![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a very simple person. Like to watch people's movement and try to read their mind.
কয়দিন আগে কাজ সেরে বাসায় ফিরতে হয়ে গেল রাত প্রায় ১০টা। ফেরার পথে দেখি আগে যেখানে রেংগস্ ভবন ছিলো সেখানে ১০/১২ জন মহিলা আর প্রত্যেকের সাথে একটা করে বাচ্চা নিয়ে দাড়ানো। বুঝলাম, এরা ওই সিগন্যালে বা এর আশেপাশে ভিক্ষা করে বাচ্চা নিয়ে। টাইম শেষ তাই সবাই এক জায়গায় জড়ো হয়েছে। আরেকটু খেয়াল করতেই দেখি, একজন বেশ ভালো স্বাস্থ্যের মহিলাকে ঘিরে সবাই দাড়িয়ে আছে। হয়ত সে তাদের লিডার, সারাদিনের ইনকামের হিসাব নিকাষ নিচ্ছে। কিছুক্ষন পরেই লক্ষ করলাম সবাই সবার সাথের বাচ্চা সেই মহিলার কাছে দিচ্ছে, সে সব বাচ্চাকে একত্রিত করে গুনল এরপর বাচ্চাগুলিকে নিয়ে হাটা দিল আর বাকি মহিলারা যে যার মত করে চলে গেল। প্রথমে ব্যাপারটায় অবাক হলাম কেন মায়েরা তাদের সন্তানকে অন্যজনের কাছে দিয়ে খুশি মনে চলে যাচ্ছে!! বুঝলাম এইসব বাচ্চা তারা সারাদিনের জন্য ভাড়া করে আনে ভিক্ষা করার জন্য। কে জানে এইসব মহিলারা বাচ্চাদের ঠিকমত খাওয়া দেয় কিনা। বিজয় সরনির কাছে একটা ল্যাংড়া মহিলা সাথে একটা বাচ্চা নিয়ে বসে থাকত। বেশ কয়দিন খেয়াল করেছি, যখনি সিগন্যাল পড়ত মহিলাটা বাচ্চাটাকে মারত যাতে কেঁদে উঠে আর কান্না করলেই তাকে কোলে নিয়ে বিভিন্ন গাড়ির সামনে হাত পেতে দাঁড়াত।
এরি পরিপ্রেক্ষিতে শুনা একটা ঘটনা এখানে শেয়ার করছি।
আমার সেজো খালার অফিসে হাসব্যান্ড ওয়াইফ দুজনি চাকরি করত। তাদের এক মেয়ে, বয়স এক বছরের মত। ঢাকায় তাদের কাছের কেউ থাকেনা যে তারা দুজন অফিসে চলে গেলে বাচ্চাকে দেখবে। তাই একটা কাজের মেয়ের কাছেই সারাদিনের খাবার বুঝিয়ে দিয়ে দুজন অফিসে চলে যায়। অফিস শেষে বাসায় গেলেই মা দেখে যে তার বাচ্চা খুব টায়ার্ড হয়ে ঘুমাচ্ছে বা জেগে থাকলেও কেমন ঝিম ধরে থাকে, আর দিন দিন বাচ্চাটা শুকিয়ে যাচ্ছে। মহিলা ১০দিনের ছুটি নিয়ে বাচ্চার সাথে থাকলেন, তখন বাচ্চা সুস্থ, ঠিকমত খাওয়াদাওয়া করে, অন্য বাচ্চাদের মতই খেলাধুলা করছে, তার সমস্ত টায়ার্ডনেস উধাও। ছুটি শেষে অফিস শুরু হলে বাসায় ফিরলে মা দেখে তার বাচ্চা আবার আগের মতই চুপচাপ, ভাবে হয়ত সারাদিন মা বাবা কে কাছে পায়না তাই হয়ত মনমরা থাকে।
এরমাঝে একদিন, বাবা অফিসের কাজে অফিসের গাড়ি নিয়ে বের হয়েছে, একটা সিগন্যালে গাড়ি দাড়ালে একটা ফকির বাচ্চা কোলে নিয়ে ভিক্ষার জন্য দাড়ায়, কোলের বাচ্চাটা খুব জোড়ে জোড়ে জানালায় ধাক্কা মারছে আর অনেক শব্দ করছে। লোকটাতো বিরক্ত হয়ে ফকিরটাকে ধমক দিলে সে অন্য গাড়ির দিকে চলে যায়। লোকটার হঠাৎ কি মনে হওয়াতে সে ফকিরটার কোলে বাচ্চাটার দিকে তাকাল, তার কেমন যেন পরিচিত মনে হল। সে গাড়ি একসাইডে দাড় করিয়ে নেমে ফকিরটাকে ডাক দিলে ফকিরটা তার দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বাচ্চাটাকে ফুটপাথে বসিয়ে দৌড় লাগাল। ব্যাপারটা দেখে লোকটা খুব অবাক হয়ে বাচ্চার কাছে গেল, বাচ্চাটা তাকে দেখে খুব খুশি আর কোলে উঠার জন্য হাত বাড়িয়ে দিল। লোকটা বাচ্চাটার দিকে ভালো করে খেয়াল করে দেখে, এটা তারি বাচ্চা। বাচ্চাটার সারা গায়ে কালি লাগানো, পরনে ছেড়া জামা। সে তো হতভম্ব। মহিলাটা বাচ্চার অবস্থা যেনে পাগলের মত হয়ে গিয়েছিল, সে এরপর চাকরি ছেড়ে দেয়, সারাদিন বাচ্চাকে কোলে নিয়ে থাকত, কাউকে ধরতে পর্যন্ত দিতনা।
ঘটনা পড়ে জানা যায়, কাজের মেয়েটা প্রতিদিন বাচ্চকে ২০টাকার বিনিময়ে এক ফকিরের সাথে দিয়ে দিত। তাকে যখন জিগ্গেস করা হল কেন সে এমন করেছে, সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নাকি বলেছিল, "কোন সমস্যা তো নাই, তার কাছে তো আমি সারাদিনের খাবার দিয়ে দিতাম"।
ঘটনাটা শুনে নির্বাক হয়ে গেলাম। ভয় পেলাম, নিজের বাচ্চার জন্যেও উদ্যিগ্ন হলাম। কাজের মেয়েটা কেমন মানুষ যে সামান্য কিছু টাকার জন্য এত জঘন্য কাজ করতে এতটুকুও খারাপ লাগেনি বা পরেও তার কোন অনুতাপ জাগেনি!! হায়রে!!
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:১৫
নিলাচল বলেছেন: আমিও শুনার পর কিছু বলার খুজে পাইনি।
২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:২৪
সেতূ বলেছেন: একি শুনালেন...
সত্যি ভয়ংকর ব্যাপার
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ
+++
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:১৬
নিলাচল বলেছেন: আসলেই ভয়ঙ্কর ।
+ এর জন্য ধন্যবাদ।
৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:২৭
বাঁশির সুর বলেছেন: সত্যিই ভয়ংকর।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:১৭
নিলাচল বলেছেন: সত্যিই ।
৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৩১
স্পর্শহীন কিছুদিন বলেছেন: মন্তব্য করতে পরালাম। চোখে পানি এসে গেল।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:১৮
নিলাচল বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৩২
রথে চেপে এলাম বলেছেন: কি ভয়ংকর!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:১৯
নিলাচল বলেছেন: সত্যিই ভয়ঙ্কর।
৬| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৪
সুিপ্রয় বলেছেন: অভাবের কারনে মানুষ আর মানুষ থাকে না! অর্থের কারনে আজ মনুষ্যত্ব বিলুপ্তির পথে......
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২০
নিলাচল বলেছেন: কিন্তু তাই বলে এত অধঃপতন?
৭| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৭
বড় বিলাই বলেছেন: কাজের মেয়ের কাছে বাচ্চা মানুষ করা আমার একদম পছন্দ না।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২৩
নিলাচল বলেছেন: আমারও না। কিন্তু অনেকেই বাধ্য হয়, দুজনি যদি চাকরি করে আর ঘরে তাদের মা বাবা শ্রেনীর কেউ না থাকলে তো আর উপায় নেই।
৮| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৫১
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: এই ঘটনা নিয়ে একটা টিভি নাটকও হয়েছে। সম্ভবত আনিসুল হক লিখেছেন সেটা।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২৪
নিলাচল বলেছেন: আমি নাটকটা মিস করেছি।
৯| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৫২
এমদাদ হোসেন জাবেদ বলেছেন: মন্তব্য করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি ভাই!!! আমাদের দেশে এমন ঘটনা হয় তা হয়তো আপনার এই লেখা না পড়লে জানতেই পারতাম না... আল্লাহ যেন আমাদের কে এই রকম ভয়াভহ অভিজ্ঞতার স্বীকার না করে.....
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২৬
নিলাচল বলেছেন: এমন আরো কয়েকটা ঘটনা আমি শুনেছি।
আল্লাহর কাছে এটাই সবার চাওয়া।
১০| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৮
লুথা বলেছেন: অভাবের কারনে মানুষ আর মানুষ থাকে না! অর্থের কারনে আজ মনুষ্যত্ব বিলুপ্তির পথে......
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২৮
নিলাচল বলেছেন: কিন্তু তাই বলে এত অধঃপতন?
১১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:০৩
নির্বিকার বলেছেন: এরি পরিপ্রেক্ষিতে শুনা একটা শুনা ঘটনা এখানে শেয়ার করছি...
এটা নাটকের কাহিনী। সম্ভবত গত ঈদ এ প্রচারিত। কিন্তু কারো বাস্তব জীবনের কাহিনী নিয়া করা কিনা বলে নি। তবে এটাও সত্য এমন ঘটনা যে হচ্ছে না, তা না।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২৯
নিলাচল বলেছেন: এমনি আরো কয়েকটা ঘটে যাওয়া ঘটনা শুনেছি।
১২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:১৭
পুরাতন বলেছেন: দুঃখজনক
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩১
নিলাচল বলেছেন: সত্যিই দুঃখজনক।
১৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:১৮
ভেবে ভেবে বলি বলেছেন: কি আর বলবো বোন... আজকাল এটা অনেক কমন কেস হয়ে গেছে। টিভিতে একটা নাটকে এই জিনিসটা দেখার পরে আরো ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলাম। এখনকার দিনে বাবা মায়ের উচিত নিজের শিশুকে অনেক সাবধানে রাখা।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৫
নিলাচল বলেছেন: সাবধান তো অবশ্যই হতে হবে। কিন্তু অনেক সময় কাজের লোকের কাছে ছেড়ে আসা ছাড়াও কিছু করার থাকেনা।
আমার পরিচিত এক দম্পতি, দুজনি একি কোম্পানিতে চাকরি করছে। তাদেরও কাছের কেউ ঢাকায় না থাকায় বাচ্চাকে কাজের লোকের কাছেই দিয়ে আসেন। আর দুজন চাকরি না করেও উনাদের উপায় নেই উনাদের উপর অনেকেই নির্ভরশিল বলেই।
১৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:২৪
সালাহউদ্দীন আহমদ বলেছেন: যেখানে শিশুরা ভিক্ষা আদায়ের যন্ত্র সেই দেশ কতখানি সোনার বাংলা সেটাই ভাবছি। ভারতেও এটা হয়। মনে হয় যে দেশে জনসংখ্যা ভয়াবহ সেখানেই এধরণের পৈশাচিক ঘটনা ঘটে।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৭
নিলাচল বলেছেন: এটাও একটা কারন। আরেকটা কারন আমার কাছে মনে হয়, লোভ।
১৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩১
জূয়ারি বলেছেন: ভয়ংক।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৭
নিলাচল বলেছেন: সত্যিই ভয়ংকর।
১৬| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৫
বলাক০৪ বলেছেন: শুনে শুধু মনে হচ্ছে ভাগ্যিস আমার বাচ্চাগুলো আর "বাচ্চা' অবস্থায় নেই।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৮
নিলাচল বলেছেন: আপনার বাচ্চাদের জন্য আমার শুভ কামনা।
১৭| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৫২
প্রজন্ম বলেছেন: শকিং
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৯
নিলাচল বলেছেন: আসলেই।
১৮| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:০৪
বাবুনি সুপ্তি বলেছেন: ভয়ঙ্কর !! মানুষ কত টুকু নিচে নামলে এমন করতে পারে!!
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪১
নিলাচল বলেছেন: আমিও তাই চিন্তা করি।
১৯| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ৩:১০
একাকী বালক বলেছেন: হুমম। কাজের মেয়ে দিয়ে বাচ্চা পালনের চেয়ে খারাপ কিছু নাই। যে যাই বলুক আমার মনে হয় চাকরী ছেড়ে দিলে হলেও মায়েদের উচিত নিজের বাচ্চা পালন করা অথবা বাচ্চার দাদী বা নানীর কাছে বাচ্চাকে রাখা।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪৬
নিলাচল বলেছেন: অনেক সময় সংসারের প্রয়োজনেই মাকেও চাকরি করতে হয়। তবে বাচ্চার দাদী বা নানীকে কাছে রাখাটাই দরকার। এতে বাচ্চা আপনজনের আদর নিয়েই বেড়ে উঠবে।
২০| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৫৯
তাজা কলম বলেছেন: এরকম ঘটনা, কাজের মেয়ে কতৃক বাচ্চা ভাড়া খাটানোর ঘটনা আগেও শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিৎ।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪৮
নিলাচল বলেছেন: এর নিশ্চই একটা চক্র আছে। আমিও আপনার সাথে একমত।
২১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৬
টি_মৃদুল বলেছেন: একদিন সত্যের দিন...
ছুটছি সবাই, নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় নেই।এমন ঊর্ধ্বশ্বাস ছোটা আমাদের প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি। জীবনযাত্রার মান বেড়েছে খরচের অর্থে। এখন একক আয়ে সংসার চালানো সতভাবে প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া শিক্ষিত সুস্থ মানুষ বাসায় বসে শুধু ঘরকন্যার কাজ করা অনেকটা সেই শিক্ষিত নারীর জন্য অবমাননাকরও হয়ে পড়ে। বিভিন্ন পেশায় নারীরা আসছেন আগের চেয়ে বেশি। নারীরা কর্মক্ষেত্রে আসায় বাড়ির অনেকেই বুঝতে পারছেন আসলে নারীরা গৃহে এমন কিছু দায়িত্ব পালন করেন যা আর্থিক উন্নতিতে সহায়ক না হলেও হেলার বিষয় নয় মোটেই। গত ৩০ বছরে নারীর কর্মক্ষেত্রে যোগদানের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমন বেড়েছে সমস্যাও। তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাচ্চার প্রতিপালন। আমাদের যৌথ পারিবারিক কাঠামো নানা কারণে ভেঙে
যাওয়াতে বাচ্চা কার কাছে রেখে কাজে আসা যায় তা একটা মাথাব্যথার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে কাজের
মেয়ের দায়িত্বে বাচ্চা ছেড়ে আসাতে।
ঘটনা-১
সুমি বিয়ের পর থেকে শাশুড়ির সঙ্গেই থাকতেন। প্রথম বাচ্চাকে বড় করতে তার তেমন বেগ পেতে হয়নি। অফিসও করেছেন নিশ্চিন্তে। দ্বিতীয় বাচ্চা যখন হলো তখন সুমির শাশুড়ি মারা গেছেন। সুমিও বদলি হয়ে চলে এসেছেন ঢাকায়। ঢাকায় এসে বহু খোঁজাখুঁজির পর একটা পনেরো-ষোলো বছরের মেয়েকে পেলেন। ভালো সবই ভালো। বছর পার হয়ে গেছে ভালো কাজের মেয়েকে দিয়ে। সুমির শরীর খারাপ হওয়াতে একদিন তাড়াতাড়ি বাসায় এলেন দুপুরবেলা। বাসায় কাজের মেয়েও নেই, সুমির বাচ্চাও নেই। বাসা তালা দেওয়া। সুমি বরের অফিসে ফোন করলেন ততক্ষণাত। পাশের ফ্ল্যাটে জিজ্ঞেস করলেন দেখেছে কি-না। পাশের ফ্ল্যাটের ভদ্রমহিলা জানালেন, সুমি প্রতিদিনই এ সময় বেরিয়ে যায়। সুমির ছেলের স্কুল শেষ হয় তিনটায়, তিনটার একটু আগে কাজের মেয়ে চলে আসবে। কাজের মেয়ে এলো। সুমি বাচ্চাকে পেয়েই খুশি। কাজের মেয়ের গায়ে সুমির একদম নতুন জামাটা, পায়ে সুমির স্যান্ডেল, ভ্যানিটি ব্যাগ, চোখে সানগল্গাস; একে দেখে কে বলবে এ সুমির বাসায় কাজের মেয়ে! ফ্ল্যাট সংস্কৃতিতে সুমি কখনো পাশের ফ্ল্যাটে যাওয়ারও সময় পাননি, জানতে পারেননি এক বছর সুমির কাজের মেয়ে আসলে কি করেছে। কাজের মেয়ে ওই সময়টুকু বাচ্চা নিয়েই বিভিন্ন অসামাজিক কাজ করে উপরি টাকা আয় করত।
ঘটনা-২
বাচ্চা দিন দিন ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। কালো হয়ে যাচ্ছে। তালাত আর রেবা দু’জনেই যারপরনাই সোহানের এমন হয়ে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না। অফিস থেকে ফিরেই রেবা যতদূর সম্ভব সোহানের যত্ন নেন। রেবার সংসার যেদিন থেকে শুরু সেদিন থেকে মেয়েটাও আছে। সোহান সেই রওশনের কাছেই থাকে। রওশন তো সোহানের অযত্ন করার কথা নয়! রেবা তালাতকে বলে সে আর চাকরি করবে না। সোহান এক বছরের বাচ্চা হিসেবে আন্ডারওয়েট। দিনকে দিন কেমন কালো হয়ে যাচ্ছে। এই পেট খারাপ তো কালকে জ্বর। বাচ্চাটা সন্ধ্যার পর থেকে শুধু ঘুমায়। কোনোভাবেই তোলা যায় না, ঘুমের মধ্যেই যতটুকু বুকের দুধ খাওয়া। এভাবে কী বাচ্চা বাঁচবে! তালাত রেবাকে ধৈর্য ধরতে বলে। রওশনকে পইপই করে বলে সোহানকে কখন কি খাওয়াবে। রওশন মাথা নাড়ে।
তালাত দুপুর বারোটার সময় তার ধানমন্ডির অফিস থেকে বের হয়ে পড়ে একদিন। প্রচন্ড রোদ। মাথা ব্যথা। তালাত নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে। ধানমন্ডি সাতাশ নম্বরের ওখানে জ্যামে বসা গাড়ি নিয়ে। গাড়ির গ্লাসে একটা বাচ্চা অনবরত দু’হাতে বাড়ি দিচ্ছে মায়ের কোল থেকে, ভিক্ষার আশায়। তালাত বিরক্ত হয়ে একবার তাকায়। তারপর মুখ ঘুরিয়ে নেয়, সবুজ বাতি জ্বলার অপেক্ষা করে। ত্রিশ গজ গিয়ে তালাত গাড়ি রাস্তায় ফেলে আবার ছুটে আসে সেই মহিলার কাছে। মহিলার কোল থেকে বাচ্চা তালাতের কোলে ঝাঁপ দেয়। তালাতের সোহান ওই ভিখারিণীর কোলে কালিঝুলি মেখে খররোদে ভিক্ষা করছে। রওশন যে কি-না সোহান হওয়ার আগে থেকে রেবা-তালাতের সংসারে আছে সে প্রতিদিন দুই শ’ টাকার বিনিময়ে সোহানকে ভাড়া খাটিয়েছে গত আট মাস।
সোহানের শরীরের তাই এই হাল।
রেবা সেই যে মানসিক আঘাত পেয়েছেন এখনো সামলে উঠতে পারেননি। সোহানকে এক মুহূর্তের জন্যও কাউকে ধরতে দেয় না। তালাত জানে না তালাতের কর্মচঞ্চল বউটা আদৌ এই আতঙ্ক থেকে বের হয়ে আসতে পারবে কি-না। সোহান তার বাবাকে চিনতে পারাতেই আট মাস পর তালাতরা এমন নিষ্ঠুর
সত্যের মুখোমুখি হয়েছে।
এমন ঘটনা আরো অন্তত এক শ’টা এ মুহূর্তে বলা যাবে। এর সমাধান কী? সুমি, রেবাদের চাকরি না করা? তালাত, সুমির বর কেউই কিন্তু তাদের বউদের চাকরি ছেড়ে দেওয়াকে এর সমাধান ভাবেননি। ভালো লাগার জায়গা এখানেই।
তালাতের খুব সহজ কথা- ‘আমার বাবা-মা থাকেন দিনাজপুর। তাদের এখানে এসে নাতিকে পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে একটা ডে-কেয়ার করতে কত টাকা লাগে? এত এত মুনাফা করে কোম্পানিগুলো কিন্তু এই মৌলিক একটা ব্যাপারকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই আনেন না।’
সময় তো অনেক বদলেছে। আমরা এখন পশ্চিমা ঢঙে কর্পোরেট কালচার ফলো করি, পোশাক পরি, ফাস্টফুড খাই। পশ্চিমাদের ভালো কিছু নিতে পারি না! তাদের তো বাচ্চা রাখার জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার আছে। মায়েরা এক বছর মাতৃত্বকালীন ছুটি পাচ্ছেন। এত অনিশ্চয়তার মাঝে কি বাচ্চা রেখে ঠিকভাবে কাজ করা যায়, না সম্ভব? তালাতের প্রস্তাব কি কোনো একটা আইনের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক করা যায় না? আইনটা এমন হবে যে, কোনো প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার সেন্টার অবশ্যই থাকতে হবে।
আমরা অনেক পরিবর্তন দেখি, দেখছি। এই পজিটিভ পরিবর্তনটুকু দেখার আশা
কী আমরা করতে পারি?
সমকাল
নারীস্থান
৮ এপ্রিল, ২০০৭
আপনি আপনার বান্ধবীর উপরের লিখাটা পড়েননি??"ভাবছেন নির্লজ্জা, কিছু যায় আসে না" এই বইটাতে আছে।
লিখাতে +
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৫৪
নিলাচল বলেছেন: আমার বান্ধবির লিখাটি এখানে পেস্ট করার জন্য ধন্যবাদ । আমি এই লেখাটি পড়িনি।
এই ধরনের ঘটনা খুবি অহরহ ঘটছে। আমি তো আমার বাচ্চাকে বাসায় কাজের লোকের কাছে রেখে যাওয়ার কথা চিন্তাই করতে পারিনা। সে যতই পুরানো হোক।
২২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১:৪৯
মেঘ বলেছেন: দোস্ত তুই আমার বই আসলে পড়িস না??খুব দুঃখ পেলাম
২৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৫৩
জলপরী বলেছেন: আসলে বাচ্চা ছোটো থাকলে নতুন মায়েদের panic হয়ে যায় ইদানীং এইসব horrible ঘটনা অহরহ ঘটার কারণে।
মৃদূল, তুমি কি প্যাচ লাগালে হে বৎস! দুই বছর আগের লিখা মনে তো নাও থাকতে পারে! তবে লিখার বিষয়বস্তু যে কঠিন ভাবে মনে দাগ কেটেছিলো তা বলাই বাহুল্য, নয়তো নিলাচল এতদিন পরেও এই লিখাটা লিখতো না।
মেঘ, তোমার নখরামী..............................................
২৪| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:০৩
নিশ্চুপ নিরবতা বলেছেন: আমার একটা পোষ্ট এ মন্তব্য করেছিলেন। প্লিজ এটা দেখেন।
Click This Link
২৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ১:৩৪
নিলাচল বলেছেন: Megh, tor ei likha to boi e uthenai, etato paper cutting. Dukkho pawar ki holo bujhlamna.
Jal, je ghotona likhlam sheta amake Arju Khalamoni bolchilo r ami tomader shatheo share korechilam. Tumi tokhon arekta ghotona bolchila ei type er, mone ache?
Nishchup nirobota, apnar post ta ami porechi. Montobbo o korechi.
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:২৩
অদ্ভুত বলেছেন: ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।