![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুরে বেড়ানো আমার একটা ভয়ংকর মাত্রার নেশা। আর আমার এই নেশার যোগানদাতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব দুঃসাহসিক অভিযাত্রিকেরা। ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডের বিয়ার গ্রাইলস তাদের লিডার। এই মানুষটার জন্যই আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ঘোরার নেশা আমাকে গ্রাস করে বসেছে। একা পথচলা আমার খুব পছন্দ। একা চলায় কষ্ট আছে সত্য, কিন্তু তা আনন্দের কাছে চাপা পড়ে যায়।The one who follows the crowd will usually get no further than the crowd. The one who walks alone is likely to find himself in places no one has ever been.
মুম্বাইয়ের দিনলিপি: প্রতীক্ষানগর... (পর্বঃ এক)
মুম্বাইয়ের দিনলিপি: প্যারেলের টাটা... (পর্বঃ দুই)
মুম্বাইয়ের দিনলিপি: বাইকুল্লা... ৫ রুপী (পর্বঃ তিন)
২০১১ সালের ১৩ জুলাই, শুক্রবার... ত্রিমুখী বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো 'গোটা' মুম্বাই। দাদার, অপেরা হাউস ও জাভেরী বাজারে নিথর ২৬টি লাশ। সন্ত্রাসী হামলায় আবারো আক্রান্ত হল ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী। আম্মাকে সবেমাত্র হাসপাতালে ভর্তি করে নিয়েছে ডাক্তাররা। আম্মা আর আমার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস আনতে হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যার কিছু আগে সেউড়ির ফ্ল্যাটে এসেছি। এমন সময় বাংলাদেশ থেকে সেজো মামার ফোন...
"মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে! তুমি কোথায়???... এক্ষণই হাসপাতালে ফিরে যাও... রাস্তায় খুব সাবধানে থাকবে। পুরো মুম্বাইতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে..." মামার কাছ থেকেই শুনলাম পুরো খবর। দেরি না করে তাড়াতাড়ি যা যা লাগলেই নয় এমন কয়েকটা জিনিস আমার কালো সুটকেসে নিয়ে রাস্তায় নামলাম। দূরে একটা পুলিশের গাড়ি। তার কাছে একটা হলুদ ট্যাক্সিক্যাব। এরকম পরিস্থিতিতে কিভাবে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হয় আল্লাহ্র রহমতে আমার একটু আধটু জানা ছিল। আমি ট্যাক্সি ড্রাইভারকে প্যারেল বলে পিছনে উঠে বসলাম...
আসলেই পুরো মুম্বাই থমথমে হয়ে আছে। এখানে সেখানে পুলিশের গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এ কি... ড্রাইভার কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে!!! এদিকে তো প্যারেল না!!! আমি ড্রাইভারকে কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলাম। আমি আসলে ধরেই নিয়েছিলাম যে, ড্রাইভার হয়তো আমাকে কোন থানায় নিয়ে যাবে। কারণ, আমি যে আজনবী সেটা আমার ইংরেজিতে প্যারেল যেতে চাওয়াতেই ও বুঝে গেছে। তার উপর পরনে একটা গ্রামীণ চেকের নীল পাঞ্জাবী আর মুখে কয়েকদিনের না কাঁটা গোঁফ-দাঁড়ি... আর সাথে থাকা কালো সুটকেস তো 'বোনাস'। শরীরী ভাষায় শান্ত থাকলেও আমার মনে ঝড় বয়ে যাচ্ছিলো...
আমি তখন আম্মাকে নিয়ে মুম্বাইতে একা। আজকেই ভর্তি করলাম আম্মাকে। সেউড়িতে যাওয়ার সময় বার বার করে নার্সদের বলে গিয়েছি যে, আমি যাবো আর আসবো। অল্প কিছু সময়ের জন্য... আম্মাকে একটু পর পর এসে দেখে যাইয়েন। এখন আমাকে থানায় নিয়ে গেলে তো আম্মা জানতেও পারবে না। আমাকে কি সাথে সাথে নিয়েই ওরা মারা শুরু করবে??? নাকি আগে পাসপোর্ট দেখে পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হবে??? এরকম হাজারো চিন্তা মুহূর্তকালের ভিতর মাথায় আসছিল আর যাচ্ছিলো। এমন সময়...
দূরে দেখলাম টাটা হাসপাতাল। আস্তে আস্তে চলে আসলাম প্যারেলের 'চিরচেনা' সেই জারবাই ওয়াদিয়া রোডে। ট্যাক্সি হাসপাতালের সামনে এসে থামলো। ভাড়া দেওয়ার সময় ড্রাইভার বললেন, "আজ মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তাই তোমাকে একটু ঘুর পথে নিয়ে আসলাম। তুমি মনে হয় বিদেশী? হাসপাতালে নিশ্চয়ই তোমার কেউ আছে... একটু সাবধানে থেকো..."মুম্বাইয়ের দিনলিপি: বাইকুল্লা... ৫ রুপী (পর্বঃ তিন)
২০১১ সালের ১৩ জুলাই, শুক্রবার... ত্রিমুখী বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো 'গোটা' মুম্বাই। দাদার, অপেরা হাউস ও জাভেরী বাজারে নিথর ২৬টি লাশ। সন্ত্রাসী হামলায় আবারো আক্রান্ত হল ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী। আম্মাকে সবেমাত্র হাসপাতালে ভর্তি করে নিয়েছে ডাক্তাররা। আম্মা আর আমার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস আনতে হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যার কিছু আগে সেউড়ির ফ্ল্যাটে এসেছি। এমন সময় বাংলাদেশ থেকে সেজো মামার ফোন...
"মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে! তুমি কোথায়???... এক্ষণই হাসপাতালে ফিরে যাও... রাস্তায় খুব সাবধানে থাকবে। পুরো মুম্বাইতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে..." মামার কাছ থেকেই শুনলাম পুরো খবর। দেরি না করে তাড়াতাড়ি যা যা লাগলেই নয় এমন কয়েকটা জিনিস আমার কালো সুটকেসে নিয়ে রাস্তায় নামলাম। দূরে একটা পুলিশের গাড়ি। তার কাছে একটা হলুদ ট্যাক্সিক্যাব। এরকম পরিস্থিতিতে কিভাবে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হয় আল্লাহ্র রহমতে আমার একটু আধটু জানা ছিল। আমি ট্যাক্সি ড্রাইভারকে প্যারেল বলে পিছনে উঠে বসলাম...
আসলেই পুরো মুম্বাই থমথমে হয়ে আছে। এখানে সেখানে পুলিশের গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এ কি... ড্রাইভার কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে!!! এদিকে তো প্যারেল না!!! আমি ড্রাইভারকে কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলাম। আমি আসলে ধরেই নিয়েছিলাম যে, ড্রাইভার হয়তো আমাকে কোন থানায় নিয়ে যাবে। কারণ, আমি যে আজনবী সেটা আমার ইংরেজিতে প্যারেল যেতে চাওয়াতেই ও বুঝে গেছে। তার উপর পরনে একটা গ্রামীণ চেকের নীল পাঞ্জাবী আর মুখে কয়েকদিনের না কাঁটা গোঁফ-দাঁড়ি... আর সাথে থাকা কালো সুটকেস তো 'বোনাস'। শরীরী ভাষায় শান্ত থাকলেও আমার মনে ঝড় বয়ে যাচ্ছিলো...
আমি তখন আম্মাকে নিয়ে মুম্বাইতে একা। আজকেই ভর্তি করলাম আম্মাকে। সেউড়িতে যাওয়ার সময় বার বার করে নার্সদের বলে গিয়েছি যে, আমি যাবো আর আসবো। অল্প কিছু সময়ের জন্য... আম্মাকে একটু পর পর এসে দেখে যাইয়েন। এখন আমাকে থানায় নিয়ে গেলে তো আম্মা জানতেও পারবে না। আমাকে কি সাথে সাথে নিয়েই ওরা মারা শুরু করবে??? নাকি আগে পাসপোর্ট দেখে পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হবে??? এরকম হাজারো চিন্তা মুহূর্তকালের ভিতর মাথায় আসছিল আর যাচ্ছিলো। এমন সময়...
দূরে দেখলাম টাটা হাসপাতাল। আস্তে আস্তে চলে আসলাম প্যারেলের 'চিরচেনা' সেই জারবাই ওয়াদিয়া রোডে। ট্যাক্সি হাসপাতালের সামনে এসে থামলো। ভাড়া দেওয়ার সময় ড্রাইভার বললেন, "আজ মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তাই তোমাকে একটু ঘুর পথে নিয়ে আসলাম। তুমি মনে হয় বিদেশী? হাসপাতালে নিশ্চয়ই তোমার কেউ আছে... একটু সাবধানে থেকো..."
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:০৯
অরন্যে রোদন - ২ বলেছেন: ভাড়া দেওয়ার সময় ড্রাইভার বললেন, "আজ মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তাই তোমাকে একটু ঘুর পথে নিয়ে আসলাম। তুমি মনে হয় বিদেশী? হাসপাতালে নিশ্চয়ই তোমার কেউ আছে... একটু সাবধানে থেকো..."
এরই নাম মানবতা, ভালোবাসা।