![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
সুস্থ জীবন যাপনে নবীজির অনন্য কিছু অভ্যাস ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনযাপন কেবল আধ্যাত্মিকতা বা ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তা ছিল এক পরিপূর্ণ, বিজ্ঞানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারার মূর্ত প্রতীক। আজকের আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান ও পুষ্টিবিদ্যার দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর অনেক সুন্নত অভ্যাসের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ও উপকারিতা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা মানে শুধু আত্মার উন্নয়ন নয়, বরং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা।
নিচে নবীজি (সা.)-এর স্বাস্থ্যবান্ধব ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যেগুলোর প্রতিটি আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে পরিপূর্ণভাবে প্রমাণিত এবং প্রাসঙ্গিক।
১. ভোরে ঘুম থেকে ওঠা
নবীজি (সা.) প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতেন। সকাল সকাল জেগে ওঠা উৎপাদনশীলতা বাড়ায় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
নবীজির এই অভ্যাস আমাদের শেখায় যে, দিনের শুরুতে উঠে নিয়মিত রুটিন মেনে চলা জীবনের গুণগত মান বাড়ায়। এমনকি প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট আগে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “হে আল্লাহ! আমার উম্মতের জন্য তুমি তাদের সকালের সময়কে বরকতময় করে দাও।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৬০৬)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: ভোরে ওঠা উৎপাদনশীলতা বাড়ায়, মানসিক চাপ কমায় এবং সারাদিনের রুটিন সুশৃঙ্খল করে। (Maxwell, J., The Power of Early Morning, HarperCollins, 2018, p. 45-47)
২. পরিমিত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়া
নবীজি (সা.) কম খাওয়ার উপর জোর দিতেন এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য এটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করতেন। তিনি বলেছেন, “মানুষ পেটের চেয়ে বড় কোন পাত্র পূর্ণ করে না। মানুষকে কয়েক লোকমা যথেষ্ট, যা তাকে শক্তি জোগায়। যদি তার বেশি খেতে হয়, তবে এক-তৃতীয়াংশ খাবার, এক-তৃতীয়াংশ পানি এবং এক-তৃতীয়াংশ নিঃশ্বাসের জন্য রাখুক।" (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৩৪৯)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: এটির জাপানি 'হারা হাচি বু' নীতির সাথে মিল রয়েছে। ‘হারা হাচি বু’ নীতিতে বলা হয়েছে, পেট ৮০% পূর্ণ হলে খাওয়া বন্ধ করতে হবে। আধুনিক গবেষণাও বলছে যে, কম খাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং দীর্ঘায়ু বাড়াতে সাহায্য করে (Makino, T., The Okinawa Diet, Berkeley Books, 2001, p. 89-92)
৩. ধীরে ধীরে খাওয়া ও চিবিয়ে খাওয়া
হাদিস: রাসুল (সা.) খাবার ধীরে ধীরে খাওয়ার শিক্ষা দিতেন এবং তাড়াহুড়ো করে না খেয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খেতে নির্দেশ দিতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৩৪৮)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: মস্তিষ্কে পূর্ণতার সংকেত পৌঁছাতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। ধীরে খাওয়া হজমশক্তি উন্নত করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করে। (Pollan, M., In Defense of Food, Penguin, 2008, p. 112-114)
নবীজির এই অভ্যাস আমাদের শেখায় যে, খাওয়ার সময় সচেতনতা বজায় রাখা শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. একসঙ্গে খাওয়া
রাসুল (সা.) বলেন: “তোমরা একসাথে খাও, আলাদা হয়ে খেয়ো না; কেননা একত্রে খাওয়ায় বরকত থাকে।" (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩২৮৭)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে খাওয়া মানসিক চাপ কমায় এবং শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। (Fiske, D., Family Meals, HarperCollins, 2016, p. 67-70)
এই অভ্যাস সামাজিক বন্ধন শক্তিশালী করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
৫. ধীরে ধীরে পানি পান করা
নবীজি (সা.) পানি পানের সময় তাড়াহুড়ো না করে দুই বা তিনবার শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে পান করতেন (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৬৩১)।
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: একসঙ্গে অতিরিক্ত পানি পান করলে মাথাব্যথা, ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা এবং মাঝে মাঝে মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে। ধীরে পানি পান করলে শরীর সঠিকভাবে তা শোষণ করতে পারে এবং মাথা ঘোরা, ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা কমার পাশাপাশি সর্বাধিক উপকার নিশ্চিত করে। (Klinman, H., The Water Way, Wiley, 2014, p. 55-57)
৬. খেজুর খাওয়া
নবীজি (সা.) এর পছন্দনীয় খাবারের তালিকায় অন্যতম ছিল খেজুর। তিনি খেজুর খেতেন এবং বলেছেন: “যে পরিবারে খেজুর আছে, তারা ক্ষুধার্ত থাকবে না” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২০৪৬)।
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: খেজুর রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে, ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে শুরু করতে সাহায্য করে। এছাড়া, খেজুরে অক্সিটোসিন উৎপাদন বাড়ায়, যা প্রসবকালীন সংকোচন ত্বরান্বিত করতে সহায়ক। (Jones, L., The Date Power, Wiley, 2016, p. 78-80)
৭. রোজা রাখা
নবীজি (সা.) শুধু রমজানে নয়, প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার এবং প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯৮০, সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১১৬০)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, প্রদাহ হ্রাস করে এবং দীর্ঘায়ু বাড়ায়। রোজা শরীরকে হজমের পরিবর্তে নিরাময় প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। (Longo, V., The Longevity Diet, Penguin, 2018, p. 105-108)
নবীজি (সা.)-এর এই অভ্যাস আধুনিক স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
৮. নামাজ ও শারীরিক সচলতা
নবীজি (সা.) শারীরিক সুস্থতার উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে তিনটি—নামাজ, রোজা ও হজ্জ—শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে। নামাজ নিজেই একটি শারীরিক ব্যায়াম, যা পেশি ও জয়েন্টের নড়াচড়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে। তিনি শারীরিক ক্রিয়াকলাপের প্রতি উৎসাহ দিতেন (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, অনুবাদ: মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা: ২০১২, ৪/২৩৪)। রাসুল (সা.) বলেন: “নামাজ আমার চোখের শীতলতা।" (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ৩৯৩৯)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: নামাজ শারীরিক ব্যায়ামের মতো কার্যকর, পেশি ও জয়েন্টের নড়াচড়া রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। (Harvard Health, Benefits of Physical Activity, 2017, p. 54-56)
৯. ঘুমের সুন্নত পদ্ধতি
রাসুল (সা.) ডান কাত হয়ে ঘুমাতেন এবং বলতেন: "আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৯৫৩)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: ডান পাশে ঘুমালে হার্টে চাপ কম পড়ে, পাকস্থলীতে খাবার সহজে হজম হয় এবং ফুসফুসে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে। বাম দিকে বা উপুড় হয়ে ঘুমালে রিফ্লাক্স ও হজমে সমস্যা হতে পারে। (Journal of Clinical Gastroenterology, 2003)
১০. ঘুমের আগে বিছানা ঝাড়া ও উজু অবস্থায় ঘুমানো
হাদিস: রাসুল (সা.) বলেন: “তোমাদের কেউ যখন শোবার জন্য বিছানায় যাবে, সে যেন তার বিছানা ঝেড়ে নেয় এবং বাম হাত দিয়ে তিনবার ঝেড়ে দোয়া পড়ে শোয়।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩২০)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: ঘুমানোর আগে হাত-পা ধুলে ইনফেকশন কমে, ঘুম গভীর হয় এবং মানসিক শান্তি আসে। পরিষ্কার বিছানা অ্যালার্জেন ও ধুলাবালি থেকে সুরক্ষা দেয়, যা শ্বাসকষ্ট ও ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধ করে। উজু মানসিক প্রশান্তি আনে। (National Sleep Foundation, 2017)
১১. মিসওয়াক ব্যবহার
রাসুল (সা.) বলেন: “আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর না হলে, আমি তাদের প্রতি প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৮৭)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: মিসওয়াকে থাকা সালভাদোরা পার্সিকা গাছের উপাদানগুলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। এটি দাঁতের ক্ষয়রোধ, মাড়ির সংক্রমণ ও মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধে কার্যকর। (Al Lafi & Al Lawazie, Therapeutic Benefits of Miswak, Saudi Dental Journal, 1995)
১২. তেল মালিশ (জয়তুন তেল)
হাদিসে রাসুল (সা.) জয়তুন তেল ব্যবহারের কথা বলেছেন: “তোমরা জয়তুন তেল খাও ও তা মাখো, কেননা তা বরকতময় বৃক্ষ থেকে উৎপন্ন।” — (তিরমিযি, হাদিস: ১৮৫১)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: অলিভ অয়েল চুল ও ত্বকে আর্দ্রতা জোগায়, ত্বক সজীব রাখে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি চুল পড়া রোধ এবং প্রদাহ প্রতিরোধেও উপকারী। (Science Daily, 2012)
১৩. ডালিম খাওয়া
নবীজি (সা.)-এর প্রিয় একটি ফল ছিল ডালিম। রাসুল (সা.) ডালিম খেতে পছন্দ করতেন এবং সাহাবাদের তা খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৪৫৭)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: ডালিম অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল, যাতে ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, যা বিপাক প্রক্রিয়ায় হাড়ের গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এতে পটাশিয়াম রয়েছে, যা কোষের কার্যকারিতা বজায় রাখে এবং ফ্লুইড ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। ডালিমে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড এবং পলিফেনল হৃদরোগের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। (Ayoshi, A., The Power of Pomegranate, Springer, 2015, p. 32-35)
নবীজি (সা.)-এর এই খাদ্যাভ্যাস আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
১৪. হাঁটা ও সাঁতার শেখা
হাদিস: রাসুল (সা.) বলেন: “তোমাদের সন্তানদের সাঁতার, তীরন্দাজি ও ঘোড়সওয়ারি শেখাও।" (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, ৫/২৯৩)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: হাঁটা ও সাঁতার হৃদযন্ত্র, ফুসফুস ও পেশির কার্যকারিতা উন্নত করে। এগুলো শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং স্ট্রেস হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখে। (Harvard Health Publishing, 2019)
১৫. জীবাণু থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত হাত ধোয়া
রাসুল (সা.) খাওয়ার আগে ও পরে, ঘুমের আগে এবং ওযুর সময় হাত ধুতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬২৫৭)
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ: হাত ধোয়া বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। এটি ফ্লু, ডায়রিয়া ও ভাইরাল ইনফেকশনের ঝুঁকি ৫০% পর্যন্ত কমায়। (WHO, Hand Hygiene Guidelines, 2009)
উপসংহার:
নবীজির (সা.) জীবনধারা একটি পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধির আদর্শরূপ। আধুনিক বিজ্ঞান যেসব স্বাস্থ্যনির্দেশনা দিচ্ছে, তিনি সহস্রাব্দী পূর্বেই তা জীবনাচরণে বাস্তবায়ন করেছেন। ভোরে ওঠা, মেসওয়াক করা, কম ও ধীরে খাওয়া, রোজা রাখা, খেজুর ও ডালিমের মতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায়ের মাধ্যমে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা—এই অভ্যাসগুলো আমাদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ও সুষম জীবনের কথা বলে। তাঁর অভ্যাসগুলো আত্মিক উৎকর্ষের পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতা, মানসিক প্রশান্তি ও সামাজিক সুসংহতির ভিত্তি স্থাপন করে।
আমরা যদি কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসে নয়, বরং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তাঁর এই সুন্নতগুলোকে আমাদের জীবনের অংশ করি, তবে তা আমাদের একটি ভারসাম্যপূর্ণ, সুস্থ ও সুশৃঙ্খল জীবন উপহার দেবে।
সূত্রসমূহ:
Maxwell, J., The Power of Early Morning, HarperCollins, 2018
Makino, T., The Okinawa Diet, Berkeley Books, 2001
Pollan, M., In Defense of Food, Penguin, 2008
Fiske, D., Family Meals, HarperCollins, 2016
Klinman, H., The Water Way, Wiley, 2014
Jones, L., The Date Power, Wiley, 2016
Longo, V., The Longevity Diet, Penguin, 2018
Harvard Health Publishing, Benefits of Physical Activity, 2017 & 2019
Journal of Clinical Gastroenterology, 2003
National Sleep Foundation, 2017
Al Lafi & Al Lawazie, Therapeutic Benefits of Miswak, Saudi Dental Journal, 1995
Science Daily, 2012
Ayoshi, A., The Power of Pomegranate, Springer, 2015
WHO, Hand Hygiene Guidelines, 2009
ডিসকভারিং ইসলাম আর্কাইভ
হাদিস সংকলন: সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম, সুনানে ইবনে মাজাহ, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসাঈ, তিরমিজি, মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা
২৮ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৮
নতুন নকিব বলেছেন:
একেবারে সঠিক বলেছেন। জাজাকুমুল্লাহু খাইরান।
২| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:১৪
অগ্নিবাবা বলেছেন: সহীহ শামায়েলে তিরমিযী
২৬. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর তরকারীর বর্ণনা
১২৬. আবু উবায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য এক ডেগ গোশত রান্না করলাম। তিনি বকরীর সামনের উরুর গোশত অধিক পছন্দ করতেন। তাই আমি তাকে সামনের একটি পা দিলাম। তারপর তিনি বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি তাকে সামনের আরেকটি পা দিলাম। তারপর তিনি পুনরায় বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! বকরীর সামনের পা কয়টি থাকে? তিনি বললেন, সে মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন! যদি তুমি চুপ থাকতে তাহলে আমি যতক্ষণ সামনের পা চাইতাম, ততক্ষণ তুমি দিতে পারতে।[1]
[1] মুজামুল কাবীর, হা/১৮২৮৬; মুসনাদে বাযযার, হা/৮৩৪৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থ থেকে জানা যায়, নবীর এই খাবার ব্যাপারে অতিরিক্ত লোভ লালসা এবং অতিরিক্ত নারী লোভ নিয়ে ইহুদীরা নবীকে কটাক্ষ করে বলতেন, এই লোকের আহারে পরিতৃপ্তি হয় না, এই লোক নারী ছাড়া আর কিছু বুঝে না [1] –
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, দ্বিতীয় খণ্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ৩৯, ৪০ [↑]
২৮ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
অগ্নিবাবা,
আপনার মন্তব্যে আপনি হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর খাদ্যসংক্রান্ত একটি হাদিস উল্লেখ করেছেন এবং এরপর “আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া” থেকে একটি কথিত উদ্ধৃতি দিয়ে আপনি নবীজীর চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আপনি যদি সত্যিকারভাবে ইসলাম ও তার নবীর ﷺ জীবন ও নীতি বুঝতেন, তাহলে এমন মন্তব্য করতেন না। তবুও, ভুল বোঝা বা বিকৃত তথ্যের ভিত্তিতে করা এই মন্তব্যের কিছু প্রাসঙ্গিক জবাব এখানে দেওয়া হলো—
১. খাদ্যগ্রহণ ও নবীজির আহারের পরিমাণ
আপনি যে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন, তা সহিহ সূত্রে বর্ণিত হলেও তার ব্যাখ্যা ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। নবীজি ﷺ যখন “আরও একটি সামনের পা দাও” বলেছিলেন, তখন তা একটি ব্যঙ্গাত্মক শিক্ষনীয় বার্তার অংশ। সাহাবী যখন বললেন, “সামনের পা তো মাত্র দুটি হয়”, তখন নবীজি ﷺ বলেন, “যদি তুমি চুপ থাকতে, তবে আমি যতবার চাইতাম, ততবার তুমি দিতে পারতে”—অর্থাৎ এটি একটি কৌতুকপূর্ণ, দিকনির্দেশনামূলক মন্তব্য, যাতে সাহাবীদের সাথে স্নেহপূর্ণ সম্পর্কের ছাপ পাওয়া যায়। এটা লোভ নয়, বরং একটি সুস্থ, মানবিক মুহূর্ত।
২. নারী সংক্রান্ত অপবাদ ও ইহুদি বিদ্বেষ
ইহুদিরা বহুবার নবীজি ﷺ এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। কুরআনেও তা উল্লেখ আছে:
“তাদের (অর্থাৎ মুনাফিকদের) মধ্যে এমন লোকও আছে, যারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং (তাঁর সম্পর্কে) বলে, ‘সে তো আপাদমস্তক কান’। ৫৬ বলে দাও, তোমাদের পক্ষে যা মঙ্গলজনক, সে তারই জন্য কান। ৫৭ সে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং মুমিনদের কথা বিশ্বাস করে।’” (সূরা তাওবাহ 9:61)
নবীজির ﷺ পারিবারিক জীবন, বিবাহ ও নারীদের প্রতি সম্মান ছিল আদর্শ। তিনি বিধবা, দাসমুক্ত নারী, যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিবারসহ সমাজের নিপীড়িত শ্রেণির নারীদের আশ্রয় দিয়েছেন। তার বৈবাহিক জীবন কেবল দৈহিক নয়, বরং সামাজিক পুনর্বাসন ও ইসলামী সমাজ গঠনের অংশ ছিল। যিনি নারীদেরকে পণ্য থেকে সম্মানে রূপান্তর করেছেন, তাঁকে নারী-লোভী বলাটা কেবল মিথ্যাচার নয়, বরং নিকৃষ্ট অপমান।
৩. "আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া" থেকে উদ্ধৃতি প্রসঙ্গে
আপনি যে “আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া” গ্রন্থের কথা বলেছেন, সেখানেও মূলত ইহুদিদের অপপ্রচার উল্লেখ করে তা নাকচ করা হয়েছে। সেই উদ্ধৃতির অংশবিশেষ তুলে এনে নবীজির বিরুদ্ধে প্রমাণ বানানো সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যপ্রসূত। ইসলামী ইতিহাসবিদ ইবনে কাসীর (রহ.) এসব কটাক্ষ তুলে এনেছেন যেন মুসলিমরা তা জানে এবং তা থেকে শিক্ষা নেয়।
পরিশেষে বলি:
আপনি ইসলামকে আঘাত করতে গিয়ে ইতিহাস, সাহিত্য ও ধর্মের প্রামাণ্যতা উপেক্ষা করেছেন। আপনাকে বলবো—ঘৃণা নয়, সত্য জানার আগ্রহ পোষণ করুন। হযরত মুহাম্মদ ﷺ ছিলেন সেই ব্যক্তিত্ব যাঁর নীতির উপর আজ শত কোটি মানুষ তাদের জীবনের আদর্শ নির্মাণ করেছে। তাঁর জীবন ছিল মিতব্যয়ী, সংযমী এবং সর্বোচ্চ মর্যাদার।
আশা করি, আপনি আরেকবার তথ্য যাচাই করে দেখবেন, সত্যকে বুঝবেন এবং বিদ্বেষ ছড়িয়ে শান্তির ধর্মকে অপমান করবেন না।
“তোমার পালনকর্তা সবচেয়ে ভাল জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, আর তিনিই ভাল জানেন কে সৎপথে আছে।” (সূরা ক্বালাম 68:7)
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৮
ইপিআর সৈনিক বলেছেন:
নবী দাউদও রাখাল ছিলেন, তিনি রাজা হয়েছিলেন।
আমাদের নবী বেকুব আরবদের মাঝে বেশ চালাক লোক ছিলেন, তিনিও রাখাল ছিলেন; বুদ্ধি করে কুরাইশদের এলাকায় ১টা সামন্তবাদী রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অন্য কিছু নয়।
২৮ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৪২
নতুন নকিব বলেছেন:
ইপিআর সৈনিক,
আপনার মন্তব্য কেবল বিদ্বেষপ্রসূত নয়, বরং ইতিহাসবিচ্যুত ও স্পষ্ট মিথ্যাচার। হযরত মুহাম্মদ ﷺ কখনোই রাজা ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন আল্লাহপ্রদত্ত নবী—যিনি ক্ষমতা নয়, দায়িত্ব বহন করেছিলেন। তিনি সম্পদ নয়, আদর্শ রেখে গেছেন।
আপনি যাকে “সামন্তবাদী রাজত্ব” বলছেন, সেটি ছিল ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র, যেখানে দাস-মুক্তি, নারীর মর্যাদা, করুণার শাসন ও ধর্মীয় সহনশীলতা ছিল মূলনীতি—যা আজও পৃথিবীর জন্য অনুসরণীয়।
আপনার বিদ্বেষ সত্যকে ঢাকতে পারবে না। ইতিহাসের আলোতেই নবীজি ﷺ শ্রেষ্ঠ প্রমাণিত।
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৬
ইপিআর সৈনিক বলেছেন:
নবী আপনার থেকে ও যে কোন বেদুইন থেকে জ্ঞানী ছিলেন, এতে সন্দেহ নেই।
২৮ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনি আমার সাথে এবং বেদুইনদের সাথে নবীজির তুলনা করে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ করছেন যা স্পষ্টতঃ বেআদবি।
আপনি কি এই আইডিটাও হারাতে চান?
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
৬| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৮
ইপিআর সৈনিক বলেছেন:
না, আমি আইডিটা হারাতে চাই না; দেখি, নিক রক্ষা করার জন্য chatGPT দিয়ে কয়েকটি সুরা সৃষ্টি করা যায় কিনা!
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১২
ইপিআর সৈনিক বলেছেন:
নবী ঢাকা ইউনিভর্সিটিতে পড়েনি আপনার মতো; উনি তেমন কিছু জানতেন না।
৮| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:১৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইপিআর সৈনিক@৭ এবং ৮ নং কি লিখলেন ? কেউ নবিজির আদেশ নিষেধ নিয়ে লিখলে বিপথে চলে যায় ? সামুতে নানা রকম পাঠক আছে। মহাজাগতিক সাহেবের লেখায় ও আপনি এ ধরণের কথা লিখেন না যা নতুন নকিব কে লিখেছেন।
পরে ban হলে বলেন সামুর সবাই খারাপ। ।
৯| ২৮ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৪৯
Akasher tara বলেছেন: @ইপিআর! এতদিনের জমানো কমেন্ট সব প্রসব করতেছে।@ওমর খাইয়াম আইডির কি হল!
১০| ২৯ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১:৫৭
আরোগ্য বলেছেন: সংরক্ষণে রাখার মত একটি পোস্ট। সুন্নত গুলো প্রতিটি মানুষের জন্যই সহজ কিন্তু শয়তানের ধোকা আর অলসতার জন্য আমরা নিজেদেরকে বঞ্চিত করি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:৫৮
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: রাসুল (স) এর কোন একটি কাজও আজ পর্যন্ত অনর্থক প্রমানিত হয়নি।