নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
১ম পর্ব
( ২)
কামরুন্নাহার পলাশের ছোট ফুফু, পলাশের অত্যন্ত প্রিয়। বেড়ে উঠেছে সে এই ফুফুর কাছেই,ছোটবেলা থেকে তার যত বায়না,যত আবদার সব এই ফুফুর কাছেই । এ জন্য কামরুন্নাহারকে পলাশের মায়ের কাছ থেকে কম টিকা টিপ্পনী শুনতে হয়নি। কামরুন্নাহার অবশ্য তাতে তেমন কিছু মনে করেন না, বাচ্চাদের ভালেবাসা তার কাছে স্বর্গীয় নেয়ামতের মতো। সেটুকু পাওয়ার বিনিময়ে কে কি বলল তাতে তার কিছু যায় আসে না।
তবে ফুফুর প্রতি পলাশের অভিযোগের শেষ নেই।কিছুতেই সে একটু বেশি সময় ধরে নিজের করে পাওয়া যায় না তাকে।
পলাশের কাছে মাঝে মাঝে মনে হয় তার ফুফু সম্ভবত রোবট টাইপের কিছু একটা।একটানা একজন মানুষ কিভাবে সারাদিন এত এত কাজ করে যেতে পারে কে জানে?
কয়েকদিন ধরে ছোট ফুফুকে একটু নিরিবিলি পাবে বলে অনেক চেষ্টা ও পরিশ্রমের পরে আজ বিকালে সেই সুযোগটুকু এলো পলাশের জন্য, বাড়িভর্তি লোকজন সবাই ব্যস্ত যার যার কাজে।
এ বাড়িতে ভাগবাটোয়ারা চলছে পুরোদমে,হৈচৈ গন্ডগোল ও চলছে সমানতালে। আজ সবচেয়ে বড় পুরানো সিন্দুকটা খোলা হয়েছে। তাই নিয়ে গরম গরম কথা চালাচালি খোঁচাখুৃচি চলছে অবিরত। বিরক্তিকর এসব পরিস্থিতি চলবে আরও বেশ ক'দিন বোঝাই যাচ্ছে।
আজ কদিন বিশেষ কারণে কেউ কেউ কামরুন্নাহারকে কোন কাজেই হাত দিতে দিচ্ছেন না,তার প্রতি হঠাৎ করে কারো কারো দরদ উথলে উঠেছে চোখে পড়ার মত।
কারণ অবশ্য আছে, তার শরিকানা অংশটা বেশ বড় এবং তিনি স্বভাবে সরল সোজা,ঘোর প্যাঁচ নেই মুক্ত। তো সেই অংশটা নিজের আয়ত্ত্বে আনার ধান্দায় প্রায় সকলে ব্যতিব্যস্ত, এখন তার দায়িত্ব নিতে তার ভালো মন্দ দেখ ভাল করতে কম বেশি সবাই আগ্রহী !
একেই বলে ভাগ্য, কিছুদিন আগেও যে ছিলো সবার কাছে অপাংক্তেয় , প্রয়োজন না পড়লে কেউ তার খোঁজ নিতো না কিন্তু পরিস্থিতির কারণে আজ তার কত খাতির কত যত্ন!
পলাশও এটুকু বোঝে, স্বার্থে মোড়া ভালোবাসার ফলস্বরূপ ফুফুর এই অবসর ও এত খাতির। পরিস্থিতি অবশ্য প্রথমে এমন ছিল না মোটেও,প্রথম প্রথম তাকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বাদ দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করেছিল অনেকেই, কিন্তু আজকাল আইন কানুন যথেষ্ট কড়া। শরিক ফাঁকি দিতে চাইলে সহজে সুবিধা করা যায় না বরং জটিলতা বাড়ে। আর যদি সেই শরিক বর্তমান থাকে তবে তো কথাই নেই।
কামরুন্নাহারের পাশে এসে দাড়িয়েছেন পলাশের বাবা। তিনি এ বাড়ির একজন ডাকসাইটে সদস্য ,রওনক শিকদারের প্রথম পক্ষের সেজো ছেলে।তিনি অনেক হিসেবি এবং বুদ্ধিমান। তিনি পলাশের প্রতি কামরুন্নাহারের ভালোবাসাটাকে এক্ষেত্রে কামরুন্নাহারকে নিজের ভাগে টেনে নেওয়ার কাজে ব্যবহার করছেন সুচতুরতার সাথে।
পলাশ ঘরে ঢুকে ফুফুকে দেখতে পেয়ে একটু নিশ্চিন্ত হলো ।খুব জরুরি একটা কথা আছে তার, আজই বলতে হবে দেরি হয়েছে এমনিতেই।
পলাশের বান্ধবী স্নেহলতা খুব তাড়া দিচ্ছে কদিন ধরে। মেয়েটি জ্বালিয়ে খেলো একেবারে। আজ কিছু একটা না করলেই নয়,মুখ দেখাতে পারবে না সে স্নেহলতাকে।
পলাশের এই ফুফুটি এ বাসার স্হায়ী বাসিন্দা এবং চিরকুমারী।
কেন তিনি বিয়ে করে থিতু হননি বা করতে চাননি সে সম্পর্কে অবশ্য বিশেষ কিছু জানে না পলাশ । অন্যরা হয়তো জানলেও জানতে পারে, তবে পলাশ এটুকু জানে একসময় মারাত্নক স্মৃতি বিভ্রাট হয়েছিলো তার এই ফুফুর ,হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি ভয়ঙ্কর ঝড়ের কবলে পড়ে । উপকূলীয় অঞ্চলে তার মামাবাড়ি সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলো মায়ের সাথে। তখনই এই দূর্ঘটনা ঘটে। কয়েক মাস ধরে অনেক খুঁজে ও তাকে ফিরে পাওয়া যায়নি, যখন তাকে পাওয়া যায় তখন সে এমনেশিয়ার রুগী। কাউকে চিনতে পারে না কোন কিছু মনে করতে পারে না, আলুথালু আলাভোলা অবস্থা।
মামাবাড়ি থেকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে আসেন যখন তিনি তখনও তিনি খানিকটা অপ্রকৃতস্থ , ফিরে এসে পলাশকে আকড়ে ধরেন পরম মমতায়। সেই থেকে শুরু।
তারপর পলাশের দেখাশোনা ও রাঁধুনির কাজই তার সময় কাটানোর প্রধান অবলম্বন হয়ে দাড়ায়।
এতবড় যৌথ পরিবার কাজের অন্ত নেই তবে নেওয়া খাওয়ার লোক আছে বিস্তর। এক্ষেত্রে অনেকের জন্য কিছুটা আরামের সুযোগ মিলল সহজেই।
সেই শুরু সারাটাদিন ফাইফরমাশ আর কাজ। দিন যে কখন গড়িয়ে রাত হয় মাঝে মাঝে তিনি তা নিজেই ঠাওর করতে পারেন না।
তাঁর বিয়ের প্রস্তাব যে একেবারে আসেনি তা কিন্তু নয়। কিন্তু প্রতিবারই সে বিয়ে ভেঙেছে বিচিত্র কারণে। একসময় সে পাগল হয়ে গিয়েছিল একথা জানলে কে আর সেই পাত্রীকে বিয়ে করতে চায়? হাজার গোপনীতার মধ্যে সেই খবরটি সুকৌশলে কে বা কারা পাত্র পক্ষের কানে পৌঁছে দিতে দেরি করেনি প্রতিবারই।
-ফুপি তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো।
কামরুন্নাহার হাতের কাজটা করতে করতে বললেন,
-বলো শুনছি।
-তোমার হাতের কাজটা রাখো, কথাটা জরুরি,মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।
-তেমন কিছু তো করছি না,আচ্ছা রাখলাম এবার বল তোমার জরুরি কথাটা।শুধু খবরদারি।
- আগে বলো তো তুমি রাগ করবে না।
-রাগ করার মত কি কিছু করেছো?
-তোমার কি মনে হয়?
- আমার কিছু মনে হয় না তুমি তাড়াতাড়ি শেষ করো আমি একটু বেরুবো। অনেক দিন মনাদের ওখানে যাওয়া হয়নি।
- ফুপি স্নেহলতা নামে আমি একজনকে চিনি।
-নামটা সুন্দর তো, চিনি মানে কি? শুধুই চেন?
- না,আমাদের সাথে পড়তো। বন্ধু।
- তো কি হয়েছে তার?
-স্নেহলতা তোমার সাথে একটু দেখা করতে চায়।
-আমার সাথে! দেখা করবে? কেন? আমি তো ব্যপারটা বুঝতে পারছি না, আমি কি ওকে চিনি?
-চেনো কি চেনো না সে আমি জানি না। তবে ও বলেছে ও তোমার সাথে একটু দেখা করতে চায়।
-আশ্চর্য! আচ্ছা, যাকগে বাড়িতে এনো একদিন। কি জন্য দেখা করতে চায় শোনা যাবে না হয় তখন।
- বাসায় এলে তো কবেই নিয়ে আসতাম। বাসায় আসবে না সে।
- ও মা কেন?
- তা জানি না।তুমি কি দেখা করবে? জরুরি কিন্তু।
কথাটাকে গুরুত্ব না দিলে ও কামরুন্নাহার কিছুতেই হিসাব মেলাতে পারেন না একজন অচেনা অজানা মানুষ তার সাথে দেখা করার কি প্রয়োজন থাকতে পারে । পলাশের নিজের কোন সমস্যা? কে জানে?
কামরুন্নাহার বেগুনি রঙের একটা শাড়ি বের করলেন।
চলবে।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
ছবিঃ গুগোল
ফুটনোটঃ পরভৃত ১. /বিশেষণ পদ/ পরপুষ্ট, পরের দ্বারা প্রতিপালিত। ২. /বিশেষ্য পদ/ পরের দ্বারা প্রতিপালিত এইজন্য. কোকিল। /পর+ভৃত/। /বিশেষণ পদ/ স্ত্রীলিঙ্গ. পরভৃতা।
গল্পটি সাত পর্বে সমাপ্ত। আশা করি সবাইকে পাশে পাবো। শুভকামনা।
১৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৫৮
ইসিয়াক বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
আমি পরের পর্বগুলো আরো ভালো করে লেখার চেষ্টা করবো।
শুভকামনা।
২| ১৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:০১
স্প্যানকড বলেছেন: পরের পর্বের আশায় রইলাম। স্নেহলতার জন্য। ভালো থাকবেন।
১৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:১৮
ইসিয়াক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। গল্পটা কিন্তু স্নেহলতাকে নিয়েই ........।পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
৩| ১৭ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন:
গল্পের কাহিনীর গতি প্রকৃতি একটু মন্থর আর পর্বের পরিধি খুবই ছোট তবে দেখা যাক কোন সুতা (twist) অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য পরবর্তী পর্বে।
অপেক্ষায় -
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৪৯
ইসিয়াক বলেছেন: পরের পর্ব দিয়েছি ভাইয়া । শুভকামনা রইলো।
৪| ১৭ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: এই স্নেহলতা কি বাস্তব চরিত্র?
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৫০
ইসিয়াক বলেছেন: পড়তে থাকুন জানতে পারবেন ও বুঝতে পারবেন।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
৫| ১৭ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৩
ভুয়া মফিজ বলেছেন: ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে প্রতিটা পর্বের শুরুতে আগের পর্বের আর শেষে পরের পর্বের লিঙ্ক অবশ্যই দিবেন (শুধু প্রথম পর্বে পরের পর্বের আর শেষের পর্বে আগের পর্বের লিঙ্ক) । নয়তো পরবর্তীতে যারা আপনার এই গল্প পড়বে, তাদের অসুবিধা হবে। বারে বারে আপনার হোম পেইজে গিয়ে পরের পর্ব পড়তে হবে, যেটা বিরক্তিকর; আর এই কারনেই আপনার গল্পের নতুন একজন পাঠক আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। কথা কি কিলিয়ার?
গল্প এখন পড়ছি না দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নাই। অবশ্যই পড়বো, সবটা দেয়া হলে। কারন যেমনটা বলেছি.......ঝুলে থাকা আমার পছন্দ না!!
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৫৩
ইসিয়াক বলেছেন: কিলিয়ার! কিলিয়ার!! কিলিয়ার!!
আগে বলেছিলেন চারপর্ব একসাথে পড়বেন এখন বলছেন সবগুলো পর্ব একসাথে পড়বেন
যাক কুমির কি আর ঝুলে থাকে কুমির থাকে শুয়ে
৬| ১৮ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৩২
জুল ভার্ন বলেছেন: এটা কি গল্পই, না কি বাস্তবকে গল্পে রুপান্তর?
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায়।
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৫৫
ইসিয়াক বলেছেন: জুল ভার্ন বলেছেন: এটা কি গল্পই, না কি বাস্তবকে গল্পে রুপান্তর?
একেবারে শেষ পর্বে বলব।
শুভকামনা রইলো।
#পরের পর্ব দিয়েছি ভাইয়া।
৭| ১৮ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:০৫
নুরহোসেন নুর বলেছেন: বাস্তবতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৫৫
ইসিয়াক বলেছেন: অনেকদিন পরে আপনাকে দেখে ভালো লাগলো।
শুভকামনা জানবেন।
৮| ১৮ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:০৫
নুরহোসেন নুর বলেছেন: বাস্তবতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৫৬
ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ
৯| ১৮ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:২৪
করুণাধারা বলেছেন: সুন্দর ভাবে আগাচ্ছেন- সাথে আছি। আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা থাকলাম পরের পর্বের।
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৫৬
ইসিয়াক বলেছেন: পরের পর্ব দিয়েছি আপু। শুভকামনা রইলো।
১০| ২১ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:০৬
আমি সাজিদ বলেছেন: ভালো হয়েছে
২৯ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:২১
ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় সাজিদ ভাইয়া।
শুভ কামনা সতত।
১১| ২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:০৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বেশ চললাম এখন ফুপিকে সঙ্গে নিয়ে স্নেহলতার সঙ্গে দেখা করতে....
যাই এখন পরের পর্বে...
শুভেচ্ছা প্রিয় কথাশিল্পীকে।
২৯ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:২৩
ইসিয়াক বলেছেন: পাঠে ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয় দাদা।
শুভ কামনা সতত।
১২| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৪১
ওমেরা বলেছেন: ভালো লাগছে।
২৯ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:২৩
ইসিয়াক বলেছেন: অনুপ্রাণিত হলাম আপু।
কৃতজ্ঞতা জানবেন।
১৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:৫২
মা.হাসান বলেছেন: যেই মেয়ে গুলো জ্বালিয়ে খায় তদেরকেই ছেলেগুলোর বেশি ভালো লাগে মনে হয়
দেখা যাক জ্বলন কতটা বাড়ে। ভয় হচ্ছে এর মাঝে টুইস্ট না ঢুকিয়ে দেন।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:১২
ইসিয়াক বলেছেন: হা হা হা... ইহা কোন প্রেম সম্পর্কিত কোন কিচ্ছা নহে, ইতিমধ্যে ইহা নিশ্চয়ই বুঝিতে পারিয়াছেন।
# অনেকদিন পরে আপনাকে ব্লগে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। শুভকামনা রইল।
১৪| ০৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক,
এগুচ্ছে ভালোই । সম্পত্তি করায়ত্ব করা নিয়ে সংসারের চিরায়ত দাবাখেলার আমেজ আছে গল্পে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৫৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
এই পর্ব পড়েছি, গল্প বলে মনে হয়নি।