নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরবানি: ত্যাগ, মানবিকতা ও ঈমানের প্রতীক

০৮ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৩১

কুরবানি: ত্যাগ, মানবিকতা ও ঈমানের প্রতীক

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

ঈদুল আযহা—শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি মুসলিম জীবনের গভীরতম আত্মত্যাগ, মানবিকতা, নৈতিকতা ও আল্লাহর প্রতি পরম আনুগত্যের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। প্রতিবছর এই মহিমান্বিত ইবাদতের সময় এলেই দেখা যায়, কিছু ভেকধারী 'সিজনাল পশুপ্রেমিক' কুরবানির বিরুদ্ধাচরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারা একে "অবলা প্রাণী হত্যা", "নিষ্ঠুরতা" কিংবা "বর্বরতা" বলে আখ্যা দিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হন। বাস্তবে এসব বক্তব্য কুরবানির প্রকৃত তাৎপর্য, ধর্মীয় গভীরতা এবং বৈজ্ঞানিক-নৈতিক দিকগুলো সম্পর্কে অজ্ঞতারই ফল।

ইসলামে কুরবানির শিকড় রয়ে গেছে হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাঈল (আ.)-এর ঐতিহাসিক আত্মত্যাগের স্মৃতিতে। আল্লাহর আদেশে পুত্রকে কুরবানি দিতে প্রস্তুত হয়ে ইব্রাহিম (আ.) নিঃস্বার্থ আনুগত্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। আল্লাহ এই পরীক্ষায় তাঁর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে একটি পশুকে দিয়েছেন বিকল্প হিসেবে। এই ঘটনা মুসলমানদের শেখায়—আল্লাহর জন্য প্রিয় বস্তু ত্যাগে দ্বিধা না রাখা, এবং ঈমানের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা গড়ে তোলা।

কুরবানি কোনো নিছক প্রাণীজবাই নয়। এটি অত্যন্ত মানবিক, নিয়মবদ্ধ এবং শৃঙ্খলিত একটি ইবাদত। ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী কুরবানির প্রতিটি ধাপে রয়েছে করুণার শিক্ষা: ধারালো ছুরি ব্যবহার, পশুকে পানি পান করানো, অন্য পশুর সামনে জবাই না করা—এগুলো সবই পশুর প্রতি সহানুভূতির নিদর্শন। আধুনিক পশু কল্যাণ গবেষণা এবং ভেটেরিনারি বিজ্ঞানের একাধিক গবেষণায় স্বীকৃত, ইসলামি পদ্ধতিই সবচেয়ে কম যন্ত্রণাদায়ক ও স্বাস্থ্যসম্মত 'হিউম্যান স্লটারিং' পদ্ধতি।

তদুপরি, কুরবানির মাংস সমাজে সাম্য ও সংহতির অনন্য নজির স্থাপন করে। এটি তিন ভাগে বিভক্ত হয়—এক অংশ আত্মীয়স্বজনের জন্য, এক অংশ দরিদ্র-দুঃস্থদের জন্য, এবং এক অংশ নিজের পরিবারের জন্য। অর্থাৎ, এতে কেবল উৎসব নয়, বরং মানবিক দায়বদ্ধতার চর্চা ও বিতরণের নৈতিকতা নিহিত রয়েছে।

এখানে প্রশ্ন জাগে—যেখানে প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি পশু সুপারমার্কেট, রেস্তোরাঁ কিংবা ফাস্টফুডের জন্য জবাই হচ্ছে, সেখানে কুরবানিকে নিয়েই কেন এত প্রশ্ন? এটি কি শুধুই প্রাণীর প্রতি সহানুভূতির বহিঃপ্রকাশ, নাকি এর পেছনে রয়েছে সুস্পষ্ট ইসলাম ধর্মবিদ্বেষ ও পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি?

আসলে ইসলাম প্রাণী হত্যা অনুমোদন করে না, বরং কেবলমাত্র খাদ্য ও ইবাদতের জন্য নির্ধারিত শর্তে এবং আল্লাহর নামে তা বৈধ করেছে। কুরআনে (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ৩) বলা হয়েছে:
“তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে…”
অর্থাৎ ইসলাম বেপরোয়া হত্যা নয়, বরং ন্যায়সংগত, মানবিক এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবনের প্রয়োজন মেটানোর পক্ষে।

সুতরাং, যারা কুরবানিকে "অবলা প্রাণী হত্যা", "নিষ্ঠুরতা" কিংবা "বর্বরতা" বলে প্রচার করে, তারা হয় ধর্মীয় অজ্ঞতায় ভোগে, নয়তো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচারে লিপ্ত। প্রকৃত সত্য হলো—কুরবানি কোনো বর্বরতা নয়; এটি আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রতীক এবং দরিদ্র-দুঃস্থদের পাশে দাঁড়াবার এক সুমহান উপলক্ষ। যারা সত্যের পথে থাকেন, তারা অপপ্রচারের মুখে নয়, বরং যুক্তি, সহমর্মিতা এবং ঈমানের দৃঢ়তায় অবিচল থাকেন।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: অন্য একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করি; কুরবানীতে সাধারণত বকনা গাই, গাভী আর বাজা গাই কোরবানি দেয়া হয় না, একেবারে অপারগ হয়ে অনেকে কুরবানী দেয়। শুধুমাত্র ষাঁড় কোন কোন ক্ষেত্রে বলদ বা আবাল কোরবানি দেয়া হয়- যা সবগুলোই মূলত পুরুষ গরু। পুরুষ গরু কিন্তু হিন্দুদের মাতা নয় এটা হল মহাদেবের বাহন সেজন্য তারা ষাঁড়ের মাংসও খায় না। যদিও সরস্বতীর বাহন রাজহাঁস -তবে অনেক হিন্দু ধর্মীয়রা এ ব্যাপারে অবগত নয় যে রাজহাঁস তাদের ধর্মে খাওয়া নিষেধ। মুসলমানরা খায় দেখে গরু নিয়ে তারা বেশি হুলস্থল করে!

০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার বিশ্লেষণমূলক মন্তব্যে ধন্যবাদ। তবে ইসলাম ধর্মে কোরবানির পশুর নির্ধারণ আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত—পুরুষ বা স্ত্রী উভয় গরুই বৈধ, যদি নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে। হিন্দু ধর্মে মহাদেবের বাহন হিসেবে ষাঁড় পূজিত হলেও, সেটা আমাদের জন্য ধর্মীয়ভাবে নির্দেশিত কিছুই নয়। আমার মতে, ধর্মীয় আচরণ ও বিশ্বাসভিত্তিক উৎসব নিয়ে অন্য ধর্মের ওপর দোষারোপ না করে বরং সবাইকে সহনশীলতা ও জ্ঞানের আলোয় পথ চলা উচিত।

ঈদ মোবারক।

২| ০৮ ই জুন, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশের মতো দেশে কুরবানী বেশি প্রাসঙ্গিক। এক কেজি গোরুর মাংস ৮০০ টাকা যা অনেকের দৈনিক মজুরির সমান। যাদের সামর্থ্য আছে তারা যদি ফ্রীজে মাংস না জমিয়ে রেখে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বন্টন করে দিতো অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ মাংস খেতে পারতো। আরেকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা হলো, যারা মাংস নেয় তাদের কে ধমীয় বিধান বোঝাতে হবে যে উহা বিক্রির জন্য নহে। অনেকে পাওয়া মাংস বিক্রি করে দেয়। উহা সহী নয়।

০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:১৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার পর্যবেক্ষণ যথার্থ। অনেক অনেক ধন্যবাদ। কুরবানির প্রকৃত উদ্দেশ্য শুধু পশু জবেহ নয়, বরং ত্যাগ ও সাম্যের চর্চা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকেই ফ্রিজ ভরে রাখা বা আত্মকেন্দ্রিকতার কারণে গরিবদের প্রাপ্য অংশ ঠিকভাবে পৌঁছে দেয় না। আর যাঁরা কুরবানির মাংস পেয়ে তা বিক্রি করেন, তাদের বুঝিয়ে বলা জরুরি—ইসলামী শরিয়তে কুরবানির মাংস বিক্রি করা উচিত নয়, বরং তা খাওয়া বা দান করাই বিধিসম্মত। এই শিক্ষা ও সচেতনতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে, তাহলেই কুরবানির সামাজিক ও ধর্মীয় উদ্দেশ্য পূরণ হবে।

ঈদ মোবারক।

৩| ০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:১৩

নতুন বলেছেন: ঈদুল আযহা—শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি মুসলিম জীবনের গভীরতম আত্মত্যাগ, মানবিকতা, নৈতিকতা ও আল্লাহর প্রতি পরম আনুগত্যের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। প্রতিবছর এই মহিমান্বিত ইবাদতের সময় এলেই দেখা যায়, কিছু ভেকধারী 'সিজনাল পশুপ্রেমিক' কুরবানির বিরুদ্ধাচরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

কুরবানীকে আপনি অতিরিক্ত মহিমান্বিত করার চেস্টা করে যাচ্ছেন।

এটা কোন ফরজ এবাদত না।

◉ “কুরবানী কি সুন্নাহ নাকি ওয়াজিব?”এ বিষয়ে মুজতাহিদ ফকিহদের মাঝে দুইটি মত রয়েছে।
প্রথম মত: সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর কুরবানি ওয়াজিব। ইমাম আওযায়ি, ইমাম লাইস, ইমাম আবু হানিফা রহ. প্রমুখের মত এটা। আর এর উপরই হানাফী মাযহাবের ফতোয়া। আর ইমাম মালিক ও ইমাম আহমদের একটি মতেও কুরবানি ওয়াজিব। ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এর মতেও কুরবানী করা ওয়াজিব।
দ্বিতীয় মত: কুরবানি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বা অত্যন্ত তাকিদপূর্ণ সুন্নাহ। এটা ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ, ইবনে কুদামা, ইবনে হাযম রহিমাহুমুল্লাহ প্রমুখসহ একদল ফকীহদের মত। আর এক বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম মালিকের মতেও সুন্নতে মুয়ায়াক্কাদাহ।


আমাদের দেশের মানুষের মাঝে কুরবানী জনপ্রিয় কয়েকটা কারনে।

শুরুতে সমাজে বড়লোকেরাই কুরবানী দিতো তারা দরিদ্রদের মাঝে মাংস বিতরন করতো। সেখান থেকে মধ্যবিত্তও কুরবানী শুরু করে। তাই এটা স্টেটাস সিমবল হয়ে উঠেছে।
ডিপফ্রিজ চলে আসাতে ভালো মানের গরুর মাংস খাবার একটা ভালো উতস। ধর্মও পালন হলো, ভালো গরুর মাংসও খাওয়া গেলো।

যারা বলছে দরিদ্ররা গরুর মাংস খেতে পারে। তারা সম্ভবত এই মাংস সংগ্রহ করতে দরিদ্রদের কতটা কস্ট করতে হয়।

আমি জানিনা আপনারা দেখেছেন কিনা যে কুরবানী দিয়ে সবাই দরিদ্র মানুষের জন্য ১/৩ মাংস বিলি করতে সচেস্ট হয়েছে।

বরং সবাই তাদের নিজেদের প্রতিবেশি এবং আত্নীয়, বন্ধুদের মাঝে কিছু বতরন করে বাকিটা ফ্রীজে রেখে দিতে।

দেশে যেখানে ফরজ নামাজ, যাকাত, স্ত্রীর দেনমোহরের মতন ফরজগুলির প্রতি মানুষের উতসাহ কম।

সেই দেশে সুন্নত-ওয়াজিব কুরবানীর মতন একটা এবাদত জিন্দা করাটা একটা উতসবে পরিনত হয়েছে।

আমাদের দেশে কুরবানীর আসল মহাত্তের আলোকে খুবই কম মানুষ কুরবানি দেয়।

সবাই সামাজিক রীতি এবং মাংস খাবার মজায় দেয়।



০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:২০

নতুন নকিব বলেছেন:



কুরবানীকে আপনি অতিরিক্ত মহিমান্বিত করার চেস্টা করে যাচ্ছেন।

এটা কোন ফরজ এবাদত না।


-আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে কিছু বিষয়ে পরিষ্কার করা দরকার।

কুরবানী অবশ্যই ফরজ নয়, এটা ‘ওয়াজিব’ ইবাদত—যা সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াজিব ইবাদতকে অবহেলা করাও শরিয়তের দৃষ্টিতে গর্হিত। আমি কুরবানিকে 'অতিরিক্ত মহিমান্বিত' করিনি বরং ইসলামের মূল শিক্ষা অনুযায়ী এর আত্মত্যাগ, মানবিকতা ও আনুগত্যের দিকটি তুলে ধরেছি।

আসলে, কুরবানী শুধু পশু জবাই নয়—বরং এটা আত্মত্যাগের প্রতীক, যা হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও হযরত ইসমাঈল (আ.)–এর ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজও মুসলিম জগতে জীবন্ত শিক্ষা বহন করে। কুরবানীর মাধ্যমে দরিদ্রদের সহযোগিতা, সাম্যবোধ ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করা হয়—যা সমাজে মানবিকতার গভীর প্রতিফলন ঘটায়।

অতএব, কুরবানীকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই; বরং এটা আমাদের ঈমান, ত্যাগ ও মানবিকতার পরীক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।

০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:২৬

নতুন নকিব বলেছেন:



◉ “কুরবানী কি সুন্নাহ নাকি ওয়াজিব?”এ বিষয়ে মুজতাহিদ ফকিহদের মাঝে দুইটি মত রয়েছে।
প্রথম মত: সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর কুরবানি ওয়াজিব। ইমাম আওযায়ি, ইমাম লাইস, ইমাম আবু হানিফা রহ. প্রমুখের মত এটা। আর এর উপরই হানাফী মাযহাবের ফতোয়া। আর ইমাম মালিক ও ইমাম আহমদের একটি মতেও কুরবানি ওয়াজিব। ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এর মতেও কুরবানী করা ওয়াজিব।
দ্বিতীয় মত: কুরবানি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বা অত্যন্ত তাকিদপূর্ণ সুন্নাহ। এটা ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ, ইবনে কুদামা, ইবনে হাযম রহিমাহুমুল্লাহ প্রমুখসহ একদল ফকীহদের মত। আর এক বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম মালিকের মতেও সুন্নতে মুয়ায়াক্কাদাহ।

আমাদের দেশের মানুষের মাঝে কুরবানী জনপ্রিয় কয়েকটা কারনে।

শুরুতে সমাজে বড়লোকেরাই কুরবানী দিতো তারা দরিদ্রদের মাঝে মাংস বিতরন করতো। সেখান থেকে মধ্যবিত্তও কুরবানী শুরু করে। তাই এটা স্টেটাস সিমবল হয়ে উঠেছে।
ডিপফ্রিজ চলে আসাতে ভালো মানের গরুর মাংস খাবার একটা ভালো উতস। ধর্মও পালন হলো, ভালো গরুর মাংসও খাওয়া গেলো।

যারা বলছে দরিদ্ররা গরুর মাংস খেতে পারে। তারা সম্ভবত এই মাংস সংগ্রহ করতে দরিদ্রদের কতটা কস্ট করতে হয়।

আমি জানিনা আপনারা দেখেছেন কিনা যে কুরবানী দিয়ে সবাই দরিদ্র মানুষের জন্য ১/৩ মাংস বিলি করতে সচেস্ট হয়েছে।

বরং সবাই তাদের নিজেদের প্রতিবেশি এবং আত্নীয়, বন্ধুদের মাঝে কিছু বতরন করে বাকিটা ফ্রীজে রেখে দিতে।

দেশে যেখানে ফরজ নামাজ, যাকাত, স্ত্রীর দেনমোহরের মতন ফরজগুলির প্রতি মানুষের উতসাহ কম।

সেই দেশে সুন্নত-ওয়াজিব কুরবানীর মতন একটা এবাদত জিন্দা করাটা একটা উতসবে পরিনত হয়েছে।

আমাদের দেশে কুরবানীর আসল মহাত্তের আলোকে খুবই কম মানুষ কুরবানি দেয়।

সবাই সামাজিক রীতি এবং মাংস খাবার মজায় দেয়।


-প্রিয় ভাই, আপনার বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আপনি ইবাদত হিসেবে কুরবানীর ব্যাপারে দ্বিমতপূর্ণ ফিকহি মতামতগুলো তুলে ধরেছেন, যা নিঃসন্দেহে অনেকের জন্য জ্ঞানবর্ধক হবে।

আপনি ঠিকই বলেছেন, ইসলামী শরীয়তে মুজতাহিদ ইমামদের মধ্যে কুরবানী ওয়াজিব না সুন্নাতে মুয়াক্কাদা—এ নিয়ে মতভেদ আছে। তবে হানাফি মাযহাব অনুসারী আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ বসবাস করে এবং এই মাযহাবে সামর্থ্যবানদের উপর কুরবানী ওয়াজিব। তাই আমাদের পরিপ্রেক্ষিতে একে অবহেলা করা উচিত নয়।

আপনার সমাজ বিশ্লেষণও যথার্থ। কুরবানী আমাদের দেশে অনেকের কাছে সামাজিক সম্মান বা স্টেটাস সিম্বলে পরিণত হয়েছে—এটি একধরনের বাস্তবতা। তবে এর মানে এই নয় যে সকলের নিয়ত খারাপ বা শুধু ভোগবাদী। বরং অনেকেই ধর্মীয় বিধান পালনের পাশাপাশি চেষ্টা করেন দরিদ্রদের মুখে হাসি ফোটাতে।

হ্যাঁ, কেউ কেউ শুধু ফ্রিজ ভরতেই কুরবানী করে—এমন অনুচিত প্রবণতা অবশ্যই সংশোধনযোগ্য। কিন্তু তাই বলে এই ইবাদতের মাহাত্ম্য বা গুরুত্ব খাটো করা যাবে না। বরং আমাদের উচিত—এই ইবাদতের আধ্যাত্মিক দিকগুলো তুলে ধরে মানুষকে আরও সচেতন করা।

সামাজিক বা সাংস্কৃতিক প্রভাব থাকলেও কুরবানী একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ইবাদত, যার ভিত্তি কুরআন, হাদীস এবং ইজমায়ে উম্মতের ওপর। রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজে নিয়মিত কুরবানী করেছেন এবং উৎসাহ দিয়েছেন। যাঁরা কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন, তাদের নিয়তকে হালকা করে দেখা একধরনের অবিচারই হবে।

শেষ কথা হলো, ইবাদতে কোনো ভুল বা দোষ নেই, মানুষ ইবাদত করার সময় ভুল করতে পারে। তাই আমাদের কাজ হওয়া উচিত — ইবাদতের আসল শিক্ষা ও উদ্দেশ্য সবাইকে বুঝিয়ে বলা এবং মানুষকে তা পালন করতে উৎসাহ দেওয়া। ইবাদতকে অবজ্ঞা করা বা ছোট করে দেখা ঠিক নয়।

৪| ০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:২৩

নতুন বলেছেন: অতএব, কুরবানীকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই; বরং এটা আমাদের ঈমান, ত্যাগ ও মানবিকতার পরীক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।


আপনি তত্ব কথা বলেছেন ঠিক আছে।

আমি বর্তমানের বাস্তবতার কথা বলেছি।

যেই সমাজে সালাত, যাকাত, দেন মোহরের মতন বিষয়ের চেয়ে পশু কুরবানির উপরে গুরত্ব বেশি সেখানে যে বিরাট সমস্যা আছে সেটা আশা করি বুঝতে পারছেন।

০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি তত্ব কথা বলেছেন ঠিক আছে।

আমি বর্তমানের বাস্তবতার কথা বলেছি।

যেই সমাজে সালাত, যাকাত, দেন মোহরের মতন বিষয়ের চেয়ে পশু কুরবানির উপরে গুরত্ব বেশি সেখানে যে বিরাট সমস্যা আছে সেটা আশা করি বুঝতে পারছেন।


ধন্যবাদ, ভাই। আপনি বাস্তবতার দিকটা সামনে এনেছেন—এটা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।

আমি একমত যে, আমাদের সমাজে অনেক সময় ফরজ ইবাদত যেমন সালাত, যাকাত বা দেনমোহরের গুরুত্ব কমে গিয়ে লোকদেখানো কিছু আমলে বাড়তি জোর পড়ে—এটা নিঃসন্দেহে একটি বড় সামাজিক ও ধর্মীয় সমস্যা।

তবে এখানেই আমাদের দায়িত্ব দাঁড়ায় ইবাদতের গুরুত্বে ভারসাম্য আনা, কোনো ইবাদতকে ছোট না করা।
কুরবানী মহান ইবাদত—ইসলামে এর গভীর আত্মত্যাগ ও আল্লাহভীতি প্রকাশের শিক্ষা রয়েছে।
সাথে সাথে আমাদের সমাজে যেন সালাত, যাকাত, দেনমোহরের মতো ফরজ বিষয়গুলোকেও যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়—সেজন্য চেতনা সৃষ্টি করাও জরুরি।

ইবাদতের কোনোটা হালকা, কোনোটা ভারী নয়। প্রত্যেকটি নিজের জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে একটার চর্চা দেখে অন্যটিকে খাটো না করে, বরং দুটোই জাগ্রত করাই সবচেয়ে কাঙ্খিত দৃষ্টিভঙ্গি।

আসুন, সমালোচনার বদলে সচেতনতা ও দাওয়াহের মাধ্যমে এই ভারসাম্য গড়তে সচেষ্ট হই।

৫| ০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:২৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: নতুন@কেউ ফরজ যথাযথ ভাবে পালন করে না দেখে কুরবানী দিতে পারবে না এমন ধারণা সঠিক নয়। যারা মাংস কালেকশন করে তাদের কে বাড়ি বাড়ি গিয়েই তা সংগ্রহ করতে হবে। দেশে এমন কোনো সিস্টেম নাই যে গরীবদের হকের মাংস রাষ্ট্রীয় ভাবে কালেকশন করে লিস্ট করে তাদের বাড়ি বাড়ি পৌছে দিবে। যারা গরীব অনেক সময় একই পরিবারের সবাই দাঁড়ায় লাইনে মাংস নিতে। একই পরিবারের ৫/৬ জন যদি আলাদা আলাদা ব্যক্তি সেজে মাংস নিতে চায় তাহলে অনেকে মাংস প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হতে পারে। কুরবানী কে চাইলে সর্বোচ্চ পরিমাণ জনকল্যাণ মুখী করা যায়।

ঈদ মোবারক।

০৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি খুব বাস্তব ও গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক তুলে ধরেছেন—আসলে কুরবানির মূল চেতনাই হলো জনকল্যাণ, ত্যাগ ও সমবেদনা। ফরজ ইবাদতে কারো ঘাটতি থাকলে তাকে সেই ফরজ পালনে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে, কিন্তু এর মানে এই নয় যে সে কুরবানী থেকে বাদ পড়বে।

আপনি ঠিকই বলেছেন, গরিবদের জন্য কোনো রাষ্ট্রীয় বা কেন্দ্রীয় বিতরণব্যবস্থা নেই—এবং এ বাস্তবতায় বিতরণে সচেতনতা ও সুশৃঙ্খলতা জরুরি। একই পরিবারের একাধিকজন যদি আলাদা সেজে মাংস সংগ্রহ করেন, তা যেমন অনুচিত, তেমনি তাতে অন্যদের প্রাপ্য হরণও হয়।

অতএব, কুরবানিকে আরও অর্থবহ ও জনকল্যাণমুখী করতে হলে শুধু পশু জবাই নয়—বরং এর সঠিক বণ্টন, নৈতিকতা ও উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটানোই আমাদের মূল দায়িত্ব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.