নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত একজন নাম না জানা মানুষ তার অজানা বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে একটি মর্মস্পর্শী চিঠি লিখেছিলেন। সেটার অনুবাদ করলাম। অনুবাদ করাটা জরুরী ছিলো। কারণ আমিও ভুক্তভোগী, আমি লড়ছি এখনও। আমি সাহায্য করতে চাই আপনাদের...
“আমার অবস্থাটা কখনই বলে বা লিখে বোঝানো সম্ভব না। তবুও আমি তোমাকে কিছু বলবো আজ। বলবো আমার এই যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা ক্লান্ত মনটা নিয়ে। যুদ্ধ করে টিকে থাকা গৌরবের, আবার ক্লান্তিরও। আমার ক্লান্তির কিছুটা ভাগ তুমি নেবে?
অনেকবার হয়তো শুনেছো, আমি প্যানিক ডিজঅর্ডারে ভোগা একজন মানুষ। এই অদ্ভুতুরে রোগটা আমাকে গুটিয়ে দিয়েছে অনেকটাই ভেতরে ভেতরে। আমাকে দেখে যেমন ইন্ট্রোভার্ট আর লাজুক ভাবো, আমি কিন্তু তেমন না। বাইরে যেতে আমার ভালোই লাগে। কিন্তু ঐ যে একটা ভয়! কীসের ভয়? আমি জানি না। শুধু জানি যে যেকোনো সময় আমাকে ভয়টা জেঁকে ধরতে পারে। তখন আমার কিছুই করার থাকবে না। এই বোধটা আমাকে সবসময় তাড়িয়ে বেড়ায়। সত্যিকারের আমি ঢাকা পড়ে যাই ভয়ের দেয়ালে। আমি তোমায় মায়ায়, স্নেহে ভরিয়ে দিতে পারি, জানো? কিন্তু তোমাকে দেখে আমি মাঝেমধ্যেই ভয়ংকর নার্ভাস হয়ে যাই। এটা তোমার দোষ না, তোমাদের দোষ না। কিন্তু এমনটাই হবে, এমনটাই হয়ে আসছে। তোমাদের মাঝে মিশে গিয়ে, ‘তোমাদের’ মত মজা করে আমি অনেকসময় ভুলে থাকতে পারি এই অদৃশ্য ভয়ের হুংকার। কিন্তু সবসময় এতেও কাজ হয় না। হঠাৎ করে দেখবে আমার নাক ঘামছে, দ্রুত শ্বাস পড়ছে, আমার চোখের ভেতর রাজ্যের অসহায়তা আর আতঙ্ক। হয়তো বা তোমার হাত আমার কাঁধে রাখলে আমার খুব ভালো লাগবে। আমি আবার বাস্তব পৃথিবীতে তোমাদের মত করেই বিচরণ করতে পারবো। কিন্তু তোমার বাড়িয়ে দেয়া হাতটাও আমি সবসময় ধরতে পারি না। মাই ব্যাড!
আমি জানি, খুব ভালো করেই জানি, যে ভয় আমাকে ভয় দেখিয়ে বেড়ায়, তার সত্যিকারের কোনো অস্তিত্ব নেই। কোনো কারণ নেই। আমি জানি এটা একটা বিভ্রম। কিন্তু শরীরের ভেতরের রসায়ন এত উল্টোপাল্টা হয়ে যায় তখন! আমি নিজেকে অটোসাজেশন দেই, অভয় দেই, কিচ্ছুটি হবে না। আমি খুব ভালো করেই জানি এটা সাময়িক এক অনুভূতি। তারপরেও ভয়ের তরঙ্গ এসে আমাকে একদম ভেঙেচুড়ে দিয়ে যায়। আমার প্রতিরোধ ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে মনে হয় হাল ছেড়ে দেই। দিনের পর দিন কত কিছুই তো করছি,কিন্তু কিচ্ছু বদলাচ্ছে না। আমি নিজেকে সাহায্য করার জন্যে সবকিছুই করছি। তাই দয়া করে এ কথা বলো না যে, ধৈর্য্য ধরো, ঠিক হয়ে যাবে। কে জানে, হয়তো বা হবে কোনো একদিন! সেই একদিন যে কবে আসবে!
আমার খুব বিধ্বস্ত লাগে। তোমার মতো অফুরান প্রাণশক্তি আমার নেই। কীভাবে থাকবে বলো? দিনের পর দিন ভয়ের সাথে যুঝতে যুঝতে আমি খরচ করে ফেলি আমার ভেতরের রোদ্দুর। প্যানিক ডিজ অর্ডারের বাই প্রোডাক্ট হিসেবে আসে ডিপ্রেশন। না, এটা শখের কোনো বড়লোকী ব্যাপার না। খুবই বাজে ধরণের ডিপ্রেশন। সবকিছু থেকে নিষ্কৃতি পেতে আমাকে ঘুমোতে হয় প্রচুর প্রায়ই। কাজের রুটিন ঠিকঠাক থাকে না। যেভাবে চলার কথা সেভাবে চলতে পারি না। আমার জন্যে তোমার কাজেরও অসুবিধে হয়। খুব সাধারণ কোনো কাজ করতেও দুবার ভাবি, সংশয়ে ভুগি, সময় নষ্ট করি তোমাদের। স্যরি! কী আর বলবো!
মাঝেমধ্যে তুমি হয়ে ওঠো আমার সবচেয়ে বড় ভরসা। তুমি হয়ে ওঠো আমার ত্রাণকর্তা, আমার গার্ডিয়ান এ্যাঞ্জেল। কোথাও যেতে হলে আমি তোমাকে সাথে নিতে চাই। এতে কি তুমি খুব বিরক্ত হও? বিরক্ত হলেও কিছু করার নেই। আমি তোমাকে জ্বালিয়ে যাবোই। মতিভ্রমের ভয়াল জগৎ থেকে বাস্তবের শুদ্ধ-সুন্দরে ফিরে আসতে তোমাকে না হয় একটা মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহার করলাম। বেঁচে তো থাকতে হবে, না কি! কখন কোথায় ট্রিগার অন হয়ে যায়, তারপর অনবরত গুলিবর্ষণ এই ঠুনকো দেহটায়! আর কত পারা যায় বলো!
হেন কোনো উপায় নেই, যা আমি ট্রাই করি নি। মেডিটেশন? করেছি। ইয়োগা? করেছি। আকুপাংচার করেছি, মোটিভেশনাল স্পিচ শুনেছি, আর নানারকম ঔষধ তো আছেই! ঔষধ বদলায়, আর ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় বদলে যাই আমি। আমার ব্যবহার বদলায়, মেজাজ বদলায়, মুড বদলায়, অযৌক্তিক আচরণ করি। এটুকু সয়ে নিতে পারবে না? এটা সত্যিকারের আমি না, এটা রাসায়নিকের দোষে বিষাক্ত আমি!
আমার যখন প্যানিক এ্যাটাক হয়, সেটা নিয়ে ভুলেও ঠাট্টা করো না, প্লিজ! তোমার ঠাট্টা ছাড়াই আমি যথেষ্ট খারাপ থাকি, বিশ্বাস করো, এর চেয়ে খারাপ থাকা যায় না ঐ সময়ে। প্যানিক এ্যাটাক আমার কাজ না করার অজুহাত না। প্যানিক এ্যাটাকের কারণে আমি স্পেশাল প্রিভিলেজ পেতে চাচ্ছি না। আমি তোমার ঘাড়ে চড়ে বসতে চাইছি না। আমি তোমার মধ্যে নেতিবাচক চিন্তাও জাগ্রত করতে চাচ্ছি না। আমি যদি তোমার হাত ধরতে চাই শক্ত করে, ধরতে দিও, আর একটু সাহস যুগিও। হালকা রসিকতার ছলেও করতে পারো কাজটা। এর চেয়ে বেশি কিছু তোমার কাছে চাই না, এবং এর চেয়ে ভালো কোনো কিছু তোমার করারও নেই। আমার যদি হাজারবারও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়, একই কথা বলো, একইভাবে হাত ধরে থেকো? আমি চাই স্বাধীনচেতা এবং শক্ত হতে। তোমার মতোই।
প্যানিক ডিজঅর্ডার যে কেন হয়, আর কাদের হয় কীভাবে হয়, তা বড্ড ধোঁয়াটে ব্যাপার। তবে যাদের হয়, তাদের ক্ষেত্রে একটা অনুভূতি কমন- “আমি মারা যাচ্ছি” অথবা “ভয়ানক কিছু হতে যাচ্ছে”। একদিক দিয়ে দেখলে ভালো, আমরা জীবনে অনেকবার মরে যেতে যেতে বেঁচে উঠি, ব্যাপারটা অনেকটা পুনর্জন্ম লাভ করার মত, তাই না? হাহা! এত কষ্টের মধ্যেও হাসি পেলো। প্রথমবার যখন এমন হয় তখন কোনোভাবেই বোঝা সম্ভব না এটা সত্যিকারের মৃত্যু না, এত ভয় পাবার কিছু নেই। তবে সেসময় তা বলে দেয়ার মত কেউ থাকে না কারো সাধারণত।
বেশিরভাগ সময় আমাদের দেখে অবশ্য তোমার মনে হবে শান্ত, স্বাভাবিক। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে কতবার বিস্ফোরণের ভয়ে সিঁটিয়ে যাচ্ছি, তা যদি দেখতে পেতে! এই স্বাভাবিক থাকার প্রবল ইচ্ছেটাই আমাদের জীবনের প্রধান সংগ্রাম, এটাই আমাদের চালিকাশক্তি। এই ইচ্ছেটা না থাকলে কতবার যে নার্ভাস ব্রেকডাউন হত কে জানে! এ ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, কিন্তু প্যানিক এ্যাটাক হলে পারি না নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। পারা যায় না।
এতক্ষণ তো অসুখের ঘ্যানরঘ্যানর করে তোমার মাথা ধরিয়ে দিয়েছি হয়তো। এবার কিছু মোটিভেশনাল কথাবার্তা বলি! এটার খুব চল হয়েছে আজকাল! কখনও কখনও তোমার ঘরে তোমার অনুমতি ছাড়া ঢুকে পড়াটাই আমার জন্যে বিশাল এক অর্জন! আমার সারাদিনটাই ভালো করে দেয়। আর স্বাভাবিক অবস্থায় তো আমরা আস্ত একটা প্যারেডও চালাতে পারি। সমাজে কন্ট্রিবিউট করতে পারি অন্যদের মতই। মানুষ থেকে মেশিন, সবই কন্ট্রোল করতে পারি। আমাদের এই অবদানের স্বীকৃতিটুকু দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রাখো, প্লিজ!
যুদ্ধটা চালিয়ে যাবো, তবে একা সবসময় পারি না, পারা যায় না। একটু পাশে থেকো?”
ইতি
তোমার প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত প্যারানয়েড বন্ধু
প্রথম প্রকাশ- এগিয়ে চলো ডট কম
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: না মনে হয়।
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৭
কালীদাস বলেছেন: অনেক লেখাতে মনে হয়েছে আপনি খানিকটা ডিপ্রেসনে ভোগেন, প্যানিক এটাকও হয় এটা জানতাম না। কোন কাউন্সেলিং করছেন? জিনিষটা নিয়ে কম জানি, পড়তে হবে আরও।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, সবই করেছি। এখন আর হয় না।
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৩
তারেক ফাহিম বলেছেন: হায় হায়...
ধারনা খুবই কম এই ব্যপারে।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: সমস্যাটাও বেশ আনকমন।
৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৩
সামিয়া বলেছেন: বেশ লিখেছেন ভাইয়া।এরকম আমার এক বন্ধু বলে, আমার অবশ্য মনে হয় ও অলস ছেলে, ব্যাংক জব করছে সেখানে বেশি খাটাচ্ছে বলে এই রকম আবোল তাবোল বলে সম্ভবত।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: সাধারণ স্ট্রেস আর প্যানিক ডিজঅর্ডারের মধ্যে অনেক পার্থক্য। তবে স্ট্রেস খুব ভালো কিছু না। ওভারকাম করার চেষ্টা করা উচিত।
৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭
জাহিদ অনিক বলেছেন:
এটা মনে হচ্ছে মানসিক ডিজেজ। নানা প্রকার অবস্থা ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এমনটা স্নায়বিক বিপর্যয় হতে পারে।
এর সাথে কার্ডিয়াক কোন যোগাযোগ আছে বলে মনে হয় না।
আপনিও যে এই রোগে আক্রান্ত সেটা জানা ছিল না !
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, এটার সাথে কার্ডিয়াক যোগাযোগ নেই। কিন্তু লক্ষণ দেখে খুব কাছাকাছি মনে হতে পারে।
আমার অনেকদিন ধরে ফুল ওয়েভ প্যানিক এ্যাটাক হয় নি। এতদিন আমি এটা সবার সামনে প্রকাশ করতে দ্বিধাবোধ করতাম। এখন আমার সাহস আছে। আমি জানি ভবিষ্যতে আবারও আমার প্যানিক এ্যাটাক হতে পারে, কিন্তু আমি তাতে মারা যাবো না। বরং ফুলের টব মাথায় পড়ে মৃত্যু হতে পারে।
হ্যাঁ, আমি একজন সারভাইভর। আমি একতি উদাহরণ। আমি একটি ভরসা।
৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১১
রাফা বলেছেন: আমি একজন ইন্ট্রোভার্ট টাইপের মানুষ।কিন্তু খুব সহজে যে কোন পরিবেশ ও মানুষের সাথে মিশেও যেতে পারি।কিন্তু বড় রকমের একটি সমস্যা হয় যখন অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকি।অনেক কিছু এলোমেলো করে ফেলি তখন।আমি কিন্তু অলস নই সিস্টেমেটিক্যালি যত কাজই আসুক আমি করতে পারি।যখন আমাকে সর্ট টাইমে বেশি কাজ করতে হয় সমস্যাটা প্রকট হয় ঠিক তখনি।
এটা কি প্যানিক ডিজঅর্ডারের মধ্য পরে?
ধন্যবাদ ,হা.মাহবুব।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: না, আপনারটা যাপিত জীবনের সাধারণ স্ট্রেস।
প্যানিক ডিজঅর্ডার হলো বারবার প্যানিক এ্যাটাক হওয়া। আর প্যানিক এ্যাটাক হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক মানসিক অনুভূতি। আমি নিশ্চিত, আপনার এ ধরণের কিছু হয় নি।
৭| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২২
করুণাধারা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, এমন বিষয়ে লিখেছেন যা সামুতে একরকম ট্যাবুই বলা চলে। আমি সচলায়তনে দেখেছি ডিপ্রেশন, আত্মহত্যা- প্রবনতা নিয়ে পোস্ট এবং তা নিয়ে দীর্ঘদিন দীর্ঘ আলোচনা, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করা কিন্তু জানি না কেন সামুতে কেউ মনের অসুখ নিয়ে একেবারেই আগ্রহী নয়। আমার প্রথম পোস্ট "মনের অসুখ'- এর পঠিত সংখ্যা ছিল এক অংকের। আমি মনের অসুখে ভোগা মানুষের জন্য হাত বাড়াতে চেয়েছিলাম, কেউ গ্রাহ্য করে নি। আজ আপনার এই পোস্ট দেখে খুব ভাল লাগছে। আপনি সামুর পরিচিত, পুরানো ব্লগার- তাই আশাকরি আপনার বাড়িয়ে দেয়া হাত অনেকেই নিঃসংশয়ে ধরে অবলম্বন খুঁজে পাবেন।
প্যানিক এটাক প্রথম শুনেছিলাম আমার পরিচিত এক মহিলার- উনি প্রায় প্যারালাইজড হয়ে যেতেন। আপনার পোস্ট পড়ে, যে চিঠি আপনি তুলে দিয়েছেন তার লেখকের অসহায় অবস্থা স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ এমন মর্মস্পর্শী চিঠি শেয়ার করার জন্য। আসলে মানসিক রোগীদের ক্ষেত্রে বলা হয় হাত বাড়িয়ে দিতে, তাদের সমতলে নিজেকে নিয়ে গিয়ে তাদের সাপোর্ট দিতে। এক্ষেত্রে বলে তাদের প্রয়োজন সিম্প্যাথি নয়, এমপ্যাথি। সিম্প্যাথি আর এমপ্যাথির তফাৎ এভাবে বোঝান হয়- ধরা যাক একটা লোক এক গভীর গর্তে পড়ে গেছে, তখন তার কাছে দড়ি বেঁধে কিছু খাদ্যসাহায্য পাঠানোকে বলে সিম্প্যাথি, আর একটা মই জোগাড় করে নীচে নেমে তার হাত ধরে উপরে উঠতে সাহায্য করাকে বলে এমপ্যাথি। আপনার পোস্টে সিম্প্যাথি নয়, আমি শুধুই এমপ্যাথি দেখেছি। আবারো ধন্যবাদ, অসংখ্য লাইক।
ভাল থাকুন সতত।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১
হাসান মাহবুব বলেছেন: আমি যখন প্রথম জানলাম যে অন্যদেরও এরকম হয়, এবং এতে করে আমি মারা যাবো না, তখন আমি যে সাহস পেয়েছিলাম, তা অনেক ডাক্তার এবং ঔষধ আমাকে দিতে পারে নি। আমি ভয়ানকরকম ভুগেছি। আমি জানি এটা মানুষকে বোঝানো কতটা কঠিন। তাই আমি যে কাউকে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে, সময় দিতে প্রস্তুত। একজনকে আমি কাউন্সেলিং করিও নিয়মিত।
আপনার ব্লগে যাবো। লেখা পড়বো। এমপ্যাথি খুব দরকার, এই জিনিসটাই দরকার আক্রান্তদের জন্যে।
শুভবোধে ভাস্বর হোক জীবন।
৮| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪
জাহিদ অনিক বলেছেন:
করুনাধারা, মাফ করবেন-- আপনার কথাটা সত্য, সামুতে এসব নিয়ে লেখা খুব একটা নেই।
কিন্তু আমি হাসতে হাসতে বলতে বাধ্য হচ্ছি, সামুতে দিনে যতগুলো হতাশা ও একাকিত্বের কিংবা বিরহের কবিতা পোষ্ট হয়; মন দিয়ে পড়লে সেগুলো মনোরোগ থেকে আলাদা কিছুই না।
ধন্যবাদ।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: যদি সেগুলো মনোরোগ হয়ে থাকে, তাহলে তাদের কীভাবে আরোগ্যের পথে আনা যায় সে চিন্তা করা উচিত।
৯| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: লেখাটি পড়ে অনেক ভাল লেগেছে।আমি মাঝে মাঝে ডিপ্রেশনে ভুগি।
আমাদের সমাজে তো মানসিক রোগকে রোগই মনে করেনা কেউ।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ। মানসিক সমস্যা থেকে কত ভয়াবহ ব্যাপার হয়ে যেতে পারে!
১০| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯
করুণাধারা বলেছেন: দুঃখিত হাসান মাহবুব, এখন আমার প্রথম পোস্টে গিয়ে দেখছি আপনি স্বল্পসংখ্যক পাঠকের একজন এবং মন্তব্যকারীও। তাই ওটা বাদ দিয়ে আপনাকে এই পোস্টটা পড়ার অনুরোধ করছি। Click This Link
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: আমি অবশ্যই পড়বো।
১১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৯
করুণাধারা বলেছেন: আমার সন্তানসম এই ছেলেটির এমন মৃত্যুতে আমি খুব ডিস্টার্বড হয়েছিলাম, আজো ডিস্টার্বড বোধ করি। ও অনেকের কাছে সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু কেউ তার আকুতি বোঝে নি, তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় নি। আপনার পোস্ট পড়ে মনে হল লিখি তাই তাড়াহুড়া করে লিখলাম, সেই জিনিয়াস ছেলেটিকে মনে করে।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: লিখুন। লেখারাই বেঁচে থাকে।
১২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১৬
পার্থ তালুকদার বলেছেন: বেদনার চিঠি !! সাহসজাগানীয়া চিঠি !!
ভালো থাকবেন হাসান ভাই।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনিও ভালো থাকবেন পার্থ তালুলদার। শুভেচ্ছা রইলো।
১৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৪১
কাতিআশা বলেছেন: বাচ্চাদের পরীক্ষার আগে আমার প্যানিক আ্যটাক হয়..আমার প্যানিকীং দেখে ওরা খুবি বিরক্ত হয়ে পড়ে, এখন অবশ্য ইউজড্ টু হয়ে গেছে..তবে উপরের বর্ণনার মত এত ভয়াবহ না আমারটা!
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: আশা করি এই ভয়াবহতার মুখোমুখি কখনই হতে হবে না আপনাকে!
১৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৩
সোহানী বলেছেন: আপনার লিখা পড়ে কোথাও কিছু মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে আপনি অসম্ভব extrovert একজন person। সহজে বুঝেন, মেনে নিতে পারেন, কম্প্রোমাইজ করতে পারেন, ভলোবাসতে পারেন, ভালোবাসা নিতে পারেন। যে দিতে পারে ও নিতে পারে তাকে কোনভাবেই কোন রোগে বলেন আর যাই বলেন আটকিয়ে রাখতে পারে না। সে নিজেকে বিকোশিত করতে পারে বা পারবে।
অামি মনোরোগীদের সাথে খুব বেশী না হলে ও কথা বলেছি কখনো কখনো। শুধুমাত্র চারপাশের মানুষই পারে তার সব কিছুকে এক নিমিষে সুন্দর করে দিতে। তাই সবসময়ই সে পজিটিভ মানুষগুলোর সাথেই চলা উচিত, তাই নয় কি!! কারন নেগেটিভ মানুষগুলো একজন সুস্থ্য মানুষকেও পারে দ্রুত অসুস্থ বানাতে।
ভালো থাকুন সবসময়। বই বিক্রি বাট্টা কেমন চলছে?? আমার কপি সংগ্রহ করবো কোন এক সময় নেক্সট ইয়ারে। নিউ মার্কেটে পাওয়া যায়তো? বা কোন দোকানে?
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২১
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার সব কথাই ঠিক আছে, শুধু আমি এক্সট্রোভার্ট না। আমি প্রচণ্ড রকম ইন্ট্রোভার্ট!
আপাতত বইমেলাতে আর অনলাইন বুকশপে পাওয়া যাচ্ছে। পরে প্রকাশক কোন দোকানে দেবেন আমি জানি না।
ভালো থাকবেন সোহানী।
১৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:২৩
আরইউ বলেছেন: অসাধারণ লেখা হাসান। আমার ভয়াবহ রকমের ডিপ্রেশান আছে, কিন্তু আমি কখনো প্যানিক হইনা।
ভালো থাকুন!
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার সাহসকে সম্মান জানাই। ভালো থাকবেন।
১৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩
ক্লে ডল বলেছেন: ৭ নাম্বার মন্তব্যে লাইক।
আমি একবার সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হই। তারপর থেকে কোন গাড়ীতে উঠতে পারতাম না। উঠলেও ভীষণ আতঙ্কগ্রস্থ থাকতাম এই বুঝি এক্সিডেন্ট হল! এমনকি ঘুমের মধ্যে মনে হত খাট বুঝি খাদে পড়ে গেল! দুর্বিষহ ছিল! জানিনা এটা কোন রোগ ছিল কিনা।
অটঃ অপনার বইটা কাকে উৎসর্গ করেছেন চিনতে পারিনি। হয়ত সে ব্লগার আপনার পরিচিত, আমার অচেনা।
ভাল থাকবেন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০
হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ ক্লে ডল। তিনি হচ্ছেন মাহমুদ রহমান ওরফে ব্লগার মাহমুদ০০৭। বইয়ে ভুল করে মাহমুদ হাসান এসেছে
বইটি কেমন লাগলো জানিয়েন কিন্তু।
১৭| ১৪ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৬
শামিম অমি বলেছেন: খুবই বাজে অভিজ্ঞতা আছে আমার।
১৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:০৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: এখনও ভুগছেন?
১৮| ০৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
যোগিনী বলেছেন: প্যানিক এট্যাক হয় না কিন্তু ভয়ংকর ডিপ্রেশন ছিল, মাঝখানে বিরতি দিয়ে এখন আবার ফিরে এসেছে। পার্থক্য শুধু এইটাই যে আগে একা ছিলাম নিজেকে নিয়ে যা খুশি তাই করার স্বাধীনতা ছিল । আর এখন পেটের ভিতরে বেড়ে উঠা একজনের জন্যে সেটা আর করা সম্ভব নয় ।
০৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:০৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভকামনা রইলো আপনার জন্যে।
১৯| ১৭ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৩৮
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আমি একবার টানা সাতদিন ভয়ঙ্কর অবস্থায় ছিলাম। জানিনা ঐটা কি ছিল। সেই পরিস্থিতি কাউকে বলে বোঝানো যাবেনা। মনে হলেই কেমন যেন লাগে। তখন মনে হয় হয়তো এখন আবার হবে।
১৭ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪১
হাসান মাহবুব বলেছেন: জানি না কী হয়েছিলো। আশা করি আর হবে না।
২০| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০০
অশুভ বলেছেন: এটা আমারও ছিল হামা ভাই। আমার জীবনটাই অনেকটা বদলে গেছে এটার জন্য। ২০১৪ তে প্রথম এই জিনিসটা হয়। আমি তখন জাপানে জব করতাম। দেশের কিছু ঘটনার জন্য প্রচন্ড বিচলিত ছিলাম। সারারাত না ঘুমিয়ে অফিসে গেছি, তারপর এটা প্রথম ফেইস করি। সাথে সাথে বাসায় চলে আসি। আমার শুধু মনে হচ্ছিল আমি মারা যাচ্ছি, নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না। হার্টবিট অনেক বেড়ে গেছিল মনে হয়। আমার শুধু মনে হচ্ছিল ঘুমাতে পারলেই সব ঠিক হবে। বাট কোনোভাবেই ঘুমাতে পারছিলাম না। ২-৩ ঘন্টা যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত ঘুমাতে পেরেছি। বিদেশ বিভুইয়ে পুরো একা ছিলাম। মনে হচ্ছিল আমি মারা গেলেও, কেও টের পাবে না। এরপর এ্যাটাকটা প্রায়ই হচ্ছিল। সবচেয়ে বাজে সমস্যা ছিল, আমি নরমাল হতে পারছিলাম না। সবকিছুকেই আমার স্বপ্ন মনে হত। বাস্তব আর স্বপ্নের পার্থক্য করতে পারতাম না। ওখানে ডাক্তার দেখালাম, সে বলল "এটা তোমার হোম সিকনেস"। আমাকে দেশে সময় কাটিয়ে আসতে পরামর্শ দিল। আমার এম্ল্পয়ারও আমাকে তারাতারি দেশে পাঠাল। কিন্তু দেশ ঘুরে যাওয়ার পরও স্বাভাবিক হতে পারলাম না। শেষ পর্যন্ত আমি পার্মানেন্টলি দেশে চলে আসি। কয়েকমাস কাউন্সেলিং করানোর পর আমি সুস্থ। প্রায় দু বছর ধরে আর হয় না। কিন্তু এটা আমার কন্ফিডেন্স ধংস করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমি সেই আগের আমি হতে পারি না। আল্লাহর অশেষ রহমত, এখনো বেচে আছি।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: ফিল করছি।
ফিরে আসার জন্যে অভিবাদন!
শুভকামনা অজস্র।
২১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৫
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: নিজেকে কিছু থেকে আলাদা মনে হতো। অন্যমনস্ক হয়ে যেতাম।
মনে হতো আশেপাশের পরিবেশের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।
মনের ভেতর , বুকের ভেতর , মাথার ভেতর অস্থির লাগতো।
রাতে ঘুমাতে গেলে চোখ বন্ধ করতে পারতাম না। মাথার ভেতর অস্তির লাগতো।
বারবার চোখ খুলে যেত। তাকিয়ে থাকতাম। মনে হতো ঘুমালে আর জাগবো না।
আমি মারা যাবো কিংবা আপন কেউ মারা যাবে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা হতো।
প্রচন্ড গরমে হটাৎ করে শীত অনুভব করতাম। শরীর ভারী হয়ে যেত। হাঁটু ধরে আসতো। হটাৎ করে মনে হতো এই আমি সেই আমি না। রাস্তায় লোকজনের মাঝে হেটে যাওয়া মানুষ টা অন্য কেউ।
যত সহজ ভাবে বলছি কিন্তু পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। মানসিক আর শারীরিক ভাবে ছিলাম বিপর্যসস্থ !
২৭ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:২০
হাসান মাহবুব বলেছেন: এখন কী অবস্থা?
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১০
রাজীব নুর বলেছেন: হায় হায়---
এই রোগ কি আমার আছে?