নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুর!

বিকট

হাসান মাহবুব

আমার অপদার্থতাকে মাহাত্ম্য ভেবোনা...

হাসান মাহবুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

লিজি ভেলাসকুয়েজ- দ্যা মোস্ট বিউটিফুল গার্ল অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:২৫


একজন টিন এজ কিশোরী। ইউ টিউবের একটি ভিডিও। কিছু সহিংস এবং অপমান সূচক মন্তব্য...
“মাইরা ফালাও ওরে!”। “ছি, ছি! কী জঘন্য দেখতে!” “তুমি বেঁচে আছো কী মনে করে?শুট ইয়োরসেলফ!” “ওকে আগুনে পুড়িয়ে মারো”।
কেউ কেউ আবার এক কাঠি সরেস। তারা নিজেদের রসের ভাণ্ডার ওপর করে দিয়েছে তার প্রতি,
“বাইরে বের হবার সময় মাথার ওপর একটা বস্তা চাপিয়ে যেও। তাহলে পরিবেশটা সুন্দর থাকবে।“
যার প্রতি মানুষের এত ঘৃণা, এত আক্রোশ, এত ক্রোধ, তার অপরাধ কী ছিলো? এক কথায় জবাব দেয়া যায়- “কিছুই না”। কিছু না করলেও নিরীহ একজনকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা, মানুষই পারে। মানুষের পক্ষেই সম্ভব নিষ্পাপ প্রাণকে নিজেদের পাপাচারী মনের কলুষতা দিয়ে আক্রমণ করা।
আক্রান্ত কিশোরীটির নাম লিজি ভেলাসকুয়েজ। তার অপরাধ- তিনি জন্মেছিলেন বিরল এক অসুখ নিয়ে। অসুখটির নাম “Neonatal progeroid syndrome”. এই অসুখ হলে শৈশবের কোমলীয়তা, কমনীয়তা থাকে না। চামড়া কুঁচকে যায় বিশ্রী ভাবে। নষ্ট হয়ে যায় বডি টোন। আক্রান্ত হয় হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, মুখ, চোখ। অকাল বার্ধক্য এসে ভর করে শরীরে। আক্রান্তদের ওজন বলতে গেলে বাড়েই না। ২৭ বছর বয়েসী, পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি লম্বা লিজ্জির ওজন মাত্র ৫৮ পাউন্ড বা ২৬ কেজি! তবে তার পরিবার তাকে সবসময় বুঝিয়েছে যে, সে স্বাভাবিক একজন মানুষ। অন্যেরা যা পারবে সেও তাই পারবে। তাই এটা নিয়ে লিজ্জির তেমন মাথাব্যথা ছিলো না। কিন্তু হায়! অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?

সেই ভীষণ কদর্য দিনটায় লিজি ফুরফুরে মেজাজে ইউটিউবে বসেছিলেন । ভেবেছিলেন হোমওয়ার্ক করার আগে কিছু রিলাক্সিং মিউজিক শুনলে মন্দ হয় না। ইউটিউবে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে অকস্মাৎ একটি অদ্ভুত শিরোনামের ভিডিও খুঁজে পেলেন। আট সেকেন্ডের ছোট্ট একটি ভিডিও। তখন কি তিনি ভাবতে পেরেছিলেন এই আট সেকেন্ডের ভিডিওটা তার জীবন বদলে দেবে? ভিডিওটা শিরোনাম ছিলো অদ্ভুত। “The ugliest woman of the world”. এভাবে কারো চেহারা নিয়ে কটুক্তি করাটা মোটেও লিজির আদর্শের সাথে মেলে না। কিন্তু কৌতুহলের কাছে পরাজিত হলেন তিনি। তারপর কী দেখলেন?

শিরোনামের সেই কুৎসিত মেয়েটা আর কেউ নয়, তিনি নিজেই! একটি টিভি শো থেকে কপি করে আপলোড করা হয়েছে। প্রথমে হেসেই উড়িয়ে দিলেন। “যাহ, তাই হয় না কি! আমি মোটেও মন খারাপ করি নি দেখে। কে না কে আপলোড করে আমাকে কুৎসিত বললো তাতে কী এসে যায়! অন্যেরা নিশ্চয়ই এর প্রতিবাদ করবে।“ ভাবলেন, “দাঁড়াও, মজা দেখতে পাবে। আমার ভাই-বোন, বন্ধুদের যদি দেখাই যে তুমি এই কুকর্ম টা করেছো, তাহলে ওরা তোমাকে উচিত শাস্তি দেবে। ইতিমধ্যেই হয়তো কমেন্টে সবাই তোমাকে আচ্ছা করে ঝেড়েছে!” রাগী রাগী মনে তিনি কমেন্ট পড়া শুরু করলেন।
সেখানে সম্মুখীন হলেন তার জীবনের বিভৎসতম অভিজ্ঞতার। কিছু কমেন্টের উদাহরণ লেখার শুরুতেই দেয়া হয়েছে। সেগুলোই সব নয়। এমন কমেন্ট ছিলো হাজার হাজার। হিংস্র উন্মত্ততায় তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো লিজির মনটাকে দুরমুশ করে দেয়ার পৈশাচিক অভিপ্রায়ে। লিজি প্রতিটা কমেন্ট পড়েছিলেন। একটিও বাদ দেন নি। তিনি আশা করেছিলেন অন্তত একজন তার পক্ষে কথা বলবে, যে তার প্রতি ভায়োলেন্ট হবে না, তাকে নিয়ে মজা করবে না। একজন অন্তত প্রতিবাদ করবে বর্বরতম এই আচরণের। কিন্তু লিজির পক্ষে কেউ ছিলো না সে দিন। প্রতিটি মন্তব্যই তার কাছে ছিলো চপেটাঘাতের মত। শত শত থাপ্পড় তাকে গুড়িয়ে দিয়েছিলো, ভেঙে দিয়েছিলো। বিরুদ্ধ স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতরে অভ্যস্ত লিজি এর আগে কখনও এত অসহায় বোধ করেন নি। কেউ একজন তার পক্ষে কথা বললো না! এত অবিচার আর অনাদর এই পৃথিবীতে!

কিছুক্ষণের জন্যে লিজি বড় বিপন্ন অনুভবে ডুবলেন। হারিয়ে ফেললেন আশা, উৎসাহ এবং প্রেরণা। সৌভাগ্যের ব্যাপার, তা ছিলো ক্ষণস্থায়ী। “আমার বাবা-মা বলেছেন আমি আলাদা কেউ নই। আমার শিক্ষকেরা শিখিয়েছেন আমিও পারি। আমার আছে অনেক বন্ধু, ভাই-বোন, আর শুভাকাঙ্খী। আমি ভেঙে পড়বো এই কয়টি ভার্চুয়াল বখাটের গুন্ডামিতে?”
এই উপলব্ধি তাকে সাহসী করলো, শক্তি যোগালো। এমন কী তার মনটাও ভালো করে দিলো নিমিষেই। ফূর্তির মেজাজে গুনগুনিয়ে প্রিয় গানের সুর ভাজতে ভাজতে তিনি একটি কঠিন প্রতিজ্ঞা করে ফেললেন। এই বখাটেগুলোকে দেখিয়ে ছাড়বেন লিজি কী পারে আর না পারে। “হু হু! লিজিকে তো চেনো না, সারা পৃথিবীকে আমি দেখিয়ে ছাড়বো লিজি কী চিজ!”
যা হতে পারতো প্রকৃতির বৈরীতার বিরুদ্ধে লড়তে থাকা একটি মানুষের যুদ্ধের সমাপ্তি, তা হয়ে উঠলো একটি অসাধারণ ফিরে আসার কাহিনী। এই মেয়েটি একদিন পরিচিত হবে তার উদ্দীপ্ত ভাষণে, লেখায়, দৃঢ়তায়, এই কথা কি কেউ ভাবতে পেরেছিলো? তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন জীবনের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে। তার শরীর দুর্বল এবং ভঙ্গুর হলেও মন ছিলো মজবুত এবং আলোকিত। অন্তর্গত সৌন্দর্যে ঋদ্ধ হয়ে জীবনের সূর্যস্নাত আঙিনা থেকে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করেছিলেন যাবতীয় অশুভ আবর্জনা। তাকে এখন পৃথিবী “কুৎসিততম নারী” হিসেবে চেনে না, চেনে একজন মোটিভেশনাল স্পিকার, এবং লেখক হিসেবে। লিজি এখন বরং সেই অনলাইন দুর্বৃত্তদের ধন্যবাদ জানান। বলেন, “তোমাদের কারণেই আমি আজকের লিজি ভেলাসকুয়েজ হতে পেরেছি।“
আর সেই অনলাইন দুর্বৃত্তরা? তাদের খবর নিতে মানুষের বয়েই গেছে! হয়তো কোথাও নীরবে নিভৃতে লুকিয়ে পরাজিত এবং হতোদ্যম জীবন কাটাচ্ছে। কালের প্রবাহে তারা হারিয়ে গেছে দৃশ্যপট থেকে। বঞ্চিত হয়েছে জীবনের আশীর্বাদ থেকে।

সম্প্রতি লিজিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র; “A Brave Heart: The Lizzie Velasquez Story.” সাধারণত ডকুমেন্টারি সিনেমার প্রতি দর্শকদের তেমন আগ্রহ থাকে না। কিন্তু লিজির কাহিনী তারা বরণ করে নিয়েছে অগাধ ভালোবাসায়। কেনই বা নেবে না? এমন মানুষ কজন দেখেছে পৃথিবী? প্রোজেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত খুব বেশি দিন বাঁচে না। আর বাঁচলেও তাদের জীবন হয় অসম্মানজনক। লিজি সেই কাতারের অন্তর্ভুক্ত নন। তিনি, তার পরিবার, শিক্ষক এবং বন্ধুরা বর্ণনা করেছেন লিজির জীবনের বিভিন্ন বাঁক এবং বৈচিত্র। চলুন ফিরে দেখি লিজির শৈশব কেমন ছিলো।

স্কুলে যাবার আগে বাবা- মা তাকে পইপই করে শিখিয়ে দিয়েছিলেন, “লিজি, তুমি অন্যদের চেয়ে আলাদা নও। স্রেফ আকৃতিতে একটু ছোট। অন্যেরা তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করলে মন খারাপ করবে না কিন্তু একদম”। পনি টেইল করা ছোট্ট ছটফটে লিজি খুব আগ্রহের সাথে স্কুলে এসেছিলেন। নতুন জীবন! কত্ত রঙ! কত্ত খেলা! কত্ত মজা! কিন্তু সে কী! কেউ তার সাথে বসতে চাইছে না। কথা বলছে না। এমন কী অনেকে ভয়ও পেয়ে গেলো তাকে দেখে। শিশুদের আর দোষ কী! প্রোজেরিয়া রোগের উদাহরণ তো আর আশেপাশে তাকালেই দেখা যায় না! লিজি খুব অবাক হয়েছিলো সে দিন। আকুল হয়ে জানতে চেয়েছিলো, “কেন এমন করছো আমার সাথে? আমার কী দোষ?”। লিজ্জি সেদিন জানতে পারে নি তার ‘দোষ’ কী। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঠিকই এই সমাজ তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে কী তার ‘দোষ’!
অবশ্য প্রথমদিকের সেই বাজে অভিজ্ঞতা গুলো কাটিয়ে উঠে লিজ্জি নিজ প্রতিভায় পরিচিত হতে পেরেছিলো স্কুলে। পারবে নাই বা কেনো? সে দৌড়ুতে পারতো, নাচতে পারতো, লিখতে পারতো, অন্যদের সাথে স্বাভাবিক ভাবে ব্যায়ামও করতো। তাহলে আর বাধা কোথায়! প্রাথমিক তিক্ততা কাটিয়ে সবার সাথে মিশে গেলেন, সবার প্রিয় হলেন। যুক্ত হলেন স্কুলের সাপ্তাহিক কাগজের সাথে। চিয়ার লিডিং টিমেও ছিলো তার উদ্ভাসিত পদচারণা।

লিজি সবসময়ই তার অসাধারণ বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সুযোগ পেলেই। ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার শিক্ষক এবং বন্ধুদের। তার ভাগ্য, তিনি এমন বাবা-মা পেয়েছেন, যারা সন্তানের সুন্দর জীবনের জন্যে ত্যাগ করেছেন নিজেদের যাবতীয় বিলাসব্যসন। লিজির দুজন ভাই-বোন আছে। যারা স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যবান। তারাও সবসময় লিজিকে আগলে রেখেছে যাবতীয় অবহেলা থেকে।
তার মা যখন গর্ভবতী হলেন, সেই সময় থেকে জন্মের পূর্ব পর্যন্ত চিকিৎসকেরা কেউ ধারণাই দিতে পারে নি যে তাদের সন্তান এমন হতে যাচ্ছে। লিজি জন্ম নিলো। যেন একটি ছোট্ট চড়ুই পাখি। এতই পলকা! তার ওজন ছিলো মাত্র ২ পাউন্ড ১০ আউন্স। সন্তানের এই দুরবস্থা দেখে লিজির মা সেদিন কেঁদেছিলেন। এখনও কান্না পায় সেদিনের কথা মনে পড়লে। লিজির বাবা-মা চান নি তাদের কান্না, কষ্ট মেয়েকে স্পর্শ করুক। তাকে গড়ে তুলেছিলেন আদর- সোহাগে, চিহ্নিত করে দিয়েছিলেন তার স্বকীয়তা। বলেছিলেন, “তুমি আলাদা কেউ নও”।

“সিনেমাটা যদি দেখে থাকেন, তাহলে এটা শুধুই আমার গল্প ভাবলে ভুল করবেন। আমি এবং আমার প্রতিকুলতা গুলো খুব অচেনা-অজানা কোন গল্প নয়। আমি বুলিয়িংয়ের শিকার হয়েছি, আপনি কি কখনো হন নি? কখনও হবেন না, এটা দিব্যি দিয়ে বলতে পারেন? বুলিয়িং চলে আসছে আদি কাল থেকেই। এটা কখনও থামবে না, চলতেই থাকবে। কিন্তু তাই বলে আমরা মুখ বুঁজে বসে থাকবো? কখনই না। এটা আমার, আপনার সবার গল্প। আমরা উৎপীড়ন বন্ধ করতে না পারি, উৎপীড়িতের পাশে তো দাঁড়াতে পারি! তাকে সাহস যোগাতে পারি!”
সিনেমাটিতে আমরা লিজির এই ইস্পাতদৃঢ় মনোবলের সাথে পরিচিত হই। সিনেমা, এবং পরবর্তীতে রচিত বই, এবং ভাষণগুলো তাকে “রিয়াল লাইফ হিরো’র মর্যাদা দেয়। অগুনতি মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে লিজ্জির নাম উচ্চারিত হয় সম্ভ্রমের সাথে। এই ক্ষীণ তনু, ‘বিশেষ’ তরুণীর ভেতরের অফুরান শক্তি বিস্ময়ে অভিভূত করেছে সবাইকে, সাহস যুগিয়েছে। স্পেন থেকে মেক্সিকো, কলোরাডো থেকে সিয়াটলে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন মোটিভেশনাল স্পিচ দিতে।
লিজি সবসময় চেয়েছেন তাকে যে সব সংকটের মুখোমুখি হতে হয়েছে, অন্য কেউ এমন কিছুর মুখোমুখি হলে তার পাশে দাঁড়াতে, সাহস যোগাতে। তার লেখনীতে, বক্তব্যে বার বার এসেছে জীবনের সৌন্দর্যের কথকতা, ইতিবাচকতা, এবং সত্যকে মেনে নেয়ার সৎ সাহসের ইতিবৃত্ত।
নাতিদীর্ঘ জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তাকে একজন প্রাজ্ঞ পরামর্শদাতায় পরিণত করেছে। তার কিছু অমূল্য পরামর্শ এখানে বর্ণিত হলো ,
“আপনি খুব ভালো, নিষ্কলুষ জীবন যাপন করতে পারেন, তার মানে এই না যে আপনার সাথে কোন অন্যায় ঘটবে না। বরং ভালো মানুষের সাথেই এসব দুর্যোগ-দুর্বিপাক যেন গাঁটছড়া বেঁধে থাকে! সবাই যেন ওৎ পেতে থাকে কখন একত্রে ঝাঁপিয়ে পড়বে সুযোগ পেলেই। তবুও লড়াইটা চালিয়েই যেতে হবে। কারো সহযোগীতা না পেলে একাই। আর মনুষ্যত্বের শক্তি এমনই, যার পালে একটু হাওয়া লাগলেই সে দস্যু জাহাজকে পেরিয়ে এগিয়ে যাবে।
নিজের প্রতি বিশ্বাসের চেয়ে বিশ্বস্ত আর কিছু নেই। যখনই আপনি দুর্বৃত্তদের আক্রমণের শিকার হবেন, নিজেকে প্রশ্ন করুন, “কেন আমার সাথে এরকম হচ্ছে?” “আমি কি খুব খারাপ?”“আমি কী করেছি?”। অন্যরা আপনাকে পেয়ে বসার আগেই আত্মশূদ্ধি করুন। আপনার কোন দোষ থাকলে তা সংশোধন করুন। দোষ-ত্রুটি নিয়েই মানুষ, তাই সংশোধনে কোন সংকোচ থাকা উচিত না। আর আপনার যদি কোন দোষ না’ই থাকে, তাহলে এগিয়ে যান নির্ভয়ে।
নিজেকে প্রশ্ন করুন। চাহিদা এবং যোগানের সরল অংক কষুন। আপনি আরো সুন্দর, আরো স্বাস্থ্যবান, আরো আকর্ষণীয় হতে চান? নিজের এইসব চাহিদা মেটানোর জন্যে আপনি কি প্রস্তুত? অলীক কল্পনায় ডুবে থেকে আর যাই হোক, আত্ম উন্নয়ন হয় না। নিজেকে নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হলে “ওৎ পেতে থাকা” মানুষেরা তো সেই সুযোগ নেবেই! অন্যেরা আপনাকে যা ভাবছে, অথবা আপনার সম্পর্কে যা বলছে, তার চেয়ে আপনি বেশি কার্যক্ষম অথবা দক্ষ, এই বিশ্বাস রাখুন।

সবাই যা করছে তাকে চলতি ট্রেন্ড হিসেবে ধরে নিয়ে ফূর্তিতে মেতে ওঠার আগে একবার ভাবুন, আপনার আমোদে কেউ কষ্ট পাচ্ছে না তো? কারো চোখের জল ঝরছে না তো? অন্যদের অনুভূতিকে যথাযথ সম্মান দিতে পারছেন তো?
“সমালোচনা যেমনই হোক, আমি মেনে নিতে পারি”- এই মনোভাব আসলে বড়ই কৃত্রিম। সমালোচনা কম বেশি সবাইকেই আহত করে। তাই অন্তত আপনার কাছের মানুষদের কাছে নিজেকে মেকি বানাবেন না। আপনার সত্যিকারের মনোভাব প্রকাশ করুন তাদের কাছে। প্রতিদিন অকারণেই কত অগুনতি প্রাণকে আমরা কষ্ট দিয়ে থাকি তার লেখাজোকা নেই।
আপনি কী করতে পারেন, না পারেন, কিসে সফল হবেন, বিফল হবেন, তা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখুন। অন্যেরা যেন আপনাকে নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞায় সংকুচিত করতে না পারে। তবে আগুনের জবাবে আগুন নয়, ব্যবহার করুন শীতল পানি। কারণ, পানিই পারে আগুন নেভাতে। অন্যদের কূটকচালিতে খুব সহজে ক্ষেপে যাবেন না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল জানুন। আবার বাড়াবাড়ি আত্মবিশ্বাসও ভালো নয়। মানুষের শব্দ এক ভয়াল অস্ত্র। আপনার বহুদিনের অর্জিত সাফল্য এবং সম্ভাবনা চোখের পলকে চুরি হয়ে যেতে পারে অন্যদের একটি মাত্র শব্দ বা বাক্যে।
অশুভ স্বত্ত্বাকে ভয় পাবেন না। মানুষের মাঝেই আছে দেবতা, মানুষের মাঝেই আছে শয়তান। কিন্তু দিনশেষে সবাই মানুষ। আমাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা ভিডিও গুলো আমি বারবার দেখতাম। প্রথম বার খুব আঘাত পেয়েছিলাম। পরে তা দূর করতে পেরেছিলাম। আমি ভয়ের মুখোমুখি হতে ভয় পেতাম না। নিজের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সবসময় সজাগ ছিলাম। তাই কেউ কখনও আমার ওপর চড়ে বসতে পারে নি।
হাসি পেলে হাসুন, কান্না পেলে কাঁদুন। অনুভূতিদের বেড়ে উঠতে দিন। ছোট্ট ছোট্ট অনুভূতিগুলোই নিয়েই তো জীবন!
মানুষের বহিরঙ্গ দেখে কোন কিছু বিচার করবেন না। হ্যাঁ, কারো আকর্ষণীয় সজ্জা দেখে প্রলুদ্ধ হতেই পারেন, তবে তা দেখে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়াটা স্রেফ নির্বুদ্ধিতা।
এবং সবশেষে, পরিবারকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন। পরিবারের ভালোবাসা শর্তহীন। এই যে আমি আজ ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি, আপনাদের পরামর্শ দিতে পারছি, পরিবার না থাকলে এর কিছুই সম্ভব হতো না। আমি স্রেফ ধূলোয় মিশে যেতাম। বাবা-মা যে ভিতটা গড়ে দেয়, তার ফলে সন্তান কখনই ভীত হয় না, কোন পরিস্থিতিতেই।

লিজির জীবন এখন চমৎকার কাটছে। জীবনে যেসব বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তাতে তিনি কষ্ট পেয়েছেন, কিন্তু বিপর্যস্ত হন নি। বিষাদী হয়েছেন, হতাশ হন নি। ভেঙে পড়ে্ন নি। ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। সুতরাং আজ তাকে রুখতে পারবে এমন কোন শক্তি নেই।
“প্রোজেরিয়ার কারণে আমার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই প্রায়শই অসুস্থ থাকতে হয়। কিন্তু তাতে আমার উদ্যম কমে নি। আমি অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকলে অসুখ আমাকে পেয়ে বসবে। আমি তো শুধু আমার জন্যে বাঁচি না। আমার সাথে সংযুক্ত আছে হাজারো মানুষ, যারা আমার কাছ থেকে দুটো আশার বাণী শুনলে বেশ চাঙা বোধ করে। তাদের শেখাতে হবে সুখের সূত্র। জানাতে হবে কীভাবে ভালোবাসার স্পর্শে সতেজ হয়ে ওঠে মানুষের মনভূমি। ব্যর্থতার ধ্বংসস্তুপ থেকে কীভাবে সাফল্যের মিনার গড়ে তোলা যায়।“

সংক্ষেপে এই হলো লিজি!
সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কাজ করছেন পার্লামেন্টে এ্যান্টি বুলিয়িং বিল পাস করানোর জন্যে। “আমি স্বপ্ন দেখি এমন এক দিনের, যখন বুলি’রা সামাজিক প্রতিরোধের সম্মুখীন হবেন। তাদের কে সমাজ ঘৃণার সাথে ত্যাগ করবে। জয়ী হবে শুভ অনুভূতি। জয়ী হবে মানবতা”। এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে এ জন্যে অনেক দিন থেকেই। ঘুরতে হচ্ছে নানা জায়গায়। অনেক বড় বড় মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন। যারা তাকে উৎসাহ এবং সাহস যুগিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন, হিলারী ক্লিনটন এবং মাইকেল জর্ডানের মত ব্যক্তিত্বেরা! প্রথমবার যখন ২০১৫ সালে পার্লামেন্টে এ্যান্টি বুলিয়িং বিল উত্থাপিত হয়, তখন সর্বমোট ৫৩৫ টি ভোটের মধ্যে হ্যাঁ ভোট পড়েছিলো মাত্র ১টি। অন্য কেউ হলে হয়তো বা ভেঙে পড়তো। কিন্তু লিজির চিন্তার গড়নটাই অন্যরকম। তিনি ভেঙে পড়বেন কী; উল্টো মহা খুশি হয়েছেন অন্তত একজন তার সাথে আছে জেনে! এই মেয়েকে পরাভূত করবে কার সাধ্যি! ইতিমধ্যে দুটো নাতিদীর্ঘ বইও লিখেছেন। Lizzie Beautiful: The Lizzie Velásquez Story এবং Choosing Happiness নামে।
“মাঝেমধ্যে অকারণেই আমার মন খারাপ হয়। কোন এক বৃষ্টির দিনে কিছুই ভালো লাগে না। সব অসহ্য ঠেকে। তখন সবকিছু বন্ধ রেখে প্রিয় শিল্পী আডেলের গান শুনি। নিয়ম ভেঙে জাঙ্ক ফুড খাই। ভাই-বোন, বন্ধুদের সাথে “দুঃখ পার্টি” করি। প্রেরণার অভাব, আমার অন্তত হয় না। আমি সেসব সৌভাগ্যবানদের একজন, যারা জীবনের আলোয় উদ্ভাসিত। “

প্রতিদিন নতুন সূর্য ওঠে, এবং আলোয় প্লাবিত করে চারিপাশ। সেই আলোয় প্লাবিত হয়ে ২৭ বছর বয়েসী তরুণী লিজি ভুলে যান সমস্ত ব্যথা-বেদনা, অপ্রাপ্তি এবং অশুভের কথা। নতুন ভাবে এগিয়ে যাবার শক্তি অর্জন করেন। তাকে চলতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে অনেক দূরে। থেমে থাকলে চলবে না। কারণ তিনি থেমে থাকলে আরো অনেকেই থেমে যাবে। সামষ্টিক শক্তিতে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যায় স্বপ্নালু এবং প্রাজ্ঞ এক প্রাণ। লিজি ভেলাসকুয়েজ, একটি প্রেরণার নাম।

মন্তব্য ৬২ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৬২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৫২

অরুনি মায়া অনু বলেছেন: শেষ ভাল যার সব ভাল তার। লিজির শেষ পরিণতি ভাল হয়েছে এটাই শান্তির কথা। ঐ যে কথায় বলেনা রাখে আল্লাহ্‌ মারে কে। লিজির সাথেও ঈশ্বরের সাহায্য ছিল, তাই সে উঠে দাঁড়িয়েছে কষ্টময় পরিস্থিতি এড়িয়ে। সুন্দর উপস্থাপনে বুঝিয়ে দিয়েছেন তা।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৫৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ অরুনি। শুভকামনা রইলো।

২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:৪৬

কবি এবং হিমু বলেছেন: অনেক ভাল লাগলো পোস্ট টা পড়ে।সবাই যদি এমন করে দাড়ানোর সাহস দেখাতো তাহলে সারা বিশ্বে আত্মহত্যার পরিমান টা অনেক কমে যেত।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: এমন মানুষেরাই সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখে।

শুভেচ্ছা।

৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:৪৪

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: হাজার সমস্যা নিয়ে লক্ষ লক্ষ লিজি আছে আমাদের চারপাশে!:)
তাদের জন্যই সত্যিই লিজি হবে এক অনুপ্রেরণার নাম!:)


দারুন পোস্ট হামা ভাই!:)
ভালোলাগা+++

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভেচ্ছা বিলিয়ার রহমান। ভালো থাকবেন।

৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫৮

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
লিজির কথা প্রথমে শুনেছিলাম কোন একটা ফ্রেন্ডের কাছে। ডকুমেন্টারিটা যখন আসলো তখন। অবশ্য অতটা জানতে পারিনি।

তাকে দেখে আমার সত্যি বলতে একটুও অস্বাভাবিক মনে হয়নি। সে কিন্তু স্বাভাবিক সময়ের থেকে অনেক আগেই জন্মগ্রহণ করেছিল। মায়ের গর্ভে পূর্ণাঙ্গ বিকাশটা হয়নি তার।

আমার আসলেই খারাপ লাগে - যখন মানুষ কোন সেন্স কাজে লাগিয়েই অন্যের অসম্পূর্ণতা নিয়ে কটাক্ষ করে। আগে তো জানুক, তারপর না হয় বুলিয়িং করুক যত ইচ্ছা। পৃথিবীর সর্বত্রই এমন বুলিয়িং করা মানুষ আছে।

লিজি সত্যিই এক অনুপ্রেরণা। এত কুৎসিত মন্তব্য শোনার পরও সে পিছিয়ে পড়েনি। স্পৃহা আছে বলতেই হয়। স্যালুট।

হামাবস, আপনের নতুন ধারার লেখা ভাল লাগতেছে। নিকেরটাও, লিজিরটাও।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: একটা বিশেষ প্রজেক্টের জন্যে নিক আর লিজির লেখা দুটোতে হাত দিয়েছিলাম পরে সেটা বাতিল হয়ে যাওয়াতে আর লেখা হয় নি অন্যদের নিয়ে। একটা লিস্ট করেছিলাম এমন ব্যক্তিদের। ভাবছি আরো লিখবো এমন বিষয় নিয়ে।

থ্যাংকস রক্তিম।

৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৬

সুমন কর বলেছেন: কেউ একজন তার পক্ষে কথা বললো না! এত অবিচার আর অনাদর এই পৃথিবীতে! -- নির্মম সত্য।

তাঁর দেয়া অমূল্য পরামর্শগুলো আসলেই, অমূল্য। চমৎকার পোস্ট।

লিজি ভেলাসকুয়েজ, একটি প্রেরণার নাম। -- এ প্রেরণায় এগিয়ে যাক বাকিরা।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভেচ্ছা সুমন। ভালো থাকবেন।

৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:১৭

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এই প্রবণতা আমাদের মধ্যে দেখা যায়। কারো অক্ষমতাকে কটাক্ষ করা।

অগণিতের জন্য এক দারুণ অনুপ্রেরণার কাজ করবে লিজি।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: লিজিরা যুগে যুগে আসে বলেই মানব জাতি টিকে থাকে।

শুভেচ্ছা রাজপুত্র।

৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:২৬

ক্লে ডল বলেছেন: এ স্রোতের বিপরীতে সাঁতরানোর এক অসাধারণ সাহসী গল্প! হাজার লিজি অনুপ্রেরণা পাবে এর থেকে!

কিন্তু দুঃখ! এমন ডুবে যেতে যেতে বেচে উঠার, আলোকিত হওয়ার কাহিনী খুব বিরল! :(

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: এই অসাধারণ ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প আমাদের প্রতিনিয়ত সাহস যোগাবে।

শুভ সন্ধ্যা ক্লে ডল।

৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৩৫

জেন রসি বলেছেন: সব মানুষই তার নিজের মত করে সুন্দর এবং একই সাথে অসুন্দর।

সুন্দর পোস্ট। :)

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৫৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: থ্যাংকস রসি।

৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৪৫

পুলহ বলেছেন: ফেসবুকে কিছুটা পড়েছিলাম উনার সম্পর্কে, আজ আরেকটু নিবিড়ভাবে জানলাম।
উনাকে নিয়ে বলার কিছু নাই, তবে এই পোস্ট নিয়ে একটা অবজার্ভেশন শেয়ার করি। আমার মনে হয়- পোস্টের সাথে যুক্ত লিজির ছবিটা পোস্ট পড়ার আগে একবার এবং পড়ার পর আরেকবার দেখা উচিত। পার্থক্যটা মনযোগী পাঠক মাত্রই টের পাবেন।
শুভকামনা হাসান ভাই।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ পুলহ।

১০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:০৩

নীলপরি বলেছেন: একটা টিভি শো তে এরকমই আরেকজন মেয়ের কথা জেনেছিলাম । এখন নামটা মনে পড়ছে না ।

আপনার এই লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:০৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ নীলপরি।

শুভরাত্রি।

১১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৩০

মেহেদী রবিন বলেছেন: লিজিরা সহানুভুতি পায়। সত্যিকার ভালোবাসা কতটুকু পায় সে লিজিই জানে। ভালোবাসা কোনটা আর ভালোবাসার অভিনয় কোনটা লিজিরা ধরতে পারে। যাই হোক, লিজির জন্যে শুভকামনা।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: লিজিরা ভালোবাসা অর্জন করে নেয়।

শুভ সকাল রবিন।

১২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯

বাঘ মামা বলেছেন: বিষয়ের উপর একদম মান সম্মত উপস্থাপনা

পর পর আপনার একদম ভিন্ন ধরণের দুটো পোষ্ট আমার খুব ভালো লেগেছে, যেখানে জীবন আছে,জানার আছে, আছে শেখার বোঝার।
এমন বিষয় গুলো আমাদের সুস্থ্য মানুষের মধ্যে কৃতজ্ঞতা বাড়ায়, মন নরম কোমল করে তোলে।

লিজির জন্য ভালোবাসা

শুভ কামনা সব সময় হাসান মাহবুব

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:০৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আমার নতুন ধারার লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত থাকার জন্যে। শুভেচ্ছা রইলো।

১৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৩১

লোকনাথ ধর বলেছেন: ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট -এর জন্য! ডকুমেন্টারিটা দেখা হয় নি, আজই দেখবো।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:০৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ লোকনাথ ধর। শুভেচ্ছা রইলো।

১৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩

কালীদাস বলেছেন: হাসান ভাই কেমন আছেন? ইনসমনিয়াকদের বাকিদের খবর কি?
ভাল পোস্ট দিয়েছেন; এক ঝলকে আপনার কাছাকাছই সময়ের বেশ কিছু পোস্টের টাইটেলে মনে হল অনেক আগের মত অনেক ডাইভার্স ফিল্ডে লিখছেন এখন। পড়ব ধীরে ধীরে।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: আরে! সারপ্রাইজড হলাম আপনাকে দেখে। ইনসমনিয়াকরা সবাই গভীর নিদ্রায় ব্যস্ত |-)

১৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৫

রক বেনন বলেছেন: ভাগ্য ভালো লিজি বাংলাদেশে জন্মান নি। তাহলে উনাকে সারাজীবন ভিক্ষুক হিসেবে কাটাতে হতো।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: মানুষ তার মেধা এবং সদিচ্ছা দিয়ে সব সম্ভব করতে পারে। লিজিকেও কিন্তু কম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় নি। কিন্তু তার মনের জোর ছিলো। সে হাল ছেড়ে দেয় নি। পজিটিভ মানুষদের জয় সর্বত্র।

১৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০০

কালীদাস বলেছেন: হা হা, রেগুলার থাকলে কি আর সারপ্রাইজড হতেন! অনেক, অনেকদিন পরপর ফ্রি টাইম পাই আসার জন্য। এবার আসার পরে দেখলাম বাধ্যতামূলক পাসওয়ার্ড চেন্জ। আমার লাস্ট পোস্টে বেশ কিছু মুছে ফেলা কমেন্টের চিন্হও দেখলাম অদ্ভুত কিছু নিকের।

নতুন বই লিখছেন নাকি সামনের মেলার জন্য? উপন্যাস নাকি ব্লগের কিছু?

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: একটা গল্পগ্রন্থ বের হবে। নতুন এবং পুরাতন মিলেই। বইমেলার আগেই বের হবে আশা করি।

১৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:



লিজি নিজকে প্রতিস্ঠিত করেছে, সে জয়ী হয়েছে, এটাই বড় কথা।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:০৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, অবশ্যই।

ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই।

১৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৫৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাসান মাহবুব ,



জীবনের আলোয় উদ্ভাসিত অথচ যার চারদিকে শুধু অন্ধকার, তেমন একটি অসাধারণ মেয়ের ফিরে আসার কাহিনী।

আপনার এমন প্রেরণাদায়ী প্রচেষ্টা অব্যাহত থাক ।

হে মানুষের ঈশ্বর ; জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত করে দিও মানুষের ...................

( লিজি ভেলাসকুয়েজ ও তার বিরল রোগটি সম্পর্কে কোথায় যেন পড়েছিলুম আগে )

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:২৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, পড়তেই পারেন। তাকে নিয়ে বাংলা ভাষায় কিছু লেখালেখি হয়েছিলো। তবে আমারটাই সবচেয়ে বড় সম্ভবত।

শুভরাত্রি জীএস ভাই।

১৯| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৫

আলোরিকা বলেছেন: " লিজি ভেলাসকুয়েজ, একটি প্রেরণার নাম " - কি বিচিত্র জীবন ! যে সৌন্দরজ্যে ( বানান টা ঠিক ভাবে লিখতে পারছি না :( ) তার বিন্দু মাত্র কৃতিত্ব নেই তা নিয়ে বড়াই করার মত কুৎসিত যে আর কিছু নেই পৃথিবীতে তা যে কেন গাড়ল রা বোঝে না এ আর এক বিস্ময় ! কি যে সুন্দর এই লিজি ----আপনার লেখা পড়ে চোখে পানি চলে এসেছে ---নিজেকে একটা কীট ( সুন্দর কীট! ) মনে হচ্ছে। কি চমৎকার করেই না উপস্থাপন করছেন অসাধারণ সব মানুষদের । এটা একটা চমৎকার সিরিজ হতে পারে ভাইয়া । প্রিয়তে রাখছি । পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় ----অনেক অনেক শুভ কামনা :)

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: আলো আসছে, আলো দিচ্ছি, এ এক সুন্দর অনুভূতি আলোরিকা।

ভালো থাকবেন।

২০| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৪২

ইমরান নিলয় বলেছেন: কিন্তু সবাই লিজি হতে পারে না। অনেকেই এইসব কটুকথার তোড়ে হারিয়ে যায়।

এভাবেই ফিরে আসুক সব লিজিরা।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ ইমরান। শুভেচ্ছা রইলো।

২১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:০০

আমি মাধবীলতা বলেছেন: লিজির সৌভাগ্য তার পাশে ছিল বাবা মা , পরিবার , বন্ধুরা...যারা প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করেছে...মনোবল জুগিয়েছে...আজকের লিজি হবার জন্য !!!

"ভালোবাসার স্পর্শে সতেজ হয়ে ওঠে মানুষের মনভূমি "- এরচেয়ে সত্যি আর কী হতে পারে !!

খুব ভালো লাগলো পোস্টটি !! প্রিয়তে নিলাম :)

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মাধবীলতা।

শুভসন্ধ্যা।

২২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:২২

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: লিজিদের জয় হোক । প্রতিকুলতা যে দেখেনি , তার পৃথিবী দেখা হয়নি - একথা বিশ্বাস করি ।
পোষ্টে ভাল লাগা রইল ।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:০৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভেচ্ছা মাহমুদ। ভালো থেকো।

২৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:২৫

শবদাহ বলেছেন: সুন্দর বর্ণনা করেছেন।
লিজির জীবনী সম্পর্কে জানার সুযোগ ও আগ্রহ তৈরি করে দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ শবদাহ। ভালো কাটুক আপনার দিন।

২৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৭

আনু মোল্লাহ বলেছেন: লিজি সম্পর্কে আগে জানতাম না। ইউটিউব এর মন্তব্যগগুলো পড়ে আমাদের সভ্য মুখোশের কদর্যতা কত বিভতস হতে পারে তা বুঝতে পারলাম। যাইহোক লিজি প্রেরণারর উতস।
লিজি ভাল থাকুক সব সময়।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: লিজি ভালো থাকবে। অবশ্যই ভালো থাকবে।

শুভেচ্ছা আনু মোল্লাহ।

২৫| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৫

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: ভালো লিখেছেন। স্কুলের সিলেবাসে অনেক ফালতু জিনিষ না পড়িয়ে এই সব মোটিভেশনাল রিয়েল লাইফ স্টোরি পড়ানো উচিত।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার একটি প্রস্তাব। আসলেই এমনটি করা উচিত।

ধন্যবাদ সাপুড়ে।

২৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩

জোলারোভিচপইজোলারোভিচ বলেছেন: বিশ্বাস করুন প্রথম চারটে প্যারা পড়ে কেদে দিয়েছি। আসলেই এই লিজিগুলোই সত্যকার যোদ্ধা। ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটা শোনানোর জন্য।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:১১

হাসান মাহবুব বলেছেন: সংবেদনশীল মানুষের জন্যে লিজি এক রুপকথার জাদুকর।

অনেক ধন্যবাদ।

২৭| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৬

জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: লিজি ভেলাসকুয়েজ একটি প্রেরনা

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:০৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ অবশ্যই। অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্যে।

২৮| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:২৮

ঞ্চঁঞ্চঁঞ্চঁ বলেছেন: লিজি ভেলাসকুয়েজ সম্পর্কে ফেসবুকে কিছু পড়েছিলাম, এখন বিস্তারিত জানলাম! কী আশ্চর্য শক্তি ধরে মানুষ! আমার দেশের কালো মেয়েরা, যারা তথাকথিত সৌন্দর্যের বিচারে রূপসী বিবেচিত হয় না বলে হীনমন্যতায় ভোগে, তাদের যদি বলতে পারতাম লিজি ভেলাসকুয়েজ এর কথা! আর আমরা মানুষেরা যদি আরেকটু মানবিক হতে পারতাম! লিজি ভেলাসকুয়েজ এর জন্য ভালোবাসা! তাঁর কথা আমাদেরকে বলার জন্য ভালোবাসা আপনাকেও!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:০৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: "তাদের যদি বলতে পারতাম লিজি ভেলাসকুয়েজ এর কথা!"

বলুন না! কালো মেয়ে বা 'অসুন্দর' মেয়ে কেন, প্রতিটি মানুষেরই জানা উচিত লিজির এই অসামান্য কাহিনী।

ভালো থাকুন।

২৯| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৬

ANIKAT KAMAL বলেছেন: এ‌কি লেখা না‌কি যাদুর পরশ বিমুগ্ধ হ‌য়ে অাপনার মা‌ঝে হা‌রি‌য়ে গেলাম

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ! স্বাগতম আমার ব্লগে।

৩০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৪৫

জুল ভার্ন বলেছেন: লিজ্জিকে নিয়ে চমতকার লেখায় প্লাস।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ জুল ভার্ন ভাই।

৩১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৫৮

ইসিয়াক বলেছেন: লিজি এক অনুপ্রেরণার নাম।
চমৎকার পোস্ট।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ ইসিয়াক!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.