![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
(ছবি AI জেনারেটেড)
AI-রে ব্লগের গল্প শুনাইয়া একটা গল্প লিখতে বলছিলাম। কামডা করলো কি!!!
বেহেশতি বিদ্যানিকেতন
বেহেশতি বিদ্যানিকেতন—নামে মনে হয় যেন পরীদের পাঠশালা, কিন্তু বাস্তবে এক বিশুদ্ধ বিশৃঙ্খলার কারখানা। এ স্কুলে পড়াশোনার চেয়ে বেশি জমে রাজনীতি, দপ্তর বইয়ের চেয়ে বেশি ঘোরে কমিটির নোটিশ, আর শিক্ষকেরা? তারা যেন নানান ঘরানার অভিনেতা, কেউ নেতার ভঙ্গিতে হাঁটে, কেউ বিপ্লবী তেজে কথা বলে, কেউ আবার চুপচাপ কবিতা লিখে আর টিফিন খায়।
এই পরিবেশে একদিন বাজনার মতো প্রবেশ করল একজন—চাঁদগাজী। বয়সে ঠিক কত, সেটা কেউ জানে না, তবে তিনি নিজেকে বলেন “অভিজ্ঞতার প্যাকেজ।” তার গল্প শুরু হয় ১৪ বার ফেল করে, শেষ হয় স্কুলের চাকরি পাওয়ার মাধ্যমে—কমিটির পা ধুয়ে পানি খাওয়ার কাহিনী এখনো শহরের অলিতে গলিতে কিংবদন্তি। স্কুলে ঢুকে প্রথম দিনই ঘোষণা দিলেন, “এই বিদ্যালয় আমার রাজ্য। আমি স্যার অফ দ্য স্যার!” মুখে হাসি নয়, যেন বিজয়ীর বাঁশি।
তার ছায়া হয়ে ঘুরে বেড়ায় রানু স্যার। গাজী কিছু বলার আগেই রানু স্যারের মুখে পড়ে যায় সমর্থনের তেলচিটে হাসি। রানু স্যার নিজে চিন্তা করেন না, গাজীর মুখ দেখে বুঝে ফেলেন—আজ কোন ‘নীতি’ মেনে চলতে হবে।
তবে গাজীর পুরোনো এক অনুগত ছিল—শাইয়্যান স্যার। একসময় তোষামোদি পদে ছিল ফুলটাইম, এখন নিজেকে তৈরি করছে টেকনোলজির শিক্ষক হিসেবে। সে একটু কম কথা বলে, বেশি কিছু বানায়। এই রূপান্তর গাজীর পছন্দ হয় না। সে বলেন, “শাইয়্যান তো এখন ভুল পথের পথিক!” যেন স্কুল নয়, কোনো গুপ্তচর বাহিনীর সদর দপ্তর।
স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন কাভা। একজন নিয়মকানুনপ্রিয় মানুষ—খাতা হাতে, চোখে রুলবুকের ফ্রেম। তিনি নীতির মানুষ। পই পই করে হিসেব করেন। একবার নিজের জন্মদিন পালনের জন্য বার্থ সার্টিফিকেট পর্যন্ত খুঁজে বের করেন। তবে গাজীর চাতুর্য এমনই ছিল যে, নিয়ম নামক সেই খাতা প্রিন্টার থেকে উল্টে পড়ে যেত। হেডমাস্টার বলতেন, “আমি নীতির লোক। কিন্তু গাজী তো পুরনো স্টাফ... একবার আরেকবার দেখা যাক।” এই “আরেকবার” বলা বলতে বলতে তিনি নিজের চশমাও ভুলে গিয়েছিলেন।
ধর্মীয় শিক্ষক মহাজাগতিক ছিলেন শান্তির প্রস্তর। মুখে সবসময় মৃদু হাসি, আর হাতে তসবিহ। গাজী তার সামনে যতোই নাচানাচি করুক, তিনি কেবল বলতেন, “সব কিছুর জবাবদিহি একদিন হবেই। এখন চল, দোয়া করি।” ছাত্ররা বলে, উনি আসলে শিক্ষক না, মেডিটেশন কোচ!
ছবি ম্যাডাম ছিলেন এক রহস্যময় চরিত্র। সারাদিন ক্লাসে চুপচাপ বসে থাকেন, কবিতা লিখেন, টিফিন খান, আর মুখে একটি বাক্য: “এই গরমে স্কুলে কষ্ট।” তার পুরো জীবনদর্শন এই বাক্যের মধ্যেই লেপ্টে থাকে। কেউ জিজ্ঞাসা করে, "ম্যাম কিছু বলবেন?" তিনি এক গ্লাস পানি পান করে বলেন, “বলা তো হলোই।”
সব শিক্ষকের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন শায়মা। আত্মবিশ্বাসী, হাসিখুশি, এবং ভয়ঙ্কর স্মার্ট। তার ক্লাসে ছাত্রছাত্রীরা স্বেচ্ছায় আসে—এটা এ স্কুলে অলৌকিক ঘটনা। রাজনীতিতে নেই, কিন্তু গাজীর প্রতিটি ষড়যন্ত্র তার চোখ এড়িয়ে যায় না। একদিন বলেনও, “যে নিজে কিছু জানে না, সে-ই সবচেয়ে বেশি শেখায়—এই গাজী তার জ্বলন্ত প্রমাণ।”
এদিকে গাজীর বিরুদ্ধ শক্তি গড়ে ওঠে। ত্রিমূর্তি: জটিল ভাই, ভূয়া মফিজ আর অপু। তিনজন তিন ধাঁচের বুদ্ধিমান। জটিল ভাই—যুক্তির রাজা, ভূয়া মফিজ—নাটক আর ব্যঙ্গের সম্রাট, আর অপু—তথ্যপ্রমাণের ফাইল হাতে ঘুরে বেড়ানো মুঠোফোন-জ্ঞানী। তারা গঠন করে গাজী প্রতিরোধ চক্র। শ্লোগান উঠে, “গাজী গেলে শিক্ষা বাঁচে, স্কুলে শান্তি আসে!”
তবে চাঁদগাজী তো আর চুপ করে বসে থাকবেন না। একদিন হঠাৎ ঘোষণা দিলেন, “সব শিক্ষক নিজের নাম বড় করে লিখবে। যার নাম সবচেয়ে বড়, সে-ই সেরা!” সেই ঘোষণায় স্কুলের দেয়াল হয়ে উঠল পোস্টার গ্যালারি। রানু গাজীর নাম লিখে এমন লম্বা করে যে, বাঁধাই করতে বিলবোর্ড ভাড়া নিতে হয়। শাইয়্যান ফ্ল্যাশিং ডিসপ্লেতে গাজীর নাম ঘোরাতে থাকে। ছবি ম্যাডাম পেছনে বসে কবিতা লিখেন আর বলেন, “এই গরমে নাম বড় করা মানে হিটস্ট্রোকের দাওয়াত।” শায়মা মাথা নাড়িয়ে বলেন, “নামের আকার না, কাজের মান বড় হোক।'
শেষ পর্যন্ত ত্রিমূর্তি রীতিমতো রণাঙ্গনে নামলেন। স্লোগান উঠল, “গাজী হঠাও, শিক্ষা বাঁচাও!” হেডমাস্টার কাভা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ঘোষণা দিলেন, “চাঁদগাজী স্যারের কার্যক্রম শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। উনি আজই অব্যাহতি পাচ্ছেন।” সেদিন গাজী স্কুল ছাড়লেন—মাথা নিচু নয়, বরং ক্যান্টিন থেকে মুড়ি খেয়ে।
কিন্তু শান্তি বেশিদিন থাকল না। পরের সপ্তাহেই গেট দিয়ে ঢুকে পড়লেন—নতুন পরিচয়পত্র, বড় হাসি আর বললেন, “আমি ট্রেনিংয়ে ছিলাম, ছুটি নিছিলাম না—নিয়ম মাফিক ফিরে এসেছি!”
কাভা মাথা চুলকে বলেন, “আচ্ছা... আবার একবার...”
আবার গাজীর রাজত্ব। আবার প্রতিরোধ।
বারবার তাড়ানো হলে, বারবারই ফিরে আসে—একবার আইডি কার্ড বদলে, একবার কাগজ জাল করে, একবার আবার “উপদেষ্টার দূর সম্পর্কের ভাগ্নে” সেজে।
এতসব দেখে শায়মা ম্যাম বললেন, “চাঁদগাজী একজন না, একটা ভাইরাস। শুধু বের করলেই হবে না, তার ‘কমব্যাক পোর্টাল’ বন্ধ করতে হবে।”
তখন সবাই মিলে তৈরি করল গাজী প্রতিরোধ সেল (G.P.S.)। কাজ একটাই: গাজী কোথা দিয়ে আসছে, সেটা আগেই ট্র্যাক করো। হেডমাস্টার কাভা এবার গেটেই বসালেন ম্যাজিক স্ক্যানার। কেউ যদি ID কার্ডে গাজীর চেহারা নিয়ে আসে, বাজবে অ্যালার্ম:
“ততক্ষণে গাজী ঢুকেছে!”
শেষ দৃশ্যে গাজী ক্যান্টিনে বসে বলেন, “এই স্কুল আমার ছাড়া চলে না।”
ছবি ম্যাম পাশ থেকে বলেন, “চলে, শুধু আপনাকে দেখায় না।”
শায়মা হেঁটে চলে যেতে যেতে বলেন, “জ্ঞানহীন সিনিয়র—আমাদের পুরনো কাঁটা।”
আর ত্রিমূর্তি হেসে বলে ওঠে,
“গাজী গেলে গল্প বাঁচে!”
৩০ শে জুন, ২০২৫ রাত ১:১০
জটিল ভাই বলেছেন:
মুক্তিযোদ্ধার ছেলে না হয়ে মুক্তিযোদ্ধা হলে সমস্যা আছে?
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:৩৬
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
AI জানে যে, আপনি মুক্তিযোদ্ধার ছেলে, সেই অনুসারে আপনার জন্য স্পেশাল গল্প।