নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমুর অন্য নাম

তিসান

১২৩৪

তিসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিলিং এ ঝুলন্ত লাশ।।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৮

সিলিং এ ঝুলন্ত লাশ
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
প্রাণীবিদ্যা বিভাগ, এম সি কলেজ।

ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায় রিয়ানার। সে একটা কোম্পনির বি পি। মাস দুয়েক আগে চাকুরিতে জয়েন করে সে। চাকুরিতে জয়েন করার পর অফিসের স্টাফ মেসে উঠার কথা থাকলেও তাকে সেখানে দেওয়া হয়নি তাই সে দিন কয়েকের জন্য একটি বাড়ি ভাড়া করে। বাড়িটি দুতলা একটা বিল্ডিং। উপরের তলায় কাউকে ভাড়া দেওয়া হয়নি। কেন দেওয়া হয়না এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাড়ির কেয়ারটেকার তাকে কিছুই বলেনি, সেও আর জানতে চায়নি। তবে লোক মুখে শুনেছে দুতলায় নাকি একটা পরিবার থাকত। ওই পরিবারে শাহানা নামের একটি যুবতী মেয়ে ছিল। তাকে একদিন সকালে তার রুমে সিলিং এর সাথে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। কি কারণে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে তা কেউ বলতে পারেনি। এরপর এই দুতলা যে ভাড়া দেওয়া হয়নি তা কিন্তু না দু দুইটা পরিবারের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কোন পরিবারই দুই সপ্তাহের বেশি থাকেনি। দুই ভাড়িটিয়াই কেয়ারটেকারের কাছে চাবি দেওয়ার সময় বলেছিল, আপনারা জেনে শুনে আমাদেরকে এত বিপদে না ফেললেও পারতেন।
আজ রিয়ানাদের অফিসে অডিট এসেছিল তাই প্রতিদিনের চেয়ে একটু বেশি দেরি হয়ে গেছে বাসায় ফিরতে। রিকশা থেকে নেমে স্টিলের গেটটা পার হয়ে একটু ভিতরে ঢুকতেই সে শুনতে পেল তার বাড়ির উপরের তলায় কেউ এক জন ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে। সারাদিনের ক্লান্তিতে তার সারা শরীরটা কেমন যে জিম জিম করছে তাই ওই দিকে মনোযোগ না দিয়ে সে টান পায়ে হেটে বাসায় ঢুকে পড়ল। বাসায় ঢুকে তার মনে পড়ল আজ তার ঘরে চাল নেই। চাল আনতে ইচ্ছে হচ্ছেনা। এক রাত না খেয়ে থাকা কোন ব্যাপার না। কাপড় চেঞ্জ করে সে একটু শুয়ে পড়ল।
শুয়ার সাথে সাথে তার চোখে রাজ্যের ঘুম এসে ভর করল।কখন সে ঘুমিয়ে পড়ল সে নিজেও জানেনা। একটা বিকট চিতকারে তার ঘুম ভাঙ্গল। ঘুম ভাঙ্গার পর সে যা দেখল তাতে তার চক্ষু চড়ক গাছ। তার পায়ের কাছে সাদা কাপড়ে মোড়ানো একটি লাশ এবং লাশ থেকে অনবরত রক্ত ঝরছে। আর রক্তে তার পুরো রুম ভেসে যাচ্ছে। সে বুঝতে পারছেনা সে এসব কি দেখছে। সত্যি এসব দেখছে নাকি তার সাথে সেলোসিনেশন হচ্ছে?
রিয়ানা খুব সাহসী মেয়ে, এত সহজে ভয় পাওয়ার পাত্রী সে নয়। সে বিছানা থেকে উঠে বুঝার চেষ্টা করছে তার সাথে এসব কি হচ্ছে। বিছানা থেকে উঠে ফ্লোরে পা দিতেই তার পা রক্তে লাল হয়ে গেল। আস্তে আস্তে করে সে দরজার দিকে এগিয়ে গেল, কেউ তার ঘরে এসে কোন লাশ রেখে গেল কিনা দেখার জন্য কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো দরজা সে যে রকম করে লাগিয়েছিল ঠিক সে রকম আছে। এটা দেখা সে কিছুটা ভয় পেল। সে কিছুটা আগ্রহ নিয়ে লাশটা দেখতে গেল। সে ভয়ে ভয়ে লাশটির দিকে এগিয়ে গেল। লাশটি দেখতে তুলনামূলকভেবে অনেক বেশি। সে আরেকটু কাছে গিয়ে লাশটির মুখের কাপড় সরালো। অদ্ভুত সুন্দর একটি মেয়ে। মেয়েটির চুল গুলোও বেশ সুন্দর।তবে লাশটিকে দেখা মনে হচ্ছে এই মাত্র মারা গেছে। রিয়ানা লাশটিকে কাফনের কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে চাইল ঠিক তখনি হঠাত করেই লাশটির চোখ খুলে গেল। রিয়ানা ভয় পেয়ে দুহাত পিছনে ছিটকে পড়ল। পড়ে গিয়ে তার মাথায় মারাত্মক ভাবে চোট লাগল। সে দেখল লাশটি উঠে বসেছে। ভয়ে রিয়ানার হাত পা জমে আসছে। লাশটি উঠে দাড়ালো এবং রিয়ানার দিকে আস্তে আস্তে করে এগিয়ে আসতে লাগল।
রিয়ানার দম বন্ধ হয়ে আসছে। সে মনে মনে দোয়া দূরুদ পড়তে লাগল। সে নিশ্চিত আজই তার জীবনে শেষ দিন। রিয়ানা এই ভয়ানক পরিস্থিতি না দেখার জন্য চোখ বন্ধ করল।
অনেক্ষণ পার হয়ে গেছে কিন্তু তার সাথে কিছুই ঘঠল না। ঘঠনা কি ঘঠছে তা দেখার জন্য সে চোখ খুলল। চোখ খুলে যযা দেখল তা দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। সে দেখল, লাশটি সিলিং এর সাথে ঝুলছে এবং লাশটির চোখ খোলা। সে অপলকে লাশটির দিকে তাকিয়ে রইল, কেন জানি তার আর ভয় লাগছেনা।
অদ্ভূত ব্যাপার হলো লাশটি তার সাথে কথা বলতে শুরু করল। লাশটি বলল, তোমারা মানুষ? পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট প্রাণী? ভাবতেও ঘেন্না লাগে। তোদের সামনে কত মেয়েকে ধর্ষণ করা হয় কিন্তু তোরা কি করিস? ধামা চাপা দিয়ে এমন ভাবে চলাফেরা করিস যে তোদের সাথে কিছুই হয়নি। আর যদিও প্রতিবাদ করিস তা মাত্র ক'দিনের জন্য। তার প্রশাসন কোথায় আর তোরা কোথায়? কেউ কারো খবর রাখিস না।
এই আমি একা একটি মেয়ে বাসায় ছিলাম। ক'টা ছেলে এসে আমাকে গণধর্ষণ করে বুক ফুলিয়ে চলে গেল। কিন্তু তার পর কি হলো, আমার পরিবারই আমার সাথে ছিল না। ওরা বলে কি হবে মামলা মকদ্দমা করে, সব শেষে ফলাফল শূন্য। তাই বলে কি বিচার চাইব না। দুঃখে আর ঘৃনায় অবশেষে আমি গলায় দড়ি দিলাম। তুইও একটি মেয়ে। আজ যদি তোর কিছু হয় তবে তুই কি করবি?.।.।.।.।
এই কথাগুলো শুনার পরই রিয়ানা জ্ঞান হারালো। যখন জ্ঞান ফিরল তখন সে নিজেকে আবিষ্কার করল হসপিটালের বিছানায়। তার পাশে তার বাবা মা। জ্ঞান ফিরার সাথে সাথেই তার মা কেদে উঠে বললেন, তোর কি হয়েছে মা? রহিমা(কাজের বুয়া) যদি তোকে না তুলে আনত তবে যে তোর কি হত। মা আবার কান্ন শুরু করলেন।
রিয়ানা লাশটির কথাগুলো মনে করার চেষ্টা করল।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৫

বর্ষন হোমস বলেছেন: শেষ টা ভাল হয়েছে

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৫

তিসান বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১০

লিট্রিমিসটিক বলেছেন: ভাল লেগেছে ভাই। তবে কিছু বানান ভুল আছে শুধরে নিলে মনে হয় অনেক ভাল হয়।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৬

তিসান বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.