![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। জীবনটাকে সহজ করে ই দেখতে পছন্দ করি ।
আজ মিলার বিয়ে। বিয়ের আসরে প্রচুর মানুষ ঘোরাঘুরি করছে। চারিদিকে প্রচন্ড ব্যস্ততা, বিয়ের অপরূপ সাজে সেজে মিলা বসে আছে বর কনে’র জন্য সাজানো স্টেইজ এ। চারিদিকে চলছে ক্যামেরা আর ভিডিও। ফ্ল্যাশ লাইটের সামনে মুখে হাসি ধরে রাখলেও মিলা ভেতরে ভেতরে খুব ই উত্তেজিত, নতুন অজানা জীবনের অনিশ্চয়তায় কিছুটা শংকিত, আবার একিসাথে দীর্ঘদিনের প্রণয়ের পর পরিণয়ের আনন্দেও আনন্দিত। বিয়ের ভারী সাজে এই ঠান্ডার দিনেও ঘেমে উঠছে মিলা। আনমনে চোখ চলে যাচ্ছে বার বার ঘড়ির দিকে। প্রায় ৮ টা বেজে গেল, আনিস বোধ হয় রওয়ানা দিল।
রাত ৮ টা। আনিস বরের সাজে সজ্জিত। ঐতিহ্যবাহী শেরওয়ানি নেই পরনে, টোপর ও নেই। একি সাথে বিয়ে এবং বৌভাত অনুষ্ঠিত হবে বলে অনেক পরিকল্পনা পর আনিস ঠিক করেছে হালকা ছাই বর্ণের স্যুট, সাদা শার্ট আর লাল টাই পড়বে কালো প্যান্ট এর সাথে। লাল টাই পড়বে কিনা এ নিয়ে আনিস কিছুটা দ্বিধার মাঝে ছিল। কিন্তু শাড়ির সাথে ম্যাচিং করতে হবে বলে মিলা ই পছন্দ করেছে টাই টা। নিচে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বরযাত্রীদের মাইক্রোবাস আর গাড়িগুলা। সবকিছুর কেন্দ্রে আজ সে নিজে। এটা চিন্তা করেই আনিস আবার নার্ভাস ফিল করতে লাগল, ঘড়ির দিকে তাকাতে লাগল বার বার। ৮ টা বেজে গেছে। মিলা নিশ্চয় ই টেনশন শুরু করবে। এদিকে নিজের বিয়ে, তাই সবাইকে তাগাদাও দিতে পারছে না।
কমিউনিটি সেন্টার! প্রায় পৌনে নয়টা বাজে, বরের গাড়িবহর রাস্তায়। জ্যাম এ আটকে আছে।আসতে আরো একটু দেরি হবে। বরপক্ষ অনুরোধ করেছে, কনে পক্ষের অভিভাবকেরা যেন প্রথম ব্যাচ এর খাওয়া শুরু করে দেন! বর কে দেখতে অধৈর্য্য হয়ে উঠা অতিথিরা প্রথম ব্যাচে বসে খাওয়ার জন্য বসে পড়লেন। মিলা মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে দরজার দিকে। আনিস এর আর আক্কেল হলো না। সারা জীবন ই লেইট। ক্লাসে লেইট, বাইরে যাওয়ার সময় লেইট, লাইব্রেরিতে পড়তে আসার সময় লেইট। আর আজ বিয়ের দিনেও সে লেইট করছে। মুখে হাসি ধরে রেখে দূর দূরান্ত থেকে আসা আত্মীয়দের সাথে ছবির জন্য পোজ দিয়ে যাচ্ছে মিলা। হাতে মেহেদী, পরনে সবুজ পাড় লাল শাড়ি, মিলাকে অনিন্দ্যসুন্দরী লাগছে আজ। যদিও ফটোগ্রাফারদের উপর কিছুটা বিরক্ত মিলা। একেকবার একেক পোজ দিতে দিতে কিছুটা ক্লান্ত ও হয়ে উঠেছে সে।
রাত ৯ টা ৩০ মি, বাইরে থেকে হৈ চৈ শোনা গেল। কে এক জন কানে কানে বলে গেল, দুলাভাই আসছে! এত দেরি করে আসায় একটু রাগ লাগতে লাগল মিলা’র। এদিকে সারাজীবন বরপক্ষ হয়ে এসে গেইট এ ঠেলা দিয়ে বা কনে পক্ষের হয়ে গেইট আটকে দিতে অভ্যস্ত আনিস, আজ নিজেকে বরের জায়গায় দেখতে পেয়ে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়ে গেল। গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতেই ফ্লাশের আলো আর কনেপক্ষের ও বরপক্ষের লোকদের গেইট ধরাধরি নিয়ে বাদানুবাদ আনিসের নার্ভাসনেস বাড়াতেই থাকল।
মিলা ভাবছে বসে, গাধা আনিস, এতক্ষন লাগে গেইট এর ফিতা কাটতে! আত্মীয়দের চোখ এড়িয়ে মিলা উঁকি দিচ্ছে গেইট এ। অবশেষে আরেকটা হৈচৈ হতেই মিলা বুঝতে পারল ফিতা কাটা হইছে। এবার রাগের বদলে মিলার একটু মজা লাগতে শুরু করল। কেমন লাগছে আনিসকে! ও নিশ্চয় ই অনেক নার্ভাস!
একটু পর ই আনিস কে হেঁটে স্টেইজ এর দিকে আসতে দেখল মিলা। সাথে অনেকে। আনিস এর জন্য জায়গা করে দেয়ার জন্য মিলা একটু সরে বসল। আহারে, বেচারার মুখটা একটু শুকিয়েই গেছে। আনিস এর উপর থেকে মিলার সমস্ত রাগ চলে গিয়ে আসল মায়া। আনিস পাশে এসে বসতেই মিলার অনেক মায়া লাগল মানুষটার জন্য। একটু আগের সব রাগ চলে গেছে। এই মানুষটাই আজ থেকে তার জামাই! কেমন চুপচাপ বসে আছে মানুষটা ।
ভিড় একটু ফাঁকা হতেই, অতিথিদের চোখের আড়ালে আনিস মিলাকে বলল, “তোমাকে আজ মাশাল্লাহ খুব সুন্দর লাগছে”। মিলা মনে মনে খুশি হলেও কপট রাগ দেখিয়ে বলল, “এত দেরি লাগে আসতে? ” আনিস এবার মুচকি হেসে বলল, “রাস্তায় জ্যাম…….” আর কিছু বলার আগেই মুহুর্মুহু ক্যামেরার ফ্ল্যাশ লাইট জ্বলতে লাগল, হাসিমুখে আনিস-মিলা সবার সাথে ছবি তুলতে লাগল।
দেড় ঘন্টা পর, কনের বিদায়বেলা উপস্থিত। আনিস মিলা সবাইকে সালাম করছিল। মিলার মাকে সালাম শেষ করতেই মা কে জড়িয়ে ধরে মিলা কেঁদে উঠল। এ কান্নার জন্য আনিস প্রস্তুত ছিল না। সমস্ত পরিবার কে ছেড়ে মিলা ওর কাছে আসছে, এটা নতুন করে উপলব্ধি করল আনিস। চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে মিলার পাশে। মিলার মা বাবা মিলার হাত তুলে দিলেন আনিস এর হাতে। আনিস শক্ত করে ধরল সে হাতখানা। নার্ভাসনেস কেটে গিয়ে প্রথমবারের মত নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে পরিপূর্ণ সচেতন হলো সে। মিলার হাত শক্ত করে ধরে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল, কখনোই এ হাত সে ছেড়ে দেবে না। অনেক সাধনা করে পাওয়া যে এ মানুষটা! আনিসের বাবা মা ও মিলাকে কাছে টেনে নিলেন। মিলা যে শুধুই এ বাড়ির বড় বৌ ই নয়, এখন থেকে এ বাড়ির একমাত্র কন্যাও।
আনিস মিলা তাদের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকীর দ্বারপ্রান্তে। যখন তারা একসাথে থাকে, তখন তাদের আনন্দের শেষ থাকে না। কিন্তু মাঝে মাঝে তাদের থাকতে হয়ে আটলান্টিক এর এপার আর ওপারে। সে সময়টা তাদের অত্যন্ত বিরহে কাটে। মাঝে মাঝে টেলিফোনে আনিস এর সাথে রাগ করে মিলা ফোনের ওপাশে কেঁদে ফেলে। মিলা কাঁদলে আনিস খুব অবাক হয়ে খেয়াল করে বাইরেও সে সময় কেন জানি মুষলধারে বৃষ্টি হয়! এটা কি কোন কো-ইন্সিডেন্স কিনা আনিস ভেবে পায় না।
জগতে কত কিছুই ঘটে ব্যাখ্যার অতীত। আনিস আর এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামায় না।
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৯
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: একমত ভাই ইয়াশফিশামসইকবাল,
আমার স্ত্রী ও আমাকে প্রায় একি কথা বলেছেন।
মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
২| ১৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮
এরিস বলেছেন: ডিফরেন্ট প্যাটার্নে লেখা। সুন্দর গল্প। প্লাস।
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১১
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ব্লগার এরিস।
প্লাস দেয়ার জন্য অনেক বড় একটা ধন্যবাদ। প্লাস সবসময় ই লেখার উতসাহ দেয়।
৩| ১৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:২৫
সোহাগ সকাল বলেছেন: লেখার আনকমন স্টাইল। ভালোলাগা!
+
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৩
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: ব্লগার সোহাগ সকাল।
অনেক ধন্যবাদ। আপনার লেখার মান থেকে অনেক দূরে আমি। আপনার লেখার মত লেখা লিখতে চেষ্টা করছি।
উতসাহ দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৪| ১৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: কিছুটা অন্যরকম! তবে ভালো লাগল আচ্ছা,আনিস কি বাস্তব চরিত্র?মানে গল্পটা কি পরিচিত কারো জীবন থেকে নেয়া?
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:২৯
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: হমম, আনিস মিলা বাস্তব চরিত্র। যদিও বর্তমান পৃথিবীতে তারা ভিন্ন নামে আছে। তাদের জীবন থেকে নেয়া।
তাদের জীবনে আসলে অনেক টুইস্ট আছে। এই গল্পে কিছুই বলা যায় নাই। যেকারণে গল্পটা পড়ার সময় পাঠক অনেক বোরড হয়ে যাবেন।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ব্লগার শুকনোপাতা০০৭
৫| ১৫ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৯
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ভাল লাগলো..... অন্যরকম লেখা।
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩১
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
ব্লগার ইরফান আহমেদ বর্ষণ।
ভাল থাকবেন।
৬| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:৩৬
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: সোহাগ সকাল বলেছেন: লেখার আনকমন স্টাইল। ভালোলাগা!
+
১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: ব্লগার স্বপ্নবাজ অভি,
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকবেন।
৭| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: লেখাটায় কয়েকটা চমৎকার মূহুর্তকে চমৎকারভাবে ফ্রেমে বন্দী করেছেন!
চরিত্রগুলা বাস্তব হয় তাহলে বলব তাদের মাঝখান থেকে আটলন্তিক সরে যাক
১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৮
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ব্লগার মাসুম আহমদ ১৪,
চরিত্র গুলা বাস্তব, যদি ও ভিন্ন নামে আছে তারা এই পৃথিবীতে।
তারাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, আটলান্টিকের বাধা কবে সরে যাবে তাদের মাঝ থেকে। তাদের কে আপনার শুভকামনা জানিয়ে দিব।
মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৮| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
লেখার স্টাইল, অভিব্যাক্তি গুলো সুন্দর করে গুছিয়েছেন। অনেকেই অনেক সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। তবু লেখা চালিয়ে যাবেন এই শুভ কামনা রইল। ++++ রইল।
১৭ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৭
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন:
উতসাহ দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
ব্লগার কান্ডারী অথর্ব।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৫
ইয়াশফিশামসইকবাল বলেছেন: এই টা কন কিসিমের গল্প হইল!!! এই টারে লেখা না বলে টেখা বলা জেতে পারে