![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
নিজেকে এবং অন্যকে গীবত থেকে বাঁচানোর কৌশল ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এ জীবনব্যবস্থায় ব্যক্তি যেমন নিজের আত্মার পরিশুদ্ধির দিকে মনোযোগ দেয়, তেমনি সমাজের কল্যাণেও ভূমিকা রাখে। ইসলামে গীবত বা পরনিন্দা এমন একটি ঘৃণিত গুনাহ, যার কারণে ব্যক্তিগত আমল ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এবং সামাজিক সম্পর্কগুলো বিষিয়ে উঠতে পারে।
আল্লাহ তায়ালা কুরআনে স্পষ্টভাবে গীবতকে হারাম ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন—
"يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ
أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ"
অর্থ: "হে ঈমানদারগণ! তোমরা অধিক সন্দান থেকে দূরে থাকো, কিছু কিছু সন্দেহ পাপ। এবং গুপ্তচরবৃত্তি করো না এবং তোমরা একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের কেউ কি পছন্দ করে যে, সে তার মৃত ভাইয়ের মাংস খাবে? নিশ্চয়ই তোমরা তা ঘৃণা করো। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।" -সূরা হুজুরাত: ১২
এই আয়াতে গীবতকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতো ভয়ংকর ও জঘন্য অপরাধ বলে চিত্রিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ গীবতের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন—
"الْغِيبَةُ: ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ."
"তোমার ভাই সম্পর্কে এমন কিছু বলা যা সে অপছন্দ করে— সেটাই গীবত।" -মুসলিম, হাদীস: ২৫৮৯
তাহলে, গীবত এমন একটি গুনাহ, যা সমাজে হিংসা, বিদ্বেষ, অবিশ্বাস ও বিবাদ সৃষ্টি করে। একজন মু’মিনকে চাই, সে যেন নিজেকে গীবত থেকে দূরে রাখে এবং অন্যকেও এই মারাত্মক গোনাহ থেকে বাঁচায়।
কিন্তু প্রশ্ন হলো— আমি কীভাবে নিজেকে গীবত থেকে রক্ষা করব এবং অন্যকেও এই পাপ কাজ থেকে বিরত রাখব, বিশেষত যখন কেউ আমার সামনে গীবত শুরু করে?
এর উত্তম কৌশল হলো— কৌশলে, সদ্ব্যবহারে তাকে গীবত থেকে বিরত রাখা। যেমন ধরুন, কেউ যখন আপনার সামনে গীবত করছে, তখন আপনি তাকে সরাসরি থামাতে গেলে সে লজ্জা পেতে পারে বা প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। তাই আপনি সহজ ও হিকমতপূর্ণভাবে যদি বলেন:
"ভাই, আমি নিয়ত করেছি, আমি কারো গীবত করব না। দয়া করে আপনি আমার জন্য দুআ করবেন— যেন আমি এই অভ্যাস থেকে বাঁচতে পারি। আমি চেষ্টা করছি নিজেকে সংশোধন করার, আপনি আমার পাশে থাকুন। যদি আমার মুখ দিয়ে কখনো গীবতের মতো কিছু বের হয়, তাহলে আমাকে সতর্ক করবেন।"
এইভাবে আপনি নিজেকে অসম্মানিত না করে, অপরকেও অপমান না করে তাকে বুঝিয়ে দিলেন যে, গীবত করা ঠিক নয়। এতে সে আপনাকে গীবত করতে উৎসাহিত তো করবেই না, বরং নিজেও লজ্জা পাবে এবং আশা করা যায়, সে যে গীবত করছিল তার সেই কাজটি অবশ্যই থেমে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এটি নবীজি ﷺ-র হাদীসের আলোকে একান্ত গুরুত্বপূর্ণ হিকমত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন—
"مَنْ رَدَّ عَنْ عِرْضِ أَخِيهِ، رَدَّ اللَّهُ عَنْ وَجْهِهِ النَّارَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ"
"যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের মান-সম্মান রক্ষা করে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার মুখকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।" -তিরমিযি, হাদীস: ১৯৩১
অতএব, গীবত থেকে নিজেকে রক্ষা করা যেমন জরুরি, তেমনি অন্যকে এই গোনাহে লিপ্ত হওয়া থেকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্বও একটি ঈমানী কর্তব্য। হিকমত ও কৌশলের সাথে, সম্মান বজায় রেখে— আপনি নিজেও নিরাপদ থাকুন, সমাজকেও নিরাপদ রাখুন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে গীবতের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে, তা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন এবং অন্যকে রক্ষা করার ঈমানি শক্তি দিন। আল্লাহুম্মা আমীন।
০৫ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ২:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার হৃদয়স্পর্শী প্রতিক্রিয়ার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। গীবত পরিত্যাগ করার কৌশল বোঝা এবং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা সত্যিই একটি মহৎ অর্জন। এটি কেবল আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সমৃদ্ধ ও শান্তিময় করে না, বরং পরকালে বিশ্বাসীদের জন্য নাজাতের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইনশাআল্লাহ, আমাদের প্রচেষ্টা থাকা উচিত যাতে আমরা সকলে মিলে নিজেদের কথা ও কাজে সততা ও পবিত্রতা ধরে রাখতে পারি, যার ফলে আমাদের হৃদয় ও সমাজ আলোকিত হয়।
আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।
২| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ৮:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি নিজেই গীবত করেন।
চাঁদগাজীকে নিয়ে আমি সব সময় গীবত করেছেন।
০৬ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:১৭
নতুন নকিব বলেছেন:
চাঁদগাজীর মত সীমালঙ্ঘনকারী ব্যক্তির জন্য ব্লগ কখনোই সঠিক স্থান নয়। আমি মনে করি, তার ব্যাপারে ব্লগ মডারেটর মহোদয় সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।
০৬ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:২২
নতুন নকিব বলেছেন:
গীবতের অর্থ না জানার কারণেই এমন কথা বললেন। গীবতের অর্থ হলো, কারও অনুপস্থিতিতে তার এমন কোনো দোষ বা খারাপ দিক বলা, যা সে শুনলে কষ্ট পায়, যদিও তা সত্য হয়। তবে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সমালোচনা করা গীবতের আওতাভুক্ত নয়। যেমন, কেউ অন্যায় বা জুলুম করলে তা থেকে মানুষকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে তার আচরণ উল্লেখ করা গীবত নয়। উদাহরণস্বরূপ, কেউ ব্যবসায় ধোঁকা দেয়—তার ব্যাপারে অন্যকে সাবধান করতে গিয়ে বলা যেতে পারে, “সে বিশ্বাসঘাতকতা করে,” এতে গীবত হবে না।
তেমনি বিচারকের সামনে ন্যায়বিচার পাওয়ার উদ্দেশ্যে কারও অভিযোগ করা, কোনো ফতোয়া জানার জন্য কারও ভুল তুলে ধরা, কারও খোলা পাপ (যেমন প্রকাশ্যে মদপান বা চুরি) নিয়ে আলোচনা করা, কিংবা কাউকে তার খেতাব বা পরিচিতি দিয়ে চেনানো (যদি অপমান না হয়)—এসব ক্ষেত্রেও তা গীবত নয়। কিন্তু যদি উদ্দেশ্য হয় কাউকে অপমান করা, হেয় করা বা তার সম্মানহানি করা—তবে তা নিঃসন্দেহে গীবত হবে, যদিও কথাটি সত্য হয়। যেমন, বন্ধুর অনুপস্থিতিতে বলা, “সে খুব কৃপণ,” বা “ও তো সবসময় মিথ্যা বলে”—এগুলো গীবত।
সারকথা, কারও পেছনে সমালোচনা তখনই গীবত হয়, যখন তা কাউকে হেয় করা, অপমান করা বা অকারণে তার দোষ প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে বলা হয়। আর যখন তা হয় সৎ উপদেশ, সতর্কতা, বিচার বা শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে—তখন তা গীবতের আওতায় পড়ে না। আশা করি, বুঝতে পেরেছেন।
০৬ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:২২
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার চাঁদগাজী এখন কেমন আছেন?
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১:৫৬
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম ।