নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

লাইনের কারিশমা ও একটি জাতির ভদ্র বনে যাওয়ার অবাক করা গল্প

০৩ রা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৮

লাইনের কারিশমা ও একটি জাতির ভদ্র বনে যাওয়ার অবাক করা গল্প

বিএসএমএমই্উ, ছবিঃ গুগল হতে সংগৃহিত।

রাত ০৩:৩০ এর পরপরই বেরিয়ে গেলাম বাসা হতেঃ

১৭ অক্টোবর ২০২২ সোমবার দিনটি বিশেষ একটি কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এদিন ভোর রাত ০৩:৩০ এর দিকে ঘুম হতে জেগে উঠি। এত রাতে জাগার কারণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) অর্থাৎ, সাবেক পিজি হাসপাতালে যেতে হবে। মেয়ের আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য। এর আগের দিন অর্থাৎ, ১৬ অক্টোবর ২০২২ রোববারও গিয়েছিলাম সেখানে। সেদিন করাতে না পেরে ওখানকার দায়িত্বরত লোকদের জিজ্ঞেস করে খোজ খবর নিয়ে জেনে এসেছি যে, ভোর রাতে এসে লাইনে দাঁড়াতে পারলে আলট্রাসনোর সিরিয়াল পাওয়া যায়। তাদের নিকট থেকে এ কথাও জেনেছি যে, প্রতি দিন পঞ্চাশ ষাট জনের মত লোকের বেশি আলট্রাসনোগ্রামের জন্য নেয়া হয় না। সে কারণেই মূলতঃ আজকে আবার যাওয়া। গভীর রাতে ঘুম বাদ দিয়ে এত ধকল সহ্য করে টেস্ট এর সিরিয়াল নিতে যাওয়ার পেছনে আরেকটি কারণও অবশ্য ছিল। আর তা হচ্ছে, ওখানকার যে ডাক্তার মেয়েকে দেখেছেন, তিনি বাইরের অর্থাৎ, প্রাইভেট কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট গ্রহণ করবেন কি না, তাৎক্ষনিকভাবে সেটা জেনে আসতে না পারা।

গভীর রাতে ঢাকার রাস্তারয় পায়ে হেটে চলতে কিছুটা হলেও সুবিধাঃ

যা হোক, যথারীতি ফ্রেশ হয়ে মেয়ে এবং মেয়ের মাকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হই। বাসার আশপাশে অত রাতে কোন রিক্সা না পেয়ে মা-মেয়েকে নিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পায়ে হেটেই মেইন রোডে চলে আসতে হয়। অবশ্য এরকম গভীর রাতে রিক্সা, ভ্যান আর হরেক রকমের যানবাহনের জটলা মুক্ত থাকায় এই পথে পায়ে হেটে চলতে কিছুটা হলেও সুবিধা। পর্যাপ্ত পরিমানে আধুনিক নাগরিক সুবিধাদি সম্পন্ন দেশের মত আমাদের দেশের কোথাও তো 'pedestrian only' বা 'শুধুমাত্র পদচারী' সাইনবোর্ড ঝোলানো কোন এলাকা নেই যেখানে দিনের বেলা মানুষ একটু স্বাচ্ছন্দ্যে নিরাপদ পদব্রজে ভ্রমনের স্বপ্ন পূরণ করবে। যে দেশের সড়ক মহাসড়কে বরং গাড়ি চাপায় পদচারীদের হাত পা খোয়ানো থেকে শুরু করে জীবন পর্যন্ত চলে যাওয়া ডাল ভাতের মত সস্তা, সে দেশের নাগরিকদের জন্য নির্বিঘ্ন এবং নিরাপদ 'pedestrian only' বা 'শুধুমাত্র পদচারী' রাস্তার চিন্তা নিছকই হয়তো বোকামি।

উত্তর বাডডা হতে পিজি হাসপাতালে পৌঁছে গেলাম মাত্র কয়েক মিনিটেইঃ

কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা টিভি সেন্টার অভিমুখী প্রগতি সরণির উত্তর বাডডা অংশটি তখনও মোটামুটি ফাঁকা। কিছুক্ষণ পরপর হেড লাইটের তীব্র আলো জ্বালিয়ে লং রুটে যাতায়াতকারী দুই একটি বিলাসবহুল বাস আর মালবাহী ট্রাক কিংবা কাভার্ড ভ্যান ছাড়া তেমন কোন যানবাহন চোখে পড়ে না। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে এরা পথ অতিক্রম করে যাচ্ছে খুবই দ্রুততার সাথে। হয়তো তখনও লোকাল কোন বাস চলাচল শুরু হয়নি। বুঝতেই পারছিলাম, লোকাল বাসের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলে গভীর রাতে ঘুম বিসর্জন দিয়ে হাসপাতালে গমনের উদ্দেশ্যটাই হয়তো ব্যহত হতে পারে তাতে। তাই লোকাল বাসের অপেক্ষা না করে সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে চলে যাওয়াটাই সঠিক মনে করলাম এবং রাস্তায় কোন যানজট না থাকায় পিজি হাসপাতালে পৌঁছে গেলাম মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই। আহ, যানজটমুক্ত আরামদায়ক এরকম যাতায়াতের সৌভাগ্য ঢাকাবাসীর কপালে দিনের বেলায়ও যদি জুটতো!

লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কেউ কেউ না কি রাত দশটা এগারোটায়ও এসেছেন এখানে!

সিএনজি অটোরিক্সাটি আমাদের নিয়ে যখন পিজি হাসপাতালের নবনির্মিত ক্যানসার ভবনের সামনে পৌঁছায় মোবাইলের স্ক্রিনের ঘড়িতে সময় তখন রাত ০৪ টা ৩৭ মিনিট। বলা বাহুল্য, হাসপাতালের এই ভবনের মূল গেইটটি তখনও খোলা হয়নি। বন্ধ গেইটের সামনেই নারী পুরুষ মিলে প্রায় বিশ পচিশ জনের মত লোক। তাদের সাথে কথা বলে আশ্চর্যজনক যে তথ্যটি জানতে পারলাম, এদের কেউ কেউ না কি রাত দশটা এগারোটায়ও এসেছেন এখানে। শুনে তো আমার চক্ষু চড়কগাছ। বলে কি? সারা রাত এখানে? কষ্ট লাগলো এই ভেবে যে, আলট্রাসনোগ্রামের মত সামান্য একটি টেস্ট করানোর জন্য পুরো রাতটিকে তাদের মাটি করতে হয়েছে। আর এইক্ষেত্রে কষ্টটা যে শুধু রোগীর একারই হয়েছে বিষয়টি এমন নয়, প্রত্যেক রোগীর সাথেই বরং এক বা একাধিক আত্মীয়-স্বজনকেও আসতে হয়েছে এবং এই কষ্ট সমানভাবে তাদেরও করে যেতে হচ্ছে। যার প্রমান আমরাই। মেয়ের সাথে আমাদেরও আসতে হয়েছে।

শৃঙ্খলাপূর্ণ লাইনে দাঁড়ানোর বাংগালীর এই চর্চা দেখে গর্ববোধ না করে পারলাম নাঃ

এদের কেউ কেউ যে সন্ধ্যা রাতেই এখানে এসেছেন তার সত্যতা প্রত্যক্ষ করা গেল যখন লক্ষ্য করে দেখলাম যে, রাতভর দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্ত, অবসন্ন এবং নির্ঘুম কয়েকজন নারী গেইটের সামনের সেই সড়কেই পলিথিন বা এই জাতীয় কিছু বিছিয়ে গুটিশুটি দিয়ে শুয়ে রয়েছেন। কষ্টের মাঝে, দুঃখের ভেতরেও কখনও কখনও কিছু প্রশান্তিদায়ক দৃশ্য যেমন আমাদের চোখে ধরা পড়ে, এখানেও তেমনই একটি বিষয় চোখ এড়ালো না, কেউ কেউ শুয়ে থাকলেও নারী পুরুষের আলাদা লাইন কিন্তু ঠিকই রয়েছে এবং যার যার লাইনেই আছেন প্রত্যেকে। মনে মনে বাংগালীর শৃঙ্খলাবোধের এই চর্চার জন্য গর্ববোধ না করে পারলাম না। হাসপাতালে ঢুকতে ডান দিকে মহিলাদের এবং বামে পুরুষের লাইন। সিএনজি থেকে নেমে সাথেসাথেই মেয়েকে বললাম মহিলাদের লাইনে দাঁড়িয়ে যেতে। সে দাঁড়ালো পাশে, মহিলাদের লাইনে দাঁড়ালেন তার মা।

নামাজ শেষে হাটতে হাটতে শাহবাগ মোড়ে চলে গেলামঃ

ফজরের আজান তখনও আশপাশের কোন মসজিদে শোনা যায়নি। ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সময়টা মোবাইলে থাকা এ্যাপসে দেখে নিলাম একবার। ০৪:৪৬ এর দিকে ফজরের ওয়াক্ত যেহেতু শুরু হয় তাই বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। বাসা থেকে ওজু ইস্তিঞ্জা সেরেই এসেছি বলে চিন্তা নেই। ক্যানসার ভবন হতে সামান্য কয়েক পা দক্ষিণ দিকে এগুলেই বাম পাশে পিজি হাসপাতাল কেন্দ্রীয় মসজিদ। মসজিদের দিকে চলে গেলাম। দু'জন আনসার সদস্য মসজিদ সংলগ্ন সিকিউরিটি গেইটের ভেতরের দিকটাতে বসা। তাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলতে বলতেই আজান শুরু হয়ে গেল। আজানের পরে রীতিমত নামাজ আদায় করে নিলাম। ভাবলাম, একটু বাইরে হাটাহাটি করে আসি। হাসপাতালের বাইরের দক্ষিন দিকে থাকা জাতীয় জাদুঘরের উত্তর পাশের মূল সড়ক ধরে হাটতে হাটতে শাহবাগ মোড়ে চলে গেলাম। দেখলাম, খুব সামান্য পরিমান গাড়ির চলাচল রয়েছে রাস্তায়।

'লাইনম্যানরে ট্যাকা দিয়ে ম্যানেজ করলেই সেটা করণ যায়ঃ'

শাহবাগ মোড়ের পিজি হাসপাতাল লাগোয়া কর্ণারে দু'টি ভ্যানে করে দুই তরুন রুটি কলাসহ চা বিস্কুট বিক্রি করছে। ওদের সাথে কথা বলে জানলাম, বেচাকেনা খুব একটা ভালো না। পাশে এক তরুন কাঁধে ঝোলানো ছোট একটি বক্সে করে শুধু পান সিগারেট বিক্রি করছে। তাকে শুধু পান সিগারেট বিক্রি করে কত টাকা পায় জিজ্ঞেস করতে সে জানালো যে, 'সারা রাত ব্যাচাবিক্রি করে তিন চারশো থেকে শুরু করে পাচ ছয়শোর মত ট্যাকা থাকে।' সে আরও জানালো যে, এর মধ্যে প্রায় তিনশো তার থাকা খাওয়া বাবদ প্রতিদিন খরচ হয়। রুটি কলাসহ চা ইত্যাদি নিয়ে ওদের মত ভ্যানে বিক্রি করলে আরেকটু ভালো লাভ করা যায় না? এই প্রশ্নের উত্তরে সে বললো, 'লাইনম্যানরে ট্যাকা দিয়ে ম্যানেজ করলেই সেটা করণ যায়, তয় অহন ব্যাচাকেনা ভালা না। কারণ, এইখানে আরও কয়েকটা ভ্যান আছিল, ব্যাচাকেনা কম দেইখ্যা তারা ব্যবসা বন্ধ কইরা দিয়া অন্য কাজে চইল্যা গ্যাছে।'

তার স্বভাবগত সুঘ্রাণপ্রিয়তার ব্যাপারটিও ভালো লাগলোঃ

ছেলেটি আরও জানালো যে, তার বাড়ি হবিগঞ্জে। রাতভর ফুটপাথে বিড়ি সিগারেট বিক্রি করলেও দেখলাম, এই ছেলের চেহারায় কষ্টের কোন ছাপ নেই। হাসি যেন মুখে লেগেই আছে। অঢেল বিত্ত বৈভবের ভেতরে ডুবে থেকেও আমাদের যাদের হাহাকারের অন্ত নেই, অপ্রাপ্তির বেদনা কেড়ে নিয়েছে যাদের মুখের হাসি, তাদের এই ছেলেটির কাছে এসে তার হাসির রহস্য জেনে নেয়ার অবকাশ থাকতে পারে। তার স্বভাবগত সুঘ্রাণপ্রিয়তার ব্যাপারটিও ভালো লাগলো। সে আমার ব্যবহৃত আতরের প্রসঙ্গ তুলে বললো যে, এই আতরের ঘ্রাণ না কি তার খুবই প্রিয়। এটি 'হারামাইন মদিনা আতর' বলে পকেট থেকে ছোট্ট কাচের বোতলটি বের করে তার হাতে একটু দেয়ায় সে যারপরনাই আনন্দিতবোধ করলো। কথায় কথায় সে জানালো যে, সুবাস রয়েছে বলে গোলাপ জল না কি সে পানীয় হিসেবে মাঝে মাঝে পানও করে থাকে। এতে তার তৃপ্তিলাভ হয়। জগতে কত বিচিত্র স্বভাবের মানুষ যে রয়েছে, ছেলেটির গোলাপজল পানের বিষয়টি জেনে আরেকবার সে কথাটিই মনে পড়লো।

পুনরায় ফিরে এলাম মসজিদেঃ

শাহবাগ মোড়ে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আবার ফিরে এলাম মসজিদে। কিছু সময় কুরআন তিলাওয়াত শেষে পুনরায় ইস্তিঞ্জা সেরে এসে দেখা গেল, মসজিদের মূল ফটক ততক্ষণে তালাবন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তখনও দু'একজন লোক মসজিদের ভেতরে। কেউ নামাজ পড়ছেন, কেউবা উজু ইস্তিঞ্জা সারছেন। মসজিদের খাদেম সবাইকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য তারা দিচ্ছেন। কয়েকজনকে শাসনের ভঙ্গিতে বেরিয়ে যেতে বলায় তারাও রীতিমত বিব্রত এবং বিরক্ত। অনেক ক্ষোভও প্রকাশ করলেন কেউ কেউ।

হোটেলে মাছ গোশত খাওয়াও এখন ভয়ের ব্যাপারঃ

যা হোক, মসজিদ থেকে বেরিয়ে আবার চলে গেলাম ক্যানসার ভবনের সেই গেইটে। দেখলাম, ততক্ষণে পুরুষ মহিলা উভয় লাইনের লোকসংখ্যা বেড়ে শ'খানিকের উপরে উঠে গেছে। আরও কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ০৭:৩০ টার দিকে কিছুটা ক্ষুধা অনুভূত হওয়ায় ক্যানসার ভবনের বিপরীত দিকের একটি হোটেলে ঢুকে ডাল রুটি খেয়ে আসলাম। হোটেলে মাছ গোশত খাওয়াও এখন ভয়ের ব্যাপার। কিছু দিন পূর্বে ছাগলের গোশত বলে শিয়ালের গোশত বিক্রির ঘটনা পত্রিকায় পড়ার পর হতে ভয়টা আরও বেড়েছে। তা ছাড়া, মরা মুরগি, গরুর বাসী পচা গোশত ইত্যাদি পরিবেশনের খবর তো মাঝেমধ্যেই আমরা পত্র পত্রিকা এবং মিডিয়ার কল্যানে শুনে থাকি। হোটেলে না কি, এখন পাঙ্গাশ মাছ রান্না করলে অটোমেটিক বোয়াল কিংবা আইর মাছেও পরিণত হয়ে যায়। এসব দেখার সত্যিাকারার্থে এই দেশে কেউ আছেন কি না, জানি না।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে নারী পুরুষের উভয় লাইনে লোকসংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলছিলঃ

নাস্তা খাওয়া শেষে ফিরে এসে মেয়েকেও একই হোটেলে নিয়ে গেলাম খাইয়ে আনার জন্য। কিন্তু সে খেলো না। বললো, তার ক্ষুধা নেই, পরে খাবে। সে বরং তার অভ্যাস মত তাকে কিছু মজা কিনে দিতে বললো। তাকে সেটাই দিলাম। ফিরে এসে তার মাকে খেয়ে নেয়ার জন্য বললে সেও জানালো যে, পরে খাবে। ইতোমধ্যে ০৮:০০ টা বেজে গেছে। ক্যানসার ভবনের বহিরাঙ্গনের মূল গেইটটি ততক্ষণে খুলে দেয়া হয়েছে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নারী এবং পুরুষেরা সারিবদ্ধভাবেই ভেতরে ঢুকে পড়েছেন। এই কাজে দায়িত্বরত আনসারগণ তাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। অবশ্য বেলা বাড়ার সাথে সাথে নারী পুরুষের উভয় লাইনে লোকসংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলছিল। উভয় লাইন দীর্ঘ হতে হতে কয়েকশো লোকের বিশাল জমায়েতের আকার ধারণ করলো। একপর্যায়ে আনসার সদস্যগণ উভয় লাইনকে টাকা জমা গ্রহণের বুথের সামনে নিয়ে আসলেন।

উচ্চ আওয়াজে তর্কাতর্কি থেকে শুরু করে ধাক্কাধাক্কি কোনকিছুই বাদ যাচ্ছে নাঃ

আরও কিছু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে বুথের মুখের দিকটাতে গিয়ে দেখলাম সেখানে চলছে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। না দেখলে বুঝা সম্ভব নয়। রীতিমত প্রলয় কান্ড। লোকে লোকারণ্য। মানুষ গিজগিজ করছে। লাইনের আশেপাশে প্রচুর সংখ্যক লোকের আনাগোনায় বিশ্রী অবস্থা। মহিলা পুরুষ উভয় লাইনের মাথার কাছে বুথের মুখে বিশাল আকৃতির জটলা। দেখলে মনে হবে যেন, আনন্দ উৎসবের বিশাল এক মেলা বসেছে। উচ্চ আওয়াজে তর্কাতর্কি থেকে শুরু করে ধাক্কাধাক্কি কোনকিছুই বাদ যাচ্ছে না। নাজেহাল এবং নাস্তানাবুদ অবস্থা। নিঃশ্বাস বন্ধ হবার যোগার। লাইন থেকে বেরিয়ে আসার পরে মেয়ে জানিয়েছে যে, মহিলাদের লাইনের মারাত্মক এই ধাক্কাধাক্কির মধ্যে সেও একবার পড়েছিল এবং লাইনে দাঁড়ানো তার পাশের অচেনা এক মেয়ের সহায়তায় কঠিন আঘাতের হাত থেকে কোনমতে বেঁচে ফিরেছে সে। মেয়ের ভাষায়, সেই মেয়ে তাকে টেনে না তুললে সে মরেই যেত। আমি নিজেও কয়েকবার বুথের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছি, ধাক্কাধাক্কির কারণে আমার মেয়ে এবং তার মায়ের কোন বিপদাপদ হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য। কারণ, তারা শুরু থেকেই লাইনের একেবারে সামনের দিকে, মাত্র আট দশজনের পেছনে দাঁড়ানো ছিলেন।

স্টাফদের নামে কিছু লোকের প্রায় সকল টিকেট কেটে নেয়ার অভিযোগ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নারী-পুরুষদেরঃ

যা হোক, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসারদের পক্ষ হতে বলা হয়েছিল, সকাল ০৮:০০ টা হতে টাকা জমা নিয়ে টিকেট দেয়া শুরু হবে। সকাল ০৮:০০ টা বাজার পর ভেবেছিলাম, যাক, এখন হয়তো দীর্ঘ এই লাইনে দাঁড়ানোর কষ্টের অবসান হবে। টাকা জমা হয়ে গেলে হয়তো আলট্রাসনোগ্রামটা করানো সম্ভব হবে। কিন্তু ০৯:০০ টা বাজার পরেও লাইনে দাঁড়ানো নারী পুরুষগণ একইরকম অনড় এবং অবিচল অবস্থায় যার যার অবস্থানে স্থির থাকায় এবং লাইনের একেবারে প্রথম দিকে থাকা লোকজনের তেমন কোন নড়াচড়া না দেখে কেমন জানি খটকা লাগতে শুরু করে। দ্বিধা ধন্ধ ও চিন্তায় পড়ে গেলাম এই ভেবে যে, আমার মেয়ের সামনে তো মাত্র আট দশজন লোক, তাহলে এত সময় কেন লাগছে? কাউকে জিজ্ঞেস করে যে সঠিক খবরটা জানবো সেই উপায়ও নেই। একমাত্র আনসার সদস্যগণ ছাড়া হাসপাতালের কাউকেই পাচ্ছিলাম না যে, জিজ্ঞেস করে দেরি হওয়ার সঠিক কারণটা জেনে নিই। এর মধ্যে অনেক কষ্টে লাইনের সামনের দিকে একেবারে বুথের কাছে গিয়ে দেখলাম, উভয় লাইনের নারী পুরুষগণ কিছু লোকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন যে, তারা স্টাফদের নামে সকল টিকেট কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।

'আজকের মত টাকা জমা নেওয়া শেষ, আপনারা দয়া করে চলে যান'ঃ

নয়টার পরপরই নারী এবং পুরুষ উভয় লাইনে এই নিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদ চলতে থাকে। তারা উচ্চ আওয়াজে এর প্রতিবাদ করতে থাকেন। তাদের অভিযোগ, সকাল ০৮:০০ টা থেকে ০৯:৩০ টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দু'টি লাইনে থাকা শত শত লোকের ভেতরে সর্বোপরি আমার ধারণা, দশজনও টাকা জমা দিতে না পারলেও স্টাফ নামের দালালগণ ঠিকই কৌশলে টাকা জমা দিয়ে যাচ্ছেন এবং টিকেটগুলো হাতিয়ে নিয়ে বাড়তি টাকার বিনিময়ে তা বিক্রি করে দিচ্ছেন। কিন্তু শত শত নারী পুরুষের জটলায় এসব কথা কানে নেয়ার কেউ সেখানে ছিলেন না। দায়িত্বরত আনসারগণ লাইন সোজা করার নামে কিছুক্ষণ পরপর রোগীর সাথে যাওয়া লোকদের পিছনের দিকে হটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও এই চরম অব্যবস্থাপনা সেখানে চলতে থাকে সকাল প্রায় ০৯:৩০ টা পর্যন্ত। যদিও আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, তবুও আমি তখনও বুথের ঠিক কাছাকাছি স্থানে। সময় তখন মাত্র সকাল ০৯:৩০ টা পেরিয়েছে। হঠাৎ দেখলাম, বুথের কাছে দায়িত্ব পালনরত এক আনসার সদস্য জনৈক মহিলা আনসার সদস্যকে ডেকে হ্যান্ড মাইক নিয়ে আসার জন্য বললেন। কথামত তিনি কিছুক্ষণের মধ্যেই হ্যান্ড মাইক নিয়ে এলে ঘোষনা দিয়ে দেয়া হলো যে, 'আজকের মত টাকা জমা নেওয়া শেষ। আজ আর টাকা জমা নেয়া হবে না। আপনারা দয়া করে চলে যান।'

একবার চিন্তা করছিলাম, ৯৯৯ এ কল দিব কি নাঃ

আশ্চর্য্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, ঘোষনা শোনার পরে উভয় লাইনের লোকেরা রনেভঙ্গ দিয়ে পিছু হটতে শুরু করলেন। সেই সময়টিতে আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে, কি করবো, অথবা, আমার কি করা উচিত। একবার ভাবছিলাম, আমি কি প্রতিবাদ করবো? সেটা কি ঠিক হবে? কিন্তু আবার ভাবলাম, প্রতিবাদ করে কি লাভ হবে? কে শুনবে আমার কথা? উভয় লাইনে দাঁড়ানো শত শত মানুষের সকলেই তো ভুক্তভূগী। কতজনই তো চিৎকার চেচামেচি করছেন সেই কখন অবদি। লাভ কি কিছু হয়েছে? লাভ তো কিছুই হয়নি। তাহলে এখানে অযথা প্রতিবাদ করতে যেয়ে উল্টো নিজেকে বিপদে ফেলে লাভ কি? কিন্তু বিপদে পড়লে মানুষ তো কত কিছুই ভাবে। একবার চিন্তা করছিলাম, ৯৯৯ এ কল দিব কি না। তাও আবার মনে হলো, ৯৯৯ এর লোকেরা যখন জানবেন যে, এটা পিজি হাসপাতালের ঘটনা, তারা কি এখানে আসতে চাইবেন? সবখানে তাদের যাওয়ার সুযোগ আছে কি না, আমার জানা নেই। যতটুকু জানি, সরকারি যে কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আমলে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ সেখানে গেলে নিয়মনীতির কিছু ব্যাপার থাকে। আর সর্বোপরি তারা যদি আসেনও তবুও কি কোন কাজ হবে? এই মুহূর্তে টাকা জমা নেয়া তো শেষই করে দেয়া হয়েছে, সুতরাং তাদেরকে ডাকলেই বা কী লাভ? যা হোক, মনে মনে করা এই চিন্তাটাও আপাতত বাদ দিয়ে গৃহপানে ফিরে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ মনে করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গন্তব্যের দিকে পা বাড়ালাম।

১৭ অক্টোবরের সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষন করলে বর্ণিত ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবেঃ

অবশ্য বেরিয়ে আসতে আসতে হাসপাতালের বিভিন্ন দেয়ালে 'সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত' কথাটি কাগজে সাটানো দেখে আমি নিশ্চিত হতে পারছিলাম না, ঘন্টার পর ঘন্টা এমনকি রাতভর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও টিকেট না পাওয়া লোকেরা জোরালো কোন প্রতিবাদ করতে এসব ক্যামেরার কারণেই ভয় পাচ্ছিলেন কি না। এখন তো ক্যামেরা ফুটেজ দেখে অনেক কিছুর রহস্যই বের করা হয়ে থাকে। আচ্ছা, ওখানকার সেদিনকার ক্যামেরার ফুটেজ তো এখনও, মানে, এত তাড়াতাড়ি হারিয়ে যাওয়ার কথা নয়, কোন কর্তৃপক্ষ কি এমন আছেন এ দেশে, যারা সহৃদয়তার পরিচয় দিয়ে দয়া করে ১৭ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখের উক্ত সোমবার দিনটির ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষন করে দেখবেন যে, সেদিন ওখানকার লাইনের ঠিক কত জন লোক টিকেট পেয়েছিলেন এবং স্টাফদের নামে কতজন টিকেট বাগিয়ে নিয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ব্যবসা করেছেন এবং রাতভর কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকা নারী পুরুষদেরকে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।

হাসিরও কোন মেয়াদ থাকে কি না, কে জানে!

তবে প্রায় সারা রাত নির্ঘুম থেকে, অনেকটা পথ পায়ে হেটে বাসা থেকে মেইন রোড পর্যন্ত এসে, এতটা কষ্ট ক্লেশ সহ্য করার পরে মেয়ের আলট্রাসনোগ্রামটা না করাতে পারলেও আমার কেন যেন তখন কেবল হাসিই পাচ্ছিল। কথায় বলে, অল্প শোকে কাতর অধিক শোকে পাথর। আমারও তখন ঠিক সেই অবস্থাই হয়েছিল কি না, বুঝতে পারছিলাম না। আমি হাসছিলাম। কিন্তু কথা হচ্ছে, শুধু হাসলে তো হবে না। তাছাড়া, কতক্ষণই বা মেকি হাসি মুখে ধরে রাখা যায়? হাসিরও কোন মেয়াদ থাকে কি না, কে জানে। স্ত্রী এবং মেয়েকে কি বলে বোঝাবো? তাদেরকে কি আমার কিছু বোঝাতে হবে? না কি, তারা নিজেরাই সবকিছু বুঝে নিয়েছেন এতক্ষণে? এই যে আমি পারলাম না, ব্যর্থ হলাম, মা এবং মেয়েকে সাথে নিয়ে এত কষ্টসৃষ্টের পরেও কাজটা সম্পন্ন করতে সক্ষম হলাম না- একজন পিতা হিসেবে আমার ভেতরে কি তখন কোন অপরাধবোধ জাগ্রত হওয়া উচিত ছিল? হয়তো ছিল। হয়তো ছিল না।

তিনি সকাল ০৭:৩০ টার দিকে এসেও আলট্রাসনোগ্রাম করাতে পেরেছেন, আমরা রাত ০৪:৩৭ এসে পারিনিঃ

দালালদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের হাতে বাড়তি ৫০০ কিংবা ১০০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে টিকেট কেটে না নেয়াটা কি আমার অপরাধ ছিল? আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমি বুঝতে পারছিলাম না, মেয়ের সাথে থাকার পরেও এতটা কষ্ট ক্লেশ ও ধকল সহ্য করার পরেও তার একটি কাজ করে দিতে না পারা পিতা এবং অভিভাবক হিসেবে আমার ব্যর্থতার প্রমান বহন করছিল কি না। কারণ, নোয়াখালীর এক ভদ্রলোকের সাথে সকাল ০৮:০০ টার দিকে সেই লাইনের ঠিক পাশেই কথা হয়, যিনি সেখানে পৌঁছেছিলেনই সকাল ০৭:৩০ টার দিকে। তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিনিও তার মেয়েকে নিয়ে গিয়েছেন আলট্রাসনোগ্রাম করাতে। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এত পরে এলেন, তাহলে টিকেট পাবেন কিভাবে? তাকে আরও বললাম যে, আমরা তো রাত সাড়ে চারটার দিকে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। তিনি তখন বলেছিলেন যে, তিনি এসেছেন মগবাজারে থাকা তার এক আত্মীয়র বাসা থেকে। ফজরের নামাজ পড়েই তার জন্যও এখানে আসা সম্ভব ছিল, কিন্তু সেই আত্মীয় পরিবারের লোকজনের প্রস্তুতি নিতে বিলম্বের কারণে তার এখানে পৌঁছুতে দেরি হয়ে গেছে। পরে তিনি এও জানালেন যে, টিকেটের ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত তিনি করতে পেরেছেন। এক আনসার সদস্যকে বাড়তি ৫০০ টাকা দিয়েই তা করেছেন তিনি।

টিকেটপ্রাপ্তি বড় কথা নয়, সুদৃশ্য লাইন তো ছিল ঘন্টার পর ঘন্টাঃ

মেয়ে এবং মেয়ের মাকে নিয়ে ফিরে আসছিলাম আর মনে মনে গর্ব করছিলাম এই ভেবে যে, রাত সাড়ে চারটা থেকে দাঁড়িয়ে থেকে টিকেট না পেলেও সকাল সাড়ে সাতটায় এসে টিকেট পাওয়া যায় যে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বড় সরকারি হাসপাতালে, আমরা সেই আজব এবং অদ্ভূত দেশের গর্বিত নাগরিক। আমরা সত্যি মহিমান্বিত, উন্নত এবং অতুলনীয় এক জাতিই বটে। যারা আমাদের সম্মন্ধে জানে না, তারাই এই দেশের সিস্টেম নিয়ে কথা বলে। যাদের জ্ঞান বলতে কিছু নেই, মাথায় মগজ বলে কিছু নেই- তাদের মুখেই এই দেশের ব্যাপারে কথা বলা সাজে। কারণ, এখানে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট না পেলে তাতে তেমন কিইবা সমস্যা? এর বিপরীতে বরং এসব লাইনের অন্তর্ণিহিত একটি সৌন্দর্য্য যে রয়েছে, সেটি তো তারা লক্ষ্য করেন না। তারা দেখেন না যে, রাত দশটা কিংবা ভোর রাত সাড়ে চারটা থেকে অধীর আগ্রহে দাঁড়িয়ে থেকে যে শত শত মানুষ টিকেট পেলেন না, তারা কতটাই না ধৈর্য্যশীল। এই জাতি ক্রমেই যে সর্বংসহা হতে চলেছে, সেই অনণ্য গুণটি তো সেইসব সমালোচকদের পোড়া চোখে একটুও ধরা পড়ে না। অথচ, একটু দৃষ্টি প্রসারিত করে এই রাতভর দাঁড়িয়ে থেকে টিকেট না পেয়ে নির্বিবাদে চলে যাওয়া লোকদের দিকে তাকালেই তারা বুঝতে পারতেন, দিনকে দিন এই জাতি কী সাংঘাতিকভাবে ভদ্র হয়ে যাওয়াকে রপ্ত করে নিচ্ছে অথবা, নিতে বাধ্য হচ্ছে।

আমাদের দেশের লাইনগুলো ঠিকই দৃষ্টিনন্দন কিন্তু এগুলোর অন্তঃস্থ কারিশমা বোঝা কঠিনঃ

যাক, ধন্য ধন্য আমাদের শৃঙ্খলাবোধকে। জাতি হিসেবে আমরা যে আঁধারঘেরা এক অভাবনীয় উন্নতির(!) দিকে তরতর করে যাচ্ছি, বিষয়টি ভেবে আরেকবার পুলকিতবোধ করলাম। আগেকার দিনে, এই তো কিছুকাল আগে আমাদের দাদা নানাদের সময় আমরা মুখ্যু সুখ্যু ছিলাম। পড়ালেখা তেমন একটা জানতাম না। বিশ্ব দরবারে অশিক্ষিত, অবহেলিত ও অবজ্ঞার পাত্র বলেও বিবেচিত হতাম আমরা। কিন্তু তখনকার দিনে এমন অবিচার সাধারণ মানুষের সাথে করা হলে সাথে সাথে তার প্রতিবাদ হতো। একটি অন্যায়ের শৃঙ্খল ভাঙ্গার জন্য মানুষ সব ধরণের প্রতিবাদে সোচ্চার হতেও বিলম্ব করতেন না তখন। কিন্তু নব্য আবিষ্কৃত সিসিটিভি ক্যামেরা এখন আমাদেরকে সভ্যতা-ভব্যতার নতুন সবক শেখাচ্ছে কি না, বুঝতে পারছি না। এখন আমরা লাইনে দাঁড়াতে শিখেছি। লাইনে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খলা প্রদর্শনের এমন দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য তখন তেমন একটা চোখে না পড়লেও এমন ডাহা প্রতারণা তখন ছিল কি না, চিন্তার বিষয়। এখন বাস স্টপেজে লাইন, ব্যাংকের ভেতরে লাইন, নির্বাচনের ভোটে লাইন, ট্রেনের টিকেট কাটতে লাইন এমনকি বুথে টাকা তুলতেও লাইনে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই আমাদের। কিন্তু এসব লাইনের বহির্দৃশ্য যত নান্দনিকই দেখা যাক না কেন, এগুলোর অন্তঃস্থ কারিশমা বোঝার জ্ঞান ও ক্ষমতা আমাদের মত অনেক সাধারণ মানুষেরই হয়তো থাকে না।

বহুবিধ কারণে আমরা প্রতিবাদের সাহসহারা জাতিতে পরিণত হচ্ছি দিনকে দিনঃ

আজ অনেক অন্যায়েরই প্রতিবাদ হয় না। প্রতিবাদ করা যায় না। করতে দেয়া হয় না। অনেক ক্ষেত্রে সিস্টেমটাই করা হয়ে থাকে এমন, যেখানে প্রতিবাদ করার কোন সুযোগ থাকে না। একটি প্রতিষ্ঠানের টপ টু বটম দুর্ণীতিতে আপাদমস্তক নিমজ্জিত হলে যা হয়। আবার, কোথাও কোথাও প্রতিবাদ করতে ইচ্ছেকৃতভাবেই ভুলে যাচ্ছি আমরা। অথবা, ভুলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে আমাদেরকে। আমাদের ভেতরে বিবিধ প্রকারের হয়রানি এবং নিগ্রহের শিকার হওয়ার ভয়, ভীতি ও শঙ্কা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। যার ফলে হয়রানিতে পড়ার ভয়ে আজ আমরা নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হই না। সাহায্য করতে এগিয়ে যাওয়ার সাহস পাই না বিপদগ্রস্থ কিংবা বিপন্ন কোন মানুষকে। আজ আমাদের অধিকার কেউ কেড়ে নিলেও আমরা তার প্রতিবাদ করতে ইতস্তত করি, পাছে ভয়, তাতে যদি আমাদের ভদ্রতার তথাকথিত এই লেবাস খসে পড়ে! বাহ, কি চমৎকার সুশৃঙ্খল এবং সভ্য(!) জাতিতে পরিণত হচ্ছি আমরা দিনকে দিন! আমাদের দেখে বাদবাকি বিশ্বের শেখার আছে অনেক কিছুই।

ইনসাফ, সদাচার, অধিকার, মানবাধিকার - এই সবকিছু ফিরিয়ে আনতে আমাদের জাগতে হবে আবারঃ

অধিকার কেড়ে নেয়ার এ অচলাবস্থার অবসান হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য আমাদের জাগতে হবে। অবলা সরলা নারীদের মত ঘোমটা মুড়ি দিয়ে থেকে আর কত? সিসিটিভি ক্যামেরার ভয়ে ভীত হলে চলবে না, দৃষ্টিনন্দন এমন লাইনের কারিশমাও আমরা আর দেখতে চাই না, যার অন্তরালে দুর্ণীতির আখড়া। মুষ্টিমেয় লোকের হাতে গোটা সিস্টেমটাই আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ইনসাফ, সদাচার, অধিকার, মানবাধিকার - এই সবকিছু ফিরিয়ে আনতে আমাদের জাগতে হবে আবার। প্রতিবাদে সোচ্চার হতে হবে প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি স্থানে, প্রতিটি সেক্টরে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৭

সোনাগাজী বলেছেন:



মহাভারত সম্পুর্ণ করতে পেরেছেন, কোনকিছুই বাদ পড়েনি।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আরে, বাদ দেন মহাভারতের কথা। আমার এইসব আগডুম বাগডুম পড়ে লাভ নেই। দেশ এগিয়ে চলেছে, আপনার মোদ্দাকথা তো সেটাই। আমরাও দেশের অগ্রগতিই চাই। এরচেয়ে বরং আপনার খবর বলেন। আপনার চোখের অবস্থা কেমন এখন? অনেক দিন তো কোন খবরই নিতে পারিনি।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাইজান, আপনি আমার প্রতিবেশীই বলা যায়। উত্তর বাড্ডা-বসুন্ধরা ।
প্রতিবেশী-মুসলিম ভাই - সহ ব্লগার এবং একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আপনার অর্জিত বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা আমাদেরকে আবারো মনে করিয়ে দেয় মানুষ হিসাবে আমাদের নিম্ন মানষিকতা ও নীতি-নৈতিকতার অভাববোধকে। আসলেই , আমাদের করণীয় কি ? কি উদাহরন বা কোথায় রেখে যাব-যাচছি আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম (সন্তান) দেরকে? কি উদাহরন তৈরী হচছে তাদের প্রাত্যহিক জীবনের কাজ কর্মে ?

১। এর জন্য দায়ী কে ?
২। এর থেকে বেরিয়ে আসারই বা পথ কি?

** সরকারী হাসপাতালে জীবনে কয়েকবারই গিয়েছিলাম (সহপাঠী ও দাদীর জন্য ) কুমিল্লা মেডিকেল / কুমিল্লা সদর হাসপাতাল এবং পিজি (তখন পিজি হাসপাতাল) ঢাকা ও ঢাকা মেডিক্যাল । এতে আপনার মত আমারও অর্জিত অভিজ্ঞতা কোন সুখের নয় বরং বেদনাদায়ক ।
তবে , এই আমাদের নিয়তি । এ থেকে ভাল কিছু আশা করা বোকামী হ-য-ব-র-ল আমাদের সোনার বাংলায়।

আমি জানিনা , ডাঃ আপনার মেয়ের কোন আলট্রাসনোগ্রাম করতে বলেছে।

যদি মনে করেন, কোন সহায়তা করার সুযোগ আছে তবে বলবেন (বসুন্ধরায় বিশ্বমানের হাসপাতাল) ডাক্তারের পরামর্শ অথবা কোন রেডিওজিকাল বা ল্যাব পরীক্ষার জন্য।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



১। এর জন্য দায়ী কে ?
২। এর থেকে বেরিয়ে আসারই বা পথ কি?

দুঃখিত, মন্তব্যের উত্তর লিখে আবার মুছে ফেললাম। জানি, যে উত্তর লিখেছিলাম, তা এখানে পাবলিশ করা বিপদের কারণ হতে পারে। সত্য কথা বলার সাহস সত্যিকারার্থে আমরা অনেকেই আজ রাখি না। মিথ্যার জগতে বসবাস করতে করতে নিজেরাও মিথ্যার জালে জড়িয়ে যাচ্ছি কি না, বুঝতে পারছি না।

এখানে দায়ীদেরকে আপনি দায়ী বলে শনাক্ত করলে আপনার খবর করে ছেড়ে দিবে হয়তো। মিথ্যার জগতে মিথ্যুকদেরই ক্ষমতা। আর কিল খেয়ে সহ্য করাই হয়তো এখন আমাদের মত সাধারণদের নিত্য দিনের নিয়তি।

কোন সরকারি অফিসে টাকা না দিয়ে কাজ করানো যায় কি না, আমি জানি না। ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে গিয়েছিলাম, ভ্যাট অফিসে। সব কাগজপত্র পুরোপুরি রেডি করেই নিয়ে গিয়েছি। অফিসের লোকেরা শুধু আমরা ফাইলটা রিসিভ করে রাখবেন আর আমাকে একটি রিসিট দিয়ে বিদায় করবেন। সেখানেও খরচপাতি চাওয়া হলে, আপনি সেটাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন? কিসের খরচপাতি? তারা কি বেতনভূক্ত কর্মচারী নন? তারা খরচপাতি দাবি করবেন কেন? তারা ঘুষ বলেন না। তারা খরচপাতি বলে বিষয়টা যতই হাল্কা করতে চান না কেন, আমরা সাধারণ পাবলিকরাও কম নই, আমরা ঠিক ঠিকই কিন্তু বুঝে যাই যে, তারা ঘুষ দাবি করছেন। আমরা ধরে ফেলি যে, তারা আমাদের ফাইল আটকে অর্থ আদায়ের পথ বেছে নিচ্ছেন। আমাদের পকেট কাটার পথে হাটছেন।

এখানে কার বিচার কে করবে?

যাক, লিখবো না লিখবো না করেও একটু কিছু না লিখে পারলাম না।

আর আমাদের সচেতনতা, আমাদের ত্যাগ, আমাদের যথাযথ পদক্ষেপই হয়তো আমাদেরকে এর থেকে মুক্তি দিতে পারে।

শুভকামনা জানবেন।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার একেবারে নিকট প্রতিবেশী না হলেও কাছাকাছি যে আছি, তা ঠিক। আমি অবশ্য আপনার এই বিষয়টি আগে থেকেই জানি, সম্ভবতঃ আপনার কোন লেখা থেকে। আপনার মন্তব্যটি পেয়ে অনেক আনন্দিত বোধ করেছি। মনে হয়েছে যে, আপনার পরিবারেরই যেন কেউ অসুস্থ। গভীর আন্তরিকতা ও হৃদ্যতায় অভিভূত।

অনেক আন্তরিক এবং হৃদয়বান ব্যক্তি হিসেবে আপনাকে আবারও অভিনন্দন।

সহায়তা প্রয়োজন হলে জানাব ইনশাআল্লাহ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আমি জানিনা , ডাঃ আপনার মেয়ের কোন আলট্রাসনোগ্রাম করতে বলেছে।

-জটিল কিছু না। খুবই সাধারণ একটি আলট্রাসনোগ্রাম ছিল ওটা।

যাক, আলহামদুলিল্লাহ, শেষমেষ করানো গেছে টেস্টটা।

অনেক ভালো থাকার প্রার্থনা আপনার জন্য।

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৭

মোগল সম্রাট বলেছেন:
এতো বড়ো লেখা তবুও ধৈর্য ধরে পড়লামঃ আপনি মুল ঘটনা লিখতে গিয়ে অনেক অপ্রসঙ্গিক বিষয়ও লিখেছেন।

আমি নিজেও আমার বাচ্চা নিয়ে সরকারী হাসপাতালের সেবা নিতে গিয়ে এমন ভুক্তভোগী হয়েছি বহুবার । তখন নিজের অসহায় মনে ভেবেছি সরকারি হাসপাতালে এরকম চরম অব্যবস্থাপনা সরকার ইচ্ছে করেই ঠিক করেনা মনে হয়। কারন তাদের সেবার মান ভালো করলে এদেশের পাঁচতারা হোটেল মানের প্রাইভেট হাসপাতালের সোগা মারা সারা হয়ে যাবে । কারন সরকারও দিন শেষে পুজিপতিদের পেট্রেনাইজ করছে নগ্ন ভাবে। এই সমস্য থেকে এহজীবনে উত্তরন মিলবে না।

এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে এই লাইন ধরে সিরিয়াল নেয়া, দাললদের উৎখাত করা কোন ব্যাপার? অনেক প্রাইভেট হাসপাতালেই দেখেছে এখন অনলাইনে সিরিয়াল দিয়ে সময় সহ ডাক্তারের সিরিয়াল কিংবা টেস্টের সিরিয়াল নেয়া যায়। অনেক হাসপাতালের রোগীর ইউনিক আইডি দিয়ে ডাটাবেজ করা আছে, যতদিন সেবা নিবেন একটাই নম্বর থাকে ।

ঐখানে আপনি প্রতিবাদ প্রতিরোধের কথা বললে দেখবেন ডাক্তার র্না্স-হোমরা চোমরা সব ধর্মঘট, কর্ম বিরতির হুমকি দিয়ে অন্য রোগীদের সেবা দেয়া বন্ধ করে প্রেস করফারেন্স করছে ।

আর মসজিদে তালা মারার কারন হইলো ঢাকার শহরে বেওয়ারিশ কুত্তা মারার উপ্রে আমাদের সুশিল সমাজ মনে হয় মামলা করছিলো তার প্রেক্ষিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারনে দরজা খোলা রাখলে কুত্তা ডুকে মসজিদ অপবিত্র করবে এটা অন্যতম কারন হইতে পারে। তবে মসজিদের টয়লেটে তালা মারার সহি কারন আমার জানা নাই। সে বিষয়ে কেউ মামলা করছে কিনা তাও জানিনা।

শুভকামনা ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার মন্তব্য পড়ে পোস্ট কেটে কিছুটা খাটো করে দিয়েছি। অনেক ধন্যবাদ সময় ব্যয় করে পোস্ট পাঠ এবং পরামর্শমূলক চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

শুভকামনা জানবেন।

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: উন্নত জীবনযাপন করতে হলে আপনাকে এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ। কথা খারাপ বলেননি। কিন্তু শুধু নিজের বা নিজ পরিবারের উন্নত জীবন যাপনের চিন্তা করলেই তো হবে না। দেশটাকেও তো রক্ষা করতে হবে। সেটা করবে কে?

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৯

অপ্‌সরা বলেছেন: ভাইয়া বুঝা গেলো তুমিও আমার কাছাকাছিই থাকো। তবে এত কষ্টের পরেও আল্ট্রাসোনোগ্রাম করতে পারলেই না মেয়ের!

কি আশ্চর্য্য! :(

এমনও হয় !

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৯

নতুন নকিব বলেছেন:



হুম, স্থান দু'টো কাছাকাছিই হবে হয় তো। তুমি হয়তো লেকের ঐ পাড়ে, অর্থাৎ, সূর্য যে দিকটাতে অস্তমিত হয়, আর আমি তার ঠিক বিপরীত দিকটাতে। স্থানের নাম বললে সবাই বুঝে যাবে হয়তো, তাই নাম না বলে লেকের কথাটাই বললাম। আপাত দৃষ্টিতে কাছাকাছি হলেও দু'টি স্থানের অন্তরালের যে দূরত্ব সেটা কিন্তু যোজন যোজন মাইলেরই পথ মনে হয়।

তবে বুবু, তুমি চিন্তামুক্ত হতে পারো। সর্বশেষ সংবাদ হচ্ছে, তোমার ভাইয়ের মেয়ের আলট্রাসনোগ্রামটা শেষমেষ করানো গেছে। তবে অন্য দিন এবং অন্যভাবে। আল্লাহ ভরসা।

আন্তরিক মন্তব্যে অভিনন্দন। শুভকামনা সবসময়।

৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: সরকারী প্রতিষ্ঠানে অনেক ভোগান্তি কথা সত্য। কিন্তু চিকিৎসা টা ভালো হয়। মানে ডাক্তার গুলো ভালাও।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ভোগান্তি বলেন আর কষ্ট বলেন, এগুলো হয়তো মেনে নেয়া যায় কিন্তু দুর্ণীতি? রাতভর লাইন ধরে অপেক্ষায় থাকা লোকেরা টিকেট না পেয়ে যদি অন্যভাবে টিকেট নিয়ে নেয়া হয়, তার সমাধান কী? এর ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। আপনার কাছে থাকলে দয়া করে জানাবেন।

ধন্যবাদ।

৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



কাল্পনিক ভালোবাসা ভাই এই পোস্টটিতে এসেছেন এবং লাইকও দিয়েছেন। এর জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এই লেখাটিকে তিনি যদি স্টিকি করে দিতেন, তাহলে হয়তো আরও ভালো হতো। কারণ, এতে করে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কারও চোখে এটি পড়ার সম্ভাবনাটা আরও বেড়ে যেত বলে মনে হচ্ছে।

৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৮

মেহবুবা বলেছেন: নতুন নকিবের সাথে সহমত। অনেকের দৃষ্টিতে পড়তে পারে তাহলে।
মানুষের এমনতর নাজেহাল হবার ঘটনা মনে হচ্ছে স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে!

০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



সহমত পোষন করায় অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

শুভকামনা জানবেন।

৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৯

মেহবুবা বলেছেন: মেহবুবা বলেছেন: নতুন নকিবের ৭ নম্বর মন্তব্য এ সহমত। অনেকের দৃষ্টিতে পড়তে পারে তাহলে।
মানুষের এমনতর নাজেহাল হবার ঘটনা মনে হচ্ছে স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.