![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পাভেল রইস । ভালো কিছু লিখত পারি না তবুও মাঝে মাঝে কিছু লিখি
এই যে আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল , কম্পিউটার , লেপটপ দিয়ে ফেইজবুক , টুইটার , ,ভাইবার , ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন , একবার কি ভেবে দেখেছেন আপনার এই সামান্য ইন্টারনেট বিলের টাকা উপার্জন করতে আপনার বাবাকে কতটা ঘটনার আর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে । যদিও টাকার অঙ্ক বড় কিছু না তবে এই টাকাটা আপনার বাবার কষ্টের উপার্জনের টাকা । আমি বলছি না তাই বলে আপনাকে ইন্টারনেট ব্যবহার ছেড়ে দেওয়া উচিত , আমি বলছি একটু ভাবুন ।
বাবা । আমাদের অনেকের কাছেই টাকা বের হওয়ার মেশিন । কিন্তু এই মেশিনটারও যে একটা প্রান আছে আমরা তা মাঝে মাঝে ভুলে যাই । অনেকেই তার বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে পারে না । বাবাকে ভয় পায় । কিন্তু বাবাকে কেন এই ভয় , বাবা কেন আপনার উপর রাগ করে , বাবা কি চায় এই কারনগুলো কখনো খুজে দেখেছেন । বাবা যে আপনাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত ভেবে চলেছে তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন ।
আপনার মুখে হাসি ফুটানোর জন্য কি কষ্টই না করে লোকটা । প্রতিদিন সকালে আপনার আগেই ঘুম থেকে উঠে , কখনো বা নাস্তা না খেয়ে কখনোবা অর্ধেক নাস্তা করে অফিসে ছুটে যায় । আপনি ভাবেন আপনার বাবা অফিসে যায় , অফিস থেকে আসে , মাস শেষে বেতন পায় , এই আপনার বাবার কাজ । কিন্তু এই কাজ করতে আপনার বাবাকে কত শত শত কাজ করতে হয় তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন ?
প্রতিদিন অফিসে সময় মতো যাওয়া , শরীর যেমনই থাকুক তার কাজ চালিয়ে যাওয়া , বসের মন মতো চলা , বসকে ম্যানেজ করা , মিথ্যা কথা বলা , কখনো নিজে ছোট হয়ে তোষামোদ করা , কখনো বা অন্যায় উপার্জন করা , বসের ঝারি খাওয়া , বিভিন্ন কাজে অফিসের বাইরে যাওয়া আরো কত কি কাজ আপনার আর আপনার পরিবারের জন্য করে লোকটা ।
কখনো কি খেয়াল করে দেখেছেন লোকটার স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে যা যা দরকার তা কি আছে নাকি লোকটার । হয়ত তার বাম পায়ের মোজার এক কোনা ছিড়ে গেছে , চশমার ডাটাটা একটু নড়বড়ে , মানিব্যাগটা টেপ মেরে চালিয়ে নিচ্ছে , হাত ঘড়ির ব্যাটারি শেষ হয়েছে সেই কবে তা আর বদলানো হয় নি , কখনো খেয়াল করেছেন ।
শুধু ফেইজবুকে লাইক দিচ্ছেন আর কমেন্ট করছেন । বাবা দিবস , মা দিবসে লাভ ইউ বাবা লাভ ইউ মা বলে কান্নার ইমো দিচ্ছেন ।
বারান্দার বাতিটা জ্বলে না অনেকদিন , ঘড়ির ব্যাটারি শেষ , সাবান শেষ , একটা সুইচ ডিস্টার্ব , বাবা দেখবে । সবই যদি বাবা দেখবে তাহলে আপনি আছেন কি জন্য !
আপনার পরীক্ষার ফি দরকার । মাসের মাঝামাঝি বললেন বাবা কাল লাস্ট ডেট পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার । বাবা বলল , আচ্ছা নিয়ে যাস । আপনি ভাবলেন আপনি চাইলেন আর বাবা দিল । কাহিনী শেষ । একবার ভেবে দেখেছেন এই সময় এই টাকাটা আপনার বাবা কিভাবে জোগাড় করবে । কার কাছে ঋণ করবে একথা ভাবতে ভাবতে আপনার বাবা গতকাল রাতে ঘুমাতেই পারে নি তা আপনি কখনোই জানবেন না কারন আপনি তখনো ঘুমে ।
রাতে যখন কর্মজীবি মানুষ বাড়িতে ফিরে তাদের কখনো ভালো করে দেখেছেন ? দোকানে গিয়ে কিভাবে তারা একটার পর একটা ছেলে মেয়ের পচ্ছন্দের জিনিস কিনে ।
ভাই এইটা একটা দেন , দাম কত ? এতো দাম ? থাক ভাই আরেকদিন নিব । এই এতটুকু কথা বলতে মানুষ গুলোর কি কষ্ট হয় তা কখনো খেয়াল করেছেন ? না , তখন আপনি ফেইজবুকে ছিলেন ।
আমার সীমিত জ্ঞান , তাই আমি কাউকে জ্ঞান দিচ্ছি না । আমি শুধু যারা আমার মতো ফেইজবুক এডিক্টেট তাদের পাশের মানুষের দিকে , বাবা মায়ের দিকে একটু খেয়াল দেওয়ার অনুরোধ করছি ।
আপনি হয়ত প্রতিদিন আপনার ফেইজবুকের পরিচিত অপরিচিত মানুষদের মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞাসা করেন , হায় , কেমন আছেন ? কখনো বাবাকে বা মাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন কথাটা ? অথচ আপনি খবর নিয়ে দেখতে পারেন আপনার বাবা প্রতিদিনই আপনার মায়ের কাছে আপনার খবর রাখছে ।
হয়ত বলছে , ওর কি খবর ? ঠিক মতো লেখা পড়া করছে ? কোচিং এ যাচ্ছে ? বাইরে যা গরম , বাসায় ফিরলে ওকে ঠান্ডা শরবত করে দিবে । শুনলাম বন্ধুদের সাথে কোথায় যেন যাবে , সাবধানে যেন থাকে , এই টাকাটা ওকে দিও , আমার কথা বইলো না . . .
.
- পাভেল রইস
©somewhere in net ltd.