নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুর!

বিকট

হাসান মাহবুব

আমার অপদার্থতাকে মাহাত্ম্য ভেবোনা...

হাসান মাহবুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাখিরাজ্য

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬


তুষি কাঁদছে। তুষি, আমার একমাত্র সন্তান। ও কাঁদলে আমার বড় খারাপ লাগে। আমার এই ছন্নছাড়া জীবন তুষিবিহীন, অবিশ্বাস্য! আমার ভালোবাসা, ভাবনা, আশঙ্কা, ভয়, পরিকল্পনা সব তুষিকে ঘিরেই আবর্তিত। । এখন ওর বয়স তিন। গত তিন বছরে আমাকে কম সংগ্রাম করতে হয় নি জীবনের সাথে। ওকে জন্ম দিতে গিয়ে ওর মা মারা গেলো। ওকে ডে-কেয়ার সেন্টারে রেখে অফিসে যেতে হত । সারাক্ষণ দুশ্চিন্তা হত, ওর ঠিকমত যত্ন হচ্ছে তো? ও কাঁদছে না তো? ওর কি বাবার কথা মনে পড়ছে? যান্ত্রিক গর্দভের মত কঠোর পরিশ্রম করে টাকা জমাতাম । সবরকম বিলাসব্যাসন, সৌখিনতা বাদ দিয়েছিলাম। রিকশায় চড়া ভুলে গিয়েছিলাম। হাঁটতাম, প্রচুর হাঁটতাম। ধূমপান করা বাদ দিয়েছিলাম। তুশি, এই ছোট্ট বয়সেই কী মায়ায় ভরা ওর বুক! আমার জ্বর হয়েছিলো একবার। ওর তখন আড়াই বছর বয়স। শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছিলাম । আর ও আমার কাছে বসে আমাকে আদর করে, চুমু দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলছিলো "আল্লাহ জ্বর ভালো করে দিবে বাবা"। ওর সাথে একটা খেলা খেলতাম আমি, ডাক্তার-ডাক্তার খেলা। সারাদিন দস্যিপনা করে কোথাও না কোথাও ব্যথা পেতোই সে। আর আমি ঘরে ফিরে ওর সেসব জায়গায় মিছেমিছি এ্যানেস্থিসিয়া, ইনজেকশন আর ঔষধ দিয়ে ভালো করে দিতাম!
এবার ওর পালা! আমার চিকিৎসা করে জ্বর ভালো করে দিয়ে খুশিতে 'ইয়েয়েয়েয়ে!' করে উঠলো। জ্বরের মধ্যে ঘোরাচ্ছন্ন অবস্থায়ও বড় ভালো লেগেছিলো আমার তখন।
তুষি কাঁদলে খুব অসহায় লাগে আমার। ও সাধারণত কাঁদে না। কিন্তু যখন কাঁদে, ওর ছোট্ট বুক থেকে ডুকড়ে ডুকড়ে এক অদ্ভুত বিষণ্ণ হাহাকারধ্বনি আমাকে উদভ্রান্ত করে দেয়। তুষি ভালো নেই। ওর ঠোঁটে ঘা, গায়ে জ্বর। ভালো ভাবে খেতে পারছে না কিছুই। এই সময়টায় সর্বক্ষণ ওর পাশে থাকাটা খুব জরুরী ছিলো। সৌভাগ্যবশত এখন ধর্মীয় উৎসব এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে প্রায় এক সপ্তাহের অবকাশ মিলেছে। এই সময়ের পুরোটাই আমি তুষির পেছনে ব্যয় করবো। আপাতত বাসায়। ওর শরীরটা পুরোপুরি ভালো হলে ওয়ান্ডারল্যান্ড এবং ফ্যান্টাসি কিংডমে বেড়াতে যাবো। অনেকদিন ধরেই ও আবদার করছে।

-কাঁদছো কেনো মা? কী হয়েছে তোমার?
-বাবা! বাবা!
এই হয়েছে ওর এক নতুন স্বভাব। যখন ওর ব্যথাটা বাড়ে, কাঁদার সময় সে কিছু না বলে শুধু "বাবা! বাবা!" বলে চিৎকার করতে থাকে। তখন ওকে কোলে নিয়ে গল্প শুনিয়ে ভুলিয়ে রাখতে হয়। বারান্দায় নিয়ে গিয়ে ওকে বিভিন্ন রকম পাখি দেখাই। পাখিদের গল্প শুনতে ও খুব পছন্দ করে। ওর আরেকটা নাম আছে আমার দেয়া। দোয়েল পাখি। বারান্দাটা সুন্দর। এই এলাকাটায় সবুজ বৃক্ষের আধিক্য। ভালো লাগে।
-তুষি, ঐ দেখো একটা পাখি। বলো তো এটা কী পাখি?
-দোয়েল পাখি!
-হ্যাঁ হয়েছে। গুড গার্ল!
-আর কী পাখি আছে বাবা?
-ঐ যে দেখো, একটা চড়ুই পাখি।
-চড়ুই পাখি কী করে?
-চড়ুই পাখি বাসা বানায়। ওরা ঘাস-লতাপাতা নিয়ে গাছের মধ্যে ওদের বাসা বানায়। ঐ দেখো বাবা, একটা কাক! তুমি কি কাক পছন্দ কর?
-না। কাক পচা!
-কেন বাবা?
-কাক একবার আমার হাত থেকে চকলেট নিয়ে গিয়েছিলো। ঐটা কী পাখি বাবা?
-ঐটা...ঐটা হল শালিক পাখি।
-শালিক পাখি কি ভালো?
-হ্যাঁ বাবা। শালিক পাখি খুব ভালো।
-শালিক পাখি কী করে?
-শালিক পাখি তুষির জন্যে মজাদা...র চকলেট নিয়ে আসে। তারপর আমাকে দেয়। আমি ওটা তোমাকে দিয়ে দেই।
-শালিক পাখি আমাকে চেনে?
-চিনবে না কেনো? তোমাকে সব পাখি চেনে। শালিক, ফিঙে, পায়রা, চড়ুই, বাবুই, মাছরাঙা সবাই তোমাকে চেনে।
-ওরা আমার কথা কী বলে?
-ওরা বলে যে তুষির মত লক্ষ্ণী মেয়ে আর হয় না। তুষিকে নিয়ে ওরা পাখিরাজ্যে ঘুরতে যাবে।
-পাখিরাজ্য কোথায় বাবা?
-পাখিরাজ্য? সেটা অনে...ক দূরে, অনে...ক ওপরে, আকাশে।
-কিন্তু অত ওপরে আমি উঠবো কী করে বাবা? আমার তো পাখা নেই!
-পাখা নেই তাতে কী হয়েছে? ওরা তোমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। আর তুমি যদি খুব ভালো হয়ে চল তাহলে তোমাকে পাখা উপহারও দিতে পারে ওরা। তখন তুমি নিজে নিজেই উড়ে যেতে পারবো।
-বাবা!
আবারও ওর কণ্ঠ কাঁদোকাঁদো হয়ে যায়।
-কী হয়েছে মা?
উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করি আমি।
-ব্যথা! খুব ব্যথা!
কী যে করি! দিশেহারা বোধ করি আমি। পাখি দেখিয়েও কাজ হবে না এখন। ওকে কোলে করে হাঁটতে হবে অনেক ক্ষণ। ক্লান্তি এখানে পাপ।

রাতে ঘুমোনোর সময় গল্প না শুনলে তুষির চলবে না। কতরকম গল্প ওকে শুনিয়েছি! স্কুলের গল্প, কার্টুনের গল্প, রাজকন্যার গল্প, তারাদের গল্প, আর ওর সবচেয়ে প্রিয়; পাখিদের গল্প তো রয়েছেই! প্রতিবারই গল্প শোনাবার আগে শুরুটা একইরকম হয়। সেটা এমন,
-বাবা তুমি আমার কী পাখি?
-দোয়েল পাখি!
-দোয়েল পাখিরা কোথায় থাকে?
-পাখিরাজ্যে থাকে।
-পাখিরাজ্যে আর কী কী পাখি থাকে?
-উমম... চড়ুই পাখি, বাবুই পাখি, ফিঙে পাখি...
প্রশ্নোত্তর পালা শেষ করে গল্প বলা শুরু করি।
-জানো মা, সেদিন কী হয়েছে? আমি পার্কটার ভেতর দিয়ে হেঁটে হেঁটে আসছিলাম, তখন দেখি যে অনেক পাখি উড়ছে। আমাকে দেখে তারা থেমে গেলো। ওরা আমার চারিপাশে ঘুরে ঘুরে উড়তে লাগলো। একটা চড়ুই পাখি আমাকে জিজ্ঞেস করলো, "তুষি কোথায়?"। আমি বললাম, তুষি তো এখন ডে কেয়ারে। ওরা সে কথা শুনে খুব রেগে গেলো। বললো যে, কেন আমি ওকে ডে কেয়ারে রেখে আসি, কেন পাখিরাজ্যে নিয়ে যাই না! আমি বললাম যে পাখিরাজ্য তো সেই মেঘেদের দেশে, অনেক ওপরে, আমি কীভাবে ওকে নিয়ে যাবো! শুনে ওরা বললো যে একদিন ওরা এসে ঠিকই তোমাকে পাখিরাজ্যে নিয়ে যাবে।
-কবে নিয়ে যাবে বাবা?
ঘুমজড়িত কণ্ঠে ওর জিজ্ঞাসা।
-হয়তো বা আজকেই নিয়ে যাবে। তুমি ঘুমিয়ে পড় এখন। স্বপ্নে দেখবে যে অনেক পাখি এসে তোমার সাথে খেলছে, দুষ্টামি করছে, তোমাকে নিয়ে উড়ছে।
-ঠিক আছে বাবা। গুডনাইট!
-গুডনাইট মা।

আমার ঘুম আসে না। এপাশ ওপাশ করি। বড্ড অস্থিরতা মনের মাঝে। হঠাৎ করে মেয়েটার শরীর এমন খারাপ হয়ে গেলো! রাতের বেলা মাঝেমাঝেই সে ব্যথায় চিৎকার করে ওঠে, কাঁদে। খাবারে অরুচি। অনেক চেষ্টা করেও খাওয়াতে পারি না। দুর্বল হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। পাখিদের গল্প শুনিয়ে আর কত প্রবোধ দেয়া যায়? ঔষধ খেতেও তার চরম অনীহা। এক বিমর্ষ, টেন্সড আধোঘুমের অস্বস্তিকর অনুভূতি ঘিরে থাকে সারা রাত।

শেষরাতের দিকে আমার তন্দ্রামত এলো । কিন্তু একটা খুব বাজে স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে গেলো। বারান্দায় কোথাও কোন পাখি নেই। দূর থেকে শোনা যাচ্ছে দোয়েল, ময়না,টিয়া,ফিঙে,ঘুঘু, বাবুই, চড়ুই পাখিদের আর্তচিৎকার। আর তাদের জায়গা দখল করে সামনের বিস্তৃত সবুজ মাঠ জুড়ে আছে শকুনের পাল। তারা কুতকুতে চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আসছে। অ নেক ওপরে একটা চিল উড়ছে। তার তীক্ষ্ণ ডাক শোনা যাচ্ছে একটু পরপর। তুষি ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে শকুনের পালের দিকে। শকুনগুলো ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে। তুষি জোরে জাপটে ধরলো আমাকে। আমি ওকে অভয় দেয়ার চেষ্টা করলাম, "ওসব কিছু না মা। ভয় পেও না। ওগুলোও তো পাখি। বড় পাখি"। তুষি চিৎকার করতে লাগলো, "পচা পাখি যাও! যাও! আমার বাবা কিন্তু তোমাদের বকা দিবে। যাও!” শকুনের দল এগিয়ে আসতে থাকে। চিলপাখিরা আকাশ থেকে দ্রুতবেগে নেমে আসে আমাদের চোখ লক্ষ্য করে। ঠিক তখন স্বপ্নটা ভেঙে যায়। আমি ঘেমে একদম নেয়ে গেছি। তুষিকে জড়িয়ে ধরে ওকে চুমু দেই। কী নিশ্চিন্ত নির্ভাবনায় ঘুমুচ্ছে আমার মেয়েটা! ওর দিকে অপলক তাকিয়ে থেকে আমার দুঃস্বপ্নের ঘোর মিইয়ে যেতে থাকে।

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় এবং বাজে স্বপ্নটা আবার নতুন করে খোঁচাখুঁচি শুরু করায় দিনটার সূচনা খুব বাজে হলো। ঘুমিয়েছিলাম শেষরাতে, ঘুম ভেঙে যায় সকাল আটটায়। তুষি এখনও ঘুমাচ্ছে। খুব ইচ্ছে করছে ওকে জাগিয়ে গল্প করতে। থাক। বেচারা অনেকদিন পর একটা গভীর ঘুম দিয়েছে। এই কটা দিন ওর ঘুম হতো ভেঙে ভেঙে, ব্যথায় জেগে উঠে উঠে। ওর শরীর ভালো হয়ে যাচ্ছে ভেবে আমি উৎফুল্ল বোধ করি। তুষির ঘুম ভাঙে ৯টার দিকে। আমি তখন ডাইনিং রুমে নাস্তা সারছি। ঘুম ভেঙেই ও আমাকে খুঁজছে,
-বাবা, বাবা!
প্রসন্ন মনে আমি ওর কাছে যাই।
-ঘুম ভাঙলো, মা?
-হু।
-তুমি কী দিয়ে নাস্তা করবা?
-কো কো ক্রাঞ্চ খাবো বাবা।
-আচ্ছা, চলো তোমাকে দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিই, তারপর নাস্তা খাবে।
-চলো।
ওকে দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিতে গিয়ে আমার মনে হল কো কো ক্রাঞ্চ তো শেষ হয়ে গিয়েছে। আশেপাশের দোকানগুলোতে কি পাওয়া যাবে? বাসায় অবশ্য পাউরুটি আর কলা আছে। তুষিকে যদি বলি যে কো কো ক্রাঞ্চ নেই, পাউরুটি আর কলা দিয়ে নাস্তা করতে হবে, সে নির্দ্বিধায় তা মেনে নেবে। কিন্তু আমার মনের ভেতর খচখচ করবে, ওর একটা সামান্য ইচ্ছা পূরণ করতে না পারলে আমি কেমন বাবা! তাই ওর দাঁত ব্রাশ করা শেষ হলে টিভিতে কার্টুন চ্যানেল ছেড়ে দিয়ে ওকে দেখতে বসিয়ে আমি দোকানে গেলাম কো কো ক্রাঞ্চ কিনতে।

বাসা থেকে বের হবার পর কেমন যেন অস্বস্তি লাগতে শুরু করলো। তুষিকে এভাবে একা বাসায় রেখে আসাটা কি ঠিক হলো? যদিও তালা মেরে এসেছি, তারপরেও, যদি ভয়ানক শকুন পাখিদের খুনে মহড়া দেখে ও ভয় পায়! কী সব যে ভাবছি! শকুন আসবে কোথা থেকে! গতকালের স্বপ্নটা বেশ ভালোই প্রভাব ফেলেছে আমার মনে। এদিকে এখানকার দোকানপাটগুলো এখনও বেশিরভাগই খোলে নি, যেগুলো খুলেছে সেগুলোতে কো কো ক্রাঞ্চ নেই। পাড়ায় বড় একটা দোকান আছে, তবে সেটা বেশ খানিকটা দূরে। এখান থেকে মোটামুটি মিনিট দশেকের হাঁটা পথ। নাহ, এত দেরি করা যাবে না।

অনেকদিন পর আমি রিকশায় উঠলাম।

দোকানদার আয়েশ করে পেপার পড়ছিলো। প্রথম পাতায় একটা খবরে আমার চোখ আটকে যায়। "খুলনায় ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা"। যদিও এসব ঘটনা নতুন কিছুই নয়। কিন্তু আজ আমি মানসিকভাবে জর্জরিত। মাথাটা কেমন যেন চক্কর দিয়ে উঠলো। চোখের সামনে যেন হাজার শকুন অপেক্ষারত, কখন ধেয়ে আসবে আমার দিকে! দোকানদার যখন টাকা ভাংতি করতে পাশের দোকানে গেলো তখন আমার নার্ভাস ব্রেকডাউন হবার যোগাড়! মনে মনে শকুন অথবা দোকানদার অথবা ধর্ষক টাকে বিশ্রী গালি দিলাম। এতক্ষণ লাগে নাকি টাকা ভাঙাতে? অবশেষে ভাংতি টাকা ফেরত নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম রিকশায় করে। একদিনে দুইবার রিকশায় চড়া হল। তবে সেটা নিয়ে কোনরকম আক্ষেপ কাজ করছে না। মনটা বড়ই অস্থির হয়ে আছে। এতক্ষণ তুষিকে একা একা বাসায় রেখে আসা মোটেও উচিত হয় নি। মাঝে মাঝে আমি এমন গর্দভের মত কাজ করি!

তুষি একমনে কার্টুন দেখছে।
-বাবা, ওঠো নাস্তা করে নাও। তোমার জন্যে কো কো ক্রাঞ্চ নিয়ে এসেছি।
-তুমি অনেক ভালো বাবা। আমি অনে...ক খুশি হয়েছি।

আমরা একসাথে নাস্তা করতে বসি। বেচারার অনেক ক্ষুধা পেয়েছিলো। গপগপ করে খাচ্ছে! এই কদিন তো খেতেই পারে নি কিছু। ও ভালো হয়ে উঠছে দেখে আমার মনে একটা সুবাতাসের হিল্লোল বয়ে যায়।
-বাবা, খেয়ে দেয়ে আমরা পাখি দেখতে যাবো বারান্দায়, আত্তা?
-ঠিক আছে মা। আমরা অনেক পাখি দেখবো, পাখিদের সাথে গল্প করবো।
-আমরা পাখিরাজ্যে কবে যাবো বাবা?
বাহ! চমৎকার স্মৃতিশক্তি তো আমার মেয়ের! ওর বয়সের তুলনায় শক্ত একটা শব্দ কত সুন্দর মনে রেখেছে!
-যাবো, তুমি আরেকটু বড় হও। বেশি বেশি করে ভাত খাও। তারপর আমরা দুজন মিলে পাখিরাজ্যে যাবো, কেমন?
-আ...ত্তা!

খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা বারান্দায় যাই পাখি দেখতে। কিন্ত এ কী! এত কাক কেন? নির্মানাধীন একটি ভবনের ছাদে একটা বেড়াল মরে পড়ে আছে, সেটার গন্ধেই দলবেঁধে কাকেরা চলে এসেছে।
-এত কাক কেন বাবা? কাক পচা। ওদের বকা দাও!
-এই কাক! ও...ও! যাও এখান থেকে।
কাকদের বকা দেই আমি। তাতে তো কোন লাভ হয়ই না, উল্টো হঠাৎ করে একটা কাক তীরবেগে উড়ে এসে তুষির আঙুলে ঠোকর দিয়ে যায়। এই আকস্মিক আক্রমণে আমি হতবাক হয়ে যাই। ওরা যতই কুৎসিত আর মরাখেকো হোক না কেন, এমন আক্রমণ তো করার কথা না! এদিকে তুষি কাঁদতে শুরু করেছে। ওর আঙুল কেটে গিয়েছে। আমি অক্ষম আক্রোশে ফোঁসফোঁস করতে করতে ওর ক্ষতস্থানের শুশ্রুষা করতে থাকি।

দুপুর বেলা। তুষিকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছি। মনের ভেতর ঝড় বইছে আমার। ভোরের দুঃস্বপ্ন, সকালবেলায় খবরের কাগজে দেখা শিশুধর্ষণ, আর সর্বশেষ; কাক কর্তৃক তুষির আক্রান্ত হওয়া, এসব কিছু আমাকে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ওর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমি কতখানি সক্ষম? সামান্য একটা পাখি আমার সামনে এসে ওকে ঠুকরিয়ে যায়, আমার অনুপস্থিতিতে পশুরূপী মানুষেরা ওকে খাবলে খেতে নিলে আমি কীভাবে রক্ষা করব ওকে? ওর দিকে চেয়ে চোখে জল আসে আমার। দেখতে একদম ওর মায়ের মত হয়েছে। অনেকদিন পর ওর মায়ের কথা মনে পড়লো । চলে যাবার এত তাড়া ছিলো কেনো তোমার? এখন একা একা আমি কতদিক সামলাই বলো তো? মেয়েটাকে নিয়ে যে বড্ড ভয় হয়। এই দেখো না, গত রাতের সামান্য একটা দুঃস্বপ্ন দেখেই কেমন উতলা হয়ে গেছি! আর তার ওপর আজ পাখি দেখতে গিয়ে এমন হেনস্থা। কেবল অসুখ থেকে সেরে উঠছে, এসময়ই ঠোকরটা খেলো। কোন মানে হয়! কেন তুমি পাশে থেকে নির্ভরতা যোগাচ্ছো না আমায়? কেন কাক,শকুন, পেডোফিল, ধর্ষক, অসুস্থতা এভাবে কব্জা করে নিচ্ছে আমাকে?

আজ বিকেলে তোমাকে দেখতে আসবো। তৈরি থেকো, কেমন?

বিকেলবেলা। তুষি ঘুম থেকে উঠেছে।
-ঘুম ভাংলো, মা?
-হু বাবা। বেড়াতে যাবো।
-হ্যাঁ, আজকে আমরা বেড়াতে যাবো। কোন জামাটা পরবে তুমি?
-ওই পেঙ্গুইন জামাটা।
-আচ্ছা। আজকে আমরা কোথায় যাবো বলো তো?
-শিশুমেলা?
-হু, শিশুমেলায় তো যাবোই। তার আগে অন্য একটা জায়গায় যাবো। তোমার মায়ের কাছে।
-মা! সত্যি?
আনন্দে ওর মুখ ঝলমল করে ওঠে। ওর এই আনন্দে ঝলমল মুখ দেখে বিষাদাক্রান্ত হই আমি। মা মারা গেছে, এই কঠিন সত্যটা ওকে বলবার মত নিষ্ঠুর আমি হই নি এখনও। তিন বছরের একটা বাচ্চাকে কীভাবে বলা যায় যে "তোমার মা বেঁচে নেই। সে কখনও ফিরবে না"? ওর মায়ের ছবি তোলার বাতিক ছিলো। প্রচুর ছবি জমা আছে কম্পিউটারে। তুষি ওর মাকে ভালোভাবেই চেনে চেহারায়। মাঝে মাঝে অভিযোগ করে, মা কেন আসে না? তখন বাধ্য হয়ে আমাকে এক গাদা মিথ্যে বলতে হয়। ওকে কখনও ওর মায়ের কবরে নিয়ে যাই নি। তবে সময় হয়ে এসেছে ওকে সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করানোর। ধীরে ধীরে ওকে সব বলতেই হবে একসময়। ওকে পেঙ্গুইন পোষাক পরিয়ে দিয়ে চুল আঁচরিয়ে প্রস্তুত করি মায়ের সাথে সাক্ষাৎকারের জন্যে!

-এই যে, এইখানে থাকে তোমার মা।
-মা এখানে থাকে! এটা তো কোন ঘর না বাবা। এখানে কীভাবে থাকে?
ও বেশ আশাহত হয়েছে বোঝা যায়।
-এই ঘাস আর গাছের নিচে একটা সুন্দর শহর আছে। ওখানে তোমার মা থাকে।
-মা একা একা থাকে?
-না, ওখানে অনেক পাখি থাকে। পাখিদের সাথে থাকে।
-ও বুঝেছি, পাখিরাজ্যে থাকে তাই না?
-এই তো বুঝেছো!
-পাখিরাজ্য থেকে মা আসে না কেনো?
-পাখিরাজ্য থেকে কেউ আসে না।
-তাহলে কী হবে বাবা! মাকে কীভাবে দেখবো?
-আমরাও পাখিরাজ্যে চলে যাবো! কত সুন্দর সুন্দর পাখি আছে আমাদের ওখানে! ওরা একদিন আমাদেরকে ঠিকঠিক নিয়ে যাবে।
বলতে গিয়ে গলাটা ধরে আসে আমার। তবে মিথ্যে কথাগুলো সুচারুভাবে বলতে পেরেছি বলে কিছুটা ঝিরঝিরে বাতাসের অস্তিত্ব অনুভব করি আমার ঘেমে ওঠা দেহের ভেতরে।

দিনটা বাজে ভাবে শুরু হলেও শেষতক বেশ ভালোই কাটলো। মায়ের সাথে 'দেখা' করে তুষি খুশি। শিশুমেলাতেও চমৎকার সময় কাটলো। বিভিন্ন রাইডে চড়ে তুষির মনটা বেশ উৎফুল্ল, শারীরিকভাবেও বেশ চাঙ্গা মনে হচ্ছে ওকে।

আজ রাতে আর কোন দুঃস্বপ্ন নয়।

"কী বললি? দুঃস্বপ্ন নয়? হেহে! তোকে তো আমরা টার্গেট করেছি। তুই যাবি কোথায়? তুই অফিসে গেলে ডে কেয়ারের মোটা গোঁফঅলা লোকটা তোর মেয়েকে বিশেষ ভাবে আদর করবে। পাখি দেখতে বারান্দায় গেলে ঝাঁকে ঝাঁকে কাক এসে খুবলে খাবে তোর মেয়ের চোখ। কিছুদিন পর শকুনেরা আসতে শুরু করবে। পাখিরাজ্যে যেতে চাস, তাই না? হেহে! শকুন কিন্তু খুব ভালো পাখি। পরিবেশবান্ধব।"

আবারও দুঃস্বপ্ন! আবারও অনিদ্রা! নাহ, আমি আসলে খুব বেশি টেনশন করছি ইদানিং। নিজেকে রিলাক্সড করার জন্যে সেলফোনে সুডোকু খেলে মনটাকে বিন্যস্ত করতে চেষ্টা করি। কিন্তু কিছুতেই কিছু মেলে না। ইচ্ছে করছে ফোনটা ছুড়ে ফেলি মেঝেতে। নাহ, নতুন ফোন কেনার মত অপব্যয় করা ঠিক হবে না। সর্বনিম্ন দামের ফোনও তুষির চার প্যাকেট দুধের সমান।

ছুটির দিন গুলো শেষ হয়ে আসছে। আর মাত্র একদিন পরেই অফিস। এরপর আবারও তুষিকে ডে কেয়ারে রাখা সারাদিন। এর কোন ভালো বিকল্প যদি পাওয়া যেতো! ঢাকায় আত্মীয়স্বজন বিশেষ নেই আমার। যারা আছে, তারাও এই উটকো ঝামেলা বহন করতে রাজি হবে না বেশিদিনের জন্যে।

তুষিকে আজ খুব উৎফুল্ল লাগছে। আমাদের দুজনের জন্যে বিশেষভাবে তৈরি খেলাগুলো খেলছি। ডাক্তার-অপারেশন খেলা। কয়েকটা বালিশ আর কোলবালিশ দিয়ে গাড়ি বানিয়ে চালানোর খেলা। এবং ওর সবচেয়ে প্রিয় যেটা, দোয়েল পাখি হয়ে ওড়ার খেলা। দুই হাত ওর পেটের দুপাশে ধরে ওপরে ওঠাই, আর বলি হাতদুটো ডানার মত করে ঝাপটাতে। এভাবে তুষি দোয়েল পাখি হয়ে ওড়ে। খেলা শেষে ওর সাধ হল বারান্দায় গিয়ে পাখি দেখতে। কিন্তু এতে আমি একদমই উৎসাহ পাচ্ছিলাম না। যদিও জানি, স্বপ্নকে পাত্তা দেয়ার কিছু নেই, তবুও এক মহা অমঙ্গলের আশঙ্কায় আমি তুষির অনুরোধ এড়িয়ে যেতে চাই।
-না, মা। ওখানে সব পচা পাখি। দেখলে না তোমাকে কাল কেমন করে ঠোকড় দিলো?
-কাক পাখি ঠোকড় দিয়েছে। ওরা পচা। তুমি ওদের মেরে দাও। চল, চল!
হায় আমি! কী ভীষণ দুর্বল আমি! তুষির কাছে ওর বাবা মহা শক্তিশালী একজন, যে কদর্য প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্বার লড়তে পারে, যার কাছে সে সবসময় থাকতে পারে সুরক্ষিত আর নিশ্চিন্ত, যে পচা পাখিদের তাড়িয়ে দিতে পারে। আমার প্রতি তার এত ভরসা এবং আকাঙ্খা, আর আমি সামান্য দুটো স্বপ্ন আর খবরের কাগজের একটি প্রতিবেদন দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তার অনুরোধ রক্ষা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি! নাহ, এটা কখনই হতে দেয়া যাবে না। আমি হাসিমুখে ওকে কোলে নিয়ে বারান্দায় যাই।

গত কয়েকদিনের অনিদ্রা এবং মানসিক চাপের ফলে হয়তো, মাথাটা খুব ঝিমঝিম করতে থাকে। মনে হচ্ছে মাথা ঘুরে পড়ে যাবো। প্রেসার বেড়ে যাচ্ছে নাকি? বাসায় একটা প্রেসার মাপার যন্ত্র আছে, কিন্তু মেপে দিবে এমন কেউ নেই। তুষিকে কোল থেকে নামিয়ে বসে পড়লাম মেঝেতে। তুষি খুব অবাক হল এই আচরণে। কানের সামনে ঘ্যানঘ্যান করতে লাগলো, ওঠো বাবা, পাখি দেখাও। মেজাজটা চড়ে যাচ্ছিলো আমার। নিজেকে অটোসাজেশন দিতে থাকলাম, "এই মেয়ে ছাড়া তোমার আর কেউ নেই। হাই প্রেসারের সাথে রাগ মিলিয়ে স্ট্রোক করে ফেললে খুব ভালো হবে?" ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে থাকি বড় বড় করে। এক হাত দিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে রাখি। এখন কিছুটা ভালো লাগছে। এখন বার্ড ওয়াচিং করাই যায়!

আমি উঠে দাঁড়াই। তুষিকে রেলিংএর গ্রিলের সাথে দাঁড় করিয়ে রাখি। তুষি উচ্ছসিত হয়ে তালি দিতে থাকে,"বাবা দেখ, কত পাখি! অনেক পাখি।!"
-হ্যাঁ, মা অনেক পাখি!। তুমি বলো তো, ঐ যে ওই লাল ঝুঁটিঅলা পাখি, ওটার নাম কী?"
-শকুন পাখি!

শকুন পাখি! এ নাম সে কোথা থেকে শিখলো। আমি কি ভুলে তাকে বলেছিলাম কখনও এর নাম? বুলবুলি পাখিকে সে শকুন বলবে কেন? আমার ভেতরটায় আবারও হাঁসফাঁস করতে থাকে। কাতর কণ্ঠে বলি তাকে,
"ভালো করে দেখে বল মা, এটা শকুন পাখি না, এটা ভালো পাখি, বল না কি পাখি!"
"উমম... এটা, এটা চিলপাখি! চিলপাখিরা অনেক ওপরে ওড়ে। ওরা এসে আমাদের চোখ গেলে দেবে তাই না বাবা?"
এসব কি বলছে ও! আমি কবে এগুলো শেখালাম ওকে? তবে কি ঘুমের মধ্যে বলে ফেলেছি? স্ট্রেস বাড়ছে, বাড়তেই থাকছে কেবল। চোখের সামনে নাগরদোলার মত ঘুরতে থাকে শিশুধর্ষণের খবর, ধর্ষকের কুৎসিত হাসি, ঘিরে ধরা শকুনের পাল, ডে কেয়ারের কুতকুতে চোখের সেই সন্দেহজনক চেহারার লোকটা... আমি তুষিকে কোলে নিয়ে বেডরুমে ঢুকে বারান্দার দরজাটা লাগিয়ে দেই। মাথার মধ্যে পাগলাঘন্টা বাজছে। মনে হচ্ছে চৌচির হয়ে যাবে আমার খুলি, গলে গলে পড়ে যাবে মগজ। লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে পাখিরাজ্যের খলেরা, বিকট শব্দ করে কারা যেন হাসছে। হাসছে বুভুক্ষু পাখি, কামুক পুরুষ। তুষি, মা... তোকে মনে হয় আমি রক্ষা করতে পারবো না। এই ভয়ংকর বিপদশঙ্কুল বিরুদ্ধ পরিবেশে আমি আর কতটুকু লড়াই করতে পারবো বল?

-বাবা! ওঠো। বাবা! ওঠো না কেন? বাবা! আমি নোসিলা খাবো। বাবা! পাখিরাজ্যে নিয়ে চল। বাবা!

ঘুমিয়ে পড়েছিলাম না কি জ্ঞান হারিয়েছিলাম বুঝতে পারছি না। সম্ভবত একটা বড় ধরণের নার্ভাস ব্রেকডাউন হয়েছিলো। তুষির ঝাঁকুনিতে আবারও চেতন জগতে ফিরে আসি। চোখ খুলে দেখি মেঝেতে বসে আছে একটা শকুন, একটা চিল, এবং একটা কাক।
-কি রে, তুই না চেয়েছিলি পাখিরাজ্যে যেতে? তার আর দরকার পড়লো না, আমরাই তোর কাছে এসে গেলাম!।
শকুনটা বললো। চিল আর কাকটা চেচাতে চেচাতে আমাদের ঘিরে পাক খেতে লাগলো।
-বাবা, দেখো, কী সুন্দর চড়ুই পাখি! আমি চড়ুই পাখি চিনি। চড়ুই পাখি ভালো।
চোখ বুঁজলাম আমি। হ্যালুসিনেসন হচ্ছে। অডিটারি এবং ভিজ্যুয়াল দুটোই একসাথে। তুষির কোলে মুখ গুঁজে আমি বলি, "মা রে, আমাকে একটা গল্প শোনা। ভালো পাখিদের গল্প। পাখিরাজ্যের গল্প।" উৎসাহ পেয়ে তুষি গল্প বলতে শুরু করে,
-এক দেশে না ছিলো একটা চড়ুই। আর এক দেশে ছিলো একটা দোয়েল পাখি। ওরা না আমাদের খুব ভালোবাসতো..."
তুষি হাসছে। তুষি, আমার একমাত্র সন্তান। ও হাসলে বড় ভালো লাগে। আমি নিত্যদিনের টেনশন, হ্যালুসিনেশন, নার্ভাস ব্রেকডাউন, প্যারানয়া ইত্যাদি থেকে বাঁচতে ওর ছোট্ট দেহটাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি, আর উপলদ্ধি করি, আমি ততটা বড় নই যতটা ভাবি নিজেকে, আর তুষি, ততটা ছোট নয় যতটা ওকে দেখি। আমি, ৩৫ বছরের এক হাইপারটেনসড, বিকারগ্রস্ত, আত্মবিশ্বাসহীন, ভীতু একজন পুরুষ প্যানিক এ্যাটাক থেকে রক্ষা পেতে আঁকড়ে ধরি আত্মজার ছোট্ট দেহটা। তুষির বুকের ভেতরের ধুক-পুকটা আমাকে আশ্বাস যোগায়, জীবন এখনও আছে বেঁচে ভীষণ ভাবেই। নিজেকে ওর কাছে সমর্পিত করে দিয়ে পরাজয় মেনে নেই।

তুষি-আমার মা, ওর আলিঙ্গন আর তত্বাবধানে নির্ভয়চিত্তে আকাশট্রাফিক ভেদ করে আমরা পাখিরাজ্যে যেতে থাকি। ভালো পাখিদের রাজ্যে।

মন্তব্য ৭০ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৭০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৮

পুলহ বলেছেন: এতো ভালো গল্প ! শেষ করার আগ পর্যন্ত আমি বুঝতে পারছিলাম না গল্প কোন দিকে যেতে পারে। তাছাড়া গল্পটাকে এক জটিল পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে সে ভাবটাকে আবার সুসঙ্গত উপায়ে শেষ করে ফেলা, ছোটগল্পের ক্ল্যাসিকাল কলেবরের মধ্যেই- অসাধারণ !

"এই ঘাস আর গাছের নিচে একটা সুন্দর শহর আছে। "-- আহারে!!
আমার ভুল না হলে পুরো গল্পে বানান ভুল ছিলো মাত্র একটা। এরকম লেখা পড়েও আরাম।
শুভকামনা হাসান ভাই

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১১

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক দিন পর ব্লগে পোস্ট দিয়ে এমন একটি কমেন্ট পেয়ে মনটি ভরে গেলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১০

সুমন কর বলেছেন: বাবা'র মন, কি আর বলবেন !!

আমি, ৩৫ বছরের এক হাইপারটেনসড, বিকারগ্রস্ত, আত্মবিশ্বাসহীন, ভীতু একজন পুরুষ প্যানিক এ্যাটাক থেকে রক্ষা পেতে আঁকড়ে ধরি আত্মজার ছোট্ট দেহটা। -- এটাই সত্য।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন। ভালো থাকবেন।

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:০৮

কালীদাস বলেছেন: চমৎকার। লেখাটার একটা পর্যায় পর্যন্ত বারবার ভয় পাচ্ছিলাম তুষির ক্যান্সার হয় কিনা। আপনার টার্ণওভারটা চমৎকার হয়েছে।

হাসান ভাই, আপনার এবছরের লেখাগুলোতে হালকা হলেও একটা পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি আপনার শুরুর দিককার লেখাগুলোর চেয়ে। পারিপার্শিকতা এবং সমাজের বিবর্তনের ছাপ দেখছি আগের ফ্যান্টাসিগুলোর ফিউশনের পাশাপাশি। আপনি সফল নিঃসন্দেহে (এটা অবশ্য বলার অপেক্ষা রাখে না অন্তত আমার কলম থেকে)।

হ্যাপি নিউ ইয়ার।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫২

হাসান মাহবুব বলেছেন: বয়স এবং সময়ের সাথে অনেক কিছুই চেঞ্জ হয়। এই পালাবদলের সহচর হয়ে কাথে থাকার জন্যে আপনাকে প্রচুর ধৈন্যা।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চমৎকার গল্প, নতুন বছরের শুভেচ্ছা নিন।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ লিটন ভাই। শুভেচ্ছা রইলো।

৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৬

ক্লে ডল বলেছেন: এই ভয়ংকর বিপদশঙ্কুল বিরুদ্ধ পরিবেশে আমি আর কতটুকু লড়াই করতে পারবো বল?
বড়ই হাহাকার!!
জানিনা সভ্যতা আর কতটা উন্নত হলে তুষির বাবাদের এই হাহাকার, ভয় আর দুশ্চিন্তা থাকবেনা!

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০০

হাসান মাহবুব বলেছেন: সভ্যতার উন্নতির সাথে মানবিক বোধ কমছে। বাড়ছে পশুবৃত্তি।

৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাসান মাহবুব ,



চমৎকার । আপনার অন্যান্য গল্পের ধাঁচ ছেড়ে চেয়ে বেশ আলাদা ছাচে ফেলেছেন ।
বছরের এই শেষ দিনটির মতোই ব্যথাতুর অথচ আসছে নতুনের ছোঁয়া লাগায় উন্মুখ ।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ জী এস ভাই। শুভ নববর্ষ।

৭| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১৬

সোহানী বলেছেন: প্রিয় মাহবুব ভাই, এতাে সুন্দর করে একজন বাবার মনের অনুভূতিকে প্রকাশ করেছেন, ঠিক যেন আমার নিজের ও মনের অনুভূতি। দীর্ঘদিন ধরে চাইল্ড এবিউজ নিয়ে কাজ করে আমি কেমন যেন তুষির বাবার মতোই সারাক্ষন ভয়ে থাকি শুধু আমার নিজের মেয়ের জন্য না আর দশটা মেয়ের জন্য বুকের ভীতর হাহাকার করে। বলবেন কেন পুরুষরা এ ছোট্র শিশু এন্জেলগুলিকে ধর্ষন করে.... ওরা কি একটিবারে ও চিন্তা করে না এটা কি করছে? ছোট্ তুলতুলে শিশুগুলোর কেমন অনুভূতি হয়? গত সাপ্তাহে চাইল্ড এবিউজ এর উপর ভারতীয় একটা ছবি দেখছিলাম কাহানি ২। মনটা খুব খারাপ হয়েগেছে।

আপনি কি জানেন এভাবে চাইল্ড রেপ রেইট কত? মারাত্বক? ভালোলাগে না এসব চিন্তা করতে.... তাইতো এখানে এসেছি শুধুমাত্র স্বার্থপরের মতো নিজের মেয়েকে এসব থেকে বাচাঁবো বলে কারন আমার এতো ছোট্ট ক্ষমতায় এদের হাত থেকে যাবতীয় শিশুদের বাচাঁতে পারবো না বলে....

ভালো থাকেন... আপনার নিজস্ব গন্ডী থেকে বেরিয়ে এ প্রথম মনে হয় ভিন্নধর্মী গল্প লিখেছেন....অসাধারন।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: সোহানী, আশে পাশে এত ঘটনা ঘটছে, না জেনে উপায় কী! আমার খুব কাছের একজন এবিউজের শিকার হয়েছিলো। মনের মানচিত্র ঝলসে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট।

ভালো থাকবেন সমস্ত ভালো লাগা নিয়ে।

৮| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৫৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: গল্পটি অনেক উপভোগ্য
অনেক সময় নিয়ে পাঠ
করতে হবে । তাই
প্রিয়তে নিয়ে গেলাম।

ইংরেজী নব বর্ষে রইল লিলি ফুলের শুভেচ্ছা।
নতুন বছরে জীবন সুন্দর ও সাফল্যময়
হোক এ কামনাই করি ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০০

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। নতুন বছর আনন্দে কাটুক।

৯| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
গল্প পড়ে ভালো লাগলো ।

ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল ভাই।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:১৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা সব সময়ের জন্যে।

১০| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২৩

বিজন রয় বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

একজন লেখক কখনোই সামাজিক দায়বদ্ধতা এড়াতে পারে না।
আশাকরি এবার তার প্রমাণ পাবো আরো বেশি।

শুভকামনা।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, চেষ্টা থাকবে।

শুভ নববর্ষ।

১১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪০

অগ্নি সারথি বলেছেন: চমৎকার হামা ভাই! আমি বরাবরই আপনার গল্পের ভক্ত। নতুন বছরের জন্য শুভকামনা রইল।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

১২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১১

আরজু পনি বলেছেন:
পুরোটা পড়া শেষ করে গল্প নিয়ে মন্তব্য করবো।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল, হাসান।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১১

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভেচ্ছা পনি আপু। ভালো থাকবেন।

১৩| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৪

অদৃশ্য বলেছেন:




হতাশা কাটলোনা হাসান ভাই... আমরা দিন দিন কি আরও ভীত হয়ে পড়ছি?... আপনার এই গল্পটা কন্যা সন্তানের পিতাদের দুর্ভাবনা বাড়াবে... অবশ্য সাবধান হতেও সাহায্য করবে... কিন্তু কথা হলো সুসময়ের জন্য আমরা কোন দিকে তাকিয়ে আছি... শয়তানদের দাপটে পার্থিব জীবন থেকে পালিয়ে আমরা শয়তানহীন অপার্থিব একটি জীবনকে পাবার প্রত্যাশায় বসে আছে... নিশ্চয় তেমন পাখিরাজ্য আছে তা না হলে আমরা সেই স্বপ্নটা দেখবো কেন?...

কিছুটা হতাশা সৃষ্টি করলেও সব মিলিয়ে লিখাটি চমৎকার... জীবনের অন্ধকার অংশ নিয়ে লিখবার সাহস আপনার আছে, আর আপনি চেষ্টাও করেন... গভীরভাবে ভাববার ক্ষমতা সম্ভবত মানুষের দিককে দিন কমে যাচ্ছে... আপনারটুকু আরও সক্রিয় হোক...

শুভকামনা...

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনি এত যতনে কমেন্ট করেন! খুব ভালো লাগে পড়তে। ভালো থাকুন অদৃশ্য, কবিতারা আপনার প্রিয় সখা হোক।

১৪| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৮

আলোরিকা বলেছেন: আলোচিত ব্লগ অংশে 'পাখিরাজ্য' শিরোনাম দেখে ভাবলাম হাসান ভাই নিশ্চই কোথাও থেকে বেড়িয়ে এসে চমৎকার সব রঙিন পাখির ছবি পোস্ট করেছেন ফুরফুরে মন নিয়ে ক্লিক করলাম -------পাখিই বটে ----- শকুনি , চিলেদের সংগে ছোট্ট মিষ্টি দোয়েলের লড়াইয়ে যখন পরাজয় মেনেই নিচ্ছিলাম তখন নতুন করে বাঁচার প্রত্যয়ের গল্পটুকু বেশ লাগলো । বেঁচে থাক আর সুন্দর হোক মিষ্টি দোয়েলের জীবন । হ্যাপি নিউ ইয়ার :)

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫০

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আলোরিকা। শুভ হোক জীবন।

১৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:


টেনসন কি সংক্রামক? শেষ পর্যন্ত গল্প শেষ করে উপহার হিসেবে স্বস্তিকে পেলাম...
ডেইজা ভু থেকে বাঁচালেন :)

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মইনুল ভাই। ভালো থাকবেন।

১৬| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: গল্প পড়তে পড়তে খুব গভীরে চলে গেছিলাম চাইঠিলাম মেয়েটার খারাপ কিছু না হোক। অনেক ভাল লাগল ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মোস্তফা সোহেল। ভালো থাকবেন।

১৭| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনি যখনি আপনার ধাঁচের বাইরে এসে লিখেছেন, আমার মনে হয়েছে অসাধারণ!
মিতিনকে নিয়ে লিখেছিলেন একবার। এখনও দাগ কেটে আছে।

এই গল্পে একমাত্র মেয়েশিশুটিকে নিয়ে একজন নিঃসঙ্গ পিতার একাকী মনস্তাত্বিক ও বাস্তব লড়াই, দুশ্চিন্তা, মমত্ববোধ, অসহায়ত্ব সব ছুঁয়ে গেল।

এরকম গল্প আরও চাই।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমিও চাই। অনেক ধন্যবাদ।

১৮| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৬

কানিজ ফাতেমা বলেছেন: আপনার লেখার অপেক্ষায় ছিলাম । বরাবরের মতই মুগ্ধপাঠ্য ।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা এবং শুভ কামনা ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ ফাতিমা। শুভসন্ধ্যা।

১৯| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৮

রাতু০১ বলেছেন: এটাই সত্য। শুভকামনা।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

২০| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫

আহা রুবন বলেছেন: গল্পের শিশুটি কে? তিন বছরের তুষি না তার বাবা? বাবার শিশুসুলভ চিন্তা-ভাবনা একটা ধন্দে ফেলে দেয়। প্রত্যেক বাবাই হয়ত অবচেতনভাবে শিশু সাজবার বাসনাটি বহন করে চলে। সুযোগ খোঁজে তার আশাটি কখন পূর্ণ হবে। পুরো গল্পে আতঙ্কে ছিলাম তুষির কোনও ক্ষতি হবে নাতো! না তেমন কিছু ঘটেনি। শেষ অংশটা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। মানুষ সে মানুষই, যত ক্ষুদ্র, শিশু, অসহায়ই হোক, একমাত্র মানুষই পারে সান্ত্বনা আর প্রেরণার উৎস হতে। হামা ভাই বছরের প্রথম দিনটায় মনে হচ্ছে মনটাকে একটু আনন্দ দিতে পেরেছি। গল্পটা না পড়লে বঞ্চিত থাকতাম। সুন্দর জীবন ও সাফল্য কামনা করি। শুভ নববর্ষ!

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার গভীর পাঠ আমাকে সত্যিই অনেক আনন্দিত করলো। ভালো থাকবেন সবসময়।

২১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫০

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: পাখিদের রাজ্যে যেমন আছে চড়ুই, দোয়েল তেমনি আছে শকুন, চিল, কাক । তবে কী একটি দোয়েল, একটি চড়ুই এই সমাজে থাকবে না ! আমার ভাবনাটা আসে এভাবে, ভালো মানুষগুলো হলো ঈগলের মতই শক্তিশালী কিন্তু সমাজে দৈরাত্ত্ব সো কল্ড চড়ুই, দোয়েলের যাদের চরিত্রের হয়েছে মৃত্যু। এদের এক নিমেসেই দমিয়ে দিতে পারে এই ঈগল শুধু তার এগিয়ে আসার সাহস এবং ইচ্ছা জরুরী।

আমাদের এই সমাজে মেয়ে সন্তানকে নিয়ে একজন অসহায় বাবা কেমন মানসিক ভাবনায় এবং দুঃচিন্তাগ্রস্থ থাকে তার একটা বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে গল্পে। তবে চিন্তার আঙ্গিকটা ভিন্নভাবে । স্পষ্টতর গল্পের থিম ও উপভোগ্য এবং যে কোন হৃদয়কে খানিকটা হলেও হেলিয়ে দেবে এই গল্পটি।

গল্পে ভাল লাগলো অনেক ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: খুব ভালো বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

২২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: গল্পটা আজ দুপুরে পড়েছি। ভালোভাবে বোঝার জন্য একটু সময় নিলাম।


উপলদ্ধি করি, আমি ততটা বড় নই যতটা ভাবি নিজেকে, আর তুষি, ততটা ছোট নয় যতটা ওকে দেখি। আমি, ৩৫ বছরের এক হাই উৎসাহ পেয়ে তুষি গল্প বলতে শুরু করে,
-এক দেশে না ছিলো একটা চড়ুই। আর এক দেশে ছিলো একটা দোয়েল পাখি। ওরা না আমাদের খুব ভালোবাসতো..."
তুষি হাসছে। তুষি, আমার একমাত্র সন্তান। ও হাসলে বড় ভালো লাগে। আমি নিত্যদিনের টেনশন, হ্যালুসিনেশন, নার্ভাস ব্রেকডাউন, প্যারানয়া ইত্যাদি থেকে বাঁচতে ওর ছোট্ট দেহটাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি, আরপারটেনসড, বিকারগ্রস্ত, আত্মবিশ্বাসহীন, ভীতু একজন পুরুষ প্যানিক এ্যাটাক থেকে রক্ষা পেতে আঁকড়ে ধরি আত্মজার ছোট্ট দেহটা। তুষির বুকের ভেতরের ধুক-পুকটা আমাকে আশ্বাস যোগায়, জীবন এখনও আছে বেঁচে ভীষণ ভাবেই। নিজেকে ওর কাছে সমর্পিত করে দিয়ে পরাজয় মেনে নেই।


অসাধারণ। পড়া না হলে একটা ভালো গল্প মিস করতাম। ধন্যবাদ হা মা ভাই।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪২

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ হেনা ভাই। শুভরাত্রি।

২৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১০

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: দারুন ফ্লো ছিলো ভাই!:)

লাইক

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৫১

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

২৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩

আরজু পনি বলেছেন:
অফটপিকে একটা মন্তব্য করতে এলাম।

ব্লগার দম্পতির সন্তানদের জন্যে আজকের বিশেষ দিনে অনেক ভালোবাসা রইল।
আমি কখনো এই বিশেষ দিনে পিচ্চিদের সাথে দেখা করার আশা করি।
এবং আমি বিশ্বাস করি দেখা হবে কোন জানুয়ারির ৩ তারিখেই।
আপনি অনেক ভালো বাবা বুঝতে পারি।
দোয়া করি সন্তানদের আদর্শ বাবা-ই হয়ে থাকুন সারাজীবন।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনি মনে রেখেছেন! অসম্ভব মনে হচ্ছে ব্যাপারটা। চোখের আড়াল মানেই মনের আড়াল নয়, এই সত্যের নতুন বোধ আমাকে আপ্লুত করলো।

অনেক ভালো থাকবেন। বইমেলায় দেখা হবে লিটল ম্যাগ চত্বরে। আপনার বইয়ের প্রথম ক্রেতা হিসেবে থাকতে চাই!

২৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪৯

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: নাম থেকেই বুচ্ছিলাম কঠিন কিছু হবে না। যথেষ্ট ভাল লাগলো গল্পের প্লট। সিম্পল শুরু, জটিলতায় ফেলে দিয়ে দারুনভাবে ফিরিয়ে নিয়ে পজিটিভ সমাপ্তি। আমার দুটা বুড়িকে নিয়ে কমবেশি সারাক্ষন এই টাইপের মনস্তাত্বিক জটিলতায় সময় পার করি। ভালো থাকবেন নিরন্তর

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: আজ সব কিছু অনেক সুন্দর সুন্দর লাগছে। মেয়েকে স্কুলে দিলাম। কী এক অনুভূতি! সময় স্বল্পতায় বেশি কিছু আপাতত লিখতে পারছি না।

শুভকামনা সব সময়ের জন্যে।

২৬| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪৮

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: হাসান ভাই, দূর্দান্ত লিখনীতে এক অসাধারণ সমাজ চিত্রের অসহায় চরিত্রটি তোলে আনতে এতটুকু কার্পন্য করেননি। আমার মনে হয় আমার জীবনে প্রথম কোন একটি লিখার আমার সমস্থ সত্তা জুড়ে জানান দিয়ে গেল আমিও একজন বাবা।
অনেক অনেক শুভকামনা সহ আপনার আরো লিখার পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা নিবেন।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: একজন বাবার মনের গহীনে নাড়া দিতে পেরেছি, এটা বিশাল এক পাওয়া। অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

২৭| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৫

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে!

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ! খুব সুন্দর একটা কথা।

২৮| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৮

তারছেড়া লিমন বলেছেন: সিরাম হৈচে..............

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধৈন্যা।

২৯| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০৫

আজীব ০০৭ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

অসাধারন।

ভালো থাকুক মানবতা, ভালো থাকুক সাবাই।

শুভকামনা রইল সবার জন্য..........।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৩০| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: এত সুন্দর করে কিভাবে লিখেন !!! এক কথায় অতি চমৎকার
গল্পের নীচের দিকে এসে আরো বেশি ভাল লেগেছে --

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১১

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৩১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:২৯

আনু মোল্লাহ বলেছেন: আপনার অতি চমৎকার গল্পটি এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলেছি। বিষয়বস্তু ও লেখনি দূর্দান্ত।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৩২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: এক কথায় ক্লাসিক!

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: তাই! অনেক ধন্যবাদ।

৩৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:০৭

শামীম সরদার নিশু বলেছেন: পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গেছি, অনেক ভালো লিখেছেন।

আমি ব্লগে নতুন, পাশে আছি, পাশে থাকবেন ।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: অবশ্যই। স্বাগতম আমার ব্লগে।

৩৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কিউট পোস্ট ।+

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৩৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪৬

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গল্পটি পড়লাম এবং কমপক্ষে ১০ মিনিট পর মন্তব্য করছি। হাত কাপছে। চরিত্রটা থেকে বেরিয়ে আসতে কষ্ট হচ্ছে এখনো। এত আবেশী গল্পও কেউ লেখে?

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: লেখে, লেখে, অনেকেই লেখে B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.