নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাহাদাত নোমান

পথিক নোমান

পথিক নোমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনীতি, শাহবাগ, প্রত্যাশা এবং সমালোচনা।

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬

আমি ব্যক্তি গতভাবে নৈরাশ্যবাদী নই। বুকের তীব্র ব্যথার মাঝে ও আমি সুখ খুঁজে পাই। শাহবাগের আন্দোলনের সাথে আমার সংহতি শুরু থেকেই। এখনো তাদের সাথে কোনো বিরোধ আমার নেই। শুরু থেকেই তাদের দাবী ভেস্তে যায়নি বলে তাদের অভিনন্দন। ফেসবুক নামের সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটটিতে লগ ইন করলে শাহবাগের হয়ে কথা বলি। শাহবাগে সাইবার যুদ্ধ এর বক্তব্য গুলো আমি শেয়ার করি নিয়মিত। তাদের প্রতি আমার আস্থা অটুট রয়েছে। এরকম আস্থা সকল বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের থাকা উচিত। যার নেই তিনি নিঃসন্দেহে অকৃতজ্ঞ। আমার ধারনা শাহবাগীদের কখনই *বিচার প্রভাবিত করার উদ্দেশ্য ছিলনা। তা না হলে তারা ফাঁসী চেয়ে ক্ষান্ত থাকতো, কিন্তু তারা **জামাত শিবির নিষিদ্ধ করারও দাবী জানিয়েছে।

*;- যারা মনে করছেন আর্ন্তজাতিক ট্রাইব্যুনালে দেশের বাইরের কোনো বিচারক নেই কিংবা এটি আর্ন্তজাতিক ট্রাইব্যুনাল না হয়ে অ_র্ন্তজাতিক ট্রাইব্যুনাল বা দেশীয় ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে, তারা মুলত আর্ন্তজাতিক ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে কানা-কড়িও জানেন না। এতটা তীব্র ভাবে বলার কারন হলো, এ বিচারটি দুই ভাবে হতে পারে। (১) এ বিচারটি সম্পাদন করতে পারেন আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান বা আদালত।(২) আবার কোনো রাষ্ট্র এ বিচারটি করতে পারেন রাষ্ট্রীয় আদালত দিয়ে; তবে সেটা অবশ্যই আর্ন্তজাতিক ট্রাইব্যুনাল নীতিমালা অনুসারে হতে হবে।

আমাদের বিশ্বাস এটা আর্ন্তজাতিক ট্রাইব্যুনাল নীতিমালা অনুসারেই হচ্ছে। তা না হলে বিভীন্ন রাষ্ট্রদূতদের এবং মানবাধিকার কমিটির উদ্রেকের বিষয় হতো। তারা নিশ্চয় আওয়ামীলীগ করেন না। সুতরাং এ ধরনের মন্ত্যব্য নিতান্তই হাস্যকর বৈকি!

**;-জামাত-শিবির নিষিদ্ধকরনরে দাবীটি যুক্তি সঙ্গত বলে আমি মনে করি। জামাত-শিবির যে চায়নি এ দেশের জন্ম হোক , এটাতো ধ্রুব সত্য! সুতরাং অদম্য সাহসের পরিচয় দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশে তারা কোনো ভাবেই সংসদে বসতে পারে না। পৃথিবীতে এমনও নজির আছে যে, স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষরা, দেশ স্বাধীন হবার পর তারা রাষ্ট্রীয় মৌলিক অধিকার থেকে বিবর্জিত হয়। সারা বিশ্ব তখন তাদের নৈতিক সমর্থনও জানিয়েছে। কিন্তু আমাদের পোড়া দেশে সাঈদী ওরফে দেলু রাজাকার দুই-দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ( হে রক্তসিক্ত আর্দ্র বাংলার মাটি,আমাদের ক্ষমা করো। আমরা এ কলঙ্ক দুর করবো ইনশা-আল্লাহ! আমাদের দোয়া করো হে ত্রিশ লক্ষ শহীদ আত্মা!) যাই হোক আজ ৪২ বছর পরে হলেও এ কলঙ্ক দুর করার সুযোগ এসেছে। এটা আমাদের জন্য সুখবর।

বর্তমান পরিস্থিতি শান্তি প্রিয় মানূষদের একটু আহত করে বটে। তোমরা যারা শিবির করো তারা আমাদেরই মায়ের সন্তান। জামাতের সাথে থেকে তোমরা আজ মনোবিকারগ্রস্থ। ঐসব কুলাঙ্গারদের জন্য তোমরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেনা। অন্তত নিজের মায়ের সাথে নিমক হারামী করো না। আর পুলিশ ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ রইলো, আপনারা জনগনের টাকা থেকে বেতন পান, সুতরাং সর্বোচ্ছ ধৈর্য সহকারে কাজ করবেন। খেয়াল রাখবেন আপনাদের যেন জনগন শত্রু না ভাবে।



আন্দোলনের সচ্ছতা,মৌলিক নৈতিকতা এবং গ্রহনযোগ্যতার খাতিরে শাহবাগের সহযোদ্ধাদের কিছু কথা না বললে অপরাধ হবে।

আপনারা জানেন, জামাত শিবির সারা দেশে ঘৃন্য নৈরাজ্য চালাচ্ছে। এতে ভয় পাবার কিছু নেই। মনে রাখবেন, প্রদীপ নেভার আগে দপ দপ করে জ্বলে উঠে। বিভীন্ন ধর্মগ্রন্থ এবং কুরআনে আল্লাহ আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, সত্যের উত্থান হলেই মিথ্যার পতন অনিবার্য। সুতরাং আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ রইলো, জামাত শিবিরকে পরাভূত করতে হলে কোনো রাজনৈতিক শক্তির সাহায্য নেবেন না। কোনো প্রকার রাজনৈতিক নেতা বা দল এখানে ঠাঁই দেবেন না। এদের উদ্দেশ্য মোটেও ভালো নয়। সামনে নির্বাচন তাই এরা কেবল ভোল পাল্টেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী নেত্রী কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমের কদম বুসির দৃশ্য জনগন ভোলেনি। তাই আওয়ামী নেত্রী রাজাকার বিরোধী কথা বলার আগে জনগনের কাছে ক্ষমা চাইবেন। দয়া করে নিজের বাবার নামকে কলঙ্কিত করবেন না। তা না হলে বি এন পি এবং আপনার মাঝে কোনো পার্থক্য থাকবেনা।

শাহবাগের সহযোদ্ধাদের এসব ব্যাপার গুলো ভুলে গেলে চলবেনা। আওয়ামী নেত্রীর ৯৬ এর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবী না উঠলে ১৬ কোটি মানুষের প্রানের আকাঙ্খা নষ্ট হয়ে যাবে। সকল যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্ছ শাস্তি চাই। সকল প্রকার রাজাকারদের রাষ্ট্রীয় মৌলিক অধিকার থেকে বিবর্জিত করতে হবে। হোক না সে সরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাহলেই আন্দোলনের সচ্ছতা,মৌলিক নৈতিকতা এবং গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।

ডাঃ ইমরান এইচ সরকারকে কিছু কথা না বলে পারছিনা। আপনি অবশ্যই শ্রদ্ধাভাজেনেষু। আপনার প্রতি পূর্ন শ্রদ্ধা রেখে বলছি, দয়া করে গনজাগরন মঞ্চ থেকে খনিকটা দুরে এসে ভালো করে প্রত্যক্ষ, পরীক্ষা এবং অনুধাবন করুন। আপনি কি আপনার অজান্তেই মঞ্চটাকে আওয়ামী মঞ্চ করে ফেলেন নি? অথচ আপনি আমাদের কাছে ওয়াদা কলেছেন যে এটা অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজনীতি পরিশোধনের ডাক। কিন্তু এখন যখন শাহবাগে বিভীন্ন ছাত্র সংগঠনকে আহ্বান জানালেন, তখন তারা নিজেদের সস্তা জনপ্রিয়তা দেখানোর জন্য লোক ভাড়া করে এমনকি জোর করে মঞ্চে আনা শুরু করছে। এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে। এখন দূর থেকে দেখে মনে হয় যেন আন্দোলন ভেস্তে যাচ্ছে। আপনার জানা উচিৎ যে এরা ছাত্র সংগঠনের আদতে রাজনৈতিক দল গুলোর চ্যলা। নির্বাচন এলে এরা মানুষ পিটিয়ে ভোট আদায় করে দল জেতায়। এসব ছুঁচোর দলকে এ পবিত্র মঞ্চে স্থান দেয়া আপনার মোটেও উচিৎ হয়নি। আর যদি জেনে বুঝে এসব করে থাকেন তাহলে জনগন আপনাকে ক্ষমা করবেনা। আপনি ইতিহাসের কলঙ্কিত সন্তান হয়ে থাকবেন। সুতরাং সাবধান। তা না হলে তো সত্যের উপর জনগনের বিশ্বাস উঠে যাবে।

সর্বাধিক মুক্তিযোদ্ধাবিশিষ্ট রাজনৈতিক দল বি এন পি এর উদ্দেশ্যে বলছি, আওয়ামীলীগের ৯৬এর ভূলের জন্য আপনারা যেমন নিন্দা করেন আমরাও করি। কিন্তু এ দোহাই দিয়ে আপনারা অস্তিত্বের সংকটে ভুগতে থাকা জামাত শিবির বাঁচাবেন না। জনগনের মন ভেঙ্গে এদেশে বেশিদিন রাজনীতি করতে পারবেন না। পুলিশের নির্বিচারে গুলির দোহাই দিয়ে হরতাল ডেকে জনগনের পেটে লাথি মারার অধিকার আপনাকে কোন গনতন্ত্র দিয়েছে? দয়া করে জামাত বাঁচানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করুন। আর মীর্জা ফখরুল সাহেব শুরু থেকেই গনজাগরনকে অবমাননা ও অপমান করেছেন। যে লোক বা দল মানুষের দাবীকে সম্মান জানাতে পারেনা তারা কোন লজ্জায় রাজনীতি করতে আসেন।

আওয়ামিলীগ, বি এন পি এবং তার যা অঙ্গ সংগঠন যা আছে, দয়া করে নোংরা রাজনীতি করবেন না। আম জনতা আপনাদের সব চাল বুঝতে পারে, তবে চক্ষু লজ্জার কারনে অনেক কিছু বলেনা। চক্ষু লজ্জা আপনাদের না থাকতে পারে জনগনের আছে। তাই খবরদার বাঙ্গালীপনার অস্তিত্ব নিয়ে নোংরামী করবেন না। জনগন বরদাস্ত করবেনা।

যাই হোক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে, এটা অবশ্যই আনন্দের বিষয়। কিন্তু এখনো উল্লাস করার সময় আসেনি। যুদ্ধাপরাধীদের ঘাঁটি এতটা ঠুনকো নয়। সারা বিশ্বে তাদের টাকা বানানোর মেশিন আছে। তাদের অস্ত্র এবং অর্থ আমাদের জন্য বিপদজনক হাতীয়ার। কিন্তু আমাদের যেহেতু নৈতিক চেতনাবোধ আছে, তা দিয়েই আমাদের বিশ্ব জয় করতে হবে। বিশ্ব কখনো আমাদের খোঁজখবর নিয়ে সমর্থন নেবেনা। আমাদেরই বিশ্বের দরজায় কড়া নেড়ে নৈতিক সমর্থন যোগাতে হবে। বিদেশ বিভুইঁয়ে যারা বাঙ্গালী ভাই ও বোনেরা আছেন আপনাদের দায়িত্ব হলো, বাঙ্গালী অধ্যুষিত এলাকায় নৈতিক সাহায্য নিয়ে গনজাগরন মঞ্চ গঠন করবেন, সংবাদ পরিবেশন সংস্থার সাহায্য আবদেন করবেন, প্রয়োজনে লিফলেট বিতরন করবেন, বিভীন্ন শিল্প গোষ্ঠিরা গনজাগরন মঞ্চের দায়িত্ব গ্রহন করবেন, যে যেভাবে পারেন সর্বোপরি রাজাকার বিরোধী জনমত গঠন করবেন।

দেশের সর্বোস্তরের মানুষের প্রতি আমার গভীর ও শক্ত আহ্বান, আপনারা শান্তিপূর্ন কর্মসূচী পালন করুন, কবিরা কবিতায় জনমত গড়ে তুলুন, লেখকরা তাদের লেখায়, ব্যবসায়ীরা লিফলেট বিতরন করবেন, কলকারখানার শ্রমিকরা প্রতিদিন কাজ শেষে গনজাগরন মঞ্চে অংশ নেবেন, ছাত্ররা খেলার সময় মঞ্চে অংশ নেবেন, কৃষকেরা মাঠের কাজ শেষে মঞ্চে যাবেন, সকল স্তরের শিল্প গোষ্ঠি ও শিল্পিরা গনজাগরন মঞ্চের দায় দায়িত্ব বহন করবেন।

মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রয়োজনে মঞ্চের পাশে মেডিক্যাল ক্যম্প করবেন, বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্ররা সেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করবেন, ব্যবসায়ীরা সংগ্রামী ভাই ও বোনদের পানি এবং শুকনো খবার পরিবেশন করবেন।

ভুলে যাবেন না, আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের দাম ত্রিশ লক্ষ প্রান এবং আড়াই লক্ষ মা ও বোনের সম্ভ্রম। আপনার কিছু অর্থ এবং সময় সে তুলনায় অতি নগন্য এবং তুচ্ছ।

শাহবাগের আন্দোলন সফল হোক। জয় বাংলা, বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

মদন বলেছেন: +

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:২২

পথিক নোমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.