নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

।। একজন বাঙালী ।। ধরণীর সন্তান ।।

মোঃ পলাশ খান

Entrepreneur, Journalist, Social Activist, Freethinke. www.fb.com/Pkhan.BD1, www.twitter.com/PkhanBD

মোঃ পলাশ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুলিশ_ও_সাধারন_জনগণ-০১

১৫ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:২৭


অনেকদিন পর ঢাকায় এসেছি। গত তিনদিন অনেক ঘুরেছি, কিন্তু আজ আর ব্যস্ততার কারনে থাকতে পারছি না।

ছোটখাটো একটি আইটি কর্ণার পরিচালনা করি আমি। তিনদিনে অনেক কাজ জমে গেছে তাই সকালে উঠে তৈরী হলাম দেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। ছোট ভাইয়ের বাসায় ছিলাম। বাসা থেকে বের হতে হতে প্রায় ১১ টা বেজেঁ গেল। বাইক নিয়ে যাত্রাবাড়ী থেকে গুলিস্থান আসতে আসতে ১১:৩০ - ১১:৪৫ বেজে গেল।

গুলিস্থান এসে একটা জিনিস দেখে খুব ভালো লাগলো তা হলো ফুটপাতে হকারদের স্থায়ীভাবে অপসারন করা সম্ভব হয়েছে। সাধারণ মানুষ এখন নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারছে ঐতিহাসিক গুলিস্থানের রাস্তায়।

আমি বাইক নিয়ে গুলিস্থান শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এসে থামলাম। মার্কেটের ভিতরে একজন বড় ভাইয়ের কাছ থেকে একটি মোবাইল নেয়ার ছিল। যেহেতেু মার্কেটের ভিতরে যাবো সেহেতু অবশ্যই বাইকটি মার্কেটের সামনেই রেখে যেতে হবে। সেই মতই বাইকটি লক করে মার্কেটেরে সামনে রেখে মার্কেটের ভিতরে ডুকলাম। ২-৩ মিনিট পরে কাজ শেষ করে মার্কেট থেকে বের হয়ে আসলাম। বাইকের কাছে এসে দেখলাম বাইকের সাথে হেলমেটটি নেই।

ভাবলাম মনে হয় চুরি হয়ে গেছে। পাশে থাকা রিক্সাওয়ালা ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই এখানে কি এমনি হয়? সে আমার কথার উত্তর না দিয়ে কাছেই নিয়োজিত থাকা ট্রাফিক পুলিশ দেখিয়ে বললো ট্রাফিকের সাথে কথা বলেন। গেলাম ট্রাফিকের কাছে...

আমি: স্যার আমার বাইকটি রেখে ২-৩ মিনিটের জন্য মার্কেটের ভিতরে গিয়েছিলাম এসে দেখি হেলমেট নেই।

ট্রাফিক পুলিশ আমান সাহেব: হেলমেট পাবেন তবে মামলা হবে।

ট্রাফিক পুলিশ মইনুল সাহেব: আমান সাহেবকে ইশারা করে কত ৪০০ টাকার মামলা হবে না?

আমি: স্যার আপনাদের অনেক ধন্যবাদ, আমি মানছি আমার ভুল হয়েছে, আমার হেলমেটটি এভাবে রেখে যাওয়া উচিৎ হয়নি, চুরি হতে পারতো। ভবিষ্যতে আর ভুল হবে না।

ট্রাফিক পুলিশ মইনুল সাহেব: না আপনার মামলা হবে, আপনি লং পাকিং করেছেন।

আমি: স্যার আমি তো লং পার্কিং করিনি, এই সর্বোচ্চ ২-৩ মিনিটের জন্য মার্কেটেরে ভিতরে গিয়েছিলাম আর এখানে তো পার্কিং করা যাবে না এই মর্মে কোন "নো পার্কিং" সাইনবোর্ড ও নেই।

ট্রাফিক পুলিশ মইনুল সাহেব: ওখানে তো পার্কিং করা যাবে এমন কোন সাইনবোর্ডও নেই।

আমি: স্যার এটা কেমন কথা বলছেন? আমি মার্কেটের ভিতরে যাবো তো আমার বাইক মার্কেটের সামনে রাখবো না তো কোথায় রাখবো? আচ্ছা ঠিক আছে মার্কেটের সামনে বাইক পার্কিং করা যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমি জানতাম না, এই প্রথম জানলাম এবং সতর্ক হলাম, সামনে থেকে বুঝে-শুনে পার্কিং করবো।

ট্রাফিক পুলিশ মইনুল সাহেব: এত কথা বলেন কেন? আচ্ছা শুনেন মামলা হলে ৪০০ টাকার মামলা হবে, আপনি ২০০ টাকা হ্যান্ড ফি দিয়ে দেন মামলার ঝামেলা পোহাতে হবে না।

আমি: স্যার আমাকে অন্তত একবারের জন্য সতর্ক হওয়ার সুযোগ দেয়া উচিৎ।

শেষ পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ আমান সাহেব "রং সাইড ড্রাইভিং" কমেন্ট করে ২০০ টাকার একটি মামলা আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন।

এই কথোপোকথনে প্রায় ৩০-৪০ মিনিট চলে গেল। এরপর মামলাটি ভাঙ্গিয়ে ১:৩০ মিনিটে গুলিস্থান থেকে দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।

এবার আসি মূল কথায়, এর আগে আমার সামনে কেউ পুলিশ সম্পর্কে উল্টা-পাল্টা বললে উল্টো আমি তাদের বলতাম মিয়া আপনি/তুমি ঠিকমত চলো না পুলিশের দোষ দাও কেন?

আর এই দুই-তিনদিন আমি ঢাকায় অবস্থান করে বুঝতে পারলাম সাধারণ মানুষ পুলিশকে এতটা নিচু প্রকৃতির ভাবে কেন, কেন পুলিশকে অন্য প্রাণীর সাথে তুলনা করে।

এখানে আমি নিজে আইন মেনে চলেও যদি এতটা হয়রানির শিকার হই, তাহলে একটু-আধটু ভুল করা সাধারণ মানুষগুলোর কি অবস্থা হতে পারে?

একজন মানুষ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেয় এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে যে সে দেশ ও জনগণের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখবে। কিন্তু সে তার পুরো উল্টো টা করছে। কেন.....? আপনারাই তা খুজেঁ দেখুন!

আমি চাই পুলিশ বাহিনী হোক সাধারণ মানুষের স্বস্তি এবং অপরাধীদের ত্রাস কিন্তু, আদৌ কি তা সম্ভব?

হ্যা সম্ভব। কারন পুলিশ সবাই খারাপ না, পুলিশের কিছু অংশ অসাধু। এই অসাধুদের অন্যায় কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের সকলের প্রতিবাদী হতে হবে। অপরাধ মেনে নেয়া যাবে না, সাহসী হতে হবে। আর এর সাথে পুলিশ কর্তৃপক্ষকেও নিজেদের ইমেজ ঠিক রাখতে এই আগাছা পরিস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ঢাকাতে আমার অনেক বন্ধু, বড় ভাই, ছোট ভাই- সাংবাদিক, নেতা এমনকি পুলিশ বাহিনীতেও কর্মরত আছে। পারতাম তাদের ব্যবহার করে এই হয়রানির থেকে রক্ষা পেতে কিন্তু, এটা করলে আমি নিজেই একটা অন্যায় করতাম বলে আমি মনে করি। এই হয়রানি থেকে আমি শুধু নিজে নয় সকল জনগণের মুক্তি চাই।

উপরের ঘটনায় আমি প্রতিবাদী হয়েছি। সরাসরি নয় তবে পুলিশ কর্তৃপক্ষের দ্বারা।

অভিযোগ করেছি পুলিশের আইজিপি সেলে। আশা করি তারা তাদের প্রাপ্য শাস্তি পাবে এবং ভবিষ্যতে কাউকে হয়রানি থেকে বিরত থাকবে।

পুলিশের দ্বারা হয়রানী বা দূর্নীতির স্বীকার হলে--
‘আইজিপি’স কমপ্লেইন সেল’ ০১৭৬৯৬৯৩৫৩৫, ০১৭৬৯৬৯৩৫৩৬ মোবাইল নম্বরে অথবা [email protected] ই-মেইলে এ সেলে অভিযোগ করুন। অথবা অনলাইনে অভিযোগ দাখিল করুন- Click This Link এই লিংকে লগঅন করে।

(বিঃদ্রঃ আমি আইজিপি'স কমপ্লেইন সেল এ অভিযোগ করে ন্যায় বিচার পেয়েছি। আশা করি আপনিও পাবেন।)

সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন নিজের আশপাশ।
পুলিশ হোক জনগণের বন্ধু।।

#ছবি_সংগৃহীত__

মোঃ পলাশ খান
১০/০৩/২০১৯ইং

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:০৫

আকতার আর হোসাইন বলেছেন:

আপনার সাহস অনুপ্রেরণা যোগাবে। প্রয়োজনের সময় কাজে লাগাতে পারলেই হল।

আর আইজিপিস এর নম্বরটা দিয়ে ভাল করেছেন। ধন্যবাদ।

১৬ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৫২

মোঃ পলাশ খান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ.।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: দেশ এগিয়ে যাক এটাই চাই।

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:২৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: তারা না হয় ঘুষ দিয়ে চাকুরিটা পায়। কিন্তু ছোটবেলা, স্কুল, কলেজ সব তো বাংলাদেশের সাধারণ পরিবারের সদস্যদের মতই। তাহলে কেন পুলিশে গেলেই তারা এমন ছ্যাঁচড়া হয়ে যায়? কেমন বিবেক?

১৬ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৭

মোঃ পলাশ খান বলেছেন: তাদের বিবেক নষ্ট হওয়ার জন্য আমরা আম-জনতাও দায়ী আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.