![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মিষ্টি করে হাসা কয়েকটি অসাধারণ গুণের মধ্যে একটি । এই গুণটি সবার মধ্যে থাকেনা, কিছু কিছু মানুষের থাকে। এই গুণটি মৌয়েরও আছে। সে খুব মিষ্টি করে হাসতে পারে। তার এই মিষ্টি হাসির জন্য তার অনেক বন্ধু তার সাথে রাগ দেখাতে গিয়েও দেখাতে পারেনা। এমনকি তার মা ও তার সাথে রাগ দেখাতে গেলে সে যদি মিষ্টি করে বলে, আচ্ছা মা যাও তো আমাকে এক কাপ চা করে দাও। মায়ের রাগ তখন একেবারে পানি হয়ে যায়। কিন্তু এই হাসি যে তার জীবনে ভয়ংকর বিপর্যয় ডেকে আনবে তা সে জানত না।
সুজন মুখ কালো করে বসে আছে। তার এই কালো মুখের কারণ হলো তার অপূর্ব হাসি।
মৌ বলল, প্লিজ আজকে অন্তত মুখ কালো করে বসে থেকোনা। প্লিজ।
সুজন কিছু বলল না, সে যেমন বসে ছিল তেমন বসে রইল। আজ তাকে একটু কেমন জানি দেখাচ্ছে। গালের খোচা খোচা দাড়িগুলো কেটে দিয়েছে তাই হয়ত একটু অন্য রকম লাগছে।
মৌ বলল, আচ্ছা তুমি বল আমার কি দোষ? ছেলেটা আমাকে এসে জিজ্ঞেস করল আমি কি শেম্পু ইউজ করি? এটা শুনে আমি হেসে দিলাম। আচ্ছা তুমি বল এটা কোন প্রশ্ন হলো? এটা শুনে কে না হাসবে তুমি বলো?
সুজন অভিমানি কণ্ঠে বলল, ও তোমার হাসি সুন্দর বলতেই তুমি কি বললে?
আরে বাবা কেউ প্রশংসা করলে তাকে ধন্যবাদটুকু দিব তো নাকি?
হ্যা দিবে, যাও ধন্যবাদ দাও আমার কাছে আসতে হবেনা।
প্লিজ তুমি রাগ করোনা। অনেকদিন পর তোমার সাথে দেখা। একটু গল্প করি।
আগে বলো তুমি এভাবে আর কারো সামনে মিষ্টি করে হাসবানা?
আচ্ছা বাবা হাসবনা। ওকে?
মৌ তুমি জাননা তোমার ওই হাসিটা আমি কত ভালোবাসি। তোমার ওই হাসিটা শুধু আমার জন্য জমা রাখবে।
হুম রাখব, তবে আমার হাসির স্টক সীমিত না।
সে যাই হোক ঐ হাসি দেখার অধিকার শুধু আমার।
আচ্ছা বাবা ওকে।
হঠাত সুজনের ফোন বেজে উঠল। অপরিচিত নাম্বার। সুজন ফোন ধরতেই অপাশ থেকে কেউ একজন বলল, সুজন তুমি কোথায়?
কণ্ঠটা সুজনের খুব পরিচিত। মেয়েটির নাম নিশু। এই মেয়ের পেছনে সুজন তিন বছর ঘুরে পাত্তা না পেয়ে অবশেষে মৌয়ের সাথে সম্পর্ক করেছে। আজ এত দিন পর নিশু নিজ থেকে ফোন করছে। নিশুর কণ্ঠ শুনে সুজনের গলা শুকিয়ে এলো। শুকনো গলায় বলল, আমি কলেজে।
আমার সাথে একবার দেখা করতে পারবে?
কবে?
এখন।
আচ্ছা এক মিনিট পরে তোমাকে আমি ফোন দিচ্ছি।
সুজন ফোন রেখে মৌয়ের দিকে তাকাল। মৌ বলল, কি হয়েছে?
না মানে, আমার এক বন্ধুর ইমারজেন্সি রক্তের দরকার। যদি তুমি যেতে দাও তবে আমি ওকে রক্ত দিতে যাব।
আরে সেটার জন্য আমাকে জিজ্ঞেস করতে হবে কেন? রক্তের দরকার যখন তখন জলদি যাও।
সুজন হাটছে জানেনা সে ভুল করছে নাকি ঠিক করছে? কোন এক অজানা মায়ার টানে সে নিশুর কাছে ছুটে যাচ্ছে। সে মনে মনে ভাবত নিশু তাকে ঠিক এরকম করেই একদিন ফোন করে তাকে যাওয়ার কথা বলবে। আর সেই যাওয়াই হবে হয়ত নিশু কাছে পাওয়ার টানে।
একটি রেস্টুরেন্টে সুজন নিশুর সামনে বসে আছে। নিশু একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছে কিন্তু কি জন্য ডেকেছে তা বলছেনা। সুজনের ইচ্ছে করছে সে জিজ্ঞেস করবে কি জন্য তাকে সে ডেকেছে কিন্তু সে জিজ্ঞেস করতে পারছেনা।
সুজনের বিশ্বাস আজই নিশু তাকে ভালোবাসার কথাটি বলবে। কিন্তু সে মৌকে ছেড়ে তার কাছের যাবে কিভাবে? মৌ খুব অভিমানী মেয়ে সে হয়ত সুজনকে কিছু বলবে না। কিন্তু মনে মনে খুব কষ্ট পাবে। হয়ত তার মুখ থেকে চিরতরে সরে যাবে সেই চিরচেনা অপূর্ব হাসি।
অনেকক্ষণ হয়ে গেল নিশু কিছু বলছেনা। সুজন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছেনা। নিশু বলল, তুমি এই মহূর্তে কি আশা করছ জানিনা তবে আমি যা আশা করছি, আশা করি তুমি আমাকে আশাহত করবেনা।
নিশুর মুখে এই কথা শুনে সুজনের বুক ধড়ফড় করে উঠল।
নিশুর ফোনে ফোন আসল, নিশু ফোন ধরে বলল, কি ব্যাপার তুমি কোথায়? আমি কতক্ষণ থেকে আমার গেস্ট নিয়ে বসে আছি।
এইত চলে আসছি।
নিশুর গেস্ট চলে আসছেন। গেস্টকে দেখে সুজন যেন আকাশ থেকে পড়ল। নিজের চোখকে সে বিশ্বাস করতে পারছেনা। মৌ এসেছে একটি ছেলের সাথে।
নিশু বলল, সুজন এই হলো আমার সারপ্রাইজ। ও হলো তিসান আমার ফিয়ন্সি, আর ওর সাথে ওর বোন মৌ। আর তিসান ও হলো সুজন আমি একবার ফোন দিতেই ও চলে এসেছে। ও আমার খুব ভাল বন্ধু।
ভালোবাসা ছেলেদেরকে কখনোই ছুতে পারেনা, তারা শুধু আন্দাজ করতে পারে। তাও সবাই ঠিক মত আন্দাজ করতে পারেনা। তবু সব ছেলেরা অভিনয় করে যেন তাদের কাছে ভালোবাসা মানেই হলো জীবন।
সুজনের আর কিছু বলার নেই। নিশুর সারপ্রাইজ তাকে চিরতরে হারিয়ে দিয়েছে অন্ধকার গহ্বরে। এর থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই।
টান বড়োই নিষ্টুর জিনিস। এই ভালোবাসার টান মানুষকে পশুতে পরিণত করে।
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, এম সি কলেজ।
২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৯
তিসান বলেছেন: মাঝে মাঝে ঘোরা ভাল।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:১১
কালীদাস বলেছেন: রিলেশনের গিটঠুর চোটে মাথা ঘুরে