নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ক্ষুদ্র মানবজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অদ্ভূত কিছু সাযুজ্য যা ভাবনার খোড়াক যোগায়
একটি নবজাতক যখন জম্মগ্রহণ করে, পৃথিবীর আলো-বাতাসের মুখ প্রথম দেখে, তখন তার কানে আযান দেয়া হয়। আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে, আযান দেয়া হলেও তখন কোন সালাত আদায় করা হয় না। কিন্তু সেই নবজাতকই তার পার্থিব জীবনের পরিসমাপ্তিতে একটি সময়ে এসে যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন একটি সালাত (জানাযা) ঠিকই আদায় করা হয় যে সালাতের পূর্বে দেয়া হয় না কোন আযান। -কি অসাধারণ একটি বিষয়! ভাবনার খোড়াক নয় কি?
নবজাতকের কানে আযান দেওয়া সুন্নাত। একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَذَّنَ فِي أُذُنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصَّلَاةِ
হযরত উবায়দুল্লাহ বিন আবী রাফে তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ফাতিম রাঃ যখন হাসান বিন আলী রাঃ কে প্রসব করলেন, তখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হযরত হাসান বিন আলীর কানে সালাতের আজানের মত আজান দিতে দেখেছি। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫১০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৫১৪
আবার, একজন নবজাতক মানবশিশু যখন মাতৃগর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পরে পৃথিবীতে প্রথম চোখ তুলে তাকায়, তার আদৌ জানা থাকে না, মাতৃগর্ভের ভিন্ন এক জগত থেকে কে তাকে বের করে এনেছে এবং কেইবা তাকে তুলে দিয়েছে স্নেহময়ী মায়ের কোলে। ঠিক একইরকমভাবে তার এ বিষয়টিও অজানাই থেকে যায় যে, মৃত্যুর পরে কে/ কারা আলগোছে এবং অতি সন্তর্পনে তাকে শুইয়ে রেখ যায় কবর নামক নতুন গৃহাভ্যন্তরে। -মানব জীবনের কি আজব এক নিরন্তর চলমানতা! চিন্তার বিষয় নয় কি?
আমাদের আশ্চর্যজনক জীবন পরিক্রমার বর্ণনা উঠে এসেছে পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে। এক স্থানে ইরশাদ হয়েছে-
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّنَ الْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِن مُّضْغَةٍ مُّخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِّنُبَيِّنَ لَكُمْ ۚ وَنُقِرُّ فِي الْأَرْحَامِ مَا نَشَاءُ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ۖ وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّىٰ وَمِنكُم مَّن يُرَدُّ إِلَىٰ أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِن بَعْدِ عِلْمٍ شَيْئًا ۚ وَتَرَى الْأَرْضَ هَامِدَةً فَإِذَا أَنزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ وَأَنبَتَتْ مِن كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ
হে লোকসকল! যদি তোমরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্দিগ্ধ হও, তবে (ভেবে দেখ-) আমি তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি। এরপর বীর্য থেকে, এরপর জমাট রক্ত থেকে, এরপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট মাংসপিন্ড থেকে, তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্যে। আর আমি এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই, এরপর আমি তোমাদেরকে শিশু অবস্থায় বের করি; তারপর যাতে তোমরা যৌবনে পদার্পণ কর। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে নিষ্কর্মা বয়স পর্যন্ত পৌছানো হয়, যাতে সে জানার পর জ্ঞাত বিষয় সম্পর্কে সজ্ঞান থাকে না। তুমি ভূমিকে পতিত দেখতে পাও, অতঃপর আমি যখন তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন তা সতেজ ও স্ফীত হয়ে যায় এবং সর্বপ্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ উৎপন্ন করে। -সূরাহ আল হাজ্জ, আয়াত ০৫
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَىٰ
এ মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃজন করেছি, এতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং পুনরায় এ থেকেই আমি তোমাদেরকে উত্থিত করব। -সূরাহ ত্ব-হা-, আয়াত ৫৫
একজন নবজাতক যখন জম্মগ্রহণ করে, সে জানে না, তার আগমনে কে খুশি হয়েছে এবং কে তাকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার সে যখন মৃত্যুবরণ করে, তখনও তার জানা থাকে না, কে তার জন্যে কেঁদে অশ্রু ঝড়ায় কিংবা কে তার বিদায়ে দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে শোকের সাগরে ভাসতে থাকে। -শুরু এবং শেষে কি আশ্চর্য্যরকম মিল! শিক্ষার বিষয় নয় কি?
কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে-
وَأَنَّهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَىٰ
এবং তিনিই হাসান ও কাঁদান
وَأَنَّهُ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا
এবং তিনিই মারেন ও বাঁচান,
وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنثَىٰ
এবং তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল-পুরুষ ও নারী। -সূরাহ আননাজম, আয়াত ৪৩-৪৫
জন্মের পরে নবজাতককে গা-গোসল ইত্যাদির মাধ্যমে উত্তমরূপে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করানো হয়। ঠিক একইরকমভাবে মৃত্যুর পরেও আবার তাকে গোসল দিয়ে উত্তমরূপে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করানো হয়। -কি অদ্ভূত সাযুজ্য! ভাববার বিষয় নয় কি?
হযরত উম্মে আতিয়্যা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত যে, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কন্যা যয়নব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা -এর ইনতিকালের পরে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু মহিলাকে হুকুম করলেন, তোমরা তাকে গোসল করাও, তিনবার অথবা পাঁচবার অর্থাৎ বেজোড় সংখ্যায় শরীরে পানি ঢালবে এবং তাকে বরই পাতা মিশ্রিত গরম পানি দ্বারা গোসল দিবে।
বরই পাতা দ্বারা গরমকৃত পানি দিয়ে মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানো মুস্তাহাব। এর দ্বারা উপকার হচ্ছে- এর দ্বারা ময়লা দূর হয় এবং মৃত ব্যক্তির লাশ দেরীতে নষ্ট হয়। -তিরমিযী শরীফ, খন্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১৯৩, রদ্দুল মুহতার, খন্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১৯৬, বাদায়িউস সানায়ে, খন্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৩০১
একজন মানুষ, সে এই পৃথিবীর যত বড় বিখ্যাত কেউ হোন অথবা, অজানা অচেনা পথের ফকিরই হোন, মাতৃগর্ভ নামক একটি জগত পেরিয়েই প্রত্যেককে এই পৃথিবীর আলো বাতাসে আসতে হয়েছে। পৃথিবীতে এসে রাজা বাদশাহ হয়ে রাজসিংহাসনে বসলেও যখন সে মাতৃগর্ভে ছিল, তাকে থাকতে হয়েছিল নিতান্ত সংকীর্ণ ও অন্ধকার একটি স্থানেই। আবার পার্থিব জীবনের পরিসমাপ্তিতে মৃত্যুর যবনিকা পেরিয়ে যখন তাকে কবরে রাখা হয়, রাখা হয়ে থাকে ঠিক সংকীর্ণ ও অন্ধকার একটি স্থানেই। তার মানে, বেশি জায়গা দখল করে বিলাসী জীবনের সুযোগ শুরু এবং শেষ - কোনটাতেই নেই। -কি আশ্চর্য্য সামঞ্জস্য আদি এবং অন্তে! উপদেশ গ্রহণের বিষয় নয় কি?
একটি নবজাতকের জন্মগ্রহণের পরে তাকে সদ্য কিনে আনা উত্তম কাপড়ে জড়িয়ে নেয়া হয়। আবার যখন সে মৃত্যুবরণ করে, তার শরীরেও জড়িয়ে দেয়া হয় অনুরূপই ধবধবে সাদা উত্তম কাপড়। -কি অদ্ভূত মিল! শেখার কিছু থাকে তো কেবলমাত্র জ্ঞানবানদের জন্যই!
নবজাতকের জন্মলাভের পরে ধীরে ধীরে সে বড় হয়। এখানকার লোকেরা তাকে তার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে প্রশ্ন করে। নানান স্থানে নানানজনকে এই প্রশ্নের উত্তর জীবনে বহুবার তাকে দিতে হয়। ঠিক একইরকমভাবে জীবনের পাট চুকিয়ে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহনের ভেতর দিয়ে ঐ পাড়ে চলে যাওয়ার পরে তাকে যখন কবরে রেখে আসা হয় ফেরেশতাগণ এসে তাকে প্রশ্ন করেন তার জীবনে কৃত আমলগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়ার জন্য। -দুই জীবনের মাঝে কি অসাধারণ মিল! প্রিয় বন্ধু, বিষয়গুলো শিক্ষনীয় নয় কি? সুতরাং, প্রস্তুতি নেয়ার এখনই সময় নয় কি?
পরকালের প্রথম ধাপ কবর। কবরে বান্দাকে তিনটি বিশেষ প্রশ্ন করা হবে। বিখ্যাত সাহাবি হযরত বারা বিন আজেব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কবরে মানুষকে তিনটি প্রশ্ন করা হবে— এক. তোমার রব কে? দুই. তোমার দ্বিন কী? তিন. এই ব্যক্তি কে ছিলেন, যাঁকে তোমাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল? কবরবাসী যদি মুমিন হয়, তাহলে এসব প্রশ্নের যথাযথ জবাব দিতে পারবে। আর যদি কাফির হয়, তাহলে বলবে, আফসোস! আমি কিছুই জানি না। -আবু দাউদ, হাদিস : ৪৪৫৩; তিরমিজি, হাদিস : ৩১২০
০৫ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:২২
নতুন নকিব বলেছেন:
সাযুজ্য মানে সাদৃশ্য বা মিল। সংযোগ, সহযোগ, অভেদ এবং সমরূপের মত প্রভৃতি শব্দও একই অর্থে ব্যবহৃত হয়।
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:০৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভেবেছিলাম এই পোস্ট নিয়ে কিছু লিখবো। কিন্তু লিখলাম না। কারণ আপনি আগের পোস্টের মন্তব্যগুলির জবাব না দিয়ে নতুন পোস্ট দিয়েছেন।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:০৮
নতুন নকিব বলেছেন:
কিছু দিন যাবত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পাশাপাশি নিজেও কিছুটা অসুস্থতা নিয়ে আছি। যার কারণে পোস্ট, মন্তব্য বা মন্তব্যের উত্তর সবকিছুতেই সমস্যা। দুঃখিত! আপনার মনোকষ্টের কারণ হওয়ার জন্য।
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:১৫
নতুন নকিব বলেছেন:
পুনরায় ফিরে আসায় ধন্যবাদ আপনাকেও।
৪| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:০৩
কালো যাদুকর বলেছেন: ধন্যবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
জন্মের সময় যে আযান দেয়া হয় সেটা জানাযার নামাজের আজান।
মানুষের জীবন হচ্ছে আযান থেকে নামাজ আদায়ের সময়ের মধ্যবর্তী সময়টুকু মাত্র।
ধন্যবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
জন্মের সময় যে আযান দেয়া হয় সেটা জানাযার নামাজের আজান।
মানুষের জীবন হচ্ছে আযান থেকে নামাজ আদায়ের সময়ের মধ্যবর্তী সময়টুকু মাত্র।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:১৫
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া। জাজাকুমুল্লাহ।
৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫২
খায়রুল আহসান বলেছেন: চিন্তা করার অনেক কিছুই আছে। স্মরণ করিয়ে দেয়ার আপনার এ প্রয়াসের জন্য ধন্যবাদ।
তবে, জানাযার সালাত সালাত নয় বলে জেনেছি। কারণ সালাতে রুকু-সিজদার বিধান রয়েছে, যা জানাযার সালাতে নেই। এটা মৃত ব্যক্তির জন্য শেষ দোয়া, ক্ষমা চাওয়া এবং সম্মান জানানোর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৭
নতুন নকিব বলেছেন:
সালাত শব্দটি দ্বারা সাধারণত আমরা নামাজ বুঝে থাকলেও আসলে এটি একাধিক অর্থে ব্যবহৃত একটি শব্দ। যেমন, জানাযার নিয়্যাতের মধ্যে আমরা বলে থাকি ওয়াসসলাতু আলান্নাবিয়্যি। এখানে সালাত দ্বারা দরূদ বুঝানো হয়ে থাকে। আর পবিত্র কুরআনে সালাত শব্দটি অনেক অর্থ প্রকাশক হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। যেমন-
১। ফরজ নামাজ অর্থে। ইরশাদ হয়েছে-
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ
আর নামায কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাযে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়। -সূরা আল বাকারাহ, ৪৩
২। অনুগ্রহ অর্থে। যেমন, বর্ণিত হয়েছে-
أُولَـٰئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ
তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত। -সূরা আল বাকারাহ, ১৫৭
৩। রহমত বা করুণা বর্ষন এবং দয়া ও করুণার দোয়া বুঝাতে। যেমন, ইরশাদ হয়েছে-
هُوَ الَّذِي يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلَائِكَتُهُ لِيُخْرِجَكُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ ۚ وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
তিনিই তোমাদের প্রতি রহমত করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও রহমতের দোয়া করেন-অন্ধকার থেকে তোমাদেরকে আলোকে বের করার জন্য। তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু। -আল আহযাব, ৪৩
৪। ক্ষমা প্রার্থনা অর্থে। যেমন, কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
তাদের মালামাল থেকে যাকাত গ্রহণ কর যাতে তুমি সেগুলোকে পবিত্র করতে এবং সেগুলোকে বরকতময় করতে পার এর মাধ্যমে। আর তুমি তাদের জন্য দোয়া কর, নিঃসন্দেহে তোমার দোয়া তাদের জন্য সান্ত্বনা স্বরূপ। বস্তুতঃ আল্লাহ সবকিছুই শোনেন, জানেন। -আত তাওবাহ, ১০৩
৫। কুরআন তিলাওয়াত বুঝাতেও ব্যবহৃত হয়েছে এই শব্দটি। যেমন,
قُلِ ادْعُوا اللَّهَ أَوِ ادْعُوا الرَّحْمَـٰنَ ۖ أَيًّا مَّا تَدْعُوا فَلَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذَٰلِكَ سَبِيلًا
বলুনঃ আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই। আপনি নিজের নামায আদায়কালে স্বর উচ্চগ্রাসে নিয়ে গিয়ে পড়বেন না এবং নিঃশব্দেও পড়বেন না। এতদুভয়ের মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন। -ইসরা, ১১০
৬। ভয়ের নামাজ অর্থে। যুদ্ধের ময়দানে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে এবং সৈনিকদের জীবনে ঝুঁকি তৈরি হলে বিশেষ পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয়। শরিয়তের পরিভাষায় তাকে ‘সালাতুল খাউফ’ বা ভয়ের নামাজ বলা হয়। কুরআনে ‘সালাত’ শব্দ দ্বারা বিশেষ এই নামাজকেও বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ বলেন,
وَإِذَا كُنتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِّنْهُم مَّعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِن وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَىٰ لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ
আর আপনি যখন তাদের মধ্যে অবস্থান করবেন এবং তাদের সঙ্গে নামাজ আদায় করবেন, তখন তাদের একদল আপনার সঙ্গে যেন দাঁড়ায় এবং তারা যেন সশস্ত্র থাকে। -আন নিসা, ১০২
৭। জানাজার নামাজ বুঝাতে। সালাত দ্বারা জানাজার নামাজও উদ্দেশ্য নেওয়া হয়েছে। আল্লাহ মুনাফিকদের ব্যাপারে বলেন,
وَلَا تُصَلِّ عَلَىٰ أَحَدٍ مِّنْهُم مَّاتَ أَبَدًا وَلَا تَقُمْ عَلَىٰ قَبْرِهِ ۖ إِنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُوا وَهُمْ فَاسِقُونَ
তাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হলে তুমি কখনো তার জন্য জানাজার নামাজ পড়বে না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না; তারা তো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অস্বীকার করেছিল এবং পাপাচারী অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। -আত তাওবাহ, ৮৪
৮। জুমুআর নামাজ বুঝাতে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। -জুমুআহ, ৯
৯। নামাজের জামাত অর্থে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ اتَّخَذُوهَا هُزُوًا وَلَعِبًا ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَعْقِلُونَ
তোমরা যখন নামাজের (জামাতে সমবেত হওয়ার) জন্য আহ্বান করো, তখন তারা তাকে হাসি-তামাশা ও ক্রীড়ার বস্তুরূপে গ্রহণ করে। -আল মায়িদা, ৫৮
১০। ইবাদতের স্থান বুঝাতে। সালাত শব্দটি কুরআনে ইবাদতের স্থান অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا
আল্লাহ যদি মানবজাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তা হলে বিধ্বস্ত হয়ে যেত খ্রিস্টান সংসারবিরাগীদের উপাসনাস্থান, গির্জা, সালাওয়াত তথা ইহুদিদের উপাসনালয় এবং মসজিদগুলো, যাতে অধিক স্মরণ করা হয় আল্লাহর নাম। -আল হজ, ৪০
১১। দরূদ অর্থে। যেমন, ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ ۚ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর। -আল আহজাব, ৫৬
১২। দ্বীনদারি বুঝাতে। যেমন, কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
قَالُوا يَا شُعَيْبُ أَصَلَاتُكَ تَأْمُرُكَ أَن نَّتْرُكَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا أَوْ أَن نَّفْعَلَ فِي أَمْوَالِنَا مَا نَشَاءُ ۖ إِنَّكَ لَأَنتَ الْحَلِيمُ الرَّشِيدُ
তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার নামায কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক। -সুরা হুদ, ৮৭
মূল্যবান মন্তব্য রেখে যাওয়ায় কৃতজ্ঞতাসহ অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: শিরোনামে সাযুজ্য শব্দটা লিখেছেন। মানে কি? মুক্ত/মুক্তি?