নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিরীহ বালক

নিরীহ বালক০০৮

নিরীহ বালক০০৮ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা না হতে পারা (ছোটগল্প)

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:০৯

মানুষের নেশা আর পেশা এই দুইটি অনেকাংশেই তার পার্শ্ববর্তী বন্ধুবান্ধবদের প্রভাবিত করে থাকে।পেশাটা প্রভাবিত হোক আর না হোক নেশাটা প্রভাবিত।নেশা ভালোও হতে পারে খারাপও হতে পারে তবে নেশাটা মনের খোরাক জোগায় আর তা হয় অতৃপ্ত।
কোনো কিছুর করার প্রতি যদি অতৃপ্ততা থাকে আর
বারংবার করার ইচ্ছা থাকে তবেই তা নেশা।অনেকেই
নেশাকে পেশা হিসেবেই নিয়ে নেয়।আমাদের প্রাচীন গ্রাম্য বাংলার বহু জাত আছে যারা বিশেষ কিছু
কাজকে নেশা ও পেশা হিসেবে নিয়েছে এমনি
একটি জাত হলো সাপুড়ি জাতি।সাধারণত এদের নদী উপত্যকায় ঝুপড়ি ঘরে অস্থায়ী বাস করে থাকার মাঝেই
দেখা যেতো কিন্তু এখন তা বদলে গেছে।প্রেক্ষাপট
বদলানো বহু কারণের
মধ্যে একটি হলো মানুষের শহর কেন্দ্রীকতা।আর বাড়তি আয়ের জন্যে এরা এখন দেহ ব্যাবসা করে বেড়ায়।দরিদ্র এই জাত এখন নিজেদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলেছে
অনেকাংশেই।

কিছুদিন আগে শুভ্র পতেঙ্গা সৈকতে বেড়াতে
গিয়েছিলো।সেখানেই এক দল বেদেনির সাথে দেখা হলো।

দলটি খুবই ছোটো;পাঁচ জন বেদেনির দল;আর এই দলটির সব বেদেনিই যুবতী,একটা সময় প্রতিটি দলে একজন বয়স্ক মহিলা বা যুবক থাকতো;এখন তা আর নেই।বহু লোকের ভীড়ে এদের
চেনা যায় আলাদা সাঁজের জন্যে।গ্রাম্য মোটা সুতির শাড়ি আর হরেক রকম মাটির গহনা থাকে এদের
দেহে।আজকাল বহু নারী মাটির গহনা ব্যাবহার করে আর তা এই মাটির গহনার প্রচলন প্রথম এনেছে এই বেদের জাতিরা।


বেদেনি দলের পাঁচ সদস্যদের মাঝে সবচেয়ে ছোটো সদস্যাটি সব চেয়ে আকষণীয়া।আশেপাশে সবার
চোখ সেই কন্যার দিকে।শুভ্রর চোখ কিন্তু দুই দিকে;এক বাক্সের দিকে আর দুই বেদেনি দলের সর্ব কনিষ্ঠার দিকে।বেদেনির দলটি খুবটি শুভ্র'র খুব কাছে চলে আসে আর এক বেদেনি বলে উঠে -বাবু সাপের
খেলা দেখবেন।

-না;অন্যদিকে যান।

-কেন বাবু ভয় হয়?

-না;আমি এগুলো আগেও দেখেছি।

-ওমা তাই নি বাবু,কই দেখেছেন
বাবু?

-টিভিতে দেখেছিলাম।

আচমকা হাস্যরোল পড়ে গেলো।দূর হতেই অনেকেই দেখছে কিছু বেদেনি শুভ্রকে ঘিরে হাসাহাসি
করছে।শুভ্র নিজের চোখকে সংবরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু পারছিলোনা কিছুতেই;দলের
ছোটো কন্যাটির দিকে তার বার বার চোখ যাচ্ছিলো।মেয়েটির শরীরটি যেনো তেল
দিয়ে মাখা;সূর্যের আলোয় তার শরীর মুহুমুহু ঝলসে উঠছে।ভরা যৌবন তার শরীরে।যৌবনের
মাখামাখা মধু দিয়ে চাইলেই সে বহু পুরুষকে তৃপ্তি দিতে পারবে।

-এই যে বাবু খেলা দেখবেন না।

-না বললাম তো।

-টিভিতে কি আর আমাদের মত খেলা দেখায়;একবার দেখেন না।

-না;আপনারা অন্যদিকে যান।

-এই ললিতা তুই বলনা বাবুকে খেলা
দেখতে।

জানা গেলো সেই কন্যার নাম ললিতা।ললিতা বার বার
একটুখানি তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিচ্ছিলো।
ঠোঁট চেপে হাসচ্ছিলো তবু শুভ্র চেয়ে রইলো তার
দিকে।

-এই বাবুর
হাতে সাপটা তুলে দে তো(বাক্সের মুখ খুলতে লাগলো)

-না;দেখার দরকার নেই।

-কেনো বাবু?

-আমার ইচ্ছা নেই।

-বাবু সাপের খেলা দেখলে কিছু টাকা আসে আমাদের হাতে।দেখেন না বাবু

-না;আমি দেখতে চাই না।

-আমাগো ললিতা কইলেও কি দেখবা না বাবু?(সবাই
মুচকি হাসছে)

-ইয়ে মানে,না।

-ও ললিতা ক না বাবুরে।

নিজেরই অনেক লজ্বা লাগছে।কিভাবে যে নিজেকে
সংবরণ করে নিবো বুঝতে পারছে না শুভ্র।ললিতাও ঠোঁট
চেপে রেখে হাসছে।

মাঝ বয়সী বেদেনি হঠাৎ করে শুভ্র'র হাত চেপে ধরলো -এই দে তো বাক্সটা;গোখরাটা বাবুর গলায় ঝুলিয়ে দি।


এভাবে বলাতে একটু ভয় পেয়ে গেলো সে,না তারা
তা করবে না।তবুও বলা যায় না।বেদেনিরা যদি সত্যি
সত্যি সাপ বের করে গলায়ঝুলিয়ে দেয়;ইসসসসসস!


-আচ্ছা;খুলতে হবে না।আমি আপনাদের কিছু
টাকা দিতে প্রস্তুত।তবে টাকাটা একজনের হাতেই দিবো।


সবাই হাসাহাসি করতে লাগলো।ললিতার চোখ জ্বলজ্বল
করে উঠলো তখন।ম্যানিব্যাগের থেকে ১০০ টাকা নোট বের করে বেদেনিদের দিকে বাড়িয়ে দিলো শুভ্র।বেদেনি সবাই একটু সরে গিয়ে ললিতাকে সামনে এগিয়ে দিলো।
ললিতার মুখে লজ্বার আবরণ। মৃদু হাসিতে তা গালে টোল পড়ে ছিলো যা তার সরল চেহারাকে মৃহমান
করে তুলছে।ললিতা হাত বাড়িয়ে দিলো।শুভ্র তার
হাতে টাকাটা তুলে দিলো।কাজল চোখখানি সে এবার খুব কাছ থেকে দেখলো।

টোল পরা গালে মৃদু
হাসি আর কাজলরাখি চোখ।
সত্যি অপূবের চেয়েও
বেশি অপূর্ব।


-ধন্যবাদ বাবু (ললিতা)

-হুম।

-আসি বাবু।

শুভ্র মৃদু হেসে বুঝিয়ে দিতে চাইলো "ক্ষণকালের
জন্যে তোর প্রেমে প্রেমে পড়লাম।যদি তুই বেদেনি না হতি তো এই প্রেমে পড়া দীর্ঘ হতো।যতই মানুষ অস্বীকার করুক
অবস্থার উপর ও প্রেমের দীর্ঘতা নির্ভর করে"

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১২

নিলু বলেছেন: সূর্যের আলো ছাড়া কি যৌবন এর রুপ কি পরিস্ফুটিত হয় না

২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১৮

নিরীহ বালক০০৮ বলেছেন: আমাদের অনেকেই ভালো লাগতে পারে তবে তা ভালোবাসায় নিয়ে যাওয়ার আগে আমরা ভেবে নিই।তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা ব্যাতিক্রম হয়। #নিলু ভাই

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালোই লাগলো।

হ্যাপ্পি নিউ ইয়ার !:#P !:#P !:#P

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪২

নিরীহ বালক০০৮ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।এভাবেই পাশে থাকুন।আশা রাখি আরো ভালো লিখা উপহার দিতে পারবো।আপনাকেও হ্যাপি নিউ ইয়ার্।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.