![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি যে স্কুলে ভর্তি হই স্কুল টি বাসা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় এবং কিছুটা ব্যয়বহুল হওয়ায় আব্বু আম্মু আমাকে নানুবাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। তখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণী তে পড়ি। তখন থেকে খুব একা একা লাগত। মাঝে মাঝে লুকিয়ে খুব কাঁদতাম। এই শূন্যতা পূরণের জন্য কোনো পথ খুঁজে পেতাম না। এভাবে মনে কষ্ট চেপে দুটি বছর কেটে গেল। অষ্টম শ্রেণী তে উঠলাম। মনের শূন্যতা পূরণের জন্য তখনো নিজের অজান্তে চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেই চেষ্টা থেকেই ভাল লাগল একটি মেয়ে কে। চেহারা অনেক বেশী সুন্দর হবার পরেও আমার শুধু ভাল লাগত তার দুটো চোখ।জলের মত টলটলে চোখ দুটো দেখলে অস্হির লাগত খুব। মেয়েটি আমাদের স্কুলেই পড়ত। এক বছরের জুনিয়র ছিল। খবর নিয়ে দেখলাম নানুবাড়ীর কাছেই থাকে। ছাত্রী হিসেবেও অনেক মেধাবী। জানি না কেন স্কুলে হাটাহাটি করার সময় ঘুরে ফিরে মেয়েটা আমার সামনে পড়ত। হয়ত মনের টানে। অনেক বেশি ভাল লাগা শুরু করল তাকে। নবম শ্রেণীতে ওঠার পর আর থাকতে না পেরে আমার এক প্রিয় বন্ধু কে নিয়ে গেলাম কথা বলতে। আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম তাই আমার বন্ধুটি কে পাঠালাম কথা বলতে। মেয়েটি দাঁড়াল না। এরপর আমি ডাকলাম তাও দাঁড়াল না। খুব রাগ হল। কয়েক মাসের ব্যবধানে আরো কয়েকবার চেষ্টা করে যথারীতি ব্যর্থ হলাম। এরপরেও মেয়েটাকে ভুলতেই পারছিলাম না। এত ব্যর্থতার পরেও ভাল লাগা এতটুকু কমল না। ওকে নিয়ে চিন্তা করতে স্বপ্ন দেখতে অনেক ভাল লাগত। এভাবে কখন যে এস এস সি পরীক্ষা দিয়ে দিলাম নিজেও জানি না। নানুবাড়ী থেকে বাসায় ফিরে আসলাম। মেয়েটার জন্য মন কাঁদত। কতদিন দেখি না তাকে। কিছুদিন পর একদিন ফেইসবুকে মেয়েটার নামে একটা ID দেখলাম। মিউচুয়াল ফ্রেন্ড চেক করে দেখলাম মেয়েটার ক্লাসের দুটি মেয়ে। ঐ মেয়ে গুলোর কাছ থেকে খবর নিয়ে জানলাম এই সেই মেয়ে। সাথে সাথে ID টি তে REQUEST পাঠালাম এবং অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে একটা মেসেজ দিলাম। এমন ভাবে মাফ চেয়ে মেসেজ দিলাম যা পড়ে রিপ্লাই দিতে সে বাধ্য। ১ ঘন্টার মধ্যে রিপ্লাই আসল। মেসেজ টা পড়ে সে মজা পেয়েছে তা বলল। এভাবে শুরু হল কথা। আস্তে আস্তে আমরা খুব ভাল বন্ধু হয়ে গেলাম। সে তখনো FB তে আমার FRIEND REQUEST এক্সেপট করে নি কারণ তার ভাই পাসওয়ার্ড জানত তার আইডির। আমার আর তার মেসেজ গুলোও সে মুছে ফেলত এই কারণে। ওর ভাই অন্য কাজে ব্যস্ত থাকত বলে ও ধরে নিয়েছিল উনি আর একাউন্ট টা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। তাই সে আমার REQUEST এক্সেপট করল। আমরা ফেইসবুকের নানা কমেন্ট ওয়াল পোস্ট নিয়ে দুষ্টুমি তে মেতে আছি এমন সময়ে একদিন ওর ভাই ID টি তে লগিন করল এবং সব দেখে ফেলল। ওর বাবা তখন ঢাকা ছিল। ওর ভাই বলল আব্বু আসুক তারপর তোমার ব্যবস্হা হবে। ও খুব ভয় পেয়ে গেল এবং আমাকে মোবাইল এ মেসেজ দিয়ে সব জানাল। আমি তাকে শান্তনা দিয়ে বললাম দেখি আমি কিছু করতে পারি কিনা। এরপর আমার প্রিয় বন্ধুটির সাহায্য নিয়ে একাউন্ট টি মেয়েটির ভাই এর কাছ থেকে হ্যাক করে নিলাম।ফলে সে বেঁচে গেল। তাকে এই খবর দেয়ার পর সে অনেক বেশী খুশী হয়ে গিয়েছিল তার মেসেজ দেখে তা বোঝা যাচ্ছিল।এরপর থেকে মেয়েটা আমার আরও ঘনিষ্ঠ হতে লাগল। প্রায় সারাদিন মেসেজিং চলতে লাগল কিন্তু তাকে মনের কথা টা বলতে পারছিলাম না কারণ আমি ওর তুলনায় অনেক নগণ্য ছিলাম। একদিন কথায় কথায় ওকে দুষ্টুমি করে বললাম..আচ্ছা আমরা তো শুধুই বন্ধু.. তাই না? তাহলে আমরা সারাদিনভর এভাবে কথা বলি কেন!! সে তত্ক্ষণাত্ আমাকে রিপ্লাই দিয়ে বলল কারণ.. আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি হতভম্ব হয়ে মেসেজটার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আবারো জিগ্গাসা করলাম, কি বললে তুমি? সে বলল, নিজে তো কখনো বলতে পারবে নাহ তাই আমিই বলে দিলাম! আমিও আমার জবাব দিয়ে দিলাম। শুরু হল আমাদের নতুন জগত্! প্রথম ফোনে কথা বলা প্রথম তার অসাধারণ টলটলে দুটি চোখে চোখ রাখা প্রথম হাতে হাত রাখা প্রথম তাকে বুকে জড়িয়ে রাখা.. অসাধারণ সব অনুভূতি। এসব শুধু স্বপ্নে দেখতাম এভাবে তা বাস্তব হবে তা কখনো ভাবিনি। স্কুলে অনেকেই ওকে পছন্দ করত বলে ঝামেলায় পড়তে হত কিন্তু আমার বন্ধুরা আমাদের দুজন কে এত বেশী দেখে রাখত আমাদেরকে কেউ বাঁধা দেয়ার সাহস পেত না। আমাকে কেউ কিছু বললেই মেয়েটি এমন ভাবে প্রতিবাদ করত কেউ কিছু বলত না ভয়ে। বন্ধুরা সবাই বলত, তুই বড় ভাগ্যবান দোস্ত! জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিনগুলো পার করছিলাম। ৮ মাসের মত কেটে গেল। রমজান মাস। ৪ দিন একটানা মেসেজ না দেওয়ায় অনেক চিন্তায় পড়ে গেলাম। ৫ম দিনে অবশেষে মেসেজ দিল বাসার সমস্যায় ছিল। একটু পরই বলল তোমার সাথে আমার জরুরী কথা আছে। তার কথা গুলো ছিল , সে একটা বিয়ে তে গিয়েছিল ওখানে তার দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় তাকে প্রপোজ করে। ছেলে টি কে সে না করে দেয় কিন্তু সে আমাকে ভালবাসে তা বলে নি, এই ভয়ে যে, যদি ছেলে টা তার বাবা কে বলে দেয় সে কাওকে ভালবাসে। ফলে ছেলে টি নানাভাবে চেষ্টা করতে থাকে তাকে নিজের করে নেয়ার এবং এক পর্যায়ে সে অনেক ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেললে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সে ভবিষ্যতে আরো খারাপ কিছু করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। এজন্য মেয়ে টি আমাকে অনুরোধ করে আমি যাতে তার জীবন থেকে সরে য়ায়। আমি কিছু না বলে ঐ ছেলেটার নামবার নিই এবং পরদিন তাকে আমাদের স্কুলে আসতে বলি। পরদিন ৩ জন মুখোমুখি হলাম। ভাইয়া টা কে প্রথমে বুঝালাম আমাদের মাঝে যাতে তিনি না আসেন। তারপর জিগ্গাসা করলাম মেয়েটা কি কখনো আপনাকে ভালবাসি বলেছে? সে বলল , ও আমাকে কখনো বলে নি ওর কোনো প্রেমিক আছে গত রাতে হঠাত্ করেই বলল। কথা গুলো বলার সময় হঠাত্ মেয়েটা সেখান থেকে চলে যেতে চাইল কিন্তু পথে তার বন্ধুরা তাকে ধরে ফেলল। এবার তাকে সরাসরি জিগ্যেস করলাম তুমি কাকে চাও সরাসরি বলে দিয়ে যাও। ঐ মূহুর্তে আমার আর মেয়েটার সব বন্ধুরাও ছিল তাই সে এক পর্যায়ে আমাকেই ভালবাসে বললেও এক পর্যায়ে বলে ওঠে আমি কাউকে ভালবাসি না। কাউকে লাগবে না আমার এসব বলে চলে যায়। ওর ব্যবহার দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি আমি! ও এখন অস্হিরতায় আছে ভেবে আমি এসব মাথায় নিলাম না।বাসায় যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষা করছি এমন সময় ঐ ভাইয়া টি আসল এবং তার মোবাইল টি আমাকে দিয়ে বলল মেসেজ গুলো পড় আর তুমি নিজেই বল আমি এখন কি করব। মেসেজ গুলী পড়লাম, যে ৪ দিন আমার সাথে কথা বলে নি ঐ ক দিনের মেসেজ গুলো পড়লাম শুধু। নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিল নাহ! ভাইয়া টা কে কিছু না বলে বাসে উঠে গেলাম। বাসে বসা অবস্হায় ওকে মেসেজ দিলাম ... আর যা কর আমাকে ফেলে দিও না প্লিজ। ও আমাকে আশ্বাস দিয়ে বলল .. দেখ ও আমার মোহ ছিল আর কিছু না। তোমরা দুজনি আমার বন্ধু। আমি এর বেশি কিছু তোমাকে ভাবতে পারছি না তাই মাফ করে দাও। আমি বললাম ঠিক আছে আমি বুঝতে পারছি তোমার মনের অবস্হা। বন্ধু হিসেবে মাঝে মাঝে কথা হত, এর মাঝে খেয়াল করলাম তার অদ্ভুত কিছু পরিবর্তন। ভাইয়াটি ও তার অনেক কিছু দেখলাম খবর পেলাম। কেন জানি মনে হল আমি তাদের পথে বাঁধা আর পিছুটান ছাড়া কিছু নয়। একদিন ইচ্ছা করে একটা পোস্ট এ ঝগড়া বাঁধিয়ে দিলাম মেয়েটার সাথে। তাকে রিমোভ করে দিলাম ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে, সে আমাকে ব্লক করে দিল। নীল বর্ণের যে আইডি টা তে ক্লীক করলে মন টা সব দুঃখ ভুলে গিয়ে বেঁচে থাকার পথ পেত তা কালো বর্ণ হয়ে গেল! শূণ্যতা আমার দিকে তাকিয়ে বলল "আমি এসে গেছি বন্ধু, এসে গেছি!" থাক শূণ্যতা, তাও আমি সুখী। কারণ আমার মনের রাজরাণী তো সুখী! সে তার আসল রাজপুত্র কে খুঁজে পেয়েছে। আমি একটা দূর্ঘটনা মাত্র। সুখী হও তোমরা আজীবন। দীর্ঘজীবি হোক তোমাদের ভালবাসা
২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫
ইনজামাম ঊল হক নাভীন বলেছেন: জ্বি
৩| ১৪ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩
কাকভেজা বলেছেন: মন খারাপ করো না, তারচেয়ে ভাল কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাবে, দোয়া কেি করি। সবার জীবনে এমন ঘটে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৬
ইনজামাম ঊল হক নাভীন বলেছেন: মন খারাপ নেই। আমি খুশি। সে ভাল আছে, এরচে খুশি কিছু হতে পারে না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
৪| ১৪ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১০
একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: পড়ে মনে হচ্ছে সত্য ঘটনা...
কার জীবনে ঘটলো এটা ??
লেখকের ??
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৭
ইনজামাম ঊল হক নাভীন বলেছেন: জি সত্যি ঘটনা
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: পড়ে মনে হচ্ছে সত্য ঘটনা...
কার জীবনে ঘটলো এটা ??
লেখকের ??