![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই যে ভাই একটু শুনবেন?
শামিম পিছনে ফিরে তাকাল। অপূর্ব সুন্দরী একটি মেয়ে। শুধু যে চেহারায় সুন্দরী তা না চোখ, মুখ, নাক সব কিছুই সুন্দর। এরকম সুন্দরী মেয়ে সচরাচর দেখা যায়না। যারা দেখেন তাদেরকে চোখ মুখ বন্ধ করে ভাগ্যবান বলা যায়।
মেয়েটি একটি নীল শাড়ি পরেছে। শাড়ি যে আজ প্রথম পরেছে সেটা তার শাড়ির কুচি ধরার ধরন দেখে বোঝা যাছে।নীল শাড়ির সাথে লাল হিজাব পরায় খুব মানিয়েছে। মনে হচ্ছে হিজাব লাল না হলে হয়ত মানাতই না।
শামিম বলল, জ্বি বলুন?
আপনি কি আমার কয়েকটা ছবি তুলে দিবেন?
শামিম একজন ভিডিওগ্রাফার। একটা গায়ে হলুদের ভিডিওগ্রাফি করতে এখানে এসেছে। তার গলায় একটি ক্যামেরা। যদিও সে ফটোগ্রাফার না তবুও এতো রূপবতী মেয়ের ফটো না তুললে যে তার দিনটাই মাটি হয়ে যাবে। শামিম বলল, হ্যা আপনি ওইপাশে দাড়ান আমি ফটো তুলি।
মেয়েটি ইচ্ছে মতো পোজ দিয়ে ফটো তুলল। ফটো তুলা শেষে মেয়েটি বলল, ভাইয়া আমি ফটোগুলা কিভাবে পাব?
আমার দোকান থেকে আপনাকে আনতে হবে।
আপনার দোকান কোথায়?
জিন্দাবাজারে।
আচ্ছা আপনি এক কাজ করুন , আপনি আমাকে আপনার ফোন নাম্বারটি দিন আম আপনার সাথে যোগাযোগ করে ছবিগুলো নিয়ে আসব।
শামিম তার নাম্বার দিল।
প্রোগ্রাম শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে গেছে। শামিম ভাষায় ফিরছিল হটাত তার ফোনে ফোন আসল।
হ্যালো, শামিম ভাইয়া না?
হ্যা কিন্তু আপনি কে?
তাহমিনা, আরে ওই যে আপনার কাছে ছবি তুলতে গেছিলাম।
ওহ আচ্ছা তাই। কেমন আছেন?
জ্বি ভালো।
আচ্ছা আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?
কেন নাম জানাটা কোন অপরাধ নাকি?
আরে সেটা না। তো আপনার ছবিগুলো কবে নিচ্ছেন?
কেন দায়মুক্ত হতে চাচ্ছেন?
দায়মুক্ত হওয়া কি উচিত নয়?
যদি আমি দায়মুক্ত না করি?
না করলে কি আর করা এই অধম কি আর নিজ থেকে কিছু করতে পারবে?
হেয়ালি ছাড়ুন। কি করছেন?
বাসায় যাচ্ছি।
এতো রাতে?
এছাড়া উপায় কি?
হুম তাও ঠিক।
ওহ আচ্ছা জানাই হয়নি আপনি কনের কি হোন?
জানাটা কি আবশ্যক?
আবশ্যক না, তবে কৌতুহল হচ্ছে।
আমি কনের খালাত বোন।
ওহ আচ্ছা।
কালকে বিয়েতে আসবেন তো?
দেখি।
দেখি না সিওর হয়ে বলুন।
কেন?
ওতো কেন শুনতে হবেনা আপনাকে আসতে বলছি আপনি আসবেন।
আচ্ছা দেখি।
আবার দেখি বলছেন কেন? আচ্ছা শুনুন কাল আমি কোন রঙ্গের শাড়ি পরব?
আপনি কোন রঙের শাড়ি পরবেন সেটা আমি বলে দিব কেন?
আপনি হচ্ছেন ফটোগ্রাফার। ফটোগ্রাফারদের চোখে যা সুন্দর সবার কাছে তাই ই সুন্দর।
আমি তো ফটোগ্রাফার না। আমি হচ্ছি ভিডিওগ্রাফার।
সে যাই হোক একই কথা। বলুন না কোন রঙের শাড়ি পরলে ছবি ভালো আসবে?
নীল। আপনাকে নীল রঙ্গেই ভালো মানায়।
কিন্তু আজ না নীল পরলাম। আর নীল পরতে পারবনা, অন্যটা বলুন।
পেস্ট কালার।
আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে পেস্ট কালারই পরব।
আচ্ছা আপনি সাবধানে বাসায় যান। গিয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পরবেন। আপনারা হচ্ছেন আর্টিস্ট। আপনাদের জন্য ঘুম খুব বেশি দরকার। ভালো ঘুম না হলে আর্ট বেরিয়ে আসবেনা।
হাহাহাহা... আপনি তো ভারি মজার মানুষ।
আপনার মতো মানুষ পেলে যে কেউ মজার হয়ে যাবে।
তাই?
হুম তাই। আচ্ছা আপনি বাসায় যান। কাল দেখা হচ্ছে তাহলে। আর শুনুন একটু সকাল সকাল চলে আসবেন।
ফোন রেখে দিয়ে শামিম হেটে চলল গভীর রাতের নীরব রাস্তায়। মনে হচ্ছে এবার যেন তার একটা গতি হলো। তাহমিনার মতো এত রূপবতী একটা মেয়ে পাশে থাকলে যে কারো জীবন মুহূর্তেই বদলে যাবে। ভালোবাসা সৌন্দর্য বুঝেনা, ভালোবাসা মন বুঝে তবে মাঝে মাঝে মনে হয় সেই সুন্দর মন কোন এক অপূর্ব সুন্দরীর মাঝে লুকিয়ে আছে।
তাহমিনা পেস্ট কালারের একটি শাড়ি পরেছে। এই শাড়িতেও তাকে দারুণ মানিয়েছে। রূপবতী মেয়েদেরকে যে কোন কাপড়েই মানায়।
শামিম তাহমিনার ছবি তুলছে। আজ শামিমকে অন্যদিনের তুলনায় একটু ভিন্ন লাগছে।দাড়ি কেটেছে, হালকা চুলও কেটেছে, একটি পাঞ্জাবি পরে এসেছে। এর আগে এরকম পাঞ্জাবি পরে কোন অনুষ্টানে সে যায়নি। আজকে এই ভিন্ন লাগার পিছনে কারন হচ্ছে তাহমিনা। পুরুষরা তাদের ভালোবাসার মানুষের সামনে নিজেকে একজন সুশৃঙ্খল পুরুষ হিসেবে উপস্থিত করতে চায় শামিমও তার থেকে বাদ যায়নি।
অনুষ্টান শেষে শামিম বসে বসে তাহমিনার ফটোগুলো দেখছে। কি অপূর্ব মেয়েটি। বার তার ছবিগুলো দেখতে ভালো লাগছে। ছবিগুলর প্রতি চোখের জন্য অন্যরকম টান হয়ে গেছে। ঘুরে ফিরে সেই ছবিগুলোই যে চোখ দেখতে চায়। হঠাত পিছন থেকে তাহমিনা এসে বলল, এই যে ভাইয়া কি করেন?
শামিম পিছনে ফিরে তাকাল। তাহমিনার সাথে একজন পুরুষ। তাহমিনা একটু এগিয়ে এসে বলল, ভাইয়া ইনি হচ্ছেন আমার হাজবেণ্ড।
এই কথা শুনার পর কিছুক্ষণের জন্য শামিমের কান যেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।যাকে নিয়ে ভেবে ভেবে দিনটা সে কাটাল সে কিনা দিনশেষে এসে এসব কথা শুনায়।
শামিম আর কিছু বলেনি। চুপচাপ এখান থেকে চলে আসে। কোন এক অজানা কারনে তার চোখ দুটি ভিজে উঠে।
ভালোবাসা অদ্ভুত এক অনভূতি যা মানুষকে কারনে অকারনে ভাবায়। ভাবতে ভাবতে মানুষ প্রেমে পড়ে যায়। এই প্রেম যেই সেই প্রেম নয় অদ্ভুত এক প্রেম। যে প্রেমের হয়তো শুরুই হয়নি কিন্তু সেই প্রেম চিরকালের জন্য গেঁথে রয় মনের গহিনে।
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
এম সি কলেজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:০১
তিসান বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০২
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ছোট গল্প ভাল লাগল।