![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টান টান উত্তেজনা নিয়ে ওয়েটিং রুমে বসে আছে মিতু। একটা ফাইভ স্টার হোটেলের রিসিপশনিস্ট হওয়ার জন্য ভাইবা দিতে এসেছে সে। তার খুব ভয় ভয় লাগছে আবার ভালোও লাগছে। কেন ভালো লাগছে তা সে নিজেও জানেনা। আর তিন জন পরেই তার সিরিয়াল। সে আর বসে থাকতে পারলনা । উঠে হাটা হাটি শুরু করল।
একটি ছেলে ভাইবা বোর্ড থেকে বের হয়ে আসতেই মিতু তার দিকে এগিয়ে গেল। ছেলেটিকে দেখে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে। মিতু বলল,
কি জিজ্ঞেস করেছিল?
বাবার নাম আর দাদার নাম জিজ্ঞেস করেই ছেড়ে দিয়েছে।
কি বলেন? তাহলে তো আপনার চাকুরীটা হয়েই গেছে।
আরে না এসব চাকুরী কি আমাদের জন্য? এসব চাকুরী তো মেয়েদের জন্য। ছেলেদেরকে ডেকে আনা জাস্ট একটা ফরমালিটি। রিসিপশনিস্ট কি ছেলেরা হলে মানায়? রিসিপশনিস্ট হবে মেয়েরা। কিছু সংখ্যক পুরুষ আছে যারা মেয়ে দেখলে তাদের জিহ্বা দিয়ে কুত্তার মতো লালা পড়ে তাদের জন্যই রিসিপশনিস্ট হিসেবে মেয়েদেরকেই রাখা হয়।
ছেলেটির কথা শুনে মিতুর খুব রাগ লাগছে। ইচ্ছে করছে ছেলেটাকে কষিয়ে একটা চড় মারতে কিন্তু এখানে তা করা যাবেনা কারণ এখানে সিসি ক্যামেরা আছে। সিসি ক্যামেরা থাকলেও সমস্যা ছিলনা কিন্তু চাকুরীটা তার দরকার। শুধু দরকার না কান্নার মতো দরকার। কারণ কান্না হলো জীবনের একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। জন্মের পর একটি শিশু কান্না না করলে থাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়না। তাই ইংরেজীতে খুব দরকারি জিনিসকে ক্রাইং নীড বলে।
ছেলেটি গলা বাড়িয়ে ফিশফিশ করে বলল আপু চিন্তা করবেন না চাকুরীটা আপনারই হবে।
মিতু কঠিন গলায় বলল, আমার হবে এটা আপনার কেন মনে হচ্ছে?
বুঝেন না এখনকার যুগে মেয়েদের চাকুরী মানেই, সুন্দর ফিগার যার চাকুরীটা তারই দখলে। আর এখানে যেহেতু পোস্ট একটা তাই এই পোস্টটা আপনার জন্য বরাদ্দ করে রাখা কারণ আপনি এখানকার সব মেয়েদের থেকেই সব চেয়ে বেশি সুন্দরী।
রাগে মিতুর মুখ লাল হয়ে গেছে। সে খুব কঠিন মেয়ে খুব সহজে নিজেকে বিক্রি করার মেয়ে সে নয়। যোগ্যতা দিয়ে চাকুরী পেলে সে করবে সৌন্দর্য দেখিয়ে চাকুরী নিতে সে আসেনি। সে এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। এক গ্লাস পানি খাওয়া দরকার। পানি খেলে নাকি রাগ কমে। ভাইবা বোর্ডে যাওয়ার আগে রাগটা কমানো উচিত। মিতু আর কিছু বলার আগেই ছেলেটি একটা গাদা মার্কা হাসি দিয়ে বের হয়ে গেল।
মিতু একটি রিভলবিং চেয়ারে বসে আছে। তার সামনে তিন জন ভদ্রলোক। তিন জনে দৃষ্টি এলোপাতাড়ি। মিতু নিজেকে গুছিয়ে নিল যেন যা জিজ্ঞেস করেন তার সঠিক উত্তর সে দিতে পারে।
১ম ভদ্রলোক বললেন, রাতে ডিউটি পড়লে করতে পারবেন?
জ্বি পারব।
এর আগে কোথায় চাকুরী করেছেন?
জ্বিনা।
আচ্ছা ধরুন একদিন রাত্রে আপনি রিসিপশনে একা বসে আছেন, হঠাত করে এক লোক রুম ভাড়া নিতে এসে আপনাকে তার পছন্দ হয়ে গেল, কিন্তু আপনার থাকে পছন্দ হলোনা। তখন আপনি লোকটিকে কিভাবে এড়িয়ে যাবেন?
আমি তাকে বলব আমি বিবাহিত।
কিন্তু আপনি তো বিবাহিত না।
মিতু আটকে গেল। তার কাছে আর কোন লজিক নেই। সে চুপ করে রইল।
২য় ভদ্রলোক বললেন, আপনি চাকুরীটা করতে চাচ্ছেন কেন?
আমার খুব দরকার।
চাকুরী সবারই দরকার, কিন্তু আপনার দরকারটা কি?
মিতু আবার চুপ হয়ে গেল, কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।
৩য় ভদ্রলোক বললেন, ধরুন আপনার চাকুরীটা হয়ে গেছে। এখন আপনি কি করবেন?
আমি চাকুরীতে জয়েন করব।
আমাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানাবেন না।
হঠাত করেই মিতু্র খুব রাগ হলো সে বলে উঠলো, কৃতজ্ঞ হওয়ার মতো আপনার কিছু করেন নি। আমি পরীক্ষা দিয় পাশ করেছি বলে চাকুরীটা পাচ্ছি।
আপনি তো অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতেই পারেন নি আর তাছাড়া আপনার রাগও অনেক বেশি তবুও আপনাকে আমরা চাকুরীটা দিব কারণ আপনি অনেক সুন্দরী একটা মেয়ে। আপনি চাকুরী পাচ্ছেন আপনার সৌন্দর্যে যোগ্যতায় নয় কারণ এসব চাকুরীতে যোগ্যতার চেয়ে সৌন্দর্যকে বেশি প্রধান্য দেওয়া হয়। কালকে এসে এপোয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে যাবেন। আপনি এখন আসতে পারেন।
মিতু চুপচাপ বাহিরে বেরিয়ে আসল। সে কি করবে? ছেলেটিক কথাই সত্যি হলো। ওরা থাকে সৌন্দর্যের বিনিময়ে তাকে চাকুরী দিবে? এর পিছনে কোন রহস্য নেই তো?
মাঝে মাজে স্বার্থের জন্য নিজেকে স্বার্থপর হতে হয়, এই স্বার্থপর পৃথিবীর প্রতিটা ব্যাক্তি কোন না কোন দিন হয়ে থাকে।
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, এম সি কলেজ।
২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:১৮
তিসান বলেছেন: কপি করে কিছু কখনোই লিখিনি, যা পারি নিজ থেকে লিখার চেষ্টা করি। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫১
সোহানী বলেছেন: ভালো লিখা বাট কপি পেস্ট কি?