নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাজিয়া লিসা

আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই .......

নাজিয়া লিসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোলা চিঠি (কাল্পনিক)

২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:১৫

প্রিয় "...",

সবাই চিঠির শুরুতে যেমন লিখে কেমন আছো, আশা করি ভালো আছো ইত্যাদি, আমার তেমন কোন কুশলই জানতে ইচ্ছে করছে না।
তুমি ভালো আছো নাকি খারাপ, আমি জানিনা এবং আজকে থেকে আর জানতেও চাই না।
ঠিক যেমন ভাবে তুমিও বহুদিন ধরেই আমার ভালো-মন্দ সম্পর্কে উদাসীন।

তারপরও কেন যেন শেষবারের মতো তোমার থেকে বিদায় নিতে খুব মন চাইছে আজ।

আমার অবস্থানটা বলি।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসে আছি।
প্লেন সকাল ৯ টায়। আমি সেই ভোররাত থেকেই এখানে। ঘুমহীন সারারাত।
এতো ক্লান্ত লাগছে, কি বলবো ! সামনে বিশাল একঘেয়ে ক্লান্তিকর একাকী ভ্রমণ।

তোমাকে ফোন না করে, তোমার সাথে দেখা না করে মেইলটা দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছি, জানি ব্যাপারটা বেশ স্থুল নাটকীয় ধরণের।
কিন্তু, এছাড়া আমার আর কোন পথ ছিল না।
নিজের স্বার্থেই আমাকে পালাতে হচ্ছে এভাবে।
আমি কিছুতেই এবং কিছুতেই তোমার সামনে দাঁড়িয়ে বিদায় নিতে পারতাম না।
ভেঙে যেতাম।
এই শতখণ্ড মানুষটি হাজারো টুকরো হয়ে যেত আবারো।

কেমন লাগছে আমার?
তোমাকে ছেড়ে, প্রিয় মানুষগুলোকে ছেড়ে, জন্মভূমি ছেড়ে চিরতরে নতুন একটি দেশে যাত্রা শুরুর আগে?
যখন আমি জানি, যে আমি আর কখনও ফিরে আসবো না।
আশ্চর্য হল, আমার কোন অনুভূতিই হচ্ছে না। খুব ফাঁকা ফাঁকা আর অসম্ভব রকম অবসন্ন লাগছে।

সকাল হয়ে গিয়েছে। বাইরে শীত শেষের চমৎকার ঝকঝকে গাঢ় নীল আকাশ। খুব সামান্য একটু সাদা মেঘ।
ইশ! বাইরে বের হয়ে একটু শ্বাস নিতে পারতাম যদি! শীতের রোদের কুয়াশামাখা গন্ধ, নানুবাড়ির ঝরাপাতা পুড়ানো গন্ধ, মায়ের হাতের চায়ের গন্ধ। আহ!

আমার মা টা চলে গিয়েছে জানো? বড় বেশি দূরে ... সেইইই না ফেরার দেশে।
এক চুমুকও না দেয়া কফির কাপটা হাতে নিয়ে মা'কে কেনজানি খুব মনে পড়ছে।

হঠাৎ মনে হচ্ছে চুলোয় যাক আমেরিকা, আমি বাসায় গিয়ে নাস্তা খেয়ে আরামে একটা ঘুম দিই।
ঘুম থেকে উঠে সারা বিকাল-সন্ধ্যা তোমাকে নিয়ে রিকশা দিয়ে টইটই করে ঘুরে বেড়াই। মা ফোন দিয়ে দিয়ে বলবে, কি রে তুই কই? বাসায় আজকে আসবি না?
হা হা হা হা হা। এর কিছুই অন্তত এই জীবনে আর কখনও হবে না। তারপরও অবাস্তব কল্পনাগুলো সবসময় ভারী চমৎকার আর রঙিন।

কি প্রচণ্ড ভালোই না বাসতাম তোমাকে আমি! নিজের কাছেই অবাক লাগে ভাবলে।
তুমি এর লক্ষভাগের একভাগও কখনও বাসোনি আমাকে, পরিষ্কার বুঝি এখন।
খুব নিম্নস্তরের পশুও পরিস্কারভাবে ভালবাসা /ঘৃণা /কামনার মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। আর আমি তো আর একটু উন্নতজাতের প্রাণী।

আমার বাঁধভাঙ্গা গভীর আবেগ, হাজার কান্না, মিনতি, অনুরোধও তোমাকে তোমার নিজ স্থান থেকে এক বিন্দু টলাতে পারেনি। হয়তো আমাকে অবজ্ঞা করে গভীর একধরণের অহংবোধ হতো তোমার।
নিজের ভালবাসা, সম্মান, সময় সবকিছু দিতে দিতে নিঃস্ব আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমি কিছুতেই এবং কিছুতেই তোমার সাথে থাকতে পারছিলাম না।
"you have to learn to get up from the table when love is no longer being served"।
একেবারে ভালবাসা আর সম্মানহীন একটা সম্পর্ক (সেটার যেই নামই হোক না কেন) টেনে নেয়া বড় অপমানের।
তারপরও, তোমার কাছ হতে নিজেকে কখনও সরিয়ে নিতে হবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি আমি।

বিশ্বাস কর, তোমার উপরে আমার রাগ নেই একটুও। রাগ ক্ষোভ জেদ অভিমান কামনা ভালবাসা কিচ্ছুই নেই।
শুধু যেই সম্মানটুকু নিয়ে প্রথম দিন কথা শুরু করেছিলাম, তোমার প্রতি সেই সম্মানটুকু মনের মধ্যে নিয়েই চলে যাচ্ছি।

... ... ...

(ক্রমশ ... )

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৫৩

রাফা বলেছেন: Great ,nicely writing-carry on .

২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১:৪৭

নাজিয়া লিসা বলেছেন: রাফা : পড়ার জন্য ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.