নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাজিয়া লিসা

আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই .......

নাজিয়া লিসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস ও আমরা ...

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:২৩

আশ্চর্য হলেও সত্যি ২০১০ এর আগে আস্তিক-নাস্তিক ব্যাপারটি কখনই আলাদাভাবে মাথায় আসেনি, আসলে জানতামও না। ২০১০ থেকে প্রচুর সচলায়তন ও somewhereinblog পড়ার কারণে প্রথম এই দুইটি আলাদা প্রজাতির কথা জানতে পারি।
বিচিত্র কারণে বিষয়টির প্রতি প্রবল আকর্ষণ অনুভব করে নিষিদ্ধ বিষয়ের মতো গোগ্রাসে উইকিপিডিয়া আর নাস্তিকদেরদের যাবতীয় ব্লগ পড়তে থাকলাম আমি। মিথ্যা তুলনামূলকভাবে কম বলি তাই অস্বীকার করে উপায় নেই যে ধর্মের প্রতি আমার এতদিনের লৌহকঠিন বিশ্বাসে কিছুটা প্রশ্ন এসেছিল সেই সময়টায়। (দয়া করে আমাকে কেউ এখন নাস্তিক ভাববেন না। আমি সর্বাঙ্গীণভাবে একজন বিশ্বাসী ও আস্তিক)।
মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। সন্দেহটা কিভাবে এসেছিল।
আমি স্বল্পশিক্ষিত মানুষ, কেউ আমাকে কিছু বলল আর আমি বিশ্বাস করে ফেললাম অতো নিরেট মাথা দুর্ভাগ্যবশত আমার নেই। আস্তিক-নাস্তিক বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা আনতে আমাকে প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়েছে। নাস্তিক বন্ধুদের সাথে বিস্তর আলোচনা করতে হয়েছে তাদের চিন্তাধারা আর জ্ঞানের পরিধিটি বোঝার জন্য। তখন আমার মনে হল, ধর্ম বিষয়টি পুরোপুরি বিশ্বাস, ব্যাক্তিগত ধ্যানধারণা আর মতাদর্শের উপরে আর নাস্তিক্যবাদ চলে কিছুটা বিজ্ঞান আর তাদের নিজস্ব যুক্তির উপরে।
বাস্তবতার চাপে ধীরে ধীরে এসব ভুলেই গিয়েছিলাম। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই পুরো ব্যাপারটি ভয়ংকরভাবে ফিরে আসলো ২০১৩ তে শাহবাগ আন্দোলনের সময় থেকে। আসিফ মহিউদ্দিনের উপরে হামলা, ব্লগার রাজীবের খুন, বর্তমান সময়ে অভিজিৎ রায় এবং বাবুর হত্যা বন্ধুদের মধ্যে আস্তিক-নাস্তিক খুনসুটির ঊর্ধ্বে চলে এসেছে। সাধারণ পাল্টাপাল্টি যুক্তির খেলার ব্যাপারটি এখন সম্পূর্ণভাবে ফৌজদারি অপরাধের আওতাধিন।
পৃথিবীতে সবসময়ই বিভন্ন মতাদর্শের মানুষ থাকবেই। তাদের মধ্যে রেষারেষিও থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের মতো নোংরা এবং পৈশাচিকতা নিতান্তই দুঃখজনক।
ঘুরেফিরে আমার মনে বারবার একটি প্রশ্নই আসছে। "ধর্ম" কি এতোই ঠুনকো কাঁচের গ্লাস, যে কেউ কিছু লিখলেই ঝনঝন করে ভেঙে যাবে?! নাকি যারা হত্যা করছে তাদের আত্মবিশ্বাসের কমতি আছে যে যুক্তিতর্কের কারণে তাদের দুর্বল বিশ্বাস যেন হটাৎ না ভেঙে পড়ে?
আমি নিজে বিশ্বাসী, আমার বেশকিছু নাস্তিক বন্ধু আছেন যারা ব্যাক্তিজীবনে চমৎকার একেকজন মানুষ। আমি আমার বিশ্বাসের প্রতি পরিপূর্ণভাবে আস্থাশীল বলেই হয়তো তাদের সাথে বিতর্কের কথোপকথনের কোন পর্যায়েই আমার তাদেরকে হত্যার ইচ্ছা জাগেনা।
সমস্যাটা আসলে কোথায়? তথাকথিত আস্তিকরা কি তাদের বিশ্বাস নিয়ে সন্দেহে ভুগছে? আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থার সমস্যা?
নৈতিকতা-মূল্যবোধের শিক্ষার অভাব? নাকি অন্যকে শ্রদ্ধা-সম্মান এবং ধৈর্যশীল-আত্মবিশ্বাসী হতে নতুন এই পচে যাওয়া বুদ্ধিহীন প্রজন্মটিকে শিখাতে পারিনি আমরা?
সবশেষে মহানবী (স.)-এর বিদায় হজ্বের ভাষণের কয়টি লাইনই বারবার মনে পড়ছে।
" ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নিষিদ্ধকরণ : সাবধান, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না। এ বাড়াবাড়ির কারণে তোমাদের পূর্ববর্তী বহু জাতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।"
দুঃখজনক হলেও সত্যি, মনে হচ্ছে উগ্র আস্তিক্যবাদ আর উগ্র নাস্তিক্যবাদের সহিংসতাপূর্ণ বিরোধের কারণে আমাদের ধ্বংসের আর খুব বেশি দেরী নেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮

রাখালছেলে বলেছেন: বিশ্বাস বা অবিশ্বাস কথা না। মানা না মানা কথা না । গোড়া বা সংস্বারবাদী কথা না । আমার কাছে মনে হয়, কাউকে ধর্মীয়ভাবে আঘাত করা ঠিক না । আমি ব্যক্তিগতভাবে মানবধর্মে বিশ্বাসী । মানুষের বড় পরিচয় তার শিক্ষা তার ধর্ম না ।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:১৬

নাজিয়া লিসা বলেছেন: রাখালছেলে : ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। কাউকে তার নিজস্ব বিশ্বাসের উপরে আঘাত হানা একেবারেই অনুচিত। আমি নিজেও এটি কোনভাবেই সাপোর্ট করিনা। কিন্তু মৌখিক/লিখিতভাবে আঘাত করলে তাকে হত্যা করারও ঘোরতর বিপক্ষে আমি। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও মানবধর্মে বিশ্বাসী। আপনি ঠিক বলেছেন, মানুষের বড় পরিচয় তার শিক্ষায়, ধর্মে নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.