রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম নিয়েও রিট করতে দিতে হবে ! এটাই কি স্বাধীন মতামত !!

১৩ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫

আমরা সামান্য ঘটনা নিয়ে খুব বেশী উদিগ্ন হয়ে যায় অথচ এদিকে যে চুপিসারে সংবিধান থেকে 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' মুছে ফেলার প্রক্রিয়া চলছে- তা নিয়ে অধিকাংশ বাঙালীর কোন ধারনাও নেই, মাথাব্যথাও নেই! এইসব খবর সামনে পড়লেও পাশ কাটিয়ে যেতে চায়!

আজ বড্ড আশ্চর্য লাগে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম নিয়েও রিট করতে দিতে হবে ! এটাই কি স্বাধীন মতামত !!
এটাই কি সার্বজনীন মত প্রকাশ ! এটাই কি গনতন্ত্র ! আমার অস্তিত্ব,আমার শেকড় নিয়ে কাউকে যা ইচ্ছা তাই করতে দিতে হবে ?

কখনো কোন মুসলিম তো কারো বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায় না,কারো স্পর্শকাতর কারো শেকড় কিংবা অস্তিত্ব নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেনা।
মুসলিম নিয়ে প্রতিটি ঘটনায় লক্ষ্য করে দেখবেন, সব সময় মুসলিমকে নিয়ে খোচাখুচি করা হয়, মুসলিম ভাইদেরকে উত্তেজিত করতে নানান ধরনের বিরুপ মন্তব্য করা হয় । কিন্তু মুসলমানরা কিছু বলতে গেলেই এটা পাপ, এটা অপরাধ ,এটা সমাজ বিরুধী । এটা এই সেই নানান অপবাদ, কি আজব ? এই নাকি গনতন্ত্র ! এই নাকি স্বাধীন মতামত !!
মুসলমান টুপি পাঞ্জাবি আর দাড়ি রাখে বলে তারা মান্দাতা আমলের মানুষ ,তারা আধুনিক হতে পারবেনা, তারা কিছু বললেই নানান ভাষায় বিরুপ মন্তব্য করে তাদের অপমান করা হয় ।কিন্তু কখনো ভাবেই না প্রতিটি ইমানী শক্তি ধারী মুসলমান ভাই কতটা আধুনিক,ইসলামী বিশ্ব সম্বন্ধে কতটা জ্ঞান রাখে ! এই টুপি,এই ইসলামী লেবাস পাঞ্জাবী কত টুকু সম্মানের তা আদেল মিয়ারা কেমনে বুঝবে!
হয়তো ইমানী সরলমনা মুসলমান ভাইয়েরা তাদের মত বাঝে চিন্তাধারার না ,তারা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টিতেই বিশ্বাস করে ,তারা অন্যদের মত হয়তো মা বাবা ভাই বোন কে টকিয়ে নানান বাঝে কাজে জড়িয়ে পড়ে না । যেমন সানি লিওন,কিম কারদিশিয়ান,ক্যাট্রিনা,মল্লিকা দের দেখে সেই সব মানুষ উৎসাহে এগিয়ে যায় আর ইমানী শক্তি ভাইয়েরা এমন নাম শুনেই লজ্জায়, আতঙ্কে, ভয়ে, অন্ধকার ঘরে চুপিচুপি আল্লাহর ইবাদত করে যায় । হয়তো এতাই ওদের সমস্যা !
কখনো তো দেখেনি মুসলমানরা গায়ে পরে কারো ধর্ম নিয়ে বিরুপ কোন মন্তব্য করতে,বা কিছু বলতে তাহলে ইসলাম ধর্ম নিয়ে সবার এতো সমস্যা কেন !
হয়তো শান্তি জিনিসটা কারো কারো কাছে বেশী ভাল লাগেনা !


একটি ঘটনা দিয়ে অন্য একটি ঘটনা ডেকে দেয়ার পদ্ধতি ইদানিং খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে,
যেমন, কাল বিড়াল ঘটনা ডেকে দিয়েছিল, ইলিয়াস আলিকে গুম করে !
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘটনা ডেকে দেওয়া হয়েছিল পৌর নির্বাচনে ।
এছাড়া আরও অনেক বিচিত্র ঘটনাকে অন্য ঘটনা দিয়ে ডেকে দেওয়া হয়েছে ।

যারা রাস্ট্র ধর্ম ইসলাম বাদ দিতে চায় তারা জানে এই মুসলিম প্রিয় দেশে এতো সহজে তা সম্ভব না, তাই কিছু ঘটনা জন্ম দিতেই হবে,
আর সেই সুযোগ আছে সামনেই, যেমন টি২০ বিশ্ব কাপ বাংলা টিমের সাথে যেকোন ঘটনায় জন্ম নিতে পারে সেই ক্ষন ,
কারন ওপারে যারা তারা ঘটনা জন্ম দিতে খুব উস্তাদ,আর বাঙ্গালী খেলা প্রিয় জাতি বাংলার কোন খেলোয়ার অপমানিত হলে কাউকেই ছাড় দেবে না এটা বার বার প্রমানিত ।
আর একটি হল বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাক ডাকাতি, এই ঘটনা যে আর কোন নাটক তৈরি করে তা সময়েই বলে দেবে ।
ক্রিকেট খেলা আমিও দেখি, টাইগারদের সাফল্যে উল্লসিত আমিও হই,
কিন্তু তাই বলে একটা খেলাকে কখনোই ধর্মের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে পারি না।
নাচ,গান,খেলা নিয়ে একটা ইভেন্ট খুললে এক ঘন্টার মধ্যে পুরো দেশের মানুষ হাজির,
অথচ ইসলামের স্বার্থে ইভেন্ট খুলে ইনভাইট করেও লোক খুজে পাওয়া না!
সামান্য একটা গ্রুপ,পেইজ বা নানা ইভেন্টকে আমরা ধর্মের চেয়ে এত বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি!
সেলুকাস! কি বিচিত্র জাতি আমরা!

সংবিধান থেকে যেদিন 'বিসমিল্লাহ' তুলে দেয়া হয়েছিল সেদিনও আমরা এভাবেই চুপ করে ছিলাম।
যেদিন কোরবানি পশু জবাই নিষিদ্ধ করতে রিট করেছিল আমরা চুপ ছিলাম ।
যেদিন গরু কোরবানি বন্ধ করতে বলে তখনও আমরা চুপ ছিলাম ।
আমাদের সেই নীরবতাই আজ তাদের সাহস আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
খেলা কিংবা বিভিন্ন প্রোগ্রাম নিয়ে আমরা যে মাত্রাতিরিক্ত আবেগ দেখাচ্ছি তার একশো ভাগের এক ভাগও
কি ইসলামের জন্য দেখাতে পারি না?
তাহলে তো ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার দুঃসাহসও কেউ এদেশে দেখাতে পারত না।
বেশি কিছু করার দরকার ছিল না, ইদানিং কেবল ফেসবুকে আর স্কুল কিংবা শহীদ মিনারে বা বিভিন্ন রাস্তায় মানব বন্ধ করে
সবাই এক হয়ে প্রতিবাদ করলেই অনেক কিছু হয়ে যেত।

এদেশের লক্ষ লক্ষ মুসলিম নামধারী ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করে। অনেক বড় বড় সেলিব্রিটিও আছে।
মুসলিম নামধারীদের অর্ধেকও যদি রাষ্ট্রধর্ম অপসারনের প্রতিবাদ করে অন্তত একটা স্ট্যাটাস দিত
তাহলেও সারাদেশে খবর হয়ে যেত- তোলপাড় সৃষ্টি হত- যারা ইসলাম নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা পিছু হটতে বাধ্য হত।
কিন্তু আমরা সেটা করব না কারন স্বার্থে লাগবে..
আমরা শুধু তথাকথিত খেলা, নাচ,গান আর নানান প্রোগ্রাম নিয়ে মাতামাতি করে মূল্যবান সময় অপচয় করব।
হৃদয়ের সব আবেগ ঢেলে দেব অর্থহীন এক অপাত্রে...
প্লেয়ারদের,ডান্সারদের,শিল্পীদের জন্য এটা পেশা, তারা ক্রিকেট খেলে,গান করে,নাচ করে বাড়ি পাবে, গাড়ি পাবে, সম্মান পাবে, সুন্দরী নারী পাবে- আর আপনি আমি সারাদিন গাধার মত লাফালাফি করে অবশেষে পাবো ঘোড়ার আন্ডাটা!
দিনশেষে এসব প্রোগ্রাম তো কেবল একটু সময়ের জন্য আনন্দের খোরাক!
এটা না পৃথিবীতে কোন কাজে আসবে, না মৃত্যুর পরে...
এসব অনুষ্ঠানের কয়েক ঘন্টার বিনোদন দেয়া ছাড়া
আর কোন উপযোগিতাই নেই।
কিন্তু এই বিনোদনের ফাকে যদি আপনি আপনার মুল্যবান জিনিস,আপনার ভিত্তিটা নড়বড়ে করে দেন তাহলে সারা জীবনের জন্য
এমন কি আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনেক খারাপ কিছু বিপদ রেখে গেলেন, যা মুসলিম বা ইসলাম ধর্মী সবাইকে সারা জীবন পস্তাতে হবে, তাই এখনই সময় অন্তত নিজ ধর্মকে নিয়ে যারা অপমান করে তাদের প্রতিবাদ করা,
নিজের অস্তিত্বের স্বার্থে, নিজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে । নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে।

জয় হউক সারা মুসলিম জাতির। জয় হউক ইসলাম ধর্মের ।
কাফির মুনাফিক নিপাত যাক ।
নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার ।
দুনিয়ার মুসলিম এক হও ।

১ টি +০/-০