নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

।। একজন বাঙালী ।। ধরণীর সন্তান ।।

মোঃ পলাশ খান

Entrepreneur, Journalist, Social Activist, Freethinke. www.fb.com/Pkhan.BD1, www.twitter.com/PkhanBD

মোঃ পলাশ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাস্তব জীবনের ছোট গল্প

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৮


০৫ এপ্রিল ২০১৭ রাত ২.০০-২.৩০ মিঃ আমি প্রতিদিনের ন্যায় আমার কর্মস্থল থেকে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে বের হয়েছি তখন চোখে পড়লো রাস্তার পাশে দোকানের সামনে একটা লোক লাল রঙের কাপর গায়ে জড়িয়ে শুয়ে আছে। আমি ভাবলাম আমাদের এলাকায় কিছু অসহায় ছোট ছোট ছেলে আছে ওদের থাকার জায়গা আছে তারপরও বাজারে কোন একটা দোকানের সামনে শুয়ে থাকে আমি কয়েকদিন উঠিয়ে বাসায় পঠিয়েছি কাল দেখে রাগ লাগলো যে তোদের থাকার জায়গা থাকতেও এভাবে ঘুমানোর সখ জাগে তাহলে ঘুমা এখানেই। আমি আর দেখতেও গেলাম না জানার জন্য কে হতে পারে এটা। বাড়ি চলে এলাম। ০৬ এপ্রিল সকাল ১০.৩০মিঃ এ ঘুম ভাঙ্গলো ফ্রেশ হচ্ছি এমন সময় আমাদের একটা সামাজিক সংগঠন আছে নারী নির্যাতন দমন চাঁদনী মঞ্চ এর আহ্বায়ক আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই জামাল মাদবর ফোন দিলো, আমাদের ছোট ভাইদের সংগঠন জাজিরা ছাত্র কল্যান ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরন বিতরণ করা হবে ওখানে আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে যেতে হবে, কি আর করা কর্মস্থলে না গিয়ে ভাইয়ের সাথে ওখানে চলে গেলাম এবং কর্মসূচী শেষ হওয়ার পরে সোজা নিজের কর্মস্থলে চলে আসলাম। একটু পরে খেয়াল করলাম একটা ছোট ছেলে লাল রঙের ছেড়া লুঙ্গী হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে আমার দিকে এগিয়ে আসছে আর আমাকে কিছু বলতে চাচ্ছে আমি কাছে এনে জানতে চাইলাম তোর বাড়ি কোথায়? অনেক কষ্ট করে বললো বিক্রমপুর, আবার জানতে চাইলাম তাহলে তুমি এখানে আসলা কিভাবে? আবারও কিছু সময় নিয়ে বললো হাইট্টা, জানতে চাইলাম তুমি বাড়ি যাইবা কিভাবে? বলে আমি বাড়ি যাইতে পারি, তো তুমি এখানে খাও কই? তোমার বাবা মা যানে তুমি এখানে? বললো না, জানতে চাইলাম বাড়ির কারো সাথে যোগাযোগ করার মতো কোন মোবাইল নম্বর আছে? বললো না, তারপর জানতে চাইলাম সকালে কি খাইছো? বললো বিস্কুট (অনেক কষ্ট করে কথা বলে) আবার জানতে চাইলাম এখন কি খাইছো? (তখন আনুমানিক ২.০০-৩.০০ টা বাজে) বললো ভাত, হয়তো কোন হোটেল ওয়ালা ভাই খাওয়াইছে, পেট দেখিয়ে জানতে চাইলাম এখন ক্ষুধা নাই? বললো না, তারপর জানতে চাইলাম তোমার বাবা-মা চিন্তা করবো না? তুমি এখানে তারা তো তা জানে না? বলে না, কিন্তু ও তো জানে না সন্তানের জন্য বাবা-মা কত চিন্তায় থাকে! এবার জানতে চাইলাম তুমি আমাকে কি বলতে চাইছো বলো ও ওর হাতে থাকা লাল রঙের ছেড়া লুঙ্গিটা দেখাচ্ছে বুঝতে পারলাম ও নতুন লুঙ্গি পেলে খুশি হবে, আমি বললাম হ্যা তুই যা চাস তাই দিবো কিন্তু তোর তো বাড়িতে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে আগে। আবার কয়েকবার জানতে চাইলাম তুমি বাড়ি যাইবা কিভাবে ও একিভাবে বার বার বললো আমি বাড়ি যেতে পারি, তাতে আমার কাছে মনে হলো ও বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারবে। এরপর নিয়ে গেলাম জামা-কাপরের দোকানে ওখানে গিয়ে ও বললো প্যান্ট-শার্টের কথা, নিলাম ওর জন্য একটা করে প্যান্ট, শার্ট ও শার্টের নিচে পড়ার জন্য ছোট গেঞ্জী এগুলো পেয়ে অনেক খুশি হলো। এবার ওর হাতে ভাড়া দিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু টাকা আর আমার ভিজিটিং কার্ডটা ধরিয়ে দিয়ে বললাম তুই বলেছিস আমি বাড়ি যেতে পারি তাই তোকে একা ছাড়লাম বাসায় গিয়ে আমার এই কার্ড তোর বাবা-মা অথবা তোর কোন ভাইয়ের কাছে দিয়ে আমাকে জানাতে বলবি তুই বাড়ি পৌছে গেছিস। এখন বাকিটা উপরওয়ালার হাতে।


ছেলেটাকে দেখে আর কথা বলে মনে হলো ও মানষিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী! সবার কাছে অনুরোধ রইলো এমন কেউ কখনো সামনে পড়লে তার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করুন অন্ততপক্ষে মায়ের কোলে ফিরে যেতে সাহায্য করুন। আর যাদের এলাকায় এমন কেউ আছে কিন্তু পরিবারের সাধ্য নেই তাদের যত্ন করা বা কোন প্রতিবন্ধী স্কুলে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার, তাদেরকে নিজের সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করুন। এতে করে একটু হলেও আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধীদের যত্ন বাড়বে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪০

হাবিব বলেছেন: মানুষ মানুষের জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.