নারী!

২৫ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:০৪

মিষ্টু আজও ভাবে সেদিনের কথা...., জানা-অজানার ভিড়ে, কালিমালিপ্ত সে দিনগুলির কথা সে কোনদিনও ভুলতে পারবে না।

সেই যে, সে দিনটা... থাডর্ ইয়ারের ফাইনালের লাস্ট পরীক্ষাটা দিয়ে পেনাল্টি পেতে হলো ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার সময়! সেই যে দুর্গন্ধস্মৃতিকাতুরে, চোরা বালিয়াড়ির অন্তরালে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটা......! আজও..., আজও তাকে যন্ত্রনা দেয়, আর সারা জীবন দেবেও।

কলেজের বন্ধুদের সাথে ট্রেনে করে বাড়ি ফেরা, "আবার কবে দেখা হবে সবার সাথে, তাই স্মৃতিমন্থনের তালে তালে সবার সাথে কলো-কোলাহলে মেতে উঠেছিল মিষ্টু। হঠাৎ পাশের সিট্‌ থেকে ছয়-সাতজন মানুষরূপী লোলুপায়িত, হিংস্র, জংলী যেন তকে তকে ছিল (বাঘ) কখন (হরিণকে) সুযোগ পেলে ঝঁাপিয়ে, ছঁিড়ে আক্রমনের মুখে ফেলা যায়। আর ঠিক তাই হলো......!

মিষ্টুর অন্যান্য বন্ধুরা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেলেও,মিষ্টু পালাতে পারেনি, করেছিল..., আপ্রান চেষ্টা করেছিল, নিজেকে বঁাচাবার এই নারীলোলুপ, কাপালিক, চন্ডাল, বিষাক্ত কীটের থেকে...। কিন্তু বিষাক্ত কীটের থেকে, বিষাক্ত রোগ থেকে (ক্যানসার) মানুষ শত চেষ্টা করেও যেমন বঁাচতে পারে না, ঠিক তেমনি মিষ্টুও পারেনি...!

দুর্ভাগ্য! সেইদিনে তার পাশে কেউ ছিল না, আজও নেই। কুলোটা, কলঙ্কিনী বলে সমাজে সে আজও অবহেলিত।

কিন্তু ওর দোষটা কোথায়? কেন ও নিজেকে অন্তরালে রাখে? কেন সমাজের সেই মানুষগুলো, যারা ওকে একঘরে করে রেখেছে তারা, সেই মানুষরূপী, নারীলোলুপ, পাষান-জংলীগুলোকে শাস্তি দেয় না কেন?

যারা দোষ করলো, তারা বিনা সাজায় মুক্ত..., আর যে মিষ্টু এ অন্যায়কে নিজের সাথে হতে না দেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করেও ব্যথর্, সেই আজ দোষে, সাজায় সবার থেকে আলাদা হয়ে, সবার দ্বারা পরিত্যক্ত হয়ে নির্জনে, নির্বাসনে দিন কাটাচ্ছে।..... কেন?....কেন?

এই কেন-র? নেই কোন উওর...। আছে শুধু একটাই উওর বা বলা যেতে পারে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নিয়ম-বিধি....."তুমি নারী, নারী হওয়ার পাপে তুমি জর্জরিত, তাই সমাজের যে-কোন অপরাধে, অন্যায়, অসুখে তুমি সর্বাত্মভাবে শ্রেষ্ঠ, নেই কোন মুক্তি, নেই কোন যুক্তি, তুমি নারী, তাই তোমার এইভাবে লুপ্তি।"



......সত্যিই কী তাই...?

০ টি +০/-০