![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেকেই দ্বিধাদন্দ্বে ভুগেন যে রোজার সময় চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজগুলোর কি কি করা যাবে, আর কি কি যাবে না। অনেকেই এই বিষয়গুলো জানে না। তাই আসুন এই নিয়মগুলো জেনে নেই
১. অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে রোজা ভঙ্গ হবেনা। তবে ইচ্ছা করে বমি করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
২. স্যালাইন, গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক কিছু ইনজেকশন হিসেবে নেওয়া যাবে না। এগুলো ছাড়া যেকোনো কিছু মেডিসিন হিসেবে ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরাপথে বা মাংশপেশীতে বা চামড়ার নিচে নিলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
৩. যেকোনো ধরণের চোখ ও কানের ড্রপ ব্যবহার করা যাবে। হার্টের রুগীর ব্যথা উঠলে নাইট্রোগ্লিসারিন ট্যাবলেট বা স্প্রে জিহ্বার নিচে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে ওষুধ গিলে ফেলা যেন না হয়।
৪. নাকের ড্রপও ব্যবহার করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হল এটি যাতে গলার ভেতর বা পেটে না চলে যায়। চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে শুধু মুখের ভেতর আসলে তা গিলে না ফেলে কুলি করে বাহিরে ফেললে রোজা নষ্ট হবে না।
৫. শ্বাসকষ্টের রুগীরা ইনহেলার বা অক্সিজেন ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না। নাকের স্প্রে ব্যবহার করলে রোজা ভাংবে না। কিন্তু নেবুলাইজেশন করলে রোজা ভাঙবে।
৬. রোজা রেখে কেউ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে, সে চাইলেই রোজা ভেঙ্গে ফেলতে পারবে। এই জন্য তাকে কাফফারা (একটানা ৬০ টি রোজা) দিতে হবেনা। তবে পরে অবশ্যই রমজান শেষে যেকোনো সময় এটি কাজা আদায় করে নিতে হবে।
৭. গর্ভবতী এবং বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায় এমন মা রোজার কারণে তার নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা যদি করে, দুর্বলতা বোধ করে কিংবা দুধ কম হয়, তার জন্য রোজা রাখার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে যে রোজাগুলো বাদ যাবে, পরবর্তীতে যখন তার জন্য সহজ হবে এবং বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা থাকবেনা, তখন বাদ যাওয়া রোজাগুলো শুধু কাজা আদায় করে নিলেই হবে। এর জন্য কাফফারা দিতে হবে না।
৮.মেয়েদের পিরিয়ডের রক্ত বের না হওয়া পর্যন্ত রোজা ভংগ হবেনা। পিরিয়ড শুরুর পর রোজা রাখা এবং নামাজ পড়া যাবেনা। যে রোজাগুলো মিস যাবে, রমজান শেষে সেগুলো কাজা আদায় করতে হবে। তবে নামাজের কাজা আদায় করতে হবেনা।
৯. পায়খানার রাস্তায় কিংবা যোনিপথে সাপোজিটরি, ট্যাবলেট ব্যবহার করা যাবে। পায়খানার রাস্তায় enema দিলে বা প্রসাবের রাস্তায় ক্যাথেটার করলে রোযা নষ্ট হয় না।
১০. রোযা রেখে প্রয়োজনে বা জরুরী ভিত্তিতে (যেমন ব্যাথা করলে) দাঁত উঠানো, ফিলিং করা কিংবা স্কেলিং করা যাবে। এতে রোজা নষ্ট হয় না। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে রক্ত, পানি বা মেডিসিন যাতে গিলে না ফেলা হয়। তবে একান্ত প্রয়োজন না হলে ইফতারের পর করা ভাল।
১১. রক্ত টেস্ট করার জন্য জন্য রক্ত দিলে রোজা নষ্ট হবেনা।
১২. সুস্থ সবল ব্যক্তির রক্ত দান করলে রোজা ভঙ্গ হয় না। কিন্তু রক্ত গ্রহণ করলে রোজা ভাঙবে।
রক্তদানের পর রক্তদাতা দুর্বল অনুভব করলে রোজা ভেঙ্গে ফেলতে পারেন। এই জন্য কাফফারা দিতে হবে না, পরে শুধু একটি রোজা কাজা করলেই হবে।
১৩. ইনসুলিন নিলেও রোজা ভংগ হবেনা। কিন্তু ইনসুলিন নেওয়ার পর যেহেতু খাবার খেতে হয়, তাই রোজা থাকাকালীন অবস্থায় তা নেওয়া যাবে না হাইপোগ্লাইসেমিয়ার আশঙ্কায়। তাই এটার সকালের ডোজ হিসেবে ইফতােরের ঠিক আগে এবং রাতের ডোজ সেহেরির আগে এডজাস্ট করে নিতে হবে।
১৪. যোনিপথে বা পায়খানার রাস্তায় কোন পরীক্ষা যেমন PV, DRE, এনোস্কোপ করলে রোযা নষ্ট হয় না।
১৫. অনিচ্ছাকৃতভাবে যেমন আহত হয়ে কিংবা নাক দিয়ে রক্ত পড়লে রোজা নষ্ট হবেনা।
১৬. পেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে কিংবা মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না, তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন গিলে ফেলা না হয়। সবচেয়ে উত্তম হল এগুলো ব্যবহার না করে মেসওয়াক ব্যবহার করা।
রেফারেন্সঃ
১. 9th Fiqh Medical Seminar, Morocco. (সারা বিশ্ব থেকে নামকরা আলেমগন ও মুসলিম চিকিৎসকগন মরক্কোর এই সেমিনারে একমত হয়ে এই বিষয়ে ফতোয়া দেন)।
২. প্রশ্নোত্তরে সিয়াম By ডঃ আবু বকর মুহম্মদ জাকারিয়া
৩. Standing committee for issuing fatwa, Kingdom of Saudi Arabia
©somewhere in net ltd.