![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিমু খুব নিরব প্রকৃতির মেয়ে। তার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় আমাদের বাসার ছাদে। একদিন বিকালে সে ছাদে বসে বই পড়ছিল। আমি খুব একটা ছাদে যাইনা কিন্তু ওই দিন কেন জানি ছাদে যাই। ছাদে গিয়ে দেখি একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বই পড়ছে। মেয়েটির পরণে চশমা। আমি পাশে গিয়ে বললাম, আপনি তিন তলার?
হুম।
তো কিসে পড়ছেন?
ইংলিশ লিটারেচার।
বাহ চমৎকার। আপনি তাহলে সাহিত্যের মানুষ।
ওই আছি। আপনি কিসে আছেন?
ফিজিক্সে আছি। ফাইনাল ইয়ার।
খুব সহজেই তার সাথে আমার পরিচয়। আমাদের পরিচয়েরর সময় কোন জড়তা ছিল না। একটি ছেলে ও মেয়ের প্রথম পরিচয়ে যদি জড়তা না থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে তাদের মধ্যে কোনদিন প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক হবেনা কিন্তু আমাদের বেলায় এটা ভুল প্রমাণীত হলো।
পরিচয়ের পর দিন থেকেই নিয়মিত ছাদে গিয়ে কিছুক্ষণ তার সাথে কথা বলা যেন অভ্যেসে পরিণত হয়ে গেল।
ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি আমার খুব টান ছিল আমি তার কাছে থেকে কবিতার বই এনে পড়তাম এবং কবিতার বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করতাম।
একদিন শিমু আমাকে বলল, আচ্ছা কবিতার মতো জীবন যদি ছন্দময়ী হতো তবে কেমন হতো?
তাহলে পৃথিবীর মানুষেরা মানব কবিতা নামের নতুন সাহিত্য পেত।
তাই?
হুম।
আচ্ছা আপনি কি কখনো প্রেম করেছেন?
শিমুর কাছ থেকে এই প্রশ্ন শুনে আমি যেন থমকে যাই। কি বলব তাকে? প্রেম যে জীবনে একেবারে আসেনি তা কিন্তু না তবু আমি তাকে মাথা নেড়ে বললাম, না।
সে আর কিছু না বলেই অকস্মাত বলে উঠল, আপনার আমার মধ্যে কি প্রেম হতে পারে?
তার মুখে এই কথা শুনে আমার হাত পা কেমন জানি কেপে উঠল। আমার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হলোনা। সে ম্লান হেসে বলল, ভয় পাওয়ার কিছু নেই ভেবে চিন্তে উত্তর দিও। প্রেম খুব স্বাভাবিক জিনিস নয় এবং এটি সাধারনের জন্যও নয় তাই সাধারণভাবে এটি নিয়ে ভাবা যায়না । এক সপ্তাহ সময় দিলাম আপনাকে, আপনি ভেবে চিন্তে উত্তর দিবেন।
এরপর শিমুর সাথে আর কথা হয়নি। আমি ছাদে গিয়েছি কিন্তু তাকে পাইনি। তার কোন ফোন নাম্বার নেই কারন সে ফোন ব্যবহার করেনা। তার মতো অতি সাধারন একটি মেয়ে আমার জীবনে খুব দরকার ছিল। তাই তার ভালোবাসার প্রস্তাবের উত্তর দিতে আমার সময় নেওয়ার কোন প্রয়োজনও ছিল না তবুও সময় নিয়েছিলাম।
আজ এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। আজ শিমুর সাথে দেখা হলে আমি আমি আমার উত্তর জানাব। তার উত্তর নিয়ে আমি কখনোই ভাবিনি আমি ভেবেছি তার সাথে প্রেম করার দিনগুলি কেমন হবে? সে কি সারাজীবন আমার হয়ে থাকবে? আমি কেমন জানি নস্টালজিক হয়ে পড়ছিলাম। সারাক্ষণ শুধু তাকে নিয়ে ভেবেছি। আজ শুধু সে সামনে আসলে আমি আমার মনের কথাগুলো তাকে খুলে বলব।
অনেকক্ষণ হলো বসে আছি শিমু আসার নাম নেই। আর একটু অপেক্ষা করেই নিচে নেমে যাব। আকাশটা খুব মেঘলা। মেঘলা দিনগুলো কেমন জানি বেদনাদায়ক হয়।
চলে যাব ভাবতেই দেখি শিমু এসে হাজির। তার পরণে আসমানি রঙের একটি শাড়ি। সে আজ আমার সাথে দেখা করবে বলে শাড়ি পরবে তা আমি আশাও করিনি। কি অপূর্ব লাগছে আজ তাকে। এই সাধারন মেয়েটার মাঝে কি এমন আছে যা তাকে অসাধারণ বানিয়ে রেখেছে। সব মেয়েদের চেহারায় অসাধারণ কিছু গুণ থাকে যা কোন না কোন ভাবে একজন পুরুষকে আকর্ষণ করে।
আজ আর কোন কথা বলে সময় নষ্ট করবনা। আজ আমি বলব আমার মনের কথা।
আমি বলা শুরু করতেই শিমু কেঁদে ফেলল। আমি এটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে শিমু বলল, আমার বিয়ে হয়ে গেছে। আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।
শিমু আর দাঁড়িয়ে থাকেনি। শিমু চোখ মুছতে মুছতে আমার সামনে থেকে চলে যায়।
আমার পাষাণ পুরুষ হৃদয় এক ফোটা অশ্রু বিসর্জন দেয়নি কেবল অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম। কারন পুরুষরা কাঁদতে জানেনা কান্না তাদের জীবনে অমাবশ্যার চাঁদ।
আমি শুধু বিড়বিড় করে বলেছিলাম, ভালো থেকো ভালোবাসা।
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
এম সি কলেজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
২| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৫২
ওমেরা বলেছেন: প্রেম- ভালবাসা তো আর বিয়ে না যে দিন তারিখ ঠিক করে হবে ! গল্প হলে ঠিক আছে ধন্যবাদ ।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:০৬
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ভাল ছিল। রাতেই পড়েছি।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:২০
উম্মে সায়মা বলেছেন: সুন্দর হয়েছে।