নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবির লোকটিকে এখন সবাই চেনেন, বিশেষ করে আমার মতিঝিল মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের সব বন্ধুরা ।
যে স্কুলে জীবনের এতগুলো বছর কাটালাম, যে মানুষটি আমাদের ক্লাসে অনেক সময় নোটিশ নিয়ে আসত, আর আমরা "টি.সি. , টি.সি." বলে চিৎকার করতাম । কখনও তিনি একটু মুচকি হাসতেন, কখনো একটু ধমক দিতেন । গেটে যখন নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকতেন তখন কত হাসি-তামাশা করেছি তার সাথে । সামান্য বেতন তিনি পেতেন, তবুও সুখেই ছিলেন তিনি ।
আমাদের সেই নাসির মামার ছেলে জিহাদ গতকাল সবাইকে কাঁদিয়ে আমাদর ছেড়ে চির বিদায় নিল । আমাদের সবাইকেই মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হবে । কিন্তু এমন একটি নিষ্পাপ শিশুর এরমকম মৃত্যু আমাদের কারও কাম্য ছিল না ।
জিহাদ সেই পাইপের ভেতর পড়ল কেন? কারণ সেই পাইপের মুখ খোলা ছিল । সেই খোলা পাইপ এক নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ কেড়ে নিল । একজন পিতা তার আদরের সন্তান হারালেন, একজন মা তার স্তান হারালেন । তাদের আহাজারি আমরা সবাই দেখেছি । কি বলে সান্ত্বনা দেব তাদের আমরা? জিহাদের জীবনটা শুরু না হতেই থেমে গেল । এজন্য কে দায়ী ? অবশ্যই কেউ দায়ী । কিন্তু সে দায়ী ব্যক্তির বিচার কে করবে ?
পুরো চব্বিশ ঘন্টা ধরে জিহাদকে উদ্ধারের চেষ্টা করল সরকারি লোকজন । কিন্তু জিহাদকে উদ্ধার তো দূরে থাক, সে পাইপে পড়েছে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ শূরু করল সরকারি উদ্ধারকর্মীরা । পুলিশ ধরে নিয়ে গেল জিহাদের বাবা নাসিরকে । আটকে রাখল প্রায় চব্বিশ ঘন্টা । আবার কত ব্যাঙ, টিকটিকি নাটক দেখলাম । শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দিয়েই উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে দিল ।
এক দিকে ফায়ার সার্ভিস ঘোষনা দিয়ে অভিযান বন্ধ করতে না করতেই আমজনতাই উদ্ধার করল জিহাদকে । কিন্তু জীবিত নয়, মৃত । সব ব্যাঙ, টিকটিকি নাটকের অবসান হল ।
কিন্তু যাদের সন্তান হারিয়েছে তারাই এর মর্ম বুঝে ।
আর কিছুদিন পড়েই হয়তো আমাদের নাসির মামা জিহাদকে স্কুলে ভর্তি করতো । তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্নই হয়তো ছিল তার । কিন্তু সব সপ্ন এখন শুধুই সপ্ন ।
©somewhere in net ltd.