![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাগল হবার পর থেকে বেশ আরামে আছি। মাথাটা ঠান্ডা আর দুশ্চিন্তামুক্ত। প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে আমি পাগল হয়ে গেছি। প্রথমে আমার বন্ধু কাম রুমমেট আমার ভাবসাব দেখে সন্দেহ প্রকাশ করল যে আমার মধ্যে কোন একটা সমস্যা আছে। একদিন বলল- ‘দোস্ত কিছু মনে করিস না, আমার মনে হয় তুই পাগল হয়ে যাচ্ছিস’। আমি বললাম- ‘ধুর কী বলিস, পাগল হব কেন। হেহ।’ আমি তখনও স্বাভাবিক কিন্তু এই যে ‘পাগল হয়ে যাচ্ছিস’ চিন্তাটা মাথার মধ্যে ঢুকে গেল তা মাথার মধ্যে বারবার শক দিতে লাগল। কিছু কিছু কথাবার্তা, কিছু কিছু আচরণ মনে হচ্ছিল অস্বাভাবিক। অতঃপর বুঝলাম- সমস্যা আছে। বেশি দেরি করা যাবে না। ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা নিলাম। বাবা মা আত্মীয় স্বজনকে এ ব্যপারে জানানো উচিৎ হবে না। নিজেই ভাল একজন সাইকিয়াট্রিস্ট খোঁজ করে তার এপয়েনমেন্ট নিয়ে দেখা করতে গেলাম। মহিলা ডাক্তার। মানসিক রোগের চিকিৎসক মহিলা হলেই ভাল। ডাক্তার আমার সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন করলেন। আমি অকপটে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। ধীরে ধীরে আমার কেসটা তার কাছে ইন্টারেস্টিং মনে হতে লাগল। তারপর তিনি বললেন- ‘এবার আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন—
- খুব হতাশায় ভোগেন?
- জ্বি।
- পূর্বে যে সব কাজ করতে খুব উপভোগ করতেন সেগুলোতে কী এখন অনাগ্রহ
আছে?
- জ্বি।
- পূর্বের কোন কাজের জন্য অনুশোচনায় ভোগেন?
- জ্বি।
- পূর্বের কোন আনন্দময় ঘটনা স্মৃতিচারণ করে মনে মনে আনন্দ পান?
- জ্বি না।
- নিজেকে কী খুব অসহায় মনে হয়? আত্মহত্যার প্রবণতা আছে?
- জ্বি।
- কোন কিছু মনে থাকে নাকি ভুলে যান? আচ্ছা বলুন তো, আসার সময় বাসে
আপনার পাশের সিটের যাত্রী পুরুষ ছিল নাকি মহিলা ছিল?
- মনে নেই।
- ঘুমের সমস্যা আছে?
- না।
- আপনার তো ওজন বেড়ে গেছে। খাওয়া-দাওয়ায় কোন সমস্যা আছে? ক্ষুধামন্দা
আছে?
- না।
- যৌন সম্পর্কের অভিজ্ঞতা আছে? থাকলে কী আগের মত উপভোগ করেন?
- না।
ডাক্তার আর প্রশ্ন করলেন না। তারপর কাগজে কিছু লিখতে থাকলেন। তারপর আমার সাথে বিস্তারিত কথা বললেন- ‘হুম, সমস্যা আছে। দেখুন, আপনার মধ্যে যে সমস্যা আছে সেটাকে মেডিক্যালের ভাষায় অর্গানিক মেন্টাল ডিজঅর্ডার বলে। ডায়াগনোস্টিক এন্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল অব মেন্টাল ডিজঅর্ডার এর ভিত্তিতে রোগীর মানসিক অবস্থা যাচাই করা যায়। এতে পাঁচের মধ্যে চারটাতে সমস্যা হলেও আমরা এটালে স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নেই। কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে এটা পাঁচের উপরে। তার মানে ডিপ্রেসন থেকে আপনি মেন্টালি ডিজঅর্ডারড’। ‘তার মানে আমি কী পাগল?’- আমি জানতে চাইলাম। ‘সোজা বাংলায় বললে এমন কিছুই। তবে এখন থেকেই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আপনি পুরোপুরি পাগল হয়ে যেতে পারেন।’ আমি বললাম- ‘কী ব্যবস্থা’? এরপর ডাক্তার অনেক কথা বলতে থাকলেন কিন্তু আমি অমনযোগী হয়ে কথাগুলো শুনতে থাকলাম আর ভাবতে থাকলাম আমি পাগল। হেহ।
কী ব্যবস্থা নেব তার কোন ভাবনা আমার মধ্যে এলনা। আমি এখন হাফ পাগল বা পাগল। এখন কিছু একটা পাগলামি না করলে তো চলে না। পরের দিন অফিসে গিয়ে এইচ আর ম্যানেজারকে বললাম- ‘বস, এই যে আমার চাকরির রিজাইন লেটার। আমি চাকরি থেকে ইস্তফা দিলাম’। বস সোজা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন-‘আপনি পাগল নাকি? ইস্তফা দিচ্ছেন, কোন কথা নাই বার্তা নাই?’ আমি বললাম – ‘জ্বি বস, আমি পাগল, দোয়া করবেন, আসি, আসসালামু আলাইকুম’।
অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড। উদ্দেশ্য সিলেট যাত্রা। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম আমি। পড়াশোনা শেষ করে সেই কবে সিলেট থেকে চলে আসছি আর যেতে পারি নি। যাবার জন্য বার বার শুধু উপলক্ষ্য খুঁজেছি কিন্তু যাওয়া হয়নি। এবার উপলক্ষ্য ছাড়াই রওনা দিলাম। পাগলের আবার উপলক্ষ্য কী? দুপুর ১২ টায় বাস ছাড়ল। শ্যামলী পরিবহন। সারাটা রাস্তা ঘুমালাম। সন্ধ্যা ছয়টার কিছু পরে সিলেট শহরে যেয়ে পৌঁছলাম। কদমতলি বাস স্ট্যান্ড থেকে রিক্সায় ক্বিন ব্রিজ পার হয়ে বন্দর পয়েন্ট। সেখান থেকে ভাড়া সিএনজি করে সোজা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট। আহ, কতদিন পর আসলাম। কিন্তু আসে পাশে তাকিয়ে বা পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করার কোন প্রয়াস আমার মধ্যে নেই। গেইট থেকে রিক্সায় উঠে ড্রাইভারকে বললাম- ‘লেডিস হলে চলো।’ লেডিস হলের গেইটের সামনে নেমে পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে সাবিনা কে ফোন দিলাম-
- আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। কেমন আছেন?
- ওয়ালাইকুম। ভাল আছি। তুমি কী হলে?
- জ্বি ভাইয়া।
- আচ্ছা, একটু নীচে আসতে পারবা, গেইটের সামনে?
- নীচে মানে! আপনি কোথায়?
- আমি, এইতো হলের সামনে।
- হলের সামনে মানে! সিলেটে? কবে, কখন আসলেন?
- আসছি এইমাত্র। তুমি আগে নীচে আস। তারপর বলছি।
সাবিনা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্রী। ক্যাম্পাসে থাকাকালীন সময় থেকেই তার সাথে আমার পরিচয়, উঠাবসা। সিলেট থেকে চলে যাবার পর ক্যাম্পাসের অনেক পরিচিতদের সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু সাবিনার সাথে যোগাযোগটা ছিল। এখন ভাবছি তাকে কী বলব। আমি পাগল হয়ে গেছি এইটা, নাকি অন্যকিছু। আরে ধ্যাত। ভাবনা টাবনা বাদ। আগে সে আসুক। পাগলের আর ভাবনা কী!
আমি দাঁড়িয়ে আছি। সাবিনা আসল। সেত আমাকে দেখে অবাক। অবাক হবারই কথা। দুবছর আগে ক্যাম্পাস ছেড়ে গেছি। আসার কোন নামগন্ধ নেই। এর মধ্যে হঠাত হাজির।
- কী ব্যপার ভাইয়া? আপনি এরকম অবস্থায় হঠাত সিলেটে? গত পরশুওতো
চ্যটে কথা হল। আসতে পারেন এমন কিছুইতো বললেন না।
- আমি নিজেও জানতাম না যে আমি আসছি।
- কেন? কোন কাজে নাকি শুধুই ঘুরতে?
- তোমাকে একটা কথা জানাতে আসছি- আমি তোমাকে ভালবাসি।
- কী?! আপনি পাগল নাকি? আপনার মাথা ঠিক আছে?
- আমি পাগল আর পাগলদের মাথা ঠিক থাকে না। তবে যে কথাটা বললাম তা
ঠিক। আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে, ওমম..., মনে হয় ৩১ ডিসেম্বর ২০১২,
যেদিন আমি সিলেট থেকে চলে গেলাম, সেদিন ভোরে এই এলএইচের রাস্তায়
দাঁড়িয়েছিলাম, যাবার আগে তোমাকে এই কথাটা বলে যেতে, সেদিন মনে হয়
তোমার এক্সাম ছিল, সকাল ৮ টার দিকে তুমি ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলে, তোমার সাথে
আমার এখানে দেখা হল, শুধু হাই হ্যালো করেই শেষ, কথা বলতে পারিনি। সেই
যে বলতে পারিনি আর কখনই পারিনি। মাঝে শুধু উপলক্ষ্য খুঁজেছি। উপলক্ষ্য
আসেনি। সাহসও পাইনি। এতদিন শুধু উল্টাপাল্টা চিন্তা করেছি। যাই হোক,
আজ বললাম, কোনরকম চিন্তা ভাবনা ছাড়া, কোনরকম উপলক্ষ্য ছাড়া। হেহ।
- আপনাকে যে কী বলা উচিৎ জানিনা। আমাকে যেতে হবে, আমার হলের গেইট
বন্ধ করে দিবে এখনই।
- যাবে? যাও। কিছু একটা বলে যাও?
- আমার কিছু বলার নেই ভাইয়া।
সাবিনা চলে গেল। আমি কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে হাটা শুরু করলাম ভার্সিটি গেইটের দিকে। হাটার সময় মাথার মধ্যে নানারকম চিন্তা আসতে শুরু করল। কী হবে? এখন মেয়েটা আমাকে কী ভাববে? এতদিন বড়ভাই-ছোটবোন সম্পর্কের মত ছিল। আমাকে সে সম্মান করত। এখন সে সম্মানের জায়গাটা মনে হয় নষ্ট হয়ে গেল, ইত্যাদি-- এই সব। অন্যসময় হলে আমি এইসব চিন্তায় অস্থির হয়ে যেতাম। কিন্তু এখন হচ্ছি না। পাগলের কী এইসব চিন্তা ভাবনার ধার ধারলে চলে। হেহ। আমি সোজা হাটা ধরলাম। মাঝে মাঝে গান ধরছি, মাঝে মাঝে জোরে, মাঝে মাঝে আবার আস্তে- এমন করে হাঁটছি। এক কিলো হয়ে গেইটে পৌঁছলাম। ক্ষুধা লাগছে, খাওয়া দরকার। কোথায় খাব- বিসমিল্লাহ নাকি গোলাবী রেস্টুরেন্ট। এখনও অনেক পরিচিত আছে এখানে, হঠাত দেখা হয়ে গেলে কী বলব- তা নিয়ে আমি কিছুটা ইতস্তত। কিন্তু ইতস্তত হবার টাইম নাই। ক্ষুদা লাগছে, খাব। গোলাবী রেস্টুরেন্ট থেকে খেয়ে নিলাম। পরিচিত কাউকে পেলাম না।
ভার্সিটি গেইটের সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি। কী করব ভাবছিলাম। আগে যে মেসে থাকতাম সেখানে যাব নাকি পরিচিত দুই একজন ছোট ভাইকে ডেকে আনব। নাহ, এসব কিছুই করব না। ঠিক করলাম, রেলস্টেশনে যাব, ঢাকায় ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে, এবার ট্রেনে করে ফিরতে চাই। সিলেটে আর অবস্থান করার কোন কারণ নেই। সিএনজিতে উঠব এমন সময় মনে হলো হেটে হেটেই স্টেশনে যাই না কেন। এতবছর এখানে ছিলাম, সবসময়তো সিএনজি অথবা রিক্সা করেই গেছি। অতঃপর হাটা ধরলাম। ভার্সিটি গেইট থেকে মদিনা মার্কেট-বাগবাড়ি-উসমানী মেডিক্যাল-রিকাবি বাজার-লামাবাজার-শেখের ভিটা-বন্দর পুলের মুখ-ক্বিন ব্রিজ হয়ে রেলস্টেশনে পৌঁছলাম। হাটা পথ ধরে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগল। খোঁজ নিলাম ট্রেন আছে পরের দিন সকাল সাতটায়। টিকিট কাটার পর সিদ্ধান্ত নিলাম বাকি রাতটুকু স্টেশনে বসেই কাটাব। তখন প্রায় রাত বারোটার মতন বাজে।
স্টেশনে বসে সারা রাত পার করার পূর্ব অভিজ্ঞতা আমার আছে। অনেক আগে স্টাডি ট্যুরে যাবার সময় ট্রেনের সিডিউল মিসের কারণে স্টেশনে সারা রাত বসে কাটিয়েছিলাম ক্লাসের সবাই। তবে সেবারের থেকে এখনকার পার্থক্য- এখন আমি একাকী আর কিছুটা উন্মাদ। একাকীত্ব পাগলের জন্য কোন সমস্যা না। এখানে একমাত্র সমস্যা হল মশা। মশা পাগল মানে না। স্টোর থেকে কয়েল কিনে নিলাম। স্টেশনের ভেতরে ওয়েটিং রুমের প্লাস্টিকের হলুদ লাল চেয়ারগুলোর একটাতে বসে আর আরেকটাতে দু’পা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করতে থাকলাম। ঘুম আসে না। এরপর কয়েকবার এদিক সেদিক হেটে, কয়েকবার ক্যাণ্টিনে চা খেয়ে, মোবাইল সেটে গেম খেলে, কয়েকবার ঝিমিয়ে রাতটা পার করে দিলাম। সকালে যথা সময়ে ট্রেন ছাড়ল। রাতে ভাল ঘুম হয়নি বলে শরীরটা ক্লান্ত ছিল। ট্রেনে উঠে সিটে বসে হেলান দিতেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সাড়ে নয়টা কি দশটার মত বাজে। মোবাইল ফোনের বাইব্রেশনে ঘুম ভাঙ্গল। পকেট থেকে সেট বের করে দেখি সাবিনার ফোন। রিসিভ করলাম-
- হ্যালো।
- আপনি কোথায়?
- আমিতো ট্রেনে।
- ট্রেনে মানে! কই যান?
- ট্রেনে। ঢাকা ফিরছি।
- আজব লোকতো আপনি। এখন আবার ঢাকায় চলে যাচ্ছেন। কয়টার ট্রেনে
উঠছেন? এখন কোথায়?
- সকাল সাতটার ট্রেনে উঠছি। এখন কোথায় বলতে পারি না। তবে মনে হয়
শ্রীমঙ্গল ছাড়াইছি।
- নামেন। এখন ট্রেন থেকে নামেন। নেমে আবার সিলেটের ট্রেনে উঠেন।
- এখন নামব মানে? ট্রেন থেকে কী ঝাপ দিব?
- না না, ঝাপ দিবেন কেন! আশ্চর্য! পরের স্টেশনে নেমে যাবেন।
- এখন আবার সিলেটে আসব কেন?
- আসতে বলছি আসেন।
- ওকে।
সারা শরীর একটা যেন একটা ঝাঁকি দিয়ে উঠল। মনটা কেমন ফ্রেশ। আমার পাশের সিটগুলোতে বসা ভদ্রলোকগণ আমার কথাগুলো শুনছিল। তারা জানাল ট্রেন শ্রীমঙ্গল ছাড়িয়েছে কিছুক্ষণ আগে। পরের স্টেশন যেতে আর আধঘন্টার মত লাগতে পারে। আমার এত ধৈর্য্য নেই। আমি প্রস্তুতি নিলাম ট্রেন থেকে ঝাপ দেয়ার জন্য। পাশের ভদ্রলোকগণ বলল- ‘পাগল নাকি আপনি! চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাপ দিলে বাঁচবেন’। অতঃপর ঝাপ দেই নাই। পরের স্টেশনে নেমে সেখান থেকে অটোরিক্সায় লোকাল বাসস্ট্যন্ড এবং সেখান থেকে বাসে করে পুনরায় সিলেটের দিকে রওনা দিলাম।
ঠিক দুই ঘন্টা পর সিলেটে এসে নামলাম। বাসস্ট্যান্ড থেকে সাবিনাকে ফোন দিলাম-
- আমি সিলেটে আসছি।
- এখন কোথায়?
- কদমতলী বাসস্ট্যান্ড।
- আচ্ছা। আপনি এক কাজ করুন। জালালাবাদ রাগিব-রাবেয়া মেডিক্যাল
কলেজের পিছনে রসুইঘর নামে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। চিনেন?
- হ্যাঁ।
- আপনি ওখান থেকে সরাসরি রসুই ঘরে চলে আসেন।
- ওকে।
আমি আর দেরি না করে কদমতলী থেকে সিএনজি করে পাঠানটোলা, আর পাঠানটোলা থেকে রিক্সায় রসুই ঘর নামের রেস্টুরেন্টে পৌঁছলাম। গিয়ে দেখি সাবিনা ইতোমধ্যে উপস্থিত। টেবিলে একা বসে আছে। তার সামনের একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসলাম-
- আপনি চলে যাচ্ছিলেন কেন?
- যাবনা? আর কোন কিছু তো করার ছিল না।
- আপনি যে সিলেটে আসছেন কেউ তা জানে?
- না।
- কারো সাথে দেখা হয় নাই?
- না।
- কাল রাতে কোথায় ছিলেন?
- রেলস্টেশনে।
- রেলস্টেশনে! সারা রাত! আপনিতো পুরাই গ্যাছেন। আপনার মাথায় গন্ডগোল
আছে। আপনাকে ডাক্তারের কাছে নেয়া উচিৎ।
- ডাক্তারের কাছে গেছিলামতো।হেহ।
- আসলেই? ডাক্তার কি বলে নাই যে আপনার মাথায় সমস্যা আছে?
- হ্যাঁ বলছে।
- তো, তারপর কী চিকিৎসা দিছে?
- ডাক্তার যে চিকিৎসা দিছে তাতে আমার অসুখ ভাল হবে না।
- তাইলে কেমনে ভাল হবে?
- যে আমার অসুখ ভাল করতে পারবে সে আমার সামনেই বসে আছে।
- আমি কেমনে আপনার অসুখ ভাল করব! এহ! খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই।
- তাইলে আর কী। সারা জীবন পাগল হয়েই থাকতে হবে।
- আপনি কাল হঠাত এসে কী এক কথা বলে গেলেন। আমি সারা রাত ঘুমাতে
পারি নাই।
- তো, এখন কী অনুভূতি?
- জানি না ---ঠিক আছে। আমি তাহলে যাই।
- কোথায় যাবা?
- হলে ফিরে যাই।
- আমি কী তোমার সাথে আসতে পারি?
- আসতে পারেন। তবে শর্ত আছে।
- কী শর্ত?
- আপনাকে কথা দিতে হবে যে- বাকি জিন্দেগীতে আপনি আমি ছাড়া আর কারো
সাথে কোন প্রকার পাগলামি করতে পারবেন না।
- ওক্কে। হেহ ।
Quote
"There is always some madness in love. But there is also always some reason in madness." - Friedrich Nietzsche
Heh!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৫১
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: এমন পাগলামিতে অনেক মজা।
২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৪৬
সীমাবেস্ট বলেছেন: খুবই সুন্দর ঝরঝরে লেখা ।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৫২
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: ধন্যবাদ লিখাটি পড়ার জন্য।
৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ওক্কে।
+++
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১২
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: হেহ!
৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১০
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া মুগ্ধ হয়ে গেলাম!!!!!!!!!
সত্যি!!!!!!!!!!!!
১০১% মুগ্ধ~!!!!!!!!!!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৫
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: আপনি মুগ্ধ। আমিও মুগ্ধ/ হেহ।
৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১২
সাইড বেঞ্চ বলেছেন: লেখাটা অনেক ভালো লেগেছে। আপনার কাছ এরুপ লেখা আরও চাই। শুভকামনা।।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:২৪
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: ধন্যবাদ।
এমন আরও কিছু গল্প লিখে রেখেছি। সময় মত পোস্ট দিব।
৬| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৩২
সৃজন শারফিনুল বলেছেন: হেহ
খুব ভাল লাগলো পাগলামি!!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৩৬
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: ধন্যবাদ। হেহ।
৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৩৬
শায়মা বলেছেন: হেহ টা বিচ্ছিরি!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:২৬
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: হেহ কেন বিচ্ছিরি ! বুঝলাম না শায়মা।
৮| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩৩
শায়মা বলেছেন: হেহটা বোকা বোকা ! তবে পাগলের আবার বোকা আর চালাক কি !!!!!! তাইনা ভাইয়া??
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৫৬
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: হেহ আসলেই বোকা বোকা। এটা আমার ট্রেডমার্ক। আমার চেহারার মধ্যেও 'হেহ' ভাবটা আছে। শায়মা।
৯| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:০৪
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: দেয়ার ইজ প্লেজার শিওর ইন বিয়িং ম্যাড, হুইচ নান বাট ম্যাড মেন নো।
সেক্সপিয়ার বলছিলেন মনে হয়, সত্যিই বলছিলেন।
ঝরঝরে লেখা ভাই। ভাল্লাগছে। ++
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:৪৬
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: ঝরঝরে লিখটা মনে হয় আমার স্টাইল হয়ে গেল।
ধন্যবাদ।
১০| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া প্রোফাইলে কি তোমার হেহ মার্কা বোকা বোকা চেহারার ছবিটাই???
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯
নিকোলাস বিপ্স বলেছেন: নাহ। ওটা তো আমার দাদাজানের ছবি। হেহ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৪৩
অদ্ভুত_আমি বলেছেন: ভালো লেগেছে গল্প ।
এমন পাগলামী করতে পারলে ভালো হতো