শব্দের বিবাদ

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩০

আমার আশে-পাশে
আমার জানালায়
আমার আঙ্গিনায়
আমার বাড়ির ঐ বিশাল দেবদারু গাছটায়;
তার পাশে পুকুরে
জংলা বনের মাঝে
ঝিঁ ঝিঁ পোকার মতো
কতকগুলি শব্দ-
কারনে অকারনে বিবাদ করে।
রাজাকার
আলবদর
আল-শামস্
শব্দের শিকলে বাধাঁ যায় না, তাই
আমার কাছে শব্দ ছাড়া কোন বাক্য নেই, যা
চমক দিয়ে যাবে নিস্তেজকে
সতেজ করতে থাকবেই অহরহ;
আমার শব্দেরা ইঁটের ভাঙ্গা স্তুপ
অর্থহীন পড়ে আছে অর্থবহনের কাজে।
তাই শুধুই শব্দের ধ্বংস স্তুপ-
মুক্তিযোদ্বা
শোষক ও
শোষিত
বিশেষ্য এই পদ কয়েকটি ছাড়া আর কিইবা
হতে পারে জীবনে;
জীবনের দ্যোতনা একে দিতে পারে এমন
বাক্য এই মূহুর্তে একেবারে অজ্ঞাত।
বায়ুবেষ্টিত শব্দ
হাকাকার ধ্বনি তুলে জিকির করে মোলাপুরুতের মতো।
আমি সাধারনের
যেখানে অগনিত শব্দ শাসন করে-
শোষিত হতে থাকে আমার নৈসর্গিক।

৪৭’এর বিশাল ভাঙ্গনের ঢেউ কাটাতে না কাটাতে
৫২’এর রক্তগঙ্গা পার হয়ে এলাম,
৬৫’তে স্বাধিকার সচেতনতায় উজ্জীবিত হওয়ায়
৬৯’এর চরম বিপর্যয়ের মাঝে উঠে আসে
৭০’এর নির্বাচনের চরম সিদ্বান্ত।
৭১’এর পচিশে মার্চের ভয়াল রাত, তারপরও
অনেক শব্দ-
ভাঙ্গা ভাঙ্গা শব্দের মিছিল-
এই ভাঙ্গা ভাঙ্গা শব্দগুলি
এই ভাঙ্গা ভাঙ্গা রক্তস্রোত
এই ভাঙ্গা ভাঙ্গা আত্মত্যাগ
শব্দের মতোই উচ্চারিত
হতে থাকে মোর অবয়বে।
উচ্চারিত হতে থাকে-
প্রভূভক্ত আমাদেরই কুকুরটার কানের কাছাকাছি।
সব রেকর্ড একরকম বাজে না
একরকম কেউ শুনেও না।
আমি রবীন্দ্র শুনি, নজরুলও শুনি
আমি ইকবাল বুঝি না।
ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে সব বর্জ্য পদার্থ।

তবে-
আমার আশে-পাশে
আমার জানালায়
আমার আঙ্গিনায়
আমার বাড়ির ঐ বিশাল দেবদারু গাছটায়;
তার পাশে পুকুরে
জংলা বনের মাঝে
ঝিঁ ঝিঁ পোকার মতো
অহেতুক শব্দগুলি
কারনে অকারনে শব্দ বিবাদ করবে না।

২৫' মার্চ ১৯৯৫খ্রীঃ

৪ টি +০/-০