নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হতাশাগ্রস্ত মানুষের কদর্যতাই একমাত্র অস্ত্র।

ইসিয়াক

যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্যাং কালচার [কিশোর ভার্সন ]

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:০০


পোষাকের ধরনেই রয়েছে ছেলেগুলোর মধ্যেউগ্রতা। গায়ে রংবেরং টি-শার্ট, লেটেষ্ট মডেলের জিন্স প্যান্ট। চোখে নিত্য নতুন সানগ্লাস। হাতে হিরো টাইপড ফ্যাশনেবল ব্রেসলেট ।চুলের অদ্ভুত জগাখিচুড়ী মার্কা স্টাইল। এখানে সেখানে পাড়া, মহল্লা, চায়ের দোকান চিপাচাপা গলি , কোথায় নেই তারা সব জায়গাতেই তাদের সরব উপস্থিতি। আড্ডাবাজি চলছে অনিয়নন্ত্রিত ভাবে ।প্যাকেট থেকে সিগারেট বের করে সুদৃশ্য দামি লাইটার দিয়ে ধরিয়ে হিরোদের মতো দেয় টান। ধোয়া ছাড়ে বেপরোয়া ভাব করে।বিকট শব্দে কখনো কখনো ভুল উচ্চারণে গায় হিন্দি কিংবা ইংরেজি গান। কি বয়স্ক কি কম বয়সী নারী জাতিকে উত্ত্যক্ত করার ক্ষেত্রে কোনো বয়স বিবেচনা নেই তাদের। রাত যত বাড়ে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় শুরু হয়ে যায় এমন গ্যাং গ্রুপের কার ও বাইক রেসিং। এক একেকটি এলাকায় এদের রয়েছে পৃথক গ্রুপ। স্বতন্ত্র এই এক একটি গ্রুপকে ‘গ্যাং’ বলে ডাকা হয়।
পাওয়ার বয়েজ ,লাড়া দে,ধাকধাক ডার্ক শ্যাডো,ডিসকো বয়েজ, নাইন স্টার, ছুপারুস্তম,উল্টাপালটা সিকসটি নাইন , ব্ল্যাক রোজ, ক্যাসল বয়েজ, ভাইপার ....... এরকম শতাধিক নামের গ্যাং গ্রুপের কয়েক হাজার কিশোর এখন গোটা রাজধানী রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে। যাদের বেশিরভাগই নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। অধিকাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় দণ্ডবিধি অনুযায়ী পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। সবক্ষেত্রেই আটক করে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠাতে হয়। অথচ ঢাকার শিশু আদালতের বিচারিক কার্যক্রমের নথি অনুযায়ী গত ১৫ বছরে রাজধানীতে কিশোর গ্যাং কালচার ও সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে ৮৬ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। তাহলে ভাবুন একবার । খোঁজ নিয়ে দেখুন আপনার সন্তানের গতিবিধি । সে কোথায় যায় কার সাথে মেশে । আপনার সরল বিশ্বাস তাকে ভুল পথে পরিচালিত করছে নাতো ?
কিছু তথ্য---------------
১ রাজধানী ঢাকার উত্তরায় স্কুল পড়ুয়া এক কিশোর আদনান কবীরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা প্রকাশিত
হলে কিশোর গ্যাং এর ব্যাপারটি সর্বপ্রথম আইনশর্ঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে।

২এসব গ্রুপের ছেলেরা মাদকের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী। আবার পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন জায়গায় লম্বা সময় ধরে বসে গসিপিং , মেয়েদের পেছনে লাগা ,কমেন্ট করা। এদের সাথে উঠাবসা চলাফেরা করতে করতে ভালো ছেলেরাও অপরাধে ঝুঁকে পড়ে।
৩এইগ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। তবে প্রায়ই দেখা যায় স্কুল ড্রপ-আউট ছেলেরা যারা কিছু করে না তারা স্থানীয় অন্য ছেলেদের গ্রুপে আসার জন্য বাধ্য করে।না এলে ভয় ভীতি দেখায়। আর মনের মিল হয়ে গেলে বা বসের বশ্যতা স্বীকার করে নিলে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
৪মোবাইল ফোনের সবচেয়ে খারাপ ব্যবহারে এরা সিদ্ধহস্ত। মোবাইল ফোন হয়ে উঠেছে এদের অপরাধে যুক্ত হবার প্রধান হাতিয়ার।
কিছুঘটনার দিকে দৃষ্টিপাত করলে ব্যাপারটা বুঝতে আরো সহজ হবে ।
এক:
ঢাকার একজন বাসিন্দা ইব্রাহিম হোসেন লক্ষ্য করছিলেন যে, তার ছেলেটির আচরণ সম্প্রতি বেশ বদলে গেছে।
''সে ঠিক সময়ে বাসায় ফেরে না। স্কুল শেষ করেও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চলে যায়, আসে অনেক রাতে। ওর মায়ের কাছে বেশি হাতখরচের টাকার জন্য বায়না করে।''
''আমি ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকি, বাসায় সময় কত দিতে পারি? কিন্তু স্কুল থেকে অভিযোগ আসার পরে সেখানে গিয়ে জানতে পারি, আরো কয়েকজন ছেলের সঙ্গে মিলে অন্য একজনকে মারধর করেছে। এটা জেনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।''
দুই
ফরিদপুরের একজন বাসিন্দা গত ১০ বছর ধরে সৌদি আরবে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী তার দুই সন্তান থাকে। কিছুদিন আগে স্কুল পড়ুয়া ছেলেটি মোটরসাইকেল কেনার জন্য কান্নাকাটি শুরু করলে, স্ত্রীর চাপে তিনি সেটি কেনার জন্য টাকাও পাঠান।
কয়েকদিন পরে সেই মোটরসাইকেল নিয়ে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ছিনতাই করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে, এখন জামিন হলেও মামলা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার স্ত্রী বলছিলেন, ''ছেলে যখন যা চেয়েছে, সব কিনে দিয়েছি। কোন বায়না বাকী রাখি নাই। কিন্তু সে যে এই কাজ করবে কল্পনাও করি নাই। অন্য খারাপ ছেলেদের পাল্লায় পড়ে সে নষ্ট হয়েছে।''
বাংলাদেশে ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় কিশোরদের মধ্যে গ্যাং বা দলবদ্ধভাবে নানা ধরণের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
পুলিশের কর্মকাণ্ডঃ

গত ৮ই সেপ্টেম্বর পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারি কিশোর গ্যাং কালচার গড়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ সুপারদের তৎপর থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় এ ধরণের কিশোর গ্যাংয়ের কারণে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া মারধর, চুরি, ছিনতাই, ইভ টিজিং, মাদক ব্যবসা, মেয়েদের উত্যক্ত করার মতো অভিযোগও রয়েছে এসব গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে।
সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক মোঃ সোহেল রানা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাং-এর দৌরাত্ম রোধে কাজ করছে পুলিশ। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এ ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।
গত কয়েকদিন ঢাকা চট্টগ্রাম মিলিয়ে সারা দেশে এরকম কিশোর গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ১০০ কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এসব গ্যাং সদস্যদের মধ্যে অনেক নামীদামী স্কুলের শিক্ষার্থী, ধনী ও শিক্ষিত পরিবারের সন্তানরাও জড়িয়ে পড়েছে। অথচ সন্তানদের এসব কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অভিভাবকদের কোন ধারণাই ছিল না।

কেন গ্যাং সংস্কৃতিতে জড়িত হয়ে পড়ছে কিশোররা?
পুলিশ ও সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতা, অ্যাডভেঞ্চার বা ক্ষমতা দেখানোর লোভ, মাদক, বন্ধুদের পাল্লা পড়াসহ নানা কারণে কিশোর গ্যাং গুলো তৈরি হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড.তানিয়া রহমান বলছেন, বর্তমান সময়ের ব্যস্ততার কারণে অনেক বাবা-মা সন্তানদের ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না। এমনকি সন্তান কি করছেন, কোথায় যাচ্ছে, কাদের সঙ্গে মিশছে, তাদের চাহিদা কী, এসব সম্পর্কেও তারা কোন খোঁজ রাখেন না।
''ফলে এই সন্তানরা বন্ধুদের কাছে আশ্রয় খোঁজে, তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করে। সেখানে তারা একই ধরণের মানসিকতা খুঁজে পায়, সাপোর্ট পায়। এভাবেই তাদের ছোট ছোট দল তৈরি হয়।''
তিনি জানান, পরে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে বা রাজনৈতিক বড়ভাইয়ের স্বার্থে এই কিশোররা জড়িত হতে থাকে। অনেক সময় এলাকায় আধিপত্য দেখানো, সবার সামনে নিজেকে জাহির করার লোভ থেকে তারা নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত হয়ে পড়ে।
''দেখা যায়, ক্লাসের একজন বন্ধু কোন গ্যাংয়ের সদস্য হলে আরেকজনকে সেখানে সদস্য হতে প্রভাবিত করে। এ ধরণের ছেলেদের অন্যরা একটু ভয় পায়। ফলে সেটা তাদের মধ্যে এক ধরণের ক্ষমতার মনোভাব তৈরি হয়। ফলে তারা গ্যাংয়ের সঙ্গে আরো ভালোভাবে জড়িয়ে পড়ে।''
''পরে মাদক বা নিজেদের খরচ জোগাড় করতে তারা নানা অপরাধ করা শুরু করে। এরপর আর বেরিয়ে আসতে পারে না।'' বলছেন অধ্যাপক তানিয়া রহমান।
অনেক সময় নিজেদের দল ভারি করতে প্রথম দিকে বিনামূল্যে মাদক সরবরাহ করে শিক্ষার্থীদের আসক্ত করে তোলা হয়। পরে তাদের গ্যাংয়ের সদস্য করে নেয়া হয়।
তিনি সাম্প্রতিক একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে বলেন, তার পরিচিত একটি পরিবারের সন্তান ঢাকার একটি নামী স্কুলের ছাত্র, কিন্তু কয়েকদিন ধরে স্কুলে যেতে চাইছিল না।
তার বাবা-মা জোর করার পর সে জানায়, সে আর ওই স্কুলে পড়তে চায় না। কারণ সেখানে ওপরের ক্লাসের কয়েকজন ছাত্র তাকে জোর করে মাদক নিতে বলে। না হলে তাকে মারধর করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা বলেন, তারাও এ ধরণের ঘটনা শুনেছেন, কিন্তু তারাও অসহায়।
পরে ওই স্কুলটি পরিবর্তন করে ওই পরিবারটি।
বিবিসি বাংলার কথা হয় এমন একজন তরুণের সঙ্গে যে স্কুলে পড়ার সময় ঢাকার একটি এলাকার একটি গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে একটি কলেজে পড়াশোনা করছেন। কেন তিনি এমন একটি গ্রুপে জড়িত হয়েছিলেন?
''ক্লাসের তিনটা গ্রুপ ছিল। বেশিরভাগই কোন না কোন গ্রুপের সদস্য ছিল। ওদের সঙ্গে থাকলে সবাই সমীহ করতো। কারো সঙ্গে গণ্ডগোল হলে ওরা আমার হয়ে মারপিট করতে আসতো, সে কারণে বেশ ক্ষমতাবান মনে হতো। আমিও কয়েকবার অন্যদের সঙ্গে মারামারি করেছি।''
কিন্তু একসময় এই গ্রুপের সদস্যরা মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ে, যাার শিকার হন তিনিও। পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে রিহ্যাব সেন্টারে ভর্তি করে সুস্থ করে তোলেন। পরে তারা ওই এলাকা বদলে আরেক এলাকার স্কুলে ভর্তি হন।
''তখন যদি আমার পরিবার আমাকে ফিরিয়ে না আনতো, আজকে হয়তো আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে যেতো।'' বলছেন সদ্য কুড়ি উত্তীর্ণ তরুণটি।

কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান গ্যাং কালচারে জড়িত
সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কিশোরদের গ্যাংয়ে জড়িত হওয়া ঠেকাতে অভিভাবকরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন।
অধ্যাপক তানিয়া রহমান বলছেন, সন্তানের চলাফেরা, আচরণের দিকে লক্ষ্য রাখলেই বুঝতে পারা যাবে যে, সে আসলে কোন গ্যাং বা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে কিনা।
''হয়তো সন্তানটি সময়মতো বাসায় ফিরছে না। ঠিকমতো খাচ্ছে না বা ঘুমাচ্ছে না। হয়তো বাসায় ফিরে নিজের ভেতর গুটিয়ে থাকছে। অতিরিক্ত টাকা দাবি করছে। বাসায় বন্ধুদের নিয়ে বেশি আড্ডা দিচ্ছে।''
''কাপড়চোপড়ের ধরণ পাল্টে যাচ্ছে। হয়তো হাতে বা কানে নানা ধরণের অলংকার ব্যবহার শুরু করেছে। কথাবার্তা বা আচরণে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এসব লক্ষণ দেখা গেলেই সন্তানের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।'' বলছেন অধ্যাপক তানিয়া রহমান।
তিনি বলছেন, বর্তমানে অনেক পরিবারে বাবা-মা দুজনেই কাজ করেন, ফলে সন্তান কি করে, কার সঙ্গে মেশে, সেটা ঠিকভাবে খোঁজ রাখেন না। কিন্তু সন্তানের ওপর সবসময়ে নজর রাখা খুব জরুরি। বিশেষ করে কাদের সঙ্গে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে, টাকা কোথায় খরচ করছে, ঠিক সময়ে বাসায় ফিরছে কিনা, ইত্যাদি নজরে রাখা উচিত।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক (মনোরোগ) মেখলা সরকার বলছেন, ''সন্তানের আচরণের দিকে লক্ষ্য রাখলেই বোঝা সম্ভব যে, তার মধ্যে আসলে কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা? সে কোন গ্যাং বা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে কিনা? কারণ এ রকম কিছু ঘটছে তার আচরণে, অভ্যাসে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। প্রথম দিকে সেটা সনাক্ত করা গেলে খুব সহজেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে।''
তিনি বলছেন, এ রকম ঘটনায় ছেলেমেয়ের টাকার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে তার বাসায় ফেরার সময়সূচীরও ঠিক থাকে না। এই দুইটি বিষয় দেখা গেলেই সতর্ক হওয়া

কীভাবে ফেরাবেন সন্তানকে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তান গ্যাং এর সদস্য জানতে পারলেই আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। বরং পারিবারিক কিছু উদ্যোগের মাধ্যমেই এ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক তানিয়া রহমান বলছেন, ''অভিভাবকদের জন্য সন্তানকে সময় দেয়া জরুরি। তাদের সঙ্গে আস্থার, বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।''
''আমাদের সংস্কৃতিতে পশ্চিমা অনেক কিছু ঢুকে গেছে। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছি, বিদেশি কেতায় চলছি, সুতরাং সম্পর্কের ক্ষেত্রে সেই স্বাভাবিকতা নিয়ে আসতে হবে। যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি করাটা জরুরি।''
তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, সন্তানের স্কুলে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা, কাদের সঙ্গে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে, সেটা নিয়মিতভাবে নজরে রাখা উচিত।
এছাড়া সন্তানদের হাতখরচ দেয়ার ব্যাপারেও সতর্ক থাকা উচিত, যেন সেটা অতিরিক্ত না হয়।
মনোরোগবিদ অধ্যাপক মেখলা সরকার বলছেন, ''সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে হবে। তাকে বকাঝকা নয়, বরং তার কথা শুনতে হবে। কেন সে গ্যাং এর সাথে জড়িত হয়েছে সেটা বোঝা দরকার। সন্তানের চাহিদার ব্যাপারটি বুঝতে হবে।''
তিনি বলছেন, অনেক পরিবারে বাবা-মার সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব থাকে। আমরা দেখেছি, এ ধরণের পরিবারের সন্তানরাই মাদক বা গ্যাং জাতীয় ঘটনাগুলোয় বেশি জড়িয়ে পড়ে। সেই দূরত্ব কাটাতে অভিভাবকদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি বলছেন, অনেক বাচ্চার মধ্যে আচরণগত ক্রুটি থাকে। এ কারণেও অনেকে গ্যাং এর সদস্য হতে পারে। এক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানীদের সহায়তা নিতে হবে।
তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, এরকম ঘটনায় সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে পরিবেশের পরিবর্তন। যেমন ওই এলাকা থেকে দূরের অন্য এলাকায় চলে যাওয়া, স্কুল-কলেজ বদলে ফেলা ভালো। সেক্ষেত্রে সন্তানের জন্য সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে।

কৃতজ্ঞতা
https://www.bbc.com/bengali/news-49664729
https://www.bbc.com/bengali/38910176
এবং আরো কয়েকটি ওয়েবসাইট ।
ছবি ইন্টারনেট থেকে।










মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৩৯

বলেছেন: কিশোর অপরাধ মারাত্মক খারাপ সমাজ ও দেশের জন্য।।।
বৃটেনে স্কুল পড়ুয়া ছেলেরা নাইফ ক্রাইমে জড়িয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।।।


পোস্টে প্রথম লাইক।।। শুভকামনা রইল।।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৪৪

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ লতিফ ভাই ,
শুভসকাল

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:১২

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: কিশোর অপরাধ দেশে ভয়ংকর পর্যায়ে আছে, আরো ভয়ংকর হবে তার নমুনা আমরা পাচ্ছি। বিস্তারিত নিয়ে মন্তব্য করবো বিকালে। ধন্যবাদ ইসিয়াক ভাই - আপনি প্রমাণ করলেন আপনি ব্লগে একজন প্রয়োজনীয় মানুষ। আবারো ধন্যবাদ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:১৭

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। স্কুলে যাচ্ছি । পরে কথা হবে ।
শুভসকাল

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:২০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: ভোরের পাখি, আমি ঘুমোতে যাবো এখন দুপুরে খাবারের পর অফিস।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:২৪

ইসিয়াক বলেছেন: আপনার সু নিদ্রা কামনা করছি
শুভসকাল

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মনে হয় সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি গুলো দেখে ওরা এরকম হয়েছে।

এযুগের অল্প বয়সী ছেলে গুলো খুব ভয়ঙ্কর। এদের মায়া দয়া কম। এরা খুব হিংস্র। দুঃখজনক ব্যাপার হলো এরা সারাদিন কি করে বেড়ায় তাদের বাপ মা কোনো খোঁজ রাখে না।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি পোষ্ট লেখার জন্য।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৪

ইসিয়াক বলেছেন: রাজীব ভাই
আপনি ঠিকই বলেছেন । সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি এসব কিশোরদের মাথা অনেকটাই বিগড়ে দিচ্ছে । আসলে সব কিছুর মুলে কিন্তু স্মার্ট ফোন , ফোনের মাধ্যমে সংগঠিত হওয়া যায়। ফোনের মাধ্যমে ভিডিও দেখে মন্দ আচরণ মানে মন্দ স্টাইল শেখা যায় ।যে যত বেশি রাফ সে তত বেশি স্মার্ট । ফোনের মাধ্যমে...........
ফোনের কত যে হাজার হাজার ভালো শিক্ষণীয় ব্যবহার আছে তা তারা জানেই না । নিজেকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা মানে এদের কাছে আনস্মার্টনেস ।ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার এরা মিসইউজ করছে। এরা সিমকার্ড পায় কোথায় ? ভোটার আইডি না থাকলে তো সিমকার্ড পাবেনা তাহলে ?
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৯

চাঙ্কু বলেছেন: গ্যাং কালচার সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের উদাসীনতা আর ওভারঅল আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের কারনে!!

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৬

ইসিয়াক বলেছেন: চাঙ্কু ভাই আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম ।
শুভকামনা রইলো

৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


হরমোনযুক্ত মুরগী খাচ্ছে বাচ্চা লোকেরা।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১৫

ইসিয়াক বলেছেন: হা হা হা বেশ বলেছেন
ধন্যবাদ

৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:০৮

মা.হাসান বলেছেন: ইসিয়াক ভাই, বর্তমান সময়ে সমাজের অনেক বড় একটি সমস্যার কথা তুলে ধরায় আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত ভাবে পত্রিকাতে কিশোর গ্যাঙ এর কথা দেখছি। ঢাকার বাহিরে ও এই গ্যাঙ কালচার ছড়িয়ে পড়েছে। গতকালকের প্রথম আলোতে বগুড়ায় গ্যাং কালচারের কথা এসেছে। আগে এই বয়সিদের দুষ্টুমি সিগারেট ফোকা এবং লুকিয়ে ভিসিআরে নিষিদ্ধ ছবি দেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই সমস্ত গ্যাঙ গুলো এমন কিছু অপরাধ করেছে যে পুলিশের মাথাও ঘুরে গিয়েছে । সরকারের উচিত হবে সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১৪

ইসিয়াক বলেছেন: মা.হাসান ভাই
আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম ।
আপনার মন্তব্য পেয়ে অনেক ভালো লাগলো ।
ধন্যবাদ এব্ং শুভকামনা রইলো ।

৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: স্মার্ট ফোণ পরে, তাদের বাপ মা কি করে??

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৮

ইসিয়াক বলেছেন: নিজেদের নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে ।

৯| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:





অপরাধ হচ্ছে অপরাধ। হোক সে কিশোর হোক বৃদ্ধ, আইনের সুষ্টু বিচার যেখানে থাকবে সেখানে কিশোর অপরাধ কমতে বাধ্য, কিশোর অপরাধে যদি মানবতাবাদী সংঘটন, সমাজ বিজ্ঞানী, ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা আইনের পথরোধ করে তাহলে তাদের বিচার সম্ভব না। কোর্টে এসব বিচার চলবে না, আন্দোলন করে পত্রিকা ভরে লেখালেখি করে তদন্ত বন্ধ করা হবে।

এই দেশে যেভাবে বিশৃংখলা বাড়ছে তাতে পরিবার ও সমাজ ব্যাবস্থা দায়ী। পরিবার তার সন্তানদের বিগড়ে দিচ্ছে - এই দায়ভার দেশের না, আইনের না, প্রশাসনেরও না।

রাত ১২:০০ টার পর ঢাকা ৩০০ ফিট সড়কে ৩০-৫০ টি মটর সাইকেল চলবে পুলিশ জিগ্যাসাবাদের জন্য আটক করলে ফেসবুকে লাইভ করে দেশের বেকুব জনগণ পুলিশকে গালাগাল করবে এটি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি। রাত ১২:০০ টার পর ৩০০ ফিটে মটর সাইকেল চালক এরা কারা - “এরা সাংসদ, প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রীর দুর দুর সম্পর্কের - শ্যালকের স্ত্রীর ভগ্নিপুত্র” !!!



ভোরের পাখি, আপনার লেখা যথার্থ হয়েছে, মার্ক ১০/১০। ধন্যবাদ।


১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৩

ইসিয়াক বলেছেন: আমি কি বলবো .............।
...........................
............................।
অনেক শ্রদ্ধা এবং ভালোলাগা ।

১০| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪৯

এমজেডএফ বলেছেন:
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

কিশোরদের চিন্তাশক্তি ভালো-মন্দ যাচাই করার মত পরিপক্ক নয়। তাছাড়া এরা পরিবার, বন্ধুবান্ধব, পারিপার্শিকতা ও সামাজিক আচার-আচরণ দ্বারা খুব সহজে প্রভাবিত হয়। উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও অনেক পরিবারে এখন মা-বাবা দুইজনই চাকুরিজীবি। স্কুল শেষের পর ফ্রি সময়ে কিশোর-কিশোরীদের দায়-দায়িত্ব নেবার কেউ নেই। এ সময়ে এরা বন্ধু-বান্ধবের পাল্লায় পড়ে বা না বুঝে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। উন্নত বিশ্বে স্কুল পাঠের পর কিশোর-কিশোরীদের জন্য খেলাধুলা, গানবাজনা ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী থাকে। মা-বাবা ঘরে না আসা পর্যন্ত সময়ে এরা এসব কর্মসূচীতে ব্যস্ত থাকে। আর আমাদের দেশে এসব কিশোরদের রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা ও মাস্তানরা নিজেদের দলে টেনে এনে বিভিন্ন অপকর্ম করার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫৯

ইসিয়াক বলেছেন: এমজেডএফ ভাই ,
মূল্যবান মতামতের জন্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো

১১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৩

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: কিছুদিন আগে কলকাতার 'ক্রাইম, দা ডার্ক সাইট' নামের একটা মুভি দেখেছিলাম। ৫ টা ঘর, পরিবারহীন কিশোর মিলে প্রথমে বিভিন ছোট ছোট অপরাধ করে। তারপর জেল টেল খেটে বড়বড় অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ কিশোর'ই স্বচ্ছল ফ্যামিলির। এরা পাওয়ার, ক্ষমতা ইত্যাদির জন্য গ্যাং তৈরি করে।
মদ, গাঞ্জা সেবনের জন্য প্রথমে ছিনতাই, চুরি করে। তারপর বড়বড় অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।

কিশোর অপরাধ বন্ধে, প্রশাসনের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদেরও সচেতনতা জরুরি!

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৩০

ইসিয়াক বলেছেন: সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

১২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১০

করুণাধারা বলেছেন: সমসাময়িক একটা সমস্যা নিয়ে খুব চমৎকার লিখেছেন। এই পোস্ট পড়ার পর অনেকেই সন্তানদের আচরণ সম্পর্কে সচেতন হবেন আশা করি। ছবিগুলো চমৎকার সংযোজন।

এমন একখানা পোস্ট দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ++++

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৯

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় করুণাধারা ,
আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম ।
এবং আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

১৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: সময়োপযোগী পোস্ট। অনেক ধন্যবাদ এমন লেখার জন্য। পোস্ট প্রিয়তে নিলাম।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২১

ইসিয়াক বলেছেন: জেনে খুব ভালো লাগলো । শুভকামনা রইলো ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.