![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অভিধানভিত্তিক শুদ্ধ উচ্চারণ ভাষার নন্দনতাত্ত্বিক নান্দনিকতা বজায় রেখে কথা বলতে সহায়তা করে। যেমন- ‘অন্য’ শব্দটির উচ্চারণ কেন ওন্ নো হবে আর কেন অন্ নো হবে না তার ব্যাকরণিক সূত্রটি জানা দরকার। আর এজন্যে থাকা দরকার ব্যাকরণের কিছু মৌলিক ধারণা যা সাহায্য করবে অভিধানভিত্তিক উচ্চারণ যথাযথ করতে। বাংলা বর্ণমালায় মোট ১১ টি স্বর বর্ণ এবং ৩৯ টি ব্যঞ্জন বর্ণ রয়েছে। এ বর্ণগুলোর যথাযথ উচ্চারণ বিধি শুদ্ধ উচ্চারনের মূল ভিত্তি। তবে সব চেয়ে বেশি উচ্চারণের তারতম্য ঘটিয়ে থাকে ‘অ’ এবং ‘এ’ বর্ণ দুটি। এ দুটি স্বরবর্ণের সঠিক উচ্চারণ পদ্ধতি মেনে চললে বক্তা অনেকাংশে তার বক্তব্য শুদ্ধ উচ্চারণে উপস্থাপন করতে পারবে। এ বিষয়ে সামান্য আলোকপাত করলাম ..।
‘অ’ ধ্বনিটির দুটি উচ্চারণ রয়েছে। ১. বিবৃত ২. সংবৃত
১. বিবৃত উচ্চারণ: শব্দে ‘অ’ এর উচ্চারণ ‘অ’ এর মত বা স্বাভাবিক হলে তাকে বিবৃত উচ্চারণ বলে। অর্থাৎ (অ = অ) যেমন- অনেক, কথা, মলা, অল্প, সমাপ্তি ইত্যাদি
বিবৃত উচ্চারণের নিয়ম:
১. শব্দের আদিতে না বোধক ‘অ’ (উপসর্গ হিসেবে ব্যবহৃত ‘অ’) এর উচ্চারণ ‘অ’- এর মত বা বিবৃত হয়। যেমন- অসীম, অনাচার, অমানুষ, অনিবার্য, অনিয়ম, অমৃত ইত্যাদি
২. ‘অ’ বা ‘আ’ যুক্ত ব্যঞ্জন ধ্বনির পূর্ববর্তী ‘অ’-এর উচ্চারণ বিবৃত হয়। যেমন- যত, কথা, কণা, রত, যথা ইত্যাদি
৩. ‘সম্’ উপসর্গযোগে গঠিত শব্দে ‘অ’-এর উচ্চারণ বিবৃত হয়। যেমন- সম্প্রীতি, সম্মিলিত, সংখা্যা ইত্যাদি
২. সংবৃত উচ্চারণ: শব্দে ‘অ’ এর উচ্চারণ ‘ও’ এর মত হলে তাকে সংবৃত উচ্চারণ বলে।
অর্থাৎ (অ = ও) অভিধান (ওভিধান্) নদী, অনুবাদ, বধূ অক্ষ (ওক্ খো) প্রভাত, অন্য, সদ্য, চর্যাপদ (চোর্জাপদ্)
সংবৃত উচ্চারণের নিয়ম:
১. ‘অ’-এর পর ‘ই’, ‘ঈ’, ‘উ’, ‘ঊ’ থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়। যেমন- কবিতা, সতী, অরুণ, ময়ূর ইত্যাদি
২. ‘অ’-এর পর য-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জন বর্ণ থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়।
যেমন- অদ্য (ওদ্ দো) কল্যাণ ( কোল্ লান / কোল্লান), কথ্য, গণ্য, পণ্য, সত্য, শয্যা( শোজ্জা) জন্য, তথ্য( তোত্ থো)
ব্যতিক্রম: বধ্যভূমি (বদ্ধোভূমি) [উল্লেখ্য যুক্ত ব্যঞ্জন বর্ণের সাথে ‘য-ফলা’ যুক্ত হলে সেখানে ‘অ’ বিবৃত (‘অ’) থাকে। যেমন- বন্ধ্যা (বন্ধা), কণ্ঠ্য, অর্ঘ্য, বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি]
৩. ‘অ’-এর পর ‘ক্ষ’ ও ‘জ্ঞ’ থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়। যেমন- বক্ষ ( বোক্ খো ) , পক্ষ ( পোক্ খো), দক্ষ, অক্ষাংশ, কক্ষ, রক্ষা, যজ্ঞ
[তবে ‘ক্ষ’ এর সাথে অন্য বর্ণ যুক্ত হলে সেখানে ‘অ’ বিবৃত (‘অ’) হয়। যেমন- যক্ষ্মা (যক্ খাঁ), লক্ষ্মণ ইত্যাদি]
৪. ‘অ’-এর পর ঋ-কার যুক্ত ব্যঞ্জন বর্ণ থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়। যেমন- যকৃত ( জোকৃত ), মসৃণ, কর্তৃ, বক্তৃতা ইত্যাদি।
৫. শব্দের প্রথমে ‘অ’ যুক্ত ‘র-ফলা’ থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়।
যেমন- গ্রহ, শ্রম, ভ্রম, গ্রন্থ, ক্রম, প্রকাশ, প্রকৃত ইত্যাদি।
৬. বর্তমানে রেফ (র্) এর পর ‘য-ফলা’ হয় না। তবে আগে যে সব শব্দে ‘য-ফলা’ ছিলো সেখানে ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়। যেমন- পর্যায় ( পোর্জায়), চর্যাপদ, ইত্যাদি।
৭. তর, তম, তন প্রত্যয়যুক্ত শব্দের অন্ত্য ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়। যেমন- বৃহত্তর, ক্ষুদ্রতম ইত্যাদি।
৮. সমাসবদ্ধ শব্দের পূর্বপদের শেষ ব্যঞ্জনের নিহিত ‘অ’ সংবৃত (ও) হয়। কালক্রমে প্রাণবন্ত, গণতন্ত্র ইত্যাদি।
৯. ‘ত’ ও ইত প্রত্যয়যোগে গঠিত শব্দের অন্ত্য ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়। যেমন- মত, হত, চলিত, প্রীত, বিদিত ইত্যাদি।
১০. ‘আন’ (আনো) প্রত্যয়যোগে গঠিত বিশেষণ শব্দের অন্ত্য ‘অ’-এর উচ্চারণ সংবৃত (ও) হয়। যেমন- করান, তাড়ান, লেখান ইত্যাদি।
এ সব নিয়ম-কানুন ধৈর্যসহকারে চর্যা করলে বক্তা প্রত্যাশিত ফল লাভ করবে বলে আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি। সর্বোপরি ভালোবাসতে হবে মায়ের ভাষাকে, সম্মান দিতে হবে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মাতৃভাষাকে।
২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:০১
পতিতপাবন মণ্ডল বলেছেন: ধন্যবাদ, অরুণ মজুমদার, আশা করি ভালো আছো, তোমার সাথে একটি বিষয় সহভাগিতা করতে চাই, “ভাষা শেখার নিয়ম কানুন ব্যাকরণ নাকি যে বই এ সব নিয়ম কানুন শেখায় সে বই ব্যাকরণ, আমি বিষয়টি নিয়ে বেশ দ্বিধায় আছি, এ সব বিষয়ে তোমার সাথে একদিন কথা হতে পারে। চলে আসো পুরোনো ঢাকায় .......... শুভেচ্ছা নিরন্তর ...............
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৪৮
অরুণ কুমার মজুমদার বলেছেন: ভালো লাগলো। চালিয়ে যান। নতুন ভাবে লিখলে আরো ভালো লাগতো।