মহব্বত করেন যে, কেউ যদি তাঁর কাছে না চায়, তিনি তার প্রতি রুষ্ট হন, নাখোশ হন, বেজার হন। এজন্য বোনেরা আমার! আমরা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলি। চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে শুধু আল্লাহর কাছে চাইতেই থাকব। যখন যে হাজত দেখা দিবে, ছোট কি বড়, আল্লাহর কাছে পেশ করব। আল্লাহর কাছে যত বেশি চাওয়া হবে, তার সাথে নৈকট্য তত বাড়তে থাকবে। সম্পর্ক তত ঘনিষ্ঠ হতে থাকবে এবং তৈরি সম্পর্ক আরো মজবুত হতে থাকবে।

মাসনূন দুআর এহতেমামের ফায়দাঃ

আমরা যাতে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাইতে থাকি, এজন্য নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে অনেক দুআ শিখিয়েছেন। এজন্যই ঘরে প্রবেশের দুআ, বের হবার দুআ, হাম্মামে প্রবেশের দুআ, বের হবার দুআ, আয়না দেখার দুআ, মসজিদে গমন-প্রত্যাগমন ইত্যাদির দুআ তিনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। প্রতিদিনের এ মাসনূন দুআগুলো নিজেরাও শিখুন, বাচ্চাদেরও শেখান।

নিজেরাও আমল করুন, বাচ্চাদেরও আমলে আনার ফিকির করুন।

বুযুর্গানে দ্বীনের অভিজ্ঞতা…

এই দুই তিনটি আমলের মাধ্যমে অর্থাৎ, বেশি বেশি শুকরিয়া আদায়, বেশি বেশি দুআ এবং মাসনূন দুআর এহতেমাম- এই তিন আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ হতে থাকে। আমি নিজের থেকে বলছি না, বুযুর্গানে দ্বীন বলেছেন, এ আমলগুলো যে যত বেশি করবে, আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক তত মজবুত হতে থাকবে। আর আল্লাহ তাআলার সাথে এরকম মজবুত সম্পর্ক হওয়ার মাঝেই আসল কামিয়াবী ও প্রকৃত সফলতা। আল্লাহ তাআলা আমাকে ও আপনাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করুন- আমীন।

দ্রষ্টব্যঃ পাকিস্তানের সাবেক বিচারপতি মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম গত জুলাই ২০১০ ইং সালে ভারত সফর করেন। মুম্বাইতে জনাব মুহাম্মাদ আসিফ ও জনাব মুহাম্মাদ আমির সাহেবের বাসায় অবস্থানকালে ঘরের নারীদের পক্ষ থেকে অনুরোধের প্রেক্ষিতে হযরত ৭ জুলাই ২০১০ ইং তারিখে মূল্যবান এই নসীহতটি পেশ করেন। পরবর্তীতে তার গুরুত্বপূর্ণ সেই বয়ানটি ‘খুতুবাতে দাওরায়ে হিন্দ’ ও ‘হিন্দুস্তান কা তাযা সফর’ নামে সংকলন করা হয়। সংকলিত সেই উর্দূ বয়ানটিরই বাংলা অনুবাদ এটা। বাংলাভাষার অন্যতম নির্ভরযোগ্য ইসলামি ম্যাগাজিন মাসিক আল কাওসারে প্রকাশিত জনাব আশিক বিল্লাহ তানভীর -এর অনুবাদটি কিছুটা সংশোধিত ও পরিমার্জিত আকারে এখানে প্রকাশ করা হলো। যদিও গুরুত্বপূর্ণ এই বক্তব্যটির বাংলা অনুবাদ ইতোপূর্বে অন্যান্য মিডিয়াতেও প্রকাশিত হতে দেখা গেছে। সহায়তা নেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা মাসিক আল কাওসার এবং আওয়ার ইসলাম২৪ডটকমের প্রতি।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৩

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: আল্লাহ যার সাথে থাকেন, তিনি দুনিয়ার কাউকে ভয় পান না।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৪

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, সঠিক বলেছেন। জাজাকুমুল্লাহু খাইরান।

২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৭

আখেনাটেন বলেছেন: আজ আমরা যেসব বড় বড় আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখ, মুফতী-মুহাদ্দিস-মুফাসসির, ওলী-বুযুর্গদের কথা শুনে থাকি, যাদের নাম আমরা শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসায় প্রতিনিয়ত স্মরণ করে থাকি, যাদের নাম শোনামাত্র জগত পাল্টে দেয়া তাদের অমর কীর্তিগুলো মনে পড়ে যায় ---নতুন নকিব ভাইজান, কে সেইসব পীর-মাশায়েখ-উলামা যাদের কীর্তিতে জগত পাল্টে যায়? আমাদেরকেও জানান তাদের নাম-ধাম। নিজেরাও আলোকিত হই বুজুর্গানের দুনিয়া কাঁপানো কীর্তিতে!!!

দুনিয়ার যে যত বড় দানবীরই হোক না কেন, তার কাছে যদি কেউ চাইতেই থাকে, তাহলে সে দুই বার, তিন বার, সর্বোচ্চ দশ বার দিবে। এরপর বলবে, আরে ভাই! তুমি দেখি আমাকে সর্বস্বান্ত করে ছাড়বে। যাও এখান থেকে। এভাবে বকাঝকা করে তাড়িয়ে দিবে। কিন্তু আল্লাহ তাআলার পাক যাত এত দয়ালু ও মেহেরবান যে, আপনি যতই চাবেন, তিনি ততই খুশি হন। শুধু তাই নয়, আল্লাহ বান্দাকে এত মহব্বত করেন যে, কেউ যদি তাঁর কাছে না চায়, তিনি তার প্রতি রুষ্ট হন, নাখোশ হন, বেজার হন। -- তাহলে কী ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাকি সুন্নিরা, ফিলিস্তিনিরা, কাশ্মিরিরা নিজেদের অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক মুক্তির জন্য সঠিকভাবে আল্লাহ'র কাছে কিছু চাচ্ছেন না?

কিছু মনে করবেন না নকিব ভাই, এই যে ভিক্ষাবৃত্তির মানসিকতা...এটাই আমার মতে মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। যাদেরকে আপনারা জ্ঞানের আধার, নক্ষত্রের ন্যায় আলোকময় বলে প্রচারণা করছেন...বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় ইনাদের এক কানাকড়ি মূল্য নেই। বিশ্বের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক উৎকর্ষতায় ইনারা ওর্থলেস ক্রিয়েচার। কথাটা শুনতে তিক্ত মনে হলেও এটাই চরম বাস্তবতা। যতদিন না এই ভিক্ষাবৃত্তির মানসিকতা থেকে আপনারা বের হয়ে আসতে পারছেন, ততদিন অন্যের ত্যাগ-তিতিক্ষা কিংবা কঠোর পরিশ্রমের ফসল (আধুনিক সভ্যতার সকল উপকরণ-যাতে এই বুজুর্গদের কানাকড়ি অবদান নেই) নিজেরা ব্যবহার করে নিজেদের দুর্দশার জন্য অন্যের ঘাড়ে (ইহুদি-নাসারা ও অন্যান্য) দোষ চাপিয়ে যাবেন। আর খোদার কাছে দোয়া ফরমাইতে থাকবেন..যে 'আমাদের দুর্দশা লাঘব করুন হে আল্লাহ'.....এই সব অবসলিট ভাবনা থেকে আমার মনে হয় বের হওয়ার সময় হয়েছে। ধর্ম কর্ম করেন ঠিক আছে....সাথে এক্সট্রিম ভাবনাকে প্রোপাগেইট না করে নতুন প্রজন্মকে ধর্মের পাশাপাশি আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা নিয়েও সবক দিন...জাতির প্রকৃত উন্নয়নের জন্য। আর ভিক্ষাবৃত্তির মনোভাব দূর করতে নতুনদের সহায়তা করুন। কোন কিছুই দুনিয়াতে ফর গ্রান্টেট না..মানে দোয়ায় হয় না....সব দুনিয়াবি জৌলুস (যা আপনারা অনায়সে ভোগ করছেন) পিছনেই কঠোর সাধনা/গবেষণা রয়েছে, সে সাধনায় নতুন প্রজন্মের ধার্মিকদের মধ্যে বীজ রোপন করে দিন। আর নিজ জাতির পরিবর্তনটা দেখুন...

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



নতুন নকিব ভাইজান, কে সেইসব পীর-মাশায়েখ-উলামা যাদের কীর্তিতে জগত পাল্টে যায়? আমাদেরকেও জানান তাদের নাম-ধাম। নিজেরাও আলোকিত হই বুজুর্গানের দুনিয়া কাঁপানো কীর্তিতে!!!

-ভাই সাহেব,
এখানে মূলতঃ মুসলিম নারীদের প্রতি বর্তমান সময়ের একজন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীনের কিছু নসিহত তুলে ধরা হয়েছে। পার্থিব কীর্তির কোন বিষয়ে এখানে আলোচনা করা হয়নি। একইসাথে এ বিষয়ে উৎসাহিত বা নিরুৎসাহিত, কোনটাই করাও হয়নি। সুতরাং, দ্বীনি বিষয়াদিতে নসিহত করা হলে সেটাকে পার্থিব বিষয়ের সাথে গুলিয়ে ফেলার কোন যুক্তি দেখি না। এ কথা সত্য, পার্থিব গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ও এমন রয়েছে, যেগুলোতে মুসলিম নারীদের উন্নয়ন প্রয়োজন। শিক্ষায় তাদের উন্নতি প্রয়োজন, বিভিন্ন পেশায়ও তাদের দক্ষতার প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে। কথা হচ্ছে, সেগুলোকে তো এখানে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। তাহলে এইসব নসিহতে আপত্তি কেন?

মূলতঃ ইসলাম ধর্মের সত্যিকারের প্রাকটিসের বিষয়টি আমাদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি প্রথমে একজন মুসলিম তার ঘর তথা মাতৃক্রোড় থেকেই সর্বপ্রথম পেয়ে আসে। একজন আদর্শ মায়ের কাছ থেকেই যে একজন আদর্শ সন্তানের আশা করা যায় - এ কথা আপনার নিশ্চয়ই জানা রয়েছে। এই কারণে নারী জাতির প্রতি অনেক দরদ নিয়ে নসিহতমূলক এই কথাগুলো বলেছেন মুফতি আল্লামা তাকি উসমানি সাহেব।

অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য। বাকি কথার উত্তর নিয়ে আবার আসার ইচ্ছে, ইনশাআল্লাহ।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৯

নতুন নকিব বলেছেন:



নতুন নকিব ভাইজান, কে সেইসব পীর-মাশায়েখ-উলামা যাদের কীর্তিতে জগত পাল্টে যায়? আমাদেরকেও জানান তাদের নাম-ধাম। নিজেরাও আলোকিত হই বুজুর্গানের দুনিয়া কাঁপানো কীর্তিতে!!!

-এই বক্তব্যের মধ্যেই তো কারও কারও নাম এসে গেছে। আপনি মনযোগ দিয়ে পড়লে পেয়ে যাওয়ার কথা। ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম বুখারি রহিমাহুল্লাহ, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহিমাহুল্লাহ, ইমাম মালেক রহিমাহুল্লাহ, ইমাম শাফেয়ী রহিমাহুল্লাহ, ইমাম গাজ্জালী রহিমাহুল্লাহ, ইমাম নাসিরুদ্দীন আল বানী রহিমাহুল্লাহ, সাধককুল শিরোমনি মহাত্মা আব্দুল কাদের জিলানী রহিমাহুল্লাহ - এরা প্রত্যেকেই জ্ঞানের পথের আলোকিত পথিক। ইসলামের বিবিধ বিষয়ে এরকম অসংখ্য বরেণ্য ব্যক্তি নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করে আমাদের সামনে পথচলার পাথেয় রেখে গেছেন। কুরআনুল কারিমের সঠিক ব্যাখ্যা প্রণয়ন এবং হাদিস সংকলন থেকে শুরু করে কুরআন সুন্নাহর আলোকে মুসলিম জীবনে করণীয় বর্জনীয় ইসলামী শরিয়তের সহজ সরল ব্যাখ্যা বিশ্লেষন বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়ে গেছেন, পৃথিবীর কোটি কোটি মুসলিম তাদের রেখে যাওয়া সেসব ইলম থেকে আজও উপকৃত হচ্ছেন। হতে থাকবেন পৃথিবী নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। এরা বেঁচে থাকতে একেকজন ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ। লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত। ছিলেন অনুকরণীয় এবং অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত।

যুগশ্রেষ্ঠ এরকম বড় বড় আলেম উলামা এবং মনীষীগণের এইসব অবদানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। হ্যাঁ, ভাই, ইচ্ছে হলে আপনিও নিজেকে আলোকিত করে নিতে পারেন দুনিয়া কাঁপানো তাদের সেসব অমর কীর্তি দ্বারা। আর যদি মনে করেন যে, এ আর এমন কী, যা তারা করেছেন! তাহলে বলার কিছু থাকে না আমাদের। তখন আপনার কাছে ক্ষমা চেয়েই নিতে হয়।

অনেক ভালো থাকবেন, প্রার্থনা সবসময়। ধন্যবাদ। আপনার বাকি কথার উত্তর নিয়ে পুনরায় প্রত্যাবর্তনের ইচ্ছে থাকছে ইনশাআল্লাহ।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



তাহলে কী ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাকি সুন্নিরা, ফিলিস্তিনিরা, কাশ্মিরিরা নিজেদের অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক মুক্তির জন্য সঠিকভাবে আল্লাহ'র কাছে কিছু চাচ্ছেন না?

-চাচ্ছেন হয়তো। হয়তো চাচ্ছেন না। এগুলোর জন্য, এসব দেশ ও জনপদের মুসলিমদের দুরবস্থার জন্য বর্তমান সময়কার বিলাসিতায় গা ভাসানো মুসলিম নেতৃত্বকে দায়ী করতে পারেন। আলেম উলামা এবং দ্বীন ধর্ম নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের করণীয় এখানে আমার মতে মূখ্য নয়। দেশ ও জাতির নেতৃত্ব যারা দিয়ে থাকেন, জাতির অধিকাংশ বা অনেক সংখ্যক লোক বিভিন্ন জনপদে যখন নিষ্পেষন নিপীড়নে জর্জরিত, তখনও তাদের শীত নিদ্রা না ভাঙ্গা দুঃখজনক। মুসলমানদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক যেসব সমস্যা রয়েছে, সেসব সমস্যাসমূহের সমাধান আলেম ওলামা এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ করবেন, না কি রাজনৈতিকভাবে যারা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন রয়েছেন সেইসব নেতৃবৃন্দ করার ক্ষমতা রাখেন, আপনার উপলব্ধিতে ভালোভাবেই তা থাকার কথা।

কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআ'লা একটি কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন,

إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ

অর্থাৎ, আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। -সূরাহ আর র'দ এর ১১ নং আয়াতাংশ

তো শুধু ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাকি সুন্নি, ফিলিস্তিনি কিংবা কাশ্মিরি মুসলিম কেন? চীনে বসবাসকারী প্রায় ২ কোটি ৮১ লক্ষ মুসলিমের মধ্যে অধিকাংশই উইঘুর, এই উইঘুর মুসলিমের দুরবস্থার কথা বলবেন না? মিয়ানমারের প্রায় ২৪ লক্ষ মুসলিমের অধিকাংশেরই বসবাস আরাকানে, তো আরাকানের দুর্দশাগ্রস্থ লক্ষ লক্ষ মুসলিমের অবস্থা একবার ভাববেন না? এখনকার ভারতের প্রায় ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ মুসলিম যেভাবে চাপের মুখে কোনঠাসা, তাদের কথা বাদ দিবেন? আজকের ফ্রান্সে যে প্রায় ৫৭ লক্ষ মুসলিমের বসবাস, তাদের স্বাধীনতা কতটুকু?

কথা হচ্ছে, জাতির পথভ্রষ্টতা, পদস্খলন এবং দুরবস্থার গোটা দায় বিশেষ কিছু লোক বিশেষ করে আলেম ওলামাদের উপরে চাপিয়ে দেয়া অহেতুক। মুসলিমদের যুগের সাথে নিজেদেরকে পরিচালিত করতে হলে আধুনিকতা, সময়ের প্রয়োজনে উদ্ভাবন-আবিষ্কারে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই, এটাও সত্য। কিন্তু এই দায়িত্ব ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের একার, এটা বিশ্বাস করি না। আর ধর্ম মেনে চললেই যে এসব অর্জন করা যাবে না, তাও বিশ্বাস করি না।

দীর্ঘ মন্তব্যে আপনার দুঃখটা আসলে অনেক গভীর, বুঝতে পারি, জাতির অধঃপতন হয়তো আপনাকে নাড়া দেয়, কিন্তু একটু ইতিবাচকভাবে যদি নেন, তাহলে আপনিও আমার উত্তরগুলো বুঝতে পারবেন, আশা করছি। অনেক অনেক শুভকামনা আপনাকে। আরও কথা হবে ইনশাআল্লাহ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



কিছু মনে করবেন না নকিব ভাই, এই যে ভিক্ষাবৃত্তির মানসিকতা...এটাই আমার মতে মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। যাদেরকে আপনারা জ্ঞানের আধার, নক্ষত্রের ন্যায় আলোকময় বলে প্রচারণা করছেন...বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় ইনাদের এক কানাকড়ি মূল্য নেই। বিশ্বের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক উৎকর্ষতায় ইনারা ওর্থলেস ক্রিয়েচার। কথাটা শুনতে তিক্ত মনে হলেও এটাই চরম বাস্তবতা। যতদিন না এই ভিক্ষাবৃত্তির মানসিকতা থেকে আপনারা বের হয়ে আসতে পারছেন, ততদিন অন্যের ত্যাগ-তিতিক্ষা কিংবা কঠোর পরিশ্রমের ফসল (আধুনিক সভ্যতার সকল উপকরণ-যাতে এই বুজুর্গদের কানাকড়ি অবদান নেই) নিজেরা ব্যবহার করে নিজেদের দুর্দশার জন্য অন্যের ঘাড়ে (ইহুদি-নাসারা ও অন্যান্য) দোষ চাপিয়ে যাবেন। আর খোদার কাছে দোয়া ফরমাইতে থাকবেন..যে 'আমাদের দুর্দশা লাঘব করুন হে আল্লাহ'.....এই সব অবসলিট ভাবনা থেকে আমার মনে হয় বের হওয়ার সময় হয়েছে। ধর্ম কর্ম করেন ঠিক আছে....সাথে এক্সট্রিম ভাবনাকে প্রোপাগেইট না করে নতুন প্রজন্মকে ধর্মের পাশাপাশি আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা নিয়েও সবক দিন...জাতির প্রকৃত উন্নয়নের জন্য। আর ভিক্ষাবৃত্তির মনোভাব দূর করতে নতুনদের সহায়তা করুন। কোন কিছুই দুনিয়াতে ফর গ্রান্টেট না..মানে দোয়ায় হয় না....সব দুনিয়াবি জৌলুস (যা আপনারা অনায়সে ভোগ করছেন) পিছনেই কঠোর সাধনা/গবেষণা রয়েছে, সে সাধনায় নতুন প্রজন্মের ধার্মিকদের মধ্যে বীজ রোপন করে দিন। আর নিজ জাতির পরিবর্তনটা দেখুন...

-প্রিয় ভাই, কিছুই মনে করছি না, কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তি তো এটাকে বলে না। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করাকে আপনি ভিক্ষাবৃত্তি ধরে নিলেন! আমি কিছু মনে না করলেও এটা বড়ই আশ্চর্য্যজনক বিষয় বটে। দৈনন্দিন জীবনের পরতে পরতে মহান প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা একজন মুসলিমের তো প্রাণের খোড়াক। যাদের বিশ্বাস রয়েছে যে, আল্লাহ তাআ'লা সৃষ্টিকর্তা, পরকাল, জান্নাত জাহান্নাম সামনে রয়েছে, তারা প্রার্থনা করবেনই। প্রার্থনার নির্দেশনা স্বয়ং কুরআনুল কারিমে বহু স্থানে প্রদান করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে পবিত্র কুরআন এবং সহিহ হাদিস থেকে কিছু প্রমান দিচ্ছি-

আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্যের সাথে “সালাত”–এর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। যারা মুসিবতে বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর এবং আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’ -সুরা: ২ বাকারা, আয়াত: ১৫৩ ও ১৫৬

এখানে 'সালাত' অর্থ শুদ্ধি, পরিশুদ্ধি, নামাজ, দোয়া-দরুদ, তাসবিহ, রহমত ও ইস্তিগফার করা। -লিসানুল আরব, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩৯৭-৪০০

কুরআনুল কারিমে ইস্তিগফারের বহু নির্দেশনাও রয়েছে। যেমন ‘তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো; নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।’ -সুরা ৭১ নুহ, আয়াত ১০

‘[হে রাসুল (সা.)!] আপনি বলুন, হে আমার (আল্লাহর) বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করবেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সুরা ৩৯ জুমার, আয়াত ৫৩

‘তোমরা তোমাদের প্রভুর নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করো, নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। ফলে তিনি আল্লাহ তোমাদের প্রতি সুষম বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। আর তোমাদের সম্পদে প্রাচুর্য ও সন্তানে বরকত দেবেন এবং তোমাদের জন্য বাগবাগিচা পানির ফোয়ারায় শোভিত করবেন।’ -সুরা: ৭১ নুহ, আয়াত: ১০-১২

আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও আদি মাতা হযরত হাওয়া আলাইহিস সালাম যে ইস্তিগফার দ্বারা তওবা করেছিলেন তা হলো, ‘হে আমাদের রব! আমরা জুলুম করেছি আমাদের নফছের প্রতি, আপনি যদি ক্ষমা ও দয়া না করেন, আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ -সুরা: ৭ আরাফ, আয়াত: ২৩

তওবা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন।’ -সুরা: ২ বাকারা, আয়াত: ২২২

হাদিস শরিফে রয়েছে, ‘পাপ থেকে তওবাকারী নিষ্পাপ ব্যক্তির মতো।’ -সহিহ বুখারি

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘সকল আদম সন্তান পাপী, আর পাপীদের মধ্যে উত্তম হলো তওবাকারীগণ।’ -মুসলিম ও তিরমিজি

ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা স্বতন্ত্র একটি ইবাদত, যা আল্লাহ তাআলার খুবই পছন্দনীয়। তাই সব নবী–রাসুল মাসুম বা নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও বেশি বেশি ইস্তিগফার করতেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবীদের ইমাম ও রাসুলগণের সরদার হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকেও ইস্তিগফার করার নির্দেশ দিলেন। -সুরাহ: ১১০ নাছর, আয়াত: ৩

নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি দৈনিক সত্তরবার আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করি।’ -বুখারি, হাদিস ৬৩০৭

‘যে ব্যক্তি সর্বদা ইস্তিগফার করতে থাকে, আল্লাহ তাআলা তাকে সংকট থেকে মুক্তির পথ করে দেন। যাবতীয় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ও প্রশান্তি দান করেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দান করেন।’ -আবু দাউদ: ১৫১৮

সুতরাং, মহান প্রতিপালকের নিকট তওবা, ইস্তিগফার এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করাকে ভিক্ষাবৃত্তি বলা একজন জ্ঞানী ব্যক্তির পক্ষে শোভন কি না, বুঝতে পারছি না।

যা-ই হোক, আপনি পার্থিব উন্নতির সাথে আত্মিক বিষয়গুলোকে গুলিয়ে ফেলেছেন বলেই এমন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন বিশ্বাসী মুসলিম প্রার্থনাসহ তার দৈনন্দিন জীবনের বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলোতে ইসলামী শরিয়াহ প্রবর্তিত দোয়া তাসবিহ এবং জিকরের অনুশীলন করতে থাকলে তাতে কি তার পার্থিব উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়? আমাদের ধারণা, এমনটা ঘটে না। পার্থিব জীবনের নানা ক্ষেত্রে উন্নতি অগ্রগতিতে ইসলাম বাধাও দেয় না। বরং আমাদের জানামতে, এগুলো পরিমিত পরিমানে অর্জনে উৎসাহিতই করে থাকে। ইসলাম বৈরাগ্যবাদকে অনুমোদন দেয় না। সমাজ-সংসারের গোছানো বন্ধন ছিন্ন করে বনে জঙ্গলে ছন্নছাড়া জীবনের স্থান ইসলামে আদৌ নেই। এই জন্যই হাদিসে বর্নিত হয়েছে, 'লা- রুহবানিয়্যাতা ফিল ইসলাম', অর্থাৎ, 'ইসলামে বৈরাগ্যবাদ নেই'। অতএব, এসব ব্যাপারে আমাদের ভুল ধারণাগুলোর নিরসন হওয়া প্রয়োজন।

আর যাদের বিষয়ে আপনি বলেছেন যে, বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় ইনাদের এক কানাকড়ি মূল্য নেই আপনার কথাটা হয়তো পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ, আধুনিকতার ছোঁয়ায় পরিবর্তিত বর্তমান পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রায় দু'শো কোটি মুসলিম এখনও তাদের জ্ঞানের দ্বারা উপকৃত হচ্ছেন। তাদের রেখে যাওয়া অনুকরণীয় আদর্শ দ্বারা পাথেয় খুঁজে পাচ্ছেন। সুতরাং, তারা এই সময়ে এসেও আসলে অপাঙক্তেয় হয়ে যাননি। যদিন যেতেনই তাহলে তাদেরকে কেউ মনেই রাখার কথা নয়। তাই না?

আলোচনা লম্বা হয়ে যাচ্ছে বিধায় ক্ষান্ত দিতে হচ্ছে। আপনার অনুধাবন করার ইচ্ছে থাকলে ইনশাআল্লাহ এ কথাগুলোই যথেষ্ট হবে। অনেক অনেক কল্যানের প্রার্থনা আপনার জন্য।

৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আমার মনে হয় ,সুখে-দুঃখে সর্বদা মহান আল্লাহর উপর খুশি থাকা এবং তার শুকরিয়া আদায় করা, সর্বদা দু'য়া ও দান-সাদকা এ তিন গুণ যে মানুষের নিকট থাকে সে আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) এর অধিক নিকটবর্তী হবে বা হওয়ার সুযোগ থাকে।

মহান আল্লাহপাক আমাদের সকলকে এসব গুন অর্জন ও যথাযথ আমল করার তওফিক দান করুন।
সাথে সাথে নতুন নকিব ভাই আপনার জন্য দোয়া রইলো প্রয়োজনীয় ও চমতকার বিষয়ে লেখার জন্য।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২০

নতুন নকিব বলেছেন:



আসলে আমাদের ব্যক্তি জীবনের ছোটখাট কাজকর্ম থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রেই ইসলামী শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগ থেকে আমরা দূরে। এই কারণে আমাদের কাজেকর্মে বারাকাহ নেই। প্রাচুর্য্য-প্রাণময়তা নেই। যদিও প্রতিটি কাজেই চমৎকার অর্থবহ এবং ফজিলতপূর্ণ দোআ এবং জিকর নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে কিন্তু আমরা দৈনন্দিন ব্যবহার্য্য এসব দোআ জিকরের অনুশীলনে বলা চলে উদাসীনতার সাথেই অনভ্যস্ত। দিনকে দিন আমাদের এই অনভ্যস্ততা বেড়ে চলায় আমাদের আচার-আচরণ থেকে ধর্মীয় সৌন্দর্য্য বিদায় নিচ্ছে। ফলে আমাদের ছোট ছোট শিশুরা পর্যন্ত 'ফি আমানিল্লাহ', 'জাজাকাল্লাহ' এর মত দোয়া এবং আশির্বাদপূর্ণ শ্রুতিমধুর ও ছন্দময় শব্দের পরিবর্তে 'বাই বাই' আর 'থ্যাঙ্কু' নামক বুলি মুখে তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছে। এগুলোর প্রাকটিস একটি শিশুর জীবনে সর্বপ্রথম আপন ঘর তথা মায়ের কাছ থেকেই শিখতে পারে। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেই শিখতে পারে। আপনজনদের মাধ্যমেই এসব অর্থবহ শব্দের সাথে একটি শিশুর প্রথম পরিচয়লাভ সম্ভব হতে পারে।

কেন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের ওঠাবসা, চলাফেরা, চালচলন এবং কথাকাজে অন্যদের কাছে ধরণা ধারতে যাব? আমাদের কৃষ্টি কালচারে কী নেই? আমাদের ধর্মীয় শিক্ষায় কোন জিনিষের অভাব? ঘুম থেকে জেগে ওঠার পরেও আমাদের শুকরিয়া জানানোর চমকপ্রদ দোআ পাঠের পদ্ধতি শেখানো হয়েছে। আমাদেরকে বলা হয়েছে, নিদ্রা থেকে জাগার পরে তুমি পাঠ করে নাও 'আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি- আহইয়ানা- বা'দা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিননুশূ-র', অর্থাৎ, 'সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ তাআ'লার যিনি আমাকে মৃত্যুবরণের পরে পুনরায় জীবিত করলেন'। আহ! কী চমৎকার কথা! মৃত্যুর পরে পুনরায় জীবনদান! হ্যাঁ, মৃত্যুই তো! ঘুম তো মৃত্যুর মতই! মৃত্যুরই যেন একটি প্রারম্ভিক অবস্থা ঘুম। সে কারণেই ঘুমকে মৃত্যু বলা হয়েছে এখানে। ঘুমকে মৃত্যু বলা হলো কেন? কারণ রয়েছে এরও। ধরুন, আমি ঘুমিয়ে আছি। গভীর ঘুমে মগ্ন আমি। আমার পাশেই কত কিছু ঘটে গেছে আমি জানি না। ঘুমিয়েছি রাতে। সকালবেলা জেগে উঠে দেখতে পাই যে, আমার ঠিক পাশেই শায়িত পরিবারের কাছের মানুষটি আর নেই। একইসাথে ঘুমালাম। জেগে ওঠার কথাও একইসাথে। কিন্তু তিনি আর জাগছেন না। আর জাগবেন না কোনও দিনই। তিনি নেই। মারা গেছেন। মৃত্যুবরণ করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এই যে তিনি চলে গেলেন, আমার পাশেই ছিলেন। আমিও তার কাছে ছিলাম। কিন্তু আমি কিছুই জানতে পারিনি। কিছুই অনুভব করতে পারিনি। এই যে এতটা কাছে থেকেও কিছুই অনুভব করতে না পারা, এর কারণ কি? এর কারণটাই হচ্ছে, ঘুম মৃত্যুরই প্রারম্ভিক একটি ধাপ। তো, এই কারণেই ঘুমকে মৃত্যু আখ্যায়িত করা হয়েছে হাদিসে এবং ঘুম নামক মৃত্যুর পরে পুনর্জীবনলাভের কারণে যিনি পুনরায় জীবন ফিরিয়ে দিলেন সেই মহান মালিকের দরবারে প্রথমেই শুকরিয়া আদায় করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আহ! কী অদ্ভূত সুন্দর ব্যবস্থা! কী অসাধারণ মুগ্ধতায় পূর্ণ পথ ও পদ্ধতি!

শুকরিয়া চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

৪| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:২৯

আরোগ্য বলেছেন: প্রিয়তে থাক, সময় সুযোগ মত পড়ে নিবো ইনশাআল্লাহ।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২১

নতুন নকিব বলেছেন:



পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায় কৃতজ্ঞতা। শুভকামনা সবসময়।

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:০৪

স্বদেশ১ বলেছেন: শিক্ষনীয় বিষয়।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫১

নতুন নকিব বলেছেন:



মন্তব্যে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

শুভকামনা জানবেন।

৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:০৪

স্বদেশ১ বলেছেন: শিক্ষনীয় বিষয়।

৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২৯

আখেনাটেন বলেছেন: @নতুন নকিব ভাই, প্রথম কথা হচ্ছে আপনি আমার মন্তব্যের মোটিভ ধরতে পারেন নি। এই না পারার জন্য আপনাকে দোষও দিচ্ছি না। কারণ আপনি যে এঙ্গেলে চিন্তা করছেন/করেন সেটা থেকে হুট করে বের হওয়াও এতটা সহজ নয়।

একটা উদাহরণ দেই: ধরুন, মি: করিম ও মি: রহিম দুই ভাই এবং দুজনেই ধার্মিক। দুজনেরই কুরআন ও হাদিসে ভালো দখল আছে।

মি: করিম দেশের কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং' বিভাগ থেকে পড়াশুনা করে দেশে থেকে বিদেশের একটি সফটওয়্যার ফার্মে বর্তমানে 'ফুল স্ট্যাক ইঞ্জিনিয়ার' হিসেবে বেশ ভালো বেতনে কর্মরত। এর পাশাপাশি তিনি নিজে দেশের কৃষকদের পণ্যের সঠিক দাম না পাওয়ার সমস্যাটি সমাধানের জন্য একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন এবং দিন রাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে সাথে আরো তিনজনকে নিয়ে। আর এই কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি তারা যেহেতু ধার্মিক সেহেতু সৃষ্টিকর্তার কাছেও এই উদ্যোগ সফল হওয়ার জন্য দিনে পাঁচবার নামাজের পর হাত তুলে মোনাজাত করেছে যে তারা যেন এতে কামিয়াব হয়। এছাড়াও মি: করিম আরো কিছু ছেলে-মেয়েকে প্রোগামিং শিখিয়ে এই টেকনোলজি ব্যবহার করে কীভাবে সমাজের দুর্দশা লাঘব করা যায় তা নিয়ে বক্তৃতা দেন। এবং অভিভাবকদের বলেন ছোট বাচ্চাদের যেন স্কুল লেভেল থেকে ধর্মীয় জ্ঞানের পাশাপাশি কোডিং নিয়ে উৎসাহ প্রদান করা হয়।

অন্যদিকে মি: রহিম দেশের একটি কওমি মাদ্রাসা থেকে হাদিস, ফিকাহ শাস্ত্র, ইসলামিক জুরিস্প্রুডেন্স ইত্যাদি ইত্যাদির উপর ডিগ্রি নিয়ে এখন একজন দেশের নামকরা মুফতি। পাশাপাশ মিশরের আল-আযহার থেকেও ডিগ্রিধারি। এখন তাঁর বক্তৃতা শুনার জন্য দেশে লোকজন হুড়োহুড়ি শুরু করে। তিনি দেশের কৃষকদের পণ্যের সঠিক দাম না পাওয়ার জন্য আল্লাহর অভিশাপের কথা বলেন। দেশের লোকজন গোমরাহীতে আসক্ত, দ্বীনি সঠিক পথে নেই বলেই আমরা আজ নিপীড়িত ইত্যাদি জ্ঞানগর্ভ কথা কুরআনের আয়াত, হাদিস শাস্ত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেন। আর মানুষকে আরো বেশি বেশি আল্লাহর কাছে নিজেদের উন্নতির জন্য দিন রাত দোয়া করতে বলেন।

এবার বলুন, মুসলিম বিশ্বের উন্নতির জন্য উপরের দুই জনের কোন জনকে আপনি বেছে নেবেন। এবং কেন নেবেন? আর অন্যটা না নিলে কেন নিবেন না। আবার দুটোই নিলে যুক্তিও তুলে ধরুন।

কোনটা ভিক্ষাবৃত্তি আর কোনটা প্রকৃত দোয়া। কোনটার জন্য মুসলিম তথা মানব জাতির উৎকর্ষ সাধিত হবে। আর কোনটা মানব তথা মুসলিম জাতির উন্নতির জন্য এক কানাকড়ি মূল্য নেই। দুনিয়াতে এ জিনিস থাকলেও কোনো লাভ নেই....না থাকলেও কোনো ফারাক হয় না...?

ভাইজান, উপরের আমার এই ধরনের মন্তব্যে আপনি কষ্ট পেয়ে থাকলে দু:খিত। শুধু এতটুকু বলি, আমার ধার্মিক লোক নিয়ে কোনো প্রকার বিদ্বেষ নেই তা যে ধর্মেরই হোক..বরং আমি তাদের ভালো পাই......আমার সমস্যা হচ্ছে 'অতি ধার্মিক' লোকেরা আমার চোখের বিষ তা সকল ধর্মের ক্ষেত্রেই....আমার ভুল হতে পারে...তবে এই 'অতি ধা্র্মিকেরা' আমার কাছে মনে হয় দুনিয়ার আবর্জনা। আমার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে আবারও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ধার্মিকেরা ধর্ম পালন করবে তবে তা মি: করিমের মতো.....এই ধারণা আমার মধ্যে প্রোথিত হয়ে গেছে....দেখেন আপনি আপনার জ্ঞানের দ্বারা মি: রহিমকেও সমাজের জন্য গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারেন কিনা যা আমিও বিশ্বাস করতে পারি?

ব্লগে গত দুদিনে মনে হয় এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করলাম।

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন নকিব ভাই।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই,
বললে অনেক কথাই বলা যায়। এখন আর অত ব্যাখ্যা বিশ্লেষনে যেতে চাচ্ছি না। আমার মূল কথা হচ্ছে, এই পোস্টটি মূলতঃ মুসলিম নারীদের উদ্দেশে আল্লামা তাকি উসমানি সাহেবের একটি নসিহত বা উপদেশমূলক বক্তব্য মাত্র। পোস্টের প্রেক্ষিতে আপনার প্রথম মন্তব্যের কথাগুলো আপনিই ভাবুন।

কথা হলো, আল্লামা তাকি উসমানি সাহেব তার এই বক্তব্যে ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা বা ভুল কোন কিছু বলেছেন বলে আপনি মনে করেন কি না। যদি সেরকম কিছু আপনার দৃষ্টিতে ধরা পড়ে তাহলে নির্দ্ধিধায় বলতে পারেন। তাতে আমারও সুবিধা হবে। কারণ, আপনার এই বিচক্ষনতার দ্বারা আমিও নিজেকে শুধরে নেয়ার একটা সুযোগ হয়তো লাভ করতে পারবো।

অনেক অনেক শুভকামনা জানবেন।

৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৪

জুল ভার্ন বলেছেন: গুড পোস্ট।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



মোবারকবাদ, প্রিয় ভাই। প্রার্থনা, যাতে আল্লাহ তাআ'লা অনেক অনেক কল্যানে রাখেন আপনাকে।

৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৫২

নীলা(Nila) বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া, কেমন আছেন আপনি? ভাইয়া আমাকে একটি কবিতা উপহার দিবেন, বিষয় উল্লেখ করে দিতাম, দিলে উপকৃত হতো, এবং কৃতজ্ঞ থাকব

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:১৬

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো আছি আমরা। আপনি কেমন আছেন? আমি তো খুব ভাল কবিতা লিখতে পারি বলে মনে হয় না। তারপরেও আপনার কোন ধরণের কবিতার প্রয়োজন, কী কাজে প্রয়োজন- যদি একটু বলেন, হয়তো চেষ্টা করে দেখতে পারি।

অনেক অনেক শুভকামনা জানবেন।

১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:১০

নীলা(Nila) বলেছেন: দোয়া করি সব সময় সবাই মিলে ভালো ও সুস্থ থাকেন।আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।আপনি যা লিখেন তাতেই আমি মুগ্ধ।এই কোম্পানি বছরে ২বার বাহির টুর দেয় সবাই কে নিয়ে, এবং কয়েক দিন পরে আমাদের ঔষধ কোম্পানি থেকে কক্সবাজার মিটিং সহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। সেই অনুষ্ঠানে আপনার লেখা একটি কবিতা পড়ে শুনাতে চাই, কোম্পানি ও কোম্পানির এমডি মহোদয়ের প্রশংসা এবং এগিয়ে চলা নিয়ে।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার জন্য কয়েক লাইনের কিছু একটা লিখেছি। লেখাটাকে কবিতা বলা যাবে কি না, বলা মুশকিল। আপনার কোনো মেইল আইডি বা হোয়াটসএ্যাপ আইডি দিলে পাঠাতে পারবো।

অনেক ধন্যবাদ।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:২২

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ আপনাকে। দেরি করার জন্য দুঃখিত। প্রায় অনেকটা সময় ব্লগের বাইরে থাকার কারণে আপনাকে অপেক্ষায় রাখতে হয়েছে। লেখাটা আজকেই আপনাকে দিয়ে দিব ইনশাআল্লাহ।

আর আপনি চাইলে আপনার শেষের কমেন্ট দুইটা মুছে দিতে পারি। কারণ, পার্সোনাল নাম্বার এবং মেইল পাবলিকলি থাকাটা কেমন যেন অন্যরকম। আপনার মতামত জানালে ভাল হতো।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



পাঠিয়েছি। দয়া করে আপনার মেইল চেক করুন।

আর আপনার ফোন এবং মেইলযুক্ত কমেন্টগুলো মুছেই দিলাম। আশা করি, কষ্ট নিবেন না।

অনেক অনেক শুভকামনা।

১১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:২২

নীলা(Nila) বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া, সমস্যা নাই.... আমার হাতে বেশ কয়েক দিন সময় আছে। আর আমি আমাকে লিখে দিয়েছেন এইটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। ঠিক আছে ভাইয়া, তাহলে বাকি দুটো কমেন্ট মুছে দেন

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, মুছে দিয়েছি। ওটা দেখার পরে সম্ভব হলে আপনার অভিব্যক্তি জানাবেন।

১২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৫৫

নীলা(Nila) বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না, আপনার জন্য আমার থেকে এক সমুদ্র ভালোবাসা পাঠিয়ে দিলাম রিসিভ করে নিবেন অনুগ্রহ করে। আমার কাছে অনেক বেশিই ভালো লেগেছে। বেঁচে থাকেন হাজার বছর

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.